Sunday, 6 September 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
                জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

                       রাজনারায়ণ বসু
    ( ০৭.০৯.১৮২৬ - ১৮.০৯.১৮৯৯)
                      এবং 
                     সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
          (০৭.০৯. ১৯৩৪  - ২৩.১০.২০১২)
==============!!!!!!!!!!!!!============
            Doinik Sabder Methopath
           Vol - 123. Dt - 07.9.2020
           ২১ ভাদ্র,১৪২৭. সোমবার
¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶¶
                ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই সেপ্টেম্বর চবিবশ পরগণা জেলার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতার নাম ছিল নন্দকিশোর রামমোহন রায়। গ্রামের স্কুলে কিছুদিন লেখাপড়া করে তিনি কলকাতায় আসেন এবং কলকাতার হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন।
              ছাত্রাবস্থায় রাজনারায়ণ এক ধরনের স্বরূপের সংকটে পড়েন, বিশেষ করে ধর্ম নিয়ে। ১৮৪৫ সালের ডিসেম্বরে তাঁর পিতা মারা গেলে, এই সংকট আরও ঘনীভূত হয়। তিনি পরের বছরের শুরুতে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। এ সময়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে উপনিষদের ইংরেজি অনুবাদক হিসেবে ব্রাহ্মসমাজের কাজে নিয়োগ করেন। প্রায় দু বছর এ কাজ করলেও, তাঁর সত্যিকারের কর্মজীবন শুরু হয় সংস্কৃত কলেজে ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে (মে ১৮৪৯)। তারপর ১৮৫১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মেদিনীপুর জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৮৬৮ সালে অসুস্থতার কারণে তিনি এই কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

                      যথেষ্ট মাত্রায় পাশ্চাত্য প্রভাবিত এবং ইয়ংবেঙ্গল দলের সদস্য হিসেবে পরিচিত হলেও, পরে তিনি জাতীয়তাবাদীতে পরিণত হন। এ ব্যাপারে তাঁর বন্ধু দেবেন্দ্রনাথের প্রভাব তাঁর ওপরে পড়েছিলো বলে মনে হয়। দেবেন্দ্রনাথ সমাজচিন্তার দিক দিয়ে রক্ষণশীল ছিলেন এবং প্রাচীন ভারতের সভ্যতা-সংস্কৃতি নিয়ে গর্ববোধ করতেন। পরে রাজনারায়ণও দেবেন্দ্রনাথকে আরও বেশি রক্ষণশীল হতে সাহায্য করেন। ব্রাহ্মসমাজের মহিলাদের উপাসনার সময়ে প্রকাশ্যে পুরুষদের সঙ্গে একত্রে বসা উচিত কিনা, এ প্রশ্নে ব্রাহ্মসমাজ যখন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে, তখন কেশব সেন-পরিচালিত অংশ নববিধান ব্রাহ্মসমাজ নামে পরিচিত হয়, আর দেবেন্দ্রনাথের নেতৃত্বাধীন মূল রক্ষণশীল অংশের নাম হয় আদি ব্রাহ্মসমাজ। এতে রাজনারায়ণ কিছুকাল প্রধান আচার্য হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

দেশাত্মবোধ এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদী চিন্তায় আগাগোড়া নিমজ্জিত রাজনারায়ণ বসু মেদিনীপুরে ‘জাতীয় গৌরব সম্পাদনী সভা’ এবং বেশ কয়েক বছর পরে কলকাতায় সঞ্জীবনী সভা নামে দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। স্বাজাত্যবোধ এবং জাতীয়তাবোধ উদ্রেক করার জন্যে নবগোপাল মিত্র কর্তৃক স্থাপিত হিন্দু মেলাতেও তিনি সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। তরুণ রবীন্দ্রনাথসহ দেবেন্দ্রনাথের অন্য পুত্ররাও এ সভার সঙ্গে যুক্ত হন।

রাজনারায়ণ মন মাতানো বক্তা ছিলেন। বক্তৃতার মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর শ্রোতাদের অনেককেই জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন। তাঁর হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা নামে বক্তৃতায় (১৮৭৩) তিনি হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচার করেন, একই সঙ্গে পাশ্চাত্য-বিরোধী মনোভাবও প্রকাশ করেন। লক্ষণীয় বিষয় হলো : দেবেন্দ্রনাথ সাধারণত কোনো জনসভায় না গেলেও তিনি এই বক্তৃতায় সভাপতিত্ব করেন। ১৮৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে রাজনারায়ণ বৃদ্ধ হিন্দুর আশা নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। তাতে তিনি সমগ্র ভারতবর্ষের হিন্দুদের একত্রিত করে একটি সংগঠনের অধীনে আনার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর জীবদ্দশায় এ প্রতিষ্ঠান গঠিত না হলেও, হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা তাঁর মৃত্যুর পরে মোটামুটি একই উদ্দেশ্য নিয়ে হিন্দু মহাসভা স্থাপন করেন (১৯০৬)।

রাজনারায়ণের আর একটি পরিচয় হলো সমাজ-সংস্কারক হিসেবে। ১৮৫০-এর দশকে তিনি বিধবাবিবাহের উৎসাহী একজন সমর্থক ছিলেন। তাছাড়া, ১৮৬০-এর দশকে তিনি ‘মদ্যপান নিবারণী সভা’ গঠন করেন। মেদিনীপুরে তিনি একটি বালিকা বিদ্যালয়, একটি গ্রন্থাগার, একটি বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র এবং একটি বির্তক সভা স্থাপন করেন।

রাজনারায়ণ তার বক্তৃতার মধ্য দিয়ে অনেককেই জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছিলেন। সাথে সাথে তিনি ১৮৭৩ সালে হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা নামে একটি বক্তৃতা দেন যেখানে তিনি হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ত্বসহ পাশ্চাত্য-বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করেন। রাজনারায়ণ ১৮৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে বৃদ্ধ হিন্দুর আশা নামে একটি পুস্তিকার মাধ্যমে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের হিন্দুদের একত্রিত হয়ে একটি সংগঠনের অধীনে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর পর ১৯০৬ সালে তার অনুসারীগণ হিন্দু মহাসভা নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।


সমাজসংস্কারক হিসেবে তিনি ১৮৫০-এর দশকে বিধবাবিবাহকেও উৎসাহ দিয়েছেন। ১৮৬০ সালে মদ্যপানের বিরোদ্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে তিনি মদ্যপান নিবারণী সভা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। মেদিনীপুর জেলায় তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ, গ্রন্থাগারও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
রাজনারায়ণ বসু কঠ, কেন, মুণ্ডক ও শ্বেতাশ্বেতর উপনিষদ ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:

রাজনারায়ণ বসুর বক্তৃতা (১ম ভাগ-১৮৫৫, ২য় ভাগ-১৮৭০)
ব্রাহ্ম সাধন (১৮৬৫)
ধর্মতত্ত্বদীপিকা (১ম ভাগ-১৮৬৬, ২য় ভাগ-১৮৬৭)
আত্মীয় সভার সদস্যদের বৃত্তান্ত (১৮৬৭)
হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা (১৮৭৩)
সেকাল আর একাল (১৮৭৪)
ব্রাহ্মধর্মের উচ্চ আদর্শ ও আমাদিগের আধ্যাত্মিক অভাব (১৮৭৫)
হিন্দু অথবা প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিবৃত্ত (১৮৭৬)
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক বক্তৃতা (১৮৭৮)
বিবিধ প্রবন্ধ (১ম খন্ড-১৮৮২)
তাম্বুলোপ হার (১৮৮৬)
সারধর্ম (১৮৮৬)
বৃদ্ধ হিন্দুর আশা (১৮৮৭)
রাজনারায়ণ বসুর আত্মচরিত (১৯০৯)

              তিনি তাঁর বর্ণনার বহু জায়গায় বলেছেন -  " ইংরেজি শিক্ষা প্রবর্তনের ফলে ও ইংরেজ শাসনের কারণে পুরাতন মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটছে দ্রুতগতিতে যার অভিঘাতে সামাজিক বিধিনিষেধের শৃংখল ভেঙে পড়ছে, কিন্তু নূতন মূল্যবোধের শৃংখলা তখনও অনায়ত্ত। বেশ কিছু ত্রুটি বিচ্যুতির উল্লেখ করেও সে কালের প্রতি তাঁর সস্নেহ পক্ষপাতিত্ব, আর এ কালের প্রতি তাঁর উদ্বিগ্ন ভর্ৎসনা। তিনি স্বয়ং এ কালের প্রতিনিধি, ইংরেজিতে সুশিক্ষিত হয়ে পাশ্চাত্য ভাবধারার সঙ্গে পরিচিত এবং নবলব্ধ জাতীয়তাবোধের প্রেরণায় স্বদেশীয় সমাজের সর্বাঙ্গীণ উন্নতির প্রত্যাশী। কিন্তু সমসাময়িক সামাজিক পরিস্থিতিতে তিনি আশাহত। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ হতাশ নন। অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে সামাজিক অবনতির বিষয়ে শিক্ষিত মহলকে অবহিত করতে চেয়েছেন এই আশা নিয়ে যে সম্মিলিত সজ্ঞান প্রচেষ্টায় এই সব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে ‘হয়ত এই দুর্বল বাঙালি জাতি ভবিষ্যতে পৃথিবীর মধ্যে এক প্রধান জাতি হইয়া উঠিবে।’
                 তৎকালীন সামাজিক চরিত্র বিষয়ে তিনি বহুলাংশে হতাশ এবং তাঁর মন্তব্য রীতিমতো নির্মম। তিনি লিখছেন: ‘চরিত্র বিষয়ে এক্ষণকার লোকের প্রথম দোষ, পিতৃভক্তির হ্রাস। নিজ কর্মস্থলে বৃদ্ধ পিতা আসিলে তাঁহাকে পিতা বলিয়া লোকের নিকট পরিচয় দিতে বাবু লজ্জিত হয়েন। ...এক্ষণকার লোক পানাসক্ত ও পূর্বাপেক্ষা অধিকতর বেশ্যাসক্ত। ...এখনকার লোকেরা পূর্বকার লোক অপেক্ষা অধিক অসরল। এখন পদে পদে খলতা, অসরলতা। ...এক্ষণে প্রতারণা অত্যন্ত বৃদ্ধি পাইয়াছে। ...এখনকার লোকের স্বার্থপরতা বড় প্রবল। এ কাল অপেক্ষা সে কালে পল্লির লোকদিগের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতি অধিক ছিল। ...কৃতজ্ঞতাধর্মেও এক্ষণকার লোকদিগের পূর্বকার অপেক্ষা হীন দেখা যায়। ...এক্ষণে সুখপ্রিয়তা, বিলাসপরায়ণতা ও বাবুগিরির অত্যন্ত প্রাদুর্ভাব হইয়াছে। ...চরিত্র বিষয়ে বর্তমান বঙ্গসমাজের আর এক অবনতির চিহ্ন যুবকদিগের অশিষ্ট ব্যবহার।’ তাঁর আক্ষেপ, ‘আমরা আমাদের পুরাতন গুণগুলি হারাইতেছি, অথচ ইংরাজদিগের সদ্‌গুণসকল অনুসরণ করিতেছি না।’ তাঁর মতে, চরিত্র বিষয়ে দেশস্থ লোকের অবনতির কারণ ধর্ম বিষয়ে অবনতি—‘ধর্মের প্রধান উপাদান শ্রদ্ধা ভক্তি ও পরকালের ভয়, সে সকল ক্রমে তিরোহিত হইতেছে। ...যে সমাজের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা নাই, সে সমাজের কি উন্নতির আশা করা যাইতে পারে?’

১৮ সেপ্টেম্বর ১৮৯৯ সালে রাজনারায়ণ মৃত্যুবরণ করেন।

==============!!!!!!!!!!!!!!============

                 সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের 

                জন্ম অধুনা বাংলাদেশের মাদারীপুরে। ৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ সালে । মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ একা এবং কয়েকজন এবং ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম উপন্যাস আত্মপ্রকাশ প্রকাশিত হয়। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল-  আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি, যুগলবন্দী (শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), হঠাৎ নীরার জন্য, রাত্রির রঁদেভূ, শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা, অর্ধেক জীবন, অরণ্যের দিনরাত্রি, অর্জুন, প্রথম আলো, সেই সময়, পূর্ব পশ্চিম, ভানু ও রাণু, মনের মানুষ ইত্যাদি। শিশুসাহিত্যে তিনি "কাকাবাবু-সন্তু" নামে এক জনপ্রিয় গোয়েন্দা সিরিজের রচয়িতা। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি ভারতের জাতীয় সাহিত্য প্রতিষ্ঠান সাহিত্য অকাদেমি ও পশ্চিমবঙ্গ শিশুকিশোর আকাদেমির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রাথমিক জীবন :

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম মাদারীপুর জেলায়,কালকিনি থানার মাইজপাড়া গ্রামে। বর্তমান যা বাংলাদেশের অন্তর্গত। জন্ম বাংলাদেশে হলেও তিনি বড় হয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। পড়াশোনা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক। ব্যাংকের পিয়নের চেয়েও স্কুল মাস্টারের বেতন ছিল কম। সুনীলের মা কখনোই চান নি তাঁর ছেলে শিক্ষকতা করুক। পড়াশুনা শেষ করে কিছুদিন তিনি অফিসে চাকুরি করেছেন। তারপর থেকে সাংবাদিকতায়। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান মি. পলেন কলকাতায় এলে সুনীলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় হয়। সেই সূত্রে মার্কিন মুলুকে গেলেন সুনীল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে। ডিগ্রি হয়ে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগ্রন্থাগারিক হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন সুনীল।


সাহিত্যিক জীবন :

সুনীলের পিতা তাঁকে টেনিসনের একটা কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বলেছিলেন, প্রতিদিন এখান থেকে দুটি করে কবিতা অনুবাদ করবে। এটা করা হয়েছিল এ জন্য যে তিনি যেন দুপুরে বাইরে যেতে না পারেন। তিনি তা-ই করতেন। বন্ধুরা যখন সিনেমা দেখত, বিড়ি ফুঁকত, সুনীল তখন পিতৃ-আজ্ঞা শিরোধার্য করে দুপুরে কবিতা অনুবাদ করতেন। অনুবাদ একঘেয়ে হয়ে উঠলে তিনি নিজেই লিখতে শুরু করেন। ছেলেবেলার প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে লেখা কবিতাটি তিনি দেশ পত্রিকায় পাঠালে তা ছাপা হয়।

নীললোহিত নামে সুনীল::

নীললোহিত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ছদ্মনাম। নীললোহিতের মাধ্যমে সুনীল নিজের একটি পৃথক সত্তা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। নীললোহিতের সব কাহিনিতেই নীললোহিতই কেন্দ্রীয় চরিত্র। সে নিজেই কাহিনিটি বলে চলে আত্মকথার ভঙ্গিতে। সব কাহিনিতেই নীললোহিতের বয়স সাতাশ। সাতাশের বেশি তার বয়স বাড়ে না। বিভিন্ন কাহিনিতে দেখা যায় নীললোহিত চির-বেকার। চাকরিতে ঢুকলেও সে বেশিদিন টেকে না। তার বাড়িতে মা, দাদা, বৌদি রয়েছেন। নীললোহিতের বহু কাহিনিতেই দিকশূন্যপুর বলে একটি জায়গার কথা শোনা যায়। যেখানে বহু শিক্ষিত, সফল কিন্তু জীবন সম্পর্কে নিস্পৃহ মানুষ একাকী জীবনযাপন করেন।
রচনা সমগ্র :

ঐতিহাসিক উপন্যাস

পূর্ব-পশ্চিম,সেই সময়,প্রথম আলো,একা এবং,কয়েকজন

আত্ম জীবনী উপন্যাস

অর্ধেক জীবন,ছবির দেশে কবিতার দেশে

অন্যান্য উপন্যাস:


আত্মপ্রকাশ,অরণ্যের দিনরাত্রি,সরল সত্য,তুমি কে?,জীবন যেরকম,কালো রাস্তা সাদা বাড়ি,অর্জুন,কবি ও নর্তকী,স্বর্গের নিচে মানুষ,আমিই সে,একা এবং কয়েকজন
সংসারে এক সন্ন্যাসী,রাধাকৃষ্ণ,কনকলতা
সময়ের স্রোতে,মেঘ বৃষ্টি আলো,প্রকাশ্য দিবালোকে
দর্পনে কার মুখ,গভীর গোপন,কেন্দ্রবিন্দু,ব্যক্তিগত
বন্ধুবান্ধব,রক্তমাংস,দুই নারী,স্বপ্ন লজ্জাহীন
আকাশ দস্যু,তাজমহলে এক কাপ চা,ধূলিবসন
অমৃতের পুত্রকন্যা,আজও চমৎকার,জোছনাকুমারী,নবজাতক,শ্যামসাহেব
সপ্তম অভিযান,মধুময়,ভালোবাসার দুঃখ
হৃদয়ের অলিগলি,সুখের দিন ছিল,ফিরে আসা,রক্ত,স্বর্গ নয়,জনারণ্যে একজন
সমুদ্রের সামনে,সামনে আড়ালে,জয়াপীড়
বুকের মধ্যে আগুন,কেউ জানে না,তিন নম্বর চোখ
সুখ অসুখ,অগ্নিপুত্র,বসন্তদিনের ডাক,সোনালি দুঃখ,নদীর পাড়ে খেলা,যুবক যুবতীরা,পুরুষ
অচেনা মানুষ,বৃত্তের বাইরে,কয়েকটি মুহুর্ত
রূপালী মানবী,মহাপৃথিবী,উত্তরাধিকার
আকাশ পাতাল,নদীর ওপার,হীরকদীপ্তি
অমলের পাখি,মনে মনে খেলা,মায়া কাননের ফুল
রানু ও ভানু,ময়ূর পাহাড়,অন্য জীবনের স্বাদ
দুজন,খেলা নয়,কিশোর ও সন্ন্যাসিনী
গড়বন্দীপুরের কাহিনী,টান,প্রবাসী পাখি
বুকের পাথর,বেঁচে থাকা,রাকা,রূপটান
শান্তনুর ছবি,শিখর থেকে শিখরে
উদাসী রাজকুমার,নীল চাঁদ : দ্বিতীয় মধুযামিনী
একটি মেয়ে অনেক পাখি,আলপনা আর শিখা
অনসূয়ার প্রেম,মধ্যরাতের মানুষ
কেউ জানে না,অনির্বান আগুন,নবীন যৌবন
দরজার আড়ালে,দরজা খোলার পর
পায়ের তলায় সরষে,মানসভ্রমণ
ভালো হতে চাই,দৃষ্টিকোণ,দুজনে মুখোমুখি
মনে রাখার দিন,সেই দিন সেই রাত্রি
বেঁচে থাকার নেশা,কর্ণ,প্রথম নারী
দময়ন্তীর মুখ,প্রতিশোধের একদিক
কল্পনার নায়ক,উড়নচন্ডী,বাবা মা ভাই বোন
এলোকেশী আশ্রম,সমুদ্রতীরে,প্রতিদ্বন্দ্বী
সোনালী দিন,স্বপ্নসম্ভব,ছবি,প্রতিপক্ষ
একাকিনী,এর বাড়ি ওর বাড়ি
এখানে ওখানে সেখানে,দুই বসন্ত
ভালোবাসা, প্রেম নয়,প্রথম প্রণয়
কপালে ধুলো মাখা,অন্তরঙ্গ,সুপ্ত বাসনা
জলদস্যু,আঁধার রাতের অতিথি,দুই অভিযান
ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ,অজানা নিখিলে
কাজরী,সময়ের স্রোতে,এক জীবনে
সময় অসময়,তিন চরিত্র
প্রেম ভালবাসা,বসন্ত দিনের খেলা
সেতুবন্ধন,বিজনে নিজের সঙ্গে,হৃদয়ে প্রবাস ।

কবিতা :

সুন্দরের মন খারাপ মাধুর্যের জ্বর
সেই মুহুর্তে নীরা
স্মৃতির শহর
সুন্দর রহস্যময়
একা এবং কয়েকজন (কবিতার বই)
আমার স্বপ্ন
জাগরণ হেমবর্ণ
আমি কিরকম ভাবে বেঁচে আছি
ভালোবাসা খন্ডকাব্য
মনে পড়ে সেই দিন (ছড়া)
নীরা, হারিয়ে যেও না
অন্য দেশের কবিতা
ভোরবেলার উপহার
বাতাসে কিসের ডাক, শোন
রাত্রির রঁদেভু
সাদা পৃষ্ঠা তোমার সঙ্গে
হঠাৎ নীরার জন্য

নাটক

প্রাণের প্রহরী
রাজা রাণী ও রাজসভায় মাধবী
মালঞ্চমালা
স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজী

গল্পগ্রন্থ 

শাজাহান ও তার নিজস্ব বাহিনী
আলোকলতার মূল

অন্যান্য 

বরণীয় মানুষ : স্মরণীয় বিচার
আন্দামানে হাতি
Chokh o semuli
আমার জীবনানন্দ আবিষ্কার ও অন্যান্য (প্রবন্ধ)
ইতিহাসে স্বপ্নভঙ্গ (প্রবন্ধ)
ছবির দেশে কবিতার দেশে (প্রবন্ধ)
রাশিয়া ভ্রমণ
তাকাতে হয় পিছন ফিরে (প্রবন্ধ)
কবিতার জন্ম ও অন্যান্য
সনাতন পাঠকের চিন্তা
সম্পাদকের কলমে

সৃষ্ট চরিত্র

কাকাবাবু
নীল মানুষ (রণজয়)


       ২০০২ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা শহরের শেরিফ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ ও ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার এবং ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

মৃত্যু 

২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে হৃদ্‌যন্ত্রজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ৪ এপ্রিল সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার ‘গণদর্পণ’-কে সস্ত্রীক মরণোত্তর দেহ দান করে যান। কিন্তু সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতে তার দেহ দাহ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যবস্থাপনায় ২৫ অক্টোবর ২০১২ তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆

No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...