Monday, 9 November 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ।


∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
           জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

                      জয় গোস্বামী
==========✓✓✓✓✓✓✓✓✓=========
         Doinik Sabder Methopath
      Vol -186. Dt - 10.11.2020
       ২৪ কার্তিক,১৪২৭. মঙ্গলবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷✓✓✓✓✓÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
সম্পাদকীয় -
" তোমার এই জড়ো করা হাতে
দু ফোঁটা চোখের জল ফেলে দেখি 
হালকা লাগে কি না !" 
অপূর্ব নিবেদনের বাণীতে আত্মমগ্ন রোমান্টিক যে কবি উত্তর আধুনিক কাব্য কবিতায় নিজস্ব ঘরানা নির্মাণ করেন, সত্তরের খাদ্য আন্দোলন কে সামনে রেখে অন্তঃসারশূন্য অনিকেত যান্ত্রিক জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে স্লোগান রচনা করেন - তিনি জয় গোস্বামী। অদ্ভুত চিত্রকল্প, ভাষার ব্যবহার, শব্দচয়ন ও আঙ্গিকের অভিনবত্বে যথার্থ আধুনিক কবি। যার কবিতা পাঠকের মন রাজ্যে অদ্ভুত আবেদন সৃষ্টি করে। নিজেকে খুঁজে পায়। তেমন কবির  জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের উদ্দেশ্যে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ, দৈনিক শব্দের মেঠোপথ পত্রিকা উদ্যোগ নিয়েছে। অনেকেই তাঁকে নিবেদিত কবিতা ও গদ্য নির্মাণ করে পাঠিয়েছেন। ব্যক্তিগত ,গদ্য রচনার, কবিতা রচনা, আলাপ -বৈচিত্রের এই লেখাগুলি সত্যি ভালো লেগেছে। আমাদের প্রিয় কবিকে জেনে নেওয়ার মাধ্যম শুধু নয় মূল্যায়নের গুণগতমানও  সূচিত হয়েছে। সবাইকে শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন জানাই। আর কবি কে প্রণাম । সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
                      ড. বিষ্ণু পদ জানা
                দৈনিক শব্দের মেঠোপথ পরিবার
                    ১০.১১.২০২০.

------------------------------------------------

জয় গোস্বামীর জন্মদিনে
নিবেদিত কবি- লেখকেরা
১.
আলাপ
অরবিন্দ সরকার
বাংলাভাষার বিশিষ্ট কবি জয় গোস্বামীর সঙ্গে আলাপ বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের।ওনাকে প্রথম দেখি,শত জল ঝর্নার ধ্বনির অনুষ্ঠানে কৃষ্ণ নগর রবীন্দ্র ভবনে । মঞ্চে ওনাকে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়েছিল, কেন আপনি ওই পত্রিকায় যোগদান করলেন । তার উত্তরে উনি বলেছিলেন, আমার কবিতা লেখা ছাড়া অন্য কোন যোগ্যতা নেই, যেখানে আমার কবিতা বেশি প্রকাশ পাবে, সেই ভেবে যোগদান করা। তার বলা আমার ভালো লেগেছিল। প্রসঙ্গ ক্রমে বলি,এই অনুষ্ঠান দারুন হয়েছিল মৃদুল দাশগুপ্ত, দেবদাস আচার্য দা, সঞ্জীব প্রামানিক দের নেতৃত্বে । এখানে চারশোর অধিক কবিরা যোগদান করেছিলেন । সুদূর আসাম থেকেও অনেক কবি এসেছিলেন। আমরা সারারাত ছিলাম রবীন্দ্র ভবনে । কালীকৃষ্ঞ গুহ দার সঙ্গে সারারাত আড্ডা ।পরের সকালেই অনুষ্ঠান। ছিল শ্যামল বরণ সাহাও। ফিরে আসি আগের কথায়। তারপর এক দিন দেশ পত্রিকার অফিসে গেছি। ওনার সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমাকে বললেন, আপনি প্রত্যেক শনিবার আসবেন বিকেলের দিকে তাহলে গল্প করতে পারব । একদিন কবি বিভাস রায়চৌধুরীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিল।বললেন, এ বিভাস , বনগাঁ থেকে আসে, খুব ভালো লেখে। আমি যাই বর্ধমান থেকে। তারপর আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না বর্ধমান থেকে প্রত্যেক শনিবার যাওয়া। আমি যেতাম মাঝে মাঝে । এই আনন্দ বাজার পত্রিকা দপ্তরে আমার আসা সেই ১৯৮৫ সাল থেকে। বন্ধুবর শ্যামলকান্তি দাশ, সুনীল দা, শীর্ষেন্দু দার সঙ্গ সান্নিধ্য পেতে । তখন আলাপ হয়েছিল মুস্তাফা সিরাজ, সুনীল বসু, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এর সাতে । আলাপ হল পার্থ বসুর সঙ্গে । উনি প.ব. নামে লিখতেন ।পরে আমার অনেক লেখা উনি আনন্দ বাজারের আনন্দ মেলা বিভাগে প্রকাশ করেছিলেন । খুব গম্ভীর ছিলেন । লেখা জমা দেবার সময় চুপচাপ দিয়ে আসতাম । এমন হয়েছে ১৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ করেছেন। ছিল বন্ধুবর কবি শক্তিপদ মুখোপাধ্যায়। আর যেতাম আনন্দ বাজার পত্রিকার সহকারী সম্পাদক অরুণ বাগচীর ঘরে। ভীষন মিষ্টি মানুষ। এখানেই আলাপ হয় কবি প্রমোদ বসুর সঙ্গে। আলাপ হয়েছিল বর্ধমান বই মেলায় এই পত্রিকার রবিবাসরীয় সহ সম্পাদক রাধানাথ মন্ডলের সাথে । বারিদবরণ ঘোষ দা আলাপ করিয়ে ছিলেন। উনি আমাকে প্রকাশের জন্য লেখা চাইলেন । উনি পরে আমার অনেক লেখা রবিবাসরীয় পাতায় প্রকাশ করেছিলেন।
ফিরে আসি জয়ের কথায়। সেই সময়ের লেখা জয়ের দুটি কাব্যগ্রন্থ আমার খুব ভালো লেগেছিল : এক. উন্মাদের পাঠক্রম দুই. আলেয়া হ্রদ। তখন ও থাকত রানাঘাটে। ওর মা অর্থাৎ আমাদের মাসীমা হঠাৎ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ভীষন ওর নি:সঙ্গ জীবন যাপন তখন ।
একবার দেশ পত্রিকার পাতায় ওর আমার একই সংখ্যায় কবিতা প্রকাশিত হল। ওর কবিতা মালতী বালা বালিকা বিদ্যালয় । তার ঠিক নীচে আমার একটি কবিতা ছাপা হয়েছে । ভীষন খুশি । এই পত্রিকায় আমার প্রথম কবিতার প্রকাশ। ।এই কবিতা স্বয়ং নির্বাচন করেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‌। কবিতা টি পাঠিয়েছিলাম ডাক যোগে । এই ভাবে শনিবার করে জয়ের সাথে আড্ডা চলতো। আমার বই ওর হাতে তুলে দিয়েছি । একবার তো আমার একি বই ভুলে দুবার দিতে গিয়ে বলল । এটা আবার দিচ্ছ কেন আগেই তো আমাকে দিয়েছ । এই ভাবে ধীরে ধীরে সম্পর্ক আপনি থেকে তুমিতে আসে।। তারপর কর্মসূত্রে আমি চলে গেলাম উত্তর বঙ্গের কুচবিহারে। ওখানে ছিলাম সাড়ে পাঁচ বছর। কলকাতায় এলে দেখা হত। তারপর কাব্যিক যোগাযোগ তো ছিলই বরাবর। ওর লেখা গদ্য, পদ্য নিয়মিত পড়তাম । ভালো লাগতো ‌। ছন্দের হাতটি চমৎকার ।তবে সব লেখা যে মন ছুঁয়ে যেত তা নয়। যেমন নিজের লেখাও কী সব সময় ভালো লাগে তা কিন্তু নয়। জয়ের হাতের লেখা খুব সুন্দর । ওর কবিতা পাঠ আমার খুবই ভালো লাগে । এই ভাবে নিয়মিত না হলেও দেখা হয়। গেল শীতে এক সাথে ফটো তুললাম ‌‌।


==========================
২.

প্রিয়কবি জয় গোস্বামীকে

অমিত কাশ‍্যপ

'আগুন খেয়ে বড় হয়েছি, সাপের বিষ খেয়ে/ মনে করেছি মায়ের দুধ, দুধের চেয়ে নেশা/ জীবন আর কিছুতে নেই,,,' জয় গোস্বামীর কাব‍্যগ্রন্হগুলির ধারাবাহিকতায় লক্ষ করা যায় কাব‍্যের চলন বা অনুশাসন এক গভীরতা ও অনুভূতির মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। উনিশো সাতাত্তর সালে 'ক্রীসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ' প্রথম কাব‍্যগ্রন্হ হিসেবে প্রকাশ পায়। শব্দচয়নের মধ্যে কাঠিন‍্য লক্ষ করা গেলেও পরবর্তীকালে তা স্বাভাবিকতা পেতে সময় লাগে না। 'প্রত্নজীব' কাব‍্যে দেখা যায় অন্যমাত্রা। মাঝে মাঝে তিনি বাঁকবদল করেছেন। 'উন্মাদের পাঠক্রম' কাব‍্যগ্রন্হে দেখা গেছে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে নিজেকে খুঁজে চলেছেন কবি। ব‍্যক্তিগত যন্ত্রণার পাশাপাশি মৃত্যুযন্ত্রণার আচ্ছন্নতা। এক একটি কাব‍্যগ্রন্হে প্রকাশভঙ্গির রূপান্তর ঘটছে। নিজেকে এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছেন। অবিরত তাঁর এই চলা। উজ্জ্বলতায় সমৃদ্ধ হোক তাঁর এই যাত্রা। শুভেচ্ছা রইল আগামী দিনে।

==========================
৩.

কবি যখন সৃষ্টিকর্তা 

শ্রাবণী বসু
 
 বিস্তীর্ণ একখানি বাগান
তৈরি হচ্ছে - কবিতার বাগান।
সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কবি
জয় গোঁসাই-এর পক্ষেই এমনটি সম্ভব।


গাছ লাগাচ্ছেন । শিকড়ে জল ঢালছেন
 পরিচর্যা করে ফুল ফোটাচ্ছেন ।

আমরা কিছু সুগন্ধ নিতে পারছি
কিছু অধরা থেকে যাচ্ছে
স্বর্গের পারিজাত পুষ্পের মতো।

তিনি আত্মস্থ , তিনি মগ্ন ।

হিমানীর আঁতুরঘরে বসে
ঢেউয়ের ঘ্রাণ পেয়ে যায়- নদী।
জন্মমুহূর্তে তার কপালে সাগরযাত্রা
লিখে রাখেন বিধাতা পুরুষ।

কবি ,নদীটির থেকে আলাদা নয়,
একঘর অনুভবকে ঢেউ বানিয়ে
তিনি ভেসে চলেন।
অতলের দিকে । অনিঃশেষের দিকে।

দুঃখ থেকে আঘাত থেকে
প্রেম থেকে বিচ্ছেদ থেকে
প্রতিটা ঢেউয়ের সংঘর্ষ থেকে
 উঠে আসে কবিতা।

চাষির মত কবিও হৃৎপিন্ডটাতে দুহাতে ধরে
কুলোয় উছড়ে-পাছড়ে , ঝাড়াই বাছাই করে
অসারকে কুঁড়োর মত বাতাসে উড়িয়ে 
শস্যগুলো রেখে দেন গোলা ভরে।

গোলাভরা এই শস্যগুলি -  
হৃদয় নিঙড়ে পাওয়া ধান
কল্পনার অতল ছোঁয়া অবয়ব
অনুভবের নদীতে ডুবে দিয়ে
তুলে আনা একটি একটি কবিতা।

*********************************
৪.

ব্যক্তিজীবনে জয় গোস্বামী

   সুকান্ত আচার্য্য

        মাত্র আট বছর পাঁচ মাস বয়সে যে ছেলেটা তার বাবাকে হারিয়ে ছিল, যার কাছে জগৎ টা তখন শুধু ধু ধু মরুভূমি, কেউ কি ভেবেছিল সেই ছেলেটি একদিন বড় হয়ে জয় গোস্বামী হবে। একাদশ শ্রেণীতে প্রথাগত পড়াশোনার পাঠ চুকে যায়, কিন্তু লেখালেখির প্রতি অদম্য ইচ্ছা তার কলম কে থামিয়ে রাখতে পারেনি। ছেলেবেলায় এক অনুষ্ঠানে 'বনলতা সেন' কবিতাটির আবৃত্তি শুনে কবিতার গঠন, রচনাশৈলী ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে তার প্রথাগত ধারণা আমূল বদলে যায়। সত্তরের দশকে কবিতা লেখা শুরু করেন এবং দেশ পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের পর আর তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক কাব্যগ্রন্থ তার অমর সৃষ্টির সাক্ষ বহন করে চলছে।
        জয় গোস্বামীর ভাষায়, ‘‘আমার প্রতিদিনের জীবনে মনের ভেতর যে ভাষা জন্মায়, যে অভিজ্ঞতা জন্ম নেয়, তাকে ভাষা দেওয়ার চেষ্টা করি।’’ তিনি আরো বলেন, “আমার জীবন হচ্ছে ধারাবাহিক বিচ্ছেদের মালা গাঁথার ইতিহাস। আমার মাস্টার মশাই, আমার মা, আমার ভাই, আমার বন্ধু, নারী, সহকর্মী, যাঁরা আমার জীবনে এসেছেন, তাঁরা কেউ আমাকে নিয়ে সুখী নন। তাঁরা কোনো না কোনো কারণে হতাশ বা আমাকে নিয়ে ক্লান্ত।”

=========================
৫.

জয়তু জয়
নন্দিনী সরকার।


মধু বাবার কোলের শিশু রানাঘাটে আসলো,
কলকাতা ছেড়ে সে যে নদিয়ায় থাকলো।
শিশু জয় বালক বেলায় পিতার স্নেহ হারায়,
দিদিমণি মা- ই তাকে আগলে চোখে হারায়।
ছোট্ট থেকে কবিতা লেখা ভালোবাসা তার গান ,
শব্দরা সব পরশ পেলো তারই প্রাণের টান। 
প্রথা মতো পড়ার গতি এগোয় নি তো বেশী ,
কাব্য চর্চায় জয় যাত্রা ফূটলো মুখে হাসি।
"ক্রিসমাস ও শীতের সনেট" প্রথম পদার্পণ,
বাংলা মায়ের কোল ভরালো আর এক গুনী জন।
একে একে ঝাউপাতা আর বজ্র ঝড়ে লেখা,
পাগলী তোমার সঙ্গে থাকে সাঁঝবাতি রূপকথা।
সংবাদ হয় জীবন ধারন বঙ্গবিভূষন ,
পুরস্কারে ভরিয়ে তাঁকে আনন্দ নিবেদন।
এখনো তাঁর ইচ্ছে গুলো ছড়িয়ে পথের বাঁকে,
জনপ্রিয় কবির পায়ে প্রণাম দিলাম এঁকে।।

==========================
৬.

কবি জয় গোস্বামী: জীবন ও সৃজন
                         গোবিন্দ মোদক     

          বাংলা ভাষায় উত্তর জীবনানন্দ পর্বে একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি হলেন জয় গোস্বামী, যাঁর জন্ম হাজার 1954 সালের 10-ই নভেম্বর কলকাতায়। পরবর্তীতে তাঁর পরিবার নদীয়া জেলার রানাঘাট এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। তাঁর পিতা মধু চৌধুরী ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি ছোটবেলা থেকেই জয়কে সাহিত্যে খুব উৎসাহ দান করতেন। কিন্তু মাত্র আট বছর বয়সেই জয় তাঁর পিতাকে হারান। তাঁর মা শিক্ষকতা করে তাঁকে লালন পালন করেন। তাঁর প্রথাগত শিক্ষা একাদশ শ্রেণীতে শেষ হয়েছিল। সে সময় তিনি বিভিন্ন ক্ষুদ্র পত্র-পত্রিকা এবং সাময়িকীতে কবিতা লিখতে শুরু করেন।

          পরবর্তীতে দেশ পত্রিকায় তাঁর কবিতা প্রকাশ হওয়ার পর তাঁকে বিশেষ পরিচিতি দেয়। 1976 সালে তাঁর প্রথম কবিতা সংগ্রহ 'ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ' প্রকাশের পর কবি হিসাবে তাঁর পরিচিতি আরও বিস্তার লাভ করে। জানা যায় তিনি মায়ের কাছ থেকে 145 টাকা নিয়ে এই কবিতা সংখ্যাটি নিজের খরচে প্রকাশ করেন। মাত্র আটটি কবিতা সম্বলিত ক্ষীণতনু এই কবিতা সংগ্রহ তাঁকে অন্যতম মর্যাদা দেয়। পরবর্তীতে 'ঘুমিয়েছো, ঝাউপাতা' কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি 1989 সালে আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। 2000 সালে 'পাগলী তোমার সঙ্গে' কাব্যগ্রন্থ তাঁকে এনে দেয় সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার। তিনি দু-দুবার আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন, পেয়েছেন আরও অনেক পুরস্কার ও বঙ্গবিভূষণ সম্মান। তাঁর কবিতা চমৎকার চিত্রকল্প, উপমা এবং বোধগম্যতায় বিশেষভাবেই ঋদ্ধ যা তাঁকে স্বকীয়তা এবং সমধিক জনপ্রিয়তা দিয়েছে। সত্তরের দশক থেকে কবিতা লিখতে শুরু করে তিনি এ পর্যন্ত বহু কবিতা এবং কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন --- তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য পাতার পোশাক, যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল, মা নিষাদ, সূর্য পোড়া ছাই, বজ্রবিদ্যুৎ ভর্তি খাতা ইত্যাদি ইত্যাদি। তাঁর রচিত উপন্যাস এবং গদ্যরচনাও পাঠকসমাজে বিশেষভাবেই সমাদৃত এবং জনপ্রিয় হয়েছে।

=========================
৭.

গদ্য রচনায় কবি জয় গোস্বামী।
নীতা সরকার

   জয় গোস্বামী একজন প্রখ্যাত বাঙালি কবি এবং সাহিত্যিক। 1954 সালে 10 
নভেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহন
করিলে ও তিনি পরে পরিবারের সঙ্গে রানাঘাটে
বসবাসশুরু করেন। মাত্র 8 বছর বয়সে পিতৃহীন হন। 
তাঁর জননী শিক্ষকতা করে
তাঁকে লালন পালন করেন। 
13-14 বছর বয়সে প্রথম
কবিতা লেখা। স্কুলে 11 ক্লাস 
পড়তে পড়তে তিনি ত্যাগ করেন পুঁথিগত শিক্ষা। 
    তাঁর প্রথম কবিতা "সিলিং
ফ্যান"।প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় তিনটি "লিটিল ম্যাগাজিনে "। দেশ পত্রিকায়
1976 সালে প্রথম কবিতা ছাপা হয়। পরে তিনি দেশ
পত্রিকায় সম্পাদকের কাজ
করেন। 
       1989 সালে "আনন্দ পুরস্কার",1997 সালে "বাংলা 
একাদেমি পুরস্কার" এবং "সাহিত্য পুরস্কার"পান।
       অন্যায় ও অত্যাচারের পাশে দাঁড়ানো তাঁর অন্যতম গুন।

==========================
৮.

ব্যক্তিমুকুরে কবি জয় গোস্বামী।
       গৌরচাঁদ পাত্র।

 দুই বাংলার লোকপ্রিয় আধুনিক কবি জয় গোস্বামী।সাহিত্য জগৎ জয়ের অভিযান শুরু সেই ছোট্ট বেলায়। অত্যন্ত বেদনার- মাত্র আট বছর পাঁচ মাস বয়সে গায়ক পিতার অকাল প্রয়াণ। কিন্তু মনের গভীরে ততদিন শিকড় মেলে দিয়েছে বাবার গানের বাণী আর থেকে জন্ম নিয়েছে অনেকগুলো ভ্রূণ কবিতা।এবার সংসারতরণীর হাল ধরলেন শিক্ষিকা মা। আর্থিক অনটন নিত্য সঙ্গী।তা সত্ত্বেও কেতবী ডিগ্রি ও অর্থাগমের প্রতি উদাসীন ছেলের কবিতা প্রীতিতে ছিল তাঁর সানন্দ প্রশ্রয়।১৯৭৬এ মাত্র আটটি কবিতা নিয়ে ক্ষীণতনু একটি কবিতা সংকলন - " ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ " । ছাপানো খরচ ১৪৫ টাকা মায়ের সংসারখরচ থেকে বাঁচানো অর্থ। তাই তিনি "আমরা তো অল্পে খুশি" কবিতায় লিখলেন-"সবদিন হয় না বাজার / হলে হয় মাত্রাছাড়া। / বাড়িতে ফেরার পথে/ কিনে আনি গোলাপচারা।"দ্বিতীয় গোলাপ " প্রত্নজীব"। প্রকাশ ১৯৭৮ ।তাঁর লেখার মুন্সিয়ানা খ্যাতকীর্তি কবি শংখ ঘোষের নজরে পড়লো।পরের বইয়ের জন্য ঠিক করে দিলেন প্রকাশক।তারপর থেকে তাঁকে আর নিজে খরচ করে বই প্রকাশ করতে হয়নি।
      তারপর তিনি লিখলেন অসংখ্য কালজয়ী কবিতা( মেঘবালিকা প্রতি রূপকথা, মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়, টিউটোরিয়াল ইত্যাদি) কাব্যগ্রন্থ (ঘুমিয়েছো ঝাউপাতা?, যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল,বজ্রবিদ্যুৎ ভর্তি খাতা ইত্যাদি)ও উপন্যাস(হৃদয়ে প্রেমের শীর্ষ, সুড়ঙ্গ ও প্রতিরক্ষাইত্যাদি) ।সেই লেখার মধ্যে বিধৃত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও নিজস্ব অভিজ্ঞতা।তাই " নিজের জীবন বীজের জীবন " প্রবন্ধে লিখলেন এক আশ্চর্য আত্মকথন- "পৃথিবীতে ও পৃথিবীর বাইরেও আমার জীবদ্দশায় যা কিছু ঘটেছে বা ঘটবে তা যদি আমার উপর প্রভাব ফেলে, তাহলে সবটাই আমার আত্মজীবনী ।"" কবিতাকে জনারণ্যে মিলিয়েছেন জয় গোস্বামী।" তিনি রানাঘাটে থাকাকালীন কাছ থেকে মানুষের জীবন যন্ত্রণা দেখেছেন। তাদের ব্যর্থতাকে নিজের ব্যর্থতা বলে অন্তরে অনুভব করেছেন। প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছেন তাদের পাশে বার বার।" এই ব্যর্থতাই আমার জীবন জুড়ে।আমি এক ব্যর্থ মানুষ।" দুই বাংলার জনপ্রিয় কবি লিখেছেন একের পর এক ব্যর্থতা উত্তরনের কবিতা।
        পড়াশুনা তাঁর একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত।সেখানেও সেই ছাত্র রবির অন্ধ অনুসরন। "আর মাত্র পনের দিন পরে মাধ্যমিক পরীক্ষা।ঘরে জানালার পাশে আমি এখন বসে আছি।প্রতিসরনের চ্যাপ্টার লেখা খাতা ঠেলে দিয়ে গোধুলী দেখছি।পাশে কবিতার খাতা।"তাই বাংলা সাহিত্যজগৎ দিগ্বিজয় করতে করতে তিনি নিজে যখন একে একে " আনন্দ পুরস্কার" দুবার ১৯৯০,১৯৯৮, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমী পুরস্কার, সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণ ইত্যাদি নানা সম্মানের সুবর্ণপালক নিজের শিরমুকুটে নিয়ত সন্নিবেশ করছেন, তখনও তাঁর মরমী হৃদয়জুড়ে অনন্য রক্তক্ষরণ- সমগ্র মানবজাতির আকন্ঠ বেদনার প্রতি এক অভূতপূর্ব সমানুভূতি। তাই মানবপ্রেমিক কবি তাঁর "প্রেমিক" কবিতায় বলেন-
"অথচ আজকেই যে আমার লাইব্রেরী দেখতে আসছে বন্ধুরা,/আমার পড়াশুনা আছে কিনা জানার জন্য।/ তাদের আমি কী দেখাবো!/ তাদের সামনে কোনমুখে দাঁড়াবো আমি।"

==========================
৯.
জয়
পার্থ সারথি চক্রবর্তী 

প্রথম যেদিন হাতে পেলাম 'এক '
 ' বজ্র বিদ্যুৎ ভর্তি খাতা ',মনে হল,
' ও: স্বপ্ন ', আজ আর কোন 'বিষাদ' নেই।
আজ আর ভেসে যাওয়া নেই-
কোন এক ' আলেয়া হ্রদ 'এ ।
' উন্মাদের পাঠক্রম ' শেষ করে,
' ভুতুম ভগবান ' কে উপাসনা করে;
ফিরে এসে সোচ্চারে বলি,
দৃপ্তকন্ঠে বলি তোমাকে ভালবাসি।
' ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ' হাতে নিয়ে, 
' আজ যদি আমাকে জিগ্যেস করো '
' ঘুমিয়েছো, ঝাউপাতা? '- আমি
ঈশ্বর আর প্রেমিকের সংলাপের শপথ নিয়ে 
মেঘবালিকার রূপকথা শুনে যাই-
গোলাপজঙ্গলে, কখনো বা ঘাসবনে বসে।
দুর্বোধ্য কবিতার বই হাতে,বেণীমাধবকে পাশে নিয়ে।

========================
১০.

জয় গোস্বামীর কবিতায় দোলের অনুষঙ্গ

সুবীর ঘোষ

 

কবি জয় গোস্বামী তাঁর অনবদ্য ছন্দগঠন ও বিস্তৃত কল্পনা- প্রসারণের জন্য সুবিদিত । তাঁর শব্দসন্ধান এবং একটি কবিতাকে শেষ পর্যন্ত দাঁড় করানো প্রশংসার দাবি রাখে । যথেষ্ট পরিসরের অভাবে এই লেখায় খুব বেশি কবিতার উদ্ধৃতি দেবার সুযোগ নেই । আমরা মোটামুটি একই ভাবনার ওপর আধারিত তাঁর দুটি কবিতার সাহায্য নেব ।

শান্তিনিকেতনের বসন্তোৎসবের খ্যাতি জগতজোড়া । সেই দোল-সমারোহের আবেশে আমরা পড়ে নিতে পারি তাঁর কবিতা—

বকুল শাখা পারুল শাখা

তাকাও কেন আমার দিকে ?

মিথ্যে জীবন কাটলো আমার

ছাই লিখে আর ভস্ম লিখে—

কী করে আজ আবীর দেবো

তোমাদের ওই বান্ধবীকে !

            ( দোলঃ শান্তিনিকেতন )

দোলের অনুষ্ঠানে যত প্রমোদ অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের । সে কথাই ধ্বনিত হচ্ছে তাঁর আর একটি কবিতায়—

ওরা কেমন ভেসে আসছে, দোলের ছেলে দোলের মেয়ে

সারা শরীর আবীর ওদের, পায়ের তলায় সমুদ্র থৈ থৈ

                                     ( শুকনো পাতার ডালে )

===========================
১১.

তোমায় ভালবাসি জয়
দেবাশিস চক্রবর্তী

আমার ভাবনায় তুমি কবি !
আমার চিন্তায় তুমি কবি !
আমার ভাঙা হৃদয়ের চেতনায় তুমি কবি !
আমার মন তোমার কল্পনাকে ছুঁতে চায় ।
আমার স্বপ্ন, একটু একটু করে তুমি হয়ে ওঠায় ।
আমি তোমার মতো করে প্রকৃতিকে ভালবাসতে চাই ,
আমি তোমার মতো করে মানুষকে চিনতে চাই ।
আমি তোমার মতো করে লিখে যেতে চাই বাস্তবের জলছবি ।
আমি মিশতে চাই তোমার রানাঘাটের কৈশোরে ,
আমি দেখতে চাই তোমার ১৯৫৪ র শৈশব !
আমি তোমার যৌবনের ভালোবাসার হদিস পেতে চাই।
আমি তোমার কবিতা, গল্প কিংবা উপন্যাসের চরিত্র হতে চাই ।
আমি তোমার সাথে লুকোচুরি খেলতে চাই কবি ,
আমি তোমাতে মিসে যেতে চাই ।
আমি তোমার মস্তিষ্কে বানাতে চাই একটা ছোট্টো বসত বাটি,
সেখানে বসে আমি তোমার কল্পনার প্রবাহ দেখতে চাই ।
আমি তোমাতে লীন হয়ে কাটিয়ে উঠতে চাই সমস্ত ভয়,
তুমিই আমার প্রিয় কবি
আমি তোমায় বড়ো ভালবাসি জয়.

=============================
১২.

অনন্য প্রতিভা- কবি জয় গোস্বামী
মহিম চক্রবর্তী

"অতল তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে
হৃদি ভেসে গেল অলকানন্দার জলে "
এই অভিব্যক্তির প্রবক্তা জীবনানন্দোত্তর যুগের জনপ্রিয় কবি জয় গোস্বামী।
১৯৫৪, ১০ ই নভেম্বর কোলকাতা শহরে জন্ম হলেও পরিবারের স্থানান্তরের কারণে স্থায়ীনিবাস হয় নদীয়ার রানাঘাটে । পিতা মধু গোস্বামী ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী । মাত্র আট বছর পাঁচ মাস বয়সে পিতৃহারা হলেও মায়ের দ্বারাই লালিত পালিত ও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন আজকের অনন্য কবি ।
একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় প্রথাগত শিক্ষা ত্যাগ করার পর কবিতা লিখতে শুরু করেন। ১৩ বছর বয়সে বাড়ির পুরানো সিলিং ফ্যান নিয়ে লেখা কবিতাটি একসাথে তিনটি পত্রিকায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে সাহিত্য জগতে প্রকাশ।" ক্রিশমাস ও শীতের সনেট গুচ্ছ"(১৯৭৬) কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ । "প্রত্নজীব"," আলেয়া হ্রদ", "ভুতুম ভগবান" প্রভৃতির মত ত্রিশটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। " মনোরমের উপন্যাস", "সেইসব শেয়ালেরা", প্রভৃতির মত আট টি উপন্যাস ও " কবির গল্প" গল্প সংকলন, " হৃদয়ে প্রেমের শীর্ষ", "রৌদ্রছায়ার সংকলন" প্রবন্ধ রচনা করেন।
   কবি পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পু্রস্কার, আনন্দ পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার, ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার, বঙ্গবিভুষণ পুরস্কার প্রভৃতি পুরস্কারে পুরস্কিত হয়েছেন।

==========================


ব্যক্তি পরিচয় :

জয় গোস্বামীর জন্ম ১৯৫৪ সালের ১০ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত কলকাতা শহরে। ছোটবেলায় তাঁর পরিবার রানাঘাটে চলে আসে। তখন থেকেই তাঁর স্থায়ী নিবাস সেখানে। তাঁর পিতা মধু গোস্বামী ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী রাজনীতি করতেন। তাঁর যখন আট বছর পাঁচ মাস বয়স তখন পিতৃহারা হন। তাঁর মা শিক্ষকতা করে তাঁকে লালন পালন করেন। প্রথম কবিতা লিখেছিলেন ১৩-১৪ বছর বয়সে। নিয়মিত কবিতা লিখতে শুরু করেন ১৬-১৭ বছর বয়সে। তিনি ছেলেবেলা থেকে খুব গান শুনতেন। গানের সুর থেকে বাণী তাঁকে খুব আকর্ষণ করতো। এ আকর্ষণেই তার অন্তর্জগতে কবিতার জন্ম হতে থাকে। ছেলেবেলায় এক অনুষ্ঠানে বনলতা সেন কবিতাটির আবৃত্তি শুনে কবিতার গঠন, রচনাশৈলী ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে তার প্রথাগত ধারণা আমূল বদলে যায়।[২]

জয় গোস্বামীর প্রথাগত লেখা পড়ার পরিসমাপ্তি ঘটে একাদশ শ্রেণীতে থাকার সময়। সত্তরের দশকে তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। সাময়িকী ও সাহিত্য পত্রিকায় তিনি কবিতা লিখতেন। এভাবে অনেক দিন কাটার পর দেশ পত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয়। এর পরপরই তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন পরে তাঁর প্রথম কাব্য সংকলন ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঘুমিয়েছ, ঝাউপাতা কাব্যগ্রন্থের জন্য আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ২০০০ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে তিনি পাগলী তোমার সঙ্গে কাব্য সংকলনের জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন।

জয় গোস্বামীর ভাষায়, ‘‘আমার প্রতিদিনের জীবনে মনের ভেতর যে ভাষা জন্মায়, যে অভিজ্ঞতা জন্ম নেয়, তাকে ভাষা দেওয়ার চেষ্টা করি।’’ তিনি আরো বলেন, “আমার জীবন হচ্ছে ধারাবাহিক বিচ্ছেদের মালা গাঁথার ইতিহাস। আমার মাস্টার মশাই, আমার মা, আমার ভাই, আমার বন্ধু, নারী, সহকর্মী, যাঁরা আমার জীবনে এসেছেন, তাঁরা কেউ আমাকে নিয়ে সুখী নন। তাঁরা কোনো না কোনো কারণে হতাশ বা আমাকে নিয়ে ক্লান্ত।” তার প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শঙ্খ ঘোষ।

প্রকাশিত বই :

তাঁর প্রথম কবিতার বই 'ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ' প্রকাশিত হয় ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে।এটি ছিল মাত্র আটটি কবিতার একটি ক্ষীণতনু কবিতা-সংকলন। মায়ের থেকে টাকা নিয়ে তিনি এই বইটির প্রকাশনা বাবদ মোট ১৪৫ টাকা ব্যয় হয়েছিল। মায়ের টাকাতেই ১৯৭৮-এ তিনি প্রকাশ করেছিলেন ২য় কাব্যগ্রন্থ প্রত্নজীব। অতঃপর কবি শঙ্খ ঘোষ তাকে প্রকাশক জুটিয়ে দেন এবং ১৯৮১-তে তার তৃতীয় কাব্য আলেয়া হ্রদ প্রকাশিত হয়।

কাব্যগ্রন্থ :

ক্রিসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ (১৯৭৬)
আলেয়া হ্রদ (১৯৮১)
উন্মাদের পাঠক্রম (১৯৮৬)
ভূতুমভগবান (১৯৮৮)
নুন()
ঘুমিয়েছো, ঝাউপাতা? (১৯৮৯)
আজ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করো
বজ্র বিদ্যুৎ ভর্তি খাতা (১৯৯৫) আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৩৯৯-৬
ওঃ স্বপ্ন (১৯৯৬)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৫১২-৩
পাগলী, তোমার সঙ্গে (১৯৯৪)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-২৯০-৬
পাতার পোষাক (১৯৯৭)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৬৭২-৩
বিষাদ (১৯৯৮) আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৭৮৬-X
যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল (১৯৯৮)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৫৬৬-২
মা নিষাদ (১৯৯৯)
সূর্য পোড়া ছাই (১৯৯৯)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৭৭৩-৮
জগৎবাড়ি (২০০০) আইএসবিএন ৮১-৭৭৫৬-১০৭-৩
কবিতাসংগ্রহ (১৯৯৭-২০০১)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৯৪৬-৩
প্রেতপুরুষ ও অনুপম কথা (২০০৪)আইএসবিএন ৮১-৭৭৫৬-৪০২-১

উপন্যাস ও অন্যান্য :

হৃদয়ে প্রেমের শীর্ষ (১৯৯৪) আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-২৯৩-০
মনোরমের উপন্যাস (১৯৯৪) আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-২২২-১
সেইসব শেয়ালেরা (১৯৯৪)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৩১৬-৩
সুড়ঙ্গ ও প্রতিরক্ষা (১৯৯৫)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৪২০-৮
রৌদ্রছায়ার সংকলন (১৯৯৮)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৮২১-১
সংশোধন বা কাটাকুটি (২০০১)আইএসবিএন ৮১-৭৭৫৬-১২৪-৩
সাঁঝবাতীর রূপকথারা (২০০১)আইএসবিএন ৮১-৭২১৫-৮৩৯-৪
দাদাভাইদের পাড়া
ব্রহ্মরাক্ষস
সব অন্ধকার ফুলগাছ

পুরস্কারসমূহ :

পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি থেকে অনিতা-সুনিল বসু পুরস্কার
আনন্দ পুরস্কার (১৯৯০), (১৯৯৮)
সাহিত্য অকাদেমী পুরস্কার (২০০০)
ভারতীয় ভাষা পরিষদ (২০১০)
রচনা সমগ্র পুরস্কার (২০১১)
বঙ্গবিভূষণ (২০১২)
জীবনের বিশেষ বিশেষ মুহূর্ত -

    আল মাহমুদের সঙ্গে
 কবি শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে
==================================


No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...