∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি
আলবেয়ার কামু
============®®®®®®=============
Doinik Sabder Methopath
Vol -185. Dt -07/11/2020
২১ কার্তিক,১৪২৭. শনিবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷©©©©÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
কাম্যু ফরাসি আলজেরিয়ার মন্দোভিতে ৭ নভেম্বর,১৯১৩ জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব দারিদ্র্যের মধ্যে কাটলেও নিরানন্দ ছিল না। তিনি আলজিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। একই সাথে তিনি "তেয়াত্র্ দ্য লেকিপ" (Théâtre de l'équipe) নামে একটি তারুণ্যনির্ভর প্রগতিবাদী নাট্যদল সংগঠন করেন। তার প্রথমদিককার প্রবন্ধগুলি লঁভের্স এ লঁদ্রোয়া (L'Envers et l'endroit "অশুদ্ধ পক্ষ এবং শুদ্ধ পক্ষ", ইংরেজিতে The Wrong Side and the Right Side) এবং নস (Noces "পরিণয়গুচ্ছ", ইংরেজিতে Nuptials) গ্রন্থগুলিতে সংকলিত করা হয়। তিনি প্যারিসে যান এবং আলজেরিয়ায় প্রত্যাবর্তনের পূর্বে সেখানে পারি সোয়ার (Paris Soir) নামক দৈনিক পত্রিকাতে কিছুকাল কাজ করেন। তার লেখা নাটক কালিগুলা (Caligula) ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত হয়। তার শুরুর দিককার দুটি উল্লেখযোগ্য বই, লেত্রঁজে (L'Étranger "দ্বাদশ ব্যক্তি", ইংরেজিতে The Outsider) এবং ল্য মিথ দ্য সিজিফ (Le Mythe de Sisyphe, ইংরেজিতে The Myth of Sisyphus') প্রকাশিত হয় তিনি আবারও প্যারিসে পাড়ি জমাবার পর।১৯৪১ সালে জার্মানি যখন ফ্রান্স দখল করে নেয়, সেইসময় তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন (Resistance movement)-এর একজন পুরোধা বুদ্ধিজীবী হয়ে ওঠেন। তিনি গুপ্ত পত্রিকা কোঁবা (Combat "লড়াই") প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেন এবং এটিতে লেখা দেয়া ও সম্পাদনার কাজও করেন। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে তিনি লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন এবং লা পেস্ত (La Peste, ইংরেজিতে The Plague) (১৯৪৭), লে জ্যুস্ত (Les Justes, ইংরেজিতে The Just) (১৯৪৯) ও লা শ্যুত (La Chute, ইংরেজিতে The Fall) (১৯৫৬)-এর মত বই লিখে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। পঞ্চাশের দশকের শেষার্ধে নাট্যশালার প্রতি কাম্যুর ভালোবাসা সক্রিয়তা পায়। এসময় তিনি উইলিয়াম ফকনার-এর 'জনৈকা সন্ন্যাসিনীর মৃত্যুতে প্রার্থনা' (Requiem for a Nun) এবং দস্তয়েভ্স্কির 'অধিকৃত' (The Possessed)-এর মঞ্চ সংস্করণ রচনা করেন এবং নাটকগুলির নির্দেশনার দায়িত্বও পালন করেন।
ভাবগুরু
দস্তয়েভ্স্কি, ফ্রানৎস কাফকা, কিয়ের্কেগার্ড, Herman Melville, নিৎশে, সার্ত্র, Simone Weil, Pascal Pia
ভাবশিষ্য
Thomas Merton, Jacques Monod, সার্ত্র
তিনি ১৯৫৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। সবচেয়ে কম বয়সে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে রাড্ইয়ার্ড কিপলিং-এর পর পরই তার অবস্থান।
তিনি ১৯৬০ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।
কামু সম্পর্কে অন্যান্যদের উক্তি -
-অবধারিতভাবেই কামু আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রধানতম ব্যক্তিবর্গের একজন হয়ে উঠেছিলেন এবং ফ্রান্সের ইতিহাস ও তাঁর নিজের শতাব্দীর তিনি ছিলেন এক স্বতন্ত্র প্রতিনিধি। - জঁ পল সার্ত্র্, কামুর মৃত্যুর পর।
কামুর নির্বাচিত রচনাবলী :
লেত্রঁজে (L'Étranger; ইংরেজিতে The Outsider অথবা The Stranger) (১৯৪২)
লা পেস্ত (La Peste; ইংরেজিতে The Plague) (১৯৪৭)
"এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখ। ডা. বার্নার রিও তার অপারেশন থিয়েটার ছেড়ে বেরিয়েছেন। এমন সময় পায়ের নিচে নরম মাংসের পিণ্ড। একটা মরা ইঁদুর! রিও কিছুক্ষণ থমকালেন। পাত্তা না দিয়ে এক লাথি মেরে সেটাকে সরিয়ে চলে গেলেন নিজের কাজে। এভাবেই শুরু হয়েছে ‘লা পেস্তে’ বা ‘দ্য প্লেগ’ উপন্যাসটি। রিও ওরান শহরে কর্মরত চিকিৎসক, যে শহরকে গ্রাস করেছিলো প্লেগ। এই মহামারির সূত্রপাত একটা লাথি। ইঁদুরটিকে পরীক্ষা না করে লাথি মেরে সরিয়ে দেওয়া।"
দ্য প্লেগ’ উপন্যাসে দেখা যায়, ওরান শহরে রোগটি হটাৎ করে দেখা দেয়, কোথাও থেকে সংক্রমিত হয়ে নয় বরং অজানাভাবে হঠাৎ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ইঁদুরের মাধ্যমে শুরু হয়, এরপর সরকারের উদাসীনতা, গুজব আর অলসতার কারণে জনগণের মধ্যে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে শহরের সকল দোকান বন্ধ হয়ে যায়, রাস্তাগুলো খালি হয়ে পড়ে থাকে। সংক্রমণটি জ্যামিতিকভাবে এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে, ডেথ গ্রাফের দিকে তাকালে দেখা যায় : মৃত্যুর গ্রাফের রেখাটি খাড়াভাবে উঠেছে। দ্রুতই সমস্ত শহর কোয়ারান্টাইনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে, কিন্তু হাসপাতালের দেয়ালের ভেতরে আবদ্ধ ডাক্তার এবং চিকিৎসার জন্য সরঞ্জামের ঘাটতি আর মুখোশগুলোর কার্যকরহীনতা নিয়ে শহরজুড়ে বিতর্ক ওঠে। একদিকে, মহামারিটি অন্যসব সমস্ত বিপর্যয়ের থেকে আলাদাভাবে গোপনে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, যে কারণে নিজেকে বাঁচানোর জন্য বুঝে উঠতে মানুষের বেশ সময় লাগে। সেই সময়ের মধ্যে একজন পুরোহিত ঈশ্বরের পক্ষে একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন, আর শহরের খবরের কাগজগুলো নকল খবর প্রদান করা শুরু করে।
কামুর এই উপন্যাসটিকে প্রায়ই ফ্যাসিবাদের রূপক হিসেবে অভিহিত করা হয়। কিন্তু আমি মনে করি, উভয় বিবেচনায় সেটা ভুল। উপন্যাসটি পড়ার পর আমার ধারণা : ‘দ্য প্লেগ’ রূপক কিছু নয়, বরং এতে সরাসরি সবকিছু দেখানো হয়েছে, একইসঙ্গে এটি স্পর্শকাতর এবং বয়ানে সুস্পষ্ট—একটি মহামারির মধ্যে পড়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে মরে যাওয়া মানুষের গল্প। কামু যক্ষ্মায় ভোগা মানুষ, তিনি জানেন রোগকে রূপক হিসেবে ব্যবহার করার কিছু নেই। দ্বিতীয়ত, উপন্যাসে কামুর ভিন্নরকম বয়ানের ধরন ক্যাটাগরির জায়গা থেকে একে ফ্যাসিবাদি টেক্সটের কাতার থেকে আলাদা করে।
লা শুত (La Chute; ইংরেজিতে The Fall) (১৯৫৬)
লা মর ওরোজ (La Mort heureuse; ইংরেজিতে A Happy Death) (১৯৭০)
ল্য প্রমিয়ের অম (Le premier homme; ইংরেজিতে The First Man) (১৯৯৫)
Albert Camus, Maria Casarès. Correspondencia inédite (1944-1959). Édition de Béatrice Vaillant. Avant-propos de Catherine Camus. Colección Blanche, Gallimard. Parution: 09-11-2017.
অ্যাবসার্ডিজম বা নিহিলিজম :
এ জীবনের অর্থ কী? আলবেয়ার কামু তাঁর সমস্ত সাহিত্য বিশেষ করে উপন্যাস ও নাটকের ভেতর দিয়ে এ প্রশ্নটাই খোঁজ করেছেন। কামু মনে করেন এ জীবনের তেমন কোন মানে নেই। এবং এর কোন মানে থাকার কথাও নেই। এ ধরণের ভাবনার নাম অ্যাবসার্ডিজম যা অস্তিত্ববাদী দর্শনের একটা বিশেষ অংশ। কিন্তু যদি সত্যি সত্যি মানেই না থাকে অর্থাৎ জীবনটা যদি এক উদ্ভট বা উৎকট জঞ্জাল বলে মনে হয় তাহলে এর অবসান কোথায়? এর উত্তরে কামু তাঁর The Myth of Sisyphus-এ বলেন “সত্যি এটা গুরুত্বপূর্ণ দাশনিক প্রশ্ন আছে, এবং প্রশ্নটা আত্মহত্যা নিয়ে”। তিনি স্তম্ভিত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন এই উৎকট জঞ্জাল থেকে যৌক্তিক বাঁচার উপায় কি আত্মহত্যা?” তিনি বলেন, আত্মহত্যা কোন সমাধান না। অনেক দার্শনিকের মতো তিনি আত্মহত্যাকে জীবনের বিকল্প মনে করেন না। তিনি মনে করেন, এই উৎকট জঞ্জাল থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় এটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া। এ যেন ট্রেনে উঠে পড়া এক যাত্রী। অবধারিত এই যাত্রায় সামিল হওয়া মানে এর শেষ গন্তব্যে পৌঁছানো।
১৯৪২ সালে প্রথম উপন্যাস The Outsider-এ কামুর এই চিন্তার পরিচয় পাওয়া যায়। উপন্যাসটি আমেরিকাতে The Stranger নামে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের নায়ক মার্শালই সেই কথিত বহিরাগত যাকে কামু বলছেন আউটসাইডার। তিনি ছিলেন একজন ফরাসী যুবক।বাস করতেন আলজেরিয়ায়। উপন্যাসটি শুরু হয়েছে মারাত্মক এক মানসিক অবসাদ্গ্রথতার ভেতর দিয়ে। “মা আজ মারা গেছে অথবা হতে পারে কাল, আমি জানিনা”। কী পরিস্থিথিতে একজন মানুষ এতো নিরুত্তাপ হয় সেটা বোঝা যায় মায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে। চারিদিকে শোকাবহ এক পরিবেশ, ঠিক এই অবস্থায় মার্শালের মুখে নেই কোন শোকের চিহ্ন, বরং অন্যান্য সময়ের মতো সে স্বাভাবিক। এর পরবর্তীতে এক সম্পর্কের জের ধরে মার্শাল একটা এক আরব যুবকে খুন করে। এর প্রেক্ষিতে বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় তাকে এবং শেষমেশ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয় সে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বাবার মৃত্যু, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আলজেরিয়ার ওপর ফ্রান্সের নিপীড়ন তা ছাড়া সীমাহীন দারিদ্র্য তাঁকে জীবন সম্পর্কে ভিন্ন রকম ভাবতে বাধ্য করেছে। মার্শালে একজন আরব হত্যার বিষয়টা আলজেরিয়ার ওপর ফ্রান্সের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। আলজেরিয়ার রাজনৈতিক স্বাধীনতার যুদ্ধ যেটা ১৯৫৪ সালে চূড়ান্ত রূপে প্রকাশিত হয় তার প্রাথমিক অবস্থা, মানুষের মনোভাব, সম্পর্ক ইত্যাদি আউটসাইডার-এ ফুটে ওঠে।
কামুর দর্শন ভাবনা সবচেয়ে স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে (নন-ফিকশন আকারে)The Myth of Sisyphus বইয়ে। বইটা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হলেও এটা ইংরেজি অনুবাদ আকারে প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। কিয়ার্কেগার্ড, শোপেনহাওয়ার, নিটসের ধারাবাহিকতায় কামু বলেন জীবনের কোন মানে নেই, নেই কোন গভীর অর্থ। গ্রীক মিথলোজিতে সিসিপাসের জীবনের মতই মানুষের জীবন। দেবতার রুদ্ররোষে যেমন সিসিপাস আজীবন পাহাড়ের নিচে আটকে ছিল, পাথর ওপরে তোলার বার বার ব্যর্থ চেষ্টা করেও পারেনি ঠিক মানুষের জীবনটাও সিসিপাসের ট্র্যাজেডির মতো। মানুষ বাঁচে স্বপ্ন নিয়ে, আগামীকালের স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু আগামীকাল তাকে নিয়ে মৃত্যুর দুয়ারে, তাই আগামীকাল যে তার শত্রু! মানুষের জীবন সম্ভবত এমনি এক অজানায় পাড়ি দেয়া, এক ঠিকানাহীন অনির্দেশ্যের পথে অকারণে ভেসে যাওয়া। এ পৃথিবীটা সে কারণেই বড্ড অস্থায়ী আর ক্ষণিকের। বাঙলার বাউলরা যখন পথে পথে গান গেয়ে ফেরে, “একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর রে মন আমার/ কেন বান্ধ দালান ঘর” তখন বোধকরি এই অ্যাবসার্ডিজমের ভেতর আমরা ডুবে যায়। তবে কামু একটা গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেন, এই পৃথিবীটা নিজে জঞ্জাল কিছু না, এমনকি মানুষের চিন্তাও না; তখনই অ্যাবসার্ড ঘিরে ধরে যখন মানুষ এই পৃথিবীর অবৈদ্ধিকতাকে বুঝতে চেষ্টা করে।
কামু বলেন মানুষের জীবনের কোন মুল্য আছে কি নেই সেটাই সবচেয়ে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন। অন্যন্য প্রশ্নগুলো তাঁর কাছে বিশেষ একটা গুরুত্ব বহন করেনা। পৃথিবী নাকি সূর্য—কে কাকে মাঝে রেখে ঘুরল সেটা বিশেষ কোন গুরুত্বের বিষয় না। এটা না জানলে মহাভারত অসুদ্ধ হবেনা, কিন্তু তাকে অবশ্যই জানতে হবে, কেন সে বেঁচে থাকবে? কামু মনে করেন জীবনের যেহেতু কোন মানে হয়না তাই আত্মহত্যা এর একমাত্র পথ। সিসিপাসে তিনি বলেন “There is only one really serious philosophical problem, and that is suicide.”। সম্পূর্ণ নিরেশ্বরবাদী কামুর জগত ভাবনায় ছিল না পরা-বাস্তবতা, ছিল না পারমার্থিক সুখের প্রত্যাশা। প্রতিটা মানুষকে মরতে হবে, জীবনকে যতো দীর্ঘায়িত করা হোক না এযেন এক অবশ্যম্ভাবী পরিণতি।
তবে স্মরণ রাখতে হবে, কামু শুধু শুধু মানুষের জীবনকে অ্যাবসার্ড বলেননি, এটা এমন নয় যে আধুনিক জীবন অত্যন্ত জটিল, অত্যন্ত সমস্যাসংকুল, ব্যর্থতা, হতাশা, গ্লানি আর ক্লান্তিকর, তাই এ জীবন অর্থহীন। কামু এটা বোঝাননি বরং তিনি বুঝিয়েছেন, আমাদের অস্তিত্বের গভীরে লুকিয়ে আছে ভীষণ এক অসামঞ্জস্যতা। অ্যাবসার্ডের জন্ম মানুষের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে, বেঁচে থাকার নিরন্তর ইচ্ছের মধ্যে, ইচ্ছে আর বাস্তবতার দ্বন্দ্বের মধ্যে, জীবনের অগ্রস্ররমানতার বিরুদ্ধে, এই বোধহীন নিরুত্তাপ মহাবিশ্বের মধ্যে। কামুর অ্যাবসার্ডিজম যতটা রাজনৈতিক বা সামাজিক তার থেকে ঢের বেশি, এটাই ফিলসফিক্যাল অ্যাবসার্ডিজম। কামুর নিহিলিজম গৌতমবুদ্ধের থেকেও তীব্র এবং মারাত্মকভাবে সাংগঠনিক। বুদ্ধকে অনেকে নিরেশ্বরবাদী, নিহিলিস্ট, অ্যাবসার্ডিস্ট ইত্যাদি বলেন। কিন্তু যেখানে চূড়ান্ত বিচারে মানুষ চির মুক্তির আশা করে সেখানে কীভাবে তাঁকে এগুলো বলা যাবে? এক্ষেত্রে কামু ছিলেন ভিন্ন রকম। জ্যাঁ-পল-সার্ত তাই আউটসাইডারের রিভিউ করতে গিয়ে লেখেন, “The absurd, to be sure, resides neither in man nor in the world, if you consider each separately. But since man’s dominant characteristic is ‘being in the world,’ the absurd is, in the end, an inseparable part of the human condition.”
২০১৮ সালের ৪ মার্চ Los Angles Review of Books এর সম্পাদক Robert Zaretsky এর সাথে এক ইন্টারভিউতে তাঁর মেয়ে ক্যাথেরাইন কামু বলেন, “আমার বাবা ঠিক অন্যদের মতই একজন মানুষ ছিলেন। তাঁর লেখা আমাদের স্মরণ করায় আমাদের দুর্বলতা, ভুলভ্রান্তিও আমার মহানভবতার সাথে যুক্ত। আমি খুব ছোটবেলা থেকে বাবার নিঃসঙ্গতা, এবং কষ্টগুলো কাছ থেকে অনুভব করতাম। কিন্তু আমি খুব ছোট ছিলাম, তাই তাঁকে আমি আমার ভীষণ শ্রদ্ধাকরার কথাগুলো বলতে জড়তা অনুভব করতাম।(My father was human like the rest of us. But his writings remind us that our weakness and fallibility also make for our greatness. Personally, I felt from an early age my father’s solitude and suffering. But I was too small, too shy to tell him that I loved him just as he was. ) তিনি আরও বলেন, তিনি সত্যি অত্যন্ত গর্বিত যে তিনি আলবেয়ার কামুর সন্তান। তাঁর বাবার সাহিত্যকর্ম, চিন্তার ঋজুতা, তাকে আজও অনুপ্রাণিত করে। নোবেল পুরস্কারের মতো এতো বড় একটা স্বীকৃতির মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৯৬০ সালে তাঁর মৃত্যু যেন মাঝ আকাশে এক নক্ষত্রের পতন। ফ্রান্সের ভিলেব্লেভেন শহরে ব্রোঞ্জের এক স্মৃতিফলকে এই ক্ষণজন্মা মানুষটার নিয়ে লেখা হয়, “"From the General Council of the Yonne Department, in homage to the writer Albert Camus whose remains lay in vigil at the Villeblevin town hall on the night of 4 to 5 January 1960"।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
( সংগৃহীত)
No comments:
Post a Comment