Sunday, 30 June 2024

আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রকাব্যপাঠ দিবস বা আন্তর্জাতিক কাব্যপাঠ দিবস।পশ্চিমদেশে তথা বিশ্বে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক প্রতিষ্ঠার - ভারতবর্ষীয় কবির গৌরব ও খ্যাতির দীর্ঘ ইতিহাসের সূচনা দিবস। Dt - ৩০.০৬.২০২৪.রবিবার। Vol - 924. The blogger post in literary e magazine




আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রকাব্যপাঠ দিবস বা আন্তর্জাতিক কাব্যপাঠ দিবস।

পশ্চিমদেশে তথা বিশ্বে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক প্রতিষ্ঠার - ভারতবর্ষীয় কবির গৌরব ও খ্যাতির দীর্ঘ ইতিহাসের সূচনা দিবস।




১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ৩০শে জুন প্রখ্যাত ইংরেজি শিল্পী উইলিয়াম রদেনস্টাইনের হামস্টেড হিথের বাড়িতে এজরা পাউন্ড, মে সিনক্লেয়ার, আর্নস্ট রিজ, এলিস মেনেল, ইভলিন আন্ডারহিল, অ্যান্ড্রুজ় সহ বিশিষ্ট বিদ্বজনের সামনে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথকৃত গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের কয়েকটি পড়েছিলেন আইরিশ কবি ইয়েট্স।রবীন্দ্রনাথও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সেদিনের এই ঘটনাটা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইংল্যান্ডের বিদ্বসমাজে রবীন্দ্রনাথের প্রথম আত্মপ্রকাশ। তারপর ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর, ইংরেজি গীতাঞ্জলির – Gitanjali, (Song Offerings) – সীমিত সংস্করণ প্রকাশ করে লন্ডনের ইন্ডিয়া সোসাইটি। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা মার্চ, ম্যাকমিলান প্রকাশ করে ইংরেজি গীতাঞ্জলির সুলভ সংস্করণ। ৩০ শে জুন, ১৯১২ থেকে ১৩ ই নভেম্বর, ১৯১৩ এই সতেরো মাসের কম সময়ে বাংলার অপরিচিত বাঙালি কবি জয় করলেন পৃথিবীর সর্ব্বোচ্চ পুরস্কার। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য স্থায়ীভাবে সম্মানের আসন লাভ করল। নোবেল প্রাপ্তির সে বার্তা শান্তিনিকেতনে এসেছিল ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই নভেম্বর কবির জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় মারফত।



১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি কলকাতার 'টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট', তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির বন শহরের 'টেগোর ইনস্টিটিউট', কোরিয়ার 'টেগোর সোসাইটি অব কোরিয়া' এবং লন্ডনের 'দ্য টেগোরিয়ান্স'-এর পরিচালকগণ যথাক্রমে সোমেন্দ্রনাথ বসু, তৃণা পুরোহিত রায়, কিম ইয়াং সিক এবং তপন বসু, নিজের নিজের মুখপত্রে একযোগে আইরিশ কবি ইয়েট্স কর্তৃক রবীন্দ্রকবিতা পাঠের এই স্মরণীয় দিনটিকে সামনে রেখে আবেদন করেন, যেন প্রতি বছর ৩০ জুন আন্তর্জাতিকস্তরে রবীন্দ্রকাব্যপাঠ দিবস পালন করা হয়। কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট বহু বছর ধরে ৩০ শে জুন দিনটিকে "আন্তর্জাতিক রবীন্দ্রকাব্যপাঠ দিবস" হিসাবে পালন করে আসছে। পরবর্তীতে যখন কোন কোন রবীন্দ্র গবেষকের মতে তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি ঘটে, তখন স্থির হয় যে, ২৮ জুন থেকে ১২ জুলাই, এই পক্ষকালের মধ্যে যে কোনও একটি দিন আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র কাব্যপাঠ দিবস হিসেবে পালন করা হবে এবং অনেক রবীন্দ্রপিপাসুরা করে থাকেন।


তবে সংশ্লিষ্ট রবীন্দ্র গবেষণা কেন্দ্র সমূহের আবেদনে মান্যতা দিয়ে ৩০ শে জুন তারিখে প্রতি বছর রবীন্দ্রকাব্য পাঠের আয়োজন হয়ে থাকে।


১৯১২ সালের মার্চ মাসে রবীন্দ্রনাথ তৃতীয়বার বিলাত যাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। যাত্রার ঠিক পূর্বরাত্রে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিদেশযাত্রা স্থগিত রেখে কবি বিশ্রাম নিতে চলে গেলেন শিলাইদহে। এই সময়ে তিনি তাঁর গীতাঞ্জলি ও অন্যান্য কাব্যের ইংরেজি অনুবাদে হাত দিয়েছিলেন।অবশেষে সুস্থ হয়ে যখন তিনি মে মাসে জাহাজে করে রওনা হলেন, তখন অনুবাদের খাতাটি ছিল তাঁর পকেটে। জাহাজে যেতে যেতে খাতাটি ভরে যাওয়ায় দ্বিতীয় খাতা শুরু হলো। ১৬ জুন, ১৯১২ যখন তিনি ইংলন্ডে পৌঁছলেন তখন তিনি প্রথম খাতাটি উইলিয়াম রোটেনস্টাইনের হাতে তুলে দিলেন।রোটেনস্টাইন এই খাতার তিনটি টাইপ কপি তৎকালীন তিন বিখ্যাত মনীষী ডব্লিউ বি ইয়েটস, স্টপফোর্ড ব্রুক ও এন্ডরু ব্র্যাডলিকে পাঠালেন। তিনজনেই রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলি পড়ে তাঁদের উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেন। ব্র্যাডলি রোটেনস্টাইনকে পত্রযোগে জানান “It looks as though we have at last a great poet among us again”. ব্রুক লেখেন “I wish I were worthy of them”. ইয়েটস, ১০ জুলাইয়ের এক প্রশস্তি ভাষণে বলেন “I know of no man in my time who has done anything in the English language to equal these lyrics.”৩০শে জুন, রোটেনস্টাইনের গৃহে, এক বিশিষ্ট শ্রোতৃমন্ডলীর সামনে ইয়েটস এই কবিতাগুলির কয়েকটি পাঠ করে শোনান। 




{=================================}











No comments: