∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
====={====={======{======{======{==
Doinik Sabder Methopath
Vol - 289. Dt -21.02.2021
৮ ফাল্গুন, ১৪২৭. রবিবার
÷÷÷×÷××××××××××××÷÷÷÷÷÷÷÷÷×××׶÷÷÷
বাংলা ভাষার প্রতি যথার্থ সম্মান জ্ঞাপক যেসব আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে ১৯৫২ সালে ঢাকাসহ পূর্ববঙ্গ, ১৯৫৬ সালে পুরুলিয়ার মানভূম অঞ্চল এবং ১৯৬১ সালে অসম করিমগঞ্জ শিলচর ইত্যাদি সংঘটিত আন্দোলন ই মুখ্য ভূমিকা নিয়েছে। বিশেষ করে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের চরম প্রকাশ ঘটে। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্রযুবা হতাহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হয়। নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে। তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করে। ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি।
১৯৮৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে 'বাংলা ভাষা প্রচলন বিল' পাশ হয়। যা কার্যকর হয় ৮ মার্চ ১৯৮৭ সাল থেকে।
কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসরত দুই বাঙালি রফিকুল ইসলাম এবং আব্দুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানের কাছে ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে।সে সময় সেক্রেটারী জেনারেলের প্রধান তথ্য কর্মচারী হিসেবে কর্মরত হাসান ফেরদৌসের নজরে এ চিঠিটি আসে। তিনি ১৯৯৮ সালের ২০ শে জানুয়ারী রফিককে অনুরোধ করেন তিনি যেন জাতিসংঘের অন্য কোন সদস্য রাষ্ট্রের কারো কাছ থেকে একই ধরনের প্রস্তাব আনার ব্যবস্থা করেন। পরে রফিক, আব্দুস সালামকে সাথে নিয়ে “মাদার ল্যাংগুয়েজ লাভার্স অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড” নামে একটি সংগঠন দাঁড় করান। এতে একজন ইংরেজিভাষী, একজন জার্মানভাষী, একজন ক্যান্টোনিজভাষী, একজন কাচ্চিভাষী সদস্য ছিলেন। তারা আবারো কফি আনানকে “এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড”-এর পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখেন, এবং চিঠির একটি কপি ইউএনওর কানাডীয় দূত ডেভিড ফাওলারের কাছেও প্রেরণ করা হয়।
১৯৯৯ সালে তারা জোশেফের সাথে ও পরে ইউনেস্কোর আনা মারিয়ার সাথে দেখা করেন, আনা মারিয়া পরামর্শ দেন তাদের প্রস্তাব ৫ টি সদস্য দেশ – কানাডা , ভারত, হাঙ্গেরি, ফিনল্যান্ড এবং বাংলাদেশ দ্বারা আনীত হতে হবে। তারপর বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দানে ২৯টি দেশ অনুরোধ জানাতে কাজ করেন।
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
২০১০ সালের ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে এখন থেকে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ। - এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে উত্থাপন করে বাংলাদেশ। মে মাসে ১১৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।
জেলার অন্যান্যয জায়গার মতো খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন (৭তম বর্ষ ) পালিত হলো, নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে।
হেঁড়িয়া,২১ ফেব্রুয়ারি : হেঁড়িয়ার উদাখালী বাসস্ট্যান্ডে খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনীর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি পালিত হলো মাতৃভাষা বিষয়ক আলোচনা, কবিতা -ছড়া পাঠ, আবৃত্তি , সংগীতের মধ্য দিয়ে। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সুমন নারায়ন বাকরা। স্বাগত ভাষণ দেন ড. বিষ্ণুপদ জানা। মাতৃভাষা বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পার্থসারথি দাশ, স্বপন মন্ডল,সুদর্শন সেন,দূর্গা দাস, ধীরেন্দ্রনাথ প্রধান,জয়দেব মাইতি , কানাইলাল জানা, বৃন্দাবন দাস অধিকারী , কুন্তলকান্তি মন্ডল, শক্তিপদ মাইতি প্রমুখ । মাতৃভাষা বিষয়ক স্বরচিত কবিতা-ছড়া পাঠে অংশগ্রহণ করেন অজিত জানা, সমরেশ পড়্যা, সুনীল দাস, নিশিকান্ত ভূঞ্যা,প্রদীপ শাসমল, রবীন্দ্রনাথ দাস অধিকারী। সংগীত পরিবেশন করেন মধুমিতা গিরি ও সুভাষচন্দ্র ঘোড়াই। ড. বিষ্ণুপদ জানা সম্পাদিত ' শব্দের মেঠোপথ ' পত্রিকার ' হৃদয় রঙে অমর ২১ ' বিশেষ সংখ্যাটি ও খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনীর দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশ করেন ড. রামচন্দ্র মন্ডল ও ড. প্রবালকান্তি হাজরা।
প্রকাশিত হয় শব্দের মেঠোপথ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা" হৃদয়ের রঙে অমর ২১" (২য় বর্ষ) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে । সম্পাদনা ড. বিষ্ণুপদ জানা।. মোট জেলাসহ কলকাতার ৩৩ জন কবি ভাষা দিবস কে মনে রেখে তুলিতে রক্তের টান দিয়েছেন ।
যারা লিখেছেন -
অজিত জানা অঞ্জন কুমার দাস অনিমেষ মন্ডল অভিজিৎ সাউ অমিত কাশ্যপ কাজী শামসুল আলম খুকু ভূঞ্যা, গোবিন্দ মোদক চন্দন মাইতি জয়দেব মাইতি, তপন কুমার গোস্বামী দুর্গাদাস মিদ্যা নন্দিনী সর্কার ড. নির্মল কুমার বর্মন নীতা সরকার বনশ্রী রায় দাস , বিকাশ চন্দ বিশ্বজিৎ রায় ভগীরথ সর্দার মোনালিসা পাহাড়ি রজত দাস রাজিব ঘাঁটি লক্ষীকান্ত মন্ডল শুভময় দাস শুভ্রাশ্রী মাইতি শ্রাবণী বসু সঞ্জয় সোম সমরেশ সুবোধ পড়িয়া সাতকর্ণী ঘোষ সুবীর ঘোষ ও সুব্রত ঘোষ।
No comments:
Post a Comment