জন্ম দিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় ১৯০৪ সালের ৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খয়রাশোলের নাকড়াকোন্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। হেতমপুর কলেজে আই.এ. পড়ার সময়ই রাজরোষে পড়েন। পরে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তাঁর নামে ২০০৭ সালে এই গ্রামের একটি পাড়ার নামকরণ করা হয় 'ফাল্গুনী পল্লি'।
তিনি ছিলেন বঙ্গলক্ষ্মী মাসিকপত্রের সম্পাদক। সেখান থেকেই তার সাহিত্য জীবন শুরু হয়। তার রচিত অন্যতম এবং বহুপঠিত দুটি উপন্যাস চিতা বহ্নিমান ও শাপমোচন।১৯৫৫ সালে শাপমোচন উপন্যাস অবলম্বনে কোলকাতার পরিচালক সুধীর মুখার্জি উত্তম কুমার-সুচিত্রা সেন জুটিকে নিয়ে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।এছাড়া ২০০৯ সালে দুর্গা পূজা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী নাট্য নির্মাতা এসএম দুলাল একই নামে একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। আহসান হাবীব নাসিম ও মেহবুবা মাহনুর চাঁদনী অভিনীত টেলিফিল্মটি এনটিভিতে প্রচারিত হয়। তার অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে আকাশ বনানী জাগে, আশার ছলনে ভুলি, বহ্নিকন্যা, ভাগীরথী বহে ধীরে, মন ও ময়ূরী, জলে জাগে ঢেউ, মীরার বধূয়া, স্বাক্ষর, চরণ দিলাম রাঙায়ে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রকাশিত হয় তার রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থ হিঙ্গুল নদীর কূলে ও কাশবনের কন্যা।
ফাল্গুনীর ‘জীবন ও সাহিত্য’ নিয়ে গবেষণা করছেন বীরভূমের বড়শাল হাইস্কুলের শিক্ষক প্রভাত সিকদার। তিনি এবং তাঁর গাইড হেতমপুর কলেজের অধ্যাপক তপন গোস্বামী জানান, ফাল্গুনীর একমাত্র মেয়ে অচিরার নাম রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর বিয়ে হয়েছিল কলকাতায়। তিনি প্রয়াত হয়েছেন। অচিরাদেবীর এক মেয়ে আছেন। কিন্তু তঁর নাম-ঠিকানা এলাকার কেউ-ই জানেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফাল্গুনীর শেষ জীবনটা কেটেছে নাকড়াকোন্দা গ্রামে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ও জোতিষ চর্চা করে।
অনুগামীদের দাবি, ফাল্গুনীর স্কুলে কিংবা এলাকার কোনও জায়গায় তাঁর একটি মূর্তি স্থাপন করা হোক। প্রতি বছর প্রশাসনিক ভাবে তাঁর জন্মদিনে একটি অনুষ্ঠানও হোক। এলাকার বিডিও তারকনাথ চন্দ্র অবশ্য বলেন, ‘‘ওঁর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানি না। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্যোগ নিলে নিশ্চয় সাহায্য করবো।’’
উপন্যাস
- চিতা বহ্নিমান, সন্ধ্যাতারা, আকাশ বনানী জাগে (১৯৪৩) আশার ছলনে ভুলি (১৯৫০)
- বহ্নিকন্যা (১৯৫১) ভাগীরথী বহে ধীরে (১৯৫১) মন ও ময়ূরী (১৯৫২)
- জলে জাগে ঢেউ (১৯৫৪) মীরার বধূয়া (১৯৫৬) স্বাক্ষর (১৯৫৭)
- চরণ দিলাম রাঙায়ে (১৯৬৬) বধূ
- ফুলশয্যার রাত ফাল্গুনী অমনিবাস
- শ্রেষ্ঠ উপন্যাস সমগ্র
কাব্যগ্রন্থ
- হিঙ্গুল নদীর কূলে (১৯৩৫) কাশবনের কন্যা (১৯৩৮)
শিশু সাহিত্য/গোয়েন্দা উপন্যাস
- পাতালের পাকচক্র গুপ্তধনের সন্ধানে
- কালো রুমাল
No comments:
Post a Comment