Sunday, 23 August 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ



∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
                     অনু নাটক সংখ্যা
                             পর্ব -২

==========///////=========///////======
          Doinik Sabder Methopath
             Vol -109. Dt - 24.8.20
              ৭ ভাদ্র, ১৪২৭. সোমবার
################################

                 কমিউনিটি চিকেন
                 পার্থসারথি চক্রবর্তী

                      পাড়ার ছেলেরা কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছে এই দুর্দিনে। কিন্তু  চিন্তা, আর কতদিন চালানো যাবে! সবাই সাধ্যমত করছে। ব্যাংকে বেশিরভাগটা  আসছে।সবাই দলবেঁধে গেল নিরাপদবাবুর বাড়িতে।

দরজায় ঠকঠক শুনে,   'কে ?'

'আজ্ঞে, পাড়া থেকে । আমরা দেখলাম আপনার আয় মাসে লক্ষ টাকা । অথচ আপনি একটাকাও দেননি কিচেনে '।

'হুম। ভেতরে এসো '।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও  ভেতরে গেল।

পুরো ঘরে খাবার প্যাকেট হচ্ছে। এক মহিলা ও এক বৃদ্ধা।

' আমার স্ত্রী ও মা। প্যাকেটগুলো নিয়ে রোজই যাই মহল্লায়।'

 সবাই চুপ।

'তা আমাদেরও কিছু সাহায্য করতে পারেন ।' ক্লাবের সভাপতি বললেন।

' দাড়াও। ' বলে আলমারি খুলে চেকবুক বের করলেন। '

সবাই স্তম্ভিত। ক্লাবের নামে যে প্রতিমাসে ষাটহাজার টাকা আসে, সেটা এন. ঘোষ মানে নিরাপদ বাবু পাঠান।তারপরও নিজের থেকে আবার....

শ্রদ্ধায় সবার মাথা নত ..........
-----------/---------------/--------------
গোলাপি বইয়ের পাতা
শুভ্রাশ্রী মাইতি

চরিত্র--মিনু(১০),মিনুরবাবা(৩০),মা(২২),বিডিও(৪২)
  স্হান--মিনুর বাড়ী । সময় - সন্ধ্যা বেলা।

বাবা।।শোন্ মিনু,আইসছে বুধবার তোর বিয়া।

মিনু(কাঁদো কাঁদো স্বরে)।।বিয়া!মোর! কিন্তু মুই যে পইড়তে চাই বাবা...মোর গুলাপী বইটার পাতায় আঁকা মাইনষটার মত।দিদিমণি কইছে...

বাবা(ধমকের সুরে)।।দিদিমণি কইছে...হুঃ...কইলেই হবে?এতগুলান লোকের প্যাটের ভাবনাটা কে ভাইববে বটেক?

মা।।আর অমত করিসনি মা।উরা যে অনেক ট্যাকা দিবে ...তুইও  দুবেলা খাতি পাবি প্যাট পুরা।
                  (মিনু নীরব।)

           ।। দৃশ্য--২।।
      ।  স্হান-- মিনুর বাড়ী(বিয়ের আসর)। 

( গাড়ীর আওয়াজ।পুলিশ সহ বিডিও-র প্রবেশ)

বি.ডি.ও.।।মিনু কোথায়?কোন ভয় নেই ,আমরা এসে গেছি। ভাগ্যিস,খবরটা সময়মতো পৌছে ছিল অফিসে।
  (বিয়ের সাজে বেরিয়ে আসে মিনু।চোখে নিঃশঙ্ক দৃষ্টি।হাতের মুঠোয় সেই আশ্চর্য পাতলা গোলাপী বই।)

মিনু।।মুই জানতেম,তুমি ঠি...ক আইসবে।

 বিডিও(বিস্মিত স্বরে)।।জানতে...কিন্তু... কি ভাবে?

মিনু।।কিন, ই বইয়ের মাইনষটাই তো মোকে কয়্যা দিছে গো ইকথা।

(মিনুর তুলে ধরা গোলাপী বইটার প্রচ্ছদে এক চওড়া কপাল মানুষের আলোমাখা মুখটা জ্বলজ্বল করে উঠল হ্যাজাকের আলোয়।)
---------------/---------------/----------
              যৌতুক 
          গোবিন্দ মোদক  

(পাত্রী-দেখা এবং পছন্দ-পর্ব শেষ। সবাই এদিক-ওদিক রয়েছে। ঘরে শুধু দু'জন -- পাত্রীর বাবা অমর এবং পাত্রের বাবা আনন্দ।)
অমর- তাহলে আনন্দবাবু, আমাদের রূপসাকে যখন আপনাদের পছন্দ হয়েছে তখন বলুন দেনা-পাওনা যদি কিছু ....
আনন্দ- আরে ছিঃ ছিঃ অমরবাবু ! কি বলছেন আপনি ! রূপসাকে আমার ঘরের লক্ষী করে নিয়ে যাচ্ছি । এতে দেনা-পাওনার প্রশ্ন আসছে কেন ? ও তো আমারও মেয়ে ! 
অমর- একশোবার ! কি যে ভালো লাগছে আপনার কথা শুনে !
আনন্দ- আপনি খুশি হয়েছেন তো ! যাক, ভালো ! তবে এই খুশির প্রসঙ্গে একটা কথা --- আমাদের ঋজু সদ্য আশি লাখের একটা ফ্ল্যাট নিয়েছে, কুড়ি লাখ টাকা বাকি আছে। ওটা যদি একটু ...। আরে, কাশছেন কেন ! 
অমর- না, মানে.... ঠিক আছে..., বলুন ! 
আনন্দ- আর আমাদের ঋজুর খুব শখ একটি চারচাকার ! ওটাও যদি একটু .....! আরে, কি হলো ! বুক ধরে বসে পড়লেন কেন ! শরীর খারাপ লাগছে? 
অমর- একটু জল ....একটু জল...
-----------/--------------/-------------


এক নৌকায়
বিশ্বনাথ পাকড়াশি


ড্যান্স-বারের মিউজিক । হা হা উল্লাস । উল্লাস বদলে যায় পুরুষকন্ঠে হাপরের মত শ্বাস টানায় । এতক্ষণে বারের মিউজিক বদলে গেছে আতঙ্ক-ছড়ানো এ্যাম্বুল্যান্সের চলা এবং ঘনঘন হর্ণের আওয়াজে ।)         

নারী     - কমলো টানটা ? হ্যাঁগো -

পুরুষ   - (শ্বাস নিচ্ছে শব্দ করে) হাসপাতাল কতদূর, এ্যাই ড্রাইভার ?

ড্রাইভার  - কোন হাসপাতাল ? সরকারি ? দেকুন, পরে ব্লেম দেবেন না । অদ্দূর যেতে ...(কাশি) শরীলটা ... রাতভোর

           পেশেন্ট টেনেচি (বড় শ্বাস )

নারী     - সে কী ?

ড্রাইভার  -ওখেনে সিঁড়িতে ফেলে রাখবে একবেলা । ততক্ষণে টস্‌কে যাবে পেশেন্ট । তার চেয়ে , আমি যেখেনে নিয়ে

           যাচ্চি ...আর হাজারতিনেক দিলেই –(কাশতে কাশতে দমসম )

পুরুষ   - (হাঁপাচ্ছে) চশমখোর একটা ! দাঁড়াও । জামাইকে ফোন লাগাচ্চি । বাম্বু হয়ে যাবে ।

ড্রাইভার  - গরম দেখাবেন না । কন্টাকের টাকাটা ক্যাশ দিন । এখনই । আমার মাথা টাল খাচ্চে ।  

নারী     - এ কী হে, তোমারও দেকচি...

ড্রাইভার  - গাড়ি সাইড করে দিচ্চি । হেবি জ্বর উটে গেচে ওঃ !

           (গাড়ির আওয়াজ বন্ধ । পুরুষ এবং ড্রাইভার দু’জনেই পাল্লা দিয়ে কাশতে থাকে । একজন থামলে অন্যজন ।)

পুরুষ   - (হাঁপাচ্ছে) কোনও ড্রাইভারকে ডাকো মোবাইলে । এসে নিয়ে যাক । নাহলে দুজনেই ...(কাশি)   

ড্রাইভার  -  ডেকেচি । (গোঙানি)

নারী       - বউ-ছেলেপুলে আছে তো বাড়িতে  ?

ড্রাইভার- সক্কলে আচে । চার মেয়ে । বউ, মা বাবা ।  সবকটাকে টানতে পাগলের মতুন ... ব্যাভারটা খারাপ হয়ে যাচ্চে ।                        

       স্যরি মাসিমা ।

নারী     -  বাঁচতে হবে সবাইকেই ।

            ( দুজনেই কাশছে । কাশি স্তিমিত । ‘দেশ’ রাগে আলাপ ।)

-------------/-------------/------------


মেয়ে মানুষ
তপন কান্তি মুখার্জি



(ব্রজেশ কাঁদছে , সীতেশ সান্ত্বনা দিচ্ছে । )
সীতেশ - চুপ কর ব্রজেশদা । কী করবে বল , 
              সবই নিয়তি । 
ব্রজেশ - সীতেশ , টলমল করতে করতে কখন 
             যে চলতে শিখে গেল মেয়েটা বুঝতেই 
              পারিনি । চোখের সামনে বড়ো হয়ে 
               গেল হঠাৎই । 
সীতেশ - আর মেয়েদের বড়ো হওয়া মানেই তো 
             নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা । ওরা হয়ে 
              যায় খাদ্য - কখনও চিলশকুনের , 
              কখনও শূকরের । 
ব্রজেশ - হ্যাঁ , ওই শূকরগুলোর ঘোঁতঘোঁতানির
              মধ্যেই হারিয়ে গেল আমার মেয়ে । 
              মানুষ হওয়ার আগেই হয়ে গেল 
              মেয়েমানুষ । (কান্না )
সীতেশ - হ্যাঁ , বড়ো সস্তার নরম মাংস । ছি । 
              ধিক্কার নরপশুদের । 
ব্রজেশ - বড়ো কষ্ট পেয়ে মরল মেয়েটা ।
              সতেরো দিন অচৈতন্য হয়ে ...। 
              নিজেকে প্রবোধ দিতে পারছি না । 
সীতেশ - চুপ কর । দেখো , পুলিশ কী করে । 
ব্রজেশ - যে মেয়ে এতোদিন জন্মদিনে 
              মোমবাতি নেভাতো , আজ তার জন্য 
              মোমবাতি জ্বালাতে হবে আমাকে ? 
              (কান্না )
--------------/-------------/--------------

                                    

        ধন্যবাদ
         গৌড় চাঁদ পাত্র


(পার্কে বসে গল্পে মশগুল বিমান, নন্দিনী ও হেমা)
বিমান: হেমা , টিউশানের সময় হয়ে গেল তো। যাবে না?
হেমা: হাঁ,যাচ্ছি বিমানদা।নন্দিনী যাবি না
নন্দিনী: আজ যেতে ইচ্ছে করছে না। তুই যা।
হেমা: ঠিক আছে। আসি বিমানদা।
বিমান: এসো।
   ( হেমা চলে যায়)
নন্দিনী: বিমানদা, হেমা কী বুঝতে পারে না যে তুমি ওকে আর ভালোবাসো না ?
বিমান: হেমা আমার বন্ধুর বোন।ওর বাড়ীতে গিয়েই তোমার সঙ্গে আলাপ।তোমাকে পাওয়ার জন্যে আমি কিন্তু হেমার কাছে কৃতজ্ঞ।
নন্দিনী: চলো, নৌকায় একটু বেড়িয়ে আসি।
বিমান: না।আজ যাবো না। গতকাল সন্ধ্যা থেকে জ্বর জ্বর করছে।উপসর্গহীন করোনা হচ্ছে। দেখি একটু টেস্ট করে।
নন্দিনী: ওমা, তোমার জ্বর। আগে বলবে তো। তুমি যাও। আমি আসছি।
( নন্দিনীর দ্রুত প্রস্থান। বিমান ঐদিকে তাকিয়ে থাকে।আলো নেভে।)
**********************
(কোভিড হাসপাতালের বিছানায় অসুস্থ বিমান)
বিমান: আঃ।কী কষ্ট।নন্দিনী, তুমি সুন্দরী,নাচ গান জানো। তাই হেমাকে ছেড়ে তোমাকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে পেতে চেয়েছিলাম।সেই তুমি আমার একবারও খোঁজ নিলে না। কিন্তু হেমা, প্রতিদিন এসে হাসপাতালের বাইরে বসে থাকে, ফোন করে, চিকিৎসার তদ্বির করে।সব ভুল।সব ভুল।--- এখন বুঝতে পারছি, হেমাই প্রকৃত--- । ধন্যবাদ করোনা। তুমি না এলে আমি ভুলই করতাম।
--------------/---------------/-------------


ঘর
অঞ্জন কুমার দাস



পরেশ-এবার তো ঘরে ফিরতে হবে । 
(উদাস হয়ে) নরেশ-কোথায়?
পরেশ- কেন তোমার ঘরে।
নরেশ-ওটা খুঁজে পাবো বলেই তো এখানে এসে ছিলাম।
ধু ধু বালুতটের তখন সমুদ্র গর্জন করছে ।
পরেশ- এখানে এসে ছিলে ঘর  খুঁজতে?
নরেশ- ঠিক তাই । ঘরের কোণে ই জন্ম নেয় নতুন প্রাণ । আমিও সেই নতুনের জন্ম দিতে এসে ছিলাম। আমার প্রেয়সী তো এলো না । তাই জন্মালো না নতুন প্রাণ।
পরেশ- তোমার প্রেয়সী কে ?
নরেশ- কল্পনা।
--------------/---------------/-----------

 দূরত্ব
 ডা: নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (নাট্যকার)



                --------প্রথম দৃশ্য --
একটি ফ্ল্যাটবাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট।  অবসরপ্রাপ্ত এক ভদ্রলোক ও তাঁর স্ত্রী লকডাউনের এই 
সময়ে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে যাপন করছেন। দীপালি ও সুরঞ্জন। দুজনেই আজ একটু আগে টিভির একটা 
খবর শুনে বিচলিত। 

সুরঞ্জন-- আর ভাল লাগেনা। একে এই দেড়মাসের উপর গৃহবন্দী, করোনার ত্রাসে প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত, 
      ৷ ৷ ৷ ৷ তারপর কাল দুপুরে আসছে সুপার সাইক্লোন। কি যে হবে। 

দীপালি - ওতো ভেবোনা তো, এই দুটো মাস তো কেটে গেলো, কালকেরটাও ঠিক কেটে যাবে। 

সুরঞ্জন -- একশো আশি কিলোমিটার গতিবেগ, সেটাই ভয় পাওয়াচ্ছে।  আর আমাদের এই অঞ্চলে গাছ 
পালাও কম নেই, তাই 

দীপালি - ছেলে দিল্লি থেকে ফোন করেছিল,মেয়েও গৌহাটি থেকে খোঁজ নিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরোতে 
বারন করেছে তোমাকে।  

সুরঞ্জন  - আমার চিন্তা হচ্ছে, মাঠে থাকে ঝুমা আর চয়ন কাঁচা বাড়ি, চারপাশে গাছপালা..
৷৷ কাল একবার তোমার ভাইপোর সাথে কথা বোলোতো, যদি আসতে পারে, সাংবাদিক, অসুবিধা হবেনা! 

দীপালি - রাত হয়ে গেছে, খেতে দিচ্ছি, খেয়ে শুয়ে পড়ো তাড়াতাড়ি। 
সুরঞ্জন - (উঠতে উঠতে)  হু, চলো... 

------------দ্বিতীয় দৃশ্য -----------

দীপালি - শুনছো, আমাদের হিমসাগর আমগাছ, কাঠাল গাছ পড়ে গেছে।  লোডশেডিং, রাতে ঝুমা আর 
চয়ন আসতে পারবেনা।  

সুরঞ্জন- আসবে কি করে, ভাবছি কেমন আছে ওরা!
জল ভরে দিয়ে গেছে, মুড়ি আছে, দুধ আছে, রাতটা তাই খাবো

দীপালি-  ফোনে ছেলে,বা মেয়ে কাউকেই পাচ্ছিনা। নেট নেই ।  আলো নেই। 
কাল সকালে আমি বেরোবো, তাড়াতাড়ি ডেকে দিও।

_---------------তৃতীয়  দৃশ্য --------_-

পাঁচদিন পর --
দীপালি - এই যে শুনছো, দেখো ঝুমা  রাস্তার কল থেকে আজও আগের চারদিনের মতো জল তুলে, দুধ এনে, বাজার করে 
৷৷৷ জল খাবার করতে রান্না ঘরে ঢুকে পড়েছে, আর চয়ন লোক ডেকে বাগান পরিস্কার করাচ্ছে। 

সুরঞ্জন -- আমি যে ওদের মন টাকে চিনি দীপালি, তাই এত উতলা হই ওদের জন্য 

দীপালি - ঠিক, বলেছো, ওরা আছে বলেই ছেলে মেয়ের অভাব বুঝিনা। 

সুরঞ্জন -সম্পর্ক এভাবেই গড়ে, আর দুরত্ব এভাবেই কমে আসে। 

দীপালি।- আমি আজ পাঁচদিন পর ছেলে আর মেয়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে এই কথাই বললাম
৷  তোরা নেই, কিন্ত সব দুরত্ব মুছে আমরা আরেকটা ছেলে, মেয়ে পেয়েছিরে। আর এ কদিন 
ওদের জন্যই খেতে, শুতে, পারলাম, সুস্থ হয়ে থাকতে পারলাম।

সুরঞ্জন - চোখে জল - চয়নের মা, মানে ঝুমার শাশুড়ী অসুস্থ, তাও ওরা এভাবে পড়ে থাকলো, 
প্রান দিয়ে, করে গেলো। মাত্র সাত বছরের সম্পর্কের গভীরতায়। 
দীপালি।- হুম, হয়তো, আগের জন্মে আমাদের সন্তান ছিল।।
---/----------/-----------------

বিষদাঁত
ডিএন প্রধান


          (চরিত্র - সাবিত্রী, কামিনী. স্থান- রাস্তায়.
                সময়- দুপুর বেলা)
কামিনী:  এত জটলা কেন ? 
সাবিত্রী : সাপুড়ে , পদ্ম গোখরা সাপ ধরেছে। এত                   বড় সাপ জীবনে দেখিনি !
কামিনী : তাই নাকি !
সাবিত্রী  : সাপুড়ের কি সাহস, বিষাক্ত সাপটা কে                     খপ করে ধরে ওর বিষদাঁত ভেঙ্গে  
                   ফেলল গা। 
কামিনী : এ আর এমনকি সাবিত্রী ?
 সাবিত্রী  : বলিস কিরে কামিনী , এ সাহস নয় ?
কামিনী :  আমি ওর চেয়ে ভয়ঙ্কর সাপের বিষদাঁত 
               নিজের হাতে ভেঙেছি।
 সাবিত্রী :  তাই নাকি, সাপটা কই ?
 কামিনী : ঐ তো তোর সামনে দাঁড়িয়ে।
 সাবিত্রী :  উনি ত তোর শ্বশর।
কামিনী  : শশুর নয়,  ভয়ঙ্কর শঙ্খচূড় সাপ। উনার 
                সমস্ত সম্পত্তি আজ খেজুরি রেজিস্ট্রি 
               অফিসে উনাকে নিয়ে গিয়ে আমি 
                নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছি ।সাবিত্রী  : বলিস কিরে কামিনী ?
 কামিনী  : তবে আর বলছি কি ?
---------------/---------------/-------

এডজাস্টমেন্ট
বিষ্ণুপদ জানা

চরিত্র : বিতান (স্বামী) ও বেবি (স্ত্রী, গ্রামীণ) এবং নীলা (পরস্ত্রী, অনিমেষের বউ, আধুনিক শহুরে)।স্থান : লঞ্চের ডাইনিং টেবিল । সময় :  এক বর্ষণমুখর  মধ্যাহ্ন। )

---- আমি তোমারও সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ,                  সুরের বাঁধনে …....

(কলিং বেল বেজে ওঠে , বেবি দরজা খোলে, ... গানটি মধুর সুরে বেজে চলেছে)

বেবি : কিগো তোমার আসতে এত দেরী হল !
বিতান : আর বলো না! যা অফিস হয়েছে ……
বেবি : এনলিস্টেড সব এনেছ ? । দেখি দাও ....
বিতান : মিলিয়ে দেখো। কি যে মনে করো, যতসব !
বেবি : রেগে যাচ্ছ কেন ? ফ্রেশ হয়ে নাও. লাঞ্চ রেডি করছি । 
বিতান : যাচ্ছি । ( টিং করে মোবাইলে ম্যাসেজ  - বর্ষায় দিনে মন বসছে না , ডার্লিং তোমার কাছে যাচ্ছি ,নীলা)
# # # # # # 
(বিতানের প্রিয় সব রান্না হয়েছে আজ, সাজানো  টেবিল-  সযত্নে পরিবেশন করছে বেবি)

বেবি : কি হলো ! শরীর খারাপ লাগছ ...
বিতান : (অন্যমনস্ক ভাবে বলে) এমন করছ কেন ? তুমি কি চিরকাল আনকালচারই থাকবে !

(হঠাৎ বাইরে কলিং)

বেবি দরজা খুলতে যাবে ,  বিতান বাধা দেয়। আরে দাঁড়াও , আমি দেখছি .….

বিতান : আরে , নীলা বৌদি যে । আসুন আসুন ।
 ( আনন্দে আপ্লুত হয়ে , হাসিমুখে বসতে বলেন ) বলুন , এমন বর্ষার দিনে মেঘপরী যেন , সো বিউটি ... । (চেয়ারটা আরো কাছাকাছি  ----মুখোমুখি )

বেবি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে, পূর্বের ঘটনাকে মনে করে । সভ্য যুগের পরকীয়া প্রেম কত মধুর .....
 আধুনিক স্বাস্থ্য বিধান মেনে।

উভয়ের অজান্তে পরের গানটি বেজে ওঠে -

----- দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পরে 
               আমার সুরগুলো  পায় চরণ
                      আমি পাই না তোমার ।।
-------------/------------------/_----------_


∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆









No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...