কথামানবী কবিতা
পুরুষকে লেখা চিঠি
আমাকে সারিয়ে দাও ভালবাসা
সীতায়ন উপন্যাস
পুরস্কার ও সম্মাননা
১৯৯৮ ভারত সরকারের জুনিয়র রাইটার ফেলোশিপ।
১৯৯৮ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুকান্ত পুরস্কার।
২০০৪ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি অনীতা-সুনীল বসু পুরস্কার।
রচনা কর্ম :
কবিতা
চালিশ চন্দর আইয়ু, ভাইরাস প্রকাশনা, 1983 অমি সিন্ধুর মিয়ে, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1988 হাঘরে হে দেবদাসী, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1991 অর্ধেক পৃথ্বী, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1993, আইএসবিএন 81-7215-247-7 মায়দার আ আ কা কা, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1998 কথামনবী, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৯৯, আইএসবিএন 81-7215-915-3 দেওলিয়ার র্যাট, পাত্রলেখা, কলকাতা, 2001 আমড়া লাস্য আমড়া লাদাই, শ্রুতি প্রকাশনী, কলকাতা, 2001 বইয়ের অংশ (২ টি অনুবাদ) পুরুষকে লেখিকা চিঠি, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০৩, আইএসবিএন 81-7756-286-এক্স বইয়ের অংশ (1 টি কবিতা অনলাইন) ছলেকে ইতিহাস প্যারাট গিয়ে, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০৫ শ্রেষ্ঠ কবিতা, কলকাতা, দে প্রকাশনা, ২০০। আমাকে সারিয়ে দাও ভালোবাসা, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০,, আইএসবিএন 81-7756-573-7 পুরুষু জানানো একশো কবিতা, দীপ প্রকাশন, কলকাতা, 2007 ও জানেমন জীবনানদা, বনোলতা সেন লিখচি, কলকাতা, আনন্দ পাব। ২০০৮ ব্রিস্টিমিচিল বরুদমিছিল, কলকাতা, আনন্দ পাব। ২০১০
ইংরেজি অনুবাদে কবিতা
ক্যারিয়ার্স অফ ফায়ার, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০২ কথামনবী, তাঁর কন্ঠ এবং অন্যান্য কবিতা, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০৫
উপন্যাস
সীতায়ান, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1995, আইএসবিএন 81-7215-618-9 স্লীলতাহানির পার, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৯ 1996, আইএসবিএন 81-7215-713-4 কবির বাউঠান, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০১১, আইএসবিএন 978-81-7756-977-3
লিঙ্গ সমাজতত্ত্ব উপর বই
স্ট্রিলিঙ্গ নির্মানা, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1994, আইএসবিএন 81-7215-368-6
পুরুষ নুই পুরুষতন্ত্র, বিকাশ গ্রন্থ ভবন, কলকাতা, ২০০২
বিবিহাবিছিন্নার অখন,
বাঙ্গাল সমাজ ও সাহিত্য, কলকাতা, পাপিরাস, 2007
অনুবাদ
আকলের মাধে সরস,
কেদারনাথ সিংয়ের হিন্দি কবিতা থেকে অনুবাদ, সাহিত্য আকাদেমি, কলকাতা, 1998 1998
বাংলা কবিতা নৃবিজ্ঞান
দু'ই বাঙ্গালার মায়দার শ্রদ্ধা কবিতা, উপাসনা, কলকাতা, 2003 -
মৃত্যু -২৮ মে ২০১১ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,.
কবিতা ১
আপনি বলুন, মার্কস
ছড়া যে বানিয়েছিল, কাঁথা বুনেছিল
দ্রাবিড় যে মেয়ে এসে গমবোনা শুরু
করেছিল
আর্যপুরুষের ক্ষেতে, যে লালন
করেছিল শিশু
সে যদি শ্রমিক নয়, শ্রম কাকে বলে ?
আপনি বলুন মার্কস, কে শ্রমিক,
কে শ্রমিক নয়
নতুনযন্ত্রের যারা মাসমাইনের
কারিগর
শুধু তারা শ্রম করে !
শিল্পযুগ যাকে বস্তি উপহার দিল
সেই শ্রমিকগৃহিণী
প্রতিদিন জল তোলে, ঘর মোছে,
খাবার বানায়
হাড়ভাঙ্গা খাটুনির শেষে রাত হলে
ছেলেকে পিট্টি দিয়ে বসে বসে কাঁদে
সেও কি শ্রমিক নয় !
আপনি বলুন মার্কস, শ্রম কাকে বলে !
গৃহশ্রমে মজুরী হয়না বলে মেয়েগুলি শুধু
ঘরে বসে বিপ্লবীর ভাত রেঁধে দেবে
আর কমরেড শুধু যার
হাতে কাস্তে হাতুড়ি !
আপনাকে মানায় না এই অবিচার
কখনো বিপ্লব হলে
পৃথিবীর স্বর্গরাজ্য হবে
শ্রেণীহীন রাস্ট্রহীন আলোপৃথিবীর
সেই দেশে
আপনি বলুন মার্কস,
মেয়েরা কি বিপ্লবের সেবাদাসী
হবে ?
কবিতা ২
কন্যাশ্লোক
আশ্বিনের এক প্রাগৈতিহাসিক সকালে শ্রীরামচন্দ্র যে দুর্গার বোধন করেছিলেন
স্বর্গের দেবপুরুষগণ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে যে রণদেবীকে অসুর নিধনে পাঠিয়েছিলেন
সেই দুর্গাই একুশ শতকে নারীর ক্ষমতায়ন।
তাঁর মহাতেজ চিরজাগরুক আগুন হয়ে জ্বলে উঠুক
মাটির পৃথিবীর প্রতিটি নারীর মধ্যে।
হে মহামানবী, তোমাকে সালাম!
মেয়েটির নাম দুর্গা সোরেন বটেক
মায়ের ছিলনা অক্ষর জ্ঞান ছটেক।
সর্বশিক্ষা অভিযানে পেয়ে বৃত্তি
দুর্গা হয়েছে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি।
সাঁওতালি গান, ইংরেজি ভাষা বাঁ হাতে
কম্প্যুটারে শিখেছে ইমেল পাঠাতে।
অঙ্কের স্যার ভুল হলে যোগ বিয়োগে
গায়ে হাত দেয় পড়া শেখানোর সুযোগে।
দুর্গা জানেনা কোনটা যৌন লাঞ্ছনা
স্যারটা নোংরা বটেক!–কথাটা মানছ না?
শেষে একদিন স্যারের নোংরা হাতটা
মোচড়ে দিয়েছে দুর্গা, মেরেছে ঝাপটা!
ওরে অর্ধেক আকাশে মাটিতে শ্যাওলা
আকাশে উড়বে, হবে কল্পনা চাওলা।
যদি না বিমান ভেঙে পড়ে তার দুদ্দাড়
মহাকাশচারী হবেই বটেক দুর্গা।
বিশ্বায়নে পণ্যায়নে
খণ্ড খণ্ড মানচিত্রে বাংলা বিহার রাজস্থানে
সাধারণী নমস্তুতে!
পণ্যব্রতে, পত্নীব্রতে মোহমুদ্রা,ধ্বংসমুদ্রা প্রযুক্তিতে
গৃহকর্মে সাধারণী নমস্তুতে!
আমার দুর্গা পথে প্রান্তরে স্কুল ঘরে থাকে
আমার দুর্গা বিপদে আপদে আমাকে মা বলে ডাকে।
আমার দুর্গা আত্মরক্ষা শরীর পুড়বে, মন না
আমার দুর্গা নারী গর্ভের রক্তমাংস কন্যা।
আমার দুর্গা গোলগাল মেয়ে, আমার দুর্গা তন্বী।
আমার দুর্গা কখনো ঘরোয়া, কখনো আগুন বহ্নি।
আমার দুর্গা মেধাপাটেকর, তিস্তা শিতলাবাদেরা
আমার দুর্গা মোম হয়ে জ্বালে অমাবস্যার আঁধেরা।
আমার দুর্গা মণিপুর জুড়ে নগ্নমিছিলে হাঁটে
আমার দুর্গা কাস্তে হাতুড়ি, আউশ ধানের মাঠে।
আমার দুর্গা ত্রিশূল ধরেছে,স্বর্গে এবং মর্ত্যে
আমার দুর্গা বাঁচতে শিখেছে নিজেই নিজের শর্তে।
আন্দোলনে উগ্রপন্থে, শিক্ষাব্রতে কর্মযজ্ঞে রান্নাঘরে, আঁতুড় ঘরে।
মা তুঝে সালাম !
অগ্নিপথে, যুদ্ধজয়ে, লিঙ্গসাম্যে, শ্রেণিসাম্যে দাঙ্গাক্ষেত্রে, কুরুক্ষেত্রে।
মা তুঝে সালাম!
মা তুঝে সালাম!
মা তুঝে সালাম!
কবিতা ৩
শুভম তোমাকে অনেকদিন পরে
হটাত দেখেছি বইমেলার মাঠে
গতজন্মের স্মৃতির মতন
ভুলে যাওয়া গানের মতন
ঠিক সেই মুখ, ঠিক সেই ভুরু
শুধুই ঈষৎ পাক ধরা চুল
চোখ মুখ নাক অল্প ফুলেছে
ঠোঁটের কোনায় দামি সিগারেট
শুভম, তুমি কি সত্যি শুভম!
মনে পড়ে সেই কলেজ মাঠে
দিনের পর দিন কাটত
কীভাবে সবুজ ঘাসের মধ্যে
অন্তবিহীন সোহাগ ঝগড়া!
ক্রমশই যেন রাগ বাড়ছিল
তুমি চাইতে ছায়ার মতন
তোমার সঙ্গে উঠব বসব
আমি ভাবতাম এতদিন ধরে
যা কিছু শিখেছি, সবই ফেলনা!
সব মুছে দেব তোমার জন্য?
তুমি উত্তম-ফ্যান তাই আমি
সৌমিত্রের ভক্ত হব না!
তোমার গোষ্ঠী ইস্টবেঙ্গল
আমি ভুলে যাব মোহনবাগান!
তুমি সুচিত্রা, আমি কণিকার
তোমার কপিল, আমার তো সানি!
তোমার স্বপ্নে বিপ্লব তাই
আমি ভোট দিতে যেতে পারব না!
এমন তরজা চলত দুজনে
তবুও তোমার ঘাম গন্ধ
সস্তা তামাক স্বপ্নের চোখ
আমাকে টানত অবুঝ মায়ায়
আমার মতো জেদি মেয়েটিও
তোমাকে টানতো প্রতি সন্ধ্যায়
ফাঁকা ট্রাম আর গঙ্গার ঘাটে
তারপর তুমি কম্পিউটার
শেখার জন্য জাপান চললে
আমিও পুণের ফিলমি কোর্সে
প্রথম প্রথম খুব চিঠি লেখা
সাত দিনে লেখা সাতটা চিঠি
ক্রমশ কমল চিঠির সংখ্যা
সপ্তাহে এক, মাসে একটা
ন মাসে ছ মাসে, একটা বছরে
একটাও না… একটাও না…
ডাক বাক্সের বুক খাঁ খাঁ করে
ভুলেই গেছি কতদিন হল,
তুমিও ভুলেছ ঠিক ততদিন।
তারপর সেই পৌষের মাঠে
হটাত সেদিন বইমেলাতে
দূরে ফেলে আসা গ্রামের মতো
তোমার মুখটা দেখতে পেলাম
শুভম, তুমি কি সত্যি শুভম!
ক্রিয়াকলাপ এবং সাহিত্যের থিম
সেনগুপ্ত বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ ও লিঙ্গ অ্যাক্টিভিজম গ্রুপেও সক্রিয় ছিলেন। তার জ্বলন্ত, সংক্রামক সুরটি অনেক কবিতায় লক্ষণীয়, উদাঃ "আমার ছেলের ইতিহাস পড়ানোর সময়": মানুষ একা ছিল Godশ্বর এবং দেবী উভয়ই মানুষ বাবা এবং মা উভয়ই ছিল সুর ও বাঁশি দুটোই লিঙ্গ এবং যোনি উভয়ই যেমনটি আমরা ইতিহাস থেকে শিখেছি। - মল্লিকা সেনগুপ্ত থেকে, কথামনবী, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০ 2005, (ত্রি কবি) ইতিহাসে প্রায়শই মহিলাদের প্রান্তিক ভূমিকা নিয়ে কাজ করা: যুদ্ধের পরে চেঙ্গিস খান বলেছিলেন জীবনের সর্বাধিক আনন্দ, পরাজিত শত্রুর সামনে তার প্রিয় স্ত্রীর সাথে ঘুমাতে। – যুদ্দশেশে এনআরআই - মল্লিকা সেনগুপ্ত থেকে, কথামনবী, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০ 2005, (ত্র। অমিতাভা মুখার্জি) বিশেষত উচ্ছৃঙ্খল হ'ল খানা কিংবদন্তীর তাঁর নারীবাদী উপস্থাপনা, একটি মধ্যযুগীয় মহিলা কবি, যার জিহ্বা তার jeর্ষান্বিত স্বামী দ্বারা কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে: মধ্যযুগে বাংলায় এক মহিলা খানা বেঁচে ছিলাম, আমি তার জীবন গাইছি প্রথম বাঙালি মহিলা কবি তার জিভ তারা একটি ছুরি দিয়ে কাটা তার নির্বাক কণ্ঠ, "খানার বাচন" এখনও পাহাড় এবং আকাশে অনুরণিত হয় খানা নামে একমাত্র কবি রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। – খানআ, ট্র অমিতাভ মুখার্জি ।
=================================
No comments:
Post a Comment