পামুক ১৯৫২ সালে ইস্তাম্বুল-এ জন্ম নেন এবং একটি বিত্তবান কিন্তু পতনরত উচ্চশ্রেনীর পরিবারে বড় হন, যে অভিজ্ঞতা চিত্রিত হয়েছে তার দ্য ব্ল্যাক বুক এবং ছেফদাত বে ও তাঁর ছেলেরা উপন্যাসে। এ অভিজ্ঞতা আরো পুংখানুপুংখ ভাবে উঠে আসে তার আত্মজীবনী, ইস্তাম্বুল-এ। তিনি পড়াশোনা করেন রবার্ট কলেজ-এ এবং স্থাপত্য অধ্যায়নের জন্যে ভর্তি হন ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি-তে, কারণ তিনি ভেবে ছিলেন স্থাপত্য তার প্রকৃত স্বপ্ন চিত্রশিল্পী হওয়ার পথ সুগম করবে। কিন্তু ৩ বছর পর তিনি স্থাপত্য পড়া বাদ দিয়ে ১৯৭৬ সালে University of Istanbul এর সাংবাদিকতা ইন্সটিটিউট থেকে স্নাতক পাশ করেন। ২২ থেকে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত পামুক তার মায়ের সাথে বসবাস করেন এবং তার প্রথম উপন্যাস লেখার পাশাপাশি প্রকাশক খুঁজতে থাকেন। তিনি নিজেকে সাংস্কৃতিক মুসলিম সাংস্কৃতিক মুসলিম বলে পরিচয় দেন অর্থাৎ ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে তিনি একাত্ব অনুভব করেন।
১৯৭৪ থেকে পামুক নিয়মিত লেখা শুরু করেন। তার প্রথম উপন্যাস আলো ও আঁধার(Karanlık ve Işık) ১৯৭৯ সালে যৌথ ভাবে মিলিয়েত প্রেস উপন্যাস প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় যা ১৯৯৮২ সালে Cevdet Bey ve Oğulları(ছেফদাত বে ও তাঁর ছেলেরা) নামে প্রকাশিত হলে ১৯৮৩ সালের Orhan Kemal পুরস্কার লাভ করে। এ লেখায় উঠে আসে একই পরিবারের তিন প্রজন্মের উপাখ্যান।
তাঁর প্রথম দিকের লেখায় স্বতঃস্ফুর্তা দেখা গেলেও পরবর্তী লেখায় তিনি উত্তরাধুনিক রচনাশৈলী প্রয়োগ করতে থাকেন।
১৯৯০ সালে প্রকাশিত Kara Kitap (The Black Book)(কালো পুস্তক) উপন্যাস তাকে এনে দেয় জনপ্রিয়তা। বইটি আলোচিত হয়ে ওঠে এর জটিল রচনাশৈলী ও প্রাচুর্যতা জন্যে। এ উপন্যাস অবলম্বনে একটি ছায়াছবি চিত্রায়িত হয় যা পরিচালনা করেন বিখ্যাত তুর্কি পরিচালক Ömer Kavur(ওমর কাফুর)।
১৯৯৫ এ প্রকাশিত পামুকের ৫ম উপন্যাস Yeni Hayat(নতুন জীবন) তুরস্কে আলোড়োন সৃষ্টি করে এবং সবচেয়ে দ্রুত বিক্রি হওয়ার রেকর্ড করে।
ইতিমধ্যে তিনি আলোচিত সমালোচিত হতে থাকেন কুর্দি জনগণের পক্ষে কথা বলার জন্যে।
আমার নাম লাল
মূল নিবন্ধ: My Name Is Red
২০০০ সালে প্রকাশিত আমার নাম লাল পামুককে পৌঁছে দেয় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। উত্তরাধুনিক রচনাশৈলীতে এ উপন্যাসে বিধৃত হয় চিত্রকলা,রহস্য,দর্শন ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের দ্বন্দ্ব এবং বর্ণিত হয় ১৬ শতকের অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান মুরাট তৃতীয়েরSultan Murat III রাজত্বের তুষারাচ্ছন্ন ৯টি দিন। পাশ্চাত্যের রেঁনেসার প্রভাবে প্রাচ্যের শিল্পের অস্তিত্ব সংকট পাঠককে চলমান প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের অস্থিরতার কথাই স্বরণ করিয়ে দেয়।
২৩টি ভাষায় অনূদিত বইটি ২০০৩ সালে জিতে নেয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থমূল্যের সাহিত্য পুরস্কার International Dublin Literary Award।
"আপনার জীবনে IMPAAC পুরস্কার (বর্তমানে ১,২৭,০০০$ মূল্যমানের) কেমন প্রভাব ফেলেছে?", এ নিয়ে ও তিনি তাঁর রচনায় কথা বলেছেন।
শহরটার প্রতি যে ভীষন টান তার। নোবেল কমিটি সেকথা পরে বলেছেন এভাবে-
"In the quest for the melancholic soul of his native city, [Pamuk] has discovered new symbols for the clash and interlacing of cultures."
পরে তাঁর সম্বন্ধে বলা হয়েছে
-He is a Muslim, but he describes himself as a cultural one who associates the historical and cultural identification with the religion.
২০০৫। ফেব্রুয়ারি। ততদিনে বিখ্যাত। অনেক বই বেরিয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে পামুক বললেন- one million Armenians were killed in these lands and nobody but me dares to talk about it.
২২ জানুয়ারি। ২০০৬। অভিযোগ তুলে নেওয়া হল।
In 2006, after a period in which criminal charges had been pressed against him for his outspoken comments on the Armenian Genocide, Pamuk returned to the US to take up a position as a visiting professor at Columbia.
২০০৬। ১২ অক্টোবর। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কথা শুনলেন পামুক।
In 2006, after a period in which criminal charges had been pressed against him for his outspoken comments on the Armenian Genocide, Pamuk returned to the US to take up a position as a visiting professor at Columbia.
২০০৬। ১২ অক্টোবর। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কথা শুনলেন পামুক।
এছাড়া উল্লেখযোগ্য রচনা।
তুষার
নিস্পাপের জাদুঘর
ইস্তাম্বুল-একটি শহরের স্মৃতি
শুভ্র দূর্গ (Beyaz Kale বেয়াজ় কালে)
কালো বই (Kara Kitap কারা কিতাপ)
আমার নাম লাল (Benim Adım Kırmızı বেনিম আদ্যিম ক্যির্ম্যিজ়্যি)
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
আন্তর্জাতিক IMPAC ডাবলিন সাহিত্য পুরস্কার
২০০৩
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ২০০৬
সনিং পুরস্কার ২০১২।
একজন তুর্কি ঔপন্যাসিক, চিত্রণাট্য সম্পাদক, শিক্ষক এবং ২০০৬ সালের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তিনি তুরস্কের অন্যতম প্রধান লেখক । বিশ্বের ৬০টিরও অধিক ভাষায় তার ১১ মিলিয়নের (১কোটি ১০ লক্ষ) বেশি বই বিক্রি হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে তিনি পরিণত হয়েছেন তুরস্কের সবচেয়ে প্রচারিত কথাসাহিত্যকে।
অটোমান সাম্রাজ্য-এ আর্মেনিয় গণহত্যা সম্পর্কে মন্তব্য করায় ২০০৫ সালে তুরস্কে তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়। পামুকের নিজস্ব বক্তব্য, তিনি তাঁর জন্মভূমিতে বাক-স্বাধীনতার অভাবের প্রতি আলোকপাত করাই তার উদ্দেশ্য ছিল। এর ফলশ্রুতিতে মিছিলে তার বই পোড়ানো হয়। তাকে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment