Monday, 25 January 2021

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
       ৭২ তম প্রজাতন্ত্র দিবস
    ভারতীয় সংবিধান
=================================
     Doinik Sabder Methopath
     Vol -262. Dt -26.01.2021
        ১২ মাঘ, ১৪২৭. মঙ্গলবার
=================================
১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদে ২৮৪ জনের সই করলে গৃহীত হয়, ভারতীয় সংবিধান এবং এই দিনটি জাতীয় আইন দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে এই সংবিধান কার্যকরী হয়। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক স্বাধীনতা ঘোষণার স্মৃতিতে ২৬ জানুয়ারি তারিখটি সংবিধান প্রবর্তনের জন্য গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানে ভারতীয় রাজ্যসংঘকে একটি সার্বভৌমসমাজতান্ত্রিকধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র রূপে ঘোষণা করা হয়েছে; এই দেশের নাগরিকবৃন্দের জন্য ন্যায়বিচার, সাম্য ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্য নাগরিকদের পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃভাব জাগরিত করে তোলার জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। "সমাজতান্ত্রিক", "ধর্মনিরপেক্ষ" ও "সংহতি" এবং সকল নাগরিকের মধ্যে "ভ্রাতৃভাব" – এই শব্দগুলি ১৯৭৬ সালে একটি সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে ভারতীয়রা প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপন করেন।ভারতের সংবিধান বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বৃহত্তম লিখিত সংবিধান। এই সংবিধানে মোট ২৪টি অংশে ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল এবং ১১৩টি সংশোধনী বিদ্যমান। ভারতের সংবিধানের ইংরেজি সংস্করণে মোট শব্দসংখ্যা ১১৭,৩৬৯। এই সংবিধানের প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পূর্বপ্রচলিত ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের অবসান ঘটে। দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ার দরুন, ভারত সরকার প্রবর্তিত প্রতিটি আইনকে সংবিধান-অনুসারী হতে হয়। সংবিধানের খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান ড. ভীমরাও রামজি আম্বেডকর ছিলেন ভারতীয় সংবিধানের প্রধান স্থপতি।
প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত ভারতের গণপরিষদ সংবিধানের খসড়াটি রচনা করে। জওহরলাল নেহরু, চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নলিনীরঞ্জন ঘোষ প্রমুখেরা ছিলেন এই গণপরিষদের প্রধান ব্যক্তিত্ব। তফসিলি শ্রেণীগুলি থেকে ৩০ জনেরও বেশি সদস্য ছিলেন। ফ্র্যাঙ্ক অ্যান্টনি ছিলেন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের, এবং এইচ. পি. মোদী ও আর. কে. সিধওয়া ছিলেন পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য। সংখ্যালঘু কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন হরেন্দ্রকুমার মুখোপাধ্যায়; তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট খ্রিস্টান এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান ব্যতীত অন্যান্য ভারতীয় খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি। অরি বাহাদুর গুরুং ছিলেন গোর্খা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। বিশিষ্ট জুরি আল্লাদি কৃষ্ণস্বামী আইয়ার, বি. আর. আম্বেডকর, বেনেগাল নরসিং রাউ এবং কে. এম. মুন্সি, গণেশ মভলঙ্কার প্রমুখেরাও গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। বিশিষ্ট মহিলা সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরোজিনী নাইডু, হংস মেহেতা, দুর্গাবাই দেশমুখ ও রাজকুমারী অমৃত কৌর। সচ্চিদানন্দ সিনহা ছিলেন গণপরিষদের প্রথম সভাপতি। পরে রাজেন্দ্র প্রসাদ এর নির্বাচিত সভাপতি হন।[৮]

খসড়া রচনা 
১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট পরিষদের অধিবেশনে একাধিক কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই কমিটিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মৌলিক অধিকার কমিটি, কেন্দ্রীয় ক্ষমতা কমিটি ও কেন্দ্রীয় সংবিধান কমিটি। ১৯৪৭ সালের ২৯ অগস্ট ড. বি. আর. আম্বেডকরের নেতৃত্বে খসড়া কমিটি গঠিত হয়। ড. আম্বেডকর ছাড়াও এই কমিটিতে আরও ছয় জন সদস্য ছিলেন। কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে সেটি ১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বরের মধ্যে গণপরিষদে পেশ করেন।

গণপরিষদ সংবিধান রচনা করতে ২ বছর ১১ মাস ১৮ দিন সময় নিয়েছিল। এই সময়কালের মধ্যে ১৬৬ দিন গণপরিষদের অধিবেশন বসে।একাধিকবার পর্যালোচনা ও সংশোধন করার পর ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি গণপরিষদের মোট ৩০৮ জন সদস্য সংবিধান নথির দুটি হস্তলিখিত কপিতে (একটি ইংরেজি ও একটি হিন্দি) সই করেন। দুই দিন বাদে এই নথিটি ভারতের সর্বোচ্চ আইন ঘোষিত হয়।

পরবর্তী ৭০ বছরে ভারতের সংবিধানে মোট ১২৪টি সংশোধনী আনা হয়েছে।
বর্তমানে ভারতের সংবিধান একটি প্রস্তাবনা, ২৪টি অংশে বিভক্ত ৪৪৮টি ধারা, ১২টি তফসিল, ৫টি পরিশিষ্ট[৯] ও মোট ১১৩টি সংশোধনী নিয়ে লিখিত।

অংশ 
সংবিধানের পৃথক পৃথক অধ্যায়গুলি অংশ নামে পরিচিত। প্রত্যেকটি অংশে আইনের এক একটি ক্ষেত্রে আলোচিত হয়। অংশের ধারাগুলির উপজীব্য হল নির্দিষ্ট বিষয়গুলি।

প্রস্তাবনা
প্রথম অংশ[১১] - ইউনিয়ন ও তার এলাকাসমূহ।
দ্বিতীয় অংশ[১২] - নাগরিকতা.
তৃতীয় অংশ[১৩] –মৌলিক অধিকার
চতুর্থ অংশ[১৪] - নির্দেশমূলক নীতি ও মৌলিক কর্তব্য।
পঞ্চম অংশ[১৫] - কেন্দ্র।
ষষ্ঠ অংশ[১৬] - রাজ্য।
সপ্তম অংশ[১৭] - প্রথম তফসিলের খ শ্রেণীর রাজ্য (প্রত্যাহৃত)।
অষ্টম অংশ[১৮] - কেন্দ্রশাসিত রাজ্য।
নবম অংশ[১৯] - পঞ্চায়েত ও পৌরশাসন ব্যবস্থা
দশম অংশ – তফসিলি ও আদিবাসী এলাকা।
একাদশ অংশ – কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক।
দ্বাদশ অংশ – অর্থ, সম্পত্তি, চুক্তি ও মামলা।
ত্রয়োদশ অংশ – অভ্যন্তরীণ ব্যবসা ও বাণিজ্য।
চতুর্দশ অংশ – কেন্দ্র, রাজ্য ও ট্রাইব্যুনালের অধীনস্থ কৃত্যক।
পঞ্চদশ অংশ - নির্বাচন।
ষোড়শ অংশ – কিছু সামাজিক শ্রেণীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।
সপ্তদশ অংশ – ভাষা।
অষ্টাদশ অংশ – জরুরি অবস্থা।
ঊনবিংশ অংশ – বিবিধ।
বিংশ অংশ – সংবিধান সংশোধন
একবিংশ অংশ – সাময়িক, পরিবর্তনশীল ও বিশেষ ব্যবস্থা
দ্বাবিংশ অংশ - ক্ষুদ্র শিরোনাম, শুরুর তারিখ, প্রামাণ্য হিন্দি সংস্করণ ও প্রত্যাহারসমূহ
ত্রয়োবিংশ অংশ - সাময়িক, পরিবর্তনশীল ও বিশেষ ব্যবস্থা
চতুর্বিংশ - সাময়িক, পরিবর্তনশীল ও বিশেষ ব্যবস্থা.

তফসিল 
সরকারের আমলাতান্ত্রিক কাজকর্ম ও নীতিগুলির বর্গবিভাজন ও সারণিকরণ করা হয়েছে তফসিলগুলিতে।

প্রথম তফসিল (ধারা ১ – ৪) — রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল – এখানে ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির তালিকা দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে কোনো পরিবর্তন বা যে আইনের দ্বারা পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তারও তালিকা এখানে রয়েছে।
দ্বিতীয় তফসিল (ধারা ৫৯, ৬৫, ৭৫, ৯৭, ১২৫, ১৪৮, ১৫৮, ১৬৪, ১৮৬ ও ২২১) — উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বেতন – সরকারি কার্যালয়ের আধিকারিক, বিচারপতি ও ভারতের কন্ট্রোলার ও অডিটর-জেনারেলের বেতনের তালিকা এখানে রয়েছে।
তৃতীয় তফসিল (ধারা ৭৫, ৯৯, ১২৪, ১৪৮, ১৬৪, ১৮৮ ও ২১৯) — শপথ – নির্বাচিত আধিকারিক ও বিচারপতিদের শপথ।
চতুর্থ তফসিল (ধারা ৪ ও ৮০) — রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অনুসারে রাজ্যসভার আসন সংখ্যা।
পঞ্চম তফসিল (ধারা ২৪৪) — তফসিলি এলাকা[Note ১] ও তফসিলি উপজাতি [Note ২] প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রণ (প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য যেসকল এলাকা ও উপজাতির বিশেষ সুরক্ষা প্রয়োজন, সেই সব ক্ষেত্রে)।
ষষ্ঠ তফসিল (ধারা ২৪৪ ও ২৭৫) —অসম, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের উপজাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলের প্রশাসন।
সপ্তম তফসিল (ধারা ২৪৬) — কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও যুগ্ম দায়িত্ব তালিকা।
অষ্টম তফসিল (ধারা ৩৪৪ ও ৩৫১) — সরকারি ভাষাসমূহ।
নবম তফসিল (ধারা ৩১-খ) — ভূমি ও ভূম্যধিকারী সংস্কার; সিক্কিমের ভারতভুক্তি। এটি আদালত কর্তৃক পর্যালোচিত হতে পারে।
দশম তফসিল (ধারা ১০২ ও ১৯১) — সাংসদ ও বিধায়কদের "দলত্যাগ-রোধ" সংক্রান্ত বিধি।
একাদশ তফসিল (ধারা ২৪৩-ছ) — পঞ্চায়েত বা গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসন।
দ্বাদশ তফসিল (ধারা ২৪৩-প) — পৌরসভা।

আম্বেডকরের মতে, ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত কেন্দ্রীয় সরকারের মূল রূপটি নিম্নরূপ:

“ A democratic executive must satisfy three conditions:
1. It must be a stable executive, and
2. It must be a responsible executive.
3. It must be impartial to all religion, caste and community. Unfortunately, it has not been possible so far to devise a system which can ensure both conditions in equal degree. ..... The daily assessment of responsibility, which is not available in the American system is, it is felt, far more effective than the periodic assessment and far more necessary in a country like India. The Draft Constitution in recommending the parliamentary system of Executive has preferred more responsibility to stability.


আ) 
ভারতীয় সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

১)বিশ্বের দীর্ঘতম ও জটিলতম সংবিধান [Largest and Rigid Constitution]
২) সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় [Flexible]
৩) যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো [Federal]
৪)নাগরিকের মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি [Fundamental right]
৫) নির্দেশমূলক নীতির সংযোজন [Directive Principle]
৬) সংসদীয় শাসনব্যবস্থা [Parliamentary System]
৭)এক নাগরিকত্ব [Single Citizenship]
৮)মৌলিক কর্তব্য [Fundamental Duties]
৯)ধর্ম নিরপেক্ষতা
১০)এককেন্দ্রিকতা
১১)দায়িত্বশীল সরকার
১২)সার্বজনীন ভোটাধিকার
১৩)বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

  আ)
        যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান

ভারতের সংবিধানের সকল অংশকে একই পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা যায় না। গুরুত্ব অনুসারে বিভিন্ন অংশের সংশোধনীর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।

সংশোধনের কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হলো -

জুন, ১৯৫১ ১ম সংশোধন ১৮ জুন ১৯৫১ ভূসম্পত্তি ও মধ্যসত্ত্বভোগী সংক্রান্ত রাজ্য বিধানসভার আইনকে বৈধতা দান করা হয়।
১৯৫২ ২য় সংশোধন ১ মে ১৯৫৩ সংসদে রাজ্যের প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে পরিবর্তন আনীত হয়।
১৯৫৪ ৩য় সংশোধন ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৫ রাজ্য, কেন্দ্র ও যুগ্ম তালিকা সংশোধন করা হয়।
১৯৫৫ ৪র্থ সংশোধন ২৭ এপ্রিল ১৯৫৫ জমি অধিগ্রহণ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের বিষয়টিকে আদালতের এক্তিয়ারের বাইরে রাখা হয়।
১৯৫৫ ৫ম সংশোধন ২৪ ডিসেম্বর ১৯৫৫ রাজ্য পুনর্গঠন বিষয়ে রাজ্যের মতামত জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
১৯৫৬ ৬ষ্ঠ সংশোধন ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৫৬ পণ্য বিক্রয়ের উপর কর সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবর্তনের জন্য সংবিধানের ২৬৯ ও ২৮৬ নং ধারা সংশোধন করা হয়।
১৯৫৬ ৭ম সংশোধন ১ নভেম্বর ১৯৫৬ রাজ্য পুনর্গঠন বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তকে কার্যকর করা হয়।
১৯৫৯ ৮ম সংশোধন ৫ জানুয়ারি ১৯৬০ তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা ১০ বছরের বদলে ২০ বছর করা হয়।
১৯৬০ ৯ম সংশোধন ২৮ ডিসেম্বর ১৯৬০ বেরুবাড়ি হস্তান্তর সম্পর্কে ভারত-পাকিস্তান চুক্তিকে কার্যকর করার জন্য সংবিধান সংশোধন করা হয়।
১৯৬১ ১০ম সংশোধন ১১ অগস্ট ১৯৬১ পূর্বতন পর্তুগিজ অধিকারভুক্ত দাদরা ও নগর হাভেলি ভারতভুক্ত হয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৬১ ১১শ সংশোধন ১৯ ডিসেম্বর ১৯৬১ এই সংশোধন দ্বারা নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনো শূন্যতার কারণে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচনের বৈধতা সম্পর্কে যেন কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত না হতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়।
১৯৬১ ১২শ সংশোধন ২০ ডিসেম্বর ১৯৬১ সংবিধানের ২৪০ নং ধারা এবং প্রথম তফসিল সংশোধনের মাধ্যমে গোয়া, দমন ও দিউকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দান করা হয়।
১৯৬২ ১৩শ সংশোধন ১ ডিসেম্বর ১৯৬৩ এই সংশোধনীবলে নাগাল্যান্ডের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় কয়েকটি বিশেষ বিষয় যুক্ত করা হয়। উক্ত রাজ্যের রাজ্যপালকে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয় এবং নাগাল্যান্ড আইনসভার গঠন সম্পর্কেও উল্লেখ করা হয়।
১৯৬২ ১৪শ সংশোধন ২৮ ডিসেম্বর ১৯৬২ ফরাসি-অধিকৃত পন্ডিচেরী ভারতভুক্ত হয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৬৩ ১৫শ সংশোধন ৫ অক্টোবর ১৯৬৩ সংবিধানের ১২৪, ১২৮, ২১৭, ২২২, ২২৫-ক, ২২৬, ২৯৭ ও ৩১১ নং ধারাগুলিকে সংশোধন করা হয়।
১৯৬৩ ১৬শ সংশোধন ৫ অক্টোবর ১৯৬৩ সংবিধানের ১৯ নং ধারায় যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ অংশটি সংশোধিত করে ‘ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার’ ভিত্তিতে যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ আরোপের ব্যবস্থা কতা হয়। এছাড়াও সংবিধানের ৮৪ ও ১৭৩ নং ধারা সংশোধন করে বলা হয়, রাজ্য বিধানসভা ও সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সংবিধানের প্রতি এবং ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার শপথ গ্রহণ করতে হবে।
১৯৬৪ ১৭শ সংশোধন ২০ জুন ১৯৬৪ এই সংশোধনীর মাধ্যমে সম্পত্তির অধিকার সংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয় সংশোধন করা হয়।
১৯৬৬ ১৮শ সংশোধন ২৭ অগস্ট ১৯৬৬ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির নাম ও সীমানা পরিবর্তনের একচ্ছত্র ক্ষমতা সংসদের হাতে অর্পিত হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা লোপ করা হয়।
১৯৬৬ ১৯শ সংশোধন ১১ ডিসেম্বর ১৯৬৬ নির্বাচনী ট্রাইবুন্যালের বদলে হাইকোর্টকে সংসদ ও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার অধিকার দেওয়া হয়।
১৯৬৬ ২০শ সংশোধন ২২ ডিসেম্বর ১৯৬৬ জেলাশাসকদের সিদ্ধান্তের বৈধতা ঘোষিত হয়
১৯৬৭ ২১তম সংশোধন ১০ এপ্রিল ১৯৬৭ সিন্ধি ভাষাকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়।
১৯৬৯ ২২তম সংশোধন ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ অসম রাজ্যের পুনর্গঠন করা হয়।
১৯৭০ ২৩তম সংশোধন ২৩ জানুয়ারি ১৯৭০ লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি মাস অবধি বাড়ানো হয়।
১৯৭১ ২৪তম সংশোধন ৫ নভেম্বর ১৯৭১ সংবিধানের ১৩ ও ৩৬৮ নং ধারাদুটি সংশোধন করে সংসদকে মৌলিক অধিকার সংশোধন করার অধিকার দেওয়া হয়। মৌলিক অধিকার সংশোধনী বিল সংসদে পাস হলে রাষ্ট্রপতি সেই বিলে সাক্ষর করতে বাধ্য থাকেন।
১৯৭১ ২৫তম সংশোধন ২০ এপ্রিল ১৯৭২ সরকারি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়টি সংশোধন করা হয়।
১৯৭১ ২৬তম সংশোধন ২৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ প্রাক্তন দেশীয় রাজ্যের শাসকদের রাজন্যভাতা বিলোপ করা হয়।
১৯৭১ ২৭তম সংশোধন ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পুনর্বিন্যাসের বন্দোবস্ত করা হয়।
১৯৭১ ২৮তম সংশোধন ২৯ অগস্ট ১৯৭২ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে নিযুক্ত কর্মচারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা অবলুপ্ত করা হয়।
১৯৭২ ২৯তম সংশোধন ৯ জুন ১৯৭২ কেরল রাজ্যের দুটি ভূমিসংস্কার আইন সংবিধানের নবম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৭২ ৩০তম সংশোধন ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩ দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার জন্য যে অর্থের পরিমাণের বিষয় উল্লিখিত ছিল, তা বাতিল করা হয়।
১৯৭৩ ৩১তম সংশোধন ১৭ অক্টোবর ১৯৭৩ লোকসভার সদস্যসংখ্যা ৫২৫ থেকে বাড়িয়ে ৫৪৫ করা হয়।
১৯৭৪ ৩২তম সংশোধন ১ জুলাই ১৯৭৪ অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের জন্য বিশেষ সাংবিধানিক ব্যবস্থা গৃহীত হয়।
১৯৭৪ ৩৩তম সংশোধন ১৯ মে ১৯৭৪ আইনসভার সদস্যদের যাতে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পদত্যাগে বাধ্য না করা যায়, সেজন্য সংবিধানের ১০১ ও ১৯০ নং ধারাদুটি সংশোধন করে পদত্যাগের কার্যকারিতা সংশ্লিষ্ট কক্ষের অধ্যক্ষের পদত্যাগপত্র গ্রহণের উপর নির্ভর করবে বলে স্থির করা হয়।
১৯৭৪ ৩৪তম সংশোধন ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ ২০টি রাজ্য বিল সংবিধানের নবম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে এই আইনগুলির সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জের বিষয়টি আদালতের এক্তিয়ারের বাইরে চলে যায়।
১৯৭৪ ৩৫তম সংশোধন ১ মার্চ ১৯৭৫ সিক্কিম ভারতের সহযোগী রাজ্যের মর্যাদা পায়।
১৯৭৫ ৩৬তম সংশোধন ২৬ এপ্রিল ১৯৭৫ সিক্কিম ভারতের পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা পায়।
১৯৭৫ ৩৭তম সংশোধন ৩ মে ১৯৭৫ অরুণাচল প্রদেশে একটি বিধানসভা ও মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হয়।
১৯৭৫ ৩৮তম সংশোধন ১ অগস্ট ১৯৭৫ কয়েকটি বিষয়কে আদালতের পর্যালোচনা-বহির্ভূত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই সংশোধনীবলে অর্ডিন্যান্স জারির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসকদের সন্তুষ্টি ও সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত ঘোষণা করা হয়।
১৯৭৫ ৩৯তম সংশোধন ১০ অগস্ট ১৯৭৫ ৩৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় আইনকে সংবিধানের নবম তফসিলভুক্ত করা হয়। এছাড়া রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং লোকসভার অধ্যক্ষদের নির্বাচন-সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তির দায়িত্ব হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের হাত থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে একটি কাউন্সিলের হাতে অর্পণ করা হয়।
১৯৭৬ ৪০তম সংশোধন ২৭ মে ১৯৭৬ ভূমিসংস্কার, জমির উর্ধ্বসীমা, চোরাচালানকারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ সম্পর্কিত কয়েকটি আইনকে সংবিধানের নবম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৭৬ ৪১তম সংশোধন ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ রাজ্য রাষ্ট্রকৃত্যকের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবসর গ্রহণের বয়স ৬০ থেকে ৬২ বছর করা হয়।
১৯৭৬ ৪২তম সংশোধন বা ক্ষুদ্র সংবিধান ৩ জানুয়ারি ১৯৭৭, ১ এপ্রিল ১৯৭৭ এই সংশোধনের ভারতের সংবিধানের বৃহত্তম সংশোধন। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে কৃত এই সংশোধনের বাহুল্যের কারণে এটিকে ক্ষুদ্র সংবিধান বা মিনি-কনস্টিটিউশন আখ্যা দেওয়া হয় :
এই সংশোধনে প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দদুটি যোগ করে ভারতকে একটি ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’ রূপে ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া প্রস্তাবনায় ‘ঐক্য’-এর পরে ‘সংহতি’ শব্দটিও যুক্ত হয়।
নির্দেশমূলক নীতির আলোচ্য বিষয়ে সংখ্যা বাড়ানো হয়। বেশ কয়েকটি নতুন বিষয় যুক্ত করা হয় : শিশুদের সুস্থ ও স্বাধীনভাবে এবং মর্যাদার সঙ্গে বেড়ে উঠতে পারার জন্য সমান সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা, সমান সুযোগের ভিত্তিতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন, শিল্প পরিচালন ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ এবং দেশের অরণ্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। এই সংশোধনীবলে উক্ত অংশগুলি সংযোজনের জন্য সংবিধানের ৩৯ নং ধারা সংশোধন করা হয় এবং মৌলিক অধিকারের উপর নির্দেশমূলক নীতির প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
মূল সংবিধানে নাগরিকদের কোনও কর্তব্যের উল্লেখ ছিল না। এই সংশোধনীবলে ভারতীয় নাগরিকদের ১০টি কর্তব্যের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়।
এই সংশোধনী বলে ভারতের রাষ্ট্রপতির পদমর্যাদা ও প্রশাসনিক ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ের কয়েকটি গুণগত পরিবর্তন করা হয়। মূল সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতিকে সাহায্য ও পরামর্শদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পরিচালনাধীন একটি মন্ত্রিপরিষদের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছিল; কিন্তু রাষ্ট্রপতি যে উক্ত মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য, সেকথার উল্লেখ ছিল না। ৪২তম সংবিধান সংশোধনে স্পষ্টরূপে উল্লিখিত হয় যে রাষ্ট্রপতি তার কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদের সাহায্য ও পরামর্শ গ্রহণে বাধ্য।
লোকসভা ও রাজ্যসভার মেয়াদ ছয় বছর করা হয়। স্থির হয় ২০০০ সালের জনগণনার হিসাব পাওয়ার পূর্বাবধি আসন বণ্টনের রাষ্ট্রপতির আদেশের দ্বারা নির্ধারিত হবে।
রাষ্ট্রপতিকে দেশের কোনও অংশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা প্রদান করা হয়। এছাড়া, সংবিধানের ৩৫৬ ধারা সংশোধন করে বলা হয়, রাজ্যে শাসনতান্ত্রিক অচলাবস্থা সংক্রান্ত কোনও ঘোষণাকে সংসদের অনুমোদনের জন্য পেশ করলে এবং সংসদ তা অনুমোদন করলে ওই ঘোষণা একবছর বলবৎ থাকবে। সংসদের অনুমোদনক্রমে মোট তিন বছর পর্যন্ত ওই ঘোষণা বলবৎ থাকতে পারে।
আদালত সংবিধান সংশোধন আইনের বৈধতা বিচারের এক্তিয়ার হারায়। এই সংশোধনীবলে কেবলমাত্র সংবিধানে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে কিনা, আদালত শুধুমাত্র সেই বিষয়টিই বিবেচনার ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়।
এই সংশোধনীবলে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রভূত ক্ষমতা দেওয়া হয়। এই সংশোধনে একটি নতুন ধারা যোগ করে বলা হয় যে কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনে কোনো রাজ্যে সশস্ত্রবাহিনী পাঠাতে পারে এবং ওই সশস্ত্রবাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে।
এই সংশোধনী বলে সংবিধানের সপ্তম তফসিলভুক্ত যুগ্ম তালিকা সংশোধন করে শিক্ষা, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশে দেশের যে কোনও অংশে সশস্ত্রবাহিনী পাঠানো, বিচার পরিচালনা, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বাদে অন্যান্য আদালত গঠন, বন্যপ্রাণী ও পক্ষী সংরক্ষণ, জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা এবং শ্রমিকদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ যুগ্ম তালিকাভুক্ত করা হয়।
১৯৭৭ ৪৩তম সংশোধন ১৩ এপ্রিল ১৯৭৮ এই সংশোধনীবলে ৪২তম সংশোধনে সংযোজিত জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপ ও সংগঠন সম্পর্কে যে মন্তব্য যুক্ত করা হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টকে ৪২তম সংশোধনের পূর্বাবস্থার ক্ষমতা অর্থাৎ রাজ্য আইনের বৈধতা বিচারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে হাইকোর্টকে কেন্দ্রীয় আইনের বৈধতা বিচারের ক্ষমতাও ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
১৯৭৮ ৪৪তম সংশোধন ২০ জুন ১৯৭৯,
১অগস্ট ১৯৭৯,
৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ ৪২তম সংবিধান সংশোধনের কতকগুলি অংশ বাতিল করা হয়।
১৯৮০ ৪৫তম সংশোধন ২৫ জানুয়ারি ১৯৮০ তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় আসন সংরক্ষণের মেয়াদ আরও ১০ বছর বৃদ্ধি করা হয়।
১৯৮৩ ৪৬তম সংশোধন ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ রাজ্য সরকারগুলির আওতাভুক্ত বিক্রয়করের ত্রুটি সংশোধনের জন্য এই সংবিধান সংশোধন করা হয়।
১৯৮৩ ৪৭তম সংশোধন ২৬ অগস্ট ১৯৮৪ অসম, বিহার, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এবং গোয়া (তদনীন্তন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল) ও দমন ও দিউ-এর কয়েকটি ভূমিসংস্কার আইন সংবিধানের নবম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়। এর ফলে সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়ে আদালত বিচারের এক্তিয়ার হারায়।
১৯৮৪ ৪৮তম সংশোধন ১ এপ্রিল ১৯৮৫ পঞ্জাবে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ দু-বছর করা হয়।
১৯৮৪ ৪৯তম সংশোধন ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ ত্রিপুরা রাজ্যের স্বায়ত্তশাসিত উপজাতীয় জেলার সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য এই সংশোধনীটি আনা হয়।
১৯৮৪ ৫০তম সংশোধন ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ গোয়েন্দাগিরি বা গোয়েন্দাগিরি প্রতিরোধের জন্য গঠিত ব্যুরো বা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তি এবং কোনও বাহিনীর জন্য গঠিত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বা তৎসম্পর্কিত কোনও সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিদের দায়িত্বপালন ও শৃঙ্খলারক্ষার তাগিদে সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার বাতিল ও সীমিতকরণের বিষয়টি যুক্ত হয়।
১৯৮৪ ৫১তম সংশোধন ১৬ জুন ১৯৮৬ এই সংশোধনী আইনে সংবিধানের ৩৩০ নং ধারাটি সংশোধন করে বলা হয় যে একমাত্র অসমের স্বশাসিত জেলা ছাড়া অন্যান্য রাজ্যে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য লোকসভার আসন সংরক্ষিত থাকবে।
১৯৮৫ ৫২তম সংশোধন ১ মার্চ ১৯৮৫ এই সংশোধনে দলত্যাগের সংজ্ঞা নিরুপিত হয়।
অগস্ট, ১৯৮৬ ৫৩তম সংশোধন ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ এই সংশোধনীবলে উল্লেখ করা হয় যে, মিজোদের নিজস্ব সামাজিক নিয়মকানুন, দেওয়ানি ও প্রথাগত আইন, ভূমি হস্তান্তরের আইন কার্যকর থাকবে। একমাত্র মিজোরাম বিধানসভা প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী হবেন। মিজোরাম চুক্তির পূর্বে মিজোরামে যে আইন কার্যকর ছিল, তার পরিবর্তে সংসদ প্রণীত আইন কার্যকর হবে না। মিজোরামের বিধানসভা হবে ৪০ সদস্যের।
১৯৮৬ ৫৪তম সংশোধন ১ এপ্রিল ১৯৮৬ এই সংশোধনীবলে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি করা হয়।
ডিসেম্বর, ১৯৮৬ ৫৫তম সংশোধন ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল অরুণাচল প্রদেশকে পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। এই রাজ্যের বিধানসভার সদস্যসংখ্যা স্থির করা হয় ৪০ জন।
১৯৮৬ ৫৬তম সংশোধন ৩০ মে ১৯৮৭ গোয়া পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ও দমন ও দিউ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা লাভ করে। গোয়া বিধানসভার সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত হয় ৪০ জন।
১৯৮৭ ৫৭তম সংশোধন ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ ভারতের সংবিধানের হিন্দি অনুবাদ প্রকাশের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়।
১৯৮৭ ৫৮তম সংশোধন ৯ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সংবিধানের ৩৩২ নং ধারাটি সংশোধন করে মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশ নাগাল্যান্ড ও মেঘালয় বিধানসভায় তফসিলি জাতি ও উপজাতির প্রতিনিধিসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়।
১৯৮৮ ৫৯তম সংশোধন ৩০ মার্চ ১৯৮৮ এই সংশোধনী আইনবলে সংবিধানের ৩৫২(১), ৩৫৯ ও ৩৫৬(৫) ধারাগুলি সংশোধন করা হয়। ৩৫২(১) নং ধারার প্রথম অংশটি সংশোধন করে বলা হয়, “রাষ্ট্রপতি যদি নিশ্চিত হন যে, এমন গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ অথবা সশস্ত্র বিদ্রোহের দরুন ভারত বা তার কোনও অংশের নিরাপত্তা বিপন্ন, তখন সমগ্র পঞ্জাব অথবা দেশের যে কোনও অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন।”
১৯৮৮ ৬০তম সংশোধন ২০ ডিসেম্বর ১৯৮৮ বৃত্তিকরের পরিমাণ ২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২,৫০০ টাকা করা হয়।
১৯৮৮ ৬১তম সংশোধন ২৮ মার্চ ১৯৮৯ সংবিধানের ৩২৬ নং ধারাটি সংশোধন করে লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভার ভোটদাতাদের বয়সসীমা সর্বনিম্ন ২১ থেকে কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়।
১৯৮৯ ৬২তম সংশোধন ২০ ডিসেম্বর ১৯৮৯ এই সংশোধনী বলে লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ ১০ বছর অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি ১৯৯৯ অবধি বৃদ্ধি করা হয়।
১৯৮৯ ৬৩তম সংশোধন ৬ জানুয়ারি ১৯৯০ ১৯৮৮ সালে প্রণীত ৫৯তম সংবিধান সংশোধনীটি বাতিল করা হয়।
১৯৯০ ৬৪তম সংশোধন ১৬ এপ্রিল ১৯৯০ পঞ্জাব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩ বছর ৬ মাস পর্যন্ত করা হয়।
১৯৯০ ৬৫তম সংশোধন ১২ মার্চ ১৯৯২ সংবিধান স্বীকৃত তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের বিশেষ সংরক্ষণ ব্যবস্থা তদারকি ও কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা হয়।
১৯৯০ ৬৬তম সংশোধন ৭ জুন ১৯৯০ বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় প্রণীত ৫৪টি ভূমিসংস্কার আইন আদালতের এক্তিয়ারের বাইরে সংবিধানের নবম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৯৯০ ৬৭তম সংশোধন ৪ অক্টোবর ১৯৯০ পঞ্জাব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সে-রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ ৪ বছর করা হয়।
১৯৯১ ৬৮তম সংশোধন ১২ মার্চ ১৯৯১ পঞ্জাব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সে-রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
১৯৯১ ৬৯তম সংশোধন ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯২ পূর্বতন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লির প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তন করে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল গঠন করা হয়। দিল্লি বিধানসভা ও মন্ত্রিপরিষদ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়।
১৯৯২ ৭০তম সংশোধন ২১ ডিসেম্বর ১৯৯১ (এই আইনের একাংশের প্রয়োগ এখনও হয়নি) সংবিধানের ৫৪ ও ৫৫ নং ধারাদুটি সংশোধন করে জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচ্চেরি বিধানসভার সদস্যদের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানের অধিকার দেওয়া হয়।
১৯৯২ ৭১তম সংশোধন ৩১ অগস্ট ১৯৯২ মণিপুরি, কোঙ্কনি ও নেপালি ভাষা সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পায়।
১৯৯২ ৭২তম সংশোধন ৫ ডিসেম্বর ১৯৯২ ত্রিপুরা রাজ্যের উপদ্রুত অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১২ অগস্ট ১৯৯২ তারিখে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ত্রিপুরার জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর একটি বোঝাপড়া চুক্তি বা মেমোরান্ডাম অব আর্টিকল সাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি কার্যকর করার জন্য ৭২তম সংবিধান সংশোধন আইনে সংবিধানের ৩৩২ নং ধারাটি সংশোধন করে ত্রিপুরা বিধানসভায় তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা স্থির করতে একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
১৯৯২ ৭৩তম সংশোধন ২৪ এপ্রিল ১৯৯৪ পঞ্চায়েতের গঠন, কার্যকাল, সদস্য সংখ্যা, নির্বাচন, অর্থ কমিশন গঠন, পঞ্চায়েতের আর্থিক ও অন্যান্য বিষয়গুলি সংবিধানভুক্ত করা হয়। তবে জম্মু ও কাশ্মীর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও কয়েকটি রাজ্যের তফসিলভুক্ত অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই আইনটি কার্যকর নয়।
১৯৯২ ৭৪তম সংশোধন ১ জুন ১৯৯৩ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে পুরসভার গঠন, কার্যাবলি, মেয়াদ, ওয়ার্ড কমিটি, তফসিলি জাতি, উপজাতি ও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা, জেলা পরিকল্পনা কমিটি ও মেট্রোপলিটান পরিকল্পনা কমিটি-সহ বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও দ্বাদশ তফসিল ও সংবিধানের ২৪৩-ডবলিউ ধারায় পুরসভার ১৮টি কার্যাবলি অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৯৪ ৭৫তম সংশোধন ১৫ মে ১৯৯৪ এই সংবিধান সংশোধন আইনবলে রাজ্যস্তরে বাড়িভাড়া ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এ-সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তির প্রয়াস নেওয়া হয়। এই সংক্রান্ত মামলার আপিল সুপ্রিম কোর্ট ছাড়া অন্যত্র নিষিদ্ধ হয়।
১৯৯৪ ৭৬তম সংশোধন ৩১ অগস্ট ১৯৯৪ তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সরকারি চাকরি ও শিক্ষায়তনে ৬৯% আসন সংরক্ষণের বিল পাস হয়।
১৯৯৪ ৭৭তম সংশোধন ১৭ জুন ১৯৯৫ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষজনের চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ বজায় রাখা হয়।
১৯৯৫ ৭৮তম সংশোধন ৩০ অগস্ট ১৯৯৫ ভূমিসংস্কার ও উপজাতি এবং অ্যাংলো ইন্ডিয়ানদের জন্য লোকসভা ও বিধানসভায় আরও ১০ বছরের আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়।
২০০০ ৭৯তম সংশোধন ২৫ জানুয়ারি ২০০০ তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের জন্য লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভায় প্রতিনিধি মনোনয়নের মেয়াদ ১০ বছর বৃদ্ধি করা হয়।
২০০০ ৮০তম সংশোধন ৯ জুন ২০০০ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে আদায়ীকৃত করের বণ্টনে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
২০০০ ৮১তম সংশোধন ৯ জুন ২০০০ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসন কোনও বছর পূরণ না হলে যাতে তা পরবর্তী বছরগুলিতে পূরণ করা যায়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সর্বোচ্চ ৫০% সংরক্ষিত পদ পূরণের যে নিয়ম আছে তার মধ্যে ওই তালিকায় পূরণ হওয়া পদগুলিকে না ধরার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
২০০০ ৮২তম সংশোধন ৮ সেপ্টেম্বর ২০০০ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য পরীক্ষা বা চাকরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতায় ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলি যাতে সংবিধানের ৩৫৫ নং ধারায় বাধাপ্রাপ্ত না হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২০০০ ৮৩ তম সংশোধন ৮ সেপ্টেম্বর ২০০০ সংবিধানের ২৪৩-এম ধারা সংশোধিত করে অরুণাচল প্রদেশের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য আসন সংরক্ষণ ব্যবস্থা না রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই রাজ্যের সমগ্র জনসংখ্যাই উপজাতি শ্রেণিভুক্ত।
২০০১ ৮৪তম সংশোধন ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০২ সংবিধানের ৮২ ও ১৭০(৩) ধারাদুটি সংশোধিত করে রাজ্যগুলির বিধানসভা ও বিধানপরিষদের মোট আসনসংখ্যা অপরিবর্তিত রেখে, ১৯৯১ সালের জনগণনার হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্রের সীমানা পুনর্বিন্যাসের ব্যবস্থা করা হয়। তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলির ক্ষেত্রেও আঞ্চলিক সীমা ও সংখ্যা রদবদলের ব্যবস্থা করা হয়।
২০০১ ৮৫তম সংশোধন ৪ জানুয়ারি ২০০২ সংবিধানের ১৬(৪-ক) ধারাটি সংশোধন করে সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের সংরক্ষণ ব্যবস্থায় সিনিয়রিটির বিষয়টি যোগ করা হয়।
২০০২ ৮৬তম সংশোধন ১২ ডিসেম্বর ২০০২ সংবিধানে নতুন ২১-ক ধারাটি সংযুক্ত করে ছয় থেকে ১৪ বছর বয়সী সকল শিশুর অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষার ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রকে বাধ্য করা হয়। এছাড়াও শিক্ষার অধিকার সংক্রান্ত ৫১-ক ধারাটি সংশোধিত হয়।
২০০৩ ৮৭তম সংশোধন ২২ জুন ২০০৩ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে সংবিধানের ৮১ নং ধারার ৩ নং উপধারার অধীনে (ii) চিহ্নিত অংশে ‘১৯৯১’ স্থলে ‘২০০১’ করা হয়।
২০০৩ ৮৮তম সংশোধন ১৫ জানুয়ারি ২০০৪ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে সংবিধানে নতুন ২৬৮-এ ধারাটি সংযোজিত হয়, যার ফলে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার পরিষেবা ক্ষেত্রে কর বসানোর অধিকার পায়।
২০০৩ ৮৯তম সংশোধন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩ এই সংশোধনীবলে সংবিধানের ৩৩৮ নং ধারাটি সংশোধন করা হয় এবং ৩৩৮-এ ধারাটি সংযোজিত হয়। এতে তফসিলি উপজাতিদের জন্য জাতীয় কমিশন গঠনের কথা বলা হয়।
২০০৩ ৯০তম সংশোধন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৩ এই সংবিধান সংশোধনী আইনবলে অসম বিধানসভায় উপজাতি ও অনুপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলি বোড়োল্যান্ড আঞ্চলিক জেলা গঠনের আগে যে ভাবে বণ্টিত হয়েছিল সেইভাবে বজায় রাখা হয়।
২০০৩ ৯১তম সংশোধন ১ জানুয়ারি ২০০৪ ৯১তম সংবিধান সংশোধনীর দ্বারা সংবিধানে কয়েকটি নতুন উপধারা সংযোজিত হয় :
ধারা ৭৫ (১)-এ সংযোজিত হয় – ১ক:- প্রধানমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা লোকসভার মোট সদস্যসংখ্যার ১৫ শতাংশের অধিক হবে না।
১খ:- সংসদের কোনও কক্ষের যে কোনও রাজনৈতিক দলভুক্ত সদস্য যিনি দশম তফসিলের ২ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, তিনি ১ নং ধারা অনুসারে মন্ত্রী হবার যোগ্যতাও হারাবেন। তার এই অযোগ্যতা অযোগ্য ঘোষিত হবার দিন থেকে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত, অথবা তিনি সংসদের কোনও কক্ষের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী ঘোষিত হওয়া পর্যন্ত (যেটি পূর্বে ঘটবে) বজায় থাকবে।

ধারা ১৬৪ ১ক ও ১৬৪ ১খ সংযোজিত হয় – ১ক:- মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা সংশ্লিষ্ট রাজ্য বিধানসভার মোট সদস্যসংখ্যার ১৫ শতাংশের অধিক হবে না।
এই শর্তে যে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা ১২ জনের কম হবে না :
পুনর্বার এই শর্তে যে যদি কোনও রাজ্যে ৯১তম সংশোধনী আইন, ২০০৩ জারি হবার পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী-সহ মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা কথিত ১৫ শতাংশ অথবা প্রথম অনুবিধিতে উল্লিখিত সংখ্যার অধিক হয় তবে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গণবিজ্ঞপ্তি জারির ছয় মাসের মধ্যে এই ধারা অনুসারে তাতে সমতাবিধান করতে হবে।
১খ:- রাজ্য বিধানসভা বা বিধান পরিষদের (যেসব রাজ্যে বিধান পরিষদ বর্তমান সেগুলির ক্ষেত্রে) যে কোনও রাজনৈতিক দলভুক্ত সদস্য যিনি দশম তফসিলের ২ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, তিনি ১ নং ধারা অনুসারে মন্ত্রী হবার যোগ্যতাও হারাবেন। তার এই অযোগ্যতা অযোগ্য ঘোষিত হবার দিন থেকে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত, অথবা তিনি রাজ্য আইনসভার কোনও কক্ষের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী ঘোষিত হওয়া পর্যন্ত (যেটি পূর্বে ঘটবে) বজায় থাকবে।

সংবিধানের অংশ ১৯-এ ৩৬১খ ধারাটি সংযোজিত হয় – সদনের কোনও কক্ষের যে কোনও রাজনৈতিক দলভুক্ত সদস্য যিনি দশম তফসিলের ২ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন, তিনি কোনও লাভজনক রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। তার এই অযোগ্যতা অযোগ্য ঘোষিত হবার দিন থেকে তার কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত, অথবা তিনি সংসদের কোনও কক্ষের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী ঘোষিত হওয়া পর্যন্ত (যেটি পূর্বে ঘটবে) বজায় থাকবে।

অনুচ্ছেদ ১খ থেকে “অনুচ্ছেদ ৩ অথবা বিষয়টি যেরূপ” কথাগুলি বাদ দেওয়া হয়। অনুচ্ছেদ ২(১)-এ “অনুচ্ছেদ ৩, ৪ ও ৫”-এর পরিবর্তে “অনুচ্ছেদ ৪ ও ৫” যোগ করা হয়।

অনুচ্ছেদ ৩ বাদ দেওয়া হয়।

২০০৩ ৯২তম সংশোধন ৭ জানুয়ারি ২০০৪ ৯২তম সংবিধান সংশোধনীর দ্বারা চারটি ভাষা সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে ভারতের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে। এই চারটি ভাষা হল – বোড়ো, ডোগরি, মৈথিলি ও সাঁওতালি।
২০০৫ ৯৩তম সংশোধন ২০ জানুয়ারি ২০০৬ ।

মৌলিক কর্তব্যগুলি কী কী

যে ১১টি মৌলিক কর্তব্য রয়েছে সেগুলি হল:

*সংবিধান মেনে চলা এবং তার ধারণা ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংগীতকে সম্মান করা

*আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ধারণাগুলো যা আমাদের উদ্বুদ্ধ করে, সে আদর্শগুলি মেনে চলা

*ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং সংহতিকে রক্ষা করা এবং ঊর্ধ্বে তুলে ধরা ভারতের নাগরিকদের প্রাথমিক জাতীয় কর্তব্যের অন্যতম

*দেশকে রক্ষা করা এবং দেশের প্রয়োজনে ডাক পড়লেই জাতীয় পরিষেবা প্রদান

*ধর্ম-ভাষা- অঞ্চল-বা কোনও রকম বিভেদকে প্রশ্রয় না দিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ব ও সংহতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা- মহিলাদের সম্মানহানিকর যে কোনও অভ্যাস পরিত্যাগ করা

*আমাদের মিশ্র সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে মূল্য দেওয়া ও তাকে রক্ষা করা- আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পৃথিবীর পবিত্রতম ও মূল্যবান ঐতিহ্যের অন্যতম, এ ঐতিহ্য পৃথিবীর ঐতিহ্যের অংশও বটে

*বন, হ্রদ, নদী, এবং বন্যপ্রাণের মত জাতীয় পরিবেশকে রক্ষা করা ও তার উন্নতিসাধন করা, সমস্ত প্রাণের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন

*বৈজ্ঞানিক ভাবনা, মানবতা, জিজ্ঞাসু সত্তা এবং সংস্কারের উন্নতি সাধন

*জনগণের সম্পত্তি রক্ষা করা এবং হিংসার পথ ত্যাগ করা

*ব্যক্তিগত ও যৌথভাবে সমস্ত ক্ষেত্রে উৎকর্ষের জন্য সংগ্রাম যাতে দেশ ক্রমাগত উপর দিকে উঠতে পারে

*৬ থেকে ১৪ বছর বয়সকালের মধ্যের শিশুকে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা বাবা-মা বা অভিভাবকের দায়িত্ব।।

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆

No comments: