কাও শিংচিয়েন
১৯৪০ সালের জানুয়ারি ৪ তারিখে চীনের চিয়াংশি প্রদেশের কানচৌ (ফিনিন Ganzhou) অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। এখানেই তার শিক্ষাজীবনের সূত্রপাত। তবে তিনি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। ১৯৭৯ সালে লেখালেখি শুরু করেন। একই সাথে তিনি চীনের সমাজতান্ত্রিক দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৮১ সালে তিনি অ্যা প্রিলিমিনারি ডিসকাশন অফ দ্য আর্ট অফ মডার্ন ফিকশন লিখে সমসাময়িক লেখক ও সমালোচক সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হন। ১৯৮৬ সালে তার বিখ্যাত বই দ্য আদার শোর প্রকাশিত হয়। এই বইয়ের বিরুদ্ধে পশ্চিমা অপসংস্কৃতির সংক্রমণের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এতে তিনি চীন সরকারের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। তাকে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা দেখা দেয়।
একই সময় তার ফুসফুসের ক্যান্সার হয়েছে বলে ডাক্তারী পরীক্ষায় ইঙ্গিত করা হয় যা পরে ভুল প্রমাণিত হয়েছিল। একই সঙ্গে পুলিশী ঝামেলা এড়াতে এবং ক্যান্সার হয়েছে বলে জীবনের আশা একরকম ত্যাগ করেই তিনি এক অনির্দিষ্ট ও নিরুদ্দেশ যাত্রায় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন। দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস ইয়াংজি নদীর কূল ধরে হেঁটে চলেন। একে তার জীবনের মহান অডিসি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে এ হেন অনিশ্চিত অভিযাত্রার মধ্য দিয়ে তার পুনর্জন্ম হয়েছিল; তিনি জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞ এক পূর্ণবয়স্ক পুরুষে পরিণত হন। এই অডিসিতে তিনি ১৫,০০০ কিলোমিটার হেঁটেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। এই অভিযানে চীনের বিভিন্ন প্রত্যন্ত স্থানের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সাথে তার পরিচয় ঘটে। এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে পরবর্তীতে তিনি একটি ভ্রমণকাহিনী ও স্মৃতিচারণমূলক উপন্যাস রচনা করেন যার নাম সোউল মাউন্টেইন (এই উপন্যাসটির বাংলা অনুবাদ আত্মাপর্বত নামে প্রকাশিত হচ্ছে)।
ভ্রমণ শেষে তিনি আবার সক্রিয় লেখালেখি শুরু করেন।তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে চীন সরকারের ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে তনি ফিউজিটিভ নামে একটি প্রেমের গল্প লিখেন যা ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়। এটি প্রকাশের সাথে সাথে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি (persona non grata) ঘোষণা করা হয় যার কারণে তিনি দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন। চীন ছেড়ে তিনি ফ্রান্সে চলে যান। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি নিয়মত ফ্রান্সের প্যারিসে বসবাস করছেন। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের নাগরিকত্বও লাভ করেন।
তিনি মূলত নাটক রচনাতেই বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। তার আগে চীনে মূলত নৃত্যনাট্যের ঐতিহ্যগত কাঠামো অনুসরণ করা হতো। তিনিই প্রথম এ ধরনের নৃত্যনাট্যে সংলাপ সংযোজন করেন।
No comments:
Post a Comment