পরপারে রবীন্দ্রনাথ
পর্ব - ৪
(22 শে শ্রাবণ স্মরণে রবীন্দ্রনাথকে নিবেদিত সংকলন )
**************!!!!!!!!!!!!!*****************
Doinik Sabder Methopath
Vol - 97. Dt - 12.8.2020
২৭ শ্রাবণ , ১৪২৭. বুধবার
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!********************!!!!!!!!!!!!!!!
রবি- কবি ঈশ্বর
অজিত জানা
অসীম শূন্যতায় তুমি ঈশ্বর
বেলা-অবেলায় চিরভাস্বর
স্পর্শে জাগে নদী বহুদূর
নিঝুম দিন রাতে অনির্বাণ সুর।
অবিশ্বাসে র জঙ্গী দোলায় আকাশ-পাতল
তোমার ছবি বলছে সামাল সামাল।
বোশাখ - শ্রাবণে আঁখি স্বপ্ন ভরা বুকে
আলোর মশাল দুই উজ্জল চোখে,
জাগ্রত মনের পাতায় কথা- কবিতা- গানে
আশা-ভরসা- আলো আকুল প্রাণে।
চিত্রমালা গেঁথেছ শতশত ফুলে
মাটির কবি, বিশ্বকবি কেমনে যাই ভুলে ? লালমাটির রাজপথ চরণ আঁকা দীপ্ত সমুজ্জ্বল
চির জ্যোতির্ময় মৃত্যুঞ্জয় আসমুদ্র হিমাচল।
নয়ানজুলি
অলক জানা
আকাশ পড়ার জন্য এইটুকুই সম্বল
সুবোধ চোখ নয়ানজুলি..…
চাঁদপুরে ফসল প্লাবন ধান পাট সবজির সোহাগ মাঠে মাঠে শ্রমের মুখ সমান অধিকার
চাষা প্রেমিকের পান্ডুলিপি সাজানো-গোছানো ,
পথঘাটের ত্বকে এখন প্রাণহীন ঢালাই সাজের সৌখিনতা বৃষ্টিস্নানে সোঁদা গন্ধ পাথর কালের
গল্প দেশ কয়লা পোড়া আগুনে জ্বলে
পথ বাতির চোখ চাঁদপুরে উন্নয়নের ঢক্কা নিনাদ ।
একশত দিনের কর্ম স্রোত ক্রমশ ঢেকে দিচ্ছে নয়ানজুলি ও কবিতার শস্য বোধ সারস জ্যোৎস্না।
আমার জন্মের ক্ষণে রবীন্দ্রনাথ
গৌরাঙ্গ শ্রীবাল
আমার জন্মের ক্ষণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই একাশির পৃথিবীতে ছিলেন না
তবু ভালো, আমি তার প্রাণের শতাব্দীতে
জন্মেছি, পড়েছি তার জীবন কেমন শত
দুঃখের মাঝেও ছিল স্বাভাবিক, মাথা ছিল ঋজু জেনেছি হৃদয়ে তার শান্তির ললিত বাণী মাঝে মাঝে সুতীব্র গরমে একফোটা বৃষ্টি
যেমন তৃষ্ণার খুব উপাদেয় তেমন সে কবির কথাও গান।
যে গান শুনে তোমাকে ভালোবাসার সলাজ এক মধুর চোখের দৃষ্টি নিয়ে
আজও তাকাই নরম ওই তোমার মুখের দিকে হৃদয় ওখান থেকে বেশি দূরে নয় তাই
হৃদয়ের কাছে যেতে মন চায়
যেখানে তোমার চিত্তে প্রতিদিন কে নাচে কে গায়।
সন্ধ্যা হলে পরিচিত তারাদের পরিবেশ ছেড়ে আমার জন্মের সেই ক্ষণ অতিক্রম করে আমি চলেছি তোমার খোঁজে আরো দূরে
খুঁজে কি কোথাও পাবো সাধারণের উপরে তুমি আমার হলুদ বনের কলুদ ফুল এর মুখ
কতদুর যাবো আর তোমাকে পেরিয়ে
তোমার সুরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে যে তাকে কোনদিন দেখিনি তো শুনিনি তো শাঁখ বাজে উদয়ের ভোরে
ঊষার আমার জন্ম প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো।
বাইশে শ্রাবণ
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
দ্যাখো ওই ঝিলিমিলি পাতাগুলি জলছুঁই স্বপ্ন মেখে তির তির কাঁপে
সকালের মেঘছায়া আলো বেয়ে ভাবনার কিছু কলি মুখ মেলে শ্রাবণ বাতাসে ।
ঘুম ভেঙ্গে মৃদুস্বরে গিয়েছিল কয়েকটি পাখি কোন রাগে কে জানে?
মিশেছিল বেদনা কি তাতে প্রিয়জন হারানোর ব্যথা ভাজে ভাজে লেগেছিল কিছু
মায়া রাতে বেজেছিল টান নগণ্য মাত্র দিনভিশেশ গেরুয়া ছিল কি মহান ?
একদিনের শপথ কিছু থাকে দৃঢ় নয় নরম তুলার মত তিরতির বড়ই কোমল
যার সব ধরে থাকে আসর সাজায় ফুলে ফুলে ভোলেনা সময়ের স্রোত খন্ডকাল
যার হয় কালের রাখাল তারাই জ্বালিয়ে রাখে দীপশিখা ডাকে আজ সেই দিন এসো
মর্মমূলে টান দিয়ে দ্যাখো খুলে যাবে স্মৃতির কপাট কবির জন্য নীরব সমইয়ে ধ্যানে বস
মাখনের স্পর্শসুখ চোখ মেলে ফুল শব্দ নয় কিছুটা সময় ছবি নাও তৃতীয় আখির ভিতর চেতনার গভীর থেকে টেনে নাও শুভ্র কলি সুগন্ধ জারিত প্রেম মুগ্ধতা বিভোর
কানে কানে কথা নয় খানিক নৈঃশব্দ্য কিছুটা অস্ফুট গুঞ্জরন তার কাছে ধার করা
বাণী তার সুরে চেতনায় রাখি এসো বাধি আমাদের প্রাণে কবিকে আমরা যারা সবেতেই নির্দ্বিধায় কেবলি জড়িয়ে বেঁচে থাকি।
ছিন্নমূল
দীপক জানা
রো দ নামে আগাছা বৈভবে
মিলন শব্দে জড় তো জাড ই
ও পাড়ায় প্রকৃতিরা লুণ্ঠিতা হলেও
এ গ্রামে শব্দটা পাপ
এইসব ছেলে ভুলানো কথাগুলো সাজালে
ছন্দিতা ফুল আনে
তাতেই মজে যেতে পারিস
সূর্য মুছে একে নেওয়া ভাঙ্গা চাঁদ
যদিও ঘটি ঘটি বৃষ্টি যার জন্য
আসলে ভাঙ্গা সেতু ছিন্ন ঋজু পথ
দাসত্ব শিরায় শিরায়
মাথার ওপর কাক শকুনের ডানা
শক্তি খোঁজে।
স্পর্শ
দুরন্ত বিজলী
বিরহ মঞ্জুরী বাজতে দূর বিলীন
রাঙ্গা চোখে বেদনা টলোমল
নীল স্রোত বনানী প্রান্তরে পেরিয়ে আলোর চুম্বন
সমুদ্র উজ্জল মুখ।
দোদুল ঢেউ আনন্দ উচ্ছল জানালা পথে বিছানায়
রাত নামে মসৃণ আধার চিরে ফুল ফোটে
রবি ঠাকুরের স্পর্শ -
ব্যর্থতায় জেগে ওঠার মন্ত্র ধ্বনি মন্ত্র হয়ে বাজে।
কবি
ড. নির্মল বর্মন
তার কথা যত ভাবি ততো
বিস্ময় আপ্লুত হয়ে যাই।
না হয় কি উপায় আছে?
আলো দার্শনিক শৈশবেই মাতৃহারা
যৌবনে একে একে হারিয়েছেন তার
দুই প্রেমাস্পদ নারী
তিন তিনজন প্রিয় সন্তান
অন্তরঙ্গ সুন্দর বন্ধুদের অনেকেই
ক্রমে ক্রমে দূরে সরে গেছে
সোনার চামচ মুখে জন্মেছিলেন কবি জীবনে তাকে
খুব বেশি সুখ না দিলেও
দুঃখ সুখের অশোক পলাশে
দোলাচলে দ্বিধা দ্বন্দ্বে কেপেছে হৃদয়
তাজ্জব কথা হা য় ! এত যন্ত্রণাক্লিষ্ট তিনি
ফিরে আসবেন, এই ধরায় আনন্দ ধুলোয় .…..
দহন
প্রেমের পন্ডা
বর্ষা গভীর করেছে রাতটাকে
ঝিঁঝিঁ পোকার উল্লসিত ধ্বনি
ব্যাঙের অস্থির ঘ্যাগোর ঘ্যাগর
ঘনীভূত কালো কালো রাত টাকে
ভয়াবহ করে তুলেছে বাহিরে।
ওদিকে তুমি মোমের বাতি
বারবার জ্বালাচ্ছিল
কতবার যে নিভলো কে জানে !
আমি বিছানায় আনমনে
মোমের মৃদু আলোকে
দেখতে ছিলাম তোমাকে
অস্পষ্ট আলোতে।
কি জাদু ছিল তোমার মুখে কে জা নে,
তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলে ম অনেক।
মোম গলেছে আলো দিয়েছে
বাতি জ্বেলেছে তাপ মিলেছে
আমি জ্বলেছি - কিন্তু তোমাকে
জ্বালাতে পারিনি
না নিভালে আলো
না ছড়ালে তাপ
শুধু শুধু রাত খানি
বোবা হয়ে থেকে গ্যালো।
মধ্যগগনে রবি
বিমান কুমার নায়ক
বারোশো আটষট্টি বাইশে শ্রাবণ
সারাবিশ্ব স্তব্ধ যেন অরন্ধন পালন
আজিকার দিনে তুমি হারিয়ে গেলে
সবারে ভাসিয়ে দিয়েছে চোখের জলে।
ছড়া-কবিতা গল্প-উপন্যাস সংগীত
হৃদয়ে অ্হো রহো বাজে জনমন গীত
নাটক প্রবন্ধ চিত্রতে ভবিষ্যতদ্রষ্টা
সর্বকালীন সেরা তুমি কবিতার স্রষ্টা।
অগণিত কবিতার জনক তুমি
ধন্য জননী আর ধন্য বাংলার্ভূমি
পিতা মাতার সু সন্তান মধ্য গগনে র রবি
বাংলা সাহিত্যিক তুমি জগৎ শ্রেষ্ঠ কবি।।
মেঘমেদুর বাইশে শ্রাবণ
বিথীকা পড়ুয়া মহাপাত্র
কৃষ্ণকলি ধরেছে গান রবীন্দ্র ঘরানা
রবি ঠাকুর মন নে তার করেছে আনাগোনা
আকাশের আজ মুখ ভারী বিষণ্ণতায় ঢাকা
আধার কালো মুখের পটে কষ্টগুলো আঁকা
মেঘ বলে আজ পারছিনা গো ধরতে নিজেকে
আমার যত কান্না বৃষ্টি দিলাম তোমাকে
বৃষ্টি বলে কথা দিয়ে সাজাই তরুতল
অরণ্য আজ নীরব বসে ফেলেছে চোখের জল
পুকুর বলে আমার বুকে আজো গভীর ক্ষত
কষ্টে চেপে হাসিমুখে শালুক ফোটে শত
সে যে আমার নীরব ব্যথা অশ্রুসজল হাসি
মানিক হারা তাইতো বুকে কষ্ট রাশি রাশি।
বাতাস কাদে কাদিয়ে ফেরে দুঃখে ভরা মন
রবিহারা আমরা আজ অমর বাইশে শ্রাবণ।
পাখি বলে- বুক ফেটে যায় গাইছি আশাবরী
তোমায় নিয়ে তোমাকে দিই তোমায় পূজা করি।
পাহাড় চোখে ঝর্ণা ঝরায় কান্না ভেজা মন
রজনীগন্ধায় সাজিয়ে দিলাম ওগো বাইশে শ্রাবণ।
++++++++++++++++++++++++++++++++++
No comments:
Post a Comment