∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
দেবেশ রায়
=================================
Doinik Sabder Methopath
Vol -224. Dt -17.12.2020
১ লা পৌষ,১৪২৭. বৃহস্পতিবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
সাহিত্যিক মহলে ‘লেখকদের লেখক’ বলা হতো দেবেশবাবুকে। তাঁর নিজস্ব লেখার স্টাইল এক অন্য ঘরানা তৈরি করে বাংলা সাহিত্যে। যা ভেঙে দেয় প্রচলিত ধারা।
দেবেশ রায়ের জন্ম ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলায়, অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম ক্ষিতীশ রায় এবং মাতার নাম অপর্ণা রায়। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁর পরিবার জলপাইগুড়ি চলে আসেন। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৮৯ এক দশক তিনি পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তাঁর বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় প্রত্যক্ষ বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।রাজনীতির সূত্রে শিখেছিলেন রাজবংশী ভাষা। কলকাতা শহরেও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সে একজন গবেষণা সহকর্মী ছিলেন। তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৫৩ সালে জলার্ক পত্রিকায়। তার প্রথম উপন্যাস যযাতি। তাঁর অর্ধ শতকের বেশি সাহিত্য জীবনে উল্লেখযোগ্য বইগুলো হল: যযাতি, আপাতত শান্তিকল্যাণ হয়ে আছে, মানুষ খুন করে কেন (১৯৭৬), মফস্বলী বৃত্তান্ত (১৯৮০), সময় অসময়ের বৃত্তান্ত (১৯৯৩), তিস্তা পারের বৃত্তান্ত (১৯৮৮), তিস্তা পূরাণ, প্রতিবেদন, ইতিহাসের লোকজন, বরিশালের যোগেন মন্ডল, ইউসুফ জুলেখা , সাংবিধানিক এজলাস (২০১৯), লগন গান্ধার (১৯৯৫),দেবেশ রায়ের কর্ম এবং জীবনের অনুপ্রেরণার উৎস ছিল উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের তিস্তা নদী কেন্দ্রিক রাজবংশী সম্প্রদায়।তিনি ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তাঁর তিস্তা পারের বৃত্তান্ত উপন্যাসের জন্যে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি ভাষা সাহিত্য পরিষদ দ্বারা এবং ভুয়ালকা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন। তার অনুুবাদ রোমিয়ো জুুুলিয়েট , ট্র্রয়ের মেয়েরা ।প্রধান প্রবন্ধের বই - আঠার শতকের বাংলা গদ্য ও উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য, বিপরীতের বাস্তব ও রবীন্দ্রনাথের গল্প , উপন্যাস নিয়ে , উপন্যাসের নতুন ধরনের খোঁজে , ব্যক্তিপুরূষেরা , রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর আদিগদ্য , উপন্যাসের বিবিধ সংকট । মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ 'সেতুবন্ধন ' পত্রিকা সম্পাদনার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
দেবেশ রায় ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের ৬ মে কাকলি দেবীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
মৃত্যু
১৪ মে ২০২০ সালে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে দেবেশ রায়ের জীবনাবসান হয়। ইতিপূর্বেই ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে কাকলি রায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের একমাত্র সন্তান দেবর্ষি রায় বেঙ্গালুরু শহরে কর্মরত।
১৯৯০ সালে এই উপন্যাসের সুবাদেই তিনি সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান।
গ্রন্থ তালিকা
- তিস্তাপারের বৃত্তান্ত (১৯৮৮)
- মফস্বলি বৃত্তান্ত (১৯৮০)
- সময় অসময়ের বৃত্তান্ত (১৯৯৩)
- লগন গান্ধার (১৯৯৫)
- আত্মীয় বৃত্তান্ত
- শিল্পায়নের প্রতিবেদন
- দাঙ্গার প্রতিবেদন
- খরার প্রতিবেদন
- যযাতি
- তিস্তাপুরাণ
- আঙিনা
- ইতিহাসের লোকজন
- উচ্ছিন্ন উচ্চারণ
- একটি ইচ্ছা মৃত্যুর প্রতিবেদন
- চেতাকে নিয়ে চীবর
- জন্ম
- তারাশংকর:নিরন্তর দেশ
- নবেলজোড়
- বেঁছে বততে থাকা
- শিল্পায়নের প্রতিবেদন
- মার-বেতালের পুরান
- যুদ্ধের ভিতরে যুদ্ধ
- সহমরণ
- বরিশালের যোগেন মণ্ডল (২০১০) / সাংবিধানিক এজলাস (২০১৯)
- দেবেশ রায়ের গল্প (৬ খণ্ড) (১৯৬৯),
- দুই দশক (ছোটগল্প সংকলন) (১৯৮২),
- দেবেশ রায়ের ছোটগল্প (১৯৮৮),
- স্মৃতিহীন বিস্মৃতিহীন (ছোটগল্প সংকলন) (১৯৯১),
- রবীন্দ্রনাথ ও তার আদি গদ্য (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- সময় সমকাল (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- উপন্যাস নিয়ে (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- উপন্যাসের নতুন ধরনের খোঁজে (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- শিল্পের প্রত্যহে (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- উপনিবেশের সমাজ ও বাংলা সাংবাদিক গদ্য (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়: নিরন্তর মানুষ (প্রবন্ধগ্রন্থ)
- ∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment