(২৮ আগস্ট,১৯০৫ - ১৩ জুলাই, ১৯৮৪)
বাংলা সাহিত্যের কল্লোলযুগের অন্তিমপর্বের কবি ও বিভিন্ন কবিতা পত্রিকার নিয়মিত লেখক। তিরিশের দশকে 'বঙ্গশ্রী'পত্রিকায় প্রকাশিত তার কবিতাবলী বিশেষ সাড়া জাগিয়েছিল।
জন্ম ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে আগস্ট বাংলাদেশ ঢাকা, বিক্রমপুরের ইছাপুরা গ্রামে। পূর্ব বাংলার মাটির প্রতি তার গভীর আকর্ষণ ছিল। এই ইছাপুরা গ্রামে থেকে 'ঢাকা বান্ধব' নামে এক পত্রিকা তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হত। তাছাড়া তিনি সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে ভাঙ্গা-গড়ার মধ্য দিয়ে সময়োপযোগী করতেন তার রচনাকে - কাব্যপ্রতিমাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যে ভয়ংকর দারিদ্র্য ও বেকার সমস্যায় জর্জরিত বাঙালি জাতিকে যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছিল তার প্রতিফলন ঘটেছে কবিতার ইমেজগঠনে। লালিত্যধর্মী শব্দের পরিবর্তে সুন্দরভাবে সার্থক গদ্যধর্মী শব্দ চয়ন করেছেন।
তাঁর বহু উল্লেখিত "মেয়েদের কামরায় একখানি মুখ" কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি হল -
"বুকের রক্তে ধুইয়া গেলাম পাপ
নতুন কইরা সুয্যি উঠবো
কইয়া গেলাম সত্য হইবো।
বুকে শুইষা লইয়া গেলাম সকল অভিশাপ"
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় সর্বত্রই শোনা গেছে ছত্র কয়টি। কাব্য ছাড়াও তার স্বাভাবিক ও অবাধ বিচরণ বিচরণ ছিল উপন্যাস রচনায়, ভ্রমণ সাহিত্যে, শিশু সাহিত্যে গল্পে, প্রবন্ধে। কিশোরদের উপযোগী অনেক গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করেছেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশবিভাগের পর পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতের কাছে বোদাই গ্রামে বসবাস করতেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জুলাই তিনি পরলোক গমন করেন।
রচনা কর্ম :
'কাগজের নৌকা'
'যাদুঘর'
'স্মৃতির সোনার পদ্ম'
'পাকিস্তানের পাঁচালী'
'রামরাজ্য'
'২৩ শে জানুয়ারী'
'বিতস্তার দেশে'
'জয়'
'রাজশেখরের স্বপ্ন'
'ছুটি'
'গলি'
'ফুলমালার মৃত্যু'
'The Trial of Yojo'
'গ্যালিভার্স টূরাভেল্স' (অনুবাদ)
'রবিনহুড' (অনুবাদ)
'ডেভিড কপারফিল্ড'(অনুবাদ)
'অলিভার টুইস্ট'(অনুবাদ)
'সুইস ক্যামিলি রবিনসন' (অনুবাদ) প্রভৃতি।
কবি দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে আগস্ট ৭৯ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
==========§§§§§===========°===
No comments:
Post a Comment