Thursday, 1 October 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
                    জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
       সার্ধশত জন্মবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে

===========✓✓✓✓✓✓===========
             Doinik sabder methopath
            Vol - 148. Dt -02.10.20
            ১৫ আশ্বিন,১৪২৭.শুক্রবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷√√√√÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

রাষ্ট্রপিতা নামে পরিচিত মহাত্মা গান্ধী দেশের মূল ভিত্তির একটি। তার প্রতি সম্মান শুধু ভারতীয়রাই প্রদর্শন করে এমন নয়।ভারতবর্ষের বাইরে অনেক দেশে অনেক মানুষ তার দৃষ্টিভঙ্গি আচার ও বিচার মেনে চলেন।

Gandhiji Biography in Bengali, মহাত্মা গান্ধীর সংক্ষিপ্ত জীবনী, মহাত্মা গান্ধীর জীবনী, Short Essay on Mahatma Gandhi in Bengali, Jatir Janak Mahatma Gandhi in Bengali, Gandhiji Jiboni Bangla, Gandhiji rachana in Bengali, Gandhiji paragraph in bengali, Mahatma Gandhi speech in Bengali, Mahatma Gandhi Bangla rochona, Mahatma Gandhi rachana

জন্ম ও পরিবার পরিচয় 

Mahatma Gandhi র পুরো নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। তাঁর জন্ম হয়েছিল 2nd October, 1869 সালে গুজরাটের পোরবন্দর (Porbandar) । বাবার নাম করমচাঁদ গান্ধী (Karamchand Gandhi) ।সেই সময়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী গান্ধীর বাবা চারটি বিবাহ করেছিলেন। করমচাঁদ গান্ধী নিজেই জানতেন না যে একসময় তার চতুর্থ স্ত্রীর ছেলে Mohandas Karamchand Gandhi ইতিহাসের পাতায় নিজের ও পরিবারের নাম উজ্জ্বল করবেন।
করমচাঁদ গান্ধী খুব বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি জানতেন কিভাবে তৎকালীন রাজকুমারদের মধ্যে নিজের জায়গা তৈরি করতে হবে এবং নিজের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ রাজনৈতিক আধিকারিকদের মধ্যে কিভাবে নিজের পরিচয় তৈরি করতে হবে।
মহাত্মা গান্ধীর মায়ের নাম পুতলি বায় (Putli Gandhi) ।গান্ধীজীর মাতা তার সম্পূর্ণ জীবন ধর্মীয় কর্মে ব্যয় করেন। জীবনে কোনদিন তিনি পার্থিব বস্তুর ওপর গুরুত্ব দেননি। তার বেশিরভাগ সময়ই মন্দিরে এবং গৃহকাজে কাটতো। বাস্তবে তিনি ছিলেন পরিবারের প্রতি সমর্পিত আধ্যাত্বিক মহিলা। রোগীর সেবা করা, ব্রত, উপাসনা করা তার দৈনিক জীবন চর্চা ছিল।
ছোটবেলা থেকেই গান্ধীজি লালন-পালন এমন পরিবেশে হয় যেখানে ছিল শান্তি ও ধর্মের আবাস। তিনি ছিলেন নিরামিষভোজী। মায়ের মতো তিনিও অহিংসা, ব্রত, উপবাস প্রভৃতির মত জীবন শৈলী তে বিশ্বাসী ছিলেন যার দ্বারা মনকে বিশুদ্ধ রাখা যায়।
পোরবন্দরে পর্যাপ্ত শিক্ষার সুবিধা না থাকার জন্য মোহনদাস তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা খুব জটিল পরিস্থিতিতে সম্পন্ন করেন। তিনি মাটিতে আঙ্গুল চালিয়ে বর্ণমালা শিখেন। পরে ভাগ্যক্রমে তার পিতা করমচাঁদ গান্ধী রাজকোটের ‘দিবান’ হয়। এর ফলে তার সমস্যা অনেকটাই কমে গিয়েছিল।
মহাত্মা গান্ধী স্কুল জীবনে অনেক পুরস্কার লাভ করেন।
1887 খ্রিস্টাব্দে গান্ধীজী University of Bombay থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাস করেন এবং ভাবনগর শ্যামল দাস কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি মাতৃভাষা গুজরাটি ছেড়ে ইংরেজি শেখে। যার জন্য তাকে অধ্যাপকদের পঠন (Lecture) বুঝতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
গান্ধীজীর পরিবার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব চিন্তিত ছিলেন। কারণ তিনি ডাক্তার হতে চেয়েছিল।
কিন্তু বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী হওয়ার জন্য তিনি ডাক্তারের কাজ করতে পারতেন না।
পরিবার থেকে তাকে বলা হয় পারিবারিক পরম্পরা অনুযায়ী তাকে গুজরাটের কোন উচ্চ দপ্তরে চাকুরীতে যোগ দিতে হবে। এর জন্য তাকে ব্যারিস্টার হতে হবে।
মহাত্মা গান্ধী শ্যামলদাস কলেজের পড়াশোনা নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না।
ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য ইংল্যান্ডে যেতে হবে শুনে তিনি প্রচণ্ড আনন্দিত হন।
তার পারিবারিক সম্পত্তি খুব কম ছিল এবং তার মা ও ভয় পাচ্ছিল বিদেশ যাওয়ার কথা শুনে।
কিন্তু গান্ধীজী তার কথায় অটল ছিলেন। তার ভাইয়েরা লন্ডন যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা পয়সার ব্যবস্থা করেন।
1888 সালের September মাসে তিনি England উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ইংল্যান্ডে পৌঁছানোর দশ দিন পর তিনি Landon law College এ ভর্তি হন।
1891 সালে ইংল্যান্ড থেকে ভারত প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ওকালতি তে নিজের জায়গা তৈরি করা শুরু করেন।
তিনি তাঁর প্রথম মামলায় খুব নার্ভাস হয়ে যান। যখন সাক্ষীকে প্রশ্ন করার সময় আছে তখন তাঁর মাথা শূন্য হয়ে যায়। তিনি নার্ভাস থাকার জন্য সাক্ষীকে কোন প্রশ্ন করতে পারেন না এবং কোর্টের বাইরে চলে আসেন। যার জন্য গান্ধীজী তার ক্লায়েন্টকে সম্পূর্ণ fees ফেরত দিয়ে দেন।
তিনি ভারতবর্ষে কিছুদিন ওকালতি করেন। এরপর সাউথ আফ্রিকা তে তিনি Legal Service এর এক বছরের কন্ট্রাক্ট পান।
1893 সালের April মাসে তিনি সাউথ আফ্রিকা যাত্রা করেন। সেখানে তাকে বর্ণভেদ প্রথার সম্মুখীন হতে হয়।

Darwan এর court room এ তাকে তাঁর পাগরি খুলতে বলা হয়। কিন্তু তিনি অসম্মত হন। যার ফলে তাকে court room ছাড়তে হয়।
ট্রেনের First Class কামরার ঘটনা
1893 সালের 7th June ট্রেন যাত্রার সময় তার সাথে একটি ঘটনা ঘটে। যার ফলে তাঁর জীবনে আমূল পরিবর্তন আসে।

তিনি প্রোটেরিয়া যাচ্ছিলেন ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টে। কিন্তু এক ইংরেজ আপত্তি করে তাঁর ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টে চড়া নিয়ে।
গান্ধীজীর কাছে ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টের টিকিট ছিল।
তিনি ট্রেন থেকে নামতে অসম্মত হন। এর জন্য তাকে এক স্টেশনে ট্রেন থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
এই অপমান গান্ধীজীর মনে গভীর দাগ কাটে। তিনি বর্ণভেদ প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন।
মহাত্মা গান্ধী সেই রাতেই এই সমস্যার সমাধান করার প্রতিজ্ঞা করেন। সেই রাতে একটি সামান্য মানুষ থেকে জন্ম হয় এক অসামান্য মানুষের।
1894 সালে তিনি বর্ণভেদ প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য Netal Indian Congres এর স্থাপনা করেন।
এক বছরের কন্ট্রাক্ট শেষ হওয়ার পর তিনি ভারত প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু তার আগেই Netal Assembly ভারতীয়দের ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন।

গান্ধীজীর সঙ্গীরা তার সাথে মিলে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যান। এভাবে তিনি ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিষয়টি সবার দৃষ্টিতে আনেন।
যুদ্ধের সময় তিনি সাউথ আফ্রিকা থেকে বৃটিশ সরকারকে সাহায্য করেছিলেন।

তার মতে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ভারতীয়দের নাগরিকত্ব পেতে হলে তাদের ও ব্রিটিশ সরকারকে সাহায্য করা উচিত।

সত্যাগ্রহ আন্দোলন (Satyagrah Movement)
তিনি South Africa তে থাকাকালীন নাগরিকতার সম্মান লাভের জন্য মিছিল করেন। তিনি তার অহিংস আন্দোলনকে সত্যাগ্রহ নাম দেন।

সাউথ আফ্রিকা তে তিনি কিছুদিন জেলে ছিলেন।

এমন অনেক ক্ষেত্রে আছে যেখানে তিনি ব্রিটিশ সরকারকে সাহায্য করেছিলেন।

1906 6 সালে গান্ধীজী তাঁর জীবনের প্রথম অসহযোগ আন্দোলন করেন।

এই আন্দোলনের কারণ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাতে উপস্থিত ভারতীয়দের ওপর জোর করে চাপানো বাধা নিষেধ এর বিরুদ্ধে। তার মধ্যে একটি ছিল ব্রিটিশ সরকারের হিন্দু বিবাহ না মানা।

অনেক বছর আন্দোলন চলার পর ব্রিটিশ সরকার গান্ধীজী সহ বেশকিছু ভারতীয়দের জেলে বন্দী করেন।
শেষ পর্যন্ত প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়ে ব্রিটিশ সরকার গান্ধীজীর সাথে সমঝোতা করতে বাধ্য হয়।
এই সমঝোতার ফলে দক্ষিণ আফ্রিকাতে হিন্দু বিবাহ মানতা পায় এবং ভারতীয়দের উপর চাপানো একটি বিশেষ ট্যাক্স বন্ধ করা হয়।

এর পর গান্ধীজি India তে ফিরে আসেন।
চম্পারন আন্দোলন (Champaran Movement)
1918 সালে গান্ধীজী ইংরেজ জমিদারদের বিরুদ্ধে চম্পারন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

সেই সময় নীল চাষ করা হত। ইংরেজ জমিদাররা ভারতীয় কৃষকদের জোর করে নীল চাষ করাতেন এবং তাদের উপর নানান নিয়ম চাপে দিতেন। যার ফলে কৃষকরা ব্রিটিশ জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।

কৃষকরা এ আন্দোলনে গান্ধীজীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং তাকে এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে বলেন।

এর ফলে সম্পাদনে অহিংস আন্দোলন শুরু হয়।

এই আন্দোলনে গান্ধীজীর জয়লাভ করেন।

খেড়া সত্যাগ্ৰহ (Kheda Movement)
1918 সালে খেড়া নামক স্থানে মনে হয় এবং প্রচুর ফসল নষ্ট হয়। যার ফলে কৃষকদের ট্যাক্সে ছাড় প্রয়োজন ছিল।

গান্ধীজি পুনরায় অহিংস আন্দোলন শুরু করেন। Kheda আন্দোলনে তিনি বিপুল জনসমর্থন লাভ করেন।

শেষ পর্যন্ত 1918 সালের May মাসে ব্রিটিশ সরকার কৃষকদের ট্যাক্সে ছাড় দেন।

গান্ধীজী এই ভাবে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যান।

খিলাফত আন্দোলন (Khilafath Movement)
1919 সালে গান্ধীজীর মনে হয় কংগ্রেস দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তিনি হিন্দু মুসলিম একতা দ্বারা ব্রিটিশদের ভারত ছাড়তে বাধ্য করার চেষ্টা করেন। এই জন্য তিনি মুসলিম সমাজের কাছে যান।

খিলাফত আন্দোলন সর্বভারতীয় আন্দোলন ছিল। মহাত্মা গান্ধী সম্পূর্ণ দেশের মুসলিম সমাজের কনফারেন্স রাখেন। এ আন্দোলনে মুসলিমদের অনেক সাহায্য করা হয়। গান্ধীজীর প্রচেষ্টার জন্য তাকে রাষ্ট্রনেতা করা হয়। এই আন্দোলনের ফলে কংগ্রেসে তিনি বিশেষ জায়গা করে নেন।
কিন্তু 1922 সালে খিলাফত আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর গান্ধীজী সারা জীবন হিন্দু মুসলিম Unity র জন্য লড়াই করেন। কিন্তু হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
অসহযোগ আন্দোলন (1920) (Non Cooperation Movement)
বিভিন্ন আন্দোলনের মোকাবিলা করার জন্য ইংরেজ সরকার 1919 রাওলাট আইন (Roulatt Act) পাশ করেন।
এই সময় গান্ধীজী বেশকিছু সভার আয়োজন করেন। পাঞ্জাবের অমৃতসর অঞ্চলে এরকম একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ সভা কে ইংরেজ সরকার নির্মমভাবে দমন করেছিলেন যার জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত নাইট উপাধি ত্যাগ করেন।

মহাত্মা গান্ধী এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে 1920 সালে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়রা যেন কোন হবে ইংরেজদের সাহায্য না করে। এ আন্দোলন অহিংস হবে করা হচ্ছিল।
চৌরি চৌরার ঘটনা
উত্তরপ্রদেশের চৌরি চৌরা নামক স্থানে কিছু মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছিল। কিন্তু ইংরেজ সৈন্য তাদের ওপর গুলি চালিয়ে দেন। যার ফলে কিছু মানুষের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার প্রতিবাদে কিছু মানুষ রাগে পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন এবং 22 জন পুলিশ মারা যায়।

এই হিংসাত্মক গতিবিধির জন্য অহিংসার পূজারী গান্ধীজী আন্দোলন বন্ধ করে দেন। তাঁর বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ আন্দোলন চলাকালীন যেন কোনরূপ হিংসাত্মক গতিবিধি না হয়।

ডান্ডি আন্দোলন (Civil Disobedience Movement)
1930 সালে তিনি সবিনয়ে অবজ্ঞা আন্দোলন শুরু করেন। এ আন্দোলন লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন বা ডান্ডি আন্দোলন বা ডান্ডি মার্চ বা Civil Disobedience Movement নামে পরিচিত।

এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সরকারের তৈরি কোন আইন না মানা তথা অবহেলা করা। যেমন ব্রিটিশ সরকার আইন করেছিল কেউ যেন লবণ তৈরি না করে।

12th March, 1930 সালে তিনি এই আইন অমান্য করার জন্য ডান্ডি উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। ডান্ডি পৌঁছানোর পর তিনি লোকদেরই করেন। এভাবে এই আন্দোলনকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

ডান্ডি আন্দোলন চলাকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামী অনেক নেতাকে ব্রিটিশ সরকার গ্রেপ্তার করেন।
ভারত ছাড়ো আন্দোলন (1942) (Quit India Movement)
1940 এর দশক আস্তে আস্তে মানুষের মনে ভীতি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড রাগ তৈরি হয়। গান্ধীজী সাধারণ মানুষের এই ক্ষোভকে কে সঠিক কাজে লাগানোর জন্য মনস্থির করেন।

1942 সালে তিনি বিস্তৃতভাবে ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু করেন।
এই আন্দোলন এতদিন পর্যন্ত হওয়া সমস্ত আন্দোলন নেট থেকে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছিল যাকে দমন করা ইংরেজ সরকারের কাছে একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

গান্ধীজির আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য
গান্ধীজীর দ্বারা চালানো সমস্ত আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য এই ছিল যে -
১)সমস্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করা হত।
২)আন্দোলন চলাকালীন কোন প্রকার হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলে গান্ধীজী সেখানেই আন্দোলন বন্ধ করে দিতেন। 
৩)অনেকের মতে আমাদের দেরি করে স্বাধীনতা লাভের জন্য এটা একটা মস্ত বড় কারণ।
৪)আন্দোলনের মূল ভিত্তি ছিল সত্য এবং অহিংসা।
Mahatma Gandhi Original Speech on “God and Truth”
অহিংসার পূজারী গান্ধীজীর সামাজিক জীবন
গান্ধীজীর সামাজিক জীবন খুব সহজ-সরল উচ্চ বিচার পূর্ণ ছিল। তার এই স্বভাবের জন্য মানুষ তাকে মহাত্মা বলে সম্বোধন করতেন।

তিনি ছিলেন প্রজাতন্ত্রের বড় সমর্থক।

তাঁর প্রধান দুটি হাতিয়ার ছিল সত্য এবং অহিংসা। এই দুই হাতিয়ারের জোরেই তিনি ভারতকে ইংরেজ শাসন থেকে স্বাধীন করেন।

গান্ধীজীর ব্যক্তিত্ব ছিল যে তাঁর সাথে কেউ একবার মিশলে সে গান্ধীজীর দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে থাকতে পারত না।

গান্ধীজী সমাজের অস্থিরতা দূর করার অনেক চেষ্টা করেন। তিনি পিছিয়ে পড়া জাতিকে ঈশ্বর নামে হরিজন নাম দেন। তিনি সারাজীবন পিছিয়ে পড়া জাতিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন.

গান্ধীজীর বিভিন্ন উপাধি
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গান্ধীজী কে রাষ্ট্রপিতা বলে সম্বোধন করেন।
রবীনাথ ঠাকুর মাতা গান্ধীজী কে মহাত্মা উপাধি দেন।
চার্চিল (Winston Churchill, 1931) গান্ধীজীকে ফকির বলতেন।
গান্ধীজিকে অর্ধনগ্ন সাধু (Half Naked Saint) বলতেন Frank Mores ।
ভারত বর্ষে মহাত্মা গান্ধীকে জাতির জনক (Jatir Janak Mahatma Gandhi in Bengali) বলা হয়।
গান্ধীজী সম্পাদিত পত্র পত্রিকা
Indian Opinion (1903-15) – ইংরেজি, হিন্দি, গুজরাটি ও তেলেগু ভাষায়।
Harijan (হরিজন 1919-31) – ইংরেজি, গুজরাটি ও হিন্দি ভাষায়।
Young India – ইংরেজি ও গুজরাটি ভাষায়।
গান্ধীজীর লেখা বই (Books Written by Mahatma Gandhi)
হিন্দ স্বরাজ (Hind Swaraj), 1909
My experiments with truth, 1927 – মহাত্মা গান্ধীর আত্ম জীবনী
” My experiments with truth”.
 “My experiments with truth”. This book was written by Mahatma in 1927.

গান্ধীজীর মৃত্যু
1948 সালের 30th January গান্ধীজীর মৃত্যু হয়।

নাথুরাম গডসে (Nathuram Godse) গান্ধীজিকে গুলি করে হত্যা করেন। তাঁর মুখ থেকে নিঃসৃত শেষ কথাটি ছিল “হে রাম”।

দিল্লি রাজকোটে গান্ধীজিকে সমাধিস্থ করা হয়েছে।
 গান্ধীজীর মৃত্যুর পর এক ইংরেজ অফিসার বলেছিলেন, “যেই গান্ধীর এত বছর আমরা কোন ক্ষতি হতে দিইনি যাতে ভারতবর্ষে আমাদের বিরুদ্ধে পরিস্থিতি আরও জটিল না হয়ে যায়, স্বাধীন ভারত সেই গান্ধীকে এক বছর ও বাঁচতে দিল না।”
গান্ধীজীর স্বদেশী আন্দোলন করেছিলেন এবং সকল ভারতবাসীকে বিদেশী বস্তু ত্যাগ করতে বলেছিলেন।
স্বদেশী কাপড়ের জন্য তিনি স্বয়ং চড়কা চালিয়ে কাপড় তৈরি করেন।
 গান্ধীজী দেশে-বিদেশে অনেক আশ্রম তৈরি করেন। সবরমতী আশ্রম তাদের মধ্যে অন্যতম
 গান্ধীজী আত্মশুদ্ধির জন্য প্রচণ্ড কঠোর উপবাস ও অনুশাসন পালন করতেন।
 তিনি সারা জীবন হিন্দু মুসলিম একতার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।


জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী ভারতের স্বাধীনতার জন্য অনেক সংগ্রাম করেছেন এবং তাঁর সত্য ও অহিংসার বলে 1947 সালের 15 ই আগস্ট ভারত স্বাধীন হয়।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆

No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...