Thursday, 13 August 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
             পরপারে রবীন্দ্রনাথ
                         পর্ব -৫
(বাইশে শ্রাবণ স্মরণে রবীন্দ্রনাথকে নিবেদিত সংকলন)
!!!!!!!!!!!!!!?????????????????????!!!!!!!!!!!!!
                    Doinik sabder methopath
                   Vol - 99. Dt - 14.8.2020
                   ২৯ শ্রাবণ, ১৪২৭. শুক্রবার
****************************************
শ্রাবণ সিঁড়ি
সোমা প্রধান

বৃষ্টি দিন
 প্রণয় ঋণ 
প্রাণের মুকুল
 প্রস্ফুটিত 
উচ্চারিত 
স্বপ্ন বকুল।

 ইচ্ছে রাত
 হচ্ছে থাক 
প্রেম আগুন
 বৃষ্টি ভোরে
 দিচ্ছে জোড়ে
 হংস মিথুন।

 হাসনুহানা
 মেলেছে ডানা
 হাওয়া কল
 গন্ধরাজে
স্বপ্ন নাচে
 জলকে চল।

 এই শ্রাবণ
 দুটি মন
 কাছাকাছি
 ইচ্ছে কুঁড়ি
 বাড়ছে থুড়ি 
ছুঁয়ে আছি।। 




শ্রাবণ ধারা
বিনীতা জানা

          ছোটবেলায় আমার একটা আকাশ ছিল । এক্কেবারে নিজের। বিকেলবেলা বাড়ির ছাদে  যখন চু কিত কিত খেলতো মা ভাইয়েরা,  আমি তখন চিলেকোঠা ঘরের শান বাঁধানো বেঞ্চের ওপর বসে আকাশ দেখতাম। বৈশাখের এক রকম আকাশ আবার আষাঢ়- শ্রাবণে তার রূপ, শরতের আকাশ অন্য রূপ- দেখে বড্ড মন খারাপ হতো। ঝকঝকে নীল আকাশের মাঝখানে ভেসে চলি নিরুদ্দেশ পথে-
 এসেছে শরৎ হিমের পরশ লেগেছে হাওয়ার পরে
সকাল বেলায় ঘাসের আগায় শিশিরের রেখা ধরে।
অথবা মনে পড়ে - 
 'শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি --------'
         মেঘের ভেতর  যেন দেখতে পেতাম কবি
রবীন্দ্রনাথকে । সাদা  সাদা দাড়ির মাঝখানে হাসিমাখা মুখ। ঘাড় নামানো। আমাকে যেন হাত নেড়ে ডাকছেন আর বলছেন -
"এই তুমি কবিতা পড়ো-  সেই কবিতাটা বলতে পারবে।
   " পূর্ণিমা চন্দ্রের জ্যোৎস্নাধারায় 
        সান্ধ্য বসুন্ধরা তন্দ্রাহারায় -----"

                 একদিন এক বিকেল বেলার বৃষ্টি মেঘে যখন বেরিয়ে পড়ি জামরুল গাছের তলায়- টপটপ করে জল পড়ছে গাছের পাতায় , যেন মুক্তোর দানা। বৃষ্টি তে ভিজতে ভিজতে কখন নদীর ধারে বটগাছের তলায় শিব মন্দিরের বাঁদিকে খেয়া ঘাটে এসে গেলাম - মনে নেই। দূর থেকে দেখতাম , নৌকায় মাছ ধরতে মাঝিরা নদীর কিনারে । ওদের বাড়ি মনে ওই পাশের গায়ে। আর বৃষ্টি দেখতে দেখতে ভাবতাম নদীর এত জল অবিরাম কোথায় যাচ্ছে ? 
       বিকেল গড়িয়ে রাত , পূর্ণিমার চাঁদ। শ্রাবণী পূর্ণিমা। আচমকা মনে আসে - শ্রাবণের ধারার মতো ..... প্রতিবছর বাইশে শ্রাবণ আমাদের পরিচিত  এই পূর্ণিমার দিনে,   আমাদের প্রিয় কবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথকে আমরা হারিয়েছিলাম । সুখ দুঃখে, ভালো-মন্দে বাঙালির বাংলা ভাষাভাষী মানুষের শুধু নয় বিশ্বের প্রাণ বিশ্ববাসীর সকল ঠাকুরের মধ্যে আরেক ঠাকুর,  রবি ঠাকুর। নিভৃত প্রাণের দেবতা। মনে পড়ে তার শেষ মুখনিঃসৃত বাণী- 
      "  তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি   
         বিচিত্র ছলনাজালে
            হে ছলনাময়ী ।"
                        আর মনে পড়ে -
     "   গহন রাতে শ্রাবণ ধারা পড়িছে ঝরে
 কেন গো মিছে জাগাবে ওরে ......"
               বিভোর হয়ে শুনি -
 "এখনো দুটি আঁখির কোণে যায় যে দেখা
 জলের রেখা
 না-বলা বাণী রয়েছে যেন অধরে ভরে।"

 জোড়াসাঁকোর ঐতিহাসিক বর্ণময় জমিদার বাড়ির চতুষ্কোণ'এ যে জীবনের প্রথম সূর্য চোখ মেলে ছিল উপনিষদীয় মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে,  দীর্ঘজীবন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এই দালানবাড়ীতে আজ নির্বাপিত হল অস্তমিত রবিরশ্মি সজল নয়নে।  শরীরের অস্ত্রপ্রচার না করলে নয় , আর এই অস্ত্র যেন কবির মৃত প্রাণকে ছিনিয়ে নিয়ে গেলো অনায়াসে । যে পেরেছে ছলনা সহিতে, সে পায় তোমার হাতে শান্তির অক্ষয় অধিকার। ধূলিমলিন পাতা ঘাটতে ঘাটতে চোখের জল ঝরে পড়ে। কান পেতে রই কবির গানে -
" যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে ---"

           শ্রাবণের ইতিহাস আজ শ্রাবণ গাথা। সন্ধ্যার বিষাদ সিন্ধু মালা। পশ্চিম দিগন্তে ঢলে পড়ে। সসংকোচে কবি কে হারানোর যন্ত্রণা ।শতেক বাঙালির মত আমার হৃদয় বীণা তে আজও বেজে ওঠে । তাই শ্রাবণ, বাইশে শ্রাবণ অমর থেকো । অক্ষয় করও, রবীন্দ্র কীর্তিকে।
 পৃথিবীব্যাপী মহামারীর প্রকোপে শান্তির বাণী আজ শোনাবে কে ! হৃত সর্বস্ব অসহায় বাঙালিকে যথার্থ পথ দেখাবে কে ! কে গাইবে গুনগুন করে আজ - 
' মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে
 মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই..."
অথবা
" বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো
সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমার ও...."
অথবা
 "আছে দুঃখ আছে মৃত্যু বিরহদহন লাগে
 তবুও শান্তি তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে.."
           অনন্ত শাশ্বত যে সত্তা মানবীয় রূপ ধরে জীবনভর আনন্দ দান করেছেন, অমৃতের পুত্র হয়ে, আজীবন মৃত্যুর মিছিলে শঙ্কিত ভীত না হয়ে জীবনের প্রতি পদে পদে জন্ম মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে এগিয়ে চলেছেন।  সেই মহাপ্রাণ, বাইশে শ্রাবণে অনন্ত গানের মধ্য দিয়ে বাঙালি হৃদয়ে আজও জেগে আছেন। বেঁচে আছেন।হে বাইশে 
শ্রাবণ,  তোমার কাছে এই প্রার্থনা - ' নিও না কেড়ে আমাদের প্রাণের ঠাকুর,  রবি ঠাকুরকে।।




এসো
 রাজকুমার খাটুয়া

ঝিরিঝিরি বাতাস উঠল গেয়ে
 রুম ঝুমা ঝুম বৃষ্টি এলো জোরে
 এবার বুঝি শ্রাবণ এলো ধেয়ে 
তোমার কথা খুব মনে পড়ে।

 জানি আমি নাওনি তুমি বিদায়
 কোথাও গল্প কবিতা লিখছো সব 
পড়াচ্ছ বা গাছগাছালির ছায়ায় 
দেখছি তোমায় বৃদ্ধ অবয়ব।

 এ তো কেবল মনের সুপ্ত আশা 
এতো কেবল ভাবের ঘরে চুরি
 জানি তোমার অগাধ ভালোবাসা য় 
সবার মত আমার জারিজুরি ।

 গ্রীষ্ম না হলে এখন শ্রাবণ মাস 
কিম্বা এস বসন্ত বা শীতে 
দুলবে যেদিন শারদ প্রাতে কাশ 
এসো না হয় হেমন্ত সংগীত।।





শ্রাবণ ব্যথা
 বিভাস জানা

 " ২৫শে বৈশাখ চলেছে 
   জন্মদিনের ধারাকে বহন করে 
      মৃত্যু দিনের দিকে ......"
   এক বৈশাখে রচিত শ্রাবণের কবিতা
অঝোর ঝড়ে আজও ঝরে বাইশে শ্রাবণ শিরশ্ছেদের বেদনায়। 
আজও চেতনার গহন গভীরে
 নিজেকে নির্মাণ করে, শ্রেষ্ঠ মহামানব - রবীন্দ্রনাথের বিমুর্ত প্রতীক। 
হয়তো বিচ্ছেদ নয় , এক পূর্ণতা । 
অনন্ত জীবন চক্রের রহস্যময়তা 
সবাইকে অবাক করে 
বিস্মিত করে
এত প্রাণ এত আনন্দ রূপ-রস-গন্ধ স্পর্শ নিয়ে
 যে বর্ণময় শরীর। 
বিশ্বভুবন কে মুগ্ধ করেছিল
 অনুভবের ইন্দ্রিয় স্বাদে
 মৃত্যুকে নতুনভাবে চিনিয়েছিল 
সেই মৃত্যুঞ্জয় কবি বলেছিলেন 
"আমি মৃত্যুর চেয়ে বড়, এই কথা বলে 
যাব আমি চলে "
কিন্তু মৃত্যু বড় ভয়ঙ্কর
 কেড়ে নেয় এরকম এক মহামানবের জীবন -
" জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে  
   চিরস্থির কবে নীর হায়রে জীবন নদে "
   অথবা 
" মরতে তো একদিন হবেই ভাই
 অথবা 
 " মরন কখন আসে কে বা জানে '
 এমন সব সত্যবাক্য উচ্চারিত হলেও
 মৃত্যু শোনে না কোন বারণ  
যে শ্রাবণ, বিরহে  মিলনের গোপন অভিসারের 
গায় গান
" মরণ রে তুঁহু মম শ্যাম সমান 
আবার 
সেই মন জীবনে একদা বলেছিল
'" মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে 
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই " 
প্রাণের অনাবিল ছন্দ
চির প্রবহমান জীবনধারাকে এগিয়ে নিয়ে চললেও 
সময়ের অভিঘাতে ইহলৌকিক জীবন
 একদিন না একদিন পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়বে রয়ে যাবে সৃষ্টির গৌরব কীর্তির গৌরব
 মহান মানব বিশ্বকবির।
চলেছিলেন জীবনের পথে পথে
যখন বৃষ্টি নামল তিমির নিবিড় রাতে
 কবি অমৃতলোকের যাত্রী হয়ে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে 
ব্যথিত চিত্তে শ্রদ্ধা জানাই
 অমর রহো। অমর রহো
  হে প্রিয় কবি। 


 ২২ শে শ্রাবণ
ভোলানাথ পাল

হে বাইশে শ্রাবণ 
সাজাও সোনার তরী
 আজও নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ হলো।
 ছিন্নপত্র পাঠিয়ে শেষ রক্ষা হলো না
 কালের যাত্রা টেনে নিয়ে গেল 
তাসের দেশ দেখাতে ।
মালিনী ফাল্গুনী রাজা ও রানী 
সবাই গৃহ প্রবেশ করেছে
 ঘরে-বাইরে শুধুই বিসর্জনের বাজনা।
 মুক্তির উপায় খুঁজে পেলেন না
 শোকাহিত চিরকুমার সভা 
কথা ও কাহিনী যাই হোক না কেন
 হালদার গোষ্ঠী পোস্টমাস্টার কাবুলিওয়ালা
 সবাই মর্মাহত।
 সুরদাসের প্রার্থনা উপেক্ষা করে
 দেহ লীলা সাঙ্গ করলেন
 জন্মান্তরের আশায়
গীতাঞ্জলি করপুটে প্রণতি চরণে।।



গাফেল
পবিত্র কুমার ভক্তা

কখন যে ঘুম জড়িয়ে এসেছিল খেয়াল নেই। টিং টিং  করে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ম্যাসেজ ঢুকলো বোধ হয়। আধ বোজা চোখে তাকিয়ে দেখি - দাঁড়িয়ে আছে এক যোগীর মত ঋষি, মুখের হাসি। তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ঠিক চিনতে পারছিনা ! মানে কিছুটা চেনা কিছুটা অচেনা লাগছে. মনে হলো স্কুল লাইফের কোনো যুবক শিক্ষক, এখন বয়সের ছাপ আর দাড়িতে খানিকটা বিশ্বকবির আদল . আমার পরক্ষনেই মনে হলো ইউনিভার্সিটিতে বিদেশি প্রফেসরদের একজন আবার তার মুখে প্রিয়তমার মুখের মিল ও আছে।
          আমি একটু বেকায়দায় পড়লাম। বসতে বলব কিনা ! নামটাও ঠাওর করতে পারছিনা! সুখের রহস্যময় হাসি. মিষ্টি হাসিতে বদলালো আমার কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা .বুঝতে পেরেছেন মনে হয়. যেন সব তার জানা .আমার সব দুর্বলতা অভাব-অভিযোগ বিড়বিড় করতে লাগলেন - মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো অপরাধ বা  পাপ।এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়.......
 নিজে থেকেই বললেন - কি চিনতে পেরেছ ?
আমি  মনে মনে লজ্জা পেলুম। আমার দুর্বল স্মৃতির জন্য জিজ্ঞেস করাও যাচ্ছে না ।বাড়ি কোথায় ? কি করেন ? কেন এসেছেন ? সেকেলে পোশাকে আধুনিক কথাবার্তায়, নজর পড়ল তার শান্তিনিকেতনি ব্যাগের দিকে. আমার ভীষণ রহস্যময় লাগলো. কিন্তু- কিন্তু- করে জিজ্ঞাসা করে ফেললাম-  কবি তোমার ওই ব্যাগে কি আছে? একটু মুচকি হেসে বললেন-  কী নেই, বলতো। কখন কার কি লাগে ! একা হাতে এত বড় দায়িত্ব সামনে যাচ্ছি.  মনে হল প্রশ্নটি অপেক্ষায় ছিলেন, ঐ ব্যক্তি । কত কষ্ট ,কত ব্যথা -গরগর করে বললেন আর আমি হাঁ করে শুনে যাচ্ছি. তিনি বলেছেন -এখানে অনেক রকম ঔষধি আছে. মনের জোর বাড়ানোর, অসুস্থ নেশাগ্রস্ত লোকের সেরে ওঠার, জং ধরা মন ভোলনোর আবার 
মলম রাখতে হয়েছে ,  ভালোবাসাহীন হাহাকার কারীর মর্মবেদনার যন্ত্রণার প্রলেপ দিতে আবার জাদুকাঠি আছে স্বপ্ন দেখাবার, ঘুম ভাঙাবার,  মাটির সম্ভ্রম রক্ষার দায়িত্ব মনে করার আবার হারবাল ট্রিটমেন্ট আছে,  একদম বিশুদ্ধ প্রকৃতির কয়েকটি সবুজ পাতা ব্যাগের চেইন এর বাইরে বেরিয়ে আছে।  কথার যেন শেষ নেই । কবি সেই রাত দুপুরে কবিতার ফিরিস্তি দিতে এসেছেন। এবার যেন একটু বিরক্ত হয়ে বললাম -  থাকেন কোথায় , বলুন তো আপনি । -  সে কি,  জানিস না। সবাই জানে , বলেই সেই রহস্যময় হাসি । রেগে গিয়ে বলি  - কার সাথে থাকেন?
 প্রাণের সাথে ।যে আমায় চায় বলেই হাত তুলে শুরু করলেন -
" আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে 
তাই হেরি তায় সকল খানে " 

             কখন আমি পাশ ফিরে ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম , মনে নেই। এমনই মায়াবী ঘুম তখন জাঁকিয়ে ধরেছে আমায়। মনে হোলো কত কাল ঘুমায়নি। ঘুম ভাঙতেই ধড়ফড় করে উঠে দেখতে চাই,  কবি ছাপ রেখে গেছে কিনা। আফসোস ।তখনো ঘিরে রেয়েছে আমাকে তার কথা। শোনা হলো না সব। কাল ঘুমের জন্য ছন্দে ছন্দে প্রতিটি সেকেন্ডের কাঁটা তখন হাঁটায় ব্যস্ত। আমি অপলক চেয়ে আছি ঘড়ির দিকে.…...।


তোমার চলে যাওয়া
প্রদীপ শাসমল

তোমার চলে যাওয়া
 ছোট্ট শিশুর হাসি টাকে 
স্তব্ধ করে দেওয়া
 রংবেরঙের কথার ডালির
 বিষম খেয়ে যাওয়া 
কাজের মাঝে দু চার ফোঁটা 
খুশির মেজাজ হারা
 অভিমানের বোঝা নিয়ে 
অনুরাগী হওয়া ।।

তোমার চলে যাওয়া 
হৃদয় দিয়ে কেড়ে নেওয়া
 সোনা ঝরা সকালটাকে
 সন্ধ্যা করে দেওয়া।
 ফুটে ওঠা পুষ্প টিরে
 শুধুই কষ্ট দেওয়া ।

তোমার চলে যাওয়া
 মাঝ দরিয়ায় টাইটানিকের 
হঠাৎ ধাক্কা খাওয়া।
 শীতের জলে শত শত প্রাণের
 মৃত্যু মিছিল হওয়া 
রুদ্ধ গৃহে আনাগোনা বায়ুর 
স্তব্ধ হয়ে যাওয়া।।


রচিনু তোমায়
পৃতু পর্ণা গোল

অবাস্তবতার মাঝে বাস্তবতার ভাজে
 আমি তোমাকে চাই 
মানবের মাঝে মানবীর খোঁজে 
আমি তোমাকে পাই 
শান্তির সঙ্গী নীরবতার তরে
 তোমার সঙ্গ চাই 
স্বরের সাথী সুরের মিলন পারে
 তোমার স্পর্শ পাই 
কালোর মাঝে আলোর সাজে
 তোমার ছায়া চাই
 রণকৌশলে শত্রু যুঝে
 তোমার প্রেরণা পাই 
রক্তের মাঝে ভালোবাসার লাজে
 তোমার আলিঙ্গন চাই
 মরতে মরতে বাঁচার কাজে
 শুধু তোমাকেই পাই
 কাব্যে গানে প্রাণে মনে 
শুধু তোমাকেই চাই 
অসীমের মাঝে সীমার বাঁধ নে 
রবীন্দ্রনাথ তোমায় পাই।।


রবি ঠাকুর
রা. পা

রবি ঠাকুর রবি ঠাকুর তুমি বিশ্বকবি
 প্রেম প্রীতির অক্টোপাশে বাধিয়াছো সবই।

 কোন মন্ত্রবলে তুমি রচিয়াছ  সব
 জগজনে সে কারণে করিতেছে স্তব

 চেতনা তোমার জড়ে মিশাইলে সব সমাধান পাই অজ্ঞ জনে পূর্বে যেসব বুঝিতে পারে নাই ।

কাব্য ছড়া গদ্য গানে
 মজাইয়া ছিলে বিশ্বজনে

 কৈশোরে পয়ার ত্রিপদী যৌবনে বলাকা রচিয়া
 বার্ধক্যের গদ্যছন্দে ভুলাইয়াছিলে স্বপ্ন দিয়া ।

গীতিনাট্য কাব্যনাট্য নৃত্যনাট্য সনে 
রূপক সাংকেতিক তোমার শ্রেষ্ঠ গুনে ।

মহাকাব্যিক চেতনা- প্রবাহী কাব্য উপন্যাস যত সবকিছুতে তোমার লেখনি হইয়াছেন স্ফুরিত ।

নারীবাদী মানবতার জয় ঘোষণা কি কারনে ?নরনারী ধনী-দরিদ্র সবারে মিলাইতে পারি একাসনে.
 রবি ঠাকুর রবি ঠাকুর তুমি বিশ্বকবি 
বিশ্ববাসীর হৃদয়ে রহিয়াছে তোমা ছবি।।



প্রণয় দান
অর্চিতা মাইতি

মুখখানি দেখি পর্ণপত্র
তবু ভালবাসে আকে ছাপ
তিমিরে তুমি ফুটে ওঠো সখা চাঁদ
আলোকোজ্জ্বল কামনা বিকাশ তুমি
প্রতিটি কলায় নির্ভীক নিষ্পাপ
তবুও আমার অকথন দুঃখ
বাসনাতে নির্মাণ
অপ্রবল নয় তুমি জানো প্রিয়
তোমার প্রণয় দান।।

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆















No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। পশুপতি ভট্টাচার্য । খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। Dt -15.11.2024. Vol -1053. Friday. The blogger post in literary e magazine

পশুপতি ভট্টাচার্য  ১৫ নভেম্বর ১৮৯১ -  ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮   একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। জন্ম  বিহার রাজ্যে পিতার কর্মস্থল আরায়। তাদ...