Friday, 14 August 2020

১০০ তম দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

!!!!!১০০!!!!!!১০০!!!!!!১০০!!!!!!১০০!!!!!!১০০!!!!!!
      ঐতিহাসিক ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে
                     " স্বাধীনতা" বিষয়ক
                        কবিতা সংকলন
¶¶§¶¶¶¶¶¶¶×¶¶¶¶¶১০০¶¶¶¶§¶§¶¶¶¶¶×¶¶×¶
              Doinik sabder methopath
              Vol -100. Dt - 15.08.2020
             ৩০ শ্রাবণ, ১৪২৭. শুক্রবার।

💯*****💯*****💯"""""💯*****💯*****💯**
 
                         বন্দেমাতরম
$$$$$$$$$@@@@ ১০০ @@$$$$$$$$$$

                     * ১০০ *

=============== ১০০ =============



স্তব্ধতা ভেঙ্গে এসো
 আবদুস শুকুর খান 

স্তব্ধতা ভেঙ্গে  এসো
আমরা পরস্পর  মুখোমুখি  বসে মুছে সমস্ত দহন।
সময় নষ্ট  না করেই এসো
জেনো,জীবন চিরদিনের নয়,শাশ্বতেরও নয়
জীবন ক্ষণিকের ।
#
পৃথিবীর ধূলাকণা ঘাস,মাটি,জল,হাওয়া 
তবুও তো  পায় প্রাণের অধীরতা 
জড় পদার্থ ও জড়ত্বের ঐশ্বর্য  থেকে  বেরিয়ে 
জড়িয়ে  নিতে প্রাণের আবিলতা 
শিল্পীর  শিল্পীত ছবি যেভাবে  বাঙ্ময়  হয়ে
সৃষ্টির অনন্যতা  পায়,সেভাবে 
জীবন সীমাবদ্ধতার  থেকে ব্যাপ্ত  ছড়াতে পারে না।
পারবে না।কারণ
জীবন  ক্ষণিকের 
জীবন  সময়ের  ফূৎকারে উড়ে যাওয়া  ক্ষণিকের  পাখি ।
এই আছি,এই নেই!
এসো ,ধর্মে নয়,কর্ম যোগে ঐহিক শক্তি নিয়ে  এসো
সমস্ত আড়াল ভেঙে নিবিড় হতে শিখি
মানুষের দুঃসময়ে তাদের পাশে  থেকে আরও 
হাতে হাত রেখে জীবনকজীবনকে  বাঁধতে  শিখছি,এসো।
+++++++++++++++++++++++++++++++++

তোমাকে চাই
কালীপদ চক্রবর্ত্তী, নিউ দিল্লী

ফুলের কুড়ি ফোটাতে, এদেশটাকে বাঁচাতে,
নতুন দিনের আশাতে, আমি তোমাকে চাই,
মেঘলা ভরা দিনে, দুঃখ ভরা রাতে
নতুন স্বপ্ন নিয়ে, আমি তোমাকে চাই।

শিশুর হাসি ফোটাতে, মায়ের দুঃখ ঘোচাতে
এই অন্ধকারের পথে, আমি তোমাকে চাই,
আপন করে চেনা, জীবন দিয়ে কেনা,
স্বপ্নটাকে সফল করতে, তোমাকে চাই।

কংক্রিটের এই জঙ্গলে, জনগণের মঙ্গলে
সংগ্রামেরই পথে, আমি তোমাকে চাই,
যুদ্ধ জয়ের রথে,  যম দুয়ারের পথে
ধরিত্রীকে শান্তি দিতে তোমাকে চাই।

অসুর বধের পালায়, অসাধুদের মেলায়,
শোষকদের শাস্তি দিতে, তোমাকে চাই,
রণংদেহি সাজে, যুদ্ধ জয়ের তাজে,
সকল ভালো কাজে, আমি তোমাকে চাই।
++++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতা ভাবনা
অরবিন্দ সরকার

স্বাধীনতার ভাবনা মনে এলে প্রথমেই তেজোদীপ্ত ক্ষুদিরাম বসুর আত্ম ত্যাগের কথা মনে পড়ে
স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরার চোখের অগ্নি শিখা ।
সূর্য সেন মাস্টার দার চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠ নের সাহসী
কর্মকাণ্ডের কথা
বীর সুভাষ, বাঘা যতীন,শ্রী অরবিন্দ, দেশবন্ধুচিত্তরঞ্জ নের  স্বদেশ ভাবনার ব্রত কথা
ভগৎ সিং, কানাইলাল,বিনয়, বাদল, দিনেশের বিসর্জনের
ত্যাগ গাঁথা।
মনে পড়ে যতীন দাসের তিলে তিলে মৃত্যুবরণের বিয়োগ ব্যথা ।

এখন সেইসব কোথায়?
তিতিক্ষা কাঁদে গোপনে দাঁড়িয়ে ।
চলছে নকলের মহোৎসব,
মোসাহেব গিরি ।

এসো, নিজেকে একটু প্রকৃত অর্থে ভালোবাসি
প্রিয়জনদের পাশে থাকি
এই সংকট লগ্নে দেশমায়ের কথা একটু ভাবি অন্তত: ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++

মেকি গণতন্ত্র
দুর্গাদাস মিদ্যা

শত সহস্রা আশা
জলাঞ্জলি দিয়ে
 যারা মুখ লুকিয়েছে গ্রামেগঞ্জে
 তাদের কথা ভাবতে কাদের বয়ে গেছে
 যারা কামিয়েছে অযুত সম্পদ 
তাদের দিকে তাকিয়ে
 আইনসভায়
 আইন বানানো হয়
 এভাবে গণতন্ত্রের নামে
 কত তান্ত্রিক এলো আর গেলো
 ভুরিভরি কথার ফানুস
 ওড়ালো আকাশে
 তবুও ধোঁয়াশা রয়ে গেল 
আমাদের ভবিষ্যৎ ।
  সৎ বলে তুমি যাকে ভেবেছিলে
 সেও দেখি মুখোশে ঢেকেছে মুখ
 আসলে নকলে
 দেশ কোলাকুলি 
আমরা শুধু ঢাই হয়ে পড়ে থাকি
 আর মিথ্যে স্বপ্ন মাখি।
++++++++++++++++++++++++++++++++++

ডাল ভাতের স্বাধীনতা 
আশিস গিরি 

স্বাধীনতা মানে খুদ কুঁড়ো নয় 
অন্তত ডাল ভাত 
অনেক রক্তে  ছিঁড়েছে হৃদয় ,
 আগুনে পুড়ছে হাত , 
আমার শুধু না , জলে জঙ্গলে 
পাতা কুড়োনি যে মা ,
সকাল সন্ধে ছেলেকে বলুক 
পেটভরে দুটো খা ۔
জেসমিন নামে মেয়েটি বলুক 
পড়বো শিখবো আরো 
নেতিধোপানির ঘাটে বাঁধা আছে 
স্বাধীন ডিঙাটি কারো, 
টোটো পাড়া থেকে যেদিন উড়বে 
 তিরঙ্গা হাসি মুখে 
স্বাধীন ভারত সেদিনই হাসবে 
নবজাতকের মুখে ۔
স্বাধীনতা হোক চুয়াত্তরে 
মারি ও মড়ক হীন 
বাসাই টুডু লাফিয়ে বলুক 
ঝান্ডাটো কাঁধে দিন ۔
শিশু শ্রমিকরা স্বাধীনতা খোঁজে 
জাতীয় সড়কে রাতে 
ভারতমাতার জয় তবু বলি 
সমষ্টি একসাথে ۔
++++++++++++++++++++++++++++++++++

পারবেন 
 বিশ্বজিৎ রায়

হ্যাঁ,  আপনিই পারবেন ----
হ্যাঁ,  আপনাকেই বলছি। ও দিদি, ও দাদা!!
আপনারা যারা প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যান, যারা অফিস-আদালতে চাকরি করেন, 
সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েন হাসপাতালে - স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মানুষের সেবা করতে,
 হকারী করতে, আবর্জনা সাফাই করতে,
মুটে-মজদুরী-রান্না করতে, বাসন মাজতে- কাপড় কাচতে, চাষ-আবাদ করতে, ঘরবাড়ি বানাতে, রঙের কাজ করতে -----
আপনারাই পারবেন, তেরঙ্গা পতাকাটাকে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে আকাশে ওড়াতে.....

হ্যাঁ,  এটাই আমার বিশ্বাস ----
ওইযে লোকগুলো,  সারাবছর মিথ্যার ফুলঝুরি ফুটিয়ে, নানান দুষ্কর্ম করে, জনগণের পয়সা মেরে ঘাড়-পেট ফুলিয়ে বসে থাকে----
তারা  যখন ধবধবে পোশাক পরে, শরীরে সুগন্ধী মেখে এসে তেরঙ্গা পতাকা তোলেন,
জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন, দেখে হাসি লাগে, 
গা জ্বলে যায়.......

ওদেরকে দূরে সরিয়ে আপনারাই পারবেন
শুদ্ধ হাতে, শুদ্ধ চিত্তে পতাকা তুলতে।
যেভাবে মন্দিরে গিয়ে অঞ্জলি দেন
যেভাবে মসজিদে  গিয়ে নমাজ পড়েন
যেভাবে গির্জায় গিয়ে মাথা নত করেন,
সেই শুদ্ধ মননে আপনারাই পারবেন ওই
পতাকার দড়ি স্পর্শ করতে....

ওই পতাকার শরীরে যাদের নাম লেখা আছে---
গান্ধী, সুভাষ,  রাসবিহারী,  বাঘাযতীন, মাস্টারদা, প্রীতিলতা, উল্লাসকর, মাতঙ্গিনী,  উধম, ভগত, বিনয়, বাদল ----
ওরা সবাই খুশী হবেন, আনন্দ পাবেন 
বহুদিন পর আপনাদের দেখে, যারা ধান্দাহীন, কালোটাকাহীন, সাম্প্রদায়িকতাহীন হাতে তেরঙ্গা পতাকা ওড়ানো দেখতে  চেয়েছিলেন একদিন .... 

আপনাদের এই সুযোগ কোনদিন কেউ দেয়নি, দেবেওনা -----
জনসেবার নামে যারা অপসেবা করে,
অপকর্ম যাদের চরিত্রগত স্বভাব, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স যাদের অদৃশ্য জাদুতে বছর বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, তারাই প্রতিনিয়ত তাদের অপমান করে আসছেন, 
ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেছেন যারা জীবনের জয়গান....

ওদের অবজ্ঞা করে, সরিয়ে দিয়ে আপনারা সবাই আসুন, সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে ---
ওই দেখুন, ভারতমাতা পতাকাদন্ড হাতে গভীর আগ্রহে আপনাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, ক্ষতবিক্ষত,  লাঞ্চিত উদ্বেগে ---
যার সন্তানদের মুখের খাবার 
কেড়ে নেয় রাক্ষসরা, যার মেয়েদের খুবলে খায় কালো কালো  মুখগুলো.....
পতাকা উত্তোলনের আগে আপনার সন্তানদের বলুন সেইসব দিনগুলোর ইতিহাস ---
মঙ্গল পান্ডে থেকে শহিদ  ক্ষুদিরাম, 
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন থেকে রাইটার্স এর অলিন্দ যুদ্ধ, 
সেলুলার জেল থেকে আলিপুর জেলের অবর্ণনীয় অত্যাচারের কাহিনি ----
দেখবেন,  আপনারা সবাই পতাকার তলায় এসে দাঁড়ালে দুখী মায়ের মুখে সুখের হাসি ফুটে উঠছে,
যখন সবাই মিলে " জনগনমন..." বা " মুক্তির মন্দির সোপানতলে গাইবেন, দেখবেন
সারা আকশজুড়ে ছরিয়ে পড়েছে তিনটি রঙের ঝলকানি, 
অব্যক্ত স্বাধীনতার  আনন্দআলো ..... 
+++++++++++++++++++++++++++++++++


এসো স্বাধীনতা
মন্মথনাথ দাস

স্বাধীনতা তুমি সত্যি কি এলে ? চারদিকে হই চই স্লোগানে মিছিলে মাইকে সভায় -তবু স্বাধীনতা কৈ তুমি কি কেবলি জাতীয় পতাকা কিংবা ফুলের মালা
 কিংবা কেবলই ভোটের দামামা ঘাতক তোমার ঢালা
 লালবাতি জ্বালা মন্ত্রীর গাড়ি- সেখানেই বুঝি তুমি কিংবা যেখানে নারী ধর্ষক মাতালের মাতলামি ?নাকি তুমি শুধু খবর কাগজ কালোটাকা ঝুড়ি ঝুড়ি কিংবা যেখানে মদ হিরোইন চরস গাঁজাও তারি ?  বালিগঞ্জ আর সল্টলেকে তুমি থেমে গেলে স্বাধীনতা 
বস্তি ও গ্রামে জনতা তোমাকে খুঁজে ফিরে হায় বৃথা যেখানে প্রসূতি খুঁজে চিকিৎসা ভিখারি দু মুঠো ভাত  
পড়ুয়া যেখানে খুঁজে স্কুলে  কাটে বিনিদ্র রাত ।

বেকারের সারি টপকে চলেছে দিগন্তরেখা পারে যেখানে মানুষ রুদ্ধ কন্ঠ প্রতিবাদ জমা করে সেখানেও তুমি এসো স্বাধীনতা সকল বিভেদ নাশি ভোরের আকাশ ভরে দিক কাজ একশ কোটির হাসি।।
+++++++++++++++++++++++++++++
আমি আমাদের স্বদেশ এরং রক্তের অক্সিজেন
                               সঞ্জয় সোম
                              
আমাদের পৃথিবী পুড়ছে করোনা বিষে
আমাদের পোড়া দেশে ক্ষমতা ব্যস্ত 
                                         কারবারি হিসেবে
ক্ষমতার মুখে শুনেছি দেশপ্রেম
শুনেছি করোনালাগা বালিশ কথা
আমরা দাঁড়িয়ে আছি মৃত্যুর মিছিলে
আমাদের মাথায় চাপছে নিত্য নতুন
                                      কারবারি বোঝা
তুমি হাসছো, দূরে দাঁড়িয়ে দেখছো মজা
ক্ষমতা ফিরিয়ে নিয়েছে তোমার
                                স্বাস্থ্যের অধিকার
তুমি কিনবে পালস্ অক্সিমিটার
জি এস টি চাপানো হ্যাণ্ডসেনিটাইজার
অধীক মূল্যে কিনবে মাস্ক
তোমার করের টাকার ভাগ পাবে
চুপ করে থাকা ক্ষমতারা
তোমার রক্তের অক্সিজেন কমছে
হাসপাতালের দরজা তোমার কাছে বন্ধ
তুমি শুনেছো একদিন স্বর্গ আঁকা হবে
ফুলের মেলা বসেছে স্বদেশ মাটিতে
আমি দেখলাম ধূসর হয়ে গেলো
                         নীল সাদা হাসপাতাল
আমি দেখলাম করোনা বাণিজ্য
ক্ষমতার ভিন্ন ভিন্ন মুখ
আমার চেনা শেষ হলো না
আমাদের পোড়া স্বদেশ মানচিত্রের মালিক
এবং ক্ষমতার মুখের ঘন ঘন
                                    পাল্টে যাওয়া রং
++++++++++++++++++++++++++++++++++

মৃত্যর ওপর দাঁড়িয়ে আছেন
শুভঙ্কর দাস

মাটি দিয়ে গড়া সূর্য, রক্ত দিয়ে গড়া তার রঙ,আবার সেই রঙে দেখতে পাবে শত-সহস্র অসহায় ও অপমানিত মানুষের মুখ
যাদের অতি সহজেই অস্ত করা যায়,যাদের অতি সাধারণ আয়ূধে বধ করা যায়,যাদের অতি অল্প পরিশ্রমে বন্দী করা যুগের পর যুগ!
সেই মাটি আর মানুষের অশ্রু দিয়ে নির্মিত এমন এক মানুষ যিনি অস্ত্রের বিরুদ্ধে নিজেকে শুধু অস্ত্র করেননি,মাথা নত একটা দেশের বুকে অস্ত্রের আগুন জন্ম দিয়েছেন!
'দিল্লি চলো' মানে শুধু 'দিল্লি' নয়! যেখানে সাম্রাজ্যের গারদ আকাশ ছেয়ে নষ্ট করে স্বাধীন তার পথ,সেখানেই উচ্চারিত হয়,দিল্লি চলো!
সাম্রাজ্যের লোহা ও বেড়ি জলে ভেসে যায়!যারা মনে করত সূর্যের অধিক উদয়গামী,তারা আজ মৃত্যুর নিচে মুখ ঢাকে লজ্জায়! 
শুধু সেই মানুষটি ছুটে আসছে ঘোড়ায় চড়ে রাতদিন ভারতবর্ষ নামের এক দেশের ভেতর,যিনি একক দাঁড়িয়ে থাকেন মৃত্যুর ওপর

যাকে আগুনও স্যালুট করে!
----------------////----------------
স্বাধীনতা দাও
সুভাষ হালদার

তুমি আবার আসো নেতাজী দাও আর একটা স্বাধীনতা, মীনাক্ষী প্রাণ ভরে ভাবেনি আর প্রাণ ভরে দেখেনি নীল আকাশ, শোনেনি পাখির গান নদীর কত কথা থাকে সে জানে না

তার পৃথিবী এক ছেলে এক মেয়ে বাসন মাজা ভাত ফোটানোর ভিতর

তাই নেতাজী তোমাকেই বলতে ইচ্ছে করছে এমন আর এক স্বাধীনতা দাও 

আমার মীনাক্ষী দেখুক নীল আকাশ জানুক সে স্বাধীন যেমন আমার ভারতবর্ষ, হে নেতাজী 
+++++++++++++/////////++++++++++++++

আমাদের স্বাধীনতা 
তপনকান্তি মুখার্জি 

স্বাধীনতা মানে ছুটির ঘন্টা , মুক্ত আকাশ , 
স্বাধীনতা মানে উজল আলোর বহির্প্রকাশ । 
স্বাধীনতা মানে নদী মাঠ বন রূপকথা , 
স্বাধীনতা মানে ভুলে যাওয়া সব বিষাদ - ব্যথা । 
স্বাধীনতা মানে টুপটাপ ডুব দিঘির জলে , 
স্বাধীনতা মানে তালাচাবি দাও ইস্কুলে । 
স্বাধীনতা মানে মনে মনে শুধু ছবি বোনা , 
স্বাধীনতা মানে ঘুড়ি ওড়ানো গল্প শোনা , 
স্বাধীনতা মানে উৎসব মেলা হুড়োহুড়ি , 
স্বাধীনতা মানে স্বাধীনতাই পুরোপুরি । 
++++++++++++++////////++++++++++++++++

পথের আঁচড়
খুকু ভূঞ্যা

ফাটা সময়ের দিকে তাকিয়ে একঝাঁক মেঘ উড়িয়ে দিলাম,
সেরে ওঠো উজ্জ্বলা
পোকা খাওয়া কৃষ্ণচূড়া নর্দমায় ফেলে আঁকড়ে ধরো নিজস্ব আলপথ,
বুকের ভেতর নদী থাকতে কেন প্রশ্রয় বালিয়াড়ি
নৌকা ভাসাও,হাল টেনে এগিয়ে যাও একা

সে এক তিথি, চাঁদ ভরা রাত
ভৈরবী জেঠিমা নাড়ী কাটার পর সংসারে শ্রাবণ
দুঃখের গহ্বরে নারীকান্না
স্তব্ধ করে দেয় শাঁখের আওয়াজ ওঁ--

জীবন থেকে আত্মহত্যার দূরত্ব দেখেছে শিশুচোখ--
কপালে টিপ পরানো হাত লুকিয়ে রাখছে ফলিডল
দারিদ্র ক্যানসার মাছ
ক্ষত নিয়ে ভাসতে থাকা,শ্বাস টেনে এগিয়ে যাওয়া--
স্রোতের মুখে দাঁড় টানা উফ্!
তবুও প্রত্যাশা--
চোখে গঙ্গাজল নিয়ে যদি মাটি পায় তুলসী গাছ--
+++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতার পূর্বোত্তর"
কুমার আশীষ রায়

পরাধীনতার বীজখানি যাহা রোপিত পলাশী কাননে
কত নিপীড়ন, জ্বালা ও দলন -- প্রোথিত হাজার কাহনে

কাতর শোষণে বিদেশী শাসনে কোটি কোটি দেশ বাসী
সব ম্রিয়মান যেন নিষ্প্রাণ, ছিল না মুখেতে হাসি

সংগ্ৰামে নেমে বিপ্লবী কত ফুঁসেছিল প্রতিবাদে
থেমেছিল তারা তৃপ্ত যখন মুক্তিপণের স্বাদে

কিছু গেল তারা ফাঁসির মঞ্চে বাকি গেল কালাপানি
রয়ে গেল দেশে ভক্তের দল --  ক'রে চলে হানাহানি

যারা দিল প্রাণ, বাঁচাতে যে মান জন্মভূমিই মা তো
গাইলো যে গান দিয়ে বলিদান আপন রক্তে স্নাত

ভেঙেছে কপাল জননীর ---  নাকি পরাধীন-শৃঙ্খল
চারিদিকে আজ দেখি হাহাকার সকলের মনে ছল

হাতে খড়ি সেই স্বাধীন লগনে প্রগতির অভিযানে
চেয়েছি সকলে মাথা উঁচু ক'রে বাঁচতে সসম্মানে

সভা সমিতির মঞ্চে চলছে ---  প্রশ্ন, তর্ক, ভাষণ
ঝুলেছিল যারা ফাঁসির মঞ্চে পেল কি মানের আসন।
+++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতার কবি 
    কাজী সামসুল আলম 

পরাধীনতার নির্মম লজ্জা মুক্তি পেতে লক্ষ প্রাণের বলিদানই স্বাধীনতার সংজ্ঞা |
দেশ মাতৃকার প্রতি বিপ্লবীদের শর্তহীন  ভালবাসা |
পরের প্রজন্মকে অত্যাচার থেকে বাঁচাতে অত্যাচারিত হয়েছেন অগ্নিশিশু থেকে জাতির জনক, 
দেশবন্ধু থেকে নেতাজী সুভাষ, সীমান্ত গান্ধী কিংবা আজাদ |
ভারতের বীর সন্তানেরা দেশ মাতার অন্তরের যন্ত্রনা অনুভব করতেন,  
মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন ব্যক্তি স্বার্থ ছাড়াই 
ওদের বন্দুক তলোয়ারকে কলম দিয়ে শান দিয়েছেন নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, 
অতুলপ্রসাদ, মুকুন্দ দাস, রজনীকান্ত সংগ্রামীদের মনে আগুন জ্বালিয়েছেন কলমের কাঠি দিয়ে, 
সত্যেন দত্ত, সত্যেন ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল দেশপ্রেমের চাদরে নকশা এঁকেছেন কলমের ডগা দিয়ে |
জাতীয় পতাকা উত্তোলন এঁরা অনেকেই দেখে যেতে পারেন নি, 
জাতীয় পতাকার রঙে মিশে আছে এঁদের রক্ত মজ্জা নিঃশ্বাসের মিশ্রণ |
বাকহারা বিদ্রোহী কবির কারার ঐ লৌহ কপাটে বন্দী নয়  আজকের কবিরা, পালন করছেন স্বাধীনতার অনন্য অপরূপ স্বাদ নির্বাক হয়ে ||
++++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতা দিবস ও একটি ঘোষনা
মোনালিসা পাহাড়ী

দিনান্তে দুটুকরো রুটির সামনে এসে বসি
এই তো আমার স্বাধীনতা...

চোখে চোখ রেখে ঠিক ভুলের হিসেব কষি
সযত্নে বাঁকা গলি এড়িয়ে ঢুকে পড়ি সোজা পথে
অত‍্যাচারের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদে মুখর হই
এই তো আমার স্বাধীনতা...

গফুর চাচা ছেলের নাম রাখে কৃষ্ণ
ব্রাহ্মণ বিধবা দত্তক নেয় অনাথ জাত কূলহীন শিশুকে
দিনদরিদ্র মানুষেরা শাসকের সম্মুখে রাখে দাবীর ইস্তাহার
মেয়েটি ভালোবেসে বিয়ে করে প্রেমিকাকে
আমরা স্বপ্ন দেখি চাঁদের বসতি
এ ও কি কম!

স্বাধীনতা দিবস শুধু উৎসবের দিন নয়
জীবনের প্রতিটি দিন স্বাধীনতা দিবস হোক

আকাশে উড্ডীন তেরঙ্গা হৃদয় রাঙাক
আমরা আলোকিত হই শহীদের রক্ত ভেজা দেশে
শহীদের স্বপ্ন বাঁচুক আমাদের চোখের মনিতে-
+++++++++++++++++++++++++++++++++

শিশু-শ্রমিকের চোখে স্বাধীনতা
             গোবিন্দ মোদক 

চৌদ্দ বছর বয়স আমার, মা-বাবা নাই, 
রেস্টুরেন্টে কাজ করি, খেতে-পরতে পাই। 

আমার দিদি নয়নতারা, পরের বাড়ি খাটে, 
লেখাপড়া হয়নি কারও, কাজ করে দিন কাটে। 

দিদির সই জয়া খাতুন, তাঁত ঘরে যায়, 
গামছা বুনে শাড়ি বুনে, খেতে পড়তে পায়। 

আমার বন্ধু রবিউল, ইঁটভাটায় খাটে, 
আর এক বন্ধু সনাতন, গরু চরায় মাঠে। 

রবিউলের বড়ভাই, কাসেম আলী নামে, 
এই বয়সেই রিক্সা চালায় নবদ্বীপ ধামে।

জনসনকেও চিনি আমি, হকারগিরি করে, 
রাত থাকতে জেগে উঠে ভোরের ট্রেন ধরে। 

আমাদের কারোরই তো হয়নি পড়াশোনা,  
স্বাধীনতা কাকে বলে নেইকো কারও জানা।

বছর আসে বছর যায়, আমরা খেটে খাই, 
তোমাদের-ই স্বাধীনতা, আমাদের তা নাই !!
++++++++++++++১০০+++++++++++++++++

স্বাধীনতা 
মহুয়া সমাদ্দার 

স্বাধীনতা মানে ছোট্ট মেয়েটার পেটেতে দুমুঠো অন্ন 
স্বাধীনতা মানে রাতবিরেতেও নেই ভয় মেয়ের জন্য । 

স্বাধীনতা মানে পাগলীটা পাবে আজ তবে নিরাপত্তা 
স্বাধীনতা মানে রঙচটে যাওয়া , তবু থেকে যাওয়া স্বত্তা । 

স্বাধীনতা মানে তুই আর আমি - থাকবে না কোনো ধর্ম 
স্বাধীনতা মানে ভালোবাসা, ক্ষিদে , হোক সেটুকুই বর্ম ! 

স্বাধীনতা মানে অবিশ্বাসের পড়বে গলায় দড়ি 
স্বাধীনতা মানে নর-পিশাচের হরিবোল বলো হরি । 

স্বাধীনতা মানে ভালোটুকু থাক , নেতাজীর সেই ইচ্ছে  
স্বাধীনতা মানে তবে কেন আজও আশ্রয় কেড়ে নিচ্ছে ? 
+++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতার ক্যানভাস
রাজীব ঘাঁটী

জীবনের কঠিন বাস্তবকে মেনে নিয়ে যেদিন
পথিক বুঝে নেয় তার চলমানতা, সেদিন থেকেই সে জানে স্বাধীনতা । বন্দী আর মুক্তির ব্যবধানে কোন সংজ্ঞা নেই স্বাধীনতার।

মুক্ত জঙ্গল বা অভয়ারণ্য ,কোথায় ঠিক স্বাধীন আজ ও বুঝে উঠতে পারেনি হরিণ বা চিতার দল ।‌ কতটা একাকীত্ব কাউকে স্বাধীন রাখে! কতটা জোট বাঁধা স্বাধীনতার নাম ,জানি কি ?

কোন একটা ঘোষণার নাম স্বাধীনতা ? বোধহয় নয় । বিভাজন অথবা সম্প্রীতির ঢাক পেটানো ? বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে সত্যকে মেনে নিতে পেরেছি ? স্বাধীনতায় ! 

দাবী করা ,আর পাওয়া একটা নির্দিষ্ট দিন উদযাপন অথবা কারো কাছ থেকে মুক্ত হয়ে যাওয়ার মধ্যে স্বাধীনতা খুঁজে বেড়াই আমি বা আপনি । এ দেশ,শহর,পরিবার বিভাজনের।
বিভাজনে স্বাধীনতা মেলে না ,মিলবে না ।

একটা তারিখ,একটা যুদ্ধ আর একটা পতাকা স্বাধীনতা নয় ! সমান অধিকারে লিখে দাও মানুষের অধিকার ।আমাদের বিবর্ণ দেশের বুকে সংস্কারের ক্যানভাসে স্বীকৃতি পাক স্বাধীনতা ! লেখা হোক মুক্তির ইতিহাস ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতা নিশান
অজিত জানা

স্বাধীনতার ছবি চোখে ভাসে
যা অর্জন করেছি বহু রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে 
মে মহীরুহ নীচে দাঁড়িয়ে আছি
শত শহিদের রক্ত অশ্রু জলে লালিত পালিত
মৃত্যু উপত্যকা রঞ্জিত লাশে
মৃত্যুকক্ষ লক-আপে হাজার আর্তনাদ
দলিত মথিত হৃৎপিণ্ড শত শত
স্খলিত জীবন ছন্দ 
রুদ্ধ সুখ স্বপ্ন ব্রত
ন্যুব্জ নত শিরদাঁড়া
অকাল অস্ত জীবন সূর্য
স্বরাজ শ্মশান পরাধীনতায় প্রাণ
ঘনঘোর দুর্দিনে এসো পথে নামি
 উড়াই স্বাধীনতা নিশান
+++++++++++১০০++++++++++++++++

স্বাধীনতা
দেবাশিস চক্রবর্ত্তী

স্বাধীনতার বয়স হলো,
চুয়াত্তরে পা ।
এখনও কেউ স্বাধীনতার
মানেই বুঝল না !

এখন যারা তূর্কি তরুণ
ফুটন্ত যৌবন ,
কথায় কথায় নিজের ঘরে
করছে আন্দোলন ।

তাদের যদি প্রশ্ন করো
বাঘাযতীন কে ?
সুভাষ বসু ঘর ছেড়েছেন
কিসের সাহসে ?

মুচকি হেসে বলে তারা
বলবো এখন পরে ,
ইতিহাসের বই গুলো সব
সাজানো আছে ঘরে ।

বিঞ্জান আর ঈংরেজিতেই
সময় নিচ্ছে কেড়ে ,
ইতিহাসটা পড়বে কখন
ইন্টারনেট ছেড়ে ?

হায় গো ভারত, দুঃখ তোমার 
ঘুচবে কেমন করে ?
এমনি যদি দিন কেটে যায়
তিয়াত্তরের পরে !

হাজার জাতী - হাজার মতে
আজও আছে ভিন্ন,
আজও সবার একই দাবি
চাকরি , ঘর আর অন্ন !

রাজনীতি আর রাজনীতি নেই
দূর্নীতি যায় ছেয়ে ,
ভারত মা তোর কি লাভ হলো
এ স্বাধীনতা পেয়ে ?
++++++++++++++++++++++++++++++++


স্বাধীনতার সূর্যোদয় 
ডাঃ নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় অভিমন্যু 

ভারতবর্ষ হয়েছে স্বাধীন, কত শোনিতের স্রোত ছুঁয়ে -
দুশো বছরের শৃঙ্খল ছুঁড়ে,খুশি -বেদনার গান  গেয়ে।।
স্বাধীনতা এক অনেক মূল্যে চোকানো  মহার্ঘ উপহার, 
স্বাধীনতা ঐ ত্রিবর্ণ পতাকায়, ত্যাগ ও শৌর্যের সম্ভার।।
 
নেতাজী সুভাষ, সূর্য সেন,ক্ষুদিরাম আরও লাখো মহাপ্রাণ, 
স্বাধীনতা রণে দিয়ে গেল অকাতরে,স্বীয় প্রান বলিদান।।
ধর্ম, জাতির ভেদাভেদ হীন,  এমন ভারত স্বপ্নের আঙিনায়-
যে ভারতের প্রতি ঘরে অনাবিল হাসি, আর্থিক স্বাধীনতায়।। 
স্বাধীনতা আজ জ্বালুক প্রদীপ, অন্তজের প্রান্তরে -
স্বাধীনতা আজ মেলুক ডানা, নিরক্ষরের ঘরে ঘরে।।
সেই স্বাধীনতা শিক্ষার দীপে, মুছে দিক সব "কালো" -
সেই স্বাধীনতা সব অপমান মুছে, জ্বালুক মানের আলো।। 

আজ চলার পথে সবার যেন পথ হয় বাঁধাহীন-
দারিদ্র্য হীন সেই স্বাধীন পথের, স্বপ্ন দেখি রঙিন।।
চিকিৎসা হীন প্রতি ঘর যেন পায়, বাঁচবার স্বাধীনতা --
মাথার ছাদ,ক্ষুন্নিবৃত্তি সবার জন্য, নিরাপত্তার কথকতা।। 
++++++++++++++১০০+++++++++++++++

স্বাধীনতা।
শুভ্রাশ্রী মাইতি।

নীলকুঠির মাঠের শেষ সীমানা জুড়ে স্বাধীনতা রঙা সূর্যটা উঠতেই
কোঁচড়ভর্তি বীজধান নিয়ে শূন্য জমির দিকে ছুটে যায় পরাণজ্যাঠা।
বৃষ্টি হলেই পুঁতে দেবে মাটির নরম গভীরে।
এখানে বৃষ্টি হয় না বহুদিন।
গনগনে আগুন আঁচে চায়ের কেটলিটা বসিয়ে
একপাঁজা এঁটো বাসনে হাত লাগায় ছোট্ট হারু।
আলোর দরজাগুলো কবে যে খুলবে স্বাধীনতার চিচিং ফাঁক মন্ত্রে,কে জানে!
 ফুটপাতে ঘুমানো উলঙ্গ শিশুর ভুখা পেটে ধুলোমাখা গভীর খাদ।
স্বাধীনতার রোদ এসে লুকোচুরি খেলে ছায়া মেখে।
কে যেন ক্ষুধারঙা হাত এঁকে যায় দিনরাত ডাস্টবিনের পাশে।
রাত পোহালে শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খাওয়া শরীরটা নিয়ে ঘুমাতে যায় সাবিত্রী। 
যন্ত্রণার দগদগে ক্ষতগুলোয় বিছিয়ে নেয় স্বাধীনতার বিবর্ণ কাঁথাটা অবিশ্বাসে।
পাঁচমাথার মোড়ে একটা বিবর্ণ স্ট্যাচুর সামনে আজও তেরঙা পতাকা বিক্রি হয় দশ টাকায়।
স্ট্যাচুর দিল্লী চলো আঙুলের ফাঁকে স্বাধীনতা রঙা সূর্যটা এখনও ঝুলে থাকে বিবর্ণ প্রশ্নচিহ্ন হয়ে।
উত্তর খুঁজবে বলে তিনরঙা পতাকাগুলো বন্ধ মুঠোর শাসন ছেড়ে
 পতপত করে উড়তে থাকে ঝরা পাতার মতো...উড়তেই থাকে গভীর বিশ্বাসে।
+++++++++++++++++++++++++++++++

মায়াময়
রজত দাস

শিকড়ের বিস্ময়ে অভিভূত এসপার ওসপার দিবস সময় একদিন
প্রতিদিন একটি বুলেট কষ্ট দেয়
বিদ্ধ করে বিষাক্ত আভাস।

মাটির ঘ্রাণ বাতাসে দাঁড়ালে
উদাস ক্ষতচিহ্ন ওদের শরীরজুড়ে।
মুখে মুখে ফেরে কথাগুলো
মায়াময় দেশপ্রেম উড়ে পতাকা হাতে।
দুহাতে আগুন ডাকে আমার ভিটেমাটি।
স্বাধীন অন্ধকার গায়ে মেখে এলোমেলো হেঁটেছি
পথে একদিন গরম ভাতের থালা বাটি
ভেঙে যায় কঠিন ঘর
বাঁচা গেল পাখির মতো পরিযায়ী।
++++++++++++++++++++++++++++++++++


স্বাধীনতা একটি উপকথার নাম
সুলগ্না ভট্টাচার্য


হিমাংশু চেয়েছিল আমি স্কুল টিচার হই
কিংবা কোন সরকারি অফিসে গেজেটেড অফিসার।
সে সময়ে আমার ছোটো চুলের মাথা 
আর রোজকার হাসপাতাল-লাশঘর-থানায় ঘোরাঘুরি আর চা দোকানে আড্ডা দেওয়া দেখেই 
তার মাথায় বাজ পড়েছিল।
পেশা যাই হোক, তবুও মেয়ে তো!
মেয়েদের বেশী উড়তে নেই-

বহু দাঙ্গা-হাঙ্গামা আর চাবুক মারার পরেও আমি সোজা হইনি।
কালের নিয়মেই ভালোবাসার রূপান্তর ঘটে-
কিন্তু এটা বলতে পারি, তোমার মৃত্যু আমাকে শান্তি দেয়নি।
যেখানেই গিয়েছি রক্তাক্ত হয়েছি।
তিরঙ্গা পতাকার মতোই স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উড়তে চেয়েছিলাম,
স্বাধীনতার দাবী আমাকে শান্তি পেতে দেয়নি।
বুঝলে হিমাংশু, তোমার মৃত্যু আমাকে শান্তি দেয়নি।
+++++++++++১০০++++++++++++++++++++

ভেসে আসে স্বাধীনতার গান
বিমল মণ্ডল 

কানপেতে শুনে  যাও
ঐ ভেসে আসে  ফুটপাত , হাসপাতাল  থেকে  স্বাধীনতার গান
ফুটপাতে  আনাহারে স্বাধীনতা কাঁদে
হাসপাতালে  শব স্তুপে স্বাধীনতা চেয়ে

চাওয়া  - পাওয়ার  ইতিহাসে 
এমনই  স্বাধীনতা 
যেখানে  দু'দণ্ড শান্তি  খোঁজে  গনতন্ত্র
লুট হয়ে যায় পাড়ায়  পাড়ায় 
শহরের  ফুটপাত  আর বস্তিতে

এমনই  স্বাধীনতার গান ভেসে  আসে

প্রতিমুহূর্তে  স্তাবকতা  আর হায়নাদের  কামনায় 
নখে, দাঁতে ছিঁড়ে  ছিঁড়ে  রক্তাক্ত শরীরে চেটে  চেটে খায়
আমার বোন কিংবা  তোমার মেয়ের শরীর 
বিচার  হয় না আর - শুধু  সাধুবাদ 

এই স্বাধীনতা!  
অতীতের  স্মৃতিতে 
সেই স্বাধীনতা! 

শুধু  সময় আর রাজার যাওয়া  আসা 
স্বাধীনতার শুধু  ঢং বদলায় 
পতাকা  বদলায় না

চোখে মুখে  আতঙ্ক গনতন্ত্র 
স্বাধীনতা জিজ্ঞাসা  বুকে  থেমে 

ভেসে আসে স্বাধীনতার গান...
+++++++++++++১০০+++++++++++++++

সার্জিক্যাল স্ট্রাইক 
সোমা প্রধান


পাহাড়ি উপত্যকা রূপালি আলোয় মোহময়ী।
বারুদের গন্ধে ডানা ঝাপটিয়ে
উড়ে গেল একটি পাখি। 

এখন বেশ নির্ভার, পাহাড়ের ঢালে
দম আটকে বসে আছে তন্বী নদী।
শোনা যাচ্ছে তার বুকে পাথর ভাঙার শব্দ।

যুদ্ধ-ফেরত এসে দাঁড়িয়েছে তার পাশে।
মায়ের আদরের মতো...
কফিন থেকে তুলে নিয়ে
চুমু খাচ্ছে মৃত সন্তানের গালে। 

সন্তানের নাম দেশ, মায়ের নাম স্বাধীনতা।
++++++++++++++++++++++++++++++++++

সাম্রাজ্যবাদীর গল্প 
শ্যামল রক্ষিত 

পৃথিবীতে যার পা আছে সে কি পা কাটে তার নিজের 
পৃথিবীতে যার হাত আছে সে কি হাত কাটে তার নিজের 

আর যদি তাকে শত্রুকে ধ্বংস  করতে বলা হয় 
তখন সে কি দু'হাত দিয়ে গলা কাটে সৈন্যসামন্তের 


কিংবা যদি তাকে বলা হয় সামনে পিছনে দেওয়াল 
তখন সে কি তা মস্ত নখদন্ত দিয়ে বুক চিরে বলে : 
  দেওয়াল উবে যাচ্ছে 
  ওপার থেকে শোনা যাচ্ছে 
 কঙ্কালসার মানুষের অগণিত    কন্ঠস্বর: 
      'রুটি দাও 
       বাঁচতে দাও 
      দাও  স্বাধীনতা ৷'
++++++++++++++++++++++++++++++++++


স্বাধীনতা একটি সূর্যের যৌবন 
   অশোককুমার লাটুয়া 

একসমুদ্র বুকের রক্ত আর স্বপ্ন ঢেলে যারা স্বাধীনতার বীজ বুনেছিল 
তাদের উর্বর শস্যের পথ হেঁটে 
আজ স্বদেশ এবং মানুষ 
ক্রমাগত তিয়াত্তরে 
জীবন্ত অধ্যায়ের মুখোমুখি। 
উৎসাহে, উৎসবে গর্বে, উদ্দীপনায় 
গেরুয়া-সাদা-সবুজ পতাকা 
নীল আকাশকে করেছে আলিঙ্গন। 
অথচ এখনো মানুষে মানুষে বিরোধ 
রাজনীতির জটিল শিকড় 
মারণফন্দী কথার চতুর মারপ্যাঁচ 
ঘিরে ধরেছে কুশলশিকারী অজগরের কুটিল চোখের মতো। 
বিস্ফোরণ ঘটে যায় বিবেকের বারুদে। দিশেহারা সংগ্রামে নেই উজ্জ্বল কোনো ধ্রুবতারা। 
চারিদিকে ছদ্মবেশী বিশ্বাস 
আজ যেন বিষাক্ত কুয়াশা। 
তবু স্বাধীনতা! 
তোমার দিকে তাকিয়ে গৌরবে 
অপেক্ষায় আছি 
একদিন সব ভুল সুধরে নিয়ে 
মানবিক আকাঙ্ক্ষার রোদে 
একটি সূর্যের যৌবন 
সবাইকে সমান ভালোবাসবে 
অনিবার্য হৃদপিণ্ডের অনুগত সৌরভে। 
+++++++++++১০০++++++++++++++++

‌‌স্বাধীনতা 
সোনালী মিত্র 

তোমার আঁচলে বেঁধেছি আমরা আমাদের ভালবাসা। 
অনেক রক্তের পথ পাড়ি দিয়ে 
এনেছিল যারা  ভারতের স্বাধীনতা 
আজো আমরা বিনম্র শ্রদ্ধায় রেখেছি মনে তাঁদেরই বলিদান। 
ইতিহাস জুড়ে সোনার মোড়কে সযত্নে রাখা সেই বীর শহীদদের শত শতকোটি প্রণাম। 
পরাধীনতার আঁধার রাত্রি পার করে দেখেছিল দেশ নতুন মুক্তির আলো
সেই থেকে আজও সেভাবেই আমরা রেখেছি বুকের মাঝে.... 
তোমাকে স্বাধীনতা।
++++++++++++++++++++++++++++++++++

মুক্তি
মৌমিতা জানা মন্ডল

মেয়েটি পার হচ্ছে নির্জন সাঁকোটি....নড়বড়ে শরীর নিয়ে সেটি দুলে ওঠে  মাঝেমাঝে...... তবু এ পথ  একান্ত শব্দহীন
প্রতিটা অনির্দিষ্ট যাত্রাপথে ছায়ারা চলে পাশাপাশি.......মেয়েটি জানে মুক্তি, জানে স্বাধীনতার গন্ধ...সাঁকোটি পার করেছে কত প্রজন্ম, কত আবেগ
কত দল দলেদলে হেঁটেছে তার বুকে......তবু সে মেয়েটিকে দেখায় চেতনার মুক্তি.....প্রতিটা নক্ষত্র চলন আসলে পূর্বজদের স্বপ্ন ছোঁয়াছুঁয়ি.....মুক্তির স্বপ্ন।
++++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বাধীনতা - ৭১   
 জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
 

রঙিন ফুলে মধুর হাসি পাখির গানে ভোর
দিনটি ফিরে এসেছে ফের কাটিয়ে ঘুমের ঘোর।
চোখ রগড়ে দেখছে শিশু তিন রঙা পতাকায়
ছেয়ে গেছে পথের দুধার চোখ ফেরানোই দায়।
রোদবৃষ্টির খেলার ভিতর মিছিল হেঁটে চলে
স্বাধীনতার শহিদজনের জয় হোক জয় বলে।
কী আনন্দে উজল সবাই আজকে সবাই বীর
আশিস দেবেন দেশের মাতা খাড়া হবে শির।
শপথ নেবার মহান দিনে বলুক সবাই মা
দেশের সেবার মহান ব্রতে পিছপা হবে না।
++++++++++++++++++++++++++++++++++


আহামরি স্বাধীনতা
শ্রীলিম
রচনা – ১০-০৮-২০১৭,
স্থান - বেনারস, উত্তর প্রদেশ।
উৎসর্গ – বর্তমান পরিস্থিতির শিকার ‘অতনু মিস্ত্রি’কে
--------------------------------------------------

যেদিন নিজের আত্মাকে পরাতে হবে না মৃত্যুর বরমাল্য,
সেইদিন হব স্বাধীন ! 

স্বপ্নরা যখন সফল হবার জন্য করবে না হাহাকার,
বাধা হয়ে দাঁড়াবে না রাঙা কাগজের ব্যবহার,
পদলেহন আর স্তাবকতার পড়বে না আর প্রয়োজন,
স্বাধীন হব সেইদিন !

অন্যের স্বপ্ন হবে না ঘাড় ব্যথার কারণ,
জীবন স্বচ্ছলতায় বয়ে চলবে আমরণ,
সেইদিন হব স্বাধীন ! 

জরায়ুর শোনিত বইবে না যেদিন পাশবিকতার উদ্দামতায়,
নারীপলল হবে না ভোগের সামগ্রী উচ্ছৃঙ্খল উন্মত্ততায়,
স্বাধীন হব সেইদিন !

তরুণ ভবিষ্যৎ হবে না যেদিন মুষ্টিমেয় স্বার্থমগ্নদের ক্রীড়নক,
যূপকাষ্ঠে চাপাতে হবে না নিজেকে ইচ্ছার বিপরীতে,
সেইদিন হব স্বাধীন ! 

মিশন অভিযান প্রকল্পের অক্ষরেরা যেদিন হবে বাস্তবায়িত ভেদাভেদ ভুলে, 
পলকা হবে না কোনো প্রতিশ্রুতি,
স্বার্থ-দ্বন্দ্ব-দ্বেষ ভুলে সকল সম্পর্ক হবে ইউটোপিয়ার, 
উড়বে যেদিন ধ্বজ মানবিকতার,
সেই দিনই হবে সত্য স্বাধীনতার ! 
-----------------------------------------------------


 ইচ্ছে সুধা 
             পুষ্প সাঁতরা
             
            পাখি ওড়ে ইচ্ছে ডানায়
             তার সাথে ওরে  মেঘ
            কেউতো বলিনা পাখি মেঘ
             বাড়াসনে  গতিবেগ।।
ইচ্ছে উড়ান দিচ্ছে সুধা
কুড়িয়ে নিচ্ছে কথা
ইচ্ছে মেঘের ভেলা তেই
বসে থাকে স্বাধীনতা।।
            প্রিয় স্বাধীনতা বুলিয়ে দেবে কি?
            তোমার হাতের স্পর্শ ,
            সেই স্পর্শের উত্তাপে জাগবে 
সোনার ভারতবর্ষ
আমার ভারতবর্ষ।।
+++++++++++++++++১০০++++++++++++++


এসো বীর সন্তান
ভগীরথ সর্দার

মায়ের আঁচল সরিয়ে দেখি রক্তের দাগ ৷
চাবুকে চাবুকে বিদেশি কারুকাজ
মাটি, ফসলখেত , পায়ে হাঁটা পথ
লালে লাল ৷

আর কত সইবো নিপীড়ন? অত্যাচার ?

এসো আমরা এক হই
হাতে হাত রাখি
আর মায়ের বাঁধন মুক্ত করি 
এসো বীর সন্তানের দল....
++++++++++++++++++++++++++++++±+++



পরশমণি
ড.নির্মল বর্মন 

স্বাধীনতা, বিজয় পরশমণি স্পর্শে 
কান্তার গিরি পর্বত, গহীন সাগরে উচ্ছলতা 
পরাধীন গ্লানি থেকে ছিনিয়ে আনা মুক্ত।
ভালোবাসার চেতনায় প্রলুব্ধ সোনার জীয়ন কাঠি
শত শহীদদের আত্মার সীমাহীন জয়ধ্বনি 
স্বাধীন জীবনের দীপ্ত নির্ভীক উল্লাস ....!
স্বাধীনতা, ভারতমাতার বর্ণিল প্রভাকর 
পুষ্ট বীজের সুন্দর ফসল অথচ মা মাটি মানুষের বুকে ক্ষতচিহ্নে রক্তের আলপনা ।
শত আঘাতের মধ্যে উড়ছে স্বপ্নিল ত্রিরঙ্গা ।
++++++++++++++++++++++++++++++++++


স্বদেশ ও স্বাধীনতা 
প্রেমেশ পন্ডা 

স্বদেশ বাঁচতে জীবন বাজি,
চাই না ব্রিটিশ শাসন, 
তেরঙা পতাকা থাকবে উঁচুতে 
চাই না ব্রিটিশ তোষন।
দেশদ্রোহী অনেকেই ছিল 
এখনো অনেকে আছে। 
দেশকে লুটছে সুযোগ পেলেই
দেশসেবা সব মিছে। 
দেশের মধ্যে স্বাধীনতা কই!
স্বাধীনতা আছে ঘেরা,
ইংরেজ নেই, তাই কি স্বাধীন? 
স্বাধীনতা অধরা। 
শাসন ক্ষমতা যাদের হাতে 
তারা বাড়ে প্রতিদিন। 
যারা শ্রমজীবী, তারা অসহায় 
আজও তারা পরাধীন। 
স্বাধীনতা মানে ১৫ ই আগস্ট ? 
তারপর সব গল্প । 
স্বাধীনতা শুধু সংবিধানে
বুঝেছি অল্প স্বল্প । 
স্বাধীনতা মানে, সবেতে স্বাধীন
মর্যাদা চাই সমান,
বঞ্চনা নয় , নয় অবহেলা 
এক জাতি এক প্রান।
+++++++++++++১০০++++++++++++++++++



স্বাধীনতা কাঁদছে
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া

আজও অত্যাচার-যন্ত্রণায় মায়েরা কাঁদছে,
অকর্মণ্য পুত্র-বৌমা মায়ের পেনশনের দিকে
শ্যেন দৃষ্টিতে চেয়ে আছে৷

পেনশনের অংশ বেশী না পেলে 
পুত্র, বৌমা, নাতি মিলে করে মাকে অপমান,
একবিংশ শতাব্দীতেও হয় মাকে বয়কট!
কথা, জল, বিজলী বন্ধ, 
কয়দিনে স্বাধীনতা হয়ে গেল - বিকট দুর্গন্ধ!
ছি! ছি! ছি!

বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে,
স্বাধীনতা এখন ঝুলছে ফাঁসির ফাঁদে...
পুত্র বৌমার অত্যাচার;
করছে অনেক সংসার ছারখার৷
যে শিক্ষক, করলো সমাজ আলোকিত,
আজ, তাঁর স্ত্রীর মান সম্মান -
পঙ্কিল পাঁকে নিমজ্জিত!

হায় রে ভাগ্য, হায় রে স্বাধীনতা,
অকর্মণ্য পুত্ররা হয়েছে; আজকের বিধাতা!
++++++++++++++++++++++++++++++++++

স্বপ্ন
নন্দিনী সরকার

ধনীর দুলাল স্বপ্ন দেখে চড়বে মোটর গাড়ি,
স্যুট বুট টাই পরে এবার
যাবে যে স্কুল বাড়ী।

জন গন মন গাইতে হবে
একটু হিন্দী টানে ,
রিহার্সালে গাইছে ওরা 
মিস এর সঙ্গে গানে।

কেক বিস্কিট টফির সাথে
হবে যে ফ্ল্যাগ তোলা,
মার্চ পাস্ট আর প্যারেড করে
স্বাধীন দেশের চলা।

স্কুলের পাশের বস্তিগুলোয় 
অনেক ছেলে পুলে,
লাইন দিয়ে বাপুজী কেক
ঐ দিনকে নিলে।

স্বাধীন দেশের কতো আশা
সবার জন্য খাদ্য-
প্যাণ্ডেলেতে দিচ্ছে দেখো
খিচুড়ি বরাদ্দ।।
+++++++++++১০০++++++++++++++++++
স্বাধীনোত্তর আমরা
      অরুণ ভট্টাচার্য

যে প্রকৃতির বসন্ত নেই - কি ফুল ফুটবে বলো আজ !
কোথায় কৃষ্ণচূড়া - কচিপাতা দের হাসি কোথায় সে জীবনের সাজ !

যে সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার  - বিমুগ্ধ করে না এখন
কি কথা বলবে মেঘ,  কত আর কালো ধোঁয়া বইবে পবন !

যে বাতাসে কালোধোঁয়া, কালোটাকা- কালোমন সবকিছু এক,
আমরাতো ক্যাশলেস, জীবনটা প্রেম লেস ধবধবে সমাজের উর্দিটা ভেক।

যে জীবন বিষের চেয়েও বিষময় সে আর কতটা যায় বলো
 বায়ু বিষ, কথা বিষ,  মানুষে মানুষ বিষ
 তাহলে কি বৃক্ষই ভালো !
+++++++++++++১০০++++++++++++++++++

১৫ই আগষ্টের কবিতা 
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল


নিশ্বাস দ্রুত হচ্ছে  স্বাধীনতা শব্দের উচ্চারণে  

এই চিরন্তন অভ্যাসের মধ্যেই কাঁধে তেরঙা পতাকা নিয়ে 
এগিয়ে যাচ্ছেন পিতামহ 
কন্ঠে তার পবিত্র দেশের গান  
তিনি বুঝিয়ে দিতে চান সুস্থ চেতনার মুক্তির নামই স্বাধীনতা 

সেই শ্বাস অনিশ্চয়ে শীর্ণকায় - আবাসগুলোয় কোন 
মানবিক অধিকার নেই  
ঘিরে আছে আগ্রাসন আর লোভের সাম্রাজ্য বিস্তার  

আজও তিনি চলছেন পরাধীনতার শিকলে
আমরা যারা পেছনে আছি - যেতে যেতে রাস্তা ভাঙছি -  
ভাঙছি রাস্তার দুপাশে গাছপালা 

কোনদিন বুঝতেই পারলাম না  কাকে বলে বন্দেমাতরম
++++++++++++++++++++++++++++++++++
স্বাধীনতা মানে
শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ

কালকে সকালে উঠিয়ে দিও মা ইস্কুল যেতে হবে,
ফুল মালা নিয়ে লাইনে দাঁড়াব স্বাধীনতা উৎসবে।
স্যারেরা আসবে, ম্যামরা আসবে হবে গান বক্তৃতা,
সবাই শুনবে, সবাই শুনবে, স্বাধীনতা 
মানে কী তা।

শুনবে, কিন্তু বুঝবে কী ঠিক ? তুমিই বলো না মাগো,
স্বাধীনতা মানে এই কথা বলা -- ব্রিটিশ তোমরা ভাগো।
স্বাধীনতা মানে লাইনে দাঁড়িয়ে বুকে নিয়ে বেশি দম--
হাত মুঠো করে এক সাথে বলা -- বন্দেমাতরম ?

স্বাধীনতা সে তো পেয়েই গেছি মা অনেক বছর হলো,
স্বাধীন ভারত লেখা আছে দেখো --ইতিহাস বই খোলো।
তবে কেন প্রতি বছর এভাবে স্বাধীনতা বলে চেঁচাই,
পতাকাটা তুলে বাঁশের সঙ্গে তার দড়িটাকে পেঁচাই !

মা বলল,ওরে, স্বাধীনতা মানে মায়ের জন্যে ভক্তি,
আমার ভারত মায়ের মতন --এ কথা বলার শক্তি।
স্বাধীনতা মানে জেনে নেওয়া এই দেশটার পরিচয়,
সেই কারণেই ছোটবেলা থেকে একথা শেখানো হয়।
++++++++++++++++++++++++++++++++++
পরাধীন
অমৃতা  খে টো

"স্বাধীনতা" শব্দটার দিকে তাকিয়েছিল
কোটি কোটি পরাধীন ভারতবাসী–
পলাশীর আমবাগানে, ভারতমায়ের সর্বাঙ্গে
শিকল বেঁধে ব্রিটিশ বেনিয়ারা অসময়ে
স্বাধীনতার সূর্যকে অস্তাচলে পাঠিয়েছিল...

লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্ম বলিদান, সংঘর্ষ
মিটিং, মিছিল, প্রতিবাদের পর আঁধার কাটল,
ভারতজননীর চোখের জল মুছিয়ে বহু
প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা এলো, মুক্তি হল দেশের–
কিন্তু মুক্ত হল কি মানুষ? মনের কথা বলতে পারল?
স্বাধীন ভাবে চলতে পারলো নারীরা?
একটি পাড়াও স্বাধীন নয়, সর্বদাই
মনিটরিং করছে রাজনৈতিক দলের
দাদারা, খুনোখুনি মারামারি সংঘর্ষ...
নারীরা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, শিশুরাও

আঁধারদিনের আতঙ্ক আজও কাটেনি,
স্বাধীনতা হীনতায় সত্যিই বাঁচা কষ্টকর
স্বাধীনতা আছে পাখির ডানায়, 
ফুল ফোটার, বৃষ্টি পড়ার, পাখির গানে
পাখিরাই জানে স্বাধীনতার মানে......
++++++++++১০০+++++১০০+++++++++++


স্বাধীন শপথ

                           পার্থপ্রতীম মিশ্র

আমার রক্তবীজে বেড়ে ওঠা আউস ক্ষেত;ধান ভর্তি গোলায়            আগুন জ্বালালো কে!

এতদিনের সাজানো বাগানে নেমে আসা বসন্ত; বসন্ত বাহারি ফুলে
হাত বাড়ালো কে!

রৌদ্রদীপ্ত সবুজ পাতার বুক; বুক ভরা খিলখিল হাসি
রক্তে রাঙালো কে!

আকাশের নিচে দিব্যি হাঁটা চেতনা-ভালোবাসা
সূর্য সকাল -পূর্ণিমা চাঁদ
কালো চাদরে আড়াল করলো কে!

বুকের তলায় বয়ে চলা নদীর স্বপ্ন,
সংগ্রামী রক্ত ঝরিয়ে খুঁজে পাবে মোহনার ঘাট।
তার স্বপ্নের ছাদ ভেঙে বাঁধলে কে তুমি বাঁধ!

এবার কোথায় লুকাবি ঘাতক!
ওই দেখ দূরে          রাতের প্রহর গুনে         পা ফেলে মিছিলের স্রোত...
স্বপ্ননীল চোখে তার স্বাধীন শপথ।

++++++++++++++±+১০০+++++++++১০০+++
স্বাধীনতা তুমি। 
বীথিকা পড়ুয়া মহাপাত্র।

স্বাধীনতা তুমি ,
       
আবেগখচিত হৃদয় জাগানো প্রেম ,
আর্তনাদের বুক বেয়ে ওঠা মান,
শত শহীদের রক্তে আঁকা সুখ
অন্তরে গাওয়া দেশপ্রেমের গান ।

স্বাধীনতা তুমি ,
      
বুকে সেঁটে থাকা ভারতের মানচিত্র 
লাঙ্গলের ফালে অনেক আশার  ধান!
অবাধে চলা আঁধার রাতের নারী 
অভুক্ত পেটে এক থালা গুজরান ! 

স্বাধীনতা তুমি ,
 
 সীমান্তে জাগা প্রহরীর বুকে বল 
 কবির  কলম অগাধ -প্রতিবাদ ,
 নারী মুখ আঁকা জননী জন্মভূমি!
 ভোট বাক্সের ইচ্ছা মূল্য সাধ ।  

স্বাধীনতা তুমি ,
           
দলিত বুটের তলা থেকে ওঠা শ্বাস!                                                             নেতাজির চোখে রূপসী ভারতবর্ষ,
আকাশে ওড়া বিহঙ্গডানা রং 
ফাঁসিতে ঝোলানো ক্ষুদিরামের হর্ষ !

স্বাধীনতা তুমি ,
     
শেকল কাটা রমনী চরণে নিক্কণ                              স্বজন হারানো অর্জিত সভ্যতা,
একজোট হয়ে প্রাপ্তির সম্পদ ,
গৌরবে ওড়া দেশের জাতীয় পতাকা !

স্বাধীনতা তুমি,
    
বন্ধ মনের মুক্ত আকাশে উড়ান!
ধর্ষিতা মেয়ের বুকে আঁকা জাগরন,
মাতৃ ভাষায় মাধুরী ভরানো সৃষ্টি,
মুখেতে স্লোগান বন্দেমাতরম !

মুখেতে স্লোগান বন্দেভারতম!
++++++++++++১০০++++++++++++++++++


  কথা দাও স্বাধীনতা পেলে
বিষ্ণুপদ জানা

                  কথা দাও স্বাধীনতা পেলে
 ভূমিহীন তুলসীদাসী গাইবে বৈষ্ণবী গান
 গৃহস্থের খোলা দালানে বসে
বোশেখের পড়ন্ত বেলায় ।

কথা দাও স্বাধীনতা পেলে 
পাড়ার চাষী বউ শীতের সকালে 
ওম নেবে বেতারে জাতীয় সংগীত শুনে
 কোলাহলমুখর খামার ঘরে ।

কথা দাও স্বাধীনতা পেলে
 শিশুরা পাবে মায়ের কোল, ভাইয়ের
 বোনের আদর ,পিতার পরম স্নেহ
বাঁচবে সবাই আপন হয়ে,  থাকবে দুধে ভাতে।

 কথা দাও স্বাধীনতা পেলে 
আমাদের সব দুঃখ যাবে ভুলে
 লোনাজলের বুদবুদ মিশবে  দাবানলে
 জন্ম নেবে বেদনার অন্ধকারে 
অঙ্কুরিত স্বরাজ ফসল।।


¥¥¥¥¥¥¥¥¥¥ ১০০¥¥¥¥¥¥১০০¥¥¥¥¥¥¥¥¥¥¥¥











No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। পশুপতি ভট্টাচার্য । খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। Dt -15.11.2024. Vol -1053. Friday. The blogger post in literary e magazine

পশুপতি ভট্টাচার্য  ১৫ নভেম্বর ১৮৯১ -  ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮   একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। জন্ম  বিহার রাজ্যে পিতার কর্মস্থল আরায়। তাদ...