অতুল প্রসাদ সেন
সাঙ্গ করে ভবের খেলা
জননী হয়ে তখন কোল বাড়ায়ে রবে
আমার যে শূন্য ডালা, তুমি ভরিয়ো
আর তুমি যে শিব তাহা বুঝিতে দিয়ো"
জননী হয়ে তখন কোল বাড়ায়ে রবে
আমার যে শূন্য ডালা, তুমি ভরিয়ো
আর তুমি যে শিব তাহা বুঝিতে দিয়ো"
ভারতের লক্ষ্ণৌতে বসবাসকালে তিনি ১৯৩৪ সালের ২৬ আগস্ট মারা যান। সেখানেই তার শেষকৃত্য হয়। গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন কাওরাইদ (কাওরাদি) ব্রহ্ম মন্দিরের পাশে সমাধিস্থলে তার চিতাভস্ম সমাহিত করা হয়। এখানে একটি স্মৃতিফলক আছে।
এতে লেখা ছিল
‘‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা!‘‘
১৯৭১ খিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় তখনকার স্মৃতিফলকটি পাকিস্তানি সৈন্যদের গুলিতে ভেঙ্গে যায়। পরে নতুন করে করা হয়। নতুন স্মৃতিফলকে লেখা হয় ।
১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকায় তার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি নিবাস শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামে। অতি অল্পবয়সেই অতুলপ্রসাদ পিতৃহারা হন। বাল্য কালে পিতৃহীন হয়ে অতুল প্রসাদ ভগবদ্ভক্ত, সুকন্ঠ গায়ক ও ভক্তিগীতিরচয়িতা মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হন। পরবর্তীকালে মাতামহের এসব গুণ তার মাঝেও সঞ্চালিত হয়। মাতামহের নিকটই সঙ্গীত ও ভক্তিমূলক গানে তার হাতেখড়ি। অতুল প্রসাদ ১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পাশের পর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন ও কিছুদিন অধ্যয়ন করেন। পরে লন্ডনে গিয়ে আইন শিক্ষা করেন। ইংল্যাণ্ড যাবার পথে ভেনিসের কাছে জাহাজে বসেই একটা বিদেশি গানের সুরে মোহিত হয়ে ঐ সুরকে মাথায় রেখে অতুলপ্রসাদ প্রথম লিখে ফেলেন একটি বিখ্যাত গান – ‘উঠ গো ভারতলক্ষ্মী’। লণ্ডনের মিডল টেম্পলে ব্যারিস্টারি পড়াকালীন ব্রিটিশ মিউজিয়াম ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয় তাঁর। চিত্তরঞ্জন দাশ, সরোজিনী নাইডু, অরবিন্দ ঘোষ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রমুখদের সঙ্গে লণ্ডনেই সাক্ষাৎ ঘটে তাঁর। ব্যারিস্টারি পড়ার পাশাপাশি পাশ্চাত্য সঙ্গীত, নাটক, অর্কেস্ট্রা ইত্যাদি শুনতে শুনতে গানের ভিত তৈরি হয় তাঁর মনে।
আইন পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৯৪ সালে তিনি বাংলায় ফিরে আসেন এবং রংপুর ও কলকাতায় অনুশীলন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি লখনউ চলে যান এবং সেখানে অউধ বার অ্যাসোসিয়েশন ও অউধ বার কাউন্সিলের সভাপতি হন। লক্ষ্মৌতে তিনি যেখানে বাস করতেন তার জীবনকালেই তার নামে ঐ রাস্তার নামকরণ করা হয়। তার উপার্জিত অর্থের একটি বড়ো অংশ তিনি স্থানীয় জনসাধারণের সেবায় ব্যয় করেন। তার বাড়ি এবং গ্রন্থস্বত্বও তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করে গেছেন।বাংলা ভাষা সাহিত্যে ও সঙ্গীতের এক অতি পরিচিত নাম অতুল প্রসাদ সেন। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার ও গায়ক। বাংলাভাষীদের নিকট অতুল প্রসাদ সেন প্রধানত একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার হিসেবেই পরিচিত। তার গানগুলি মূলত স্বদেশি সঙ্গীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান; এই তিন ধারায় বিভক্ত। তবে তার ব্যক্তি জীবনের বেদনা সকল ধরনের গানেই কম-বেশি প্রভাব ফেলেছে। এজন্য তার অধিকাংশ গানই হয়ে উঠেছে করুণ-রস প্রধান।
১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে ব্যারিস্টারী ডিগ্রী লাভের উদ্দেশ্য নিয়ে আইন পড়তে অতুলপ্রসাদ লণ্ডনে গমন করেন। কিছুদিন পর বড়মামা কৃষ্ণগোবিন্দ গুপ্ত সেখানে গেলে মামাতো বোন হেমকুসুমের সঙ্গে অতুলপ্রসাদের প্রেম হয় ।
স্কটল্যান্ডে গিয়ে ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে মামাতো বোন হেমকুসুমকে বিয়ে করেন অতুলপ্রসাদ।
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জীবিত সন্তান দিলীপকুমারকে নিয়ে ভারতে তথা কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন।
বিয়ে শেষাবধি সুখের হয় নি। লখনউ বসবাস কালে অতুলপ্রসাদের মা হেমন্তশশীর দ্বিতীয় স্বামী দুর্গামোহনের মৃত্যু হয়। দুর্গামোহনের মৃত্যুর পর হেমন্তশশী লখনউ চলে আসের পুত্রের সংসারে। এসময় শ্বাশুড়ি বৌমার বিসম্বাদ শুরু হয়। পরিণতিতে স্বামী-স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি। ছাড়াছাড়ি মিটিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টাও সফল হয় নি। হেমন্তশশী ও হেমকুসুমের দ্বন্দ্ব মেটেনি কখনো। হেমন্তশশীর মৃত্যুর পর ঘরে তার ফটো টাঙানো ছিল। তা সরিয়ে ফেলার দাবী তোলেন হেমকুসুম। কিন্তু মায়ের ছবিকে এভাবে অসম্মান করতে নারাজ অতুলপ্রসাদ। এবার হেমকুসুম চিরকালের জন্য স্বামীর ঘর ছেড়ে গেলেন, আর প্রত্যাবর্তন করেন নি।
অতঃপর বিলেত থেকে ব্যারিষ্টারি পাশ করে তিনি কলকাতা ও রংপুরে আইন ব্যবসা শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি পরে লক্ষ্ণৌতে চলে যান। সেখানে তিনি একজন শ্রেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন এবং আউধ বার এ্যাসোসিয়েশন ও আউধ বার কাউন্সিলরের সভাপতি নির্বাচিত হন। লক্ষ্ণৌ নগরীর সংস্কৃতি ও জীবনধারার সঙ্গেও তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে পড়েন। ১৯০২ থেকে ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত অতুল প্রসাদ আইন ব্যবসা উপলক্ষে লক্ষ্ণৌতে অতিবাহিত করেন।
বাংলা ভাষা সাহিত্যে ও সঙ্গীতের এক অতি পরিচিত নাম অতুল প্রসাদ সেন। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার ও গায়ক। বাংলাভাষীদের নিকট অতুল প্রসাদ সেন প্রধানত একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার হিসেবেই পরিচিত। তার গানগুলি মূলত স্বদেশি সঙ্গীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান; এই তিন ধারায় বিভক্ত। তবে তার ব্যক্তি জীবনের বেদনা সকল ধরনের গানেই কম-বেশি প্রভাব ফেলেছে। এজন্য তার অধিকাংশ গানই হয়ে উঠেছে করুণ-রস প্রধান।
উনিশ শতকের শেষ থেকে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রবীন্দ্র প্রতিভার প্রভাববলয়ের মধ্যে বিচরণ করেও যাঁরা বাংলা কাব্যগীতি রচনায় নিজেদের বিশেষত্ব প্রকাশ করতে সক্ষম হন, অতুল প্রসাদ ছিলেন তাদের অন্যতম। সমকালীন গীতিকারদের তুলনায় তার সঙ্গীত সংখ্যা সীমিত হলেও অতুল প্রসাদের অনেক গানে সাঙ্গীতিক মৌলিকত্ব পরিলক্ষিত হয়; আর সে কারণেই তিনি বাংলা সঙ্গীত জগতে এক স্বতন্ত্র আসন লাভ করেছেন। তার গানগুলি অতুল প্রসাদের গান নামে বিশেষ ভাবে প্রতিষ্ঠিত।
অতুলপ্রসাদ বাংলা গানে ঠুংরি ধারার প্রবর্তক।[১] তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। তার রচিত বাংলা গজলের সংখ্যা ৬-৭টি।[২]গীতিগুঞ্জ (১৯৩১) গ্রন্থে তার সমুদয় গান সংকলিত হয়।[৬] এই গ্রন্থের সর্বশেষ সংস্করণে (১৯৫৭) অনেকগুলি অপ্রকাশিত গান প্রকাশিত হয়।[৩] অতুলপ্রসাদের গানের সংখ্যা ২০৮।[৭] অতুলপ্রসাদ সেনের কয়েকটি বিখ্যাত গান হল মিছে তুই ভাবিস মন, সবারে বাস রে ভালো,বঁধুয়া, নিঁদ নাহি আঁখিপাতে, একা মোর গানের তরী, কে আবার বাজায় বাঁশি, ক্রন্দসী পথচারিণী ইত্যাদি। তার রচিত দেশাত্মবোধক গানগুলির মধ্যে প্রসিদ্ধ উঠ গো ভারত-লক্ষ্মী, বলো বলো বলো সবে, হও ধরমেতে ধীর। তার মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা! গানটি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অণুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। অতুলপ্রসাদের গানগুলি দেবতা, প্রকৃতি, স্বদেশ, মানব ও বিবিধ নামে পাঁচটি পর্যায়ে বিভক্ত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই গানের বিশেষ গুণগ্রাহী ছিলেন। অতুলপ্রসাদী গান নামে পরিচিত এই ধারার একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী হলেন কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়।
তার সর্বমোট গানের সংখ্যা মাত্র ২০৬টি এবং সে সবের মধ্যে মাত্র ৫০-৬০টি গান গীত হিসেবে প্রাধান্য পায়। অতুল প্রসাদের মামাতো বোন সাহানা দেবীর সম্পাদনায় ৭১টি গান স্বরলিপিসহ কাকলি (১৯৩০) নামে দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়। তার অপর গানগুলিও গীতিপুঞ্জ এবং কয়েকটি গান নামে দুটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত হয়। ১৯২২-২৩ সালের দিকে কলকাতা থেকে প্রথম অতুল প্রসাদের গানের রেকর্ড বের হয় সাহানা দেবী ও হরেন চট্টোপাধ্যায়ের কণ্ঠে।
ভারতবর্ষে ঊনবিংশ শতাব্দীতে আবির্ভুত একজন বিশিষ্ট বাঙালি গীতিকার, সুরকার ও গায়ক। তিনি একজন বিশিষ্ট সঙ্গীতবিদও ছিলেন। তার রচিত গানগুলির মূল উপজীব্য বিষয় ছিল দেশপ্রেম, ভক্তি ও প্রেম। তার জীবনের দুঃখ ও যন্ত্রণাগুলি তার গানের ভাষায় বাঙ্ময় মূর্তি ধারণ করেছিল; "বেদনা অতুলপ্রসাদের গানের প্রধান অবলম্বন"।
==============={{{{{{======{{{======
চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য।
চারুচন্দ্র ভট্টাচার্য ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে ২৬ শে আগস্ট প্রয়াত হন ।
গ্রন্থগুলি হল -
'আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু'(১৯৩৮)
'বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার কাহিনী' (১৯৫৩)
'নব্যবিজ্ঞান'
'বাঙালির খাদ্য'
'বিশ্বের উপাদান'(১৯৪৩)
'তড়িতের অভ্যুত্থান' (১৯৪৯)
'ব্যাধির পরাজয়'(১৯৪৯)
'পদার্ধবিদ্যার নবযুগ'(১৯৫১)
সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রতিষ্ঠিত বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদের পক্ষ থেকে তিনি বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রচার চেষ্টার সূচনা করেন 'বিজ্ঞান প্রবেশ' ও পদার্থবিদ্যা' গ্রন্থ রচনার মধ্য দিয়ে । নানা বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি জগদীশচন্দ্রের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে সাধারণের মধ্যে পরিচিত করান। তার রচিত 'কবিস্মরণে' একখানি রসমধুর স্মৃতিচারণ গ্রন্থ তিনি ছদ্মনামে রচনা করেন । কয়েক বছর তিনি সমবায় সমিতির 'ভাণ্ডার' পত্রিকা এবং আমৃত্যু 'বসুধারা' পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন । বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদে প্রথম রাজশেখর বসু স্মৃতি বক্তৃতা "পরমাণু নিউক্লিয়াস "বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রচনার অন্যতম মূল্যবান সংযোজন (১৯৬২)।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণীর জন্য দুটি বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক ও রচনা করেন । বিজ্ঞানে ব্যবহারের জন্য বহু বাংলা প্রতিশব্দ নির্ধারণ করেছেন। এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিযুক্ত কমিটিতে তিনি সচিব ছিলেন এবং সভাপতি ছিলেন রাজশেখর বসু । তিনি পরিমাপ ও বৈজ্ঞানিক প্রতিশব্দ চয়ন ও নির্ধারণে ভারত সরকারকেও সহায়তা করেন।
তিনি ২৯ জুন, ১৮৮৩ দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার হরিনাভিতে জন্ম গ্রহণ করেন । পিতার নাম বসন্ত কুমার ভট্টাচার্য ও মাতার নাম মেনকা দেবী। অতিশয় মেধাবি ছিলেন তিনি । কলকাতার মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে । ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এফ. এ পরীক্ষায় দ্বাদশ স্থান অর্জন করেন । ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন এবং ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এম.এ পাশ করেন ।
এম. এ পাশের পর পরই তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং দীর্ঘ ৩৫ বৎসর তিনি সেখানে অধ্যাপনা করেছেন । আর এ প্রসঙ্গে তিনি বলতেন-
"বাংলার পাঁচজন এফ.আর.এস - এর মধ্যে একজন আমার শিক্ষক, বাকি চারজন ছাত্র ।"
শিক্ষক হচ্ছেন আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু এবং ছাত্ররা হচ্ছেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু , মেঘনাদ সাহা, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ ও শিশিরকুমার মিত্র। তার আর এক ছাত্র প্রতুল চন্দ্র গুপ্ত বলতেন - "কত কঠিন বিষয় তিনি অত্যন্ত সহজে ব্যাখ্যা করতে পারতেন"।
চারুচন্দ্র ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দেই শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই সময়ে গ্রন্থন বিভাগের আর্থিক দূরাবস্থার মধ্যে বাংলার সাহিত্যক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের বাংলা রচনাসমূহের সংগ্রহ গ্রন্থ - রবীন্দ্র-রচনাবলী র (প্রথম প্রকাশ-১৯৩৯) প্রকাশ করে অমর অবদান রেখে গেছেন । শিক্ষাবিস্তারের জন্য রবীন্দ্রনাথের পরিকল্পনায় তারই দক্ষতায় বিশ্বভারতী "বিশ্ববিদ্যাসংগ্রহ গ্রন্থমালা" ও লোকশিক্ষার বই প্রকাশের ব্যবস্থা করে । প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য লোকশিক্ষার প্রথম পুস্তক "বিশ্ব-পরিচয়: রবীন্দ্রনাথ সত্যেন্দ্রনাথ বসুকেই উৎসর্গ করেন। রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের দুবছর পর চারুচন্দ্র বিশ্ববিদ্যাসংগ্রহের পুস্তক রচনা করতে থাকেন । সহজ সরল ও হৃদয়গ্রাহী বাংলা ভাষায় লেখা ।
======{}={{{}{={{{}{={{{}}{{}}============
মন্মথ রায়
মৃত্যু ২৬ আগস্ট ১৯৮৮।
উল্লেখযোগ্য নাটকঃ
মুক্তির ডাক (১৯২৩)
সেমিরেমিস (১৯২৫)
কাজল রেখা (১৯২৬)
চাঁদ সদাগর (১৯২৭)
দেবাসুর (১৯২৮)
মহুয়া (১৯২৯)
কারাগার (১৯৩০)
একাঙ্কিকা (১৯৩১)
সাবিত্রী (১৯৩১)
অশোক (১৯৩৩)
খনা (১৯৩৫)
বিদ্যুপর্না (১৯৩৭)
সতী (১৯৩৭)
মীরকাশিম (১৯৩৮)
রূপকথা (১৯৩৮)
রাজনটী (১৯৩৮)
ভাঙাগড়া (১৯৫০)
মহাভারতী (১৯৫০)
মমতাময়ী হাসপাতাল (১৯৫২)
উর্ব্বশী (১৯৫৩)
নিরুদ্দেশ (১৯৫৩)
পথে বিপথ (১৯৫৩)
মীরাবাঈ (১৯৫৪)
গুপ্তধন (১৯৫৫)
জীবন মরন (১৯৫৫)
লাঙ্গল (১৯৫৫)
জটাগঙ্গাধর বাঁদ (১৯৫৫)
রঘু ডাকাত (১৯৫৫)
শ্রীশ্রী মা (১৯৫৫)
ছোটোদের একাঙ্কিকা (১৯৫৬)
মরা হাতি লাখ টাকা (১৯৫৭)
নব একাঙ্কিকা (১৯৫৮)
সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৯৫৮)
কোটিপতি নিরুদ্দেশ (১৯৫৯)
ফকিরের পাথার ও নাট্যগুচ্ছ (১৯৫৯)
বন্দিতা (১৯৫৯)
মহাপ্রেম (১৯৫৯)
অমৃত অতীত (১৯৬০)
কৃষাণ (১৯৬১)
দুই আঙিনাঃ এক আকাশ (১৯৬১
বিচিত্র একাঙ্ক (১৯৬১)
স্বর্ণকীট ও জওয়ান (১৯৬২)
মহা উদ্বোধন (১৯৬৩)
মহা অভিসার (১৯৬৩)
দুর্গেশনন্দিনীর জন্ম (১৯৬৫)
তারাস শেভচেঙ্কা (১৯৬৫)
দিগ্বিজয় (১৯৬৯)
দ্বিচারিণী (১৯৭০)
লালন ফকির (১৯৭০)
১৮৯৯ সালের ১৬ জুন টাঙ্গাইল জেলার গালা গ্রামে তার জন্ম। তাদের স্থায়ী নিবাস ছিল পশ্চিম দিনাজপুরের বালুর ঘাট। সেখানেই তার বাল্যজীবন অতিবাহিত হয়। তিনি পশ্চিম দিনাজপুর স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, রাজশাহী কলেজ থেকে আইএ, স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বিএ (১৯২২) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ পাস করেন। ১৯২৫ সালে বিএল পাস করে তিনি বালুর ঘাটে ওকালতি শুরু করেন এবং একই সঙ্গে সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মন্মথ রায় নাট্যচর্চাও করতেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মন্মথ রায় নাট্যচর্চাও করতেন। স্বদেশপ্রীতি তার নাট্য রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য নাটকের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ। সেগুলির মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে মুক্তির ডাক (১৯২৩)। ১৯২৭ সালে পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত তার প্রথম নাটক চাঁদ সওদাগর প্রকাশিত হয়। নাটকটি পৌরাণিক হলেও এতে আধুনিক জীবন-সমস্যা প্রতিফলিত হয়েছে। পরে তিনি মহুয়া (১৯২৯), কারাগার (১৯৩০) ও সাবিত্রী (১৯৩১) নাটকত্রয় লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মন্মথ রায় ধর্মঘট (১৯৫৩), সাঁওতাল বিদ্রোহ (১৯৫৮), অমৃত অতীত (১৯৬০), লালন ফকির (১৯৬৯) ইত্যাদি নাটক রচনা করেন। পাবলিক থিয়েটারে মঞ্চস্থ তার নাটকগুলির মধ্যে অশোক (১৯৩৩), খনা (১৯৩৫), মীর কাশিম (১৯৩৮) ও জীবনটাই নাটক (১৯৫৩) উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালে তিনি রচনা করেন আমি মুজিব নই। তিনি বহু সংখ্যক একাঙ্ক নাটকও রচনা করেন। বাংলা ভাষায় যথার্থ একাঙ্ক নাটক রচনার কৃতিত্ব তারই।।
======{{{{{{{{{{}}}{==}{=}{{={}={{{}=}{===={=
বিমল কর
৮২ বছর বয়েসে তার বিধাননগরের বাসভবনে মারা যান ২৬ আগষ্ট ২০০৩ । তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী তিন মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গিয়েছেন।
তিনি অসময় উপন্যাসের জন্য ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্য একাদেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন । এছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎচন্দ্র পুরস্কার, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার পান । তিনি দুবার আনন্দ পুরস্কার লাভ করেছিলেন । তিনি বহু ছোটগল্প এবং কিশোর উপন্যাসও লিখেছিলেন।
বিমল কর জব্বলপুর, হাজারিবাগ, ধানবাদ, আসানসোল প্রভৃতি জায়গায় ছোটবেলা কাটিয়েছেন । তিনি বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ পাস করেন । তারপর আসানসোল অ্যামিউনেশন প্রোডাকশন ডিপোয় এআরপি হিসাবে কর্মজীবনের শুরু হয়।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত প্রথম ছোটগল্প অম্বিকানাথের মুক্তি প্রবর্তক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত পরাগ পত্রিকায় সহ সম্পাদকের কাজ পান । সহ সম্পাদক হিসাবে তিনি পশ্চিমবঙ্গ ও সত্যযুগ পত্রিকায় কাজ করেন । ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তার রচিত প্রথম ছোটগল্প সংকলন বরফ সাহেবের মেয়ে প্রকাশিত হয় । সেই বছরেই দেশ পত্রিকার বিভাগীয় প্রধান হিসাবে যোগ দেন । এই পদে তিনি ১৯৮২ সাল অবধি ছিলেন। এছাড়া তিনি শিলাদিত্য এবং গল্পপত্র পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
ছোটদের জন্য তার রচিত একটি চরিত্র অবসরপ্রাপ্ত ম্যাজিসিয়ান কিঙ্কর কিশোর রায় বা কিকিরা । কিকিরার উপন্যাস পূজাবার্ষিকী আনন্দমেলায় প্রকাশিত হত।
তার রচিত বেশ কয়েকটি কাহিনীতে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে । যেমন বসন্ত বিলাপ, হ্রদ ( চলচ্চিত্র), বালিকা বধূ, (যেটি হিন্দিতেও নির্মিত হয়েছিল) যদুবংশ, ছুটি (এটি তৈরি হয়েছিল তার খড়কুটো উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে)।
রচনা কর্ম:
নিম ফুলের গন্ধ ওয়ান্ডার মামা এক ভৌতিক মালগাড়ী আর গার্ড সাহেব কিকিরা সমগ্র ১ ঘুঘু
কুশীলব গজপতি ভেজিটেবল সু কোম্পানী কেউ কি এসেছিলো কিকিরা সমগ্র ২
অসময় অলৌকিক ম্যাজিশিয়ান কিকিরা সমগ্র ৩
সান্নিধ্য শীষের আংটি ভুনি কাকা'র চৌরশতম
দংশন হারানো জীপের রহস্য মজাদার এক ফুটবল ম্যাচ আর দানাপুরি
খড়কুটো কিশোর ফিরে এসেছিলো বন বিড়াল
মোহ মন্দাগড়'এর রহস্যময় জোৎস্না একটি ভুতের ঘড়ি
দ্বীপ হারানো ডাইরীর খোঁজে
প্রচ্ছন্য কালবৈশাখের রাত্রে
এ আবরণ রাবণের মুখোশ
স্বপ্নে একটি ফটো চুরির রহস্য
নিরস্র নীল বানরের হার
অশেষ একটি অভিশপ্ত পুঁথি ও অষ্ট ধাতু
বালিকা বধূ পাখী ঘর
দেয়াল বাঘের থাবা
মল্লিকা জাদুকরের রহস্যময় মৃত্যু
যদুবংশ সার্কাস থেকে পালিয়ে
পূর্ণ অপূর্ণ হলুদ পালক বাধা তীর
ভুলের ফাদে নবকুমার
তুরুপের শেষ তাস
সোনার ঘড়ির খোঁজে
হায়দার লেনের ১৩ নাম্বার বাড়ীর কফিন বাক্স
ঝিলের ধারে একদিন
ফুলদানী ক্লাব
সোনালী সাপের ছোবল
আজব দেশের গজব রাজা।
=========={={}={{=}={{==}={={{{========
No comments:
Post a Comment