Saturday, 13 February 2021

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆

         আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে


===========!!!!!!!!!!!¡!!!!!!!!============

    Doinik Sabder Methopath

     Vol -282. Dt -14.02.2021

      ১লা ফাল্গুন, ১৪২৭ রবিবার

÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷√√√√√√÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷


"ফুল ফুটুক না ফুটুক

আজ বসন্ত".

                      আজ পয়লা ফাল্গুন । ঋতুরাজ বসন্তের আগমন।

কবিগুরু লিখেছেন,

 ‘আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।

তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে

 কোরো না বিড়ম্বিত তারে।’


             প্রকৃতির দক্ষিণা দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া।কোকিলের কণ্ঠে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরের খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের আনাগোনা। সব কিছুই জানান দিচ্ছে আজ পয়লা ফাল্গুন। 

"বসন্ত আজ আসলো ধরায়, ফুল ফুটেছে বনে বনে, শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায়, ফাল্গুনী মোর মন বনে’ .

           এটি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বসন্তের আগমনী গানের সুর। এই সুরে কোকিলের কণ্ঠে তাল মেলানোই বলে দিচ্ছে বছর ঘুরে আবারো এসেছে বসন্ত।

               ফাল্গুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এতো বর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। তাই কবির ভাষায়-

 ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ পয়লা ফাল্গুন’।


শিশু-কিশোর, আবালবৃদ্ধবনিতা, তরুণ-তরুণী বসন্ত উন্মাদনায় আজকে মেতে উঠবে। শীতকে বিদায় জানানোর মধ্য দিয়েই বসন্ত বরণে চলবে ধুম আয়োজন। শীত চলে যাবে রিক্ত হস্তে, আর বসন্ত আসবে ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের জরা-জীর্ণতাার অসাাড় পরিবেশ।




বসন্তকে সামনে রেখে গ্রাম বাংলায় মেলা , পার্বন, উৎসব অনুষ্ঠান ।  বাঙালির আয়োজনের সমারোহ । ভালোবাসার মানুষেরা মন রাঙাবে বাসন্তি রঙ্গেই। শীতের সঙ্গে তুলনা করে চলে বসন্তকালের পিঠা উৎসবও।

দিনটিকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন গ্রহণ করেছে নানা কর্মসূচি। গাছের ঝড়া পাতা শেষে এখন আবার নতুন পাতা পল্লবে সেজেছে প্রকৃতি।

শীতের শেষে ঋতুচক্রের এই মাস বাঙালির জীবনে প্রকৃতির রূপ বদলে যায়। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও পহেলা ফাল্গুন ঋতুরাজ বসন্ত উদযাপিত হবে,  শান্তিনিকেতনের বকুল বীথিতে।

গাছে গাছে ফুল ফুটবার এ দিনটিকে চিরাচরিতভাবে পহেলা ফাল্গুন হিসেবে বাংলা মাসের গণনা শুরু হয়। ঝরে পরা শুকনা পাতার মর্মর ধ্বনির দিন শেষ হয়ে আসে। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতই বাঙালির মনেও দোলা লাগায়। একই সাথে বাসন্তি রংয়ের শাড়ি ও পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে আনন্দে মেতে ওঠার আবাহন বাংলার তরুণ-তরুণীরা। বাসন্তী শাড়ি পরে খোঁপায় গাদা ফুল গুঁজে নারীরা হাজির হয়,  বসন্ত বরণ উৎসব উদযাপন করতে।

আর মনে মনে গেয়ে ওঠে ....

      ----আজ, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান

কবিতা -

ফাল্গুন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 ফাল্গুনে বিকশিত

কাঞ্চন ফুল,

ডালে ডালে পুঞ্জিত

 আম্রমুকুল।

চঞ্চল মৌমাছি

গুঞ্জরি গায়,

বেণুবনে মর্মরে

 দক্ষিণবায়।

   ( সংক্ষিপ্ত)

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্ত নিয়ে অনেক গান-কবিতা লিখেছেন। তাঁর মায়ার খেলা গীতিনাট্যে….

‘আহা আজি এই বসন্তে,

এতো ফুল ফোঁটে,

এতো বাঁশি বাজে এতো পাখি গায়।’

কবিগুরু ছাড়া যেমন বসন্ত অসম্পূর্ণ তেমনি প্রেমের কবি নজরুলও বসন্তকে তুলে এনেছেন কবিতা ও গানে| কাজী নজরুল ইসলাম বসন্ত নিয়ে লিখেছেন একটি গানে-

‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়,

ফুল ফুটেছে বনে বনে,

শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন বনে।’

অথবা

‘বসন্ত এলো এলো এলোরে,

পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে।’



বসন্ত উৎসবে শান্তিনিকেতন -

                 ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়, এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্তোৎসব পালনের রীতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই চলে আসছে।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা, বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। বসন্ত মানেই একে অপরের হাত ধরে হাঁটা। এখানে বসন্ত উত্সবের দিন বাইরে থেকে প্রচুর জন সমাগম হয়| কারণ, এখানের প্রাকৃতিক পরিবেশে শীতের খোলসে ঢুকে থাকা শাল, পলাশ, শিমুলর বনাঞ্চল অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে| মনে হয় গাছে লাগে আগুন রঙের খেলা করছে। প্রকৃতিতে চলে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব।

বসন্ত যে মনের রঙ

 শিমুল পলাশের রঙে 

বসন্ত যে গান জাগায়

 কোকিলের কুহুতানে

 বসন্তের যে মধুময়

মধুপের গুঞ্জরণে 

বসন্ত যে উদাসী

 দক্ষিণা বাতাস সনে।


∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆



 

No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...