অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়।
জন্ম ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ ই নভেম্বর,(২২ শে কার্তিক ১৩৩৭ বঙ্গাব্দ) বাংলাদেশের ঢাকা জেলার আড়াই হাজার থানার রাইনাদি গ্রামে। (কিন্তু সার্টিফিকেট অনুসারে জন্ম তারিখ - ১লা মার্চ,১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দ। এটি সঠিক ছিল না। তার সাক্ষাৎকার দ্রষ্টব্য) তাঁর পিতা অভিমন্যু বন্দ্যোপাধ্যায় মুড়াগাছা জমিদারের অধীনে কাজ করতেন। মাতার নাম লাবণ্যপ্রভা দেবী। তাঁর শৈশব কৈশোর কেটেছে গ্রামের বাড়িতে যৌথ পরিবারে। স্কুলের পড়াশোনা সোনারগাঁও এর পানাম স্কুলে। কিন্তু দেশভাগের পর ছিন্নমূল হয়ে তারা চলে আসেন ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বানজেটিয়া গ্রামে গড়ে ওঠা মণীন্দ্র কলোনিতে পিতার বাড়িতে কিছুকাল থিতু হয়ে থাকেন। এখান থেকেই প্রবেশিকা পরীক্ষা দেন। তারপর যাযাবরের ন্যায় কেটেছে তার যৌবন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.কম.পাশ করেন ও পরে বি.টি. পাশ করেন। বি.টি.পড়ার সময়ই আলাপ হয় সহপাঠী 'মমতা'র সাথে। পরে তাকে বিবাহ করেন.
রচনা কর্ম।
অতীন্দ্রিয় অলৌকিকের অন্তরালে
অন্তর্গত খেলা (১৯৮৬)
অন্নভোগ (১৯৯০)
অপহরণ
অমৃতা
অমৃত্যু
অরণ্য
অলৌকিক জলযান (১৩৯৩ ব)
আজব দেশে বুমবাই
আবাদ (১৯৮৭)
ঈশ্বরের বাগান (১৯৯৫)
উত্তাপ
উপেক্ষা
ঋতু-সংহার
একজন দৈত্য একটি লাল গোলাপ (১৯৭৪)
একটি জলের রেখা (১৩৭২ ব)
এ কালের বাংলা গল্প (১৩৮১ ব)
কবির স্ত্রী
কাপালি
কালো ভ্রমর
খাদান
গম্বুজে হাতের স্পর্শ(১৩৭৯ ব)
চারু ইন্দ্র এবং কলকাতা(১৩৮২ ব)
জনগণ(২০০৬)
জীবন বড়ো ভারবাহী জন্তু
জীবন মহিমা (১৯৮৫)
ঝিনুকের নৌকা
টুকুনের অসুখ
তখন হেমন্তকাল(১৩৭৯ ব)
তুষার কুমারী
দুই ভারতবর্ষ (১৯৯৫)
দুঃখিনী বর্ণমালা মা আমার
দুঃস্বপ্ন (১৩৮০ ব)
দেবী মহিমা(১৯৮৪)
দ্বিতীয় পুরুষ (১৯৯৪)
ধ্বনি-প্রতিধ্বনি
নগ্ন ঈশ্বর (১৩৭৪ ব)
নদীর সঙ্গে দেখা(১৯৯৪)
নারী ও পুরুষ
নারী ও নদীর পাড়ে বাড়ী
নায়কের মত
নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে (১৯৭১)
পঞ্চযোগিনী
পাগলিনী রাধা
পালকের টুপি
পিপাসা (১৩৭৯ ব)
পুতুল
প্রেসে-অপ্রেসে
পৃথিবীর এক কোণে(১৩৮৫ ব)
ফোটা পদ্মের গভীরে
বলিদান (১৩৮৭ ব)
বিদেশিনী (১৩৭৬ ব )
বিভ্রম(১৩৮৫ ব )
মধ্য যামিনী
মনোরম বনভূমি
মানগানু উপত্যকার বেড়াল (১৯৭৭)
মানুষের ঘরবাড়ি (১৩৯০ ব)
মানুষের মামুলি কেচ্ছা( ১৩৮২ ব)
মানুষের হাহাকার (১৩৮৮ ব)
মামার বাড়ি ভূতের বাড়ি (১৯৮৪)
মৃত্যুপথের যাত্রী
মৃন্ময়ী
যদি রাধা না হতে' '
যুবতী পরম রূপবতী (১৯৭৬)
রাজা যায় বনবাসে
রূপকথার আংটি
রোদ্দুরে জ্যোৎস্নায়
লাঞ্ছিতা (২০০০)
শঙ্খচিলের ডানা
শামুকখোল
শূণ্যের মাঝখানে বানাইল
শেষ দৃশ্য (১৯৭৮)
শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৯৪)
সবুজ শ্যাওলার নিচে
সমুদ্র মানুষ (১৯৬০)
সমুদ্রে বুনোফুলের গন্ধ( ১৩৯৯ ব )
সাগর জলে (২০০৮)
সাগরে মহাসাগরে
সাদা জ্যোৎস্না (১৩৭৮ ব)
সুখী রাজপুত্র
সুন্দর অপমান
সোহাগপুর
স্বর্গ খেলনা
কিশোর উপন্যাস -
অরণ্যরাজ্যে ম্যান্ডেলা
উড়ন্ত তরবারি
একটি জলের রেখা ও ওরা তিন জন
গিনি রহস্য
ফেনতুর সাদা ঘোড়া (১৩৮৭ ব)
দুষ্টু হাতিটি
নীল তিমি (১৯৯৪)
বিন্নির খই লাল লাল বাতাসা
রাজার বাড়ি
হীরের চেয়েও দামি
পুরস্কার তালিকা
মানিক স্মৃতি পুরস্কার - ১৯৫৮ সালে 'সমুদ্র মানুষ' এর জন্য।
বিভূতিভূষণ স্মৃতি পুরস্কার - ১৯৯১ সালে।
ভুয়াল্কা পুরস্কার - ১৯৯৩ সালে পঞ্চযোগিনী এর জন্য।
বঙ্কিম পুরস্কার - ১৯৯৮ সালে দুই ভারতবর্ষ এর জন্য।
মতিলাল পুরস্কার
তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও সুধা পুরস্কার - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার - ২০০১ সালে পঞ্চাশটি গল্প-এর জন্য
শরৎ পুরস্কার- ২০০৫ সালে
সুরমা চৌধুরী আন্তর্জাতিক স্মৃতি পুরস্কার (আই.আই.পি.এম প্রবর্তিত) - ২০০৮ সালে
সাম্মানিক মূল্য দশ লক্ষ টাকা 'নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে'-র জন্য
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই জানুয়ারি শুক্রবার বাথরুমে পড়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। কলকাতার পোর্ট ট্রাস্টের সেন্টিনারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু পরদিন শনিবার ১৯ শে জানুয়ারি বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে ৮৫ বৎসর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আলোচনা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমগ্র লিখন স্বাতন্ত্র্যের কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই যে কথাটি উচ্চারিত হয়, সেটি হ’ল তাঁর totality সম্পর্কে দ্বিধাহীন ধারণা। কথা হচ্ছে, কীসের টোটালিটি? তাঁর লেখা নিয়ে বিদগ্ধ সমালোচকদের আলোচনায় বিষয়টি এসেছে। টোটালিটি বলতে জীবনের সমগ্রতার সন্ধানের কথাই তাঁরা বলেছেন। যে কালে, যে মাটিতে লেখকের অবস্থান, সেই কাল এবং মাটি থেকে, মানুষের বেঁচে থাকার সঙ্গে উপাদানের সংঘাতের ফলে লেখকের যে জীবনবোধ ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, কাহিনির বিস্তারে সেই দর্শন সার্থক ভাবে, শৈল্পিক দক্ষতায় প্রকাশ করার ক্ষমতাকেই বলা হয়েছে টোটালিটি। জীবনের এই সমগ্র রূপ একজন লেখক তাঁর ব্যক্তিগত জীবনযাপনের অভিজ্ঞতায় বোধে সঞ্জাত করেন। তারপর এক একজন লেখক স্বতন্ত্র শৈলী দিয়ে সেই অনুভবকে কথামালায় রূপ দেন। একটি উপন্যাস গড়ে ওঠে।
যাপিত অভিজ্ঞতা যত বিচিত্র এবং বহুমুখী হয়, লেখকের মনোজগতে মানবজীবন সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা ততই বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে। এ যেন সেই যত বেশি নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা যায়, ততই বেশি করে সত্যের কাছে পৌঁছনো যায় – সেই তত্ত্বের প্রয়োগ। সেই লিখনমালা পাঠকের কাছেও বিশ্বস্ত হয়। বাংলা গদ্যসাহিত্যে সমরেশ বসু, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বা শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখায় এই জীবননির্যাস লক্ষণীয়। বাংলাসাহিত্যের আগ্রহী পাঠককুল জানেন অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের বিচিত্রগামিতার কথা। মানুষকে তার বহিরঙ্গে ও অন্তরঙ্গে তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণের অসাধারণ চোখ ছিল অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। উদ্বাস্তু মানুষের কথা, সমাজের নিম্নবর্গের মানুষের কথা, যৌনতা, ডাঙা ছেড়ে অতলান্ত অসীম সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো মানুষের কথা, তাদের কাম-ক্রোধ, লোভ, ভালোবাসার কথা অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত বাংলা সাহিত্যে আর কেউ লিখতে পারেননি – অনায়াসে বলা যায়। আরও বেশি মানুষের জীবনকে দেখা, আর সেই জীবনের গূঢ় কথাগুলো দিয়ে গল্পপ্রতিমা নির্মাণ তাঁকে বাংলা সাহিত্যে অনন্য একটি স্থান দিয়েছে। বিভূতিভূষণে যেমন শাশ্বত জীবনবোধের উপলব্ধি হয় আমাদের, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার টোটালিটিতেও সেই শাশ্বত জীবনবোধ পাঠক বুঝতে পারেন।
বিচিত্র পরিবেশে বিচিত্রতর মানুষ এবং তাঁদের বেঁচে থাকার কৌশল লক্ষ করে যাওয়া তো মানুষের বহিরঙ্গের পরিচয়টুকু দেয় মাত্র। লেখক নয়, যে কোনও দ্রষ্টাই এই লক্ষণগুলো দেখতে পান, বুঝতে পারেন। কিন্তু স্রষ্টা খোঁজেন মানুষের অন্তরঙ্গ রূপ। সেখান থেকেই সৃষ্টির রসায়ন কাজ করতে শুরু করে। পরিবেশ, প্রকৃতি এবং সমাজের সঙ্গে মানুষের যে অবিরত সংঘর্ষ ঘটে চলেছে এবং তার ফলে মানুষের মনোজগতে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বা হতে পারে, লেখক সেই আড়ালের কথাটুকু খোঁজেন তাকে শিল্পসম্মত ভাবে প্রকাশ করবেন বলে। এখানেই একজন সাধারণ দ্রষ্টা আর একজন স্রষ্টার ভূমিকা আলাদা হয়ে যায়।
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ এক আশ্চর্য উপন্যাস। মহাকাব্যের লক্ষণাক্রান্ত এই উপন্যাস পাঠ শেষে সেই বহুকথিত শাশ্বত জীবনবোধের আভাস পাঠক অস্পষ্ট টের পান। অসংখ্য চরিত্রের পারস্পরিক ঘন বুনোটে গড়ে উঠেছে রহস্যময় মানবজীবনের বিশ্বস্ত দলিল। একটি একান্নবর্তী পরিবারের দেশ ছেড়ে চলে আসা, উদ্বাস্তু জীবনের অভিজ্ঞতা, তারই মাঝে প্রকৃতির অনুপুঙ্খ বর্ণনা, লোভী এবং কামুক মানুষের কথা – সব লিখেছেন অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত বিশ্বস্ত ভঙ্গিতে। মানুষের সঙ্গে মানুষের, মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির, মানুষের সঙ্গে সমাজের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, কখনও গরল উঠে আসে, কখনও সুধা – সেই কাহিনি মহাকাব্যিক দার্ঢ্যে বর্ণিত হয় এই উপন্যাসে।
আরও একটি কথা বলার থাকে। কোথায় এই উপন্যাস মহৎ শিল্প হয়ে উঠেছে, আগাগোড়া উপন্যাসের কোথায় সেই রূপের আড়ালে অরূপ বীণাটি বেজেছে, সেই সত্য আবিষ্কার না হ’লে কেন ধ্রুপদী হবে এই লেখা। সে কথা এই উপন্যাসের নামকরণ থেকেই শুরু হয়। উপন্যাসের মাঝেও কয়েকবার নীলকণ্ঠ পাখির কথা এসেছে। এসেছে রূপক হিসেবেই। মানুষের চিরকালের না-পাওয়ার আর্তি ওই পাখি। যে অধরা মাধুরীর জন্য সৌন্দর্যপিপাসু স্রষ্টার কান্না, যে রহস্যময় নারীকে খুঁজে ফেরে চিরকালের প্রেমিক, জীবন ও মরণের মাঝে উড়ে বেড়ায় সেই নীল পাখি। ব্যথার দ্যোতক এই রং। “তারপর জলে অদ্ভুত একটা পাখি, নীলবর্ণের পাখি। নীলকণ্ঠ নামেই পবিত্র কিছু। ওর মনে হল জলে যে পাখিটা বসে আছে, সেটাই ঠাকুরদার আত্মা। ওটাই ওর কামনাবাসনার ঘর। পাগল মানুষ দেখলে বলতেন, ওটাই হচ্ছে নীলকণ্ঠ পাখি। সারাজীবন ঘুরিয়ে মারে।” ঠাকুরদার মৃত্যুর সময় নীলকণ্ঠ পাখি সম্পর্কে এই কথা এই উপন্যাসের একটি মূল সূত্র বলা যায়। সারাজীবন ঘুরিয়ে মারে … এই একটি বাক্যেই যেন পৃথিবীর সমস্ত শিল্পসাহিত্যের মূল কথাটি লুকিয়ে আছে। যে থাকে আড়ালে, যে আছে নিষিদ্ধ সীমানায়, যাকে পাবে বলে, যাকে স্পর্শ করবে বলে লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকের বাসনা, যাকে পরম করে পাওয়ার জন্য সাধকের সাধনা – সে তো কোনও অলীক বস্তু নয়। অথচ তাকে ধরাছোঁয়া কত কঠিন। নিত্যদিনের আচরণে, কখনও সমুদ্রের অসীম নীলে, কখনও উদ্বাস্তু কলোনির বাঁশঝাড়ে, পুকুর পারে ক্ষণিকের জন্য উদ্ভাসিত হয় মানুষের সঙ্গে মানুষের ভালোবাসায়, হয়তো দু’জন ভিন্নধর্মী মানুষের গোপন চুম্বনে। আমাদের সামান্য ধারণা হয় মাত্র। লেখক এক বিশাল পটভূমিতে কখনও নিসর্গ বর্ণনায়, কখনও চরিত্রের সংলাপে তার ছবি আঁকার চেষ্টা করেন। অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ছবি-আঁকিয়েদের মাঝে এক নিপুন চিত্রকর। আমাদের মনের গোপন কামনাবাসনা, আরও কত না-পাওয়া দুঃখ-সুখে গড়া এক নীলবর্ণ পাখির জন্য সারাজীবন ঘুরে মরে মানুষ। কেউ তার আভাসটুকু পায় শুধু। “ আশ্চর্য সোনা দেখছে সেই নীল রঙের পাখিটা আবার এসে অর্জুন গাছটায় বসেছে। সেই ঘরটা নীল, যেখানে অমলা তাকে নিয়ে গিয়েছিল। মায়ের মুখ ব্যথায় নীল, ছোট্ট ছেলেটা তার তখন জন্ম নিচ্ছে। … এই পাখিটাও নীল। সে দেখল আকাশ নীল, স্বচ্ছ জল নীল রঙের। এ পাখি ঠাকুরদার আত্মা না হয়ে যায় না”। বিষাদের এই নীল, প্রকৃতির মাঝে এই রহস্যময় নীল, আত্মার অন্তর্গত বিষাদময় এই নীল ছড়িয়ে আছে এই মহতী উপন্যাসের মাঝে জলে গোলা নীল রঙের মত। তাকে উপন্যাস থেকে ছেঁকে আলাদা করার উপায় নেই। অনুভবী পাঠক শুধু ‘নীল’ সত্যকে উপলব্ধি করতে পারেন শুধু।
যৌনতা বিষয়ে তার কথা উঠে এসেছে চরিত্রের মুখে। স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালি জীবনে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাপন চিত্রের যে পালাবদল বেশ দ্রুত এবং লক্ষণীয়ভাবে ঘটতে শুরু করে, তার লেখনসমগ্রের মধ্যে সেই বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে। যৌনতা বিষয়ে তার কোনও ছুঁতমার্গিতা লেখায় নেই। তার লেখায় পাই “ যৌনতা না থাকলে মানুষ কোথায়? মানুষ না থাকলে ঈশ্বর কোথায়? এবং সব নারী পুরুষের ক্ষেত্রেই এই যৌনতা উষ্ণতার জন্ম দেয়, সন্তান হয়। সন্তান বড় হয়, আবার যৌনতার জনন হয়, চক্র”। খুব স্বাভাবিক এবং অতি প্রয়োজনীয় একটি ধর্ম হিসেবেই তিনি যথার্থ আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপারটা দেখেছেন।
=={{{{{{{{{{{∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆}}}}}}}}}}}}}==
No comments:
Post a Comment