আলেকসান্দার সের্গেয়েভিচ পুশকিন
রাশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি এবং আধুনিক রুশ সাহিত্যের জনক আলেকসান্দার সের্গেয়েভিচ পুশকিন । পুশকিন ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার। তাঁর বিখ্যাত কবিতা—‘দ্য ব্রোঞ্জ হর্সম্যান, নাটক—‘দ্য স্টোন গেস্ট’, কাব্যিক নাটক—‘মোৎসার্ট অ্যান্ড সেলেইরি’, ছোটগল্প—‘দ্য শট’, ‘দ্য টেলস অব দ্য লেট ইভান পেত্রোভিচ বেলকিন’ প্রভৃতি। তাঁর প্রায় সব রচনাই ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এ ছাড়া ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, জার্মান, পোলিশসহ আরও অনেক ভাষায় রুশ এই কবির লেখা অনূদিত হয়েছে।
১৭৯৯ সালের ২৬ মে রাশিয়ার মস্কোতে একটি অভিজাত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ছিল সের্গেই লভোভিচ পুশকিন আর মায়ের নাম নাদেজদা (নাদিয়া) ওসিপোভনা গ্যানিবাল। পণ্ডিতদের গবেষণায় প্রতিষ্ঠিত যে পুশকিনের প্রপিতামহ আব্রাম পেত্রোভিচ গ্যানিবাল বর্তমান ক্যামেরুনের চাদ হ্রদের সীমান্তবর্তী এলাকায় জন্মেছিলেন। সামরিক প্রকৌশলী হিসেবে ফ্রান্সে শিক্ষা লাভের পর গ্যানিবাল রেভালের গভর্নর হন এবং পরবর্তীকালে রাশিয়ার সমুদ্র দুর্গ ও খাল নির্মাণের দায়িত্ব নিয়ে জেনারেল ইন চিফ (তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক পদপর্যাদা) পদ লাভ করেন।
মস্কোয় জন্ম নেওয়া পুশকিন ধাত্রী ও ফরাসি শিক্ষকদের কাছ থেকে ফরাসি ভাষা শেখেন। ১০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি ফরাসি ভাষায় কথা বলতেন। তবে গৃহভৃত্য এবং আয়া আরিনা রাদিওনোভনার মাধ্যমে তিনি রুশ ভাষার সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
১৫ বছর বয়সে পুশকিনের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। সেন্ট পিটার্সবুর্গের কাছে সারস্কোয়ে সেলো শহরের মর্যাদাপূর্ণ ইম্পোরিয়াল লাইসিয়াম থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৮২০ সালে তাঁর প্রথম দীর্ঘ কবিতা ‘রুসলান ও লুভমিলা’ প্রকাশ করেন পুশকিন। ইতিমধ্যে তাঁর প্রতিভা রুশ সাহিত্যজগতে পরিচিতি লাভ করে।
পুশকিন উদারনৈতিক ব্যক্তিত্ববাদ এবং ফরাসি চিন্তাবিদ দিদেরো ও ভলতেয়ারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। ধীরে ধীরে সমাজসংস্কারক এবং সাহিত্যিক সংস্কারবাদীদের মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হন। এর মধ্যে তিনি নিজের লেখা বিতর্কিত কবিতা ‘ওডে টু লিবার্টি’ আবৃত্তি করেন, যা রাশিয়ার জার প্রথম আলেকসান্দারকে ক্ষুব্ধ করে। ফলে ১৮২০ সালে তৎকালীন রাজধানী সেন্ট পিটার্সবুর্গ ত্যাগ করতে বাধ্য হন পুশকিন।
অতঃপর ককেসাস, ক্রিমিয়া, কামিয়ানকা ও মলদোভার কিশিনাউতে নির্বাসিত জীবনযাপন করেন এই কবি। এ সময় তিনি গ্রিক বিপ্লবে অনুপ্রাণিত হন এবং ফিলকি ইটেরিয়া নামে একটি গোপন সংগঠনে যোগ দেন।
১৮২৩ সালে কিশিনাউয়ে অবস্থানকালে ‘ককেসাসে বন্দী’ ও ‘বখচিসারাইয়ের ফোয়ারা’ নামে দুটি রোমান্টিক কবিতা লিখে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। ১৮২৩ সালে পুশকিন ওডেসা চলে যান। এ সময় তিনি আবারও সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান। ফলে তাঁকে তাঁর মায়ের গ্রামীণ এস্টেট মিখাইলভস্কায়ে ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ সাল পর্যন্ত নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়।
প্রবল ব্যক্তিত্ব আর অসাধারণ রোমান্টিকতা দিয়ে অনেক নারীর মন জয় করে পুশকিন কাউকে সরাসরি ভালোবেসেছেন, কাউকে করেছেন শ্রদ্ধা। আবার কেউ কেউ ছিল কেবলই তাঁর কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা। পুশকিনের মন জয় করা নারীদের তালিকায় রয়েছে দুটো ভাগ। প্রথম ভাগে আছে ১৬টি নাম, দ্বিতীয় ভাগে ১৮টি। প্রথম ভাগে যে নামগুলো আছে তাঁদের প্রত্যেককেই তিনি ভালোবেসেছেন। সেই তালিকার কয়েকজনের নাম হলো ইয়েকাতেরিনা আন্দ্রেয়েভনা কারামজিনা, আভদোতিয়া ইভানোভনা গোলিৎসিনা, আমালিয়া রিজনিচ, এলিজাবেতা একাক্সাভেরিয়েভনা, আনা আলেক্সেয়েভনা আন্দ্রো, আনা পেত্রোভনা কার্ন। আনা কার্নকে লেখা ‘টু’ কবিতাটি রুশ ভাষায় লেখা সবচেয়ে বিখ্যাত প্রেমের কবিতা। এখানে বলা দরকার, আলোচিত এই নারীদের প্রায় সবাই ছিলেন রূপবতী এবং অভিজাত পরিবারের বিবাহিতা নারী।
১৮২৫ সালে মিখাইলভস্কা এস্টেটে নির্বাসনের সময়ে পুশকিন তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত নাটক ‘বোরিস গোদুনোভ’ লেখেন, পাঁচ বছর পরে এটি প্রকাশিত হয়। তাঁর কাব্যিক উপন্যাস ‘ইউজিন ওনেজিন’, ১৮২৫ সাল থেকে ১৮৩২ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে লেখা হয়।
১৮২৮ সালে পুশকিন ১৬ বছরের নাতালিয়া গনচারোভারের সঙ্গে পরিচিত হন। সেই সময়ে নাতালিয়া গনচারোভার ছিলেন মস্কোর সর্বাধিক আলোচিত সুন্দরীদের একজন।
তিনি ছিলেন ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের কন্যা। এ সময় ঘটে আরেকটি ঘটনা—সেনাবাহিনীতে যোগ দেন পুশকিন। সেখান থেকে দুই বছর পর ফিরে বিয়ের প্রস্তাব দেন নাতালিয়াকে। ১৮৩০ সালে তাঁদের বাগদান হয় এবং ১৮৩১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়। পুশকিন ও নাতালিয়ার ঘরে জন্ম নেয় চার সন্তান-মারিয়া, আলেকসান্দার, গ্রিগোরি ও নাতালিয়া। উল্লেখ্য, আলেকসান্দার ও নাতালিয়ার বংশধর এখনো বেঁচে আছেন। পুশকিনকন্যা নাতালিয়ার নাতনি নাদেজদার বিয়ে হয় বর্ধিত ব্রিটিশ রাজপরিবারে। চমকপ্রদ তথ্য হলো, কবির বংশধরেরা এখন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র ও লুক্সেমবার্গে বসবাস করেন।
জুয়া খেলে প্রায়ই হারতেন পুশকিন। ঋণী হয়ে পড়তেন। ঋণ শোধ করার জন্য প্রকাশকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে লিখে ফেলতেন কবিতা, গল্প বা উপন্যাস। এভাবেই তিনি ঋণের টাকা পরিশোধ করতেন।
১৯৩৬ সালে তিনি খুব বেশি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ সময়ে তাঁর স্ত্রী ফরাসি সেনাবাহিনীর অফিসার জর্জেস দান্তেসের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বলে গুজব রটে। এ বাস্তবতায় দান্তেসকে দ্বন্দ্বযুদ্ধের আহ্বান করেন পুশকিন। কথিত আছে, এই দ্বন্দ্বযুদ্ধে জার সরকারের সংশ্লিষ্টতা ছিল। ১৯৩৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুশকিনের সঙ্গে দান্তেসের দ্বন্দ্বযুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। দান্তেস প্রথম গুলি চালিয়ে পুশকিনকে গুরুতর আহত করেন। এর দুই দিন পর ১০ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে সেন্ট পিটার্সবুর্গের নিজ বাড়িতে মারা যান রাশিয়ার এই কণ্ঠস্বর।
সেই বাড়িটি বর্তমানে পুশকিন জাদুঘর। অকালে মারা গেলেও পুশকিন আজও আধুনিক রুশ সাহিত্যের জনক বলে স্বীকৃত। ভাষার ওপর আশ্চর্য দক্ষতা, প্রাঞ্জলতা ও গভীরতা ছিল তাঁর সাহিত্যের মূল বৈশিষ্ট্য।
সাহিত্যে অবদান:
পুশকিন বিভিন্ন সাহিত্য শৈলীতে লেখার মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে শ্লোক, বাগধারা এবং নাটক। কেন তিনি এত বিভিন্ন ঘরানার সঙ্গে পরীক্ষা মনে করেন? লেখক হিসাবে তার সাফল্যের উপর অন্য ফর্মগুলির তুলনায় বিশেষ করে কোন ফর্ম কি একটি বড় প্রভাব ফেলেছিল? কেন অথবা কেন নয় ব্যাখ্যা করুন।
পুশকিন সনেটের বেশ কয়েকটি উদাহরণ পড়ার পরে, আপনার পছন্দের যেকোনো বিষয়ে আপনার নিজস্ব একটি পুশকিন সনেট লিখুন। aBaBccDDeFFeGG ছড়া স্কিমটি অনুসরণ করুন, যেখানে ছোট হাতের অক্ষরগুলি মেয়েলি ছড়াগুলিকে উপস্থাপন করে এবং বড় হাতের অক্ষরগুলি পুংলিঙ্গের ছড়াগুলিকে উপস্থাপন করে৷ কেন আপনি মনে করেন পুশকিন সনেট ফর্মটি ইতালীয় এবং এলিজাবেথান সনেট ফর্মগুলির মতো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় না?
ঐতিহ্যগতভাবে, পুশকিন হলেন সর্বাধিক শ্রদ্ধেয় এবং সর্বাধিক পঠিত রাশিয়ান লেখক। আজও, বেশিরভাগ রাশিয়ান তার কবিতার শ্লোক আবৃত্তি করতে পারে। জাতীয় সাহিত্য সম্পর্কে আপনার ধারণা কী? পুশকিন কীভাবে একজন লেখকের ছবিতে অবদান রেখেছিলেন যিনি একজন নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং আদর্শিক ব্যক্তিত্বও?
জার নিকোলাস I এর রাজত্ব নিয়ে গবেষণা করুন। কেন জার পুশকিনের কাজকে ভয় পেয়েছিলেন? আপনার অনুসন্ধানগুলি প্রস্তুত করুন এবং সেগুলি আপনার সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করুন।
রোমান্টিক শিকড় তার নির্বাসনের সময়, পুশকিন রোমান্টিক কবি জর্জ গর্ডন, লর্ড বায়রন দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। দ্য ফাউন্টেন অফ বাচ্টশিসারাই , দ্য রবার-ব্রাদার , দ্য বোহেমিয়ানস , এবং অন্যান্য পুশকিনের কবিতা সবগুলোই বায়রনের সাথে ঘনিষ্ঠ পরিচিতির দৃঢ় চিহ্ন চিত্রিত করে। তাদের একটি অনুরূপ ফর্ম আছে; তাদের নায়ক ও নায়িকারা বায়রনের কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ; বিষণ্ণ রঙ, অপরাধবোধ এবং ভাগ্যের মধ্যে রহস্যময় সংযোগ একই। যদিও বায়রন একটি বিদেশী বিশ্ব থেকে তার বিষয় নিয়েছিলেন, পুশকিন তার প্রজাদের স্থান এবং একটি সমাজ থেকে নিয়েছিলেন যার সাথে তিনি পুরোপুরি পরিচিত ছিলেন। ফলস্বরূপ, তিনি তাদের একটি স্বতন্ত্র স্থানীয় স্বন এবং রঙ দিতে সক্ষম হন।
Romantic Roots During the time of his exile, Pushkin was greatly influenced by Romantic poet George Gordon, Lord Byron. The Fountain of Bachtshisarai, The Robber-Brother, The Bohemians, and other Pushkin poems all portray strong traces of an intimate acquaintance with Byron. They have a similar form; their heroes and heroines resemble those of Byron's poems; the gloomy coloring, the mysterious connection between guilt and fate are the same. Though Byron took his subjects from a foreign world, Pushkin took his subjects from places and a society with which he was thoroughly familiar. Consequently, he was able to give them a distinctly local tone and color.
The Pushkin Sonnet Pushkin's Eugene Onegin shows that Byron's influence was only temporary. In addition to its pure, expressive language, which is the hallmark of Pushkin's style, the work features character types that appear frequently in later Russian fiction: the “superfluous man,” represented by Onegin, and the idealized Russian woman, characterized by Tatiana.
Eugene Onegin was eight years in the making. The very form of the novel indicates Pushkin's early discomfort with conventional genres, his striving to make his own mark in an original way. First of all he called his work not simply a novel but (and he emphasized this) a “novel in verse” and termed its sections “chapters” rather than “cantos.” While clearly seeking to be innovative, he also showed an awareness of European models.
A New Direction for Russian Literature In his prose, Pushkin rejected the literary tradition that considered fiction an inferior genre. Pushkin's movement away from sentimental fiction of the late eighteenth century signaled a new direction for Russian literature. Scholars note that the realistic scenes and characters in Eugene Onegin provided a model for his nineteenth-century successors, including the notable writers Fyodor Dostoyevsky, Ivan Turgenev, Leo Tolstoy, and Nikolai Gogol. All have acknowledged their debt to Pushkin, whose work continues to influence even the modern Russian novel.
Works in Critical Context
Although Pushkin is rarely read outside his homeland, many critics recognize him as the greatest and most influential Russian writer in history. Scholars attribute this lack of foreign readership to the fact that Pushkin's style is difficult to translate. For instance, while Pushkin's combination of vernacular speech and Slavic language appeals to Russian readers, his stylistic qualities and subtlety of characterization and plot development deny translation beyond the literal. Pushkin's admirers are quick to point out that while foreign readers might not be directly acquainted with his works, almost every Russian composer of note and several European ones have some work based on one of Pushkin's writings.
###############################
No comments:
Post a Comment