∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆ জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
সুকুমার রায়
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
অরুণ কুমার সরকার
এজরা পাউন্ড
==========®®®®®®===============
Doinik Sabder Methopath
Vol -176.Dt - 30.10.2020
১৩ কার্তিক,১৪২৭. শুক্রবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷©©©©©©÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
বাংলা সাহিত্যে সুকুমার রায় হলেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব, যার লেখা অসাধারণ কিছু সাহিত্যকর্ম আজও প্রত্যেক বাঙালীর মনে অমর হয়ে আছে | বিংশ শতাব্দীর ভারত তথা বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি হয়ে ওঠেন এক নবদিগন্তের পথিক | কবি, গল্পকার ও সাহিত্যিক সুকুমার রায় ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বপ্রথম সার্থকভাবে; অদ্ভুত এক সাহিত্য রীতির প্রবর্তন করেন যা প্রত্যেক বয়সের পাঠকদের মন কাড়তে সমানভাবে সক্ষম হয় |
সুকুমার রায়ের জন্ম হয় ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর, কোলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে | তাঁর বাবার নাম ছিলো উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, যিনি কিনা বাংলার একজন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যক ছিলেন আর মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রধান সংস্কারক দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে |
তাঁর আদি বাড়ি ছিলো বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মসূয়া গ্রামে | তাঁর মোট ২জন ভাই ও ৩জন বোন ছিলো, যাদের নাম যথাক্রমে- সুবিনয়, সুবিমল, সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা ছিলো |
সুকুমার রায়ের, মহান সাহিত্যিক হয়ে ওঠার পিছনে তাঁর পরিবারের কিন্তু অবদান ছিলো প্রচুর | কারণ তাঁর পারিবারিক পরিবেশ ছিলো একদম সাহিত্য অনুরাগী, যার সুবাদে তাঁর মধ্যকার সাহিত্যিক প্রতিভার বিকাশ ঘটে |
সুকুমার রায়ের জীবনী
তিনি ছোটবেলা থেকেই মুখে মুখে নানা ধরণের ছড়া তৈরি করে ফেলতেন অনায়াসেই | এমনকি গান গাইতেন, নাটক করতেন আর কবিতাও লিখতেন | এক কথায় যদি বলতে হয় তাহলে সেইসময় থেকেই তিনি একধরনের মজাদার গোছের মানুষ ছিলেন এবং সবাইকে নেতৃত্ব দিতে খুব ভালোবাসতেন |
তাঁর বোন পুণ্যলতা তাঁর সম্পর্কে একসময় বলেছিলেন- “দাদা যেমন আমাদের খেলাধুলা ও সব কিছুরই পাণ্ডা ছিলো, তেমনি বন্ধুবান্ধব ও সহপাঠীদের মধ্যেও সে সর্দার ছিলো । তার মধ্যে এমন কিছু বিশেষত্ব ছিল যারজন্য সবাই তাকে বেশ মানতো । এমনকি বড়রাও তার কথার বেশ মূল্য দিত ".
সাহিত্যিক সুকুমার রায়, কলকাতার সিটি স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাশ করেন এবং তারপর কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় অনার্স লাভের পর, তিনি মুদ্রণবিদ্যা সম্পর্কে উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য ১৯১১ সালে বিদেশে যান |
সেখানে যাওয়ার পর তিনি ফটোগ্রাফি এবং মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন |
সুকুমার যখন ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছিলেন, সেইসময় অন্যদিকে তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী জমি কিনে একটা উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি করেন এবং সেইসাথে নিজস্ব ছাপাখানাও স্থাপন করেন |
এইসবই তিনি তৈরী করেছিলেন ছোটদের জন্য একটা মাসিক পত্রিকা “সন্দেশের”, প্রকাশনার উদ্দেশ্যেই | কিন্তু ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ড থেকে পড়াশোনা শেষ করে সুকুমার রায় যখন কোলকাতায় ফিরে আসেন, তার ঠিক অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর বাবা উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয় |
বাবার মৃত্যুর পর একজন দায়িত্ববান ছেলে হিসাবে এরপর তিনিই সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এবং সেই পত্রিকাতেই নিজের অভূতপূর্ব সাহিত্যকর্ম গুলো একে একে প্রকাশ করতে থাকেন |
দেখতে দেখতে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সুকুমার রায়, অল্পবয়সী পাঠকদের মাঝে এক প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন এবং সেইসাথে প্রচুর মধ্যবয়সী পাঠকদের কাছেও সমান জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম হন|
বাবার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি এই সন্দেশ পত্রিকার ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন | তারপর সেইসবের দায়িত্ব তিনি আসতে আসতে তাঁর ছোটভাইকেই সম্পূর্ণরূপে দিয়ে দেন |
সুকুমার রায়ের কর্মজীবন সম্পর্কে বলার আগে এই তথ্য সম্পর্কে তোমার অবশ্যই জেনে রাখা দরকার | প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময়ই তিনি কিন্তু গড়ে তুলেছিলেন, “ননসেন্স ক্লাব” | এই ক্লাবের মুখপত্র ছিল হাতে লেখা কাগজ-“সাড়ে বত্রিশ ভাজা” |
সাড়ে বত্রিশ ভাজার পাতাতেই নাকি সুকুমার রায় জীবনের সর্বপ্রথম নিজের রচিত হাস্যরসযুক্ত কিছু লেখা প্রকাশ করেন | আর এই ক্লাবের জন্য তিনি দুটো নাটকও রচনা করেছিলেন, যেগুলোর নাম যথাক্রমে ছিলো- “ঝালাপালা” ও “লক্ষণের শক্তিশেল” |
ক্লাবের সদ্যসের নিয়েই তিনি, এই দুটো নাটককে সবার মাঝে পরিবেশন করেন | আর তুমি হয়তো বললে এটা বিশ্বাস করবেনা, ননসেন্স ক্লাবের প্রতিটা নাটক দেখার জন্য, সেইসময়কার প্রচুর ছেলে ও বুড়োরা ভীষন ভিড় জমাতো এবং তাদের সবারই পছন্দের নাট্যকার ছিলেন সুকুমার রায় |
তাঁর বোন পুণ্যলতা এই নাটক সম্পর্কে একদা লিখেছিলেন –
“বাঁধা স্টেজ নেই, সীন নেই, সাজসজ্জা ও মেকআপ বিশেষ কিছুই নেই, শুধু কথা,সুরে,ভাবে, ভঙ্গিতেই তাদের অভিনয়ের বাহাদুরি ফুটে উঠতো, দাদা নাটক লিখতো, অভিনয় শেখাতো । হাঁদারামের অভিনয় করতে দাদার জুড়ি কেউ ছিল না । অভিনয় করতে ওরা নিজেরা যেমন আনন্দ পেতো, তেমনি সবাইকে আমোদে মাতিয়ে তুলতো । চারিদিকে উচ্ছ্বসিত হাসির স্রোত বইয়ে দিতো । ননসেন্স ক্লাবের অভিনয় দেখার জন্য সবাই উৎসুকও হয়ে থাকতোও”
এইসব নাটক করা ছাড়াও, সন্দেশের সম্পাদক থাকাকালীন তাঁর লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ সবারই ভীষন পছন্দের ছিলো, যা আমি আগেই তোমাকে বলেছি | আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে তাঁর রচিত সব সাহিত্যকর্মই মাইলফলক হয়ে আছে আর ভবিষ্যতেও একই থাকবে |প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অনার্স করার পর ইংল্যান্ডে পড়তে যান |
এরপর সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি আবারও “মনডে ক্লাব” নামে ননসেন্স ক্লাবেরই মতো একই ধরণের আরেকটা ক্লাব খুলেছিলেন | এই ক্লাবের সাপ্তাহিক সমাবেশে, সদস্যরা সব বিষয় সম্পর্কেই আলোচনা করতেন ।
সুকুমার রায় এই সাপ্তাহিক সভার কয়েকটি আমন্ত্রণপত্র মজার ছড়ার আকারে তৈরীও করেছিলেন | সেগুলোর বিষয়বস্তু ছিল মূলত উপস্থিতির অনুরোধ এবং বিশেষ সভার ঘোষণা ইত্যাদি .
সাংস্কৃতিক কাজকর্ম ছাড়াও সুকুমার কিন্তু ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারপন্থী গোষ্ঠীর এক তরুণ নেতা | এই ব্রাহ্মসমাজ সম্পর্কে তৎকালীন সময়ে সবাই বলতো যে, এই সংগঠনের সদস্যরা মূলত একেশ্বরবাদী ও অদ্বৈতবাদী হিন্দু পুরান ও উপনিষদের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন |
সুকুমার রায়, ব্রাহ্ম সমাজের ইতিহাসকে সরল ভাষায় প্রত্যেকের মাঝে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে “অতীতের কথা” নামক একটা কাব্য রচনা করেন | এছাড়াও তিনি ছোটদের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের মতাদর্শের উপস্থপনা করার লক্ষে সেই কাব্যকে বইয়ের আকারে প্রকাশও করেছিলেন |
ইংল্যান্ডে থেকে নিজের পড়াশোনা শেষ করার পর, দুই মাসের মধ্যেই সুকুমারের বিয়ে হয় জগৎচন্দ্র দাশের মেজ মেয়ে সুপ্রভা দেবীর সঙ্গে | তাঁর ডাক নাম ছিল টুলু | সুকুমার রায়ের বাবা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বিয়েতে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তাঁকে চিঠি দিয়ে জানান, শিলাইদহে জমিদারীর কাজে ব্যস্ত থাকার দরুন তিনি হয়তো তাঁর ছেলের বিয়েতে উপস্থিত থাকতে পারবেন না । কিন্তু অবশেষে শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ, সুকুমার রায়ের বিয়েতে এসেছিলেন ।
এরপর বিয়ের ঠিক ৮ বছর পর অর্থ্যাৎ ১৯২১ সালের ২রা মে তারিখে সুপ্রভা দেবী তাঁর একমাত্র পুত্রসন্তানের জন্ম দেন | যার নাম দেওয়া হয়েছিলো সত্যজিৎ | যিনি পরবর্তীকালে বাংলা তথা ভারতীয় সিনেমা জগতের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হয়ে ওঠেন।
রচনাবলী :
আবোল তাবোল (১৯২৩)
পাগলা দাশু (১৯৪০)
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
খাই-খাই (১৯৫০)
হ য ব র ল (১৯২৮)
শব্দ কল্প দ্রুম
চলচ্চিত্রচঞ্চরী
অবাক জলপান
লক্ষণের শক্তিশেল
ঝালাপালা
বহুরুপী (১৯৪৪)
ভাষার অত্যাচার
সত্যজিৎ রায় জন্মগ্রহণ করার কিছু মাস পর থেকেই সুকুমার রায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়া শুরু হয় | পরে চিকিৎসা শুরু করার পর জানা যায়, তিনি কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেটাকে ঠিক করা একদম অসম্ভব | কারণ তখন সেইযুগে কালাজ্বরের উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধের আবিষ্কার হয়ে ওঠেনি |
কিন্তু মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত জেনেও তিনি শেষসময়ে অসাধারণ মানসিক স্থৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন | কারণ এত বড় একটা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি নিজের কাজকে একটা দিনের জন্যও বন্ধ করেননি বরং আরো উদ্যমের সাথে সেটাকে করে গেছিলেন |
এই সম্পর্কে অবশ্য জানা যায়, সত্যজিৎ রায়ের একটা লেখায় | যেখানে তিনি তাঁর বাবার শেষের দিনগুলো সম্পর্কে লিখেছিলেন এই কথাগুলো:
“রুগ্ন অবস্থাতেও বাবার কাজের পরিমাণ ও উৎকর্ষ দেখলে অবাক হতাম । শুধু লেখা বা আঁকার কাজেই নয়, ছাপার কাজেও যে তিনি অসুখের মধ্যে অনেক চিন্তা ব্যয় করেছেন তারও প্রমাণ রয়েছে। একটি নোটবুকে তাঁর আবিষ্কৃত কয়েকটা মুদ্রণ পদ্ধতির তালিকা রয়েছে । এইগুলো পেটেন্ট নেবার পরিকল্পনা তাঁর মনে ছিলো, কিন্তু কাজে হয়ে ওঠেনি”
অবশেষে ১৯২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর, সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ১০০নং গড়পার রোডের বাড়িতে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে সাহিত্যিক সুকুমার রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন | তিনি যদিও মাত্র অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি আজও তাঁর মহান সব সাহিত্যকর্ম গুলোর মধ্য দিয়ে প্রত্যেক বাঙালীর মনে অমর হয়ে আছেন সমানভাবে | সাহিত্য শিল্পে তাঁর অবদানকে সত্যিই কেউ কোনোদিনই ভুলতে পারবেনা | তিনি সর্বদা আমাদের মতো প্রত্যেক বাঙালী পাঠকদের কাছে চিরদিনই আদর্শ হয়েই থাকবেন |
==================================
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
৩০ অক্টোবর ১৯০১ বাংলা ভাষার একজন প্রধান আধুনিক কবি। বিংশ শতকের ত্রিশ দশকের যে পাঁচ জন কবি বাংলা কবিতায়
রবীন্দ্র প্রভাব কাটিয়ে আধুনিকতার সূচনা ঘটান তাদের মধ্যে সুধীন্দ্রনাথ অন্যতম। তাকে বাংলা কবিতায় “ধ্রুপদী রীতির প্রবর্তক” বলা হয়।
|
| |
---|
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত ১৯০১ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতা শহরের হাতিবাগানে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হীরেন্দ্রনাথ দত্ত, মায়ের নাম ইন্দুমতি বসুমল্লিক। সুধীন দত্তের বাল্যকাল কেটেছে কাশীতে। ১৯১৪ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত কাশীর থিয়সফিক্যাল হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। পরে কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে ১৯২২ সালে স্নাতক হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য ও আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত যথারীতি পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও কোনো বিষয়েই পরীক্ষা দেন নি।
| |
---|
১৯২৪ সালে ছবি বসুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, কিন্তু এক বছরের ভিতরেই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ১৯৪৩ সালের ২৯ মে প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রাজেশ্বরী বসুর সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৬০ সালের ২৫ জুন কবি নিঃসন্তান অবস্থায় পরলোকগমন করেন।কর্মজীবন
পিতার আইন ফার্মে কিছুদিন শিক্ষানবিস হিসেবে থাকার পর সুধীন্দ্রনাথ দত্ত চাকরিজীবন শুরু করেন লাইট অব এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে। ১৯২৯ সালের ফেব্রুয়ারি-ডিসেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথের এবং সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন। ১৯৩১ সালে পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১২ বছর ধরে সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। স্টেটসম্যান ও শরৎ বসুর লিটারারি কাগজে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫৯ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।[২] শিল্পকলাবিৎ শাহেদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন তার বন্ধু।
সাহিত্যিক জীবন
জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত আধুনিক বাংলা কাব্যের সবচেয়ে বেশি নিরাশাকরোজ্জ্বল চেতনা। সর্বব্যাপী নাস্তিকতা, দার্শনিক চিন্তা, সামাজিক হতাশা এবং তীক্ষ্ণ বুদ্ধিবাদ তার কবিতার ভিত্তিভূমি। ত্রিশের অনান্য কবিরা অবিশ্বাসী হলেও সুধীন্দ্রনাথ দত্তই ঈশ্বরকে সরাসরি প্রত্যাখান করেছেন বলে হুমায়ুন আজাদ মনে করেন।[৩] আবদুল মান্নান সৈয়দ সুধীন্দ্রনাথের কবিতা সম্পর্কে বলেছেন,
প্রসঙ্গ, প্রকরণ ও বিন্যাস-যার কথাই ভাবি না কেন, নব নব গন্তব্যে পৌঁছুনোর উচ্চাশা কবির নেই। নেই রাবীন্দ্রিক শতবিচিত্রতা, একই কথা প্রায় একই ভঙ্গিতে তিনি বিভিন্ন কাব্যকোরাসে বলেছেন। একই কথা, কিন্তু দ্বিতীয় রহিত। অর্থাৎ সহজীবি কবিদের থেকে একেবারে আলাদা। তাঁর প্রকাশরীতি ও অভিজ্ঞতার পরিধি ছোট, ছোট কিন্তু গভীর, আর নিখুঁত নিটোল, নিজস্ব ও সমস্ত সুন্দর।
সাহিত্যচিন্তা
পরিচয় পত্রিকা সম্পদনা
সুধীন্দ্রনাথের কাব্যগ্রন্থ ছয়টি :
এছাড়াও তার দুটি প্রবন্ধ গ্রন্থ আছে :
মৃত্যু : ২৫ জুন,১৯৬০ ।
=================================
অরুণ কুমার সরকার
=================================
এজরা ওয়েস্টন লুমিস পাউন্ড
Ezra Weston Loomis Pound)
একজন কালজয়ী মার্কিন কবি ও সমালোচক। তিনি আধুনিক মার্কিন সাহিত্যের অন্যকম পথিকৃৎ। পিতা হোমার লুইস পাউন্ড এবং মাতা ইসায়েল ওয়েস্টনের সন্তান এজরা পাউন্ডের জন্ম হয়েছিল ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ অক্টোবর, আইডাহো রাজ্যের হেইলিতে। তার প্রাথমিক লেখাপড়া একটি ডেম স্কুলে। "ইমাজিসম" ধারার প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। তার কাব্যসঙ্কলন
রিপোস্টেস, কবিতা "হিউ সেলউইন মোবারলে" এবং অসমাপ্ত মহাকাব্য
দ্য ক্যান্টোস চিরায়ত বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে লন্ডনে বেশ কিছুকাল মার্কিন সাহিত্য সাময়িকীর সম্পাদক হিসেবে কাজ করার সময় পাউন্ড সমসাময়িক সাহিত্সযিক
টি. এ. এলিয়ট,
রবার্ট ফ্রস্ট,
জেমস জয়েস এবং আর্নেস্ট হেমিংওয়ের সৃষ্টিকর্ম নতুন করে মূল্যায়ন করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাণহানিতে মর্মাহত হয়ে তিনি ইংল্যান্ডের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেন। এ যুদ্ধের জন্য তিনি পুঁজিবাদ ও সুদবিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থাকে দোষারোপ করেন। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন সেনাবাহিনী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তাকে ইতালিতে গ্রেফতার করে। প্রথমে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাক্যাম্পে কয়েদ রাখা হয়। দীর্ঘ ১৩ বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন তিনি। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ এপ্রিল তিনি মুক্তি লাভ করেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর তাাঁর মৃত্যু হয়।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment