Friday, 23 October 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
                       ছড়া সংখ্যা
                    ( পুজো সংখ্যা)


মহাসপ্তমীর প্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

=================================
          Doinik sabder methopath
          Vol - 168. Dt - 23.10.20
           ৬ কার্তিক, ১৪২৭. শুক্রবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

আমার উমা

জয়দেব মাইতি 

আকাশ বাতাস শরৎ সাজে
মা যে এল দোরে 
তোরা সব উলু দে
মা কে তুলি ঘরে। 

জগৎজননী মা যে আমার 
মুখ টি ভীষণ ভার
বাবা' একা মা'র সাথে 
কেউ আসে নি আর।

পূজা আমার চাইনা এবার 
মা বলেন হেসে 
সুস্থ থাকিস তোরা সব
 আমায় ভালোবেসে। 

আনন্দ উচ্ছাস হবে পরে 
থাকিস সবাই ভালো 
সামনে বছর হবে আবার  
জ্বলবে রঙিন আলো।

++++++++++++++++

শরৎ মানে
                        গোবিন্দ মোদক 

শরৎ মানে বর্ষা শেষে জলদ মেঘের ছুটি, 
শরৎ মানে কাশের বনে হাওয়ার লুটোপুটি !
শরৎ মানে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, 
শরৎ মানে ধানের ক্ষেতে ছায়া-রোদ্দুর খেলা !
শরৎ মানে ঘাসে ঘাসে শিশির পড়ে ঝরে,
শরৎ মানে শিউলি ঝরে শিউলিতলায় ভোরে ! 
শরৎ মানে খালে-বিলে শাপলা-শালুক ফোটা, 
শরৎ মানে দীঘির জলে পদ্ম ফুটে ওঠা !
শরৎ মানে জবা-টগর ফুটলো রাশি রাশি, 
শরৎ মানে ছেলে-বুড়ো সবার মুখে হাসি !
শরৎ মানে রঙ-তুলিতে ব্যস্ত কুমোর পাড়া, 
শরৎ মানে সবার মনে জাগছে শারদ সাড়া ! 
শরৎ মানে পুজো-প্যান্ডেল, ঠাকুর দেখতে যাওয়া, 
শরৎ মানে আলো-রোশনাই, দেদার খাওয়া-দাওয়া !
শরৎ মানে পূজা-অর্চনা, ধূপ আর ধুনোর গন্ধ, 
শরৎ মানে ধনী-গরীব সবার মনেই ছন্দ !
শরৎ মানে নতুন পোশাক, মনে সুখের বীণ, 
শরৎ মানে ধুনুচি নাচেই কাটে চারটি দিন ! 
শরৎ মানে পুজোর বাদ্যি ঢ্যাম্ কুড়া কুড় কুড়, 
শরৎ মানে বছর বাদে জীবন সুমধুর !
শরৎ মানে ঢাক আর কাঁসি, তাকুড় নাকুড় তাক্, 
শরৎ মানে দেবীর কৃপায় সবাই ভালো থাক্ !!

++++++-++++++++++
পুজোর বাদ্যি
নন্দিনী সরকার।

ঢ্যাং কুড়াকুড় ঢ্যাং কুড়াকুড় বাদ্যি বাজে টেপে, 
ঢাকিরা সব কোথায় গেলো এই কোভীডের কোপে?
ভীড়ে এবার নাই বা গেলে, ঠাকুর দেখো নেটে -
অন্তর্জাল লুকিয়ে আছে মোবাইলের সেটে।
কুমোর টুলি, আলোর বাহার , প্যাণ্ডেলের সজ্জা
সবার এখন অর্থ চিন্তা কেমনে ঢাকে লজ্জা,
মনের লড়াই, দেহের কষ্ট সব কিছু মা দেখে
ত্রিশূল তোমার দাওনা ফুঁড়ে করোনাসুরের পেটে।
ফুচকা ওলা, বেলুন ওলা, ঘুগনি আলুর দম
দোকান গুলোর কী যে হবে কেনাকাটাও কম।


করোণা কোপে অর্থনীতি করছে রে নড়বড়,
গরীব হচ্ছে আরো গরীব এটাই যে গড়বড় ।
ধনীর দুলাল টাকা ওড়ায় গুগুল পে টি এমে,
ভার্চুয়ালি জামা কাপড় কেনার মজায় নেমে।
পুজোর ঘন্টা বাজলে জানি শরৎ কন্যা খুশি ,
কাশ ফুলের ঐ গুচ্ছ বাঁধা শিউলি ঝরা হাসি,
মাগো সপ্তমীতে পুজোর ক্ষনে একটা আশীষ চাই--
দারিদ্রতা, বেকারত্ব পায় না যেন ঠাঁই,
তবেই মাগো পুজোর আসর জমবে কোভিড ক্ষণেও, 
ধনী গরীব সবার মা তুই নেবে তোকে চিনেও।।।।।

++++++++++++++++++++


ছড়িয়ে দিচ্ছি
গৌতম হাজরা

ছড়িয়ে দিচ্ছি সবুজ পাতা
হলুদ রঙের আলো, 
শিউলি ফোটা বাগানখানা
সত্যি লাগছে ভালো। 

ছড়িয়ে দিচ্ছি নীল আকাশে
সাদা মেঘের ভেলা, 
পদ্ম শালুক দুলছে দোদুল
প্রজাপতির খেলা। 

ছড়িয়ে দিচ্ছি লাটাই ঘুড়ি
রঙিন কাগজ আঠা, 
পুজো পুজো প্যানডেলেতে
মন দিয়েছে হাঁটা। 

ছড়িয়ে দিচ্ছি হাসিখুশির
কাশফুল আর ঘাসে, 
খুশীর বাতাস বইছে দেখি
এই আশ্বিন মাসে। 

ছড়িয়ে দিচ্ছি পুজোর ছুটি
ম্যাচ কুড় কুড় ধিন, 
দিচ্ছি হাঁটা লাগেজ কাঁধে
দেখতে সাইট সিন। 

+++++++++++++++++++

মা দুর্গা 
   পার্থ সারথি চক্রবর্তী 

এক বছরের অপেক্ষার হলো অবসান 
মর্ত্যে এলেন মা দুর্গা, মনে নতুন গান ।
এবার মা, তোমায় আমরা সহজে ছাড়ব না 
দেখাও তুমি পথ, কিভাবে কাটবে সব যন্ত্রণা!
আশ্বিনেতে হাওয়ার দোলায় কাশফুল তো ফোঁটে 
কিন্তু মা, বলো না, এত দুর্ভোগ কেন জোটে!
শিউলি সকাল আজো দেখি একই রকম রঙীন
তোমার ছোঁয়ায় কাটুক সব বিপদ,আসুক সুদিন।
এমন দিনে আসুক মা, সবার মুখে হাসি 
সবাই যেন, দুর্গাপূজার আনন্দেতে একসাথে ভাসি।
সবাই মিলে করব মোরা করোনাসুরকে বধ,
আসুক সকাল, কাটুক আঁধার, মানুষে মানুষে প্রভেদ

++++++++++++++++
এবার পুজো
            সত‍্যব্রত মিশ্র

পড়ল কাঠি ঢাকে এবার
পদ্ম,শালুকের কী যে বাহার।
শিউলি গন্ধে উঠোন মাতাল
নতুন জামায় শিশু কামাল।
এবার পুজো অন‍্য রকম 
শূন‍্য প‍্যান্ডেল, লোকজন কম।
কেন যে ভাই এমন হল 
করোনার ধামাল যে যাই বলো ।
সবাই কাবু করোনা জ্বরে
প্রাণ গেল অনেকের বেঘোরে।
এমন ধারা যদি চলতে থাকে
মা ,তুই তবে দেখিস সবাইকে।
সবাই যদি হয় গো সচেতন
করোনাকে জয় আর কতক্ষণ ?
বিষের বিষে এবার পুজো
বিষ ভুলে সব পথটা খোঁজ।
বিভেদ ভুলে এসো সবাই
মুখে কিন্তু মাস্ক থাকা চাই।
দূরত্ব মেনে চলো যদি ভাই
করোনা বলবে পালাই পালাই ।

++++++++++++++

শারদখুশি
সুবীর ঘোষ

আকাশের নীলে ঐ সাদা মেঘ উড়ে যায়,
সোনাঝরা রোদ্দুরে চারদিক ভরে যায় ।
বলাকারা উড়ে যায়,
যেতে যেতে ঘুরে যায় ,
মালা হয়ে সুদূরেতে যায় হারিয়ে ।

সবুজের ছোঁয়া লাগে ধানক্ষেতে চারাতে,
কাশবন ভরে গেছে ভ্রমরের সাড়াতে ।
খেয়া বেয়ে মাঝিভাই
ভাটিয়ালি গান গায়,
জলে ভরা নদীখানি আছে দাঁড়িয়ে ।

অথৈ জলেতে হাঁস মাঝে মাঝে দেয় ডুব,
দস্যি ছেলেদের সাঁতারের ধুম খুব ।
রাত্রে শিশির ঝরে
 ঘাসের গালিচা ভরে,
শিউলির গন্ধে চারিদিক ছেয়েছে ।

প্রবাসীরা বাড়ি ফেরে হল্লায় হাসিতে
আগমনী সুর তোলে রাখালিয়া বাঁশিতে ।
মহাপূজা আয়োজন--
তাই এত আলোড়ন,
খুশির খবর আজ সকলেই পেয়েছে ।

++++++++++++++++

সবার ভালো হোক
ফটিক চৌধুরী

শিশির ভেজা সকাল দেখ
আকাশ দেখ নীল
শরৎ এলেই ভুবনজোড়া
করে ওঠে ঝিলমিল।

চারদিকেতে সাজো সাজো রব
আসে পুজোর গন্ধ
রোদটা যেন চাঁপা ফুলের
লাগে না তো মন্দ।

সকাল হলে যাই ছুটে ঐ
শিউলি গাছের তলায়
আনন্দ শুধু ঝরে পড়ে
সবার কথা বলায়।

নানা রকম ঠাকুর দেখে
জুড়িয়ে যায় চোখ
মা দুগ্গা এবার বলো :
'সবার ভালো হোক'।

++++++++++++++++++++++++++++++++


No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...