আমার পনেরো বছর বয়েসের শরীর তোমার চোখে ছিল ভরা পূর্ণিমা, তুমি সেকথা জানিয়েছ তোমার একটি গানে, ওই গানেই বলেছ আমি যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন তুমি আমার ঘুমের সুবাস পাও। সে গন্ধ তোমার কাছে প্রথম আষাঢ়ের কেতকী ফুলের সৌরভের মতন। ভানুদাদা, পৃথিবীর আর কোনও পুরুষ কখনও আমার ঘুমের সুগন্ধ পায়নি!'
রাণু মুখোপাধ্যায়ের আদি নিবাস পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার টুঙ্গি গ্রামে হলেও জন্ম ১৮ ই অক্টোবর ১৯০৬ সালে উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে পিতার কর্মক্ষেত্রে। পিতা ফণীভূষণ অধিকারী ছিলেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের নামজাদা অধ্যাপক। তবে রাণুর জন্মের সময় ফণীভূষণ কাশীর হিন্দু সেন্ট্রাল কলেজে ছিলেন। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠাকালে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ দেন। মাতা সুগায়িকা সরযূবালা ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরের বাসিন্দা সংস্কৃত পণ্ডিত হরিমোহন চট্টোপাধ্যায়ের কনিষ্ঠা কন্যা। তিনি অ্যানি বেসান্তের থিয়োসফিক্যাল স্কুলের অবৈতনিক সঙ্গীত শিক্ষিকা ছিলেন। সরযূবালা তার বড়দাদা কালীপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায়ের প্রভাবে রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ পাঠিকা ও অনুরাগিনী হন। পরে তিনি কাশীতে রবীন্দ্রচর্চা ও প্রসারের কাজে অগ্রণী ভূমিকা নেন। রাণুর পিতৃদত্ত নাম ছিল প্রীতি। সরযূবালার প্রভাবে ফণীভূষণও রবীন্দ্রভক্ত হন। পরিবারের এমন রাবীন্দ্রিক পরিবেশে শিক্ষা লাভে 'প্রীতি' হয়ে ওঠেন রবীন্দ্রনাথের বিশেষ স্নেহধন্যা "রাণু"। সরযূবালা যেমন রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ পাঠিকা ও অনুরাগিনী ছিলেন, সেই রকম রাণুর মধ্যে সেগুলির প্রকাশ ঘটেছিল আর সেই সাথে পেয়েছিলেন মায়ের চারিত্রিক দৃঢ়তা।
রাণু শান্তিনিকেতনে থাকার সময় চিত্রকলা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নেন নন্দলাল বসু ও সুরেন্দ্রনাথ করের কাছে। রবীন্দ্রনাথ ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে রাণুর পিতা ফণীভূষণকে শান্তিনিকেতন বিদ্যাভবনে ক্ষিতিমোহন সেনের সঙ্গে কাজ করার জন্য ডেকে এনেছিলেন। রাণুর বড় দিদি আশা আর্যনায়কম অনেক দিন স্বামীর সঙ্গে শান্তিনিকেতনে কাজ করেছেন। শান্তিনিকেতনে রাণু ও তার অসমবয়সী "ভানুদাদা" কে নিয়ে অনেক গল্প রয়েছে, রবীন্দ্রনাথের লেখা ২০৮ টি আর রাণুর লেখা ৬৮ টি চিঠি সংবলিত "ভানুসিংহের পত্রাবলী"তে। তবে রাণুকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠি পড়লে বোঝা যায় তরুণী রাণু কী অপূর্ব দক্ষতায় খুলে দিয়ে ছিলেন মহাকবি রবীন্দ্রনাথের মনের দরজা। অল্প বয়স থেকেই দেশি-বিদেশি সাহিত্য সম্পর্কে রাণুর একটা ধারণা হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথের সংস্পর্শে এসে তার সাংস্কৃতিক মনের বিকাশ ঘটে। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে এম্পায়ার হল-এ রবীন্দ্রনাথের বিসর্জন' নাটকের যে অভিনয় হয় তাতে রবীন্দ্রনাথ 'জয়সিংহ' এবং রাণু ছিলেন 'অপর্ণা' ভূমিকায়।
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের খ্যাতনামা শিল্পপতি স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সাথে তার বিবাহ হয়। শান্তিনিকেতনের আঙিনায়, আবহে, রবীন্দ্র সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবারের রাণু শান্তিনিকেতন থেকে পাওয়া শিল্পবোধকে কাজে লাগিয়ে উচ্চবিত্ত শিল্পপতি পরিবারের প্রকৃতই "লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়" হয়ে উঠেছিলেন। তার ও স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের দুই কন্যা- গীতা ও নীতা এবং এক পুত্র রমেন।[২]
অবদান সম্পাদনা
রাণুর বাপের বাড়িতে ছবির সংগ্রহ ছিল; শ্বশুর স্যার রাজেন্দ্রনাথ ও স্বামী ছিলেন শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষক। তার আগ্রহ ও উদ্যোগে কলকাতার শিল্পচর্চার প্রাণকেন্দ্র অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, কলকাতা শিল্পকলার একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে এই প্রতিষ্ঠানের জন্ম হলেও সংস্থার নিজস্ব বাড়ির কাজ শুরু হয় ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডা বিধানচন্দ্র রায়, অর্থসাহায্য করেন স্বামী স্যার বীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
সম্মাননা সম্পাদনা
শিল্প সংস্কৃতির জন্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা দেশেই তার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। এমনকি ফরাসি সরকারের লিজিয়ঁ দ'নরে সম্মানে ভূষিত হন লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়। [২] কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য, ললিতকলা আকাদেমির কাউন্সিল সদস্যা হিসাবে বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। তিনি ভারতীয় জাদুঘর, আলিয়স ফ্রঁস্যাজ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের পরিচালন পর্ষদের সদস্যা হয়েছিলেন। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, কলকাতার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এছাড়াও তিনি আমৃত্যু এশিয়াটিক সোসাইটি, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও সোসাইটি এবং কলকাতা তাঁত কেন্দ্রের সাথে ও যুক্ত ছিলেন।
ভারতের শিল্পজগতের শেষ লেডি রাণু মুখোপাধ্যায় ২০০০ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ই মার্চ প্রয়াত হন।
রাণুদের কাশীর বাড়ি ছিল ছবির মতো ঘোর লাগানো সুন্দর। অন্দর আর বৈঠকখানা নিয়ে দুই মহলা বাড়ি। একপাশে গোয়ালঘর। কাজের লোকের অভাব ছিল না। একজন তো সব সময় দা দিয়ে তামাক কাটত বাবার গড়গড়ার জন্য। উঠানের অন্যদিকটায় ছিল রাম-সীতার মন্দির। বাড়ির ছাদে সঙ্গীতপ্রিয় বাবা প্রায়ই এস্রাজ বাজাতেন। তবে তিনি ছিলেন খুবই গম্ভীর প্রকৃতির। তাই মেয়ের সঙ্গে বিস্তর দূরত্ব। রবীন্দ্রনাথ 'ভানুসিংহের পত্রাবলী'তে কাশীর এ বাড়ির কথা লিখেছেন। বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু বাড়ির সর্বোৎকৃষ্ট উপমা ছিল রাণুদের বাড়িটি। এক পর্যায়ে রাণুর বাবা অমর্ত্য সেনের প্রপিতামহ পণ্ডিত ক্ষিতিমোহন সেনকে দার্শনিক গবেষণায় সাহায্য করতে শান্তিনিকেতনে এসে সপরিবারে বসবাস শুরু করেন। থাকতেন 'উত্তরায়ণ'-এর পাশের একটি বাড়িতে। তখন রাণু কাছ থেকে পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথকে। তার জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়তে থাকে রবীন্দ্রনাথের। রাণু বলেন, 'রবীন্দ্রনাথের প্রভাব আমার জীবনে খুব। ছোটবেলা রবীন্দ্রনাথকে কাছে তাঁকে পেয়েছি। ভানুদার অভ্যাস ছিল ভোরে ওঠার। আমরাও ভোরে উঠতাম। এক সকালের কথা। তখন শরৎকাল, আঁচল ভরে শিউলি তুলেছি। ভানুদা তখন স্তব্ধ গাছতলায় বসে সূর্যোদয় দেখছেন। তখনও চারিদিকে আবছা। আমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছেন। আস্তে আস্তে বললেন, কে রাণুু? আমি আঁচলের সব ফুল তখন ওঁর পায়ে উজাড় করে দিয়েছি। রবীন্দ্রনাথের কথা ফুরাবার নয়। ওঁর ছবি তখন কি বুঝতাম? পরে, বিয়ের পরে যখন একটু পরিণত হয় বোধ। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নাটকে অভিনয় করেছি। বিসর্জনে।'
রাণুর গানের গলা ভালো ছিল না। তাই রবীন্দ্রনাথ চাইতেন রাণু ছবি আঁকা শিখুক। সে সময়ে শান্তিনিকেতনে নেভেস্কোপস্কি নামে এক শিল্পী এসেছিলেন। তিনি ছিলেন চেকোশ্লোভাকিয়ার আর্টিস্ট। রবীন্দ্রনাথের আগ্রহে ভদ্রলোক রাণুর প্রতিকৃতি আঁকেন। এই শান্তিনিকেতনে বসবাসের সময়েই রবীন্দ্রনাথ রাণুকে সুরেন করের কাছে ছবি আঁকা শেখাতে পাঠান। সেই যে তার ভেতর আসন গেড়ে বসে ছবি, আর সরে আসতে পারেননি ছবির ঘোর লাগা ক্যানভাস থেকে! পরে শিল্পকলার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি একাডেমি অব ফাইন আর্টসের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন। শিল্পকলার ক্ষেত্রে রাণু বাণিজ্যিক ধারার বদলে ভারতীয় ধ্রুপদী ধারাকে সব সময় সাহায্য করেছেন। ভারতীয় তথা কলকাতার শিল্পকলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তার অভিমত ছিল, 'অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস এবং বিড়লা অ্যাকাডেমির যে কাজ, তার সঙ্গে কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক আর্ট গ্যালারির তুলনা চলে না। অ্যাকাডেমি হলো বড় বাজারের বড় দোকান। একে কেন্দ্র করে ছোট ছোট দোকান হলো গ্যালারি। কখনও কখনও লাভের আশায় শিল্পীদের কাজের দাম অযথা বাড়াচ্ছেন গ্যালারির মালিক। যথেচ্ছভাবেই বাড়াচ্ছেন। তাঁরা মিডলম্যান। কথাটা সত্য। আবার আরেক দল ভাবেন, শিল্পীরা তো ভালো টাকা পাচ্ছেন। সবকিছুর ভালো এবং মন্দ_ দুটি দিক থাকে।রবীন্দ্রনাথের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াও রাণু তার পারিপার্শ্ব থেকে শিল্পের প্রণোদনা পেয়েছিলেন। তার পিত্রালয়ে ছবির সংগ্রহ ছিল। শ্বশুর ও স্বামী শিল্পীদের অনুপ্রেরণায়।
, ‘খুব বেদনার সময় তুমি যখন তোমার সরল ও সরস জীবনটি নিয়ে আমার কাছে এলে এবং এক মুহূর্তে আমার স্নেহ অধিকার করলে তখন আমার জীবন আপন কাজে বল পেলে— আমি প্রসন্ন চিত্তে আমার ঠাকুরের কাজে লেগে গেলুম।’
রাণুর প্রাণচঞ্চল ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথের মনকে ঠিক কীভাবে প্রভাবিত করেছিল, তা বোঝা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব! ‘রক্তকরবী’ নাটকের নন্দিনী চরিত্রটির অন্তরালেও রাণুর প্রভাব রয়েছে বলে এলমহার্স্ট সরাসরি মন্তব্য করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথও ইঙ্গিতে বলেছিলেন, রক্তকরবীর সমস্ত পালাটি নন্দিনী বলে এক মানবীর ছবি।’ হতে পারে সেই মানবীর খানিকটা রাণুর মতোন! রাণুকে একদিকে পুতুল উপহার দিচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ, অন্যদিকে তাঁকে নিয়েই লিখছেন গান—
আরও পড়ুন: বন্ধুত্বের টানে শান্তিনিকেতন এলেন বিদেশি এন্ড্রুজ, এই বন্ধুত্ব ঠিক যেন ঈশ্বর প্রেম
‘এই বুঝি মোর ভোরের তারা এল সাঁঝের তারার বেশে/ অবাক চোখে ওই চেয়ে রয় চিরদিনের হাসি হেসে।’ রাণুও একদিকে ভানুদাদাকে শ্রদ্ধা করছেন নত হয়ে, অন্যদিকে বৃদ্ধ পুরুষটিকে চিঠিতে লিখছেন, ‘ভারী দুষ্টু!’ এই সম্পর্কের শিকড় আসলে অতীতের গর্ভে লুকিয়েছিল। কাদম্বরীদেবীর মুখের গড়ন নিয়ে রবি ঠাকুরের জীবনে এসেছিলেন রাণু!কাদম্বরীদেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের জীবনদেবতা। কবির মনের গভীরে তাঁর বাস। রাণুকে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, ‘আমি আমার জীবনকে তাঁরই (জীবনদেবতার) কাছে উৎসর্গ করেছি— সেই উৎসর্গকে তিনি যে গ্রহণ করেছেন, তাই মাঝে মাঝে তিনি আমাকে নানা ইশারায় জানিয়ে দেন। হঠাৎ তুমি তাঁরই দূত হয়ে আমার কাছে এসেচ, তোমার উপরে আমার গভীর স্নেহ তাঁর সেই ইশারা—।’
রাণু আর ভানুকে নিয়ে চর্চা তো কম হয়নি। কিন্তু এই সম্পর্ক ছিল শিলং পাহাড়ের ঝকঝকে আকাশের মতোন নির্মল। রাণুর সঙ্গে প্রথম দেখার হওয়ার দিনটায় বুকের মধ্যে অনেক ঝড় বইছে রবীন্দ্রনাথের। জানেন কেন? সেইদিন, ১৩২৫ (১৯১৮) সালের ২ জ্যৈষ্ঠ,রবীন্দ্রনাথের বড়ো আদরের মেয়ে মাধুরীলতার মৃত্যু হয়েছে। কন্যাকে হারিয়ে দশ বছরের রাণুর কাছে ছুটে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। গিয়ে, রাণুর মুখাবয়বে দেখেছিলেন প্রিয় বৌঠানের সেই শিশু মুখের ছবি! অতীত আর বর্তমানের বেদনার তুলিতে রাণুকে এঁকেছিলেন বুকের ভিতরে। রাণুও বুঝেছিলেন সেই ইশারা। দুই অসমবয়সী মানুষের এই যে বন্ধুত্ব, তাকে বোঝার জন্য শিল্পীর হৃদয় দরকার।
সেই নিঃসঙ্গ দহন, সেই চন্দ্রাহত অন্তরাল। লেখক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় তার 'রবি ও রাণুর আদরের দাগ' উপন্যাসের প্রাক্-কথনে এভাবেই তুলে ধরেছেন রবি ও রাণুকে। বইটি খুব কৌতূহল নিয়েই পড়েছি। আমার মতো অসংখ্য পাঠকের কৌতূহল বাড়ানোর পথ হলো নামহীন নর-নারীর পরিবর্তে রক্ত-মাংসের মানুষকে, পরিচিত ব্যক্তিত্বকে চরিত্রে নিয়ে আসা। রবীন্দ্রনাথকে এই পথে সম্ভবত সবার আগে নামিয়েছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়! রবীন্দ্রনাথের সত্য ঘটনা, কল্পিত এবং শোনা-কথা নিয়ে তিনি লিখেছিলেন 'প্রথম আলো' উপন্যাস। তারপর রেখায় নিয়ে আসেন রাণু মুখোপাধ্যায়কে। লিখলেন_ রানু ও ভানু উপন্যাস। সেই শোনা কাহিনীও কৌতূহল জাগিয়েছিল অগণিত রবীন্দ্র পাঠকের। তা ছাড়া সুনীলের উপস্থাপনভঙ্গিও নাড়া দিয়েছিল অসংখ্য পাঠককে। তাই বলাই যায় যে, রবীন্দ্রনাথকে আকাশ থেকে টেনে সাধারণ মানুষের স্তরে নামানোর চেষ্টা সুনীলের হাত ধরেই শুরু! সেই পথের পথিক হয়েছেন রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম গ্রন্থ তার 'রবি ও রাণুর আদরের দাগ'। তাতে ভালোবাসার কাঙাল রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে নতুন তথ্য আছে। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি সম্পর্কেও আছে রাজ্যের অনুমান। কাদম্বরী দেবী থেকে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো পর্যন্ত কেউই বাদ যাননি তার অনুমানের ছোবল থেকে।
No comments:
Post a Comment