∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
সমর সেন
==============!!!!!!!!!==============
দৈনিক শব্দের মেঠোপথ
২৩ আশ্বিন,১৪২৭.শনিবার
Vol - 156. Dt - 10/10/20
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷!!!!!!¡!!!¡!¡÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
কলকাতার বাগবাজারে। পিতা অরুণ সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি বিখ্যাত সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ দীনেশচন্দ্র সেনের পৌত্র।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
সমর সেন কাশিমবাজার স্কুল থেকে ম্যাট্রি্ক (১৯৩২), স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে আই.এ (১৯৩৪) ,পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্কটিশ চার্চ কলেজের স্নাতক ছিলেন। ইংরেজি বিষয়ে এম.এ পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেনীতে, প্রথম হন তিনি।
কর্মজীবন
মার্কসবাদী নেতা রাধারমণ মিত্র ও বঙ্কিম মুখোপাধ্যায়ের সান্নিধ্য লাভ করার ফলে সমর সেনের রাজনৈতিক মনন গঠিত হয়। তবে তিনি মার্কসের সাম্যবাদী মতবাদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করলেও সরাসরি মার্কসীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করেননি।
তিনি কিছুকাল অধ্যাপনা করেন কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজ এবং দিল্লির কমার্সিয়াল কলেজে। কর্ম জীবনের বৃহৎ অংশ কেটেছে তাঁর সাংবাদিকতায়। স্টেটস্ম্যান, হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, নাও প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকতা করেন। Frontier (ফ্রন্টিয়ার) ও নাও পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। কলকাতা -এর সংবাদ বিভাগে, বিজ্ঞাপনী সংস্থায় এবং মস্কোর প্রগতি প্রকাশনালয়ে অনুবাদক হিসেবেও তিনি কর্মরত ছিলেন।
‘আমি রোমান্টিক কবি নই, আমি মার্ক্সিস্ট’-এভাবেই তিনি মার্কসবাদের প্রতি তাঁর প্রবল আকর্ষণ ঘোষণা করেন। নাগরিক জীবনের স্বভাব, অভাব ও অসঙ্গতির বিদ্রূপাত্মক চিত্রায়ণ ঘটেছে তাঁর কবিতায়। আলোর জন্য অনাবিল অস্থিরতা থেকেই তিনি অন্ধকারময় জীবনের বিবিধ বিপর্যয়ে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন, যদিও তাঁর এ ক্ষোভের প্রকাশ কখনও খুব তীব্র হয়নি। তাঁর বিদ্রূপের ভাষা তীক্ষ্ণ, ভঙ্গি মর্মান্তিক, লক্ষ্যভেদী। মধ্যবিত্তের প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি স্বশ্রেণীর স্বরূপ উন্মোচনে স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৫৭ সালে অনুবাদকের কাজ নিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন যান। বহু রাশিয়ান সাহিত্যের বাংলা অনুবাদ তার কীর্তি। ১৯৬১ সালে দেশে ফিরে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজে যোগদান করেন। তারপর হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় কাজ করেছেন। মতের অমিল হওয়ায় সেই চাকরি ছেড়ে দেন এবং হুমায়ুন কবিরের ইংরেজি পত্রিকা 'নাও' এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এখানেও মতবিরোধ দেখা দিলে নিজেই ফ্রন্টিয়ার নামক ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করতে থাকেন। এছাড়াও দিল্লির অল ইন্ডিয়া রেডিওর সংবাদ বিভাগে কিছুকাল কাজ করেছেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন "Frontier" নামের প্রগতিশীল পত্রিকার।
কাব্যবিষয়
৭১ বছরের জীবনে তিনি কাব্যসাধনা করেন মাত্র ১২ বছর, ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত। এই কালপর্বেই তার পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তার কাব্যগ্রন্থগুলো হচ্ছে
কয়েকটি কবিতা (১৯৩৭)
, গ্রহণ (১৯৪০),
নানা কথা (১৯৪২),
খোলা চিঠি (১৯৪৩)
এবং তিন পুরুষ (১৯৪৪)।
কবিতাসংগ্রহ সমর সেনের কবিতা ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয়।
'কবিতা' পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
নগর জীবনের ক্লেদ ও ক্লান্তি, মধ্যবিত্ত জীবনের প্রতি অবজ্ঞা এবং সংগ্রামী গণচেতনাকে তিনি কাব্যে রূপ দিয়েছেন। কাব্যের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও ব্যতিক্রমী ও নিজস্ব বৈশিষ্টতায় অনন্য। রোমান্টিকতা বর্জিত তীক্ষ্ণ ভাষা প্রয়োগে সাহিত্যজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। স্বাধীনোত্তর কালে বিপ্লবী বামপন্থী চিন্তাধারার সমর্থক ছিলেন তিনি।
গদ্যগ্রন্থ সম্পাদনা
বাবু বৃত্তান্ত (১৯৭৮)।
গ্রন্থাবলী
কয়েকটি কবিতা (১৯৩৭),
গ্রহণ (১৯৪০),
নানা কথা (১৯৪২),
খোলা চিঠি (১৯৪৩) এবং
তিন পুরুষ (১৯৪৪)
বাবু বৃত্তান্ত (১৯৭৮)
"সমর সেন-এর প্রায় কৃতিত্ব এইখানে যে তিনি তাঁর এই লেখাটির অনেক দূর পর্যন্ত একটি সেয়ানা চাল রাখতে পেরেছেন যাতে তাঁর একটু বখে যাওয়া একটু দায়িত্বজ্ঞানহীন, একটু 'ডিলাটান্ট' ব্যক্তিত্ব বেশ ধরা পড়ে' "
.... 'বাবুবৃত্তান্ত' গ্রন্থ সমালোচনা, দেবেশ রায়, পরিচয়, নভেম্বর, ১৯৭৯।
সামন্ততন্ত্রের প্রতি আসক্তি, উপনিবেশের শৃঙ্খল, আর্থিক-সামাজিক-রাষ্ট্রিক-আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতার অভিঘাত মধ্যবিত্তকে বিচলিত করে। স্নেহ-প্রেম প্রভৃতি মানবিক অনুভূতির আড়ালে মধ্যবিত্তের দোদুল্যমানতা, স্বার্থপরতা ও পাশবিকতার মর্মঘাতী রূপ তুলে ধরেছেন তিনি কবিতায়। মধ্যবিত্তের মানসিক বৈকল্যের বিরুদ্ধে তাঁর উচ্চারণ সবল, স্বতঃস্ফূর্ত এবং ব্যক্তিচিহ্নিত। সমকালের নানা টানাপড়েনের চিহ্ন তাঁর কবিতায় লক্ষণীয়। কিন্তু তাঁর কবিতা দুঃসময়ের কাছে আত্মসমর্পণের পরিবর্তে সমৃদ্ধ ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুপ্রাণিত করে। কবির এ অনুভব ও উপলব্ধির অনুঘটক হিসেবে সক্রিয় থেকেছে মার্কসবাদপ্রসূত ইতিবাচক জীবনপ্রত্যয়। তাঁর কবিতার মর্মবস্ত্ততে লক্ষ করা যায় এরকম আশাবাদ: ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় স্তব্ধ প্রগতির চাকা বিপ্লবোত্তর শ্রেণীহীন সমাজেই সচল হবে। এ লক্ষ্যে তিনি কবিতায় ক্রমাগত পুঁজিবাদপ্রসূত ক্ষয়িষ্ণু সমাজকাঠামোর অন্তঃসারশূন্যতা তুলে ধরেন, যা তাঁর জীবনদৃষ্টি ও শিল্পভাবনার স্মারক। ছন্দহীন জীবনের জলছবি অাঁকতে গিয়ে কবিতায় তিনি গদ্যের রূঢ় বাস্তবতায় নিমজ্জিত হয়েছেন, যাতে কাব্যের স্নিগ্ধতাও অনুপস্থিত নয়। তাঁর প্রকাশ-কৌশল অনাড়ম্বর, কোনো রকমের ভূমিকা ছাড়াই তিনি অবলীলায় আপন অভিজ্ঞতার কাব্যিক বুননে পাঠককে সম্পৃক্ত করেন। ফলে পরিচিত পৃথিবীই তাঁর কবিতার আধার হয়ে ওঠে।
সি. পি. আই. ক্যাম্পের আর এক বিখ্যাত লেখক অসীম রায়, যিনি বলেন —
'সমর সেন তাঁর গদ্য কবিতায় এক নবীন সম্ভার এনেছিলেন কিন্তু তার পরিসর বড্ড ছোট্ট। আর তাঁর স্মার্ট ব্রিলিয়ান্ট ব্যক্তিত্ব বোধহয় দীর্ঘস্থায়ী সাহিত্যকর্মের পরিপন্থী।' (জীবন-মৃত্যু, ২য় পর্ব, এবং জলার্ক, জুলাই-ডিসেম্বর ২০০৭-২০০৮)
সমর সেনের কবিতা পড়লে দেখা যাবে তাঁর কবিতার পরিসর, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ মিলিয়ে মোটেই বড্ড ছোট্ট নয়। সমর সেনের স্বল্পস্থায়ী স্বেচ্ছাসিদ্ধান্ত নেওয়া কাব্যজীবন দীর্ঘস্থায়ী কি না এ বিষয়ে সবাই একমত নন, এতদিন পরও নয়। কয়েকটি উদাহরণ -
ক)
হলুদ রঙের চাঁদ রক্তে ম্লান হল,
তাই আজ পৃথিবীতে স্তব্ধতা এল,
বৃষ্টির আগে শব্দহীন গাছে যে কোমল, সবুজ স্তব্ধতা আসে।
খ)
দূরে পশ্চিমে
বিপুল আসন্ন মেঘে অন্ধকার স্তব্ধ নদী।
গ)
নিঃসঙ্গ বট
যেন পূর্বপুরুষের স্তব্ধ প্রেত
ঘ)
উদভ্রান্ত প্রাণ খোঁজে তিব্বতী স্তব্ধতা
ঙ)
বর্ষার সিক্ত পশুর মতো স্তব্ধ বসে
বক্রদেহ নায়কের দল
চ)
দুনিয়াদারীর দুর্দিন, বাজার অন্ধকার
পথে জমকালো স্তব্ধতা।
সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিকই ধরেছেন এ স্তব্ধতাবোধ বাংলা কবিতায় স্বভাবতই নতুন। এই স্তব্ধতা নানাপ্রকারের। প্রথম চারটি উদাহরণে স্তব্ধতা পরিবর্তমানতার গতিস্রোতে থমকে যাওয়া, শেষেরটা সম্ভবতঃ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্তব্ধতার ইঙ্গিত। ঝড়ের কথা আছে অনেক জায়গায়, স্তব্ধতা তার পূর্বাভাস। সমরবাবুর প্রথম পর্যায়ের অনেক কবিতায় ধূসরতার কথা আছে। যেমন —
ক)
ধূসর সন্ধ্যায় বাইরে আসি
বাতাসে ফুলের গন্ধ
খ)
অন্ধকার ধূসর, সাপের মতো মসৃণ
গ)
রাত্রে ধূসর সমুদ্র থেকে হাহাকার আসে
ঘ)
তোমার ধূসর জীবন হতে এস
ঙ)
ভুলে যাওয়ার হাওয়া এল ধূসর পথ বেয়ে
চ)
পাহাড়ের ধূসর স্তব্ধতায় শান্ত আমি
ছ)
হে শহর হে ধূসর শহর!
এই সব উদাহরণে পাহাড়ের ধূসর স্তব্ধতা যদি ইমপ্রেশনিস্টিক হয় অন্যত্র মেটাফরিকাল। জীবনানন্দের সঙ্গে শুধু এইটুকু মিল যে এই দুই কবিই ধূসরতা-উত্তীর্ণ হতে চান, কেউ প্রেমে, কেউ নতুন পৃথিবীর, ইস্পাত দিনের স্বপ্নে। আর আছে বারংবার অন্ধকারের কথা —
ক)
বিশাল অন্ধকারে শুধু একটি তারা কাঁপে
খ)
ঘনায়মান অন্ধকারে
গ)
অন্ধকারের মতো সুন্দর,
ঘ)
অন্ধকার ধূসর, সাপের মতো মসৃণ
ঙ)
পথে নিঃশব্দ অন্ধকার উঠেছে ঘন হয়ে
চ)
মাঝে মাঝে আগুন জ্বলছে
অন্ধকার আকাশের বনে
ছ)
আমার দিনের জীবনে তোমার সেই দুঃস্বপ্ন
এনেছে পারহীন অন্ধকার।
জ)
স্মৃতির দিগন্তে নেমে এল গভীর অন্ধকার
ঝ)
হিংস্র পশুর মতো অন্ধকার এল
ঞ)
এই অন্ধকার আমাকে কি ক'রে ছোঁবে?
আমার অন্ধকারে আমি
নির্জন দ্বীপের মতো সুদূর, নিঃশব্দ
ট)
গহন অন্ধকারে দীপ্ত সূর্য যখন
হানা দেয় ক্লান্ত রাত্রিকে
ঠ)
অন্ধকারের স্তব্ধতা .....
অন্ধকারের দীঘিতে সে শব্দ পাথরের মতো
ড)
এখানে অসহ্য, নিবিড় অন্ধকারে
ঢ)
অন্ধকারের নিঃশব্দ নদীতে যখন ভাটা এল
ন)
অন্ধকারের ভারে আকাশ যখন নিঃশব্দ?
পাঠক, লক্ষ করবেন অন্ধকারের ব্যাপকতা এই কবির কবিতায়। তাদের চোখে না পড়ে পারে না। স্তব্ধতা, ধূসরতা, অন্ধকার, ক্লান্তি সব কটিই বৈপরীত্যে স্থাপিত। অন্ধকার কখনও দৃষ্টিগ্রাহ্য, কখনও বোধোদ্রেককারী, কখনও তা জঙ্গম, কখনও তা অসহ্য, কখনও তা ব্যক্তিক, অন্যত্র বৈশ্বিক।
কবিতা’র প্রথম সংখ্যায় সমর সেনের লেখা কবিতা পড়ে নিজের মুগ্ধতা জানিয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও। ইতিমধ্যে তাঁর কবিতার অনুবাদ পৌঁছে গিয়েছে লন্ডনে। এডওয়ার্ড টমসন আধুনিক ভারতীয় কবিতা নিয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন তাঁর কবিতা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে, তাঁর কবিজীবনের আয়ু খুবই সীমিত ছিল। মাত্র ৩৮ বছর বয়সেই কবিতা লেখা ছেড়ে দেন তিনি।
একবার জিজ্ঞাসু নির্মলকুমার চন্দ্রকে মৃদু হেসে জানিয়েছিলেন : ‘লেখার তাগিদ কমে গিয়েছিল, চাকরি নিলাম, বিয়ে করলাম, বাজার-সংসার-চাকরির আড্ডা নিয়ে দিনটা ভার যেতো, সমাজ-রাজনীতি এসব ঠিক আগের মতো বুঝতাম না…।’ তবে দশ বছর পরে ১৯৭৪-এ সত্তরের যীশু পত্রিকায় ‘হঠাৎ আপনি কবিতা লেখা ছেড়ে দিলেন কেন?’ – এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব হিসেবে বলেছিলেন : ‘ঠিক জানি না। তবে হয়ত মনে হয়েছিল লেখা একটা ছকে পড়ে গিয়েছে, চর্বিত চবর্বণে লাভ নেই।’ এই উত্তরই তাঁকে জানার পক্ষে যথেষ্ট – কেননা তিনি স্বভাবত স্বতন্ত্র। যথেষ্ট যোগ্যতার অধিকারী হয়েও জনপ্রিয়তাকে তাচ্ছিল্য করে কবিতা লেখা ছেড়ে দেওয়ার কারণেই জীবিতাবস্থায় কিংবদন্তি – এ-উদাহরণ আবহমানের বাংলা কবিতায় আর দ্বিতীয় নেই।
বাঁ দিক থেকে সমর সেন, বুদ্ধদেব বসু, রবিন্দ্রনাথ, প্রতিভা বসু, কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এবং মিমি (মিনাক্ষী)
তাঁর মৃত্যু হয় ,২৩ আগস্ট, ১৯৮৭।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment