জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
১)
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
২)
বিমল কর
============ππππππ===============
Doinik Sabder Methopath
Vol -135. Dt - 19/9/20
২ রা আশ্বিন,১৪২৭. শনিবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷√√√√√√÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
কবি, ঔপন্যাসিক, সম্পাদক। ১৯০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পিতার কর্মস্থল নোয়াখালী শহরে তাঁর জন্ম। আদি নিবাস বর্তমান মাদারীপুর জেলায়। তাঁর পিতা রাজকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন আইনজীবী।অচিন্ত্যকুমারের শৈশব, বাল্যজীবন, ও প্রাথমিক শিক্ষা নোয়াখালীতেই সম্পন্ন হয়। ১৯১৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি কলকাতায় অগ্রজ জিতেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের নিকট চলে যান এবং সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২০), সাউথ সাবার্বান কলেজ (বর্তমান আশুতোষ কলেজ) থেকে আই. এ. (১৯২২), এবং ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ বি. এ. (১৯২৪) পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম. এ (১৯২৬) ও পরবর্তীকালে বি. এল ডিগ্রী (১৯২৯) লাভ করেন।
কর্মজীবন
অচিন্ত্যকুমার ১৯২৫ সালে কল্লোল পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্ব নেন। তিনি বিচিত্রায়ও কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৩১ সালে তিনি অস্থায়ী মুন্সেফ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ক্রমে সাব-জজ, জেলা জজ ও ল' কমিশনের স্পেশাল অফিসার পদে উন্নীত হয়ে ১৯৬০ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্যকর্ম
১৯২১ সালে প্রবাসী পত্রিকায় নীহারিকা দেবী ছদ্মনামে অচিন্ত্যকুমারের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনায় বিশেষ কৃতিত্ব দেখান। তিনি উপন্যাসের আঙ্গিকে আবেগপূর্ণ ভাষায় ধর্মগুরুদের জীবনীও (যেমন- পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ, চার খণ্ডে (১৯৫২-১৯৫৭)) লিখেছেন। তার প্রথম উপন্যাস বেদে (১৯২৮); এটি আঙ্গিক, রচনাভঙ্গি ও বিষয়বিন্যাসে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একটি বিশিষ্ট উপন্যাস। তার লেখায় আধুনিকতা অতি প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে। কাকজ্যোৎস্না " প্রথম কদমফুল তার অন্য দুইটি বিখ্যাত উপন্যাস। ছোটগল্পশিল্পী হিসেবেও তিনি খ্যাত। বিচারবিভাগে চাকরির বদৌলতে তিনি বাংলাদেশের নানা স্থানে ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সংস্পর্শে আসেন; এইসব অন্তরঙ্গ পরিচিতজনদের জীবনের নানা কাহিনী অচিন্ত্যকুমার তার ছোট গল্পগুলিতে নিপুণভাবে এঁকেছেন। টুটাফাটা (১৯২৮) তার প্রথম ছোট গল্পের বই। তার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ কল্লোল যুগ (১৯৫০) পাঠক-মহলে বেশ সাড়া জাগায়।
অচিন্ত্যকুমারের গ্রন্থসংখ্যা সত্তরের মত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলির একটি তালিকা নিচে দেওয়া হল।
উপন্যাস
বেদে (১৯২৮)
কাকজোৎস্না (১৯৩১)
বিবাহের চেয়ে বড় (১৯৩১)
প্রাচীর ও প্রান্তর (১৯৩২)
প্রথম কদমফুল (১৯৬১)
জীবনীগ্রন্থ
পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ (চার খন্ড ১৯৫২-১৯৫৭)
বীরেশ্বর বিবেকানন্দ (তিন খণ্ড, ১৯৫৮-৬৯)
উদ্যত খড়্গ ( অখণ্ড সংস্করণ, মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা)
পরমাপ্রকৃতি শ্রী শ্রী সারদামণি
অখণ্ড অমিয় শ্রী গৌরাঙ্গ
স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ সম্পাদনা
কল্লোলযুগ (১৯৫০)
জৈষ্ঠের ঝড়
গল্পগ্রন্থ
টুটা-ফুটা (১৯২৮)
অকাল বসন্ত (১৯৩২)
অধিবাস (১৯৩২)
যতনবিবি (১৯৪৪)
কাঠ খড় কেরোসিন (১৯৪৫)
চাষাভুষা (১৯৪৭)
সারেঙ (১৯৪৭)
হাড়ি মুচি ডোম (১৯৪৮)
একরাত্রি (১৯৬১)
কাব্যগ্রন্থ
অমাবস্যা (১৯৩০)
আমরা (১৯৩৩)
প্রিয়া ও পৃথিবী (১৯৩৬)
নীল আকাশ (১৯৪৯)
আজন্মসুরভী (১৯৫১-৫২)
পূর্ব-পশ্চিম (১৯৬৯)
উত্তরায়ণ (১৯৭৪)
নাটক
একাঙ্ক নাট্য-সংকলন (১৯৪৫)
পুরস্কার
সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে জগৎ্তারিণী পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার ও শরৎচন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭৬ সালের ২৯ জানুয়ারি কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়।
=============!!!!!!!!!!!!!!!!!========≠===
(২)
" মালা বদলের রূপকথা কি প্রেম? না চোখে বান ডাকলেই প্রেম হয়? প্রেম কি তা তুমি জান না, বা সঠিকভাবে বোঝ না। তবু কেন লেখ?"
সাহিত্যের অন্যতম অনুষঙ্গ যে প্রেম, তা বারবার এসেছে তার রচনায়। তবে সমুদ্রের ওপার হতে যৌনতার আঁশটে গন্ধ তিনি নিয়ে আসেননি, একটি গল্প ব্যতিক্রম ধরে নিয়ে। প্রেমের আশ্রয় কি শরীরে না আত্মায়, তার স্বরূপই বা কী, এ নিয়ে দ্বন্দ্বমুখর অপূর্ব একটি রচনা হলো 'সুধাময়'। সে রচনায় নানা দিক থেকে আলো ফেলে তিনি স্বরূপ সন্ধান করেছেন প্রেমের। কিন্তু পেরেছেন কি? সম্ভবত না। কারণ এই সুধাময়ের মুখেই তিনি বলছেন-বিমল কর জব্বলপুর, হাজারিবাগ, ধানবাদ, আসানসোল প্রভৃতি জায়গায় ছোটবেলা কাটিয়েছেন । তিনি বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ পাস করেন । তারপর আসানসোল অ্যামিউনেশন প্রোডাকশন ডিপোয় এআরপি হিসাবে কর্মজীবনের শুরু হয়।
বিমল কর (১৯ সেপ্টেম্বর ১৯২১ - ২৬ আগস্ট ২০০৩) এক জন বিখ্যাত লেখক। তিনি উত্তর ২৪ পরগণার টাকীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জ্যোতিষচন্দ্র কর এবং মা নিশিবালা কর ।
বিমল কর জব্বলপুর, হাজারিবাগ, ধানবাদ, আসানসোল প্রভৃতি জায়গায় ছোটবেলা কাটিয়েছেন। তিনি বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তার পর আসানসোল অ্যামিউনেশন প্রোডাকশন ডিপোয় এআরপি হিসাবে কর্মজীবনের শুরু হয়।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর রচিত প্রথম ছোটগল্প অম্বিকানাথের মুক্তি প্রবর্তক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত পরাগ পত্রিকায় সহ সম্পাদকের কাজ পান । সহ সম্পাদক হিসাবে তিনি পশ্চিমবঙ্গ ও সত্যযুগ পত্রিকায় কাজ করেন । ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত প্রথম ছোটগল্প সংকলন বরফ সাহেবের মেয়ে প্রকাশিত হয় । সেই বছরেই দেশ পত্রিকার বিভাগীয় প্রধান হিসাবে যোগ দেন । এই পদে তিনি ১৯৮২ সাল অবধি ছিলেন। এছাড়া তিনি শিলাদিত্য এবং গল্পপত্র পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
ছোটদের জন্য তাঁর রচিত একটি চরিত্র অবসরপ্রাপ্ত ম্যাজিসিয়ান কিঙ্কর কিশোর রায় বা কিকিরা । কিকিরার উপন্যাস পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলায় প্রকাশিত হত।
তাঁর রচিত বেশ কয়েকটি কাহিনীতে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে । যেমন বসন্ত বিলাপ, বালিকা বধূ, (যেটি হিন্দিতেও নির্মিত হয়েছিল) যদুবংশ, ছুটি (এটি তৈরি হয়েছিল তার খড়কুটো উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে)।
বিমল কর অসময় উপন্যাসের জন্য ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন । এছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎচন্দ্র পুরস্কার, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার পান । তিনি দুবার আনন্দ পুরস্কার লাভ করেছিলেন । তিনি বহু ছোটগল্প এবং কিশোর উপন্যাসও লিখেছিলেন।
গ্রন্থতালিকা
উপন্যাস
রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ ( কিশোর) অন্যান্য গোয়েন্দা গল্প নাটক
নিম ফুলের গন্ধ ওয়ান্ডার মামা এক ভৌতিক মালগাড়ী আর গার্ড সাহেব কিকিরা সমগ্র ১ ঘুঘু
কুশীলব গজপতি ভেজিটেবল সু কোম্পানী কেউ কি এসেছিলো কিকিরা সমগ্র ২
অসময় অলৌকিক ম্যাজিশিয়ান কিকিরা সমগ্র ৩
সান্নিধ্য শীষের আংটি ভুনি কাকা'র চৌরশতম
দংশন হারানো জীপের রহস্য মজাদার এক ফুটবল ম্যাচ আর দানাপুরি
খড়কুটো কিশোর ফিরে এসেছিলো বন বিড়াল
মোহ মন্দাগড়'এর রহস্যময় জোৎস্না একটি ভুতের ঘড়ি
দ্বীপ হারানো ডাইরীর খোঁজে
প্রচ্ছন্য কালবৈশাখের রাত্রে
এ আবরণ রাবণের মুখোশ
স্বপ্নে একটি ফটো চুরির রহস্য
নিরস্র নীল বানরের হার
অশেষ একটি অভিশপ্ত পুঁথি ও অষ্ট ধাতু
বালিকা বধূ পাখী ঘর
দেয়াল বাঘের থাবা
মল্লিকা জাদুকরের রহস্যময় মৃত্যু
যদুবংশ সার্কাস থেকে পালিয়ে
পূর্ণ অপূর্ণ হলুদ পালক বাধা তীর
ভুলের ফাদে নবকুমার
তুরুপের শেষ তাস
সোনার ঘড়ির খোঁজে
হায়দার লেনের ১৩ নাম্বার বাড়ীর কফিন বাক্স
ঝিলের ধারে একদিন
ফুলদানী ক্লাব
সোনালী সাপের ছোবল
আজব দেশের গজব রাজা
সিনেমা
সিনেমার নাম সাল
বালিকা বধূ ১৯৬৭
বসন্ত বিলাপ উল্লেখ নেই
বালিকা বধূ (হিন্দি ) ১৯৭৬
যাদুবংশ এবং ছুটি ( খড়কুটো ) ১৯৬৭
দিল্লাগি ১৯৭৮
বনভূমি জানা নেই
বিমল কর ৮২ বছর বয়েসে তার বিধাননগরের বাসভবনে মারা যান । তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী তিন মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গিয়েছেন।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment