Sunday, 24 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। আলবার্ট উদেরজো । ২৫.০৪.২০২২. Vol -715. The blogger in literature e-magazine

আলবার্ট উদেরজো


ফিশমেস (মার্নে, ফ্রান্স) এ জন্মগ্রহণ করেন উদেরজো ১৯২৭ এর ২৫ এপ্রিল । অভিবাসি সিলভিও (ভিনিস্বাসী বংশের) এবং আইরিয়া ক্রেস্তিনি (তুস্কান বংশের) ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতামাতা সম্প্রতি ইতালির লা স্পেজিয়া থেকে অভিবাসিত হয়েছিলেন। তিনি দুই হাতে ছয় আঙ্গুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় আঙ্গুলদ্বয় অপসারিত হয়. তিনি বর্ণান্ধ ছিলেন। শিশুকালে প্রথম চিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে তার এই সমস্যা ধরা পরে, তিনি সবুজ থেকে লাল পার্থক্য করতে পারতেন না।শিশুকাল থেকে চিত্রাঙ্কনে তার প্রতিভার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তার স্বপ্ন ছিল বিমান মেকানিক হওয়ার।

১৯৩৪ সালে ফরাসী নাগরিকত্ব পান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়,তিনি প্যারিস ছেড়ে চলে যান এবং ব্রিটানিতে এক বছর অতিবাহিত করেন, সেখানে তিনি খামারে কাজ করার পাশাপাশি বাবার আসবাবপত্র ব্যবসায়ে সাহায্য করতেন। মানুষ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে ব্রিটানিকে ভালোবেসে ফেলেন। ব্রিটানিকে তিনি এতটাই ভালোবেসে ফেলেন যে গোসিনি যখন তাকে অ্যাস্টিরিক্স কাহিনির জন্য সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম বেছে নেয়ার দায়িত্ব দেন তখন তিনি ব্রিটানিকে নির্বাচন করতে কোন দ্বিধা বোধ করেন নি।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্যারিসে শিল্পী হিসেবে পেশা শুরু করেন এবং ফ্ল্যামবার্গ এবং ক্লোপিনার্ডের এর মতো চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি বেলয় ও অ্যারিস বাকের মত অন্যান্য কিছু কমিক্স রচনা করেন।

১৯৫১ সালে রেন গোসিনির সাথে পরিচিত হন উদেরজো। দ্রুত বন্ধু হয়ে উঠেন দু'জন এবং ১৯৫২ সালে বেলজিয়াম কোম্পানি ওয়ার্ল্ড প্রেস এর প্যারিস অফিসে একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের প্রথম রচনাগুলি ছিল ঔমপাহ-পাহ, যেহান পিস্তলেট এবং লুক জুনিয়র। ১৯৫৮ সালে ফ্র্যাঙ্কো-বেলজিয়াম কমিক্স ম্যাগাজিন টিনটিন এ ঔমপাহ-পাহ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে এবং ১৯৬২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।১৯৫৯ সালে গোসিনি এবং উদেরজো কিশোর বয়সীদের লক্ষ্য করে প্রকাশিত পিলট পত্রিকার সম্পাদক এবং শিল্পী পরিচালক (যথাক্রমে) হিসেবে যোগ দেন। এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় প্রকাশ পায় অ্যাস্টেরিক্স এবং শুরুতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে কমিকটি। এই সময় জিন-মাইকেল চার্লির সাথে উদেরজো মাইকেল টাঙ্গু যা পরবর্তীতে লে অ্যাডভেঞ্চার ডি ট্যাঙ্গু এট লাভাডিওর (ট্যাঙ্গু এবং লাভাডিওর অ্যাডভেঞ্চার) নামে পরিচিত একটি বাস্তববাদী ধারাবাহিক নিয়ে কাজ করছিলেন।

'পিলট' এ অ্যাস্টেটিক্স ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হলেও, ১৯৬১ সালে অ্যাস্টেরিক্স লে গলৈস (অ্যাস্টেরিক্স দি গল) বই হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৬৭ সাল নাগাদ কমিকটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে উভয়ই তাদের পুরো সময় এই ধারাবাহিকের পেছনে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭৭ সালে গোসিনির মৃত্যুর পর, উদেরজো একাই নতুন বই এর কাহিনি এবং অঙ্কন চালিয়ে যান। এতে প্রতিবছর দুটি বইয়ের যায়গায় প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছরের একটি কাহিনী প্রকাশ হতে থাকে। যদিও বইগুলো প্রচ্ছদে তখনও "গোসিনি এবং উদেরজো" লেখা থাকতো।

উদেরজো ১৯৫৩ সালে আদা মিলানীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান সিলভি উডেরো ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করে। অ্যাস্টেরিক্স দা গল বই অনুসারে ধারণা করা হয় যে উদেরজো প্যানেসিয়া এবং জাজার চরিত্র যথাক্রমে আদা এবং সিলভির উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন। যদিও উদেরজো এটি অস্বীকার করেছেন।


২০০৭ সালে উদেরজো, সিলভি এবং তার স্বামীকে তার সম্পত্তির ব্যবস্থাপক থেকে বহিষ্কার করেন এবং তার অ্যালবার্ট রেনে সংস্করণের শেয়ার হাচে লাইভারের কাছে বিক্রি করতে রাজি হন। 'ল্য মোঁদ' এর এক কলামে এই বিক্রয়কে সিলভি, "যেন রোমান সাম্রাজ্যের সামনে গলিশ গ্রামের দরজা উন্মুক্ত করা হয়েছে" বলে অভিযোগ করেন। তার মৃত্যুর সাথে সাথে অ্যাস্টেরিক্সের মৃত্যু ঘটবে বলে এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন উদারজো। কিন্তু, হাচেটের কাছে বিক্রয়ের শর্তাবলী অনুযায়ী কোম্পানিটি উদারজোর অংশগ্রহণ ছাড়াই অ্যাস্টেরিক্স প্রকাশ চালিয়ে যেতে পারবে। উদারজো ২০১৩ সালে তার কন্যা এবং জামাতার নামে "মানসিক সহিংসতার" জন্য মামলা করেন। সিলভির তার বিরুদ্ধে করা মামলার জবাবে আরেকটি মামলা করেন এবং বলেন একজন নামহীন ব্যক্তি তার পিতার "দুর্বলতা"র সুযোগ নিচ্ছে। মামলাটি ২০১৪ সালে আদালত বাতিল করে দেয় এবং পরবর্তীতে দুইজন মিটমাট হয়ে যায়।[৯]


২০১১ সালে উদারজো অবসর গ্রহণ করলে অ্যাস্টেরিক্স এর দায়িত্ব জের-ইয়েভেস-ফেরি (কাহিনী) এবং ডিডিয়ার কনর‍্যাড (শিল্প) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।


আলবার্ট রেনে সংস্করণের ৪০% মালিকানা সিলভি এবং বাকি ৬০% (উদারজো এবং তার কন্যার অংশ) এর মালিকানা হাচে লাইভার এর।


উদারজোর এক ভাই মার্সেল কার্টুনিস্ট।


অ্যাস্টেরিক্স অ্যান্ড দি ফলিং স্কাই তার মৃত ভাই ব্রুনোর (১৯২০-২২০৪) নামে উৎসর্গ করা হয়।



১৯৮৫: দ্য লিজিয়ন অব অনার এর নাইটে ভূষিত হন।

২০০৫: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইজেন অ্যাওয়ার্ড এ অন্তর্ভুক্ত হন

২০০৭: অর্ডার অভ দি নেদারল্যান্ডস লায়ন এর নাইট এ ভূষিত হন।

ইউনেস্কোর ইনডেক্স ট্রান্সলেসনামের হিসেবে উদারজো ফরাসি দশম অনূদীত লেখক (গোসিনি ৪র্থ)।



উল্লেখযোগ্য কাজ

অ্যাসটেরিক্স

ট্যাঙ্গু লাভাডিওর

ঔমপাহ-পাহ এবং



পাঁচ দশক ধরে ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও তার বন্ধু 'ওবেলিক্স'-এর দুর্ধর্ষ অভিযানের গল্প নির্ভর কমিক চিত্রাঙ্কণের ভার সামলেছেন উদেরজো।

প্রবাদপ্রতীম ফরাসি অঙ্কনশিল্পীর। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন শিল্পী। প্যারিসের নিউইল্লিতে নিজের বাসভবনেই ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হন উদেরজো। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই খুবই অসুস্থ ছিলেন তিনি, সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন তাঁর জামাই বার্নেড ডে চোইসে।২২মার্চ, ২০২০. 

বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি কমিক সিরিজ অ্যাস্টেরিক্সের জনক হিসাবে পরিচিত উদেরজো এবং রনে গোসিনি। ১৯৭৭ সালে গোসিনির মৃত্যুর পর এই কমিক সিরিজ চিত্রাঙ্কনের ভার সম্পূর্নভাবে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন উদেরজো। পিটল নামে এক ফরাসি পত্রিকায় ১৯৫৯ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল অ্যাস্টেরিক্সের অভিযান। ২০০৯ সালে, অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত এই কমিক চিত্রণের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

রোমান সাম্রাজ্যের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর গল্প বলে এই কমিকের নায়ক ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও তার বন্ধু 'ওবেলিক্স'। তাদের দুর্ধর্ষ অভিযানের গল্পই এই কমিকের মূল উপজীব্য। সারা পৃথিবীতে প্রায় ১১১ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও ওবেলিক্সের কাহিনি। এই বিশাল জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে ১৩টি সিনেমা। ২০১৭ সাল পর্যন্ত অ্যালবার্ট উদেরজোর সৃষ্টি ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও ‘ওবেলিক্স’ নির্ভর কমিক বইয়ের ৩৭০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক।




========{}}{=}{}{}}=}{}={=}{]{{}{{{}{{{}}}{{[[{{

No comments: