ওগো বৃষ্টি আমার ছুঁয়ো নাকো .....এমন করে.
প্রিয়জনের অনুপস্থিতি আবেগাপ্লুত করে তোলে। প্রিয়জনের শূন্যতাকে দ্বিগুণ করে। তাই তো বর্ষাকাল আলাদা এক উপাখ্যানের জন্ম দিয়েছে। বর্ষা নিয়ে এ যাবৎকালে কম সাহিত্য রচিত হয়নি। সাহিত্যের সবগুলো শাখার মধ্যে কবিতা ও গানে বর্ষার অনুষঙ্গ এসেছে অসংখ্যবার। কোনো কোনো কবির হাতে রচিত হয়েছে পূর্ণাঙ্গ এক কাব্য, যার আদ্যোপান্ত বর্ষায় সিক্ত।বর্ষাকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক প্রেম ও বিরহের গল্প, কবিতা ও গান। আর এসব কারণেই বর্ষাকে বিরহের কাল বলা হয়ে থাকে। প্রেমিকের জীবনে বর্ষা আসে বিরহ নিয়ে। কী জল কী বর্ষা; বাদলের ধারায় বেদনার্ত হয়ে ওঠে মন। ঝরে বেদনাশ্রু। প্রিয় কিছু হারানোর বেদনা বর্ষা এলেই খুব বেশি মনে পড়ে। অথই জলের মধ্যে হাবুডুবু খায় প্রেমিকপ্রবর। তাকে যেন বানের জলের মতো ভাসিয়ে নেয় অজানা গন্তব্যে। তাই তো কবির কাছে বর্ষা মানে ক্ষণে ক্ষণে বিরহের গান। বলা নেই-কওয়া নেই অমনি শুরু হয়ে গেল অশ্রুবর্ষণ। কখনো কখনো মনে হয় চোখভরা অভিমান নিয়ে ধেয়ে আসা কিশোরীর পায়ের নূপুরের রিনিঝিনি আওয়াজ।বর্ষা হাসাতে পারে, কাঁদাতে পারে। বর্ষা ভাবায়, বর্ষা ভালোবাসায়। বর্ষা মানেই গর্জে ওঠা নদী। দু’কূল ছাপিয়ে তলিয়ে দেওয়া গ্রামের পর গ্রাম। সুখ-দুঃখে একাকার হয়ে ভেসে বেড়ানো পালতোলা নৌকা। বিরহী সুর জেগে ওঠা মাঝির ভাটিয়ালি গান। কলা গাছের ভেলায় ভেসে যাওয়া ক্ষুদ্র জীবন। ব্যাঙের একটানা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাকে দূর থেকে ভেসে আসা রাগ-রাগিণী। পানকৌড়ির ডুবসাঁতারের খেলার মতো প্রিয়তমার লুকোচুরি।র্ষা নিয়ে মহাকবি কালিদাস রচনা করেছেন বিখ্যাত মহাকাব্য ‘মেঘদূত’।
মেঘকে সেখানে যক্ষের বন্ধু বলা হয়েছে। যক্ষ তার প্রিয়ার কাছে মেঘকে দূত করে খবর পাঠাতেন। কী করে একখণ্ড মেঘ কবির কল্পনায় হয়ে উঠছে বিরহীর বার্তাবাহক প্রাণবন্ত-জীবন্ত দূত! কল্পনায় মেঘখণ্ডকে ইন্দ্রিয়ানুভব প্রদান করে মেঘের স্তুতি করে যক্ষ বলছে, ‘ওগো মেঘ, আমি জানি তুমি পুষ্কর এবং আবর্তক মেঘের বংশে জন্মগ্রহণ করেছ, তুমি ইন্দ্রের প্রধান সহচর, তুমি তোমার ইচ্ছানুযায়ী রূপগ্রহণ করতে পারো! অদৃষ্টবশে আমার প্রিয়া আজ দূরবর্তী, তাই তোমার কাছে আমি প্রার্থী হয়ে এসেছি; গুণবান ব্যক্তির কাছে প্রার্থনা যদি ব্যর্থ হয় তবে তাও ভালো, অধম ব্যক্তির কাছে প্রার্থনা সফল হলেও তা বরণীয় হতে পারে না।’ কর্তব্যে অবহেলার দায়ে একবছরের জন্য নির্বাসিত যক্ষ মেঘকে অনুরোধ করেছে তার প্রিয়ার কাছে খবরটুকু পৌঁছে দিতে। মেঘদূত ছাড়াও বৈষ্ণব পদাবলীতেও বিরহের সঙ্গে বর্ষার একটি নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করেছেন পদকর্তারা। পদাবলী সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ মহাজন বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস আর বিহারীলালের কবিতায় বর্ষা এসেছে একাধিকবার। তাদের বিরহের কবিতায় ও গানে বর্ষা ও বিরহ একাকার হয়ে গেছে। যা নতুনরূপ নিয়েছে মধ্যযুগের বাংলা কবিতা ও গানে। ওই সময়ে বর্ষাই যেন প্রিয়জনের আরাধনার উৎকৃষ্ট সময়। ভাবনার নিরবচ্ছিন্ন উপলক্ষ হয়ে উঠেছিল। মধ্যযুগে চণ্ডীদাসের কোনো কোনো কবিতায় বর্ষা এসেছে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমের ইন্ধন হিসেবে। মধ্যযুগের কবিরা বর্ষাকে অভিসার ও বিরহ পর্বে ‘প্রেমের আগুনে ঘিয়ের ছিটা’ হিসেবে কল্পনা করেছেন। একই ধারায় চণ্ডীদাস তাঁর প্রেম-বিরহ-কাতরতার কথা প্রকাশ করেন তাঁর কবিতায়। আঙিনায় বর্ষাসিক্ত রমণী দেখে কবিমনে প্রেমাবেগ জাগ্রত হয়েছে। রমণীর ভেজা শরীরের স্পর্শ পেতে উতলা হয়ে উঠেছে মন। তবে ছুঁতে না পারার আকাঙ্ক্ষায় প্রাণ যেন ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যাপতির কবিতায়ও বর্ষার বিরহ কাতরতা কোনো অংশে কম নয়। কবিদের সব বিরহ যেন এখানেই এসে সিক্ত হয়ে ওঠে। বর্ষায় মাঠ-ঘাট ভিজে একাকার। মানুষগুলো অনিচ্ছাকৃত বন্দিদশা বরণ করে। শূন্যতা দানা বেঁধে ওঠে বুকের ভেতর। বর্ষার এ আলস্যে প্রিয়তমার সান্নিধ্যই তার পরম আরাধ্য।বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে কৃষ্ণের জন্য রাধার বিরহের যন্ত্রণা বেড়ে যায় এই বর্ষা এলেই। এমনও দেখা গেছে, বর্ষায় অভিসারে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে রাধা নিজের ঘরের মধ্যে পানি ছিটিয়ে কর্দমাক্ত করে কাঁটা পুতে রেখে রাতের অন্ধকারে তার ওপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে প্রিয় কৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভের সাধনা করতেন। যেন বর্ষায় প্রিয় কৃষ্ণের অভিসারে যেতে পথের কাঁটা তার বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়। পিচ্ছিল পথ যেন অনায়াসেই হেঁটে যেতে পারে। কালকেতু উপাখ্যানে বর্ষা এসেছে উপার্জনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে। স্বভাবতই গ্রামাঞ্চলে বর্ষা এলে কাজ-কর্ম কমে যায়। চারিদিকে অথৈ পানি থাকায় উপার্জনের তেমন কোনো পথ থাকে না। ফলে গ্রামের পুরুষেরা অলস সময় কাটায়। নারীরা ঘরের মধ্যে বসে টুকটাক হস্তশিল্পের কাজ করে। তাদের জন্য বরং বছরের অন্যান্য মাসে উপার্জিত শস্যই তখন তাদের ক্ষুধা নিবারণে সহায়ক হয়ে ওঠে। মধ্যযুগের কাব্যে বর্ষার ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়- একথা অনস্বীকার্য। তবে মধ্যযুগের ধর্মাশ্রিত কাব্যচর্চার পরে আধুনিক যুগে এসে কবিদের কবিতায় মানবতার সুরের সঙ্গে-সঙ্গে তাল মেলাতে বর্ষার প্রসঙ্গও এসেছে সমানতালে। আধুনিক যুগের অন্যতম কবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত তাঁর ‘বর্ষাকাল’ কবিতায় বর্ষার রূপকল্প বর্ণনা করেছেন। যেখানে মেঘের গর্জনে নদ-নদী উথাল-পাথাল হয়ে ওঠে। সাথে সাথে বর্ষার মিষ্টি মধুর আবহাওয়া বা হালকা শীতল পরিবেশ নর-নারীর মনে কাম বাসনা জাগ্রত করতে সহায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়। কর্মহীন অলস সময় তখন তারা মেতে ওঠে জৈবিক চাহিদা নিবৃত্তের উৎসবে। মেঘের গর্জনের সাথে সাথে নারী বক্ষে উন্মাতাল ঢেউ ওঠে। যা আছড়ে পড়ে পুরুষের সুবিশাল বক্ষে।বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান মহাপুরুষ বিশ্বকবি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর উপন্যাস, গল্প, কবিতা ও গানে বর্ষাকে উপস্থাপন করেছেন বিভিন্ন আঙ্গিকে। তাঁর হাত ধরেই কবিতার মাধ্যমে বর্ষা যেন পূর্ণতা পেয়েছে।
তাঁর কবিতায় বর্ষার বিচিত্র রূপ প্রকাশ পায় বর্ষাবন্দনা রূপে। রবীন্দ্রনাথের গানের কথা বাদ দিলেও বহু জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে আমরা বর্ষার অনুষঙ্গ খুঁজে পাই। তাঁর ‘আষাঢ়’, সোনার তরী’, ‘বাঁশি’সহ বহু কবিতায় বর্ষা এসেছে বিভিন্ন আঙ্গিকে। এছাড়া কবিগুরুর অন্যতম ছড়া কবিতা ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ আমাদের দুরন্ত শৈশবকে হাতছানী দিয়ে ডাকে। গ্রামীণ জনপদ ছেড়ে যারা নাগরিক কোলাহলে মত্ত হয়ে ওঠে, তাদের জন্য বর্ষা তখন স্মৃতিই হয়ে ওঠে। এমনও হয় যে, নাগরিক জীবনে বহুদিন হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয় না। কিংবা কংক্রিটের দেয়ালের মাঝে বসে উপলব্ধিই হয় না যে, বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো কখনো অতীতের স্মৃতিগুলো নাড়া দিয়ে কেবল স্মরণ করিয়ে দেয় প্রিয় বর্ষাকে।কবির মতোই আজো বৃষ্টি এলে নিজের অজান্তেই মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে ‘বিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’। তবে দাদা-দাদির কোলে বসে গল্প শোনা হয় না। নদীর ভরা জল হয়তো চোখে পড়ে না। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টেই কেবল দেখি- ‘আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন’। কবিগুরুর পরেই বর্ষাবন্দনার জন্য বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করা যায়। তাঁর কবিতায়ও বর্ষা ধরা দিয়েছে বিভিন্ন প্রতীকী ব্যঞ্জনায়। বর্ষার মেঘ তাঁর বিরহ-বেদনাকে আরও বেশি উসকে দিয়েছে। যার প্রিয়জন দূরে, বর্ষা তাকে আরও বেশি পীড়া দেয়। একাকিত্ব অনুভূত হয় মনের মাঝে। ব্যাকুল মন কেবলই প্রিয়জনের স্পর্শ কামনা করে। তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে বাদল রাতের পাখিকে বন্ধু ভেবে বিরহের সঙ্গে নিজের বিরহ একাকার করতে চেয়েছেন। তিনি বর্ষাকে ভেবেছেন তাঁর দুঃখ-যাতনার সাথী। তার গানেও শুনেছি বর্ষার যত আকুতি।রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ‘শ্রাবণরাত’ কবিতায় দেখি- শ্রাবণের গভীর রাতে কবির ঘুম ভেঙে যায়। সাগরের গর্জন শুনতে পান তিনি। বৃষ্টি থেমে গেলেও নিস্তব্ধ হয়ে উপসাগরের ধ্বনি শুনতে পান। মনে হয় কারা যেন বড় বড় কপাট খুলছে, আবার বন্ধ করছে। শ্রাবণরাতের এমন দৃশ্যকল্পই কবির চোখের ঘুম কেড়ে নেয়। তার মতো পল্লীকবি জসীমউদদীনও বাদ পড়েননি বর্ষা থেকে। পল্লীকবির কবিতায় স্বভাবতই গ্রামীণ দৃশ্যপট ভেসে ওঠে। বর্ষার প্রিয় অনুষঙ্গ কদম ফুল ধরা দেয় কবিতায়। এমনকি বর্ষা এলেই হিজল ফুলের মালা গেথে সময় কাটায় বালিকারা। গ্রামের কৃষকরা মোড়লের বৈঠকখানায় গল্প-গানে মাতিয়ে তোলে। গাঁয়ের বধূরা অন্দরে বসে রঙিন কাঁথা সেলাই করেন। নকশার ভেতরে যেন তার মনের অব্যক্ত কথাগুলোই ফুটে ওঠে। এছাড়াও কবি আহসান হাবীব, আবুল হোসেন, সৈয়দ আলী আহসান, শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, হাসান হাফিজরা বর্ষা-বিবরণে হাজির করেছেন মানুষ-সভ্যতা আর সমাজগতির ধারাপাত। বলতে গেলে কবিদের কল্পনাজুড়ে কেবল বৃষ্টির আনাগোনা। স্মৃতির জানালায় বৃষ্টির টোকা।
গানের আসর বসে, গরম চায়ে ঠোঁট লাগিয়ে খোঁজে উত্তাপ। এতো কেবল কয়েকটি বাংলা কবিতায় বর্ষার উপস্থিতির কথা। আরও কতশত কবিতা যে দৃষ্টিগোচর হয়নি, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কবিতার কথা বাদ দিলেও সাহিত্যের অন্যান্য শাখা- উপন্যাস, গল্প, নাটকেও বর্ষা এসেছে বিভিন্ন উপলক্ষে। শিল্প-সংস্কৃতির শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্রের প্রায় সব নির্মাণেই বর্ষাকে পাই নানাবিধ কৌশলে। বেলাশেষে কেবল এটুকুই বলতে পারি, আসলে বর্ষা নিয়ে যত কথাই বলি- সে তো শেষ হওয়ার নয়।একেকজনের দৃষ্টিতে বর্ষা একেক রকম। কখনো কোমল, কখনো বিদ্রোহী, কখনো কাম-বাসনার আকড়, কখনো আনন্দদায়িনী। আর তাই তো পৃথিবীতে বর্ষা আসবে। আমাদের ভিজিয়ে দিয়ে চলে যাবে। রেখে যাবে নানা অনুভূতি। সেই অনুভূতিকে উপজীব্য করেই কবি-লেখকরা লিখবেন। পাঠক ছুঁয়ে দেখবেন তাদের ভাবনা। তাদের সঙ্গে-সঙ্গে পাঠকরাও বর্ষাসিক্ত হবেন। আবেগের বশবর্তী হয়ে প্রিয়ার বন্দনা করবেন। হয়তো খুঁজে পাবেন সামান্য প্রশান্তি। পাবেন কিছু প্রশ্রয়ও। বর্ষার ধারায় শুদ্ধ হবে মানবমন। পৃথিবী যতদিন থাকবে, সাহিত্য ততদিন থাকবে। সাহিত্য যতদিন থাকবে।
বৃষ্টি যেমন প্রকৃতিকে সতেজ করে তোলে, ঠিক তেমনি বৃষ্টির শীতল বাতাস ও মাটির সুগন্ধ আমাদেরকে ভেতর থেকে সতেজ করে তোলে।
এমনই কিছু কোলাজ -
“সাদা মেঘ আকাশ ঢেকে
বেলার কেড়েছে গতি,
রোদ্দুর আজ না হয়
নিলো ক্ষনিকের বিবি
“ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি আসে,
দাঁড়িয়ে আছি তোমার পাশে,
তোমার সাথে ভিজছি বেশ
এ যেন এক নতুন আবেশ।”
“নীল আকাশ মেঘলা হলো,
নামবে হয়ত বৃষ্টি
আমার কথা পড়লে মনে,
জানালায় রেখো দৃষ্টি।”
“মেঘ তোর সঙ্গে যাবো,
হাওয়ায় ভেসে শীল কুরাবো।
মেঘ তোর সঙ্গে যাবো,
ঠান্ডা হাওয়ায় প্রাণ জুরাবো।”
“বৃষ্টিতে যখন তোমার সোশ্যাল স্ট্যাটাস এর ভীড়ে বারে।
ফুটপাতবাসী তখন বৃষ্টি থামার প্রার্থনা করে।”
“বৃষ্টি পড়ছে টুপটাপ
বারান্দায় বসে চুপচাপ
ভেজা কাকটা ডানা
ঝাপটায় ঝুপঝাপ
অতীতের স্মৃতিগুলো
মাথায় খায় ঘুরাপক।”
“টিপ টিপ বৃষ্টি পরে।
একা বসে আছি ঘরে।
তুমি আছো কেমন করে।
জানাও আমায় SMS করে।
তোমার কথা মনে করে।
মেসেজ দিলাম সেন্ড করে।”
“মেঘের উপর মেঘ জমেছে..
মুখ ঢেকেছে অন্ধকারে..
বৃষ্টি তখন ফন্দি আঁটে
চোখের নজর ঝাপসা করে।”
“এই বৃষ্টির নেশা তে,
চাই মন হারা তে।
সব সীমা ছাড়িয়ে,
মন চাই শুধু তোমাকে।”
“বৃষ্টি হলে খবর দিস
হাঁটবো দু’জন একটি ছাতায়,
খালি পায়ে শহর ঘুরে,
বৃষ্টি ভেজা প্রেমের গল্প,
লিখে রাখব ডায়রির পাতায়।”
“বাইরে বৃষ্টি ভেতরে বৃষ্টি
ভেজা ভেজা মন।
মনের দুয়ারে চোখের কিনারে
তুই সারাক্ষন।”
“আবার যদি বৃষ্টি নামে,
আমিই তোমার প্রথম হবো।
লেপ্টে যাওয়া শাড়ির মতো
অঙ্গে তোমার জড়িয়ে রবো।”
শহর জুড়ে বৃষ্টি নামুক,
তুমি খুঁজে নিও ঠাঁই।
প্রতিটি বৃষ্টির কণায় লেখা থাকুক,
আমি তোমাকে চাই।
ছুঁয়ে ছুঁয়ে হাঁতটা তোমার হয়ে যাবো বৃষ্টি
তোমার দিকে তাকিয়ে রবো সরবে না এই দৃষ্টি..
“অল্প অল্প মেঘ থেকে,
হালকা হালকা বৃষ্টি হয়।
ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে,
ভালোবাসা সৃষ্টি হয়।”
“হোকনা সেই বৃষ্টি,
যে বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায়,
তোমার স্পন্দন খুঁজে পাই!”
“ফুল যদি পারে ভালোবাসা শিখাতে,
চাঁদ যদি পারে রাতকে জাগাতে।
মেঘ যদি পারে বৃষ্টি ঝড়াতে..
তবে! তুমি কি পারোনা..
আমায় আপন করে নিতে।”
“বৃষ্টি মানে অনুভুতি,
সাথে আছে কেউ।
বৃষ্টি মানে নতুন করে,
ভালবাসার ঢেউ।
বৃষ্টি মানে মনের মাঝে লুকিয়ে,
থাকা আশা।
বৃষ্টি মানে বন্ধুর দেওয়া,
একটু ভালোবাসা।”
প্রিয়,
দূরত্ব তো শুধু অজুহাত,
তোমার ভালোবাসায় আমার বৃষ্টিপাত।
সকাল হলো নেই সূর্য,
ঝরছে শুধু বৃষ্টি…
আজ লাগছে তোমায়
কি দারুণ মিষ্টি…
“মেঘ চায় বৃষ্টি,
চাঁদ চায় নিশি,
মন বলে আমি তোমায়
অনেক ভালোবাসি..!!”
ছুঁয়ে দেব তোমায়
বৃষ্টি ভেজা শীতল হাওয়ায়
হৃদয়ে শীতল শিহরণে
ভালবাসা জাগাবো তোমার মনে
সেই ভালবাসায় জড়িয়ে নিও আমাকে।
“আমার সারাটা দিন
মেঘলা আকাশ বৃষ্টি
তোমাকে দিলাম
শুধু শ্রাবন সন্ধ্যা টুকু
তোমার কাছে চেয়ে নিলাম।”
শ্রাবনে ওই বৃষ্টি ধারায়,
আজ শুধু তোমাকে খুঁজে বেড়াই.,
যদিও তুমি অনেক দূরে,
তবুও রেখেছি তোমায় মন পাঁজরে,
নীরবে তোমায় মিস করি সারাক্ষণ,
অথচ তা তোমারকাছে আজও গোপন…
শহর জুড়ে ভ্যাপসা গরম,
স্মৃতির মেলায় দারুন ভিড়,
অনেক কষ্টে জোড়া লাগানো,
ভালোবাসার শূন্য কুঠির,
আজও বৃষ্টি নামে তোমার নামে,
আঙ্গুল ধরতে চাওয়া নরম হাত,
গোপনে জমানো আবেগ আর,
চিঠির খামটা ভিজলো হঠাৎ।
“আকাশ জুড়ে বৃষ্টি,
আর বৃষ্টি ভেজা মন,
মন চাইছে খুশি থাকুক
আমার আপনজন,
নীর রঙে আকাশ এখন
মেঘে ঢাকা কালো,
আমি আছি দারুন,
বন্ধু তুমি থেকো ভালো।”
“শহর জুড়ে বৃষ্টি আজ
ভিজতে ভালো লাগে।
তোমার কথা মনে পড়ে
রাগে অনুরাগ।
একলা তুমি বসে আছো
জানালা আছে খোলা।
আমার সেই বন্ধু তুমি
যায়না যারে ভোলা।”
“কাঁচের গায়ে বৃষ্টি ফোটা
জলছবি আর আঁকবে না।
জমানো অনেক গল্প ছিলো
থাক! তুমি বুঝবে না.!”
একলা পথিক জীবন পথে,
সাথে থাকে নি কেউ…
ঝড়-বৃষ্টি চোখে লুকিয়ে,
বুকে ভেঙেছি সব ঢেউ…
যেসব কথা ভুলে গেলে ভালো থাকা যায়,
শ্রাবণ তাদের ফিরিয়ে আনে,বৃষ্টি পায়ে পায়ে…
নষ্ট কাজ,নষ্ট সাজ,নষ্ট সারাটা দিন,
এই শ্রাবণ কি ভীষন,মায়াদয়া হীন…
“মন খারাপ এর বৃষ্টিতে
চোখ কেন ভিজতে চায়,
কাঁচ ভাঙা এ আয়নায়
তোর ছবি পাল্টে যায়।
তুই ফিরে আয় আমার কল্পনায়।”
“তুমি ভাবছ মেঘ করেছে,
বৃষ্টি পড়বে অনেকক্ষন,
আসলে তো মেঘ করেনি,
ওটা মন খারাপের বিজ্ঞাপন।”
“কতটা অভিমান জমিয়েছো
ওই বুকে?
জানি আসবে না ফিরে,
তবু আজ চাইছি তোমায় ডাকতে,
মনে জমা মেঘ-বৃষ্টি
আপন হল আমাতে।”
“ঝরঝর ঝরে জল,
বিজুলি হানে,
পবন মাতিছে বনে
পাগল গানে,
আমার পরানপুটে
কোনখানে ব্যথা ফুটে,
তার কথা জেগে
উঠে হৃদয় কোণে।”
মেঘ করলেও বৃষ্টি হয় না,
বদলে গেছে আবহাওয়া…
তোমার ছাদে রামধনু উঠুক,
ব্যাস এটুকুই চাওয়া….
শুভ রাত্রি
“যদি কোন বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তোমার চোখে ঘুম না আসে
জানালার পাশে তুমি ..
এসে দাঁড়িও
হিমেল হাওয়া হয়ে আমি..
তেমায় ছুয়ে দেবো।”
“শ্রাবনের বৃষ্টি এসে
জুড়িয়ে দিল জ্বালা।
বর্ষা এলো শুরু হলো
মেঘ বৃষ্টির খেলা।
নব বর্ষায় ভিজলো সবাই
ভিজলো সবার মন।
আর যে কিছু দিন পরেই
হবে মায়ের আগমন।”
“বৃষ্টি ভেজা সিক্ত শহর
জল রঙেতে ভাসছো তুমি,
সময় পেরোয় ভীষণ রকম
আমার দেশ তুমি বড্ডো দামি।”
“বৃষ্টি ভেজা বিকেল
একাকী বারান্দা
এক কাপ উষ্ণ কফি
পছন্দের গল্পের বই।”
“টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ে,
তোমার কথা মনে পড়ে।
এ মন না রয় ঘরে,
জানি না তুমি আসবে কবে!
এ প্রান শুধু তোমায় ডাকে,
আমায় ভালবাসবে বলে!
ফুল হাতে থাকবো দাঁড়িয়ে,
বলবো আমি তোমায় পেয়ে।
সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে
পেয়েছি তোমায় খুঁজে..!!”
সুদূর পারে কালো মেঘের দেশে,
নেই আজ ঝড়ের পরোয়ানা,
আছে শুধুই বৃষ্টি ভালোবেসে,
শিকল ভাঙা একলা শামিয়ানা…
ঝিরঝিরে বাতাসের স্পর্শে
ছিঁটকে পড়া সেই কৃষ্ণচূড়ার রঙে,
রাঙিয়ে নেওয়া কিছু মূহুর্তে
ছুঁয়ে দিয়েছি বৃষ্টির কণা
সেই সাথে কিছু অচেনা মায়া।
ভিজলো শহর,ভিজলো স্মৃতি…
খোলা হাওয়ার মাতাল আদর…
শেষ রাত্রে পুরোনো ব্যাথায়,
শহর জুড়ে ঘুমের চাদর…
খোলা হাওয়ায় প্রেম রইলো,
বৃষ্টির মতোই আমার আসা,
কবিতা হয়েই ঝড়বো দেখো,
তোমার জন্য ভালোবাসা…
রিমঝিম বৃষ্টিরা কানে কানে,
আমায় চুপি চুপি এসে বলে,
শাড়ির আঁচল একটু ভিজুক,
না হয় একটু ভিজলো চিবুক।
তবু শীতলতা ছুঁয়ে দেখুক!
প্রকৃতির যত জমানো কথা,
ঝুম ঝুম নেচে গানের সুরে,
মন ভরে আজ বলুক…
“বৃষ্টি হলে নাকি
সবার প্রেম পাই
আমার তো শুধু ঘুম পায়।”
“বৃষ্টি ভেজা বিকেল
সাথে এক কাপ গরম কফি
আর পুরোনো ডায়েরির
কোনো এক পাতা খুলে,
পুরোনো স্মৃতিতে নিজেকে
হারিয়ে ফেলার নামই
Nostalagia…”
বহুযুগ পর বৃষ্টি-ভোরের সকাল,
গলির মুখে তখনও পাড়া নিঝুম,
নীল পাহারায় কৃষ্ণচূড়ার লাল,
মুহূর্তদের স্বপ্ন পাড়ায় ঘুম…
রাঙা ছাদ আজ পাখিদের আশ্রয়,
রং-পেন্সিল রামধনু রং আঁকে,
ফোঁটা ফোঁটা জল সাজানো হলুদ টবে,
আছড়ে পরে অলস বারান্দাতে…।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment