Friday, 5 August 2022

স্মরণীয় প্রয়াণ দিবস। সাহিত্যিক কিশোরী চাঁদ মিত্র। Vol - 819. Dt -06.08.2022. ২০ শ্রাবণ ,১৪২৯. শনিবার। The blogger in literature e-magazine

কিশোরীচাঁদ মিত্র 


 ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ ই আগস্ট কলকাতায় প্রয়াত হন। তাঁর স্ত্রী কৈলাসবাসিনী দেবী তার একটি আত্মজীবনী রচনা করেছেন। 


নীলবিদ্রোহের সময় ও ভারতসভা প্রতিষ্ঠার সময় তিনি স্বাজাত্যবোধের পরিচয় প্রদান করেছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল-

"সরকারি চাকরিতে .... গাত্রবর্ণ বা আভিজাত্য নয় .... যোগ্যতাই মাপকাঠি হওয়া উচিত।"



রচনা কর্ম:

হিন্দু কলেজ
দি মিউটিনী
দি গভর্নমেন্ট অ্যান্ড দি পিপল
মেময়ার অফ দ্বারকানাথ টেগোর
ওড়িশা পাস্ট অ্যান্ড প্রেজেন্ট।

জন্ম ২২ মে ১৮২২ কলকাতায়। পিতা রমনারায়ণ মিত্র। তিনি কলকাতায় কাগজ ও হুন্ডির ব্যবসায়ী ছিলেন। তাাঁর আদি নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার পানিসেহালা গ্রামে।  প্রখ্যাত লেখক ও সাংবাদিক প্যারীচাঁদ মিত্র ছিলেন কিশোরীচাঁদের অগ্রজ। কিশোরীচাঁদ প্রথমে কলকাতার হেয়ার স্কুল ও পরে হিন্দু কলেজে পড়াশোনা করেন এবং কলেজে ইংরাজী সাহিত্যের কৃতী ছাত্র ও ইয়ং বেঙ্গল দলের অন্যতম সদস্য ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে কলেজ ত্যাগ করেন।


কিছু দিন তিনি ডাফ স্কুলের অবৈতনিক শিক্ষক, এশিয়াটিক সোসাইটির সহ-সম্পাদক এবং সরকারি কেরানি পদে কাজ করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ডেপুটি ম্যাজিসেট্রটের পদে নিযুক্ত হয়ে আট বৎসর কাল তৎকালীন রামপুর বোয়ালিয়া অধুনা রাজশাহীতে অতিবাহিত করেন এবং নানা জনহিতকর কাজে যুক্ত ছিলেন। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার পুলিশ ম্যাজিসেট্রট হন এবং 'বার্নেস পিকক্' কর্তৃক আনীত বিচারব্যবস্থার সংশোধনীকে ইংরেজগণ কালাকানুন আখ্যা দেয় এবং এর বিরোধিতা করে। এই আইনে এ দেশীয় বিচারপতিদের শ্বেতাঙ্গদের বিচার করার অধিকার ছিল। কিশোরীচাঁদ বার্নেসের সংশোধনীর সমর্থনে আন্দোলন করেন। ফলে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে অক্টোবর তিনি কর্মচ্যুত হন।  

১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে কিশোরীচাঁদ 'ইন্ডিয়ান ফিল্ড' নামে সাপ্তাহিক ইংরাজী পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা শুরু করেন। এই পত্রিকা ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু প্যাট্রিয়ট এর সঙ্গে যুক্ত হয়। তিনি হেয়ার মেমোরিয়াল সোসাইটি, বেথুন সোসাইটি, সোসাল সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন এর সাথে যুক্ত ছিলেন। 

১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে 'হিন্দু থিওজফিক্যাল সোসাইটি' এবং ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে সমাজোন্নতি বিধায়িনী সুহৃদ সভা'র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমটি স্বল্পকাল স্থায়ী হলেও, তিনি দ্বিতীয়টির সহায়তায় স্ত্রী শিক্ষা, কৃষি ও শিল্পের প্রসার, বাল্য বিবাহ নিবারণ, বিধবা বিবাহ প্রচলন ইত্যাদি বহু সামাজিক সংস্কার সাধিত হয়েছে। তিনি 'কলকাতা রিভিউ', হিন্দু প্যাট্রিয়ট , 'বেঙ্গল স্পেকটাটর' এবং 'বেঙ্গল ম্যাগাজিন' পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতেন। তাাঁর রচনা নৈপুণ্যের প্রথম পরিচয় "রাজা রামমোহন রায় " শীর্ষক প্রবন্ধ। তিনি বাংলার ভূম্যধিকারী পরিবারবর্গের ইতিবৃত্ত বিষয়ে বহু তথ্যপূর্ণ প্রবন্ধও লেখেন। যেমন -
Raja Rammohan Roy’, ‘Zamindar and Ryot’, ‘Hindu College’, ‘The Mutiny’, ‘The Government and the People’, ‘Memoir of Dwarakanath Tagore’ এবং ‘Orissa Past and Present’। 
তিনি কয়েকটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। সেগুলি হচ্ছে: Hare Memorial Society, Bethune Society, Social Science Association এবং Hindu Theosophical Society। 
১৮৪৬ সালে কিশোরীচাঁদ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিযুক্ত হন। তখন ভারতীয়দের জন্য এ পদ ছিল খুবই মর্যাদাসম্পন্ন। এ পদে তিনি রামপুর-বোয়ালিয়ায় (বর্তমান রাজশাহী) আট বছর চাকরি করেন। তখন তিনি অনেক জনকল্যাণমূলক কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তিনি জমিদার ও স্থানীয় জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করে রাস্তাঘাট ও সেতু তৈরি করান, পুকুর খনন করান এবং দাতব্য চিকিৎসালয় ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করান।

১৮৫৪ সালে কিশোরীচাঁদ কলকাতার পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এ পদে থাকাবস্থায় তাঁকে চাকরি হারাতে হয়। উপনিবেশিক বিচারব্যবস্থার দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করায় তিনি ইংরেজ কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হন। কোম্পানি সরকারের আইনে এ দেশীয় বিচারকদের ইউরোপীয়দের বিচার করার এখতিয়ার ছিল না। কিশোরীচাঁদ এর ঘোর বিরোধী ছিলেন। রামপুর-বোয়ালিয়ায় চাকরি করার সময় তিনি ক্যালকাটা রিভিউ পত্রিকায় ‘Bengal Ryot’ শিরোনামে বেনামে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন।



কিশোরীচাঁদ মিত্রের চরিত মন্মথনাথ ঘোষের প্রথম রচনা। রচনাটি কর্মবীর কিশোরীচাঁদ মিত্র শিরোনামে গ্রন্থাকারে ১৯২৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় সমগ্র রচনাটির ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। সমগ্র রচনায় বিশিষ্ট এই গ্রন্থপ্রণেতা কর্মবীর কিশোরী চাঁদকে যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কর্মবীর কিশোরীচাঁদ মিত্র লেখকের কথায় ‘প্রস্তাবটির পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত হইবার পর কিশোরীচাঁদ মিত্রের ত্রিশ-চল্লিশটি বক্তৃতা এবং অন‌্যান‌্য উপকরণ সংগ্রহ করিয়াছি। সেগুলির যথাযোগ‌্য সদব‌্যবহার করতে পারি নাই’। লেখকের এই আক্ষেপের কথা মনে রেখেই পুনর্মুদ্রিত এই গ্রন্থে কিশোরীচাঁদ মিত্রের যেসব রচনা ও বক্তৃতার সন্ধান পাওয়া গেছে তাঁর তালিকা সংযুক্ত করা হয়েছে। আলালের ঘরে দুলাল রচয়িতা প‌্যারীচাঁদ মিত্রের অনুজ কিশোরীচাঁদ মিত্রের ইংরাজিতে লেখা ডায়েরি বা রোজনামচার আংশিক ব‌্যবহার গ্রন্থটিকে প্রাঞ্জল করেছে। কিশোরীচাঁদের সহধর্মিনী কৈলাসবাসিনীর আত্মকথা অত‌্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে বইটির সংযোজন অংশে ব‌্যবহৃত হয়েছে। দুঃষ্প্রাপ‌্য এই রচনার পুনর্মুদ্রণ ‘শুধু কিশোরীচাঁদের জীবনীর পরিপূরক নয়, উনিশ শতকে বাঙালি সমাজের অন্তঃপুরে অন্তরঙ্গ চিত্রহিসেবে আত্মকথাটি মূল‌্যবান। 
========={{={{{{{{{{{{{{====={{{{===={{{{{{{



No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। রুনা লায়লা । খ্যাতনামা বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী। তিনি বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, পপ ও আধুনিক সংগীতের জন্য বিখ্যাত। তবে বাংলাদেশের বাইরে গজল শিল্পী হিসাবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তাঁর সুনাম আছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় এবং পাকিস্তানি চলচ্চিত্রের অনেক গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। রুনা লায়লা বাংলা, উর্দু, পাঞ্জাবি, হিন্দি, সিন্ধি, গুজরাটি, বেলুচি, পশতু, ফার্সি, আরবি, মালয়, নেপালি, জাপানি, স্পেনীয়, ফরাসি, লাতিন ও ইংরেজি ভাষাসহ মোট ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন। Dt - 17.11.2024. Vol -1055. Sunday. The blogger post in literary e magazine.

রুনা লায়লা  (জন্ম: ১৭ নভেম্বর ১৯৫২ ----) একজন খ্যাতনামা বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী। তিনি বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, পপ ও আধুনিক সংগীতের জন্য বিখ্যাত। ত...