Saturday, 30 July 2022

মহাপ্রয়াণ দিবস। জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মোহাম্মদ রফি। Vol -813. Dt -31.07.2022. ১৪ শ্রাবণ,১৪২৯. রবিবার। The blogger in literature e-magazine

মোহাম্মদ রফি

৩১ জুলাই, ১৯৮০ইং তারিখ বৃহস্পতিবার রাত ১০:৫০ ঘটিকায় উপমহাদেশের অমর সঙ্গীতকার মোহাম্মদ রফি'র মহাপ্রয়াণ ঘটে। আকস্মিকভাবে মাইওকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হৃদজনিত সমস্যায় ভুগে যখন রফি'র মৃত্যু ঘটে, তখন তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর শেষ গানটি ছিল আস পাস ছবির শ্যাম ফির কিউ উদাস হ্যায় দোস্ত। লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলালের রচনায় এ গানটি রেকর্ড করার কয়েক ঘণ্টা পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রফি। মৃত্যু পরবর্তী সময়ে মোহাম্মদ রফি'কে জুহু মুসলিম গোরস্থানে কবর দেওয়া হয়।


প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে মুম্বাইয়ের সর্ববৃহৎ শবযাত্রা হিসেবে রফি'র শবযাত্রায় দশ সহস্রাধিক ব্যক্তি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১০ সালে তার কবরস্থানটি ভেঙে ফেলা হয় নতুন মৃতদেহ সমাধি দেয়ার জন্য। মূল সমাধি ভেঙে ফেলার দরুন এর সন্নিকটে একটি নির্দিষ্ট নারিকেল গাছকে তার প্রতীকী সমাধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

মৃত্যু পরবর্তীকালে তার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একসময় সুরকার হিসেবে নিসার বাজমী (পরবর্তীতে পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হন) বলেন, "যখন রফিকে তিনি তাঁর দেনা পরিশোধ করতে পারেননি, তখন রফি এক রূপির বিনিময়ে তার জন্য একটি সঙ্গীত গান ও তাঁকে দায়মুক্ত করেন। এছাড়াও তিনি প্রযোজকদের বিভিন্ন সময় অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন।"

লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলাল জুটির অন্যতম লক্ষ্মীকান্ত তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন যে, "রফি সর্বদাই অর্থ সাহায্য করেছেন অনেককেই; কিন্তু এর বিনিময়ে তিনি অর্থ ফেরতের আশা করেননি।"

শাস্ত্রীয় ও আধুনিক গানের অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মান্না দে তার সমসাময়িক মোহাম্মদ রফি সম্পর্কে বলেন যে, "তিনি সকলের চেয়ে সেরা গায়ক ছিলেন। রফি এবং আমি সকল স্তরের গানই গেতে পারি এবং তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন ভদ্রলোক। তিনি আমার চেয়েও সেরা গায়ক ছিলেন এবং আমি অবশ্যই বলবো যে, কেউই তাঁকে স্পর্শ করতে পারবে না। তিনি যখনই যা চেয়েছেন, তা-ই করতে পেরেছেন। আমরা সকলেই একবাক্যে ও কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্বীকার করি।"

প্রবীণ অভিনেতা শাম্মী কাপুর তার সম্পর্কে বলেন, "আমি রফিকে ছাড়া অসম্পূর্ণ। আমি যখনই গান রেকর্ড করতে যাই, তখনই মোহাম্মদ রফি'কে খুঁজে পাই। এছাড়াও পর্দায় গানকে কিভাবে উপস্থাপন করতে হবে এ বিষয়ে তাঁর কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পরামর্শ নিতাম। ফলে, তিনিও গানে আমার অংশগ্রহণকে বেশ পছন্দ করতেন।

ভারতের পাঞ্জাব এলাকার অমৃতসর গ্রামের কাছাকাছি কোটলা সুলতান সিংয়ের অধিবাসী হাজী আলী মোহাম্মদের ৬ষ্ঠ সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ রফি ২৪ ডিসেম্বর১৯২৪ ।সঙ্গীত শিল্পী মোহাম্মদ রফি'র ডাক নাম ছিল ফিকো। তার নিজ গ্রামে এক ফকিরের ভজন গানকে অনুকরণ করে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। জীবিকার সন্ধানে তার বাবা হাজী আলী মোহাম্মদ ১৯২০ সালে লাহোরে চলে যান এবং ভাট্টি গেটের নূর মহল্লায় একটি স্যালুনের মালিক হন।

তার বড় ভাই মোহাম্মদ দ্বীনের বন্ধু আবদুল হামিদ লাহোরে অবস্থানকালীন সময়ে রফি'র সঙ্গীত প্রতিভা দেখে তাকে গান গেতে সাহস জুগিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি রফি'র শ্যালক হয়েছিলেন। আবদুল হামিদ পরবর্তী সময়ে তার পরিবারের বড়দের কাছ থেকে সম্মতি আদায় করে তাকে মুম্বাই পাঠান। ১৯৪৪ সালে মোহাম্মদ রফি বোম্বেতে গেলে সঙ্গী হিসেবে তার সাথে আবদুল হামিদও গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খান, উস্তাদ আব্দুল ওয়াহিদ খান, পণ্ডিত জীবনলাল মত্তো এবং ফিরোজ নিজামী'র মতো প্রথিতযশা শিল্পীদের কাছ থেকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন।

১৩ বছর বয়সে রফি লাহোরের প্রথিতযশা শিল্পী কে. এল. সাইগলের সাথে জীবনের প্রথম দর্শক-শ্রোতাদের মুখোমুখি হয়ে কনসার্টে গান পরিবেশন করেন।১৯৪১ সালে শ্যাম সুন্দরের নির্দেশনায় লাহোরে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে অভিষেক ঘটান। পাঞ্জাবী ভাষায় নির্মিত গুল বালুচ (১৯৪৪ সালে মুক্তি পায়) চলচ্চিত্রে জিনাত বেগমের সঙ্গে দ্বৈত সঙ্গীত "সোনিয়ে নি, হেরিয়ে নি" গানটি গান।একই বছরে মোহাম্মদ রফি অল ইন্ডিয়া রেডিও'র লাহোর সম্প্রচার কেন্দ্রে গান পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ পান।

১৯৪১ সালে শ্যাম সুন্দরের পরিচালনায় গুল বালোচ ছবির মাধ্যমে সঙ্গীতে পেশাগতভাবে অভিষেক ঘটান রফি। পরের বছর বোম্বের চলচ্চিত্র গাও কি গৌরী ছবিতে নৈপথ্য গায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটান। এছাড়াও রফি লায়লা-মজনু (১৯৪৫) এবং জুগনু চলচ্চিত্রে সংক্ষিপ্তভাবে, অতিথি শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। লায়লা-মজনু চলচ্চিত্রে 'তেরা জ্বালা' কোরাস গানে তাকে অন্যান্য শিল্পীদের সাথে গাইতে দেখা যায়।

১৯৪৪ সালে মোহাম্মদ রফি বোম্বেতে (বর্তমান মুম্বাই) চলে আসেন। তার শ্যালক সেখানে তাকে ভেন্দী বাজারের মতো ব্যস্ততম এলাকায় দশ ফুট বাই দশ ফুট কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করেন। সেখানে তানভীর নাকভী নামীয় একজন কবি - আবদুর রশীদ কারদার, মেহবুব খান এবং অভিনেতা-পরিচালক নাজিরের মতো চলচ্চিত্র পরিচালকের সাথে রফিকে পরিচয় করে দেন। শ্যাম সুন্দর তখন মুম্বাইয়ে অবস্থান করছিলেন। তিনি রফিকে আবারো জিএম দুররানী'র সাথে দ্বৈত সঙ্গীতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। শ্যাম সুন্দরের গাঁও কি গোরী চলচ্চিত্রের আজি দিল হো কাবু মে তো দিলদার কি এ্যায়সী তাঈসী গানের মাধ্যমে মোহাম্মদ রফি হিন্দী চলচ্চিত্রে প্রথম গান রেকর্ড করেন।

১৯৪৮ সালে মহাত্মা গান্ধী নিহত হবার পর হুসনলাল ভগতরাম-রাজেন্দ্র কৃষাণ-রফি ত্রয়ী একরাত্রিতেই কালজয়ী শুনো শুনো এই দুনিয়াওয়ালো, বাপুজী কি অমর কাহিনী গান রচনা করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।[১৩] এরপর তিনি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহ্‌রু'র আমন্ত্রণে গানটি পুনরায় পরিবেশন করে উপস্থিত সকলকে শোনান। ১৯৪৮ সালে ভারতের স্বাধীনতা দিবসে নেহরু'র কাছ থেকে রৌপ্য পদক গ্রহণ করেন মোহাম্মদ রফি।

১৯৪৯ সালে নওশাদ (চাদনী রাত, দিল্লাগী, দুলারী); শ্যাম সুন্দর (বাজার); হুসনলাল ভগতরামের (মীনা বাজার) প্রমূখ সঙ্গীত পরিচালকদের নির্দেশনায় একক সঙ্গীতে অংশ নেন। নওশাদের নির্দেশনায় শ্যাম কুমার, আলাউদ্দীন এবং অন্যান্যদের সঙ্গে রফি'র প্রথম গান ছিল ১৯৪৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পেহলে আপ ছবির হিন্দুস্তান কি হাম হ্যায় গানটি। এভাবেই তিনি হিন্দি ভাষায় তার প্রথম গান রেকর্ড করেন। এছাড়াও রফি দু'টি হিন্দী ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৪৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লায়লা মজনু চলচ্চিত্রের তেরা জ্বালা জিস নে দেখা গানের দৃশ্যে অতিথি শিল্পী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

তিনি নওশাদের সহযোগিতায় অনেকগুলো গান গেয়েছেন। ১৯৪৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত শাহজাহান চলচ্চিত্রে কুন্দন লাল সায়গলের সাথে মেরে স্বপ্ন কি রানি, রুহী রুহী নামের কোরাসে অংশ নেন। মেহবুব খানের আনমল ঘড়ি (১৯৪৬)-তে তেরা খিলোনা তোতা বালক এবং জুগনু (১৯৪৭) চলচ্চিত্রে ইয়াহান বাদলা ওয়াফা কা গানে নূর জাহানের সাথে দ্বৈত সঙ্গীতে কণ্ঠ দেন।

ভারত বিভাজনের সময় মোহাম্মদ রফি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে তার পরিবারও বোম্বেতে চলে আসে। কিন্তু ঐসময়কার অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নূরজাহান পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হবার সিদ্ধান্ত নেন। নূরজাহান সেখানে আহমেদ রুশদী'র সাথে নতুন করে সঙ্গীত জুটি বাঁধেন।
রফি ঐ সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীতকার হিসেবে কুন্দন লাল সায়গল, তালাত মেহমুদের গানগুলো গভীরভাবে অনুসরণ করেন। তবে সবচেয়ে বেশি অনুরক্ত ও প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন জি. এম. দূররাণী'র প্রতি, যার গানগুলোকে নিজের গানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তিনি তার আদর্শকে ধারণ করতে গিয়ে ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হাম সব চোর হ্যায় ছবিতে হামকো হাসতে দেখ জামানা জ্বলতা হ্যায় এবং ১৯৫০ সালে বেকসুর ছবিতে খবর কিসি কো নাহিন, ও কিধার দেখতে-এর মতো গানে প্রভাব ফেলেছিলেন।


রফি এবং আব্দুল হামিদ বোম্বেতে অবস্থানকালীন চল্লিশের দশকে দুই বোনকে বিয়ে করেন। রফি পূর্বে তার চাচাতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু অভিবাসন আইনের দরুন তাকে ভারতে আনতে পারেননি। দেশ বিভক্তির ফলে তার স্ত্রী পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করেন। প্রথম সংসারে তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বোম্বেতে অবস্থানকালীন তিনি বিলকিস নাম্নী এক রমণীকে ২য় বারের মতো বিয়ে করেন। তাদের ২য় সংসারে ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা আছে। তিনি মদপান করতেন না। একজন ধার্মিক ও বিনয়ী ব্যক্তি হিসেবে সর্বত্র সকলের কাছে পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

তিনি পরিবারের প্রতি অত্যন্ত দায়িত্বশীল ছিলেন বলে জানা যায়। রেকর্ডিং রুম থেকে বাড়ীতে এবং বাড়ি থেকে রেকর্ডিং রুমে আসা-যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তার জীবন। চলচ্চিত্রের যে-কোন ধরনের জলসায় তাকে কখনো অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি। এছাড়াও, ধূমপান কিংবা মদপান করতেন না রফি। তিনি ভোর ৩টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ও একাধারে সঙ্গীতের রেওয়াজ বা সঙ্গীত চর্চা করতেন। প্রধানত ক্যারম, ব্যাডমিন্টন এবং ঘুড়ি উড়াতেই তার আগ্রহ লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

রফি'র ছোট ভাই মোহাম্মদ সাদ্দিকী এখনও বেঁচে আছেন এবং পরিবার নিয়ে পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থান করছেন।

সঙ্গীত জীবন

মোহাম্মদ রফি তার সুদীর্ঘ সঙ্গীত জীবনে অনেক নামকরা সঙ্গীত পরিচালকের দিক-নির্দেশনায় বিভিন্ন ধরনের গান গেয়েছেন। তন্মধ্যে অমর সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নওশাদের পরিচালনায়ই গান গেয়েছেন বেশি। এছাড়াও, ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে মোহাম্মদ রফি ও.পি. নায়ার, শঙ্কর জয়কিষাণ এবং এস.ডি.বর্মনের সুরেও অনেক গান গেয়েছেন।

নওশাদের সাহচর্য্যে

নওশাদের পিতার কাছ থেকে একটি সুপারিশ পত্র এনে মোহাম্মদ রফি তাকে দেখান। ১৯৪৪ সালে পেহলে আপ ছবিতে নওশাদের নির্দেশনায় রফি তার প্রথম গান হিসেবে "হিন্দুস্তান কে হাম হে" গান। ১৯৪৬ সালে দ্বৈত সঙ্গীতরূপে আনমল ঘড়িতে গান রেকর্ড করেন। মোহাম্মদ রফি'র পূর্বে নওশাদের প্রিয় কণ্ঠশিল্পী ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তালাত মাহমুদ। একদিন রেকর্ডিং চলাকালীন সময়ে তালাত মাহমুদকে ধুমপানরত অবস্থায় দেখতে পান নওশাদ। এতে তিনি তার প্রতি ভীষণভাবে ক্ষিপ্ত হন ও রাগ করেন। ফলে বৈজু বাওরা ছবির সকল গানেই মোহাম্মদ রফিকে অন্তর্ভুক্ত করেন নওশাদ।] নওশাদের সাহচর্য্যে রফি নিজেকে হিন্দী সিনেমার ভুবনে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ও কিংবদন্তি নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বৈজু বাওরা (১৯৫২) ছবির গান হিসেবে - ও দুনিয়া কে রাখওয়ালে এবং মন তারপাত হরি দর্শন কো আজ রফি'র কণ্ঠকে অবিসংবাদিত তারকা খ্যাতি এনে দেয়।[১০] নওশাদের দিক-নির্দেশনায় সর্বমোট ১৪৯টি সঙ্গীত পরিবেশন করেন রফি। তন্মধ্যে তার সলো বা একক সঙ্গীত ছিল ৮১টি।

শচীন দেব বর্মণের সাহচর্য্যে

শচীন দেব বর্মণ বিখ্যাত অভিনেতা দেব আনন্দ এবং গুরু দত্তের মাধ্যমে রফিকে তার নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আমন্ত্রণ জানান। রফি বর্মণের সঙ্গীত পরিচালনায় পিয়াসা (১৯৫৭), কাগজ কে ফুল (১৯৫৯), তেরে ঘর কে সামনে (১৯৬২), গাইড (১৯৬৫), আরাধনা (১৯৬৯) এবং অভিমান (১৯৭৩) চলচ্চিত্রে কাজ করেন। এস. ডি. বর্মণ ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সঙ্গীত পরিচালক যিনি নওশাদের পাশাপাশি মোহাম্মদ রফিকেও তার সুরারোপিত অধিকাংশ গানে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন।

সঙ্গীত পরিচালক রবি'র সাথে

রফি তার প্রথম ফিল্মফেয়ার পদক পান চৌদভীন কা চাঁদ (১৯৬০) ছবির সঙ্গীত পরিচালক ও গীতিকার রবি কর্তৃক লিখিত সূচনা সঙ্গীতের জন্য। ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত নীল কমল ছবিতে "বাবুল কি দোয়ায়েন লেটি জা" গানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। মোহাম্মদ রফি যখন গানটি রেকর্ডিং করেন তখন সেসময় তিনি বেশ আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বা বিবিসিতে সাক্ষাৎকারের সময় এ বিষয়ে প্রসঙ্গান্তরে কথাটি তুলে ধরেছিলেন। রবি এবং রফি'র গীত ও সুরে অন্যান্য অনেক গান রয়েছে - চায়না টাউন (১৯৬২), কাজল (১৯৬৫) এবং দো বদন (১৯৬৬) চলচ্চিত্রসমূহে।

সঙ্গীত পরিচালক জয় কিষাণের সাথে

হিন্দী চলচ্চিত্র শিল্পে মোহাম্মদ রফি এবং সঙ্গীত পরিচালক শঙ্কর জয়কিষাণের মধ্যে চমৎকার ও গভীর সু-সম্পর্ক বিরাজমান ছিল। জয়কিষাণের সঙ্গীত পরিচালনা ও নির্দেশনায় রফি বেশ কিছু ছবির গানে কণ্ঠ দেন যা শাম্মী কাপুর এবং রাজেন্দ্র কুমারের ঠোঁটে দেখা যায়। রফি'র ৬টি ফিল্মফেয়ার পদক প্রাপ্তির মধ্যে ৩টিই ছিল শঙ্কর জয়কিষাণের সঙ্গীত নির্দেশনা ও পরিচালনায়। তেরি পিয়ারী পিয়ারী সুরত কো, বাহারো ফুল বর্ষাও এবং দিল কি ঝরোখে মে'র মতো অবিস্মরণীয় গানগুলো তাকে ঐ পদকগুলো প্রাপ্তিতে সহায়তা করেছিল।

ইয়াহু! চাহে কোই মুঝে জাংলী কাহে গানটি ছিল একমাত্র গান যাতে দ্রুতলয়ের অর্কেষ্ট্রা ঘরাণার গান করেছেন রফি। কিশোর কুমারের পরিবর্তে রফিকে সারারাত ছবিতে আজব হ্যায় দাস্তান তেরী ইয়ে জিন্দেগী গানে অন্তর্ভুক্ত করেন শঙ্কর জয়কিষাণ। মোহাম্মদ রফি তার সঙ্গীত নির্দেশনা ও পরিচালনায় সর্বমোট ৩৪১টি গান গেয়েছিলেন। তন্মধ্যে ২১৬টি গানই ছিল একক সঙ্গীতের।[১৭]বসন্ত বাহার, প্রফেসর, জাংলী, সুরজ, ব্রহ্মচারী, এ্যান ইভ্‌নিং ইন প্যারিস, দিল তেরা দিওয়ানা, ইয়াকিন, প্রিন্স, লাভ ইন টোকিও, বেটি বেটে, দিল এক মন্দির, দিল আপনা আউর প্রীত পারাই, গবন এবং জব পেয়ার কিসি সে হোতা হে ছবিগুলোতে তার গান রয়েছে।

ও. পি. নায়ারের সঙ্গে

রফি এবং ও. পি. নায়ার জুটি কর্তৃক যৌথভাবে সৃষ্ট ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকের সঙ্গীতগুলো শ্রোতা-দর্শকদের মনে বেশ আলোড়ন তুলেছিল। নায়ার একবার রফি'র সম্বন্ধে বলেছিলেন, "যেখানে মোহাম্মদ রফি নেই, সেখানে ও. পি, নায়ারও নেই"। নায়ার এবং রফি উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসে সৃষ্ট অনেকগুলো গান জনপ্রিয় হয়েছিল। তন্মধ্যে ইয়ে হ্যায় বোম্বে মেরি জান অন্যতম। তিনি রফিকে দিয়ে গায়ক-অভিনেতা হিসেবে কিশোর কুমারের জন্য মন মরা বাওয়ারা গানটি রাগীনি ছবিতে গাইয়েছেন। পরবর্তীতে রফি কিশোর কুমারের অন্যান্য চলচ্চিত্র হিসেবে বাঘী, শেহজাদা এবং সারারাত ছবিতেও গান গেয়েছেন।

নায়ার তার চলচ্চিত্রের জন্য অধিকাংশ গানেই আশা ভোঁসলে এবং মোহাম্মদ রফিকে অংশগ্রহণ করিয়েছেন। নয়া দৌঁড় (১৯৫৭), তুমসা নাহিন দেখা (১৯৫৭) এবং কাশ্মীর কি কালী (১৯৬৪) চলচ্চিত্রে নায়ার-রফি দু'জনের সঙ্গীতে অংশগ্রহণ ছিল বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। নায়ারের সঙ্গীত পরিচালনায় রফি সর্বমোট ১৯৭টি গান করেছেন। তন্মধ্যে ৫৬টি গান ছিল একক সঙ্গীতের। ১৯৫৭ সালে নয়া দৌড় চলচ্চিত্রে তিনি আশা ভোঁসলের সাথে জুটি বেধে "উড়ে জাব জাব জুলফে তেরি","মাংগকে সাথ তুমহারা" ও "সাথি হাত বাড়ানা" গানগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। রফি'র কণ্ঠে তুমসা নাহিন দেখা চলচ্চিত্রে জাওয়ানিয়ান ইয়ে মাস্ত মাস্ত এবং সূচনা সঙ্গীত হিসেবে ইউ তো হামনে লাখ হাসি দেখে হ্যায় গানটিও অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। এছাড়াও, কাশ্মীর কি কালী ছবিতে তারিফ করুন কিয়া উসকি জিসনে তুমহে বানায়া গানটিও সমধিক জনপ্রিয় ছিল।

লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলাল জুটির সঙ্গে

অত্যন্ত জনপ্রিয় দুই গীতিকার লক্ষ্মীকান্ত-পিয়ারেলাল জুটিও মোহাম্মদ রফিকে তাদের সৃষ্ট গানে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছিলেন। এ জুটির সঙ্গীত পরিচালনায় প্রথম ছবি হিসেবে ১৯৬৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পরশমণি চলচ্চিত্রের গানে মোহাম্মদ রফি অংশ নেন। রফি এবং লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলাল জুটি যৌথভাবে ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত দোস্তি চলচ্চিত্রের চাহুঙ্গা মে তুঝে সাঁঝ সাভেরে গানের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার লাভ করেছিলেন। এ জুটির সাথে ৩৬৯টি গানে অংশগ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ রফি। তন্মধ্যে ১৮৬টি গানই ছিল একক সঙ্গীতের।

১৯৫০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে বলিউডে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য গায়কদের তুলনায় রফিকেই দেখা গিয়েছিল সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও, হিন্দী ছবিতে তিনি অনেক খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তারকার জন্যে গান গেয়েছেন। ১৯৬৫ সালে সঙ্গীত কলায় অসামান্য অবদান রাখায় ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করে। ১৯৬০ এর দশকে মৌরিতাস ভ্রমণের সময় তিনি ক্রিয়োল ভাষায় একটি গান গেয়েছিলেন। এছাড়াও, রফি দু'টি ইংরেজি এ্যালবামের গানে অংশ নেন। তাদের মধ্যে একটি হলো পপ হিটস্‌।



জীবনের শেষের বছরগুলোতে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড সংক্রান্ত বিষয়ে মোহাম্মদ রফি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি লতা মঙ্গেশকরের গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করেন। ১১ জুন, ১৯৭৭ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষকে লিখিত একটি চিঠিতে তিনি জানান যে, লতাজী সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করেছেন সত্য; কিন্তু তা গিনেস কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মোতাবেক ২৫,০০০ গানের কম নয়। গিনেস থেকে পত্র প্রাপ্তির প্রত্যুত্তরে রফি ২০ নভেম্বর, ১৯৭৯ সালে চিঠিতে লিখেন যে: আমি খুবই মর্মাহত যে আমার অনুরোধ পুনর্বিবেচনা করা হয়নি। এমনকি আমার নাম অন্তর্ভুক্তির বিপরীতে মিস মঙ্গেশকরের দাবিকৃত বিশ্বরেকর্ডটি অপসারণও করা হয়নি।

১৯৭৭ সালের নভেম্বর মাসে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ রফি দাবি করেন যে, তিনি ঐ সময় পর্যন্ত ২৫ থেকে ২৬ হাজারের মতো গান গেয়েছেন।

রফি'র মৃত্যুর পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের ১৯৮৪ সালের সংস্করণে লেখা হয় যে, 'লতা মঙ্গেশকর সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করেছেন। তবে মোহাম্মদ রফিও দাবি করেছেন যে, তিনি ১১টি ভারতীয় ভাষায় ১৯৪৪ সাল থেকে এপ্রিল, ১৯৮০ সালের মধ্যে ২৮,০০০ এর মতো গান গেয়েছেন।'

প্রাপ্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান মোতাবেক ১৯৪৫ থেকে ১৯৮০ সময়কালের মধ্যে মোহাম্মদ রফি ৪,৫১৬টি হিন্দি ছবির গান, ১১২টি অন্যান্য চলচ্চিত্রের গান এবং ৩২৮টি অন্যান্য গান রেকর্ড করেছেন।[২৮]

অবশ্য পরবর্তীকালে ১৯৯১ সালে মোহাম্মদ রফি এবং লতা মঙ্গেশকর - উভয় কণ্ঠশিল্পীর নামই গিনেস বুক থেকে অপসারণ করা হয়।

ভারত সরকার মোহাম্মদ রফি'র মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে ও তার প্রতি সম্মান জানিয়ে দুই দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিল।[৪৬]
১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র গুমনাম ছবির জান পেহচান হো গানটি ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ঘোস্ট ওয়ার্ল্ড ছবির সাউণ্ডট্রাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছবিটির শুরুতে মোহাম্মদ রফি'র শয়নকক্ষে গুমনাম শিরোনামের ভিডিওতে নাচের দৃশ্যের অবতারণা করা হয়।
২০০১ সালের চলচ্চিত্র হিসেবে মনসুন ওয়েডিং চলচ্চিত্রে আজ মৌসুম বড় বেঈমান হ্যায় শিরোনামের গানটি পুনরায় ধারণ করা হয়।
রফি'র জীবনকে ঘিরে একটি প্রামাণ্যচিত্র বা ডকুমেন্টারী ভারতের চলচ্চিত্র বিভাগের নির্মাণের অপেক্ষায় রয়েছে।
মুম্বাইয়ের বন্দ্রা এবং পুনেতে মোহাম্মদ রফি অবিস্মরণীয় করে রাখতে "পদ্মশ্রী মোহাম্মদ রফি চক" নামে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে।[৫০]
জুন, ২০১০ সালের জুন মাসে আউটলুক ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে ভোটের মাধ্যমে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে মোহাম্মদ রফিকেও সবচেয়ে জনপ্রিয় নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে মনোনীত করা হয়।[৫১] একইভাবে ঐ ম্যাগাজিনের ভোটে ১৯৬৪ সালের চিত্রলেখা ছবির মন রে তু কাহে না ধীর ধরে গানের জন্য রফি ১ম স্থান অর্জন করেন।[৫২] তিনটি গান যৌথভাবে ২য় স্থানের জন্য মনোনীত হয়। তন্মধ্যে দু'টি গানই ছিল মোহাম্মদ রফি'র কণ্ঠে। ১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত গাইড ছবির গানগুলো হলো - তেরে মেরে স্বপ্নে আব এক রং হে এবং দিন ধাল জায়ে, হ্যায় রাত না জায়ে।
আউটলুক ম্যাগাজিন কর্তৃক পরিচালিত এই ভোট পর্বটিতে ভারতীয় সঙ্গীত শিল্পের গণ্যমান্য অনেক শিল্পী বিচারকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তারা হলেন - অভিজিৎ, আদেশ শ্রীবাস্তব, আলিশা চিন্নাই, আনু মালিক, এহসান, গুলজার, হরিহরণ, হিমেশ রেশমিয়া, যতীন, জাভেদ আখতার, কৈলেশ খের, কবিতা কৃষ্ণমূর্ত্তি, খৈয়াম, কুমার শানু, ললিত, লয়, মহালক্ষ্মী আয়ার, মহেন্দ্র কাপুর, মান্না দে, প্রসূন যোশী, রাজেশ রোশান, সাধনা সরগম, সমীর, সন্দেশ শানদিলিয়া, শান, শঙ্কর, সান্তনু মৈত্র, শ্রেয়া ঘোষাল, সনু নিগম এবং তালাত আজিজ।

সঙ্গীত পরিচালক রাজেশ রোশানের গীত রচনান্তে বেশ কয়েকটি গানে কণ্ঠ দেন রফি। রফি'র মৃত্যুতে তিনি বলেন যে, "রফি ছিলেন একজন উষ্ণ হৃদয়ের অধিকারী সহজ-সরল মানুষ যার মনের মধ্যে কোন হিংসা-বিদ্বেষ ছিল না"।

সঙ্গীতপ্রেমীরা রফিকে মরণোত্তর ভারত রত্ন পুরস্কার (যা ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান) প্রদানের মাধ্যমে যথাযথভাবে সম্মান জানানোর জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
১৯৪৮: প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরু'র কাছ থেকে ভারতের ১ম স্বাধীনতা দিবসে রৌপ্য পদক গ্রহণ করেন।[১১]
১৯৬৭: ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী পুরস্কার লাভ।
১৯৭৪: তেরী গালিও ম্যা না রাখেঙ্গে কদম আজ কে বাদ গানের জন্য ফিল্ম ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে সেরা গায়কের পুরস্কার লাভ।
২০০১: হিরো হোণ্ডা-স্টারডাস্ট ম্যাগাজিনের যৌথ উদ্যোগে ৭ জানুয়ারি, ২০০১ তারিখে অংশগ্রহণকারী পাঠকদের ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি শতাব্দীর সেরা গায়ক হিসেবে পুরস্কৃত হন।

জাতীয় চলচ্চিত্র পদক

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
বছর গান চলচ্চিত্র সঙ্গীত পরিচালক সুরকার ফলাফল
১৯৭৭ "ক্যায়া হুয়া তেরা ওয়াদা" হাম কিসি সে কাম নাহি রাহুল দেব বর্মন মাজরুহ সুলতানপুরী।

সঙ্গীত কলায় অসামান্য অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় পদক এবং ৬-বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মোহাম্মদ রফি। এছাড়াও, ১৯৬৭ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত পদ্মশ্রী সম্মানেও অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।[২] প্রায় চল্লিশ বছর সময়কাল ধরে সঙ্গীত জগতে থাকাকালীন ছাব্বিশ হাজারেরও অধিক চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্য গায়ক হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন মোহাম্মদ রফি।[৩] তিনি বহুবিধ গানে অংশ নেয়ার বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তন্মধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, বিরহ-বিচ্ছেদ, উচ্চ মার্গের প্রেম-ভালবাসা, কাওয়ালী, ভজন, গজল-সহ বিভিন্ন গোত্রের গানে দক্ষতা ও পারদর্শিতা দেখিয়েছেন সমানভাবে। বিশেষ করে হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় সমান দক্ষতা থাকায় তার গানগুলোতে বৈচিত্র্য এসেছে সমধিক।
হিন্দিসহ কোনকানি, উর্দু, ভোজপুরী, উড়িয়া, পাঞ্জাবী, বাংলা, মারাঠী, সিন্ধী, কানাড়া, গুজরাতি, তেলুগু, মাঘী, মৈথিলী, অহমীয়া ইত্যাদি ভাষায় তিনি গান গেয়েছেন। এছাড়াও আরও গান গেয়েছেন - ইংরেজি, ফার্সী, স্প্যানিশ এবং ডাচ ভাষায়।।




No comments: