আধুনিক প্রেমভাবনা ও শেষের কবিতা
শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শেষের কবিতা’ (১৯২৮) একটি অসমাপ্ত ভালোবাসার গল্প! রঙমাখা ফ্যাশনের রুচিশীল ব্যক্তিত্ব মানুষের এক্সট্রাগুণের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। সমগ্র শেষের কবিতায় আমরা তাই দার্শনিক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে দেখি, মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়ার মেলবন্ধন। শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথের কথাসাহিত্যে কিছু নতুনত্ব দেখা দিয়েছে। তাঁর এ নতুনত্বের আরেক প্রান্ত ‘শেষের কবিতা’ উপন্যাস। শেষের কবিতায় আধুনিক অভিজাত সমাজের মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের মেলবন্ধনের কথা এসেছে, এসেছে বিচ্ছেদ ও বিরহের কথা। লেখার কলমের সঙ্গে চিত্রকল্পকে দেখার একধরনের গভীর অনুভূতি রবীন্দ্রনাথের এ উপন্যাসে উপলব্ধি করা যায়। যেখানে একেকটা বক্তব্যের সঙ্গে আরেকটা বক্তব্যের বিষয়গুলো যেন বারবার কল্পনার চোখে দৃশ্যমান ।
বলাবাহুল্য, শেষ জীবনে এসে রবীন্দ্রনাথ দুজন মানব-মানবীর প্রেমের কাহিনি লিখলেন। তাও কোনো সরলরৈখিক প্রেম নয়, এ প্রেম চতর্ভুজাকৃতির। আর ব্যক্তিটি যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন তার জন্য এ আর এমন কী! বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে গত ৯০ বছরে একই জনপ্রিয়তা ও ব্যাপক পাঠ্যবহুলতার মধ্যে রয়েছে। বাংলা সাহিত্যের খুব কম বই-ই এমন জনপ্রিয়তার কাতারে পৌঁছাতে পেরেছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর সৃষ্টি, শিল্প, কাব্যময়তায় এক ও অনন্য। শেষের কবিতায় তিনি যে ভাষার ব্যবহার ঘটিয়েছেন তা আধুনিক বাংলা সাহিত্যের নতুন ধারারই উন্মোচক। আর এ উপন্যাসের প্রেমভাবনা তো অনন্য। ২.
এ উপন্যাসে প্রেম আছে, বিরহ আছে, বিচ্ছেদ আছে, কাব্যিক ছন্দময়তা আছে, হাস্যরসও আছে। অমিতের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ শেষের কবিতায় আমরা যেন জীবন্ত রবীন্দ্রনাথকেই দেখতে পাই। শেষের কবিতার ভাষাশৈলী অপূর্ব। যেন এক শব্দের পর আরেক শব্দ শোনার অপেক্ষা। গদ্যসাহিত্যের মধ্যেও যে ছন্দময়তা থাকতে পারে, তা শেষের কবিতার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ হয়। অমিত উপন্যাসের নায়ক। অমিতের এই চরিত্রকে রবীন্দ্রনাথ শৈল্পিক বিমূর্ততায় সাজিয়েছেন। বলতে গেলে সম্পূর্ণ উপন্যাসটিকে সে একাই টেনেছে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘যে মানুষ অনেক দেবতার পূজারি, আড়ালে সব দেবতাকেই সেসব দেবতার চেয়ে বড়ো ব’লে স্তব্ধ করে; দেবতাদের বুঝতেও বাকি থাকে না অথচ খুশিও হন। কন্যার মাতাদের আশা কিছুতেই কমে না, কিন্তু কন্যারা বুঝে নিয়েছে অমিত সোনার রঙের দিগন্ত রেখা- ধরা দিয়েই আছে তবু কিছুতেই ধরা দেবে না। মেয়েদের সম্বন্ধে ওর মন তর্কই করে, মীমাংসায় আসে না। সেই জন্যই গম্যবিহীন আলাপের পথে ওর এত দুঃসাহস। তাই অতি সহজেই সকলের সঙ্গে ও ভাব করতে পারে- নিকটে দাহ্যবস্তু থাকলেও ওর তরফে আগ্নেয়তা নিরাপদে সুরক্ষিত।’
অমিতের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ ভাষাকে আরও বেশি দৃঢ়তা দান করেছেন। যেখানে অমিত ছন্নছাড়া এবং কারও যুক্তিকে সে তোয়াক্কা করে না। সে নানান যুক্তির মধ্য দিয়ে তার কথাকে প্রতিষ্ঠিত করে। যেমন, তাজমহলের পুনরাবৃত্তির প্রসঙ্গে রবি ঠাকুরের ভক্ত আরক্তমুখে বলে উঠল, ‘ভালো জিনিস যত বেশি হয় ততই ভালো।’ কিন্তু অমিত বলল তার ঠিক উল্টোটা, ‘বিধাতার রাজ্যে ভালো জিনিস অল্প হয় বলেই তা ভালো, নইলে সে নিজেরই ভিড়ের ঠেলায় হয়ে যেত মাঝারি।’ শিলঙ পাহাড়ে অমিত ও লাবণ্য যখন একসঙ্গে ঘুরতে গেল তখন অমিত লাবণ্যকে একটা ছ্যাৎলা পড়া পাথরের মধ্যে বসতে অনুরোধ করলে লাবণ্য ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘কিন্তু সময় যে অল্প।’ অমিত বলল, ‘জীবনে সেটাই তো শোচনীয় সমস্যা লাবণ্যদেবী, সময় অল্প।… সময় যাদের বিস্তর তাদের পাঙ্কচুয়াল হওয়া শোভা পায়। দেবতার হাতে সময় অসীম; তাই ঠিক সময়টিতে সূর্য ওঠে, ঠিক সময়ে অস্ত যায়। আমাদের মেয়াদ অল্প, পাঙ্কচুয়াল হতে গিয়ে সময় নষ্ট করা আমাদের পক্ষে অমিতব্যয়িতা।’
শেষের কবিতা উপন্যাসে চতুর্ভুজ প্রেম প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। যেমন- অমিতের সঙ্গে কেতকীর, লাবণ্যের সঙ্গে অমিতের, আবার শোভনলালের সঙ্গে লাবণ্যের। দ্বৈতপ্রেমের আবেশে নিবিষ্ট উপন্যাসটি। যার প্রমাণ মেলে অমিতের একটি উক্তির মধ্য দিয়ে, ‘কেতকীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালোবাসারই। কিন্তু সে যেন ঘড়ায় তোলা জল, প্রতিদিন তুলব, প্রতিদিন ব্যবহার করব। আর লাবণ্যের ভালোবাসা, সে রইল দীঘি। সে ঘরে আনবার নয়, আমার মন তাতে সাঁতার দেবে।’ অথবা, ‘যে ভালোবাসা ব্যাপ্তভাবে আকাশে থাকে অন্তরের মধ্যে সে দেয় সঙ্গ; যে ভালোবাসা বিশেষভাবে প্রতিদিনের সব-কিছুতেই যুক্ত হয়ে থাকে সংসারে সে দেয় আসঙ্গ। দুটোই আমি চাই।’
লাবণ্যকে না পাওয়ার পেছনে অমিতের কিছু হালছাড়া স্বভাব প্রকাশ পেয়েছে। অমিেের ওয়েস্টার্ন মাইন্ডের একটা প্রভাব আমরা এখানে লক্ষ করি; যে কিনা তার ক্লাসমেট কেতকীকে লন্ডনে ব্যারিস্টারি পড়ার সময় ভালোবেসেছিল। আংটিও পরিয়ে ছিল। কিন্তু সাত বছর পর, কেতকী যখন দেশে ফিরে অমিতকে চায়, তখন সে কেতকীকে ফেরাতে পারে না। অথচ সাত বছরের আগের প্রেমকে সে চাইলেই এড়িয়ে যেতে পারত কিন্তু সে তা না করে লাবণ্যের কাছ থেকে দূরে সরে গেল। অথচ উপন্যাসের শুরুর দিকে, বালিগঞ্জের সাহিত্যসভায় অমিত বলেছিল, ‘পাঁচ বছর পূর্বেকার ভালো-লাগা পাঁচ বছর পরও যদি একই জায়গায় খাড়া দাঁড়িয়ে থাকে তা হলে বুঝতে হবে, বেচারা জানতে পারেনি যে সে মরে গেছে।’ এই বাক্যের সাথে অমিতের বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যেন মনে হচ্ছে অমিত একটা ছদ্মবেশ; যে চেয়েছিল আত্মপ্রতিষ্ঠা ও খ্যাতি। অথবা অমিত সম্পর্কে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ প্রথমেই বলেছেন, ‘মেয়েদের সম্বন্ধে ওর আগ্রহ নেই, উৎসাহ আছে।’ হয়তো সেই উৎসাহই তাকে ভালোবাসতে সাহায্য করেছে কিন্তু সে জন্যই সম্পর্কটা ঘরবাঁধা পর্যন্ত গড়ায়নি। সম্পর্কের এক পর্যায়ে এসে লাবণ্য বুঝতে পেরেছিল, অমিতকে সে হয়তো জীবনে আর পাবে না। তাই তো সে বলেছিল, ‘তুমি আমার যত কাছেই থাক তবু আমার থেকে তুমি অনেক দূরে।’
মুক্তিপর্বে অমিত লাবণ্যকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে কিন্তু লাবণ্যের মনে তেমন কোনো সাড়া নেই। অমিত নানাভাবে ওকে আগলে রাখছে কিন্তু লাবণ্য যেন শান্ত ও নিবিড়। কেতকীর হাত থেকে আংটি খুলে অমিত একদিন লাবণ্যকে পরিয়েছিল আজ লাবণ্য সে আংটি খুলে আমিতের আঙুলে আস্তে করে পরিয়ে দিল। আর বলল, ‘আমাকে তুমি কোনো আংটি দিয়ো না। কোনো চিহ্ন রাখবার কিছু দরকার নেই। আমার প্রেম থাক নিরঞ্জন। বাইরের রেখা- বাইরের ছায়া তাতে পড়বে না।’ তাতে অমিতও কোনো বাধা দিল না।কেতকীর সম্পর্কে বলতে গিয়ে লাবণ্য বলল, ‘অন্তত হপ্তাখানেকের জন্য তোমার দলকে নিয়ে তুমি চেরাপুঞ্জিতে বেড়িয়ে এসো। ওকে (কেতকী) আনন্দ দিতে নাও যদি পারো, ওকে আমোদ দিতে পারবে।’ অমিত রাজি হলো। কিন্তু সাতদিন পর অমিত চেরাপুঞ্জি থেকে ফিরে যোগমায়ার বাসায় গেল। কিন্তু ঘর বন্ধ, সবাই চলে গেছে। কোথায় গেছে তার কোনো ঠিকানা রেখে যায়নি। লেখকের ভাষায়, ‘সমস্ত শিলঙ পাহাড়ের শ্রী আজ চলে গেছে।’ যেন লাবণ্যই ছিল সব সৌন্দর্যের আধার।
শেষের কবিতায় রবীন্দ্রনাথের বিশেষ কিছু লাইন আছে যা প্রেমের প্রসঙ্গে হৃদয়কে বড় স্পর্শ করে। যেমন- পুরুষ আধিপত্য ছেড়ে দিলেই মেয়ে আধিপত্য শুরু করবে। দুর্বলের আধিপত্য অতি ভয়ংকর। যে পক্ষের দখলে শিকল আছে সে শিকল দিয়েই পাখিকে বাঁধে, অর্থাৎ জোর দিয়ে। শিকল নেই যার সে বাঁধে আফিম খাইয়ে, অর্থাৎ মায়া দিয়ে। শিকলওয়ালা বাঁধে বটে কিন্তু ভোলায় না, আফিমওয়ালী বাঁধেও বটে ভোলাও। মেয়েদের কৌটো আফিমে ভরা, প্রকৃতি- শয়তানী তার জোগান দেয়। পৃথিবীতে হয়তো দেখবার যোগ্য লোক পাওয়া যায়, তাকে দেখবার যোগ্য জায়গাটি পাওয়া যায় না। মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া, এই দুইয়ের তফাৎ আছে। ওর যেটাতে আপত্তি নেই সেটাতে আর কারও আপত্তি থাকতে পারে, অমিত সেই আশঙ্কাটাকে একেবারে উড়িয়ে দিয়ে কথাবার্তা কয়। সেই জন্য তার প্রস্তাবে আপত্তি করা শক্ত। যা আমার ভালো লাগে তাই আর একজনের ভালো লাগে না, এই নিয়েই পৃথিবীতে যত রক্তপাত। নাম যার বড় তার সংসারটা ঘরে অল্প, বাইরেই বেশি… নামজাদা মানুষের বিবাহ স্বল্প বিবাহ, বহুবিবাহের মতোই গর্হিত। যে রত্নকে সস্তায় পাওয়া গেল তারও আসল মূল্য যে বোঝে সেই জানব জহুরি। পড়ার সময় যারা ছুটি নিতে জানে না তারা পড়ে, পড়া হজম করে না। যে ছুটি নিয়মিত, তাকে ভোগ করা আর বাধা পশুকে শিকার করা একই কথা। ওতে ছুটির রস ফিকে হয়ে যায়।
পুরুষ তার সমস্ত শক্তিকে সার্থক করে সৃষ্টি করতে, সেই সৃষ্টি আপনাকে এগিয়ে দেয়ার জন্যই আপনাকে পদে পদে ভোলে। মেয়ে তার সমস্ত শক্তিকে খাটায় রক্ষা করতে, পুরোনোকে রক্ষা করবার জন্যই নতুন সৃষ্টিকে সে বাধা দেয়। রক্ষার প্রতি সৃষ্টি নিষ্ঠুর, সৃষ্টির প্রতিরক্ষা বিঘ্ন …এক জায়গায় এরা পরস্পরকে আঘাত করবেই। যেখানে খুব মিল সেখানেই মস্ত বিরুদ্ধতা …আমাদের সকলের চেয়ে বড়ো যে পাওনা সে মিলন নয়, সে মুক্তি।
ভালোবাসায় ট্রাজেডি সেখানেই ঘটে যেখানে পরস্পরকে স্বতন্ত্র জেনে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারেনি- নিজের ইচ্ছা অন্যের ইচ্ছে করবার জন্য যেখানে জুলুম- যেখানে মনের করি, আপন মনের মতো করে বদলিয়ে অন্যকে সৃষ্টি করে। বিয়ের ফাঁদের জড়িয়ে পড়ে স্ত্রী-পুরুষ যে বড়ো বেশি কাছাকাছি এসে পড়ে, মাঝে ফাঁক থাকে না; তখন একেবারে গোটা মানুষকে নিয়ে কারবার করতে হয় নিতান্ত নিকটে থেকে। কোনো একটা অংশ ঢাকা রাখবার জো থাকে না। মানুষের মৃত্যুর পর তার জীবনী লেখা হয় তার কারণ, একদিকে সংসারে সে মরে, আরেক দিকে মানুষের মনে সে নিবিড় করে বেঁচে ওঠে। মানুষের কোনো কথাটাই সোজা নয়। আমরা ডিকশনারিতে যে কথার এক মানে বেঁধে দেই, মানব-জীবনের মধ্যে মানেটা সাতখানা হয়ে যায়; সমুদ্রের কাছে এসে গঙ্গার মতো! বিবাহের হাজারখানা মানে। মানুষের সঙ্গে মিশে তার মানে হয়, মানুষকে বাদ দিয়ে তার মানে বের করতে গেলেই ধাঁধা লাগে। সহজকে সহজ রাখতে হলে শক্ত হতে হয়। মেয়েদের ভালো-লাগা তার আদরের জিনিসকে আপন-অন্দর মহলে একলা নিজেরই করে রাখে, ভিড়ের লোকের কোনো খবরই রাখে না। সে যত দাম দিতে পারে সব দিয়ে ফেলে, অন্য পাঁচজনের সঙ্গে মিলিয়ে বাজার যাচাই করতে তার মন নেই।
অমিতের কাছে লাবণ্যের ব্যক্তিত্ব কবি ফুটিয়ে তুলেছেন, এমন অসাধারণ ভাবে যা পাঠককে মুগ্ধ করে। অমিত অনেক সুন্দরী মেয়ে দেখেছে, তাদের সৌন্দর্য পূর্ণিমা-রাত্রির মতো, উজ্জ্বল অথচ আচ্ছন্ন; লাবণ্যের সৌন্দর্য সকাল-বেলার মতো, তাতে অস্পষ্টতার মোহ নেই, তার সমস্তটা বুদ্ধিতে পরিব্যাপ্ত। তাকে মেয়ে করে গড়বার সময় বিধাতা তার মধ্যে পুরুষের একটা ভাগ মিশিয়ে দিয়েছেন; তাকে দেখলেই বোঝা যায়, তার মধ্যে কেবল বেদনার শক্তি নয়, সেই সঙ্গে আছে মননের শক্তি। এইটেতেই অমিতকে এত করে আকর্ষণ করেছে। অমিতের নিজের মধ্যে বুদ্ধি আছে, ক্ষমা নেই, বিচার আছে ধৈর্য নেই; ও অনেক জেনেছে, শিখেছে, কিন্তু শান্তি পায়নি। লাবণ্যের মুখে ও এমন একটি শান্তির রূপ দেখেছিল যে শান্তি হৃদয়ের তৃপ্তি থেকে নয়, যা ওর বিবেচনাশক্তির গভীরতায় অচঞ্চল।
অন্যদিকে, লাবণ্যের বাল্যবন্ধু শোভনলাল লাবণ্যকে চিঠি দিয়ে জানাল সে, শিলঙে এসেছে। লাবণ্যও চিঠির প্রত্যুত্তর দিল। এবং শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক ঠেকলো বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত। অতঃপর যতিশংকর লাবণ্যের লেখা একটি চিঠি এনে অমিতের হাতে দিল। এর এক পৃষ্ঠায় ছিল লাবণ্য ও শোভনলালের বিয়ের খবর অন্য পৃষ্ঠায় একটি সুদীর্ঘ কবিতা এবং সেটাই হলো শেষের কবিতা।
যতিশংকরের হাত থেকে লাবণ্যের চিঠি পাওয়ার পরও অমিতের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। যেখানে শোভনলালের সঙ্গে ছয় মাস পর লাবণ্যের বিয়ের দিন ধার্য হয়েছে। শেষের কবিতার শেষে লাবণ্য লিখছে, ‘তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারই দান/গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।/হে বন্ধু, বিদায়।’
অমিতের ভালোবাসার সব দানকে লাবণ্য অকপটে স্বীকার করে নিল। ভালোবাসার দায় যে মানুষকে ঋণী করে সে কথাই যেন এই লাইনের মাধ্যমে লাবণ্য জানান দিল। অমিতের কথায়, ‘মন যখন খুব বড়ো হয়ে ওঠে তখন মানুষ যুদ্ধও করে, ক্ষমাও করে।’ লাবণ্য যুদ্ধ করে অমিতের কাছ থেকে দূরে সরে গেছে আর আজ যখন মন খুব উদার তখন অকপটে সব কিছু স্বীকার করে নিল অর্থাৎ ক্ষমা করে দিল।
রবীন্দ্রনাথ, ‘মানসী’তে বলেছিলেন, ‘মিলনে প্রেম ম্লান হয়।’ হয়তো তিনি প্রেমকে ম্লান করতে চাননি বলেই অমিত ও লাবণ্যের প্রেমকে বিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে অম্লান করে রেখেছেন। শেষের কবিতা উপন্যাসের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তার যৌবনকালের ব্যক্তিমানসের চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা, দর্শন ও তার রোমান্টিক সৌন্দর্যচেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। সমস্ত উপন্যাসজুড়েই নানা আদলে জীবন্ত রবীন্দ্রনাথই যেন আমাদের কাছে ধরা দেন।
সাহিত্যের সমঝদার অমিত ও লাবণ্য দুজনেই। দুজনের বেড়ে ওঠার ধরন ভিন্ন, জীবন ও যাপনে রয়েছে বৈপরীত্য। তবু একে অপরের মধ্যে যেন নিজের পরিপূরক রূপ খুঁজে পায় তারা। অমিত কলকাতার উচ্চবিত্ত সমাজের তরুণীদের হৃদয়ে মুহূর্তেই আলোড়ন জাগানো এক যুবাপুরুষ। চারদিকে শুধু ফ্যাশনেরই ছড়াছড়ি। চাইতে না চাইতে অমিতও সেই ফ্যাশনের অন্তর্গত দলের সদস্য। কিন্তু লেখক অমিতের মনের চাওয়াটা বুঝতে পেরে বলেছেন, “অমিতের নেশাই হলো স্টাইলে”। তাই সে ফ্যাশনের সঙ্গ উপভোগ করলেও শেষমেশ স্টাইলের কাছেই আশ্রয় খুঁজতে চাইবে, এ আর আশ্চর্য কী!
ভালোবাসা যেন বিরামহীন এক কবিতা। ভালোবাসা এক কেন একাধিক মানুষেও আবদ্ধ না হতেও পারে। ভালোবাসার বিরামহীন সুর ‘তাকে’ ডাকতেই থাকে। শেষের কবিতা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ দেখালেন সেই বিরামহীন সুরটাকেই কাব্যিক সুরে বেঁধে। এই সুরের অন্যদিকে থাকে সীমাহীন বিস্তৃত প্রেম, নিজেকেই যাতে হারিয়ে ফেলা যায়। এ প্রেমের তল পাওয়া যায় না, আকণ্ঠ নিমজ্জনে তাতে শুধু সাঁতরে বেড়ানো যায়।
আমরা শেষের কবিতা উপন্যাসে পরিষ্কারভাবে দুটি দিক দেখতে পাই। একদিকে নাক উঁচু সমাজের নায়ক অমিত (অমিট) সাদাটাকে কালো প্রমাণ করতে পারলেই যেন অগাধ শান্তি পায়। অন্যদিকে দেখতে পাই শিলঙের প্রকৃতি হৃদয়ে আগলে প্রকৃতিকন্যা হয়েই ধরা দিয়েছে লাবণ্য!
‘শেষের কবিতা’ উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ পুনরায় রবীন্দ্রযুগ প্রতিষ্ঠা করেছেন। যদিও রবীন্দ্রনাথের নতুন করে কিছুই প্রমাণ করার ছিল না। তবুও হঠাৎ হাওয়ায় ডানা পেয়ে যাওয়া সেই সব কবি সাহিত্যিকদের রবীন্দ্রনাথ একটা জবাব দিয়েছেন শেষের কবিতায়। যোগাযোগ উপন্যাসের পর রবীন্দ্রনাথের এভাবে লাবণ্য অমিতের রোমান্স নিয়ে ফিরে আসা হতবাক করার মতোই। রবীন্দ্রনাথ দেখিয়ে দিলেন উনি চির আধুনিক। চির প্রাসঙ্গিক। অমিত রবীন্দ্রনাথের এক ডোরাকাটা সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ এমন চরিত্র খুব বেশি আঁকেননি। অমিত সব কিছুকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে সোজাটাকে বাঁকা বানিয়ে নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে তুলে ধরতে চায়। যদিও এমন চাওয়া সবার ভেতরই কমবেশি থাকে কিন্তু পাঁচজনের ভিড় থেকে সবাই নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরতে পারে না। অমিত পেরেছে। ও নিজেকে সাধারণ বলে শুধু নিজের অসাধারণতা দেখানোর জন্যই। লেখক সেই সময়ের নারী চরিত্র আঁকতে গিয়ে যে কয়েকটি লাইন লিখেছেন তাতেই সব আয়নার মতো স্বচ্ছ হয়ে যায়। “এরা খুট খুট করে দ্রুত লয়ে চলে; উচ্চৈঃস্বরে বলে; স্তরে স্তরে তোলে সূক্ষ্মাগ্র হাসি; মুখ ঈষৎ বেঁকিয়ে স্মিতহাস্যে উঁচু কটাক্ষে চায়, জানে কাকে বলে ভাবগর্ভ চাউনি; গোলাপি রেশমের পাখা ক্ষণে ক্ষণে গালের কাছে ফুর ফুর করে সঞ্চালন করে, এবং পুরুষবন্ধুর চৌকির হাতার উপরে বসে সেই পাখার আঘাতে তাদের কৃত্রিম স্পর্ধার প্রতি কৃত্রিম তর্জন প্রকাশ করে থাকে।’
কেমন ছিলেন সেই সময়ের শিক্ষিত মহিলারা। কেমন ছিল তাদের চালচলন সব এখানে স্বচ্ছ। পাশ্চাত্যের পালিশ লেগে যাওয়া অচরণের ছাপ এখানে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ। উপন্যাস গড়িয়ে গেছে জীবনের নানা রঙের স্বপ্ন আর কবিতায়। কিন্তু উপন্যাসের গতি হঠাৎ করেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে কেতকীর আগমনে। কেতকী পুরো উপন্যাসটার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। পাঠক হাহাকার করে বলে ওঠে “এ কী করলেন, ‘ঠাকুর’ এ কী করলেন!” আসলে অমিত-লাবণ্যের মিলনের জন্য যখন উপন্যাস প্রস্তুত, পাঠকমন চঞ্চল ঠিক তখনই রবির গোধুলিমাখা বিরাগ সুর জড়িয়ে ধরেছে উপন্যাসটিকে। কিছুতেই মিলন হতে দেব না এই ছিল কলমের দাবি। রবীন্দ্রনাথ অসাধারণ উপমায় লাবণ্যের প্রেমকে দিঘি বানিয়ে কেতকীকে ডুবিয়ে দিলেন। কেতকী হয়ে রইল সামান্য জলের ঘড়া। রবি ঠাকুর এখানে অমিতকে দিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করালেন ঠিকই কিন্তু পাঠক উপন্যাস শেষের অতিনাটকীয়তা মেনে নিতে পারল না। আমরা পরবর্তীকালে বুদ্ধদেব গুহের ‘একটু উষ্ণতার জন্য’ উপন্যাসেও একই সমস্যা দেখি। এরপরও শেষের কবিতা আজও উজ্জ্বল। আজও আমরা দেখতে পাই লাবণ্য হতে চাওয়া হাজার হাজার মুখ। প্রায় একশ বছর আগে ঠাকুর যে লাবণ্যকে এঁকেছেন তা সাহিত্যে শুধু নয় সমাজের আঙিনাতেও আজও দুর্লভ।
শেষের কবিতা উপন্যাসের কবিতাগুলো আজীবন প্রাসঙ্গিক থেকে যাবে। রবীন্দ্রনাথ হৃদয় নিঙড়ে দিয়েছেন শেষের কবিতায়। প্রতিটা কবিতার প্রতিটা লাইন যেন এক একটা মাইলস্টোন। সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নে বারবার একটি প্রশ্নের দেখা মেলে। ‘শেষের কবিতা’ কোন ধরনের রচনা? উত্তরে চারটি বিকল্পের মধ্যে দুটো থাকে কবিতা ও উপন্যাস। এই উপন্যাসে কবিতার বহু খণ্ডিতাংশ রয়েছে। কবিতার ছন্দে ও লয়ে সুরারোপিত হয়েছে কাহিনিতে। অমিতের আত্মবিশ্বাসী ঝঙ্কার, লাবণ্যের শান্ত স্থির স্রোত দুয়ে মিলে কাব্যকথনে মুখরিত হয়েছে প্রেমে। “দোহাই তোদের একটুকু চুপ কর। ভালোবাসিবারে দে আমারে অবসর।” এক বিরামহীন ভালোবাসার গান এ উপন্যাস। এখানে আরেকটি অদেখা চরিত্রের খোঁজ মেলে। অমিত যে কবির কবিতাকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে তিনি নিবারণ চক্রবর্তী। লাবণ্যের রবীন্দ্রপ্রেমের বিপরীতে সে একেই দাঁড় করিয়ে দিতে চায়। তাকে কেউ চেনে না, জানে না, গালি দেবারও উপযুক্ত মনে করে না। ক্ষণে ক্ষণে এও মনে হয়, অমিত নিজেই কি সেই নিবারণ চক্রবর্তী? সে কি গা ঢাকা দিয়ে আছে হালফ্যাশান প্রগলভ ব্যারিস্টার অমিত রয়ের মধ্যে? কিছু প্রশ্ন কেই যায়, সাথে বহু সম্ভাবনাও!
শেষের কবিতার শেষ নেই। শেষের কবিতা আসলে অবিরাম বেজে চলা রবীন্দ্রযুগের গান শোনায়। শেষের কবিতা প্রতিনিয়ত বলে রবীন্দ্রনাথ প্রাসঙ্গিক ছিলেন আছেন এবং থাকবেন। মোর বন্যা, তুমি অনন্যা,/আপন স্বরূপে আপনি ধন্যা। অমিতলালের লাবণ্য সম্পর্কে এই উক্তি থেকেই ‘শেষের কবিতা’র নায়িকা লাবণ্যের পরিচয়ের প্রথম সূত্রটি পাওয়া যায়। আর পাঁচটি মেয়ের মধ্যে যে সে একজনা, তা সুস্পষ্ট। মাতৃহীন, অধ্যাপক পিতার আদুরে মেয়ে লাবণ্য ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার সঙ্গে বড় হতে হতে তার জীবনে যেন পড়াশুনাই একমাত্র সঙ্গী হয়ে ওঠে। অনেক বই পড়ে সে, তার নিজস্ব একটা জগৎ আছে। তাতেই লাবণ্য অনন্য। দেখতেও কোথাও যেন একটা অন্যরকম ছাঁদ আছে তার। অমিতলালের সঙ্গে তার প্রথম সাক্ষাতেই তা সুস্পষ্ট।
লেখকের ভাষায়- ‘সদ্য-মৃত্যু-আশঙ্কার কালো পটখানা তার পিছনে, তারই উপরে সে যেন ফুটে উঠল একটি বিদ্যুৎরেখায় আঁকা সুস্পষ্ট ছবি- চারিদিকের সমস্ত হতে স্বতন্ত্র। মন্দরপর্বতের নাড়া খাওয়া ফেনিয়ে-ওঠা সমুদ্র থেকে এইমাত্র উঠে এলেন লক্ষ্মী, সমস্ত আন্দোলনের উপরে- মহাসাগরের বুক তখনো ফুলে ফুলে কেঁপে উঠছে।’ লাবণ্যের পরনে ছিল সাদা আলোয়ানের শাড়ি, তার উপরে একটি জ্যাকেট। তার দেহটি দীর্ঘ, বর্ণ হালকা শ্যামলা, টানাটানা চোখের ভেতর স্নিগ্ধতা, প্রশস্ত ললাটের পিছনে ঝুলে পড়া চুল, চিবুক ঘিরে সুকুমার মুখের ডৌলটি একটি অনতিপক্ব ফলের মতো রমণীয়। সবমিলিয়ে একেবারে নায়িকাদের মতো (আক্ষরিক অর্থে) অপূর্ব সুন্দর তা নয়, কিন্তু একটা অভূতপূর্ব জ্যোতিতে ভাস্বর লাবণ্য। অমিত যেন আচমকাতেই প্রেমে পড়ে যায় তার।
উপন্যাসে ধীরে ধীরে লাবণ্যের স্বভাব, চরিত্র এবং বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটতে থাকে। শান্তশিষ্ট এই মেয়েটি জীবন নিয়ে বড় কোনো আশা করতে পারে না। কোথায় যেন তার একটা শঙ্কা কাজ করে। অথচ আর পাঁচটা মেয়ের থেকে সে যে কোন কোন ক্ষেত্রে আলাদা, তা সেও বুঝতে পারে। অমিত যতই তার নিকটবর্তী হতে থাকে ততটাই তার শঙ্কা বাড়ে। অমিতের চকিতে এসে ভালোবাসার আহ্বানটা লাবণ্যের কাছে স্বপ্নের মতো মনে হয়। তাই অমিত যখন ফিরে আসতে পারবে না বলে জানায়, তখন লাবণ্য বিচলিত হয় না। বরং এমনটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বলেই তার মনে হয়ে। প্রকৃতপক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই উপন্যাসে লাবণ্য নামক চরিত্রটিকে এমনভাবে নির্মাণ করেছেন যাতে লাবণ্য একেবারেই অন্যরকম একটি মেয়ে। বাস্তবিক এমন মেয়ে আছে কিনা সন্দেহ। অন্যদিকে অমিতলালের মতো নায়কের অভাব নেই দুনিয়াতে। সে জন্য লাবণ্য চরিত্রটি ভিন্ন একটি মাত্রাতে পৌঁছেছে।
লাবণ্য এমন একটি মেয়ে, যে তার হৃদয়ের গভীরের অনুভূতিকে একেবারে গোপনে লুকিয়ে রাখতে জানে। সে এতে এতটাই পারদর্শী যে উপন্যাসেও শেষ পর্যন্ত ব্যক্ত হয়নি লাবণ্যের অমিতের প্রতি ভালোবাসার সুনির্দিষ্ট রূপটি। তাই তার শেষ চিঠিতে লাবণ্য লিখেছে- ওগো তুমি নিরূপম, হে ঐশ্বর্যবান,/তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান-/গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।/হে বন্ধু, বিদায়।
অমিতকেই শেষ পর্যন্ত একটি নায়কের চরিত্র দান করে লাবণ্য নিজেকে সামান্যা হিসেবে জানিয়েছে। উপন্যাসের কাহিনিভাগে কিন্তু অমিতের চেয়ে লাবণ্যই যথেষ্ট উজ্জ্বল। বরং অমিত যখন লাবণ্যকে শেষ চিঠি লেখে সেখানে তার সহজ স্বীকারোক্তি করে যে, লাবণ্য তার কাছে দিঘির মতো বিস্তৃত। যেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে সাঁতার কাটা যায়। অন্য পাঁচটি মেয়ে যেখানে ঘটির জলের মতো নিত্যনৈমিত্তিক কাজেই যাদের দরকার।
আমাদের সমাজে লাবণ্যরা যত কাঁদে নীরবে, আর নিজেকে ঠকায় ভালোবাসার মানুষের আঘাতে, ততই তারা প্রশংসা পায় বিখ্যাত হয়; আসলে তারা জীবনে কতটুকু নিজেকে স্বস্তিপূর্ণ সুখ দিতে পারে? আর অমিতরা বড় বড় কথা বলে মহৎ যে নারীগুলোর মন ভাঙে ভালোবাসার স্টাইলে, তারা কতবার প্রেমে পড়ে? মানুষ এক মনে কতজনকে ভালোবাসতে পারে? মনের ও তো চরিত্র আছে? মন যাকে ভালোবাসে সেখানে মনের মিলই যথেষ্ট, সে কোনো যোগ্যতার লেশমাত্র নেই। চোখের রঙে ভালোবাসলে সেটা বদলায়, মনের রঙে ভালোবাসলে তার পরিবর্তন হয় না। যারা ঠকায় তারাই একমাত্র ঠকে!
যারা ত্যাগ করতে জানে, দান তো ঈশ্বর তাদের দেয়!ভালোবাসা পাওয়া ভাগ্যবান তারাই যারা ঈশ্বরের দান পায়।ভালোবাসাহীন ঘর, তাসের ঘর! আর সজ্জা হয় কণ্টক সজ্জা।ভালোবাসি বলা বড় সহজ সমাচার, কিন্তু ভালোবাসা যার তার কাজ নয়। ভালোবাসা শেষ বলে কিছুই নেই! ভালোবাসা অশেষ।‘তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারই দানগ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়।হে বন্ধু, বিদায়।’
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
দৈনিক শব্দের মেঠোপথ
Doinik sabder methopath
Vol -336. Dt -08.04.2021
২৫ চৈত্র,১৪২৭. বৃহস্পতিবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
No comments:
Post a Comment