(২৪ অক্টোবর ১৯৩৬ -)
"আমি জীবনে অনেক চড়াই উৎরাই দেখেছি। এবড়ো খেবড়ো, কাঁকুরে, পলিমাটিতে পূর্ণ পথ ধরে হেঁটেছি। আমার বাড়ির পিছনেই গঙ্গা রয়েছে। এই গঙ্গার পাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দক্ষিণেশ্বর চলে গিয়েছি। এসব অভিজ্ঞতা এখন আমার ভিতরে গজগজ করছে। এইসব যদি ঠিক করে লেখা যেত তাহলে অনেক বড় লেখক হতে পারতাম। কিন্তু, সেই দখল তো নেই। সেইজন্য মনে মনে ভাবি। অভিজ্ঞতার ঝাঁকা থেকে এক একটা দৃশ্য টেনে এনে অঙ্ক কষার চেষ্টা করি। এক একটা সিন তৈরি করি।"
একজন জনপ্রিয় বাঙালি লেখক যিনি মূলত রম্য রচনার জন্য খ্যাত। তিনি বেশ কিছু উপন্যাস,
ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
গ্রন্থ তালিকা :
আহাম্মক
দীনজনে
একা
বাড়িবদল
দ্বিধা
চিড়িয়াখানা
মিলেনিয়াম
দ্বিতীয় পক্ষ
আড়ং ধোলাই
যদি হই মুখ্যমন্ত্রী
জুতো চোর হইতে সাবধান
বুনো ওল আর বাঘা তেঁতুল
গুপ্তধনের সন্ধানে
শ্রীরামকৃষ্ণের গিরিশচন্দ্র
ফাঁস
বুদবুদ
বিকাশের বিয়ে
এর নাম সংসার
খোল কত্তাল
শ্রীরামকৃষ্ণ ও আমি
শ্বেতপাথরের টেবিল
পায়রা
সোফা-কাম-বেড
ক্যানসার
শাখা প্রশাখা
কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই
শঙ্খচিল
অগ্নিসঙ্কেত
তৃতীয় ব্যক্তি
ভারতের শেষ ভূখণ্ড
রুকুসুকু
কলকাতার নিশাচর
লোটাকম্বল
অবশেষ
দুই মামা
মনোময়
নবেন্দুর দলবল
জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ (সঞ্জয় ছদ্মনামে)
হালকা হাসি চোখের জল
দুই সাধক মুখোমুখি
ল্যাং মারো ল্যাং
গিরিশচন্দ্রের শ্রীরামকৃষ্ণ
শ্রীচরণকমলে
সেরা হাসির হাট
বারো ইয়ারি
মৃগয়া
আকাশ পাতাল
বারুদ
বুলেট
স্বপ্ন
কামিনী কাঞ্চন
ঝাড়ফুঁক
তুমি আর আমি
দুটি দরজা
দুটি চেয়ার
পেয়ালা পিরিচ (গল্প)
ফিরে ফিরে আসি
বসবাস
ভয়
ভৈরবী ও শ্রীরামকৃষ্ণ
মুখোমুখি
মুখোশের চোখে জল
রসেবসে
রাখিস মা রসেবশে
সাধের ময়না
হেঁটমুন্ড ঊর্দ্ধপদ
অজ্ঞাতবাস
ইতি তোমার মা
ইতি পলাশ
ডোরাকাটা জামা
শিউলি
হাসির আড়ালে
মুখোমুখি শ্রীরামকৃষ্ণ
গাঙচিল
কিচিরমিচির'
সাপে আর নেউলে
রাত বারোটা
কাটলেট
হেড স্যারের কাণ্ড
বড়মামার কীর্তি
বাঘমারি
থ্রি এক্স
সপ্তকাণ্ড
সাত টাকা বারো আনা
হাসি কান্না চুনি পান্না
পুরনো সেই দিনের কথা
গাধা
সুখ ১
সুখ ২
সুখ ৩
গৃহসুখ
দাদুর কীর্তি
বাঙালীবাবু
উৎপাতের ধন চিৎপাতে
বেহালা
স্বামী স্ত্রী সংবাদ
জগৎচন্দ্র হার
মাপা হাসি চাপা কান্না (সাতটি খন্ড)
শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন
পরমেশ্বরী সীতা।
পাঁচ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর, সঞ্জীবের বাল্যকাল কাটে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে।। স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা থেকে রসায়ন বিদ্যায় অনার্স পাশ করেন তিনি। সরকারি চাকরি করেছেন বেশ কয়েক দিন। রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বিখ্যাত এক রাসায়নিক প্রতিষ্ঠানে এনালিস্টের চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় প্রথম রম্য রচনা লেখেন। সেটি প্রকাশিত হয় একটি সিনেমা পত্রিকায়। সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন বেতার ও দূরদর্শনের নানা শিল্পসংক্রান্ত লেখা ও লিখতেন।
রঙ্গ ও ব্যঙ্গধর্মী লেখাই শুধু নয় নানা ধরনের লেখায় পারদর্শী সঞ্জীব। সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা সংস্থার দেশপত্রিকায় যোগ দেন। সহযোগী সম্পাদক ছিলেন একসময়। তার প্রথম প্রকাশিত লেখা ছিল একটি গল্প - 'সারি সারি মুখ'। আর প্রথম ধারাবাহিক সুদীর্ঘ লেখা 'দেশ' পত্রিকায় সঞ্জয় ছদ্মনামে 'জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ'। প্রথম উপন্যাস 'পায়রা' শারদীয় 'দেশ' পত্রিকাতেই প্রকাশ পায়।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ১৯৮১ সালে আনন্দ পুরস্কার পান। ২০১৮ সালে "শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন" ছোটগল্পের কারণে, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী হন। সারা জীবনের সাহিত্যকীর্তির জন্য ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে লাভ করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার।
"আমার টাকাপয়সা কিছু চাই না। চাই একটু ভালোবাসা। এই ভালোবাসা একটা ফিলিংস। এই ভালোবাসা কাছে না থাকলে কেমন যেন একটা অভাব বোধ হয়। এইসব নানা ব্যাপার ভাবতে ভাবতে ৮৮ বছর কেটে গেল। এবার কী হবে সেটা তো জানি না। থিয়েটার শেষ হওয়ার সময় পর্দা ধীরে ধীরে নেমে আসে। একেবারে শেষের পর্যায়ে পর্দা এবং স্টেজের মধ্যে বেশ কিছুটা গ্যাপ থাকে। যেখান থেকে পর্দার ওপারের আলো দেখা যায়। এটা আমার ভারী ভালো লাগে। তবে একেবারে শেষে পর্দা এবং স্টেজের অন্তর ঘুচে যায়। আলোটাও নিভে যায়। .... বসে আছি পথ চেয়ে… ফাগুনেরও গান গেয়ে।"
==========∆∆∆∆∆∆∆∆==============
No comments:
Post a Comment