"সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।"
বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি
ধম্মং শরণং গচ্ছামি
গৌতম বুদ্ধ
জন্ম , তৎকালীন অখন্ড ভারতবর্ষে অবস্থিত লুম্বিনীর জেলার কপিলাবস্তুতে নগরে, আনুমানিক ৫৬৩ খ্রিস্টপূর্ব অথবা ৪৮০ অব্দে|(বর্তমানে লুম্বিনি আজ নেপালের অন্তর্গত)
শাক্য রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন| তাঁর বাবার নাম ছিলো শুদ্ধোধন এবং মায়ের নাম ছিলো মায়া দেবী| শাক্যমত অনুসারে এটাও বলা হয় যে, মায়া দেবী গর্ভাবস্থা থাকাকালীন যখন শশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তখন নাকি তিনি তরাই অঞ্চলেরে অন্তর্গত লুম্বিনী গ্রামে এক শালগাছের তলায় সিদ্ধার্থের জন্ম দেন কিন্তু সিদ্ধার্থের জন্মের মাত্র সাতদিনের মধ্যেই তিনি মারা যান|
এরপর থেকে ছোট্ট সিদ্ধার্থ তাঁর মাসি গৌতমীর কাছে লালিত পালিত হন| অনেকে মনে করেন তাঁর নামের “গৌতম” অংশটি তাঁর মাসির নাম থেকেই এসেছে| কিন্তু এই কথাটা কতটা সত্য, সেই বিষয়ে কারোর এখনো অবধি জানা নেই|
এই কথা শোনার পর রাজা শুদ্ধোধন অনেক চেষ্টা করেছিলেন সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে আটকাবার তাইতো তিনি তাঁর ছেলেকে সংসারে মন বসানোর উদ্দেশ্যে মাত্র ষোলো বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন যশোধারা নামের এক রাজকুমারীর সাথে| তাঁদের একটা ছেলেও হয় এবং সেই ছেলের তাঁরা নাম রাখেন রাহুল|
কিন্তু হাজার সাংসারিক করার চেষ্টা করলেও, হাজারও বিলাসীতার মধ্যে তাঁকে রেখে দিলেও রাজা শুদ্ধোধন সেই গনৎকারদের বলে যাওয়া ভবিষ্যদ্বাণীকে ঘটতে একদমই আটকাতে পারেননি|
অবশেষে যখন গৌতমের প্রায় উনত্রিশ বছর বয়স, তখন তিনি আর নিজেকে এই সাংসারিক মায়াজালের মধ্যে আবদ্ধ রাখতে না পেরে, সেইসমস্ত কিছুকে ত্যাগ করে আত্মজ্ঞানের উদ্দেশ্যে রাজমহল ত্যাগ করে চলে যান| বৌদ্ধ ধর্মানুসারে এই ঘটনাকে বলা হয় “মহানিস্ক্রমন”|
কথিত আছে রাজমহল ত্যাগ করার পর সিদ্ধার্থ গৌতম সর্বপ্রথম আলার কালাম নামে এক যোগগুরুর কাছে যোগ শিক্ষা গ্রহণ করেন| কিন্তু যোগশিক্ষা গ্রহন করার পরে তখনও তিনি তাঁর মনের সেই অজানা প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাননা|
তাই তিনি এরপর সেইস্থান ত্যাগ করে অপর আরেকজন যোগীর কাছে যান যাঁর নাম ছিলো উদ্দক রামপুত্র| কিন্তু এবারও তাঁর হাতে লাগে সেই হতাশা| আবারও তিনি তাঁর সেই অজানা প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাননা|
এইভাবে দীর্ঘদিন ধরে শরীরকে লাগাতার সীমাহীন কষ্ট দিয়ে তপস্যা করার পর তবুও তিনি বোধিলাভ করতে পারেন না| মরনাপন্ন পরিস্থিতি উপস্থিত হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারেন যে এই পন্থা মোটেই সঠিক এবং উচ্চমানের নয়| এতে শরীর ও মন এই দুইয়েরই ক্ষতি হয়|
ধর্মচক্রপ্রবর্তন সূত্রানুসারে বলা হয়েছে, তিনি এই ঘটনার পর নিজের মনে এটা উপলব্ধি করেন, অসংযত বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং কঠোর তপস্যার মধ্যবর্তী একটা পথের সন্ধান করে বোধিলাভ হওয়া সম্ভব|
তাই তিনি আর সময় নষ্ট না করে এরপর থেকে আবার ঠিকমতো খাদ্য গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন ও সুজাতা নাম্নী নামে এক স্থানীয় গ্রাম্য মেয়ের কাছ থেকে একবাটি পরমান্ন আহার করেন।
যেটা দেখে অবশ্য তাঁর বাকি পাঁচজন সঙ্গী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করে চলে যান|
অবশেষে সেই ঘটনার পর তিনি এবার নদীতে স্নান করতে যান ও তা সম্পন্ন করে পুনরায় ধ্যানে বসেন একটা অশ্বত্থ গাছের তলায় এবং প্রতিজ্ঞা করেন সত্যলাভ না হওয়া পর্যন্ত সেইস্থান স্থানত্যাগ না করার| এইভাবে উনপঞ্চাশ দিন একটানা ধ্যান করার পর তিনি শেষমেষ বোধিলাভ করতে সক্ষম হন|
বোধিলাভের পর তিনি জীবনের দুঃখ ও তার কারণ এবং সেইসাথে সেটার প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেন|
বোধিজ্ঞান লাভের পর গৌতম বুদ্ধ এবার তাঁর সেই জ্ঞানকে প্রসার ও মানুষের দুঃখ নিবারণের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন| যাত্রাপথে তাঁর সাথে তপুস্স ও ভল্লিক নামে দুজন ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎ হয়| বলা হয় এরাই নাকি তাঁর প্রথম দুই সাধারণ শিষ্য ছিলেন|
অবশেষে পথ চলতে চলতে তিনি এরপর পৌছান বারানসীতে| সেখানে গিয়ে তিনি সাক্ষাত করেন তাঁর সেই পাঁচজন প্রাক্তন সঙ্গীদের সাথে, যারা তাঁকে একসময় ছেড়ে চলে গেছিলেন| তাদেরকেই নাকি তিনি সর্বপ্রথম বোধিজ্ঞান লাভের পর শিক্ষা প্রদান করেন, যা বৌদ্ধ ঐতিহ্যে ধর্মচক্রপ্রবর্তন নামেও খ্যাত| প্রতি বছর আটমাস তিনি বিভিন্ন স্থানে ধর্ম প্রচার করতেন ও বাকি চার মাস গৃহী শিষ্যদের বাড়িতে কাটাতেন
ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সাথে লোকসমাজে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে| অনেক মানুষ তাঁর শরণাপন্ন হয়ে জীবনে আশার আলো খুঁজে পান| এরমধ্যে অনেকেই আবার তাঁর শিষ্যত্বও গ্রহণ করেন|
সেইসময়কার বড় বড় সম্রাট থেকে শুরু করে সমাজের নিম্ন স্তরের মানুষ পর্যন্ত প্রত্যেকেই তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান লাভের জন্য মুখিয়ে থাকতেন| বুদ্ধ কিন্তু কোনোদিনই কাউকে তাঁর জ্ঞানের থেকে বঞ্চিত করেননি| সবাইকেই সমান মনে করে সেইসব দান করে গেছেন একদম প্রাণভরে|
এরপর দেখতে দেখতে বুদ্ধের শিষ্যের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে| বুদ্ধের দশজন প্রধান শিষ্য হয়ে ওঠেন যথাক্রমে- মহাকশ্যপ, সারিপুত্র, মৌদ্গল্যায়ন, আনন্দ, অনুরুদ্ধ, রাহুল, উপলি, মহাকাত্যায়ন, পুণ্ণ ও সুভূতি|
জ্ঞানলাভ ও সেটার প্রসারের উদ্দেশ্যে সারাজীবন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর গৌতম বুদ্ধ অবশেষে প্রায় আশি বছর বয়সে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরে দেহত্যাগ করেন| সালটা ছিলো আনুমানিক ৪৮৩ খ্রিস্টপূর্ব অথবা ৪০০ অব্দ| দেহত্যাগের আগে তাঁর শিষ্যদের প্রতি তাঁর অন্তিম উপদেশ ছিলো “বয়ধম্মা সঙ্খারা অপ্পমাদেন সম্পাদেথা” অর্থ্যাৎ “সকল জাগতিক বস্তুর বিনাশ আছে। অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করো।”
ব্রহ্ম দেশে (Myanmar) Sule Pagoda তে ‘সূত্র পিটক’ অনুযায়ী 28 জন বুদ্ধের পূজা করা হয় ।
মহাযান মতের Sangatha Sutta (সূত্র ) অনুযায়ী গৌতম 28 তম বুদ্ধ । তার আগে 27 তম বুদ্ধ হলেন কাশ্যপ । বুদ্ধ গয়াতে গৌতম বুদ্ধের অশ্বথ গাছের পাশেই আছে কাশ্যপের বট বৃক্ষ । উনি ওখানেই সিদ্ধ হন । ২৮ জন বুদ্ধ হলেন:
১) তৃষঙ্কর বুদ্ধ
২) মেধঙ্কর বুদ্ধ
৩) শরণংকর বুদ্ধ
৪) দীপংকর বুদ্ধ
৫) কোন্ডণ্য বুদ্ধ
৬) সুমঙ্গল বুদ্ধ
৭) সুমন বুদ্ধ
৮) রেবত বুদ্ধ
৯) সোভিত বুদ্ধ
১০) অনোমদর্শী বুদ্ধ
১১) পদুম বুদ্ধ
১২) নারদ বুদ্ধ
১৩) পদুমুত্তর বুদ্ধ
১৪) সুমেধ বুদ্ধ
১৫) সুজাত বুদ্ধ
১৬) প্রিয়দর্শী বুদ্ধ
১৭) অর্থদর্শী বুদ্ধ
১৮) ধর্মদর্শী বুদ্ধ
১৯) সিদ্ধার্থ বুদ্ধ
২০) তিষ্য বুদ্ধ
২১) ফুসস্ বুদ্ধ
২২) বিপশী বুদ্ধ
২৩) সিখী বুদ্ধ
২৪) বেসস্ভূবুদ্ধ
২৫) কুকুসন্ধ বুদ্ধ
২৬) কোণাগমন বুদ্ধ
২৭) কশ্যপ বুদ্ধ
২৮)গৌতম বুদ্ধ
বুদ্ধের দর্শনের প্রধান অংশ হচ্ছে দুঃখের কারণ ও তা নিরসনের উপায়। বাসনা সর্ব দুঃখের মূল। বৌদ্ধমতে সর্বপ্রকার বন্ধন থেকে মুক্তিই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। এটাকে নির্বাণ বলা হয়। নির্বাণ শব্দের আক্ষরিক অর্থ নিভে যাওয়া, বিলুপ্তি, বিলয়, অবসান। এ-সম্বন্ধে বুদ্ধের চারটি উপদেশ (Four Noble Truths) যা আর্যসত্য বা চতুরার্য সত্য নামে পরিচিত। বলা হচ্ছে দুঃখ একটি বাস্তবতা – যা বুদ্ধের আগেও সবারই জানার কথা। এই দুঃখের কারণ হচ্ছে কামনা-বাসনা-বন্ধন।
সকল প্রকার কামনা-বাসনা-বন্ধন থেকে মুক্তি লাভই হচ্ছে নির্বাণ। এগুলোকেই বুদ্ধের চারটি উপদেশ তথা "Four Noble Truths" বলা হয়।
বুদ্ধ পরকাল সম্বন্ধেও অনেক কিছুই বলে গেছেন। পরকাল নির্ভর করে মানুষের ইহ জন্মের কর্মের উপর। মৃত্যুর পর মানুষ ৩১ লোকভূমিতে গমন করে। এই ৩১ লোকভূমি হছে ৪ প্রকার অপায়: তীর্যক, প্রেতলোক, অসুর, নরক। ৭ প্রকার স্বর্গ: মনুষ্যলোক, চতুর্মহারাজিক স্বর্গ, তাবতিংশ স্বর্গ, যাম স্বর্গ, তুষিত স্বর্গ, নির্মানরতি স্বর্গ, পরনির্মিত বসবতি স্বর্গ। ১৬ প্রকার রুপব্রহ্মভূমি। ৪ প্রকার অরুপব্রম্মভূমি। মোট ৩১ প্রকার। এই ৩১ প্রকার লোকভুমির উপরে সর্বশেষ স্তর হচ্ছে নির্বাণ (পরম মুক্তি)। যেমন: ইহজন্মে মানুষ যদি মাতৃহত্যা, পিতৃহত্যা, গুরুজনের রক্তপাত ঘটায় তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ চতুর উপায়ে (তীর্যক, প্রেতলোক, অসুর, নরক) জন্মগ্রহণ করে, আর ইহজন্মে মানুষ যদি ভালো কাজ করে তাহলে মৃত্যুর পর সেই মানুষ বাকি ২৮ লোকভূমিতে গমন করে।
ত্রিপিটক হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় পালিগ্রন্থের নাম। পালি তি-পিটক হতে বাংলায় ত্রিপিটক শব্দের প্রচলন। তিন পিটকের সমন্বিত সমাহারকে ত্রিপিটক বোঝানো হয়। পিটক শব্দের অর্থ ঝুড়ি যেখানে কোনো কিছু সংরক্ষণ করা হয়। খ্রীষ্টপূর্ব ৩য় শতকে সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে ত্রিপিটক পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃত হয়। এই গ্রন্থের গ্রন্থনের কাজ শুরু হয়েছিল বুদ্ধের পরিনির্বানের তিন মাস পর অর্থাৎ খ্রীষ্টপূর্ব ৫৪৩ অব্দে এবং সমাপ্তি ঘটে খ্রীষ্টপূর্ব প্রায় ২৩৬ অব্দে। প্রায় তিনশ বছরে তিনটি সঙ্ঘায়নের মধ্যে এর গ্রন্থায়নের কাজ শেষ হয়।
বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী জীবনীগ্রন্থগুলি সিদ্ধার্থ গৌতমের জীবনীর মূল উৎস।ত্রিপিটকে বুদ্ধবংস নামক গ্রন্থে গৌতম বুদ্ধের জীবনীও পাওয়া যায়। যেহেতু পালি ত্রিপিটক বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের পর হতে সংকলিত হয়েছে তাই এই গ্রন্থের সত্যতা মেনে নিলেও ভুল হবে না। এই গ্রন্থে বর্ণনা তথাগত বুদ্ধ নিজেই প্রকাশ করেছেন।দ্বিতীয় শতাব্দীতে অশ্বঘোষ দ্বারা রচিত বুদ্ধচরিত নামক মহাকাব্যটি বুদ্ধের প্রথম পূর্ণ জীবনীগ্রন্থ। তৃতীয় শতকে রচিত ললিতবিস্তার সূত্র গৌতম বুদ্ধের জীবনী নিয়ে লিখিত পরবর্তী গ্রন্থ।সম্ভবতঃ চতুর্থ শতাব্দীতে রচিত মহাসাঙ্ঘিক লোকোত্তরবাদ ঐতিহ্যের মহাবস্তু গ্রন্থটি অপর একটি প্রধান জীবনী গ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত হয়। তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে রচিত ধর্মগুপ্তক ঐতিহ্যের অভিনিষ্ক্রমণ সূত্র গ্রন্থটি বুদ্ধের একটি বিরাট জীবনীগ্রন্থ।সর্বশেষে পঞ্চম শতাব্দীতে রচিত বুদ্ধঘোষ রচিত থেরবাদ ঐতিহ্যের নিদানকথা উল্লেখ্য। ত্রিপিটকের অংশ হিসেবে জাতক, মহাপদন সূত্ত ও আচারিয়াভুত সুত্তে বুদ্ধের পূর্ণ জীবনী না থাকলেও কিছু নির্বাচিত অংশ রয়েছে।। আর বুদ্ধঘোষের রচিত পদ্যচূড়ামণি গ্রন্থেও বুদ্ধের জীবনী পাওয়া যায়। এই সমস্ত ঐতিহ্যশালী জীবনীগ্রন্থে বুদ্ধের জীবনী পাওয়া যায়। মহাবস্তু প্রভৃতি গ্রন্থে বুদ্ধকে লোকোত্তর সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি জাগতিক বিশ্বের সমস্ত ভার থেকে মুক্ত. কিন্তু তা হলেও এই সমস্ত গ্রন্থ থেকে খুঁটিনাটি সাধারণ বিবরণগুলিকে একত্র করে বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে আলোকপাত সম্ভব হয়েছে।
Magপ্রিন্টঅনলাইন
জাতীয় সারাবাংলা বিশ্ব বিনোদন খেলা জীবনযাপন ইসলামী জীবন ভাইরাল প্রথম পৃষ্ঠা শেষ পৃষ্ঠা খবর শুভসংঘ
হোম
অনলাইন
জাতীয়
সারাবাংলা
সারাবিশ্ব
বাণিজ্য
বিনোদন
বিবিধ
রিপোর্টার্স ডায়েরি
খেলাধুলা
পাঠককণ্ঠ
জীবনযাপন
তথ্যপ্রযুক্তি
ইসলামী জীবন
পরবাস
ভাইরাল
কর্পোরেট কর্নার
ইসলাম ও মুসলিম বিশ্ব
বই মেলা
শুভসংঘ
আজকের পত্রিকা
প্রথম পাতা
শেষের পাতা
খেলা
খবর
পড়ালেখা
শিল্প বাণিজ্য
দেশে দেশে
প্রিয় দেশ
টেক প্রতিদিন
ইসলামী জীবন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
রংবেরং
ফিচার
রঙের মেলা
A টু Z
শিলালিপি
চাকরি আছে
লাভ ক্ষতি
অবসরে
টুনটুন টিনটিন
ঈদ আনন্দ
পঞ্চাশে পঞ্চাশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বিশেষ সংখ্যা
ঈদ বিনোদন
ডাক্তার আছেন
ই-পেপার
বুদ্ধের এই ৩১ বাণী মনে রাখলে জীবন হবে সফল, শান্তিময়
কালের কণ্ঠ অনলাইন
৮ জুলাই, ২০১৯ ১৩:২৬
বুদ্ধের এই ৩১ বাণী মনে রাখলে জীবন হবে সফল, শান্তিময়
ShareShareTweetঅ+অ-
মানুষের জীবন মাত্রই সুখ-দুঃখের মিলিত রূপ। সুখের পাশাপাশি দুঃখের হাত থেকেও নিস্তার নেই কারও। জরা, রোগ, মৃত্যু- এ সবই দুঃখ। বুদ্ধের মতে মানুষের কামনা-বাসনাই দুঃখের মূল। মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখের মিশেলে এবং অস্থায়ী। অবিমিশ্র সুখ বলে কিছু নেই।
গৌতম বুদ্ধ বলেন, নির্বাণ লাভ কিংবা কামনা-বাসনা থেকে মুক্তি লাভে দুঃখের অবসান ঘটে। এর মধ্য দিয়ে দূর হয় অজ্ঞানতা। মেলে পূর্ণ শান্তি। সত্যজ্ঞান, আনন্দ এবং ইতিবাচকতার জন্য আমরা তাই বুদ্ধের কাছে যাই। সুখের সন্ধানে অনুসরণ করি তাঁর বাণী, মূল্যবান ৩১টি ।
১। অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তার চেয়ে বরং বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবো।
২। সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।
৩। আনন্দ হলো বিশুদ্ধ মনের সহচর। বিশুদ্ধ চিন্তাগুলো খুঁজে খুঁজে আলাদা করতে হবে। তাহলে সুখের দিশা তুমি পাবেই।
৪। তুমিই কেবল তোমার রক্ষাকর্তা, অন্য কেউ নয়।
৫। জীবনের প্রথমেই ভুল হওয়া মানেই এই নয় এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যাও।
৬। অনিয়ন্ত্রিত মন মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে। মনকে প্রশিক্ষিত করতে পারলে চিন্তাগুলোও তোমার দাসত্ব মেনে নেবে।
৭। তোমাদের সবাইকে সদয়, জ্ঞানী ও সঠিক মনের অধিকারী হতে হবে। যতই বিশুদ্ধ জীবনযাপন করবে, ততাই উপভোগ করতে পারবে জীবনকে।
৮। আমরা অনেকেই একটা কিছুর সন্ধানে পুরো জীবন কাটিয়ে দেই। কিন্তু তুমি যা চাও তা হয়তো এরইমধ্যে পেয়েছ। সুতরাং, এবার থামো।
৯। সুখের জন্ম হয় মনের গভীরে। এটি কখনও বাইরের কোনো উৎস থেকে আসে না।
১০। অন্যের জন্য ভালো কিছু করতে পারাটাও তোমার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
১১। জীবনের খুব কম মানুষের জীবনে পরিপক্কতা আসে। সঙ্গী হিসেবে এই পরিপক্কতাকে তোমার অর্জন করতে হবে। তবে তা ভুল মানুষকে অনুসরণ করে নয়। এই পরিপক্কতা অর্জনে বরং একলা চলো নীতি অনুসরণ করো।
১২। করুণাই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি।
১৩। সুখ কখনও আবিষ্কার করা যায় না। এটি সবসময় তোমার কাছে আছে এবং থাকবে। তোমাকে কেবল দেখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
১৪। রেগে যাওয়া মানে নিজেকেই শাস্তি দেওয়া।
১৫। সত্যিকারভাবে ক্ষমতা নিয়ে বাঁচতে হলে নির্ভয়ে বাঁচো।
১৬। জীবনে ব্যাথা থাকবেই, কিন্তু কষ্টকেই ভালোবাসতে শেখো।
১৭। অনেক মোমবাতি জ্বালাতে আমরা কেবল একটি মোমবাতিই ব্যবহার করি। এর জন্য ওই মোমবাতিটির আলো মোটেও কমে না। সুখের বিষয়টিও এমনই।
১৮। যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি। এর মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়।
১৯। অন্যকে কখনও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করো না, নিয়ন্ত্রণ করো কেবল নিজেকে।
২০। আলোকিত হতে চাইলে প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করো।
২১। জ্ঞানগর্ভ জীবনের জন্য মুহূর্তের ইতিবাচক ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই জন্য ভয়কে তুচ্ছ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুকেও।
২২। এই তিনটি সর্বদা দেখা দেবেই: চাঁদ, সূর্য এবং সত্য।
২৩। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের সমন্বয়ই জীবন। কেবল একটি সঠিক মুহূর্ত পাল্টে দেয় একটি দিন। একটি সঠিক দিন পাল্টে দেয় একটি জীবন। আর একটি জীবন পাল্টে দেয় গোটা বিশ্ব।
২৪। নিজের কথার মূল্য দিতে হবে নিজেকেই। কেননা, তোমার নিজের কথার ওপর নির্ভর করবে অন্যের ভালো কাজ কিংবা মন্দ কাজ।
২৫। ঘৃণায় কখনও ঘৃণা দূর হয় না। অন্ধকারে আলো আনতে তোমাকে কোনো কিছুতে আগুন জ্বালতেই হবে।
২৬। শুভর সূচনা করতে প্রত্যেক নতুন সকালই তোমার জন্য এক একটি সুযোগ।
২৭। আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন আরেকজনের পরিপূরক। অর্থাৎ সমাজে আমরা কেউ একা নই।
২৮। খারাপটি সর্বদা তুমি নিজেই পছন্দ করছো। সুতরাং, তোমার খারাপ কাজের জন্য তুমি নিজেই দায়ী। এর দায়ভার অন্য কারো নয়।
২৯। তোমার চিন্তাই তোমার শক্তির উৎস। নেতিবাচক চিন্তা তোমাকে অনেক বেশি আঘাত করে যা তোমার ধারণায় নেই।
৩০। নির্বোধ বন্ধু আদৌ কোনো বন্ধু নয়। নির্বোধ বন্ধু থাকার চেয়ে একা হওয়া অনেক ভালো।
৩১। তুমি মুখে কী বলছো সেটি কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো তোমার কাজ।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment