Tuesday, 28 May 2024

শুভ জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি।‌।একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক, সাংবাদিক ও নৌ-গোয়েন্দা। ব্রিটিশ কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ড চরিত্রটি সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ছিলেন ফ্লেমিং। জেমস বন্ডের উপর মোট ১২ টি উপন্যাস লিখেন তিনি। ২০০৮ সালে টাইমস পত্রিকা অনুসারে ইয়ন ফ্লেমিংক “১৯৪৫ সালের পর সেরা ৫০ ব্রিটিশ লেখক”দের একজন অভিহিত করা হয়। তিনি ইয়ান ল্যাংকেষ্টার ফ্লেমিং । dt -28.05.2024. Vol - 892. The blogger post in literary e magazine


ইয়ান ল্যাংকেষ্টার ফ্লেমিং 


একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ লেখক, সাংবাদিক ও নৌ-গোয়েন্দা। ব্রিটিশ কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ড চরিত্রটি সৃষ্টির জন্য বিখ্যাত ছিলেন ফ্লেমিং। জেমস বন্ডের উপর মোট ১২ টি উপন্যাস লিখেন তিনি। ২০০৮ সালে টাইমস পত্রিকা অনুসারে ইয়ন ফ্লেমিংক “১৯৪৫ সালের পর সেরা ৫০ ব্রিটিশ লেখক”দের একজন অভিহিত করেন। 

জন্ম ১৯০৮ সালের ২৮ মে লন্ডন শহরের অভিজাত এলাকা মেফেয়ারের ২৭ নাম্বার গ্রিন স্ট্রিটে। তার মায়ের নাম ছিল ইভেলিন সেন্ট ক্রোইক্স এবং বাবার নাম ছিল ভ্যালেন্টাইন ফ্লেমিং। যিনি ১৯১০ থেকে ১৯১৭ পর্যন্ত ছিলেন হেনলের সংসদ সদস্য। ছোটবেলায় তিনি অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রাজিয়ার্স পার্কে তাঁর পরিবারের সাথে খুবই অল্প সময়ের জন্য বসবাস করেছিলেন।তার দাদা ছিল স্কটিশ ফিন্যান্সার রবার্ট ফ্লেমিংয়, যিনি স্কটিশ আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি এবং মার্চেন্ট ব্যাংক রবার্ট ফ্লেমিং এন্ড কোং-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ শুরু হলে কুইনস অউন অক্সফোর্ডশায়ার হুসরস এর "সি" স্কোয়ার্ডন এ যোগ দিয়ে মেজর পদে উন্নীত হন ভ্যালেন্টাইন ফ্লেমিং।১৯১৭ সালের ২০ মে পশ্চিম ফ্রন্টে জার্মানদের গোলা বর্ষণের সময় তিনি নিহত হন। তার মৃত্যু সংবাদ লিখেছিলেন উইনস্টন চার্চিল যেটি দ্যা টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।কারণ আর্নিডালে এই পরিবারের বিশাল সহায় সম্পত্তি ছিল যার কারণে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যু গ্লেনেলগ -এ যুদ্ধের শোক স্মৃতি হিসেবে স্মরণ করা হয়।

ফ্লেমিং এর বড় ভাই পিটার (১৯০৭-১৯৭১) একজন ভ্রমণ লেখক ছিলেন এবং অভিনেত্রী সেলিয়া জনসন- কে বিয়ে করেন।  পিটার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গ্রেনাডিয়ার গার্ডদের সাথে কাজ করতেন। যাকে পরবর্তীকালে সহায়ক ইউনিট স্থাপনে সহায়তা করার জন্য কলিন গবিন্সের অধীনে পাঠানো হয়। এর পর নরওয়ে এবং গ্রীসে যুদ্ধ চলাকালে পরোক্ষভাবে অপারেশন গুলোতে অংশ নেন।

ফ্লেমিং এর ছোট আরো দুটি ভাই ছিল, মাইকেল (১৯১৩-১৯৪০) এবং রিচার্ড (১৯১১-১৯৭৭)। ১৯৪০ সালের অক্টোবরে নরম্যান্ডিতে বন্দী হওয়ার পর মাইকেল আঘাত পেয়ে মারা যান। তখন তিনি অক্সফোর্ডশায়ার এবং বাকিংহামশায়ার লাইট ইনফ্যান্ট্রির হয়ে কাজ করছিলেন।[১০] বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হওয়ার পর ফ্লেমিং এর মায়ের পক্ষের আরো একটি ছোট বোনের জন্ম হয়। তার নাম আম্রেলিস ফ্লেমিং (১৯২৫-১৯৯৯) তিনি ছিলেন সেলো বাদক। তার বাবা আগস্টাস জন ও ছিলেন একজন শিল্পী। জন এবং ইভেলিনের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কারণেই আম্রেলিনের জন্ম হয় যেটি শুরু হয়েছিল ১৯২৩ সালে ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুর প্রায় ৬ বছর পর।

১৯১৪ সালে ফ্লেমিং ডার্নফোর্ড স্কুলে শিক্ষা জীবন শুরু করেন, যেটি ছিল ডোরসেট এ অবস্থিত আইল অফ পুর্বেকের একটি প্রিপারেটরি স্কুল।ডার্নফোর্ডের জীবন তিনি খুব একটা সয়ে নিতে পারেন নি। সেখানের খাবার দাবারেও তার রুচি ছিল না যার ফলে শারীরিক সমস্যা সহ নানা ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হন তিনি.

১৯২১ সালে ফ্লেমিং ইটন কলেজে উত্তীর্ণ হন। একাডেমিক পড়াশোনায় তেমন ভাল ফলাফল না পেলেও খেলাধুলায় ছিলেন দক্ষ এবং ১৯২৫ এবং ১৯২৭ পর পর দু বছর ধরে তিনি ভিক্টর লর্ডোরাম ("খেলাধূলার বিজয়ী") উপাধী ধরে রাখেন। সে সময়ে তিনি দ্যা ওয়েভার্ন নামের একটি স্কুল ম্যাগাজিনও সম্পাদনা করতেন। ইটনে তার চালচলন এবং মানসিকতার সাথে অমিলের কারণে গৃহকর্তা ই.ভি. স্লাটারের সাথে শুরু হয় তার মনোমালিন্য। এমনকি তার চুলের তেল থেকে শুরু করে গাড়ির মালিক হওয়া এবং নারী সঙ্গ কোন কিছুই পছন্দ ছিল না তার।

স্লাটার ফ্লেমিং এর মা কে রাজি করিয়ে এক টার্ম বাকি থাকতেই ক্যারামার কোর্সের জন্য তাকে ইটন থেকে সরিয়ে দিলেন। যাতে করে স্যান্ডহার্স্ট এর রয়্যাল মিলিটারি কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া সহজ হয়।এক বছরেরও কম সময়ে তিনি সেখানে ছিলেন এবং ১৯২৭ সালে গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে খালি হাতেই সেখান থেকে চলে আসেন।

১৯২৭ সালে ফ্লেমিংকে পররাষ্ট্র দপ্তরেসম্ভাব্য প্রবেশের প্রস্তুতির জন্য তার মা তাকে অস্ট্রিয়ার কিটজবুহেলের টেনারহফে পাঠিয়ে দেন। এটি ছিল অ্যাডলারিয়ান শিষ্য এবং প্রাক্তন ব্রিটিশ গুপ্তচর এরনান ফোর্বস ডেনিস এবং তার ঔপন্যাসিক স্ত্রী ফিলিস বটম দ্বারা পরিচালিত একটি ছোট বেসরকারি স্কুল। সেখানে কিছুটা ভষা রপ্ত করে তিনি মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করেন। জেনেভায় থাকাকালীন ফ্লেমিং মনিক পঞ্চুদ ডি বোটেন্সের সাথে একটি প্রণয়ে আবদ্ধ হন এবং ১৯৩১ সালে ছোট পরিসরে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন.  তবে এতে তার মা বাঁধ সাধেন এবং সম্পর্কটি ছিন্ন করতে বাধ্য করেন।এর পর পররাষ্ট্র দপ্তরে আবেদন করলে সে পরীক্ষায়ও পাশ করতে পারেন নি তিনি। তার মা আবারও তার কাজে হস্তক্ষেপ করেন এবং রয়টার্স সংবাদ সংস্থার প্রধান স্যার রোডেরিক জোন্সকে হাত করেন। ১৯৩১ সালে অক্টোবরে তাকে কোম্পানির উপ-সম্পাদক

এবং সাংবাদিক পদ নিয়োগ দেওয়া হয়।১৯৩৩ সালে ফ্লেমিং মস্কোতে থাকাকালীন ব্রিটিশ কোম্পানি মেট্রোপলিটন-ভিকার্স থেকে ছয় প্রকৌশলীর স্তালিনবাদী শো ট্রায়াল এর সংবাদ সংগ্রহের কাজ করেন। সে সময়েই তিনি সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী জোসেফ স্তালিনের সাথে সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদন করেন এবং ব্যক্তিগতভাবে স্বাক্ষরিত একটি নোট পান যেটিতে তিনি উপস্থিত থাকছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। যা তাকে বেশ বিস্মিত করেছিল।

১৯৩৩ সালের অক্টোবরের দিকে ফ্লেমিং পারিবারিক চাপে ভেঙ্গে পড়েন এবং ফাইন্যান্সিয়ার্স কুল অ্যান্ড কোং নামক একটি প্রতিষ্ঠানে হয়ে ব্যংকিং পেশা শুরু করেন।১৯৩৫ সালের দিকে তিনি বিশপসগেটের রো এবং পিটম্যানে স্টকব্রোকার হিসেবে চলে যান।ফ্লেমিং এ দুটি পেশার একটিতেও সফল হতে পারেননি।১৯৩৯ সালের শুরুর দিকে ফ্লেমিং অ্যান ও'নীলের (নি চার্টারিস) সাথে একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি তৃতীয় ব্যারন ও'নীল ইয়ান এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন এবং একই সাথে ডেইলি মেইলের মালিক লর্ড রথারমেরের উত্তরাধিকারী এসমন্ড হারমোসওয়ার্থের সাথেও তার প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল।

আফ্রিকার কাছে ইতালির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অগ্রাসন আড়াল করার জন্য চার্লেস চোলমন্ডোলি ১৯৪২ সালের অক্টোবরে করেছিল। ট্রাউট মেমোটির সুপারিশ পত্রের শিরোনাম ছিল: "একটি পরামর্শ (যেটি খুব একটা সুবিধার নয়)" এবং এটিতে এভাবে বলা ছিল "নিম্নলিখিত পরামর্শটি বাসিল থমসনের একটি বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে: "একটি বিমানকর্মীর মৃতদেহ যার পকেটে পরিচয় পত্র আছে এমন কাউকে নষ্ট প্যারাসুটে করে উপকূলের কাছে ফেলে দেওয়া যেতে পারে। আমি জানি যে নেভাল হাসপাতালে লাশ পেতে কোনও অসুবিধা হবে না, তবে অবশ্যই এটি বেশি দিনের পুরানো হওয়া যাবে না।"


১৯৪০ সালের দিকে ফ্লেমিং এবং গডফ্রে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপক কেননেথ ম্যাসনের সাথে যোগাযোগ করেন এবং যে সব দেশ মিলিটারি অপারেশনের সাথে যুক্ত তাদের ভোগলিক প্রতিবেদন তৈরি করেন। আর এই প্রতিবেদনগুলিই নৌ গোয়েন্দা বিভাগ ভৌগোলিক হ্যান্ডবুক সিরিজের মূল ভিত ছিল যে গুলো ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৬ সালের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল।

অপারেশন রুথলেস এমন একটি পরিকল্পনা যার উদ্দেশ্য ছিল জার্মান নেভিদের ব্যবহার করা এনিগমা কোডের খুঁটিনাটি বের করা। যার উৎস খুঁজে পাওয়া যায় একটি মেমো থেকে যেটি ফ্লেমিং লিখেছিল গডফ্রে কে ১৯৪০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। পরিকল্পনাটি ছিল এরকম একটি নাৎসি বোমারু বিমান "দখল" করা যার ভেতরে লুফটওয়াফের ইউনিফর্ম পরিহিত জার্মান-ভাষী বিমান কর্মী থাকবে এবং ইংলিশ চ্যানেলে এটিকে ক্র্যাশ করা। এরপর জার্মান উদ্ধারকারী আসলে বিমান কর্মীরা আক্রমণ করে তাদের নৌকা ও এনিগমা মেশিন ইংল্যান্ডে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। কিন্তু ব্ল্যাচলে পার্কে অ্যালান টিউরিং এবং পিটার টোইনকে বিপদজ্জনক ভেবে এই মিশনটি আর চালানো হয়নি। ফ্লেমিং এর ভাতিজি লুসি যে ছিল রয়্যাল এয়ার ফোর্সের অফিসার, খুঁজে বের করল যে ইংলিশ চ্যানেলের হেইনকেলে বোমারু বিমান ফেলে দিলে খুব সম্ভবত সেটি অসম্ভব দ্রুততার সাথে ডুবে যেতে পারে।

ফ্লেমিং কর্নেল "ওয়াইল্ড বিল" ডোনভান, লন্ডন এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে গোয়েন্দা সহযোগিতা সম্পর্কিত রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের বিশেষ প্রতিনিধি এর সাথেও কাজ করেছিলেন।১৯৪১ সালের মে মাসে ফ্লেমিং গডফ্রেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসেন, যেখানে তিনি তথ্য সমন্বয়কারী অফিস, যে বিভাগটি স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস অফিসে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত সিআইএ হয়ে যায় সে বিভাগের নীল নকশা তৈরির কাজে সহায়তা করেছিলেন।

অ্যাডমিরাল গডফ্রে ১৯৪১ এবং ১৯৪২ সালের মধ্যে ফ্লেমিংকে অপারেশন গোল্ডেন আই এর দায়িত্বে নিযুক্ত করেন। গোল্ডেন আই এর পরিকল্পনাটি ছিল জার্মান এলাকা দখল করার জন্য স্পেনীয় একটি গোয়েন্দা অবকাঠামো বজায় রাখা। ফ্লেমিংয়ের পরিকল্পনা ছিল জিব্রালটারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং নাৎসিদের বিরুদ্ধে নাশকতা মূলক অভিযান চালানো। ১৯৪১ সালে তিনি ডোনভানের সাথে সাথে সমঝোতা করেন যাতে করে জার্মানরা সমুদ্র উপকুলে প্রভাব খাটাতে না পারে। 

চলাকালীন সময় ফ্লেমিং সর্বপ্রথম বন্ধুদের সাথে রোমাঞ্চকর উপন্যাস লেখার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন আর ক্যাসিনো রয়্যাল লেখার দুমাসের মধ্যেই তার সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ হয় । ১৯৫২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি গোল্ডেন আই বইটি লেখার কাজে হাত দেন। তার সারাজীবনের অর্জিত অভিজ্ঞতা আর অসাধারণ কল্পনা শক্তিই ছিল তার অনুপ্রেরণা। পরে তিনি অবশ্য বলেছিলেন যে তার গর্ভবতী চার্টারিসের সাথে আসন্ন বিবাহের দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতেই উপন্যাসটি লিখেছিলেন।] আর এটিকেই তার সেরা কাজ বলে অভিহিত করেছিলেন।] তার পাণ্ডুলিপিটি লন্ডনে টাইপ করেছিলেন জোয়ান হাউয়ে (ট্র্যাভেল লেখক ররি ম্যাকলিনের মা), এবং দ্যা টাইমসে ফ্লেমিংয়ের এক লাল চুলের সেক্রেটারির উপরেই ভিত্তি করে মিস মানিপেনি চরিত্রটি আংশিকভাবে চিত্রিত হয়। ক্লেয়ারৌঔ ব্লানচার্ড নামক ফ্লেমিং এর এক প্রাক্তন বান্ধবী তাকে বইটি প্রকাশ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন অন্তত প্রকাশ করলেও যাতে ছদ্মনামে করে।


ক্যাসিনো রয়েলের চূড়ান্ত খসড়া পর্যায়ে, ফ্লেমিং তার বন্ধু উইলিয়াম প্লমারকে একটি কপি দেখতে দিয়েছিলেন এবং তিনি সেটিতে মন্তব্য করেছিলেন "আমি যতটুকু দেখেছি এখানে কোন রোমাঞ্চকর উত্তেজনার ছিটে ফোঁটাও নেই"।] তারপরেও প্লমার বইটি পাঠক প্রিয়তা পেতে পারে ভেবে এর একটি কপি জনাথন কেপ প্রকাশনিতে পাঠিয়ে দিল। প্রথমে তারা উপন্যাসটি নিয়ে খুব একটা আগ্রহী ছিল না কিন্তু ফ্লেমিং এর ভাই পিটার প্রতিষ্ঠানটিকে বইটি প্রকাশের জন্য রাজি করান। পিটারের ভাইয়ের বই নিয়মিত এই প্রকাশনি থেকেই প্রকাশিত হয়। ১৯৫৩ সালের ১৩ এপ্রিল ক্যাসিনো রয়্যাল যুক্তরাজ্যে হার্ড কভারে প্রকাশিত হয়, যার দাম ছিল সেময়ের ১০ সিলিং এবং ৬ পেনি।এর সাথে ফ্লেমিং এর নিজের হাতে করা একটি প্রচ্ছদও ছিল।[এটি ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয়তা পায় এবং তিন বার করে মুদ্রণে পাঠাতে হয় পাঠক চাহিদা মিটাতে।

উপন্যাসের মূল কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে জেমস বন্ড যিনি MI6 নামক একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করে। বন্ড 007 নামক বিশেষ সংকেতেও পরিচিত ছিল আর তার পোষাকি পদবি ছিল রয়্যাল নেভাল রিজার্ভ এর একজন কমান্ডার। ফ্লেমিং তার চরিত্রটির নামটি একজন আমেরিকান পাখি বিশারদ জেমস বন্ড এর নামানুসারে করেন। তিনি ছিলেন ক্যারাবিয়ান পাখির উপর বিশেষজ্ঞ এবং বার্ডস অফ ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে তার একটি বিখ্যাত বইও আছে। ফ্লেমিং নিজেও পক্ষী প্রেমী ছিলেন।] তার কাছে বন্ডের সেই বিখ্যাত বইয়ের একটি কপিও ছিল। পরবর্তী একটা সময়ে সেই পক্ষী বিশারদের স্ত্রীর কাছে এমনটাও বলেছিলেন যে এই এংলো ভাব আবেগ হীন কিন্তু পৌরষিক নামটি তার দরকার ছিল আর এরই ফলশ্রুতিতে উপন্যাসে জেমস বন্ড চরিত্রটির জন্ম দেন তিনি।] ১৯৬২ সালের নিউ ইয়োর্কার এ দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমটাও বলেছেন যে, "১৯৫৩ সালে যখন আমি প্রথম লেখাটি লেখি আমি চেয়েছিলাম বন্ড চরিত্রটি হবে অতি মাত্রায় ভাব আবেগ হীন, যার মধ্যে মজার কোন কিছুই থাকবে না। আমি তাকে একেবারেই কাঠ খোট্টা হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম যার ফলে যখন আমি গল্পের নায়কের নাম খুঁজছিলাম আমি ভেবেছি জেমস বন্ড নামটাই আমার শোনা সব থেকে রস কষ হীন নাম। "

যোগ সূত্র যুদ্ধের সময় জার্মান ইনিগমা মেশিনের সাথে সম্পর্কিত ছিল।[৮৯] অরিনেট এক্সপ্রেসের গুপ্তচরবৃত্তির গল্পটি ইউজিন কার্প এর একটি গল্প থেকে অনুপ্রানিত। তিনি মার্কিন নৌ বিভাগের সাথে জড়িত ছিলেন এবং বুদাপোস্টের দিকে নজরদারি রাখতেন। তিনিই অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস কে বুদাপোস্ট থেকে প্যারিসে নিয়ে আসেন ১৯৫০ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে। আর তার সাথে ছিল ইস্টার্ণ ব্লকে মার্কিন গোয়েন্দাগিরি ফাঁস করার মত মূল্যবান কিছু নথিপত্র। ইতিমধ্যে ট্রেনে থাকা সোভিয়েত ঘাতকরা কন্ডাক্টরকে নেশাগ্রস্থ করে এবং কার্পের মরদেহ সল্জবার্গের দক্ষিণে একটি রেলওয়ের সুড়ঙ্গ থেকে পাওয়া যায়।

হোয়াগি কারমাইকেল, যার ব্যক্তিত্বের মত করে বন্ড চরিত্রটি ফোটাতে চেয়েছিলেন ফ্লেমিং

ফ্লেমিং এর ব্যক্তি জীবনের পরিচিত নাম গুলোই বন্ডের গল্পে ব্যবহার করতেন। যেমন- স্কারামাঙ্গা, যে ছিল দ্যা ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন গান এর প্রধান খলনায়ক। সে ছিল ইটনে ফ্লেমিং এর সহপাঠি আর তার সাথে ফ্লেমিং এর বেশ কয়েকবার মারামারিও হয়েছিল।গোল্ডফিঙ্গার, নামটি নেয়া হয়েছে মার্কিন স্থপতিবিদ এরনো গোল্ডিঙ্গারের নামানুসারে। তার কাজ কর্ম ফ্লেমিং একদমই সহ্য করতে পারতেন না। মুনওয়াকারের খলনায়ক স্যার হুগো ড্র্যাক্স এর নামটি ফ্লেমিং এর পরিচিত এডমিরাল স্যার রেজিনাল্ড আয়লমার রানফুরলি প্লাঙ্কেট-আর্নলে-এরলে-ড্রাক্স এর নামানুসারে রাখা হয়। ড্রাক্সের সহকারী ক্রেবস হিটলারের শেষ চীফ অফ স্টাফের নামেই নাম; এবং ডায়মন্ডস আর ফর এভার-এর একজন সমকামী খলনায়ক, "বুপি" কিড, ফ্লেমিং এর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং তার স্ত্রীর এক আত্মীয়- আর্থার গোর, অ্যারানের ৮ম আর্ল, যে তার বন্ধুদের কাছে বুপি নামে পরিচিত ছিল।

ফ্লেমিং এর প্রথম নন ফিকশন প্রবন্ধ ডায়মন্ড স্মাগলার্স প্রকাশিত হয় ১৯৫৭ সালের দিকে আর এটিই তার বন্ড উপন্যাস ডায়ামন্ডস আর ফর এভার এর মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।] এর অনেকগুলোই ফ্লেমিং এর সাথে জন কোলার্ড এর সাক্ষাৎকার রূপে দ্যা সানডে টাইমস পত্রিকাতে উঠে এসেছে। তার আন্তর্জাতিক ডায়ামন্ড নিরাপত্তা সংস্থার একজন সদস্য হিসেবে আগে MI5 এর সাথে কজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। বইটি যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র দু দেশেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।


প্রথম পাঁচটি বই (ক্যাসিনো রয়্যাল, লিভ এন্ড লেট ডাই, মুনার্কার, ডায়ামন্ডস আর ফর এভার এবং ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ)- এর জন্য ফ্লেমিং ব্যাপক ভাবে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালের মার্চের দিকে এটি নেতিবাচক রুপ নিতে থাকে। বিশেষ করে যখন বার্নার্ড বার্গনজি টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি নামক একটি ম্যাগাজিনে ফ্লেমিং এর কাজ কে যৌন উষ্কানি মূলক বলে আক্রমণ করেন। সেই সাথে এটাও লিখেন যে "বই গুলোতে কোন নৈতিকতা নেই"। প্রবন্ধটিতে ফ্লেমিংকে জন বুকান এবং রেমন্ড চ্যান্ডালের সাথে নৈতিক এবং সাহিত্যিক দিক থেকে তুলনা করা হয়েছে।এর ঠিক এক মাস পরেই ডঃ নো প্রকাশিত হয় এবং ফ্লেমিং সমালোচকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। বেন ম্যাকিনটায়ারের ভাষায় "তারা এক প্রকারে ফ্লেমিংকে ঘিরে ধরেন।" সবচেয়ে তীব্র সমালোচনাটি এসেছে নিউ স্টেটম্যান ম্যাগাজিনের পল জনসনের কাছ থেকে। যিনি তার বই নিয়ে মন্তব্য করেন "যৌনতা, অহংকারী মনোভাব এবং মানসিক বিকার" এবং এটাও বলেন যে "নিঃসন্দেহে বই গুলো আমার পড়া সবথেকে নোংরা বই।" জনসন এটাও বলেছেন যে, "এক তৃতীয়ংশ পড়তেই বইটি হাত থেকে ছুঁড়ে ফেলার তীব্র ইচ্ছা দমন করতে হয়েছে আমাকে।"  তবে জনসন স্বীকার করেছিলেন যে বন্ডের বইগুলোতে "কিছু বিষয় ছিল যে গুলোর সামাজিক গুরুত্ব আছে"। কিন্তু ডঃ নো-এর বর্ণিত জিনিস গুলো যেমন অস্বাস্থ্যকরতা, সম্পূর্ণ ইংরেজি এবং স্কুল ছাত্রের বেদনাদায়কতা, যান্ত্রিকতা, দু মুখো যৌন আকাঙ্ক্ষা সবকিছু সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জনসের মতে ডঃ নো তে তিনি মঙ্গল জনক কিছু খুঁজে পাননি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ফ্লেমিং সাহেবের কোন সাহিত্যিক দক্ষতাই নেই, বইয়ের গঠনগত দিক খুব একটা সুবিন্যাস্ত ছিল না এবং ঘটনা গুলো হুট হাট ভাবেই কাহিনীতে ঢুকানো হয়েছে এবং সে গুলো খাপছাড়া ভাবেই উপেক্ষিত হয়েছে।


লিসেট এক প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছিলেন যে, বৈবাহিক সমস্যা এবং তার কাজ নিয়ে আক্রমনাত্মক মন্তব্যের পর ফ্লেমিং তার "ব্যক্তিগত এবং সৃজনশীল কাজ থেকে এক প্রকার দূরে সরে যান"।[৫] ডঃ নো প্রকাশিত হওয়ার আগে আগেই গোল্ড ফিঙ্গার লিখে ফেলেছিলেন। সমালোচনার পর পরই ফ্লেমিং ছোট গল্পের একটি সংকলণ ফর ইয়োর আইজ অনলি প্রকাশ করেন। যেটি কোন এক টিভি সিরিজের রুপরেখার আলোকে করা হলেও এটি ফলপ্রসূ হয়নি।[১০১] লিসেট এটাও উল্লেখ করেছিলেন যে ফ্লেমিং যখন টেলিভেশনের জন্য স্ক্রিপ্ট এবং ছোট গল্প লিখছিলেন তখন "ক্লান্তি এবং অবসাদ তার লেখার উপরে প্রভাব ফেলছিল"। আর এই খাপ ছাড়া ভাব বন্ডের গল্প গুলোতেও বেশ স্পষ্ট হয়।


১৯৬০

১৯৬০ সালের দিকে কুয়েত তেল সংস্থা ফ্লেমিংকে দেশটির তেল শিল্প নিয়ে একটি বই লেখার সুপারিশ করেন। ফ্লেমিং এর লেখা স্টেট অব এক্সসাইটমেন্টঃ ইম্প্রেশন অব কুয়েত এর পান্ডুলিপিটি কুয়েত সরকার অনুমোদন দেননি এবং এটা প্রাকশিতও হয়নি। ফ্লেমিং এর মতে, "তেল সংস্থাটি বইটির অনুমোদন দিয়েছিল তবে তারা এর একটি মুদ্রিত স্ক্রিপ্ট কুয়েত সরকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো কর্তব্য মনে করেছিল। সংশ্লিষ্ট শেখ রা কিছুটা অপ্রত্যাশিত হালকা মন্তব্য এবং সমালোচনা করেছিলেন যে দেশটির সাহসিক অতীতের কথা উল্লেখ করেছেন বইতে সে গুলো তারা সভ্যতার খাতিরে এবং এর মূল উৎস তারা ভুলে যেতে চান।

ফর ইয়োর আইজ অনলি এর সাথে সাথেথান্ডারবল নিয়ে ফ্লেমিং কিছুটা হতাশায় পড়ে যান কারণ এগুলোর উপন্যাস থেকে স্ক্রিপ্ট নিয়ে বাকিদের সাথে মত্রই কাজ শেষ করেছেন তিনি। এই কাজটি শুরু হয়েছিল ১৯৫৮ সালের দিকে যখন ফ্লেমিং এর বন্ধু ইভার ব্রাইস তাকে তরুণ লেখক সিনেমা পরিচালক কেভিন মেকক্লোরির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আর এই তিনজন মিলে ফ্লেমিং সহ ব্রাইস এর বন্ধু এরনেস্ট কুনিও মিলে আগে একটি স্ক্রিপ্টে কাজ করেছিলেন। অক্টোবরের দিকে মেক ক্লোরি অভিজ্ঞ চিত্রনাট্যকার জ্যাক হোয়াইটিংহামকে নব গঠিত দলটির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।এবং ১৯৫৯ সালের ডিসেম্বরের দিকে মেক ক্লোরি এবং হোয়াইটিংহাম ফ্লেমিং এর লেখা স্ক্রিপ্টটি পাঠিয়ে দেন। ম্যাকক্লোরির সাথে কাজ করার ব্যাপারে ফ্লেমিংয়ের অন্যরকম চিন্তা ভাবনা ছিল এবং ১৯৬০ এর জানুয়ারিতে এমসিএতে চিত্রনাট্য জমা দেওয়ার ব্যাপারে তার অভিপ্রায়টি ব্যাখ্যা করেন। তিনি এবং ব্রাইস সুপারিশ করেন ম্যাক ক্লোরি যাতে প্রযোজক হিসাবে কাজ করে। সেই সাথে তিনি মেক ক্লোরিকে এটাও বলেছেন যে এমসিএ যদি তার জড়িত থাকার কারণে সিনেমাটি প্রত্যাখ্যান করে তবে মেক ক্লোরির উচিত নিজেকে তাদের কাছে বিক্রি করে দেয়া, চুক্তি থেকে বেরিয়ে অথবা এর জন্য একটি মামলা করা।

novel, Fictional prose narrative of considerable length and some complexity that deals imaginatively with human experience through a connected sequence of events involving a group of persons in a specific setting. The genre encompasses a wide range of types and styles, including picaresque, epistolary, gothic, romantic, realist, and historical novels. Though forerunners of the novel appeared in a number of places, including Classical Rome and 11th-century Japan, the European novel is usually said to have begun with Miguel de Cervantes’s Don Quixote. The novel was established as a literary form in England in the 18th century through the work of Daniel Defoe, Samuel Richardson, and Henry Fielding. The typical elements of a conventional novel are plot, character, setting, narrative method and point of view, scope, and myth or symbolism. These elements have been subject to experimentation since the earliest appearance of the novel. Compare antinovel. See also novella; short story.

এবং সম্ভাব্য প্রকাশিত জেমস বন্ড উপন্যাস এবং ছোট গল্পের স্বত্বাধিকার বিক্রি করেছিল। সাল্টজম্যান আল্বার্ট আর. "কাবি" ব্রকোলির সাথে ইয়োন প্রোডাকশনস নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গ ঠন করেন। যার সাহায্যে তারা কঠোর অনুসন্ধান চালিয়ে শন কনারি কে নিয়োগ করেন ছয়টি ছবির জন্য। পরে অবশ্য চুক্তি পাল্টিয়ে পাঁচটিতে আনা হয় তবে ঠিক হয় যে শুরুটা হবে ডঃ নো (১৯৬২) দিয়ে।কনরির প্রদর্শন গুলো সাহিত্যেও বন্ড চরিত্রটির উপর প্রভাব ফেলে। ডঃ নো প্রকাশিত হওয়ার পর প্রথম বই ইউ অনলি লিভ টোয়াইস - ফ্লেমিং বন্ড চরিত্রটিতে কিছুট হাস্যরস বোধ যোগ করেন যেতি এর আগের গল্প গুলোতে ছিল না।

ঝামেলায় ফেলে দেওয়ার জন্য। আমি জানিনা ইদানীং এত জানজটের মধ্যেও তোমরা কীভাবে এত দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছ।" ফ্লেমিংকে সুইন্ডনের নিকটে সেভেনহ্যাম্পটনের গির্জার সামনে কবর দেওয়া হয়েছিল।তার উইলকৃত সম্পত্তির পরিমান ছিল প্রায় ৩,০২,১৪৭ পাউন্ড (২০১৯ সালের বর্তমান হিসাব মতে প্রায় ৬০,১্‌২৩৯ পাউন্ড। 


ফ্লেমিং এর শেষ দুটি বই দ্যা ম্যান উইথ গোল্ডেন গান এবং অক্টোপুশি এবং দ্যা লিভিং ডে লাইটস তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়।দ্যা ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন গান প্রকাশিত হয় ফ্লেমিং এর মৃত্যুর প্রায় ৮ মাস পর এবং এর পুরোটা ফ্লেমিং নিজে সম্পাদনা করে যেতে পারেননি। এ কারণেই প্রকাশনা সংস্থা জনাথন কেপ বইটিকে খুব একটা বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি। তবে প্রকাশকরা এর পাণ্ডুলিপি কিংসলে এমিস এর কাছে পাঠান যাতে করে অবসরে তিনি এটি পড়ে দিতে পারেন। তবে তার পরামর্শ অনুযায়ী এটি সংশোধিত হয়নি।ফেল্মিং এর আত্মজীবনী লেখক হেনরি চ্যান্ডলার খেয়াল করে দেখলেন যে উপন্যাসটি খুব একটা ভাল ভাবে সমাদৃত হচ্ছে না বরং দুঃখজনক ভাবে সমালোচিত হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে তিনি চিহ্নিত করেন যে বইটি অর্ধ সমাপ্তিত আর সেই সাথে এর উপরে ফ্লেমিং এর নাম ছিল না। অবশেষে বন্ড সিরিজের শেষ বই দুটি ছোট গল্প অক্টোপুশি এবং দ্যা লিভিং ডে লাইটস নিয়ে ১৯৬৬ সালের জুনের ২৩ তারিখ ব্রিটেনে প্রকাশিত হয়।


১৯৭৫ সালের অক্টোবরে ফ্লেমিং এর ছেলে ক্যাসপার ২৩ বছর বয়সে অতি মাত্রায় ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যা করে। তাকেও তার বাবার পাশের কবরে সমাদিত করা হয়। ফ্লেমিং এর বিধবা স্ত্রী ১৯৮১ সালে মৃত্যু বরণ করে এবং তাকেও তার স্বামী এবং ছেলের পাশে সমাদিত করা হয়।‌

প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পর থেকেই ফ্লেমিং ছিলেন অতি মাত্রায় ধূমপায়ী এবং মদ্যপানে আসক্ত। আর এর ফলে হৃদ রোগেও ভুগছিলেন তিনি। ] ১৯৬১ সালের দিকে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদ রোগে আক্রান্ত হন এবং সেরে উঠার চেষ্টাও করেন।১৯৬৪ সালের ১১ আগস্ট, ক্যান্টারব্যারি হোটেলে থাকাকালীন রয়্যাল এস টি জর্জেস গলফ ক্লাবে দুপুরের খাবার খেতে যান এবং বন্ধুদের সাথে রুমে ফিরে আসার পর পরই তার মৃত্যু হয়। সে দিনটি তার জন্য অশুভই ছিল। কারণ খাবারের পর পরই খুব দ্রত সেদিন তার আরেকটি হার্ট এটাক হয়। অবশেষে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালের ১২ আগস্ট ভোরের দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সে দিনটিতেই ছিল তার ছেলে ক্যাসপারের ১২ তম জন্মদিন। ] মৃত্যুর আগে শেষ কথা গুলো রেকর্ড করা ছিল সে গুলো ছিল এমবুলেন্স ড্রাইভারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার।  তিনি বলছিলেন, "আমি দুঃখিত তোমাদের কে ঝামেলায় ফেলে দেওয়ার জন্য। আমি জানিনা ইদানীং এত জানজটের মধ্যেও তোমরা কীভাবে এত দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছ।"




#############£££#############










No comments: