পঞ্চানন বর্মা
আয় আয় রে ক্ষত্রিয়গুলা, তোমাক ডাকোং বারম্বার।
তোমার কান নাই কি, অন্তর নাই কি কান্দন শুনবার?
হউক না কেনে দূর দূরান্তর, পর্বত নদী মাঝে।
ক্ষত্রিয় যদি ঠিক হইস তুঞি, তেঞো শুনবু কাছে।।
আতুরা কান্দন ক্ষত্রিয় কানে আপনে আসি নাগে।
হিদ্দে উঠে হুড়কা তুফান, শরীলে শক্তি জাগে।।
ক্ষত্রিয় তখন কি করে! –
“পাঞোএর ডরে পাহাড় ডাঙ্গে, ফিরিয়া না চায় বীর।
দুষ্টাক মারি আর্ত্তক তারি, তবে সে হয় রে থির।।
ক্ষত্রিয় এর ধর্ম্ম কি?
হিন্দু মুসলমান বিচার নাইরে, মানুষ জন্তু নয় ভিন্।
উল্সি ধায়া আর্ত্তের উদ্ধার, এই ক্ষত্রিয়ের চিন।।
বিপদ ঝন্ঝাট যতএ আইসে, ততএ উলসে চিত।
আপন বলে বিপদ দমায়, আর গায় ইষ্টের গীত।।
ক্ষত্রিয় নামটা শক্তি সমূদয়, ভগবানও যাক চায়।
সেই নামের এই দশা দেখিয়া হিয়া ফাটিয়া যায়।
যিনি ঠাকুর পঞ্চানন ও রায় সাহেব নামেও পরিচিত, তিনি কোচবিহারের একজন রাজবংশী নেতা, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, এবং সমাজ সংস্কারক ছিলেন। তিনি নিজের সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে ব্রাহ্মণ্য মূল্যবোধ ও রীতিনীতি পুনঃ জাগিয়ে তোলার জন্য একটি ক্ষত্রিয় সভা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৬ তারিখে কোচবিহার রাজ্যের মাথাভাঙ্গা মহকুমার খলিসামারী গ্রামে জোতদার পরিবারে পঞ্চানন বর্মার জন্ম হয়। জন্মের পর তার নাম রাখা হয় পঞ্চানন সরকার। পিতা খোসাল সরকার ছিলেন একজন জোতদার এবং মাথাভাঙ্গা মহকুমা কাচারির মোক্তার। তার মাতা ছিলেন শ্রীমতি চম্পলা সরকার। পঞ্চানন বর্মা ১৯৩৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায়
পরলোকগমন করেন।
তিনি ১৮৯৩ সালে সংস্কৃত ভাষায় অনার্স নিয়ে কলকাতা কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ১৮৯৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানসিক ও নৈতিক দর্শন বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯০০ সালে কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজ থেকে তিনি এল.এল.বি ডিগ্রি অর্জন করেন। রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে সর্বপ্রথম তিনিই এমএ ডিগ্রি এবং আইন বিষয়ে স্নাতক অর্জন করেন।
কর্মজীবনের প্রথমদিকে তিনি রংপুর আদালতে আইন অনুশীলন শুরু করেন। রংপুরে তিনি পূর্বে ব্যবহৃত টোগা (উকিলের গাউন) ব্যবহারে উচ্চ বর্ণের আইনজীবীর অস্বীকৃতি দেখে হতবাক হয়েছিলেন।
তিনি বাংলার বর্ণবাদী হিন্দুদের দৌরাত্ম ও নির্যাতনের শিকার রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষত্রিয় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি উত্তরবঙ্গের ক্ষত্রিয়দের অবহেলিত ক্ষত্রিয় থেকে আর্য জাতির পৌন্ড্রক্ষত্রিয় হিসেবে উচ্চবর্ণের বাঙালিদের শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতি অর্জন করতে এই আন্দোলন করেন। তিনি মনে করেছিলেন রাজবংশীদের অবশ্যই সংগঠিত ও শিক্ষিত হওয়া উচিত যা তিনি ক্ষত্রিয় সভার মাধ্যমে অর্জন করার চেষ্টা করেছিলেন। এই সমিতিটি প্রমাণ করে যে রাজবংশীরা রাজকীয় বংশের ক্ষত্রিয় ছিলেন এবং কোচবিহারের রাজা বিশ্ব সিংহের সাথে তাদের ঐতিহাসিক ভাবে যোগসূত্র রয়েছে। সংস্কৃত সাহিত্য এবং ব্রাহ্মণ পন্ডিতদের উপর ভিত্তি করে তারা শতাব্দী ধরে পরশুরামের ভয়ে নিজেদের সত্য পরিচয় গোপনকারী ক্ষত্রিয় বলে প্রমাণ করেছিল। এই দাবির সমর্থনে এই আন্দোলনটি একটি আনুষ্ঠানিক ক্ষত্রিয়করণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করে। বাংলা ১৩১৯ সালের ২৭ মাঘ পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে লক্ষাধিক রাজবংশীর গণউপনয়ন করা হয় । যার ফলে উত্তরবঙ্গের গ্রামগুলিতে কয়েক হাজার রাজবংশীকে ‘ক্ষত্রিয় রাজবংশী’ হিসাবে প্রমাণ করার জন্য তাদের মধ্যে ব্রাহ্মণ্য রীতিনীতির পুনঃপ্রবর্তন করা হয়েছিল।
ক্ষত্রিয় আন্দোলন করায় তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব জনপ্রিয় ছিলেন। তাই তিনি রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। ১৯২০ সালে সর্বপ্রথম তিনি সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। একই ধারাবাহিতায় তিনি ১৯২৩ ও ১৯২৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও তিনি জয়লাভ করেন।
তিনি রাজবংশীদের জন্য ১৩১৭ সালের ১৮ জ্যৈষ্ঠ রংপুর জেলায় ক্ষত্রিয় সমিতি তৈরি করেন । তিনি রংপুর জিলা স্কুলে রাজবংশী ছাত্রদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য ক্ষত্রিয় ছাত্রাবাস প্রতিষ্ঠা করেন। দরিদ্র রাজবংশীদের সহায়তা করতে তিনি কুড়িগ্রামে ক্ষত্রিয় ব্যাংক স্থাপন করেন। এছাড়াও তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি ক্ষত্রিয় পত্রিকা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। রাজবংশী সম্প্রদায়ের অবস্থার উন্নতির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরিতে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন।
তিনি রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তার সম্প্রদায়ের মধ্যে সাহিত্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রকাশিত রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় ১৩১৩ থেকে ১৩১৯ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
রাজবংশী সম্প্রদায়ের অধিকার আদায় এবং তাদের অবস্থার উন্নতিকল্পে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ ভারতীয় সরকার কর্তৃক তিনি ‘রায় সাহেব’ এবং মেম্বার অফ ব্রিটিশ এম্পায়ার (এমবিই) উপাধিতে ভূষিত হন।
অনেকেই তাকে রাজবংশী জাতির জনক হিসেবে অভিহিত করেন।
1901 সালে ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার রংপুরে যাওয়ার আগেই হরমোহন খাজান্চী মহাশয় ক্ষত্রিয় আন্দোলন শুরু করেন অর্থাৎ রাজবংশীরা ক্ষত্রিয় এটা সেনসাস রিপোর্টে লেখার দাবী তোলেন। 1317 সালের 18ই বৈশাখ রবিবার রংপুর নাট্যমন্দিরে ক্ষত্রিয় সমিতির প্রথম অধিবেশন আরম্ভ হয়। এই অধিবেশনে প্রায় 400 লোকের সমাগম হয়।
ক্ষত্রিয় আন্দোলনের সময় 5টা প্রস্তাবের অন্যতম হল দ্বিতীয় প্রস্তাব – রাজবংশী ও কোচজাতি দুইটি পৃথক জাতি ইহা গভর্নমেন্ট কে জানানো।
কোচ জাতি এই নামটা বা শব্দটা ঐ সময়ে প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ সরকার বা এথনোলোজিস্টদের কাছে আগের থেকেই লিপিবদ্ধ ছিল এই কোচ শব্দটা। রাজবংশী শব্দটা সেই অর্থে কিন্ত নতুন সৃষ্টি। নামের থেকে বড় কথা হল ক্ষত্রিয় আন্দোলনের যিনি প্রথম আহ্বায়ক ওঁনার আর তার সহযোগী কিছু ব্যক্তিবর্গের ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। যদি কোচ আর রাজবংশীর ভাষা কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মিলে যায় তাহলে নাম দিয়ে কি যায় আসে। তাছাড়া তিওর রাজবংশী বলে একটা জাতি আছে যাদের দক্ষিণবঙ্গে বসবাস। সেইসময়ে কিছু ব্যক্তিবর্গের তিওর রাজবংশী যোগসূত্র থাকাটা সম্ভব কিনা বলা মুশকিল।
ক্ষত্রিয় সমিতির প্রথম সভার অন্য প্রস্তাবনার মধ্যে ছিল-
ধনভান্ডার স্থাপন:
প্রথম সভাতেই মোট 960 টাকা সংগৃহীত হয়।
ছাত্র নিবাস:
14700 টাকা ব্যয়ে 32জন ছাত্র বাসের জন্য পাকা বাড়ি নির্মিত হয়। (এই সভার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত যাদবেশ্বর তর্করত্ন মহাশয়।)
উপনয়ন গ্রহণ :
জলপাইগুড়ির দেবীগন্জের করতোয়া নদীর তীরে। যা দেবীগন্জের মিলন ক্ষেত্র নামে পরিচিত। “27শে মাঘ নির্ব্বিঘ্নে মিথিলা, কামরুপ ও নবদ্বীপের বিখ্যাত পন্ডিত মহাশয়গণের অধ্যক্ষতায় উপনয়ন সমাপ্ত হয় এবং সম্পাদক পঞ্চানন বর্মা তাঁহার মাতা চম্পলা দেবীর নিকট ভিক্ষা গ্রহণ করেন। “
রংপুর কলেজ ও ক্ষত্রিয় সমিতি:
রংপুর কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য গুপ্ত সাহেব (মিঃ জে এন গুপ্ত, আই সি এস, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ) 25 হাজার টাকা চেয়েছিলেন কিন্তু অন্যান্য জেলার ক্ষত্রিয়গণের বিরোধিতায় সমিতি থেকে কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি।
জার্মান যুদ্ধ:
1322 সালে গোয়ালপাড়া থেকে 400/450 ক্ষত্রিয় সৈন্য যোগ দেয়। করাচীর সেনাধক্ষ্য পন্চানন বর্মার নিকট স্বেচ্ছায় লিখিলেন “The men of this (Kshatrya) Community make better soldiers than most of others.”
সাহিত্য সেবা :
ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার বঙ্গ সাহিত্যে দান যথেষ্ট। শ্রীযুক্ত সুরেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরী মহাশয় ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার সহযোগিতায় “উত্তরবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ” প্রতিষ্ঠা করেন। ছিল্কা স্বাধীন কামরুপ বা কুচবিহার রাজ্যের গ্রাম্য ভাষায় রচিত তা উদ্ধার আর প্রচারের জন্য অশেষ যত্ন ও চেষ্টা করেছিলেন।
ক্ষত্রিয় পত্রিকা :
অশিক্ষিত ক্ষত্রিয় সমাজ প্রচলিত সংবাদপত্রের খবর রাখেনা।তাদের গ্রামের বাইরেও যে বিশাল জগৎ আছে এবং দৈনিক কিছু না কিছু ঘটতে চলেছে তার খবর রাখে না। ক্ষত্রিয় সমাজের জন্য রায়সাহেব “ক্ষত্রিয়” নামে এক মাসিক পত্রিকা চালু করেছিলেন।
ক্ষত্রিয় ব্যাঙ্ক :
1320 সালের সাধারন সভায় রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা একটি ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তাব তোলেন ক্ষত্রিয় সমাজকে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। রংপুর টাউনে উপযুক্ত ক্ষত্রিয় না থাকায় সেখানে ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্ত 1327 সালে ক্ষেত্রনাথ সিংহ মহাশয় কুড়িগ্রাম থেকে রংপুরে ওকালতি করতে আসলে ওনার উদ্যোগেই পরবর্তীতে ক্ষত্রিয় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
লাইব্রেরী :
শাস্ত্র প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তিনি একটি লাইব্রেরির অভাব অনুভব করে যত্নপূর্বক একটি ছোট্ট লাইব্রেরী স্থাপন করেছিলেন।
ডাংধরী মাও
নিদ্রিত ক্ষত্রিয়কে জাগিয়ে তোলার আকূল আগ্রহে রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা বিহ্বলমনা হয়েছিলেন, বৃদ্ধবয়সে যুজনচিত ভাব “ডাংধরী মাও” রুপে কবিতায় কাব্যে প্রকাশ পেয়েছিল। পুরুষ যদিও ডাকে সাড়া দিচ্ছিলনা কিন্তু মহাশক্তির অংশরুপা নারী জাতি জেগে উঠল নারীর আর্ত্তনাদে-
চমকি উঠিল ডুকরণ শুনি, ডাংধরী মোর মাও।
দিশাদুওর নাই খালি কোল্লহার, দেখে সংসারের ভাও।।
সোয়ামীর কোলা, বাপ ভাইর ঘর, আর যেইটে নারী থাকে।
জোর করিয়া নুচ্ছাগুন্ডায় নিয়া যাইতেছে তাকে।।
বেটা ছাওয়ালা উঠিয়া আইসে, ফ্যাল্ ফ্যাল্ ফ্যাল্ চায়।
ডাংধরী মাও, কোর্দ্ধে হাকি, গাইন ধরিয়া ধায়।
বেটা ছাওয়ার প্রতি-
ছিকো ছিকো রে মরা বেটা ছাওয়া, ধিক্ ধিক্ তোক্ ধিক
মাও বইনক তোর পরে নিগায়, তেঞো থাকিস্ তুই ঠিক।
আরে মরদ্ মরদ্ কওলাইস রে তুঞি কেমন তোর মর্দানি।
কেবল পাথার বাড়ী হাতে আসি, মাইয়ার আগত কেরদানী?
লাজ নাই তোর, হিয়াও নাই তোর, বল্ নাই তোর ধড়ে।
এই বাদে তোক টেপো বউ ছিকো ছিকো করে।।
কেবল দুষ্টাদমন মোকদ্দমায়, ফিরে না ধরম মান।
ভাঙ্গি নুচ্ছার হাড়, মাও বইনের রক্ষা, বাপের বেটার কাম।।
রাখির না পারিস, মাও মাও বইনক যদি আপন বাহুবলে।
পাপের বোঝা বইছিল মাও তোর, এই দশা তার ফলে।। “
ডাংধরী মায়ের ডাকে যখন নিদ্রিত পুরুষ যখন জাগল না, মানুষ উঠল না, তখন কে অত্যাচারিত কে রক্ষা করে! হতাশ হয়ে” ডাংধরী মাও” ক্ষাত্র শক্তিকে ডাকতে লাগলেন।
শেষজীবন ও মৃত্যু
মৃত্যুর কয় বছর আগের থেকেই ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা সাংসারিক অভাব অভিযোগে বিশেষ কষ্ট পেয়েছিলেন। কুচবিহার রাজ্য থেকে অবিচারে 5 বছর বহিস্কৃত হওয়ার জন্য সংসারের কোনো শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারেন নি। একমাত্র পুত্র শ্রীমান পুষ্পজিত বর্মন বহু চেষ্টা করেও বি. এ পাশ করতে না পারায় তিনি মনে বড় আঘাত পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সংযমী চরিত্রের। উদারতা আর মহত্তগুণে তাঁহার চরিত্র আরো মনোরম হয়ে উঠত। তিনি নির্ভীক ও স্পষ্ট বক্তা ছিলেন। ক্ষত্রিয় সমিতিকে তিনি প্রাণের সহিত ভালো ভাসতেন এবং দিনরাত সমাজের কিভাবে উন্নতি করা যায় সেই চিন্তায় করতেন।
1935 সালের জলপাইগুড়িতে সমিতির বার্ষিক অধিবেশনের ব্যবস্থার সময় অর্থ সংগ্রহের জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের দরুন শরীর খারাপ হয়ে যায়। অধিবেশনের কাজ শেষ হওয়ার পরে পরেই তিনি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। কিন্ত ডাক্তারদের চেষ্টা ও অন্যান্যদের আন্তরিক শুশ্রষা সত্বেও রক্তহীনতা ও পক্ষাঘাত রোগে অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যেতে থাকে। মোটামুটি 20/22 দিন রোগ যন্ত্রণা ভোগের পর ইংরেজি 1935 সালের 9 সেপ্টেম্বর তারিখে মেডিক্যাল কলেজেই দেহত্যাগ করেন। তাঁহার মৃত্যু উপলক্ষে কলকাতা ও বিভিন্ন জেলায় বহু শোক সভার অনুষ্ঠান হয়েছিল।
================{{================
No comments:
Post a Comment