লোরকাকে মান্য করা হয় বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্প্যানিশ (দেশ ও ভাষা উভয়ার্থে) কাব্যশিল্পী ও নাট্যশিল্পী হিসেবে। তিনি তুলনীয় আন্তোনিয়ো মাচাদো ও হুয়ান রামোন হিমেনেথের সঙ্গে, যাঁরা স্প্যানিশ কবিতাকে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়। মহামহিম মিগেল দে সের্বান্তেসের মতো তাঁর নামও আজ প্রবাদে পরিণত।
জন্ম ১৮৯৮ সালের ৫ জুন স্পেনের গ্রানাদায় ফুয়েন্তে বাকেরোস নামের ছোট্ট একটি শহরে। তাঁর বাবা ছিলেন ভূস্বামী, উর্বর ভেগায় কৃষি খামারের মালিক; শহরের মাঝখানেই ছিল তাঁদের প্রাসাদোপম বাড়ি। মা বিসেন্তা লোরকা রোমেরো ছিলেন শিক্ষিকা। অসম্ভব ভালো পিয়ানো বাজাতেন। ১৯০৫ সালে তাঁরা চলে আসেন বালদেরুবিয়ো শহরে। সেখান থেকে ১৯০৯ সালে গ্রানাদা শহরের উপকণ্ঠে উয়ের্তা দে সান বিসেন্তেয় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। লোরকার বয়স তখন ১১। যেসব জায়গায় লোরকা বসবাস করেছেন সর্বত্র পেয়েছেন প্রকৃতির সান্নিধ্য। তাঁর শিল্পচিন্তা ও লেখালেখিতে এর গভীর প্রভাব পড়েছিল। লোরকার স্মৃতিধন্য ফুয়েন্তে বাকেরোস, বালদেরুবিয়ো ও উয়ের্তা দে সান বিসেন্তের বাড়ি তিনটি এখনো সটান দাঁড়িয়ে আছে, জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়ে।
লোরকার শরীরে ছিল মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সংগীতজিন। পিয়ানোর ঝংকার শুনলেই তাঁর রক্ত টগবগ করে নেচে উঠত। তিনি পিয়ানোর ডাকে সাড়া না দিয়ে পারেননি। ১১ থেকে ১৬—এই ছয় বছর লোরকা পিয়ানো শেখেন আন্তোনিয়ো সেগুরা মেসা নামের এক সংগীতশিক্ষকের কাছে। মেসা লোরকার মধ্যে সংগীতজ্ঞ হওয়ার বাসনা জাগিয়ে তোলেন। গায়ে গানের হাওয়া লাগতেই লোরকা নিজেকে ভাসিয়ে দেন দেবুসি, শোপ্যাঁ ও বিটোফেনের অমৃতরসে। তাঁর বন্ধুত্ব হয় সুরকার মানুয়েল দে ফাইয়ার সঙ্গে। আর তখন থেকে স্প্যানীয় লোকগীতি হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যানজ্ঞান। তাঁর কলম চিরে বেরিয়ে আসে চারুগদ্য ‘নকটার্ন’, ‘বালাদ’ ও ‘সোনাটা’। তার ওপর আরোপ করা হয় সুর। গ্রানাদায় কাফে আলামেদাতে বসত শিল্পী-সাহিত্যিকদের আড্ডা। সেখানে লোরকা নিয়মিত শামিল হতেন। আসর মাতিয়ে তুলতেন তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত লিরিক ঝিলিকে।
স্কুলশিক্ষা সমাপ্তির পর ১৯১৫ সালে লোরকা গ্রানাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন আইন ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করতে। তাঁর মনে জাগে ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা। ১৯১৬-১৭ সালব্যাপী তিনি স্পেনের উত্তরে কাস্তিয়া, লেয়োন ও গালিথিয়া ঘুরে বেড়ান দন ফের্নান্দো দে লোস রিয়োস নামের এক অধ্যাপকের সঙ্গে। এ অধ্যাপক তাঁকে লেখালেখিতে উৎসাহিত করেন। তার ফসল ভ্রমণবৃত্তান্ত ইমপ্রেসিয়োনেস ই পাইসাহেস বা মানচিত্র ও ভূদৃশ্যাবলি। এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই (১৯১৮)। এর প্রকাশনায় অর্থ জুগিয়েছেন তাঁর পিতা স্বয়ং।
১৯১৯ সালে লোরকা মাদ্রিদে চলে যান। সেখানে কাটিয়ে দেন পরবর্তী ১৫টি বছর। তাঁর নতুন স্থান রেসিদেনসিয়া দে এস্তুদিয়ান্তে। এর সুবাদে তিনি মাদ্রিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে থাকেন। এবার তাঁর পাঠের বিষয় আইন ও দর্শন। কিন্তু কিছুদিন পরেই হাঁপিয়ে ওঠেন। পাঠ্যক্রমভুক্ত বিধিবদ্ধ পাঠে তাঁর আর মন বসে না। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিয়ে তিনি আত্মনিয়োগ করেন শিল্পচর্চায়। মগ্ন থাকেন অভিনয়, কবিতাপাঠ ও প্রাচীন লোকগীতি সংগ্রহে। এ সময় এল মালেফিসিয়ো দে লা মারিপোসা বা প্রজাপতির দুরভিসন্ধি নামে একটি নাটক লিখে ফেলেন। ১৯২০ সালে সেটি মঞ্চস্থ হলে ঢি ঢি পড়ে যায়। কারণ, নাটকটি ছিল প্রচলিত ঘরানার বাইরে। এটি রচিত পোকামাকড়ের জীবন নিয়ে, মূলত একটি তেলাপোকা ও একটি প্রজাপতির মধ্যে ভালোবাসার কাহিনি। পরের বছর প্রকাশিত হয় তাঁর লোককাহিনিভিত্তিক লিব্রো দে পোয়েমাস বা কবিতার বই। এতে এসেছে ধর্মীয় বিশ্বাস, একাকিত্ব ও প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ।
লোরকার ওপর ফ্লামেঙ্কো ও জিপসি সংস্কৃতির প্রভূত প্রভাব পড়েছিল। এ জন্য তাঁদের কথা ঘুরেফিরে এসেছে তাঁর লেখায়। ফ্লামেঙ্কো সংস্কৃতির প্রসারে ১৯২২ সালে তিনি প্রথম ‘কান্তে হোন্দো’ বা ‘গভীর গান’ উৎসব আয়োজন করেন। স্পেনের বিখ্যাত ডিপ সং গায়ক ও পিয়ানোবাদকেরা তাতে অংশ নেন। তিনি বিশ শতকের তৃতীয় দশকের শুরুর দিকে যেসব কবিতা লিখেছেন, তাতে গভীর গানের আদল খুঁজে পাওয়া যাবে। লোরকা ‘সাতাশের প্রজন্ম’ নামে একটি আভাঁ গার্দ শিল্পীসংঘে যোগ দেন। এই সংঘে ছিলেন সালভাদর দালি ও লুইস বুনুয়েলের মতো জাঁদরেল শিল্পীরা, যাঁরা তাঁকে পরাবাস্তববাদ ও প্রতীকবাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ দুই শিল্পদর্শনের আশ্রয়ে তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে সূক্ষ্ম ব্যঞ্জনাময়, নান্দনিকতায় গূঢ়। ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর কানসিয়োনেস বা গীতিমালা। ১৯২৮ সালে আলোর মুখ দেখে রোমান্সেরো হিতানো বা জিপসি গাথা। এ বই তাঁকে খ্যাতির তুঙ্গে নিয়ে যায়।
কবিতার পাশাপাশি চলে তাঁর নাট্যচর্চা। তাঁর দ্বিতীয় নাটক মারিয়ানা পিনেদা ১৯২৭ সালে বার্সেলোনায় মঞ্চস্থ হলে বিপুল প্রশংসা কুড়ায়। পরের নাটক লা সাপাতেরা প্রোদিহিয়োসা বা মুচির আশ্চর্য বিবি একটি প্রহসন। তাতে চিত্রিত নারীর প্রতি গোপন প্রণয় ও স্খলনের কাহিনি।
১৯৩০ সালে সেকেন্ড স্প্যানিশ রিপাবলিক ঘোষিত হলে লোরকা দেশে ফিরে আসেন। সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাঁকে নাট্যবিষয়ক সংস্থা ‘বাররাকা’র পরিচালক পদে নিয়োগ দেন, যার কাজ সাধারণ জনগণের জন্য নাটক প্রণয়ন ও প্রদর্শন। তিনি গ্রামেগঞ্জে গিয়ে বিনা মূল্যে নাটক দেখাতে থাকেন। নিজে নাটক পরিচালনা করেন এবং তাতে অভিনয় করেন। বাররাকারতত্ত্বাবধানে স্প্যানীয় ক্লাসিকগুলো দেখানো হয়; লোরকার নিজের নাটকগুলোও স্থান পায়, বিশেষ করে তাঁর ট্র্যাজেডিত্রয়—বোদাস দে সাংগ্রে বা রক্তবিবাহ, ইয়েরমা ও লা কাসা দে বেরনার্দা আলবা বা বেরনার্দা আলবার বাড়ি। কাব্যগুণে সমৃদ্ধ এই নাটকগুলোতে ধ্বনিত হয় বুর্জোয়া সমাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তিনি শ্রেণি, নারী ও যৌনতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে ট্যাবুশাসিত সমাজের মৌনতা ভেঙে দেন এবং সাধন করেন এক সামাজিক বিপ্লব। তাঁর শেষ কাব্যগ্রন্থ সোনেতোস দে আমোর অস্কুরো বা তামসিক প্রেমের সনেট সমকামী ভালোবাসাকে ঘিরে নিষেধের বেড়াজাল চুরমার করে দেয়।
লোরকার ১৮ বছরের কবিতা রচনার মধ্যে ৪ টি ধারায় ভাগ করা হয়:
১. প্রস্তুতির ও প্রাথমিক বছরগুলো (১৯১৮-১৯২৭)
২. জিপসি বালাদ (১৯২৬-২৮)
৩. নিউইয়র্কে লেখা কবিতা (১৯২৯-৩০)
৪. তার পরের কবিতা (১৯৩১-৩৬)
এর মধ্যে মৌলিক ও মূল্যবান হচ্ছে জিপসি বালাদ এবং নিউইয়র্কের কবিতা। মোটা দাগে জিপসি বালাদের মধ্যে লোরকা গীতলতা এবং চিত্রকল্প ব্যবহার করে ঐতিহ্যগত লোকজ লোরকা নতুনত্ব ভরিয়ে দিলেন। নিউইয়র্কে লেখা কবিতাগুলোয়, যা পরে পোয়েতা এন নুয়েভা ইয়র্ক (নিউইয়র্কের কবিতা) কাব্য গ্রন্থে প্রকাশিত হয়, তিনি চিত্রকল্প এবং কোলাজ এমন ভাবে বিচ্ছিন্ন আবার একই সঙ্গে সংগ্রথিত করেছেন যে এগুলো পরাবাস্তববাদী অভিধা প্রাপ্ত হয়ে উঠেছে।
১৯৩৬ সালে স্পেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। লোরকা তখন তাঁর নিজগৃহ ‘কায়েহোনেস দে গারসিয়া’তে অবস্থান করছিলেন। ফ্রাঙ্কোর সৈন্যরা তাঁকে তুলে নিয়ে যায় এবং বন্দী করে রাখে। ১৯ আগস্ট ঘাতকেরা তাঁকে কবরস্থানে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। তাঁর লাশ গুম করে ফেলা হয়। এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি তাঁর মৃতদেহের কী গতি হয়েছিল। তাঁর বই নিষিদ্ধ করা হয় ও পোড়ানো হয়। একজন মহান কবির এমন করুণ মৃত্যু এখনো পৃথিবীতে তাঁর অসংখ্য অনুরাগীকে বিষণ্ন করে তোলে। মৃত্যুর পরে তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিনাশযজ্ঞ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মনকে বিষিয়ে তোলে। কেন হত্যা করা হয়েছিল কবিকে? কারণ, ক্ষমতাবান অপশক্তি ভয় পেয়েছিল তাঁর বৈপ্লবিক আদর্শকে, তাঁর হৃদয় থেকে উৎসারিত অগ্নিস্ফুলিঙ্গকে।
লোরকার মৃত্যু ছিল সত্যিই হৃদয়বিদারক। অতি সুদর্শন প্রগতিবাদী প্রগলভ প্রাণোচ্ছল সেই যুবকটি আর নেই, এ যেন এক দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা। তাঁর মৃত্যুসংবাদে পাবলো নেরুদা অশ্রুভরা কণ্ঠে বলে ওঠেন, ‘স্পেনের সেরা ফুলটি ঝরে গেল।’ লোরকা কি তাঁর নিজের মৃত্যুর পূর্বাভাস পেয়েছিলেন? মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তিনি একটি কবিতায় লেখেন (অমিতাভ দাশগুপ্ত ও কবিতা সিংহের লোরকার শ্রেষ্ঠ কবিতা থেকে):
আমি বুঝতে পারছি খুন করা
হয়েছে আমাকে।
তারা কাফে, কবরখানা আর
গির্জাগুলো তন্ন তন্ন
করে খুঁজছে।
তারা সমস্ত পিপে আর
কাবার্ডগুলো তছনছ
করছে।
তিনটে কঙ্কালকে লুট করে
খুলে নিয়ে গেছে
সোনার দাঁত।
আমাকে তারা খুঁজে পায়নি।
কখনোই কি পায়নি তারা?
লোরকার কবিতায় একদিকে পাওয়া যায় জিপসি গানের সুরসৌন্দর্য ও চিত্রল ইঙ্গিতময়তা, একদিকে আরব শৈলীর ঐতিহ্যবিধুরতা ও পরাবাস্তবের স্বপ্নকুহেলিকা। কাতালান মেজাজে তিনি প্রতীকবাদী শিল্পীর নিপুণ দক্ষতায় অঙ্কন করেন নিউইয়র্ক ও হাভানার জীবনচিত্র। একই মেজাজে আন্দালুসীয় কৃষক ও নারীজীবনকে নাট্যরূপ দেন। স্পেন ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর কাব্যকীর্তি। ভ্রমরগুঞ্জনের মতো লিরিকধারা প্রবাহিত হয় হৃদয় থেকে হৃদয়ে।
বিরল কাব্য ও নাট্যপ্রতিভার অধিকারী লোরকা যাপন করেছেন প্রায় ৩৮ বছরের এক সৃষ্টিশীল কর্মময় জীবন। অপ্রত্যাশিত ঘাতকের বুলেট নিথর করেছে তাঁর দেহ, কিন্তু থামাতে পারেনি আগুনের পরশমণির সর্বত্রগামিতা। তাঁর কবিতা দ্বিজয়ী, আজও মানুষকে নাড়া দেয় বিপুল আনন্দবৈভবে।আজও পাঠক মুগ্ধচিত্তে আস্বাদন করে শিশিরের স্নিগ্ধতায় মাখা, কোমল চন্দ্রালোকে স্নাত, পাহাড়ের মৌনতায় সমাহিত তাঁর ছন্দিত পঙ্ক্তিমালা। কবি নিজেই লিখেছিলেন (সাজ্জাদ শরিফ অনূদিত রক্ত ও অশ্রুর গাথা থেকে):
ঘুম দেব আমি এক মুহূর্ত
এক মুহূর্ত, একটি মিনিট,
এক শতাব্দী
কিন্তু সবাই জেনে রেখো আমি
এখনো মরিনি।
(‘কালো মৃত্যুর গজল’)
ফেডেরিকো গার্সিয়া লোরকার সাহিত্যের স্টাইলটি বিভিন্ন স্বর এবং ফর্মের দ্বারা এবং একটি ব্যক্তিগত এবং সাধারণ ভাষার ব্যবহার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। তদুপরি, তাঁর কাজটি এমনভাবে কাঠামোযুক্ত হয়েছিল যে প্রেম, আকাঙ্ক্ষা এবং আবেগগুলি প্রায়শই ঘন ঘন থিম ছিল।
লোরকার কবিতাটি কোনও বিশেষ সাহিত্যের বর্তমানের সাথে সংযুক্ত ছিল না, বরং এটি বিভিন্ন লেখক এবং আন্দোলনের দ্বারা অনুপ্রাণিত বিভিন্ন উপাত্ত উপভোগ করেছে। এটি অস্তিত্বের দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যেও বিকশিত হয়েছিল।
তাঁর কাব্যিক কাজ প্রায়শই প্রচলিত এবং জনপ্রিয় উপাদানগুলির সাথে বোঝা হত এবং একই সাথে তিনি সংস্কৃত বৈশিষ্ট্যও বিকাশ করেছিলেন। আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ করার জন্য লেখক তাঁর রচনায় প্রতীক ও রূপকের ব্যবহারকেও সংযুক্ত করেছিলেন।
প্রতীক এবং রূপক
লোরকা তার কাজে প্রতীক তৈরির ব্যবহারের সাথে তাঁর ব্যবহারের স্বাদকে বোঝায় এবং বেশিরভাগ সময় এগুলি অস্তিত্বের শেষের সাথে সম্পর্কিত ছিল। চাঁদ, রক্ত, ষাঁড়, জল বা ঘোড়া তাঁর কবিতায় স্থির ছিল।
রূপক হিসাবে, তারা Lorca যুক্তি অপরিহার্য ছিল। এক্ষেত্রে তিনি সম্ভবত কবি লুস ডি গাঙ্গোরা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই উত্সটিকে ক্রমাগত সাহসী ও সাহসী ব্যবহার করেছিলেন। লেখকের ধারণা ছিল তাঁর কাব্য রচনায় বৃহত্তর প্রকাশ ও সংবেদনশীলতা ছাপানো।
নাটক করে
ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা কবিতা, নাট্য এবং গদ্যের বিকাশ করেছিলেন। কাব্যগ্রন্থের ক্ষেত্রে, তাঁর রচনার পন্ডিতরা বিবেচনা করেন যে এটি অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষার ফলে যে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটেছিল সে অনুসারে এটি দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করা যেতে পারে: কিশোর এবং বহুগুণ।
যুব মঞ্চ
এটি ছাত্র আবাসে থাকার সময়, তাঁর প্রথম বছরগুলিতে সম্পর্কিত মঞ্চ ছিল। তার প্রথম কাজ, ছাপ এবং ল্যান্ডস্কেপ, যদিও এটি গদ্যে রচিত হয়েছিল, তবে এর ভাষায় এর কাব্যিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জুয়ান রামন জিমনেজ, আন্তোনিও মাচাডো এবং রুবান দারানোয়ের প্রভাবও লক্ষ করা গেছে।
এই পর্যায়ে লিখিত রচনাগুলি দুঃখ এবং হারা প্রেমের সাথে সম্পর্কিত ছিল। এটা তাদের সময় ছিল স্যুট ওয়াই গদ্য কবিতাযা গর্ভপাত এবং এর পরিণতিগুলির মধ্যে এমন কন্টেন্ট তৈরি করেছিল যেমন কবিতায় যে সন্তানের জন্ম হয়নি তার সম্পর্কে ছোট্ট গান ওয়াই নিরীহদের জবাই.
পূর্ণতার মঞ্চ
এই পর্যায়টি তাঁর কাজের শুরুতে সম্পর্কিত ছিল, ক্যান্ট জন্ডো কবিতা, জনপ্রিয়তার প্রতি তাঁর অনুরাগ থেকেই ধারণা করা হয়েছিল এবং যেখানে আবেগ প্রকাশ করার পথে একটি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। জিপসি বল্লাদ ওয়াই নিউইয়র্কের কবি তারা এই পর্যায়ে আলো দেখেছিল এবং কবি সাহিত্যিক পরিপক্কতায় প্রবেশ করেছিলেন।
নিম্নলিখিতটি ফেডেরিকো গার্সিয়া লোরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাব্য রচনা ছিল:
- কবিতা বই (1921).
- ক্যান্ট জন্ডোর কবিতা (1921).
- সালভাদোর ডালিকে ওডে í (1926).
জিপসি রোম্যান্স (1928).
- নিউইয়র্কের কবি (1930).
- ইগনাসিও সানচেজ মেজিয়াসের জন্য কেঁদে ফেলুন (1935).
- ছয় গ্যালিশিয়ান কবিতা (1935).
- তামারিত ডেবেড (1936).
- অন্ধকার প্রেমের সনেটস (1936).
সর্বাধিক প্রতিনিধি কবিতার সংক্ষিপ্ত বিবরণ ক্যান্ট জন্ডোর কবিতা (1921)
লোরকার এই কাজটি আন্দালুসিয়ার ঐতিহ্যের মধ্যে তৈরি হয়েছিল এবং সম্ভবত সংগীতশিল্পী ম্যানুয়েল ডি ফাল্লার সাথে তাঁর পেশাদার সম্পর্কের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। বইটি একটি ছাঁটাই এবং চারটি বিভাগে যথাক্রমে সাত, আঠারো এবং আটটি কবিতা নিয়ে গঠিত হয়েছিল।
কবি ফ্লামেনকো নৃত্য সম্পর্কিত কবিতাও লিখেছিলেন, এর মধ্যে “দুটি মেয়ে” এবং “ছয় ক্যারিকে” রয়েছে। অবশেষে তিনি নাট্য দৃশ্যের বৈশিষ্ট্য সহ দুটি সংলাপ যুক্ত করেছিলেন, প্রত্যেকে একটি করে একটি গান অনুসরণ করেছিলেন। রচনাটি লেখার দশ বছর পরে 1931 সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
জিপসি রোম্যান্স (1928)
এই কাজের মধ্যে লর্কা রাত, আকাশ এবং চাঁদ উল্লেখ করে জিপসি সংস্কৃতি সম্পর্কিত থিম তৈরি করেছিল developed কবিতাগুলি আটটি বর্ণনামূলক শ্লোকগুলির রোম্যান্স বা লিরিক্যাল কম্পোজিশন, জোড়ায় ছড়াছড়ি, যখন বিজোড়গুলি নিখরচায় বা আলগা।
কবিতাগুলি আন্ডালুসিয়ার জিপসি শহরগুলিতে সেট করা হয়েছে এবং লেখক তাদেরকে উপমা, রূপক এবং ব্যক্তিত্ব দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। নাটকটি ছিল প্রান্তিক মানুষ সম্পর্কে, কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রতিনিয়ত নিপীড়িত হয়ে এবং সমতার জন্য লড়াই করা fighting
নিউইয়র্কের কবি (1930)
এই কাব্যগ্রন্থটি লোরকা তাঁর নিউ ইয়র্ক সিটিতে ভ্রমণের পরে এবং তাঁর সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পর্যবেক্ষণের পরে লিখেছিলেন। এটি ছিল পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং তার সর্বোপরি আফ্রিকান আমেরিকানদের সাথে যেভাবে আচরণ করা হয়েছিল তার প্রত্যাখ্যানের প্রতিচ্ছবি।
রূপক ভাষায় কবি এমন প্রয়োজন প্রকাশ করেছিলেন যে সমাজের একটি অংশের ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা থাকতে হবে। এছাড়াও, তিনি আধুনিক ও শিল্পের উপস্থিতিতে অমানবিকরণের নিন্দা করেছিলেন; লেখকের ভাষা রূপক এবং আবেগের ভিত্তিতে ছিল।
"নিউইয়র্কের অন্ধ প্যানোরামা" এর টুকরা
"এটা যদি পাখি না হয়
ছাইতে coveredাকা,
যদি এটি বিবাহের উইন্ডোগুলিকে আঘাত করে না,
বাতাসের সূক্ষ্ম প্রাণী হবে
যা অবর্ণনীয় অন্ধকারের মধ্য দিয়ে নতুন রক্ত প্রবাহিত করে ... "
থিয়েটার
ফেডেরিকো গার্সিয়া লোরকা তাঁর নাট্য গ্রন্থগুলির মূক প্রকৃতির কারণে বিশ শতকের সেরা নাট্যকার হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। লেখকের এই ধরণের রচনাগুলি উচ্চ কাব্যিক বোঝা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল এবং গোলাপ এবং রক্তের মতো চিহ্নগুলির ঘন ঘন ব্যবহারের ফলে অস্তিত্বের বিষয়গুলিও উত্থাপিত হয়েছিল।
লেখকের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নাটকগুলি ছিল:
- বাটারফ্লাই হেক্স (1920).
- মারিয়ানা পাইনেদা (1927).
- উন্নত জুতো প্রস্তুতকারক (1930).
- রেটাবলিলো ডি ডন ক্রিস্টাবাল (1930).
- জনগণ (1930).
- তো পাঁচ বছর কেটে গেছে (1931).
- ডান পার্লিম্প্লিন তাঁর বাগানে বেলিসার সাথে প্রেম (1933).
- রক্ত বিবাহ (1933).
- ইয়ারমা (1934).
- ডোয়া রোসিটা একক মহিলা বা ফুলের ভাষা (1935).
- বার্নার্ডা আলবার বাড়ি (1936).
- শিরোনামহীন কৌতুক (1936, সম্পূর্ণ হয়নি)
- অন্ধকার প্রেমের সনেটস (1936).
সর্বাধিক প্রতিনিধি নাটকের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
বাটারফ্লাই হেক্স (1921)
এটি লর্কার প্রথম নাটক, প্রিমিয়ার হয়েছিল 2 শে মার্চ, 1920 এ স্পেনের রাজধানী এসলাভা থিয়েটারে। এটিতে প্রত্যাশিত গ্রহণযোগ্যতা ছিল না, সম্ভবত এটি পোকামাকড় দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়েছিল এবং এটি শ্রোতা এবং সমালোচকদের কাছে শিশুসুলভ বলে মনে হতে পারে।
নাটকটি ব্যর্থতা, প্রেম এবং জীবনের শেষের মতো থিমগুলিকে স্পর্শ করেছে, যা মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গভীর অর্থ ছিল। তিনি কুরিয়ানিতোর গল্পটি বর্ণনা করেছিলেন, একজন পুরুষ তেলাপোক যিনি কবি হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু যাকে তাঁর নিজের মায়ের দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
যখন একটি ডানা দিয়ে আহত একটি প্রজাপতি তার জীবনে এসেছিল, এবং যার সাথে তিনি তার সমস্ত প্রাণীর প্রেমে পড়েছিলেন তখন এই ছোট্ট নায়কটির পৃথিবীর এক ভিন্ন দৃষ্টি ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে প্রেম ট্র্যাজেডিতে কলঙ্কিত হয়েছিল; উভয় প্রেমিক মারা গেলেন।
রক্ত বিবাহ (1933)
এটি আয়াতগুলিতে রচিত একটি নাটক ছিল, যার প্রিমিয়ার 8 মার্চ, 1933-এ বিয়াতিজ থিয়েটারে মাদ্রিদে হয়েছিল। গল্পটি কিংবদন্তীর মধ্যে বিকশিত ঘটনাগুলির সম্পর্কে ছিল, যেখানে jeর্ষা এবং অতিরিক্ত আবেগ একটি মারাত্মক নিয়তির দিকে পরিচালিত করে, যেখানে কেবল প্রেমই তা প্রতিরোধ করতে পারে।
গার্সিয়া লোরকা তাঁর অনেক রচনার মতোই আন্দালুসীয় ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং কাজকে কাব্যিক অর্থ দেওয়ার জন্য প্রতীক ব্যবহারও করেছিলেন। মুকুট, ছুরি, চাঁদ এবং ঘোড়া এমন কিছু উপাদান যা এই কাজের অর্থ আরও গভীর করে।
ইয়ারমা (1934)
এই কাজের মধ্যে, লর্কা অসম্ভব কামনা, ঘৃণা এবং শাস্তি সম্পর্কিত থিম তৈরি করেছে। এটি 29 ডিসেম্বর, 1934 সালে স্প্যানিশ থিয়েটারে প্রিমিয়ার হয়েছিল; লেখক এটিকে দুটি করে চিত্রের পরিবর্তে তিনটি রচনায় রচনা করেছিলেন।
এটি যিরমার নামে এক মহিলার গল্প ছিল, যিনি মা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন, কিন্তু তা করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি নিজের প্রতি ঘৃণার অনুভূতি পোষণ করেছিলেন। তিনি হতাশা অনুভব করেন এবং একই সাথে সামাজিক চাপ তাকে তার স্বামীর জীবন নিতে পরিচালিত করে, যা নাটকটিকে ট্র্যাজেডিতে পরিণত করে।
বার্নার্ডা আলবার বাড়ি (1936)
এটি গার্সিয়া লোরকার সর্বাধিক পরিচিত রচনা এবং এটি ১৯৩36 সালে লেখা হলেও এটি বুয়েনস আইরেস শহরে ১৯৪45 সালে মঞ্চে আনা হয়েছিল। সেই সময় থেকে এটি বিভিন্ন দেশ এবং ভাষায় পরিবেশিত হয়েছে এবং চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের জন্য সংস্করণ তৈরি করা হয়েছে।
কাজের মূল থিম হ'ল বিংশ শতাব্দীর শুরুতে গ্রামীণ স্পেনের মহিলাদের উপর অত্যাচার, যেখানে নিষিদ্ধরা পৃষ্ঠতলে ছিল। একইভাবে, লেখক ধর্মের জন্য সমাজের ধর্মান্ধতা এবং ঘনিষ্ঠতা এবং যৌনতা আবিষ্কারের ভয়কে প্রতিফলিত করেছিলেন।
লর্কা বার্নার্ডা আল আলবা নামে ষাট বছর বয়সী এক মহিলার গল্পটি বর্ণনা করেছিলেন, যিনি দ্বিতীয়বার বিধবা হওয়ার পরে আট বছরের জন্য শোকের মধ্যে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ক্রিয়াগুলি নায়কটির বাড়িতে এবং তাদের হৃদয়ের গভীরতায়ও যায়।
নাট্যকার বিভিন্ন থিম এবং চিন্তা একত্রিত করেছেন, যার মধ্যে ঘৃণা, লালসা, হিংসা, তত্কালীন সমাজে নারীর ভূমিকা এবং স্বাধীনতা প্রকাশ পেয়েছিল। তদতিরিক্ত, তিনি প্রচলিত প্রতীক দিয়ে কাজটি আক্ষরিকভাবে সমৃদ্ধ করেছিলেন।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment