‘A great teacher is like a candle it consumes itself to light the way for others’.
১৮৮৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ। তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা সচ্ছল ছিল না। তাঁর বাবা স্থানীয় জমিদার বাড়িতে স্বল্প বেতনের চাকরি করতেন। তিনি কখনই চাননি তাঁর ছেলে ইংরেজি শিখুক, বরং তিনি চেয়েছিলেন তাঁর ছেলে পূজারি হোক। যাইহোক, মেধাবী ছাত্র হওয়ার কারণে জীবনে অসংখ্য স্কলারশিপ পেয়েছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজের বৃত্তির সহায়তায় পড়াশুনা চালিয়েছিলেন।
২) তিনি মাদ্রাজ ক্রিশ্চিয়ান কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন এবং তাঁর বিষয় ছিল দর্শন। বই কেনার টাকা ছিল না। তাই, তাঁর এক দাদার কাছ থেকে দর্শনের বই নিয়ে পড়াশুনা করতেন।
৪) একাধারে রাজনীতিবিদ, দার্শনিক ও অধ্যাপক এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোনও পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি তিনি। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
৫) ১৬ বছর বয়সে দূর সম্পর্কের আত্মীয় শিবাকামুকে বিয়ে করেন তিনি। ১৯৫৬ সালে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
৬) ১৯০৯ সালে রাধাকৃষ্ণাণ মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে তাঁর শিক্ষক জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। এসময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন। সে সময়েই তিনি লেখেন তাঁর প্রথম গ্রন্থ 'The Philosophy of Rabindranath Tagore'। দ্বিতীয় গ্রন্থ 'The Reign of Religion in Contemporary Philosophy', প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে।
৭) ছাত্রছাত্রীদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিতও হয়েছেন।
৮) ১৯৫২ সালে তিনি উপরাষ্ট্রপতি হন। কিন্তু, তার আগে ১৯৪৬ সালে ইউনেস্কোর দূত হয়েছিলেন তিনি। এর পর সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের দূতও ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রপতি হন তিনি।
৯) রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর ছাত্ররা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন "জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ সেপ্টেম্বর যদি 'শিক্ষক দিবস' উদ্যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো।" সেই থেকে ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের শিক্ষক দিবস।
১০) বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাঁকে 'British knighthood' উপাধিতে সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৪ সালে তাঁকে 'ভারতরত্ন' উপাধি-তে ভূষিত করা হয়।
১১) ১৯৭৫ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি ইহলোক ত্যাগ করেনপড়াশোনা শেষ করে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন ড: রাধাকৃষ্ণণ। এরপর মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।
1921 সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। 1926 সালের জুন মাসে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের কংগ্রেসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।এরপর 1931 থেকে 1936 পর্যন্ত অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। শিক্ষা [ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৩১ সালে ব্রিটেনের রাজা পঞ্চম জর্জের কাছ থেকে নাইট উপাধি পান তিনি।
স্বাধিনতার পর UNESCO-তে ভারতের প্রতিনিধিত্বও করেন তিনি। এছাড়াও 1949 থেকে 1952 পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বভার সামলান তিনি। 1952 সালের দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর, 1962 সালে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ড: রাজেন্দ্র প্রসাদ পদত্যাগ করলে ড: সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণকে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। 1967 পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার সামলান ড: রাধাকৃষ্ণণ।
১.”সত্যিকারের শিক্ষক তাঁরাই, যাঁরা আমাদের ভাবতে সাহায্য করেন।“- সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ
২.”একজন শিক্ষক সামগ্রিকভাবে প্রভাব ফেলে, কেউ বলতে পারে না তার প্রভাব কোথায় গিয়ে শেষ হয়। ” – হেনরি এডামস
৪.’শিক্ষক হলেন পরিচালক ও নির্দেশক। তিনি নৌকাটি চালিয়ে যান, কিন্তু চালিকাশক্তির উৎস হল শিক্ষার্থী।‘- জন ডিউই
৫.”আমাদের মনে রাখতে হবে: একটি বই, একটি কলম, একটি শিশু এবং একজন শিক্ষক বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে।” – মালালা ইউসুফজাই
৬.”যদি কোন দেশ দুর্নীতিমুক্ত হয় এবং সবার মধ্যে সুন্দর মনের মানসিকতা গড়ে ওঠে, আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি সেখানকার সামাজিক জীবনে তিন রকম মানুষ থাকবে, যারা পরিবর্তন আনতে পারেন। তারা হলেন পিতা, মাতা ও শিক্ষক।”-এ. পি. জে. আবদুল কালাম
৭.”শিক্ষকগণ, আমি বিশ্বাস করি, সমাজের সর্বাধিক দায়িত্বশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হলেন আপনারা। কারণ আপনাদের পেশাদার প্রচেষ্টা পৃথিবীর ভাগ্যকে প্রভাবিত করে।“
৮.”একজন খারাপ ছাত্র একজন দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে যা শিখতে পারে তার চেয়ে একজন ভালো ছাত্র একজন খারাপ শিক্ষকের কাছ থেকে অনেক বেশি শিখতে পারে।“- এ. পি. জে. আবদুল কালাম
৯.”একজন মহান ও আদর্শ শিক্ষকের মধ্যে কয়েকটি বিশেষ গুণ অবশ্যই থাকা উচিত – করুণা, জ্ঞান এবং অদম্য ইচ্ছাশক্তি।“- এ. পি. জে. আবদুল কালাম
১০.”সৃষ্টিশীল প্রকাশ এবং জ্ঞানের মধ্যে আনন্দ জাগ্রত করা হলো শিক্ষকের সর্বপ্রধান শিল্প।“-আলবার্ট আইনস্টাইন
১১.”একজন শিক্ষার্থীর মা হলেন তার প্রথম শিক্ষক, আর একজন শিক্ষক হচ্ছেন তার দ্বিতীয় মা। “
১২.”আমি বরাবরই অনুভব করেছি যে শিক্ষার্থীর জন্য সত্য পাঠ্যপুস্তকই তাঁর শিক্ষক ” – মহাত্মা গান্ধী
১৪.”যে শিক্ষক প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানী তিনি আপনাকে তার জ্ঞানের ঘরে প্রবেশ করার জন্য অনুরোধ করেন না বরং আপনাকে আপনার মনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়।” – খলিল জিবরান
১৫.”যদি তুমি জীবনে সাফল্য অর্জন করে থাকো তাহলে মনেরাখবে তোমার পাশে একজন শিক্ষক ছিলো যে তোমাকে সাহায্য করেছিলো।“- বারাক ওবামা
===========∆∆∆∆∆∆∆∆============
No comments:
Post a Comment