Sunday, 10 January 2021

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
       জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

তিলোত্তমা মজুমদার
===========$$$$$$==============
     Doinik Sabder Methopath
      Vol - 248. Dt -11.01.2021
       ২৬ পৌষ,১৪২৭. সোমবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷$$$$$$÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷


" পথ চলতে চলতে একটুকরো পাথরে হোঁচট খাওয়ার মতো.  হোঁচট খেলে পায়ের সঙ্গে পাথরের একটা সম্পর্ক হলো না, বলো? আঘাতে পায়ের ডগা টনটন করে উঠল। সেই টনটনানি নিয়ে আমরা চললাম। যতক্ষণ থাকলো সেই বেদনাবোধ ,ততক্ষণ পাথর থাকলো সঙ্গে সঙ্গে। ব্যথা সেরে গেলে পাথরকে আর মনে রাখলাম না। আবার একটা নতুন পাথরের ধাক্কা খেলাম,  এবারে হয়তো জোর আঘাত নয় ফেটে গেল, গলগল করে রক্ত বেরুল,  , ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ রেখে রেখে চলেছি। অনেক অনেকদিন ধরে সেই যন্ত্রণা আমাকে ছেড়ে যায়নি। এমনকি- এমনকি সৃষ্টি করেছে এক স্থায়ী ক্ষতমুখ। বড় গভীর সম্পর্ক তখন আমার সঙ্গে পাথরের।"
     সাধারণ গ্রাম জীবন ও শহুরে জীবনের যন্ত্রণাক্লিষ্ট অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এঁকে চলেন হৃদয় অনুভূতি  গভীর ক্ষতগুলো । এই বিশেষ মৌলিক বৈশিষ্ট্যের জন্য পাঠকসমাজে তাঁর রচনার আজ বেশ সমাদৃত। তাঁর রচনাগুলি যেন

"একটি পরিবার নিয়েই যেন একটি সমাজ। পাপ আর পুণ্য এখানে হাত ধরাধরি করে হাঁটে। নিজেদের ভিতর ভালবাসায় ভরা ছোটদের জীবন, বড়দের ভিতরে পাপের বাসা।"

তিলোত্তমা মজুমদারের জন্ম হয় উত্তরবঙ্গে। তিনি জন্মগ্রহণ করেন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ার মহাকুমার কালচিনিতে। তাঁর শৈশব কাটে কালচিনির চা বাগানে। সেখানেই তাঁর স্কুল জীবনের পড়াশোনা। তিনি কালচিনি চা-বাগানে ইউনিয়ন একাডেমি স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ১৯৮৫ সালে কলকাতায় চলে আসেন .স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি -স্নাতক পাশ করেন. বর্তমানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগের সঙ্গে যুক্ত.

 প্রথম লেখালেখির ১৯৯৩ সালে. তাঁর প্রথম লেখা লেখি কালচিনির "উন্মেষ"পত্রিকায়. তাঁর প্রথম উপন্যাস' ঋ' " এ কালের রক্তকরবী "পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । পরে সেই নামে প্রকাশিত হয় তাঁর গল্পগ্রন্থ। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে - 
একতারা, এসো সেপ্টেম্বর। চাঁদের গায়ে চাঁদ ,           জর্মের চোখ, প্রহাণ,  মানুষ শাবকের কথা , বসুধারা, রাজপাট ,শামুকখোল, অমৃতানি প্রভৃতি
কাব্যগ্রন্থ - আমি যার সহোদরা
গল্পগ্রন্থ - ঋ 



পুরস্কার 
তিনি "বসুধারা" উপন্যাসের জন্য আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন।এছাড়াও তিনি পেয়েছেন "শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কার" ও "শরৎ স্মৃতি পুরস্কার"।

কবিতায় 

রাত্রি হোক বনে 
তিলোত্তমা মজুমদার

চলো নির্জনে দাঁড়াই 
একটি কথা না বলে 
হাত ধরে থাকি পরস্পর
 চলো নির্জনে দাঁড়াই
 কাঠি দিয়ে আঁকিবুকি বালিতে বালিতে 
ছোট ছোট নুড়ি ফেলি জলে
 ভেজা পা দুটি আমার কোলে তুলে দাও
 আমি ঘাসের কণা ঢেকে দিই
ঢেকে দিই আমার ঈর্ষা ও 
খোলা রাত্রি যন্ত্রণায় চাপা কান্না মুখ 
তোমার আঙুল স্পর্শ দেবে
 চলো নির্জনে দাঁড়াই
 ছেলেবেলা কেটেছে যেখানে
 তার থেকে উপকূল বেশি দূর নয় 
সাইকেলে মিনিট তিরিশ
তুমি বায়ু কেটে যাবে 
আমি সারা দেহ সমুদ্রের তট 
আমার শৈশবের কথা লেখা আছে বনে
 নির্জনতা ভেঙে দিতে 
দুটি একটি শুকনো পাতার নিচে
 পড়া তোমার শৈশব দেখা হলে
 আমার শৈশব তারপর
 সমুদ্র ভ্রমণ শেষে বনান্তরে গতি
 স্কুলের যেখানে যেখানে টিফিনের কৌটা খোলা
 সেখানে সেখানে শুলে পাশাপাশি 
চোখ মুদে আসে।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆

No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। পশুপতি ভট্টাচার্য । খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। Dt -15.11.2024. Vol -1053. Friday. The blogger post in literary e magazine

পশুপতি ভট্টাচার্য  ১৫ নভেম্বর ১৮৯১ -  ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮   একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। জন্ম  বিহার রাজ্যে পিতার কর্মস্থল আরায়। তাদ...