Sunday, 13 December 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
          বিশেষ আলোচনা পর্ব
        বাঙালির জীবন ও সাহিত্যে খেজুরগুড়
=================================
       Doinik Sabder Methopath
         Vol -221.Dt -14.12.2020
          ২৭ অগ্রহায়ণ,১৪২৭. সোমবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
গ্রাম বাংলায় চারিদিকের খেজুর গাছের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছে টাঙানো রয়েছে খেজুর রসের হাঁড়ি। শীতের আগমন শুরু হতেই বাঙালিদের মনপ্রাণ ভরাতে ছুটে এলো নলেন গুড় তৈরির কারিগর। ভোর হতে না হতে খেজুর গাছের উপর খেজুর রসের হাঁড়ি নামাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নলেন গুড়ের কারিগরেরা।

নলেন গুড় তৈরীর কারিগরদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা প্রতিবছরের মতো এবছরও খেজুরী থানার বিভিন্ন এলাকায় তারা ডেরা বানিয়েছেন খেজুর রস থেকে নলেন গুড় বানানোর জন্য। তারা দূর্গা পূজো থেকে এসে তারা বানানো শুরু করেছে পৌষ মেলার পর তারা আবার নিজ ঘরে ফিরে যাবে। এবারের নলেন গুড় এর দর রাখা হয়েছে ৯০টাকা কেজি। এলাকার গ্রামবাসীরা ছাড়াও খেজুরি হিজলিবন্দরে ঘুরতে আসা বা বেড়াতে আসা পর্যটকদের খেজুর রস ও নলেন গুড় বিক্রির উপর ভরসা করা হয়। এছাড়াও এই গুড় থেকে পাটালি তৈরী করে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বাজার এখনও সেরকম পড়েনি তবে আশা অন্যান্য বছরের মতো এবছরও এই ব্যবসা লাভবান ।
সাহিত্যেও মিষ্টি শব্দটির নানামুখী ব্যবহার এতো বেশি হয়েছে যে শাব্দিক দিক থেকে ‘মিষ্টি' বলতে যা বোঝায় তা সাহিত্যের পাতা থেকে খুঁটে খুঁটে বের করে তুলে ধরতে দীর্ঘ সাধনা ও গবেষণা প্রয়োজন৷
শীত এসে গেছে এখন ভাপা পিঠা খাওয়ার একটি প্রচলন বাঙ্গালীর দীর্ঘ দিনের আর গরম গরম ভাপা পিঠার সাথে খেজুরের রস হলে আর কথাই নেই। আবার ভাপা পিঠার ভেতরেও খেজুরের গুড ব্যাবহারে ভাপা পিঠা হয়ে উঠে আরো মজাদার। শত বছর ধরে শীতের আগমনি থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত ভাপা পিঠা খায়নি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুস্কর। পরিবেশগত কারনে খেজুরি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খেজুরের গাছ অনেক বেশি , পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আরো। এখানকারই এই সম্প্রদায় কে শিউলি সম্প্রদায় বলা হয়। খেজুরির নামকরণ এই গাছের আধিক্য থেকে। লাইভ সিদেলে খেজুরি তে খেজুর গুড়ের প্রচলন খেজুর রস পাতালি ঝোলাগুড় প্রকৃতি যেন ম ম করে।

বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খেজুর গাছ দেখা গেলেও এখন সেটা বিলুপ্ত হতে চলেছে। তাই  খেজুরের রস খাওয়ার আর হয়ে উঠেনা । তবে সেই হতাশা নয়  খুব কাছেই মনোরম পরিবেশ একেবারে গাছ থেকেই নিয়ে আসা খেজুরের রস পাওয়া ও যায়। সাথে শতভাগ বিশুদ্ধ খেজুরের গুড। প্রায় ৫০ খেজুর গাছ থেকে প্রতিদিন সকালেই পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ৭০ লিটার টাটকা খেজুরের রস আর এই রস থেকে প্রতিদিন গড় নেওয়া র জন্য অসংখ্য মানুষের দীর্ঘ লাইন ।

এছাড়া সেই বিশুদ্ধ রস থেকে তৈরি করা হয় দৈনিক ৩৫ থেকে ৩৮ কেজি গুড়। কৃষ্ণনগরের গুড় ব্যবসায়ী শেখ জালাউদ্দিন খা ও দীপক সাউ জানালেন এই সব তথ্য। জীবন-জীবিকার প্রশ্নে শীতের মৌসুম পরিবারের মুখে হাসি ফুটে ওঠে সারা বছরের একটি ইনকাম তারা যোগাড় করে নেয় এই ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। তাদের কথায়-
"টাকা মুখ্য বিষয় না, বাজারে সারা বছর যে গুড পাওয়া যায় তা কোন ভাবেই প্রকৃত গুড নয় কারন প্রকৃত গুডের মান এবং ঘ্রান এক নয় তাই আমরা মানুষকে কোন কিছু মিশ্রন ছাড়া প্রকৃত আসল গুড দিতে চায়। ছালেহ আহামদ এর বড় ছেলে সাইমন ছালেহ জানান, আমাদের গুড ১ বছরের বেশিও যদি ফ্রিজে রাখা হয় কোন গুনগত মান পরিবর্তন হবে না। আর খেজুরের রস আমরা সবার চোখের সামনেই গাছ থেকে নামিয়ে সরবরাহ করছি যদিও একেবারে গাছ থেকে নামিয়ে খাওয়াতে কিছুটা স্বাস্থ্যঝুকি আছে তাই একটু সিদ্ধকরে খাওয়া ভাল।আমরা সব ধরনের প্রসেসিং করে শহরের থানা রোড়ের নাহিয়ান ফুডস থেকে সরাসরি গ্রাহকদের সরবরাহ করে থাকি। আমাদের রস এবং গুড ইতি মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ঢাকা চট্টগ্রামসহ সব যায়গায় যাচ্ছে। তিনি জানান, ছোট বেলায় অনেকে গাছে উঠে খেজুরের রস খেয়েছে বা খেজুর গাছ দেখেছে এখন নতুন প্রজন্ম খেজুর গাছ কি সেটাও চিনবে না তাই আমরা বানিজ্য নয় পরিবেশ এবং ঐতিহ্যরক্ষা করতেই খেজুরের বাগান করেছি।"


কাউকে কখনো বিয়ের জন্য পাত্র বা পাত্রী পছন্দ করতে গিয়ে শোনা যায়নি, ‘‘মেয়েটা বা ছেলেটা ভীষণ ঝাল বা টক'', তা তার জিহবায় এ দুটো স্বাদ যতই প্রিয় হোক৷

মিষ্টিপ্রিয় বাঙালির সাহিত্যেও মিষ্টি এসেছে ভরপুর বর্ষার মতো৷ কতভাবে এসেছে তা জানতে ইন্টারনেটে একটু ‘বাংলা সাহিত্যে মিষ্টি' লিখে অনুসন্ধান করে দেখুন৷ যা আসবে তা দেখে অবাকই হতে হয়৷ কারণ, এ রকম অনুভূতি বা এ রকম ঘটনাও কমই আছে, যা লিখতে গিয়ে বাঙালি ‘মিষ্টি' শব্দটি প্রয়োগ করেনি৷ আর তাই সাহিত্যে মিষ্টি নিয়ে কে কী লিখেছে তা ইন্টারনেটে খুঁজতে গেলে নানান আগাড়াবাগাড়া জায়গায় ‘মিষ্টি'র ব্যবহার পাওয়া যাবে৷ প্রকৃত মিষ্টির দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে৷ 
 কেউ একজন একটা বাচ্চা মেয়ের দুর্ঘটনার কথা লিখছে৷ এই অতিশয় করুণ ঘটনাটির মাঝে সে মেয়েটিকে বর্ণনা করতে ‘মিষ্টি মেয়ে' শব্দ দুটো ব্যবহার করে দিয়েছে হয়তো৷

তবে বাংলা সাহিত্যে যে মিষ্টির সবচেয়ে বেশি গুণগান গাওয়া হয়, তার নাম রসগোল্লা, এছাড়া অন্যান্য মিষ্টির মধ্যে নলেন গুড়ের উল্লেখ্য আছে। ৷ রসগোল্লার বাঙলায় রসগোল্লা আসার সময়, আর আধুনিক বাংলা সাহিত্যের জন্মকাল প্রায় কাছাকাছি৷ অথচ ঔপনেবেশিক আমলে আসা রসগোল্লা, এখানে পা দেয়ার সাথে সাথে রীতিমতো মিষ্টির জগতের সুপার স্টার হয়ে বসে আছে৷

রসগোল্লার আবার রয়েছে নানা ধরন৷ এর মধ্যে স্পঞ্জ রসগোল্লার আবিষ্কারক হিসেবে পরিচিত মিষ্টির দোকানি নবীনচন্দ্র দাসের নাম কমলকুমার মজুমদারের মতো ভাবগম্ভীর সাহিত্যিকের লেখায় পেয়েছেন ঠাঁই৷ স্পঞ্জ রসগোল্লার স্বাদে বিভোর হয়ে তিনি ছড়ায় লিখেছেন, ‘বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস/রসগোল্লার কলম্বাস'৷

১৯৬৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে একবার দুধের সংকট দেখা দিয়েছিল৷ রাজ্য সরকার হিসেব করে দেখল মিষ্টির বাড়বাড়ন্ত ভোগই এর মূল কারণ৷ সরকারি নির্দেশে সন্দেশ-রসগোল্লাসহ সব ছানার মিষ্টির ব্যবসা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেল৷ দুধের তৈরি নয় এমন মিষ্টি যেমন জিলাপি, লাড্ডু ইত্যাদির ব্যবসা অবশ্য চালু ছিল৷ রসগোল্লার আকালে বাঙালির মধ্যে বিদ্রোহ দানা বেঁধেছিলো৷ কবি উপেন্দ্রনাথ মল্লিক রসগোল্লাহীন সেই সময়ের পরিস্থিতি তুলে ধরে একটি ব্যঙ্গ কবিতা লিখেছিলেন:

সন্দেশ কাঁদিয়া কহে রসগোল্লা ভাই—

দেশ ছেড়ে চল মোরা ভিন্ন দেশে যাই

এই রাজ্যে শুনি নাকি দুধের দরকার

আমাদের দূর তাই করিল সরকার

থাক হেথা ক্রুরমতি প্যাঁচালো জিলিপি

দাঁত ভাঙা দরবেশ হয় বিধিলিপি...

রসগোল্লা নিয়ে কমলেশ সেনের কবিতাও আছে৷ তিনি লিখেছেন:

এমন অনেক ব্যক্তি আছেন

যারা রসগোল্লার মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তির

একটা নিগূঢ় রহস্য আবিষ্কার করেছেন

রসগোল্লা ভক্ষণ যে একটি অসাধারণ প্রতিযোগিতা হতে পারে

তা তাঁরা তাঁদের হৃদয়ের আকুতি হৃদয়ের অনুভব থেকে

মানুষের উচ্ছ্বাসে প্রয়োগ করেছেন

 

রসগোল্লার মধ্যে আছে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের

এক সৃজনশীল আবেদন

 

রসগোল্লার সংস্কৃতি এ দুশ' বছরে

শ্রমজীবী মানুষের কাছে এ-ই প্রথম

(‘সাংস্কৃতিক রূপান্তর' কবিতার অংশ)

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে কিন্তু রসগোল্লার নাম পাওয়া যাবে না৷ দুধ থেকে বিযুক্ত করে ছানা তৈরির প্রক্রিয়া তখন হিন্দু ধর্মীয় চেতনায় নিষিদ্ধের পর্যায়েই ছিল৷ অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে মধ্যযুগীয় মহাগ্রন্থ ‘চৈতন্য চরিতামৃত'র লেখক কৃষ্ণদাস কবিরাজ লিখেছেন দধি, দুগ্ধ সর, নবনীর কথা৷ ‘দুগ্ধ লকলকি', সর ভাজা, সর পুলি, মনোহরা নাড়ু, দুগ্ধমারি এমনকি সন্দেশেরও কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি৷ এসব সন্দেশ বলতে মূলত শর্করা জাতীয় সন্দেশ, অথবা চিনির সন্দেশ বা যতদূর বোঝা যায় চিনির দলা পাকা গুল্টিকেই বুঝিয়েছেন কবি৷ 

হাজার বছর আগের বাংলা সাহিত্যের প্রাথমিক দলিল হিসেবে পরিচিত চর্যাপদে উল্লেখ রয়েছে, প্রাকৃত বাঙালির মনমতো খাওয়া হলো কলাপাতায় ‘ওগগরা ভতা গাইক ভিত্তা' মানে গাওয়া ঘি, দুধ আর সরু চালের পরমান্ন৷ যদিও এটি মিষ্টি নয়, মিষ্টান্নের তালিকায় পড়ে৷

মিষ্টি নিয়ে গদ্য সাহিত্যের আলোচনায় এলে সৈয়দ মুজতবা আলীর কথা না বললেই নয়৷ ইংরেজদের সাথে বাঙালি বা ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাস তুলনা করে মুজতবা আলী তাঁর ভ্রমণকাহিনী ‘জলে ডাঙায়'-তে প্রথম বাঙালির রসনা নিয়ে লিখেছিলেন৷ বলেছিলেন-‘‘আমরা তেতো, নোনা, ঝাল, টক, মিষ্টি—এই পাঁচ রস দিয়ে ভোজন সমাপন করি৷ ইংরেজ খায় মিষ্টি আর নোনা, ঝাল সামান্য, টক তার চেয়েও কম এবং তেতো জিনিস যে খাওয়া যায়, ইংরেজের সেটা জানা নেই৷ তাই ইংরেজি রান্না আমাদের কাছে ভোঁতা ও বিস্বাদ বলে মনে হয়৷ অবশ্য ইংরেজ ভালো কেক-পেস্ট্রি-পুডিং বানাতে জানে—তা-ও সে শিখেছে ইতালিয়ানদের কাছ থেকে এবং একথাও বলব, আমাদের সন্দেশ-রসগোল্লার তুলনায় এসব জিনিস এমন কী, যে নাম শুনে মূর্ছা যাব৷'' 

পরে তিনি রসগোল্লা গল্পে লিখেছেন ঝাণ্ডুদার কথা৷ যিনি রসগোল্লা নিয়ে বিদেশ যাচ্ছিলেন৷ কাস্টমস হাউজে সেই মিষ্টির প্যাকেট বাধ্য হয়ে খোলার পর সবাইকে সেটা বন্টন করে দেন ঝাণ্ডুদা৷ রসগোল্লার রসে, এমনকি এয়ারপোর্টের বড়কর্তাও সেদিন ডুবে গিয়েছিলেন৷ সাহিত্যের আনাচে-কানাচে এমন উদাহরণ ভুরি ভুরি ছড়িয়ে রয়েছে৷
 বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী'তে মোহনভোগ নিয়ে একটি হৃদয়গ্রাহী বর্ণনা আছে৷ ঘটনাটি এমন – অপুর পূর্বপুরুষের সমৃদ্ধির দিন গত হয়েছে বহুদিন৷ অপু বাবার সঙ্গে সম্পন্ন গৃহে খাবারের যে আপ্যায়ন পেয়েছিল, তাতে তার তাদের ঘরের দৈন্যতা সম্পর্কে একটা ধারণা জন্মেছিল৷ অপুকে মোহনভোগ খেতে দেয়া হয়েছিল৷ সেই মোহনভোগে ঘিয়ের পরিমাণ এত বেশি ছিল যে, অপুর আঙুলে মাখামাখি হয়ে যায়৷ তখন তার মনে পড়ে, মায়ের কাছে মোহনভোগ খেতে চাইলে ‘‘শুধু সুজির জলে সিদ্ধ করিয়া একটু গুড় মিশাইয়া পুলটিসের মতো এক দ্রব্য তৈয়ার করিয়া ছেলেকে আদর করিয়া খাইতে দেয়৷'' সেদিনের মোহনভোগ আর মায়ের তৈরি মোহনভোগের সঙ্গে অপু তফাৎ করতে পেরে সে দরিদ্র মায়ের প্রতি করুণা ও সহানুভূতিতে ভরে যায়৷ ‘‘হয়তো তাহার মা-ও জানে না যে, এ রকমের মোহনভোগ হয়! —সে যেন আবছায়া ভাবে বুঝিল, তাহার মা গরিব, তাহারা গরিব, তাই তাহাদের বাড়ি ভালো খাওয়া-দাওয়া হয় না৷'' অর্থাৎ সুস্বাদু খাবার অপুর মনে সুখের বদলে দুঃখ এনে দিয়েছিল৷
বাঙালির সুখ ও শোকে, মুখে মুখে মিষ্টি রয়েছে৷ তাই মিষ্টির কথা সাহিত্য এড়াবে কীভাবে?

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆




No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। পশুপতি ভট্টাচার্য । খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। Dt -15.11.2024. Vol -1053. Friday. The blogger post in literary e magazine

পশুপতি ভট্টাচার্য  ১৫ নভেম্বর ১৮৯১ -  ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮   একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। জন্ম  বিহার রাজ্যে পিতার কর্মস্থল আরায়। তাদ...