Sunday, 1 November 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
              জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

                       অরুণ মিত্র 
                    শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
==============ππππππ============
           Doinik Sabder Methopath
          Vol _179. Dt - 02.11.2020
            ১৬ কার্তিক, ১৪২৭. সোমবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷√√√√√√√÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷

" এ জ্বালা কখন জুড়োবে?
 আমার এই বোবা মাটির ছাতি ফেটে চৌচির
উঠোনের ভালোবাসার ভোর এক মুঠো ছাই হয়ে ছড়িয়ে যায় শুকনো লাউডগার মাচায়,
 খড়ের চালে কাঠবিড়ালীর মতো পালায় অনেক দিনের আশা,
শুধু ভাসা-ভাসা কথার শূন্যে লেগে থাকে এক জলমোছা দৃষ্টি দুপুরের সূর্য হয়ে।
কোথায় সে আকাঙ্খাকে পোষবার সংসার
ভবিষ্যৎকে আদর করবার সংসার।
গড়বা্র আদর করবার,
ফুলে ফুলে কাকলিতে মিলিয়ে দেবার।
 মিলিয়ে গেল তা এই ক্ষোভে।
এ জ্বালা কখন জুড়োবে?”
              (এ জ্বালা কখন জুড়োবে?)

জন্ম - ২ নভেম্বর, ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দ। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রোত্তর বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথিতযশা কবি ও ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের খ্যাতনামা অধ্যাপক ও অনুবাদক। তিনি যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন অধ্যাপক। 

১৯০৯ সালের ২ নভেম্বর অধুনা বাংলাদেশের যশোর শহরে কবি অরুণ মিত্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম হীরালাল মিত্র ও মায়ের নাম যামিনীবালা দেবী। অল্পবয়সেই অরুণ মিত্র কলকাতায় চলে

অল্প বয়সেই অরুণ মিত্র কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতার বঙ্গবাসী স্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবনের সূত্রপাত ঘটে। ১৯২৬ সালে এই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৮ সালে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে আইসিএস পরীক্ষা ও ১৯৩০ সালে রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে ডিস্টিংশন সহ বিএ পাস করেন। এই সময়ে সাহিত্যের চেয়ে সংগীতের প্রতি তাঁর অধিক আকর্ষণ ছিল। আবার এই সময়েই ভিক্টর হুগোর উপন্যাস ইংরেজি অনুবাদে পড়ে ফরাসি সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ফরাসি ভাষা শিখতে শুরু করেন। বিএ পাস করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পড়া শুরু করেন। কিন্তু পিতামাতার জ্যেষ্ঠপুত্র হওয়ায় সাংসারিক দায়দায়িত্বের চাপে এমএ পড়া অসমাপ্ত রেখেই ১৯৩১ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। ১৯৪২ সাল পর্যন্ত আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি করেছিলেন তিনি। এই সময়ে বিভিন্ন সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, কবি ও লেখক গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর পরিচিতি ঘটে। বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার ব্যক্তিগত সম্পর্কসূত্রে ছিলেন তাঁর নিকট আত্মীয়। আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি করার সময়েই মার্ক্সবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন অরুণ মিত্র। সেই সূত্রে 'বঙ্গীয় প্রগতি লেখক সংঘ' ও 'সোভিয়েত সুহৃদ সমিতি'র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আনন্দবাজার ত্যাগ করার পর তিনি যোগ দেন সতেন্দ্রনাথ মজুমদার সম্পাদিত 'অরণি' পত্রিকায়। ফরাসি সরকারের আহ্বানে ১৮৪৮ সালে বৃত্তি গ্রহণ করে গবেষণার্থে ফ্রান্স যাত্রা করেন। প্যারিসের সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর গবেষণা কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ডক্টরেট লাভ করেন। ফরাসি সাহিত্য অধ্যয়নের পর ১৯৫২ সালে দেশে ফিরে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপকের পদে বৃত হন। এরপর দীর্ঘ কুড়ি বছর সপরিবারে এলাহাবাদে-ই বসবাস করেন। ১৯৭২ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করে ফিরে আসেন কলকাতায়।

১৯৯০ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানিক ডি. লিট. উপাধিতে ভূষিত করে। ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যে নিরন্তর গবেষণার জন্য ১৯৯২ সালে ফরাসি সরকার তাঁকে 'লিজিয়ন অফ অনার' সম্মানে ভূষিত করে। ২০০০ সালের ২২ অগস্ট কলকাতায় অরুণ মিত্র প্রয়াত হন।

সাহিত্য

মাত্র ষোলো বছর বয়সে 'বেণু' নামে একটি কিশোর পত্রিকায় প্রথম অরুণ মিত্রের কবিতা প্রকাশিত হয়। তাঁর মৌলিক কাব্যগ্রন্থগুলি হল প্রান্তরেখা (১৯৪৩), উৎসের দিকে (১৯৫০), ঘনিষ্ঠ তাপ(১৯৬৩), মঞ্চের বাইরে মাটিতে (১৯৭০), শুধু রাতের শব্দ নয় (১৯৭৮), প্রথম পলি শেষ পাথর (১৯৮১) ও খুঁজতে খুঁজতে এতদূর (১৯৮৬), শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৮৫)।। 

সম্মাননা : 

শুধু রাতের শব্দ নয় কাব্যগ্রন্থটি ১৯৭৯ সালে রবীন্দ্র পুরস্কারে এবং খুঁজতে খুঁজতে এতদূর কাব্যগ্রন্থখানি ১৯৮৭ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়।

১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর একমাত্র উপন্যাস

 " শিকড় যদি চেনা যায়। "

তাঁর মৌলিক প্রবন্ধ গ্রন্থ -"ফরাসি সাহিত্য প্রসঙ্গে " প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। বাংলায় তিনি একাধিক গ্রন্থ অনুবাদও করেছেন। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল -

"ভারত: আজ ও আগামীকাল (১৯৫১), কাঁদিদ বা আশাবাদ (১৯৭০), সে এক ঝোড়ো বছর (১৯৭০), ভারতীয় থিয়েটার (১৯৭৫), গাছের কথা (১৯৭৫), মায়াকোভস্কি (১৯৭৯), সার্ত্র ও তাঁর শেষ সংলাপ (১৯৮০), অন্যস্বর (১৯৮৩) ও পল এলুয়রের কবিতা (১৯৮৫)।

কবিতা -১

"আমি সাদা ভাত মুঠোয় তুলেছি

আর আমার ওপর অন্ধকার ঝাঁপিয়ে পড়ছে

তর্জনগর্জন মাঠ থেকে ছুটে এসে ঘরের মধ্যে

আমি হাত ওঠাচ্ছি ঝড়ে

 আমি ভাবছি ঝিরঝিরে বাতাসটা আমার

পালকগুলো আমার

ঝাউয়ের ঝারি আমের বোল আমার

ভাবতে ভাবতেই আমি ডুবছি চোরা টানে”.

(সাদা ভাত মুঠোয় তুলেছি)

কবিতা -২

আর একটু থাকো

তোমাকে এই স্বরব্যঞ্জনে রেখেছি,

তুমি তো মাঠের মেয়ে

খঞ্জনার নাচের মেয়ে,

তুমি ডানা ঝাপটাচ্ছ অনবরত ।

আর কতক্ষনই-বা তুমি থাকবে এখানে

আমার এই কলমের নীচে?


তোমাকে ডাকছে রোদের আকাশ

ঝরন্ত ঘামের মাঠ,

এত ভালোবাসতেও তুমি পারো তাদের !

তবু বলছি তুমি আমার আঙুলের ডগায়

এই লাল বিন্দুতে একটু থাকো

আমাকে একটু শেখাও

কী করে রক্তলিপি লিখতে হয়

তারপর সেই ছাপ মাঠময়,

ভরা রোদের আকাশে

তোমার সঙ্গে জ্বলন্ত নাচের বর্ণমালা

আর আমাদের ওড়া একসঙ্গে ।

কবিতা-৩

ঘাসফড়িং


একটা ঘাসফড়িং এর সঙ্গে আমার গলায় গলায় ভাব হয়েছে,

ভাব না করে পারতামই না আমরা।

ঝিরঝির বৃষ্টির পর আমি ভিজে ঘাসে পা দিয়েছি

অমনি শুরু হয়ে গেল আমাদের নতুন আত্মীয়তা।

সবুজ মাথা তুলে কত খেলা দেখাল ঘাসফড়িং,

তার কাছ থেকে চলে আসার সময় আমার কী মনখারাপ

বলে এলাম আমি আবার আসব,

আমার ঘরের দরজা এখন সবুজে সবুজ।


এই আবার ঝিরঝির বৃষ্টি

আমি কথা দিয়ে এসেছি

ভিজে ঘাসের ওপর আমাকে যেতেই হবে আবার।


∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆



  শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

" ভারত বিশাল দেশ। বাংলা ভাষা ভারতবর্ষের দ্বিতীয় ভাষা। বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে শুধু ভারতবর্ষে যত বাঙালির বসবাস, ওখানে তাদের সংখ্যা দ্বিতীয়। অত বড় দেশে দ্বিতীয় ভাষা বাংলা। পৃথিবীতে সপ্তম। সোজা কথা! এত লোক যে ভাষায় কথা বলে, সেটা বিপন্ন হয়ে যাবে, এটা হয় নাকি? তা ছাড়া বাংলাদেশের কারণে, একুশে ফেব্রুয়ারির কারণে ইউনেস্কো বাংলা ভাষাকে এখন স্বীকৃতি দিয়েছে। আসলে বাংলা হচ্ছে বিশ্বের মিষ্টিতম ভাষা। এই মিষ্টিতম ভাষা মরবে না। "

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২রা নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তার জীবনের প্রথম এগারো বছর কাটে। ভারত বিভাজনের সময়, তার পরিবার কলকাতা চলে আসে। এই সময় রেলওয়েতে চাকুরীরত পিতার সঙ্গে তিনি অসম, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে তার জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি প্রথমে জলপাইগুড়ির ফনীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশন এ, ক্লাস Vlll অব্দি পড়েন, তারপরতিনি কোচবিহারের ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। শীর্ষেন্দু একজন বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ও দেশ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত।


গ্রন্থতালিকা :-

তার প্রথম গল্প জলতরঙ্গ শিরোনামে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সাত বছর পরে ঐ একই পত্রিকার পূজাবার্ষিকীতে ঘুণ পোকা নামক তার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয়। ছোটদের জন্য লেখা তার প্রথম উপন্যাস মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি। শবর দাশগুপ্ত তার সৃষ্ট অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র।

উপন্যাস:-

যাও পাখি ১৯৭৬

উজান

কাগজের বউ

কীট

ক্ষয়

চোখ

জাল

দিন যায় 

দূরবীন

পারাপার

ফুলচোর

বিকেলের মৃত্যু

মানবজমিন

ঘুণ পোকা ১৯৬৭

আশ্চর্য ভ্রমণ 

রঙীন সাঁকো

পাপ

তিন হাজার দুই

নয়নশ্যামা

হৃদয়বৃত্তান্ত

নানা রঙের আলো

গয়নার বাক্স

অসুখের পরে 

গতি

প্রজাপতির মৃত্যু ও পুর্নজন্ম

দ্বিতীয় সত্তার সন্ধানে

আদম ইভ ও অন্ধকার

নিচের লোক উপরের লোক

ক্রীড়াভূমি

সম্পত্তি

তিথি

পার্থিব

চক্র

আলোয় ছায়ায়

আলোর গল্প ছায়ার গল্প

ঋণ 

কাপুরুষ

কালো বেড়াল সাদা বেড়াল

গুহামানব

দ্বিচারিনী

নীলু হাজরার হত্যা রহস্য 

পিদিমের আলো

ফজল আলি আসছে

মাধব ও তার পারিপার্শ্বিক

লাল নীল মানুষ

শ্যাওলা

শিউলির গন্ধ

সাঁতারু ও জলকন্যা

সিঁড়ি ভেঙে ভেঙে

ছায়াময়

দৃশ্যাবলী

বোধন ও বিসর্জন

এই সব পাপটাপ

হাটবার

চেনা অচেনা

যুগলবন্দী

সেই আমি

বাসস্টপে কেউ নেই 

কাছের মানুষ

হরিপুরের হরেককান্ড

বাঙালের আমেরিকা দর্শন

একাদশীর ভূত

ওয়ারিশ

চারদিক

গোলমাল

আক্রান্ত

ফেরীঘাট

মাধুর জন্য

জোড়বিজোড়

বড়সাহেব

নেকলেস

নরনারী কথা

খুদকুঁড়ো

অদ্ভুতুড়ে সিরিজ সম্পাদনা

মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি - ১৯৭৮

গোঁসাইবাগানের ভূত - ১৯৭৯

হেতমগড়ের গুপ্তধন - ১৯৮১

নৃসিংহ রহস্য - ১৯৮৪

বক্সার রতন - ১৯৮৪

ভুতুড়ে ঘড়ি - ১৯৮৪

গৌরের কবচ - ১৯৮৬

হিরের আংটি - ১৯৮৬

পাগলা সাহেবের কবর - ১৯৮৭

হারানো কাকাতুয়া - ১৯৮৭

ঝিলের ধারে বাড়ি - ১৯৮৮

পটাশগড়ের জঙ্গলে - ১৯৮৯

গোলমাল - ১৯৮৯

বনি - ১৯৯০

চক্রপুরের চক্করে - ১৯৯০

ছায়াময় - ১৯৯২

সোনার মেডেল - ১৯৯৩

নবিগঞ্জের দৈত্য - ১৯৯৪

কুঞ্জপুকুরের কান্ড - ১৯৯৫

অদ্ভুতুড়ে - ১৯৯৬

পাতালঘর - ১৯৯৬

হরিপুরের হরেক কান্ড - ১৯৯৭

দুধসায়রের দ্বীপ - ১৯৯৭

বিপিনবাবুর বিপদ - ১৯৯৮

নবাবগঞ্জের আগন্তুক - ১৯৯৯

ষোলো নম্বর ফটিক ঘোষ - ২০০০

গজাননের কৌটো - ২০০১

ঝিকরগাছায় ঝঞ্ঝাট - ২০০২

রাঘববাবুর বাড়ি - ২০০৩

মোহন রায়ের বাঁশি - ২০০৪

সাধুবাবার লাঠি - ২০০৫

ঘোরপ্যাঁচে প্রাণগোবিন্দ - ২০০৫

ডাকাতের ভাইপো - ২০০৭

অঘোরগঞ্জের ঘোরালো ব্যাপার - ২০০৮

উঁহু - ২০০৯

গোলমেলে লোক - ২০১০

বটুকবুড়োর চশমা - ২০১১

ময়নাগড়ের বৃত্তান্ত - ২০১১

অষ্টপুরের বৃত্তান্ত - ২০১২

মদন তপাদারের বাক্স - ২০১২

সর্বনেশে ভুল অঙ্ক - ২০১৪

ভলু যখন রাজা হল - ২০১৫

হাবু ভুঁইমালির পুতুল - ২০১৬

নন্দীবাড়ির শাঁখ - ২০১৭

জং বাহাদুর সিংহের নাতি - ২০১৭

আসমানির চর - ২০১৮

গড় হেকিমপুরের রাজবাড়ি - ২০১৯

গল্প সম্পাদনা

একটুখানি বেঁচে থাকা

গঞ্জের মানুষ

উকিলের চিঠি

ঘণ্টাধ্বনি

হারানো জিনিস

লড়াই

মশা

একটা দুটো বেড়াল

বাঘ

খানাতল্লাস

ক্রিকেট

ভেলা

চিড়িয়াখানা

শুক্লপক্ষ

হাওয়া-বন্দুক

খবরের কাগজ

তৃতীয় পক্ষ

ইচ্ছে

পুনশ্চ

কথা

পুরোনো চিঠি

হরীতকী

বনমালীর বিষয়

সূত্রসন্ধান

আশ্চর্য প্রদীপ

ঘরের পথ

প্রিয়া মধুবন

আমি সুমন

দৈত্যের বাগানে শিশু

ট্যাংকি সাফ

লুলু

ওষুধ

বন্দুকবাজ

জমা খরচ

অনুভব

সুখের দিন

গর্ভনগরের কথা

খগেনবাবু

সাঁঝের বেলা

সংবাদ

অপেক্ষা

হাওয়া বদলের চিঠি

ভাগের অংশ

দেখা হবে

সম্পূর্ণতা

খেলা

বৃষ্টিতে নিশিকান্ত

চিঠি

জ্যোৎস্নায়

মাসী

হলুদ আলোটি

প্রতীক্ষার ঘর

উত্তরের ব্যালকনি

সাপ

স্বপ্নের ভিতরে মৃত্যু

আত্মপ্রতিকৃতি

মৃণালকান্তির আত্মচরিত

ভুল

চারুলালের আত্মহত্যা

আমাকে দেখুন

কার্যকারণ

তোমার উদ্দেশে

অবেলায়

সেই আমি, সেই আমি

খেলার ছল

পটুয়া নিবারণ

সাদা ঘুড়ি

উড়োজাহাজ

কীট

বয়স

রাজার গল্প

সোনার ঘোড়া

মুনিয়ার চারদিক

ডুবুরী

নীলুর দুঃখ

সাধুর ঘর

সুখ দুঃখ

আমরা

শেষবেলায়

পুরনো দেওয়াল

চিহ্ন

বন্ধুর অসুখ

কয়েকজন ক্লান্ত ভাঁড়

ছবি

দূরত্ব

ঝড়

সাইকেল

সম্পর্ক

মনে থাকা

পয়মন্ত

দুর্ঘটনা

দৌড়

বিয়ের রাত

মুহূর্ত

লক্ষ্মীপ্যাঁচা

ঘরজামাই

নবদূর্গা

হ্যাঁ

জন্ম

সংসার

বানভাসি

হাতুড়ি

সংলাপ

কৈখালির হাটে

ক্রীড়াভূমি

রাজার বাগানে

নসিরাম

বুদ্ধিরাম

গন্ধটা খুব সন্দেহজনক

চলচ্চিত্র:-

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বহু উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। তার সৃষ্ট শবর চরিত্রটি নিয়ে তৈরী হয়েছে তিনটি রহস্য চলচ্চিত্র। এছাড়াও অদ্ভুতুড়ে সিরিজ অবলম্বনে বিভিন্ন সিনেমা তৈরী হয়েছে। তার কাহিনী অনুসারে বানানো চলচ্চিত্রগুলি হলঃ

আজব গাঁয়ের আজব কথা

বাশিওয়ালা

পাতালঘর

গোঁসাইবাগানের ভূত

দোসর

কাগজের বৌ

গয়নার বাক্স (চলচ্চিত্র)

ছায়াময়

সাধুবাবার লাঠি

মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি

ঈগলের চোখ

আসছে আবার শবর

হীরের আংটি

আশ্চর্য প্রদীপ (চলচ্চিত্র)

এবার শবর

পুরস্কার :-

বিদ্যাসাগর পুরস্কার (১৯৮৫) - শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য।

আনন্দ পুরস্কার (১৯৭৩ ও ১৯৯০)

সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৮)- মানবজমিন উপন্যাসের জন্য।

বঙ্গবিভূষণ (২০১২)




"এসব উপন্যাসের পাত্রপাত্রীদের আঁকতে গিয়ে আমার কাছে যেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা হলো: মানুষের জীবন যেমন হয়, চরিত্রদের সেভাবেই উপস্থাপন করব; মানুষের জীবন যেমন হওয়া উচিত, সেভাবে উপস্থাপন করব না। আসলে আমি জানি না উপন্যাসগুলো কেন পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। আর এ উপন্যাসগুলোর বিষয়-আশয় নিয়ে অনেক কথা বলেছি, এখন আর বলতে ভালো লাগে না, মনেও থাকে না সবকিছু।"

যৌবনে ভয়ানকভাবে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন শীর্ষেন্দু মুেখাপাধ্যায়, জীবনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন এবং একসময় আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত মা–বাবা তাঁকে শ্রীশ্রী অনুকূলচন্দ্র ঠাকুরের কাছে নিয়ে যান। ঠাকুরের সান্নিধ্যে জীবন বদলে যায় তাঁর।


* তাঁর জীবনের প্রথম দুটি গল্প ফেরত এসেছিল দেশ পত্রিকার দপ্তর থেকে। তৃতীয়টি পাঠানোর পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যদি এটি ছাপা না হয়, তাহলে লেখালেখিই ছেড়ে দেবেন। ‘জলতরঙ্গ’ নামে সেই তৃতীয় গল্পটিই ছিল শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ছাপা হওয়া প্রথম লেখা।


* প্রথম উপন্যাস ঘুণপোকা লিখেছিলেন সাগরময় ঘোষের তাগাদায়। ঘুণপোকার শ্যামল চরিত্রটি অনেকটা তাঁর নিজের আদলেই গড়া।


* শিশু-কিশোর জন্য কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল না শীর্ষেন্দুর। কিন্তু আনন্দমেলার তৎকালীন সম্পাদক ও কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর অনুরোধে লেখেন প্রথম কিশোর গল্প। এমনকি নীরেন্দ্রনাথ অনেকটা জোর করেই তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নেন প্রথম কিশোর উপন্যাস মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি। এই উপন্যাসে ঠাকুরমার চরিত্রটি সরোজিনী দেবী নামে তাঁর এক বিধবা ঠাকুরমার আদলে গড়া।


* তাঁর তিন বিখ্যাত কিশোর উপন্যাস গোঁসাইবাগানের ভূত, ছায়াময় ও মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি নিয়ে বানানো হয়েছে তিনটি সিনেমা এবং তিনটিই বক্স অফিস মাৎ করেছে।


* শীর্ষেন্দুর প্রিয় উপন্যাস সতীনাথ ভাদুড়ির লেখা ঢোঁড়াই চরিত মানস। এ ছাড়া কমলকুমার মজুমদারের উপন্যাসও তাঁর প্রিয়। শরৎচন্দ্রের দেবদাসকে তিনি ‘অপরিণত হাতের সৃষ্টি’ বলে মনে করেন। কিন্তু এক শ বছর ধরে দেবদাস-এর সমান জনপ্রিয়তাও তাঁকে বিস্মিত করে।


* তাঁর সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শবর দাশগুপ্ত। ‘শবর সিরিজ’–এর প্রথম বই ঋণ। শবর চরিত্র নিয়ে পরিচালক অরিন্দম শীল বানিয়েছেন এবার শবর, ঈগলের চোখ ও আসছে আবার শবর নামে একে একে তিনটি সিনেমা।


* বাংলাদেশি নাটকের ভক্ত শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, এ দেশের নাটকের গল্পগুলো খুব চমৎকার ও মিষ্টি। তিনি বলেন, ভারতে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখা যায় না বটে, কিন্তু কোনো না কোনোভাবে নাটকগুলো তাঁরা দেখেন।


* সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে তুই-তোকারির সম্পর্ক ছিল শুধু সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের সঙ্গে। মুস্তাফা সিরাজের অতিমাত্রায় ‘কর্নেল সিরিজ’-এ ঝুঁকে পড়াকে মানতে পারেননি শীর্ষেন্দু। এ জন্য সিরাজকে ভর্ৎসনাও করতেন। কারণ তিনি মনে করতেন,‘কর্নেল সিরিজ’ লেখা কমিয়ে দিলে সিরাজের কাছ থেকে অলীক মানুষ-এর মতো আরও ভালো ভালো লেখা পাওয়া যাবে।

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆










No comments: