Wednesday, 30 December 2020

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ।

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
             অনুনাটক সংখ্যা (০৬)

                 "ফসলের গান"
=================================
      Doinik Sabder Methopath
       Vol -237. Dt -31.12.2020
        ১৫ পৌষ, ১৪২৭. বৃহস্পতিবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷


=================================

১.
ফসলের গান
নন্দিনী সরকার 


পরমজিত - ধরম জী, কি ভাবলেন যাবেন ঐ আন্দোলনে? কৃষি নিয়ে যা সব আইন বেরোচ্ছে, তাতে তো আমরা ধনে প্রাণে মারা পরবো।

ধরম জী- আরে যাবো না মানে? ভারতবর্ষের সবুজ বিপ্লব যেমন আমরা করেছিলাম, তেমনি কৃষকদের ওপর অবিচারটাকেও আমাদেরই চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো দরকার।

পরমজিত- আরে আমার কাকা জী, ফুফাজী সব তো ওখানে যাবার জন্য অস্থির হয়ে পরেছে। ওদের বয়সটাও তো আমাকেই দেখ্তে হবে ধরম জী।

ধরম জি-- ভাই, আমাদের জান প্রাণ হলো ফসল, মাটি হলো মা। তা সেই জানে যদি টান পরে, তাহলে বয়সের কথা আর খেয়ালে থাকে না। আচ্ছা বলো তো আমরা এই জন্যই কি স্বাধীনতা এনেছি দেশে??

পরমজিৎ - চাচা ও সেই কথাই বলছিল। মাঠ জুড়ে ফসল হলে যেদিন ফসল তোলা হয় সেই দিন রাতে সবাই ভাংড়া নাচে আর গান গায়।

ধরম জি-- জানো ভাই, দিল্লিতে যেখানে সবাই ধর্নাতে বসেছে , সেখানে রাত ভোর ঐ গানই করা হচ্ছে।
"জান কবুল আর মান কবুল
আর দেবো না আর দেবো না
ধান, মোদের প্রাণ গো"।

--------------------/---------------------

২.
ফসলের গান 
গোবিন্দ মোদক 


(কুশীলব : শিবু ও রহিম। দু'জন আঞ্চলিক কৃষক-ভাই)

রহিম- ও কর্তামশাই ! আপনের ধানের খবর কি ?

শিবু- ভালো রহিম ভাই ! বলতে কি, এবার ফলন খুবই ভালো। গোলাভরা ধান -- তাই নবান্ন-পরবটাও হয়েছে খুব জমিয়ে ! 

রহিম- হ্যাঁ, কর্তামশাই, শুনছি ! আমাগো বদর বলছিল বটে !

শিবু- তা, তোমার চাষাবাদের খবর কি রহিম ভাই ?

রহিম- আপনাগো আশীর্বাদে খারাপ না কর্তামশাই! চার বিঘা ছোলা লাগাইছিলাম, আর বিঘা-পাঁচেক কলাই। বাদবাকি সরিষা। এহনও পর্যন্ত যা দেখতাছি তাতে বুঝছি ফলন ভালোই হইবো। আপনি তো শুনছি গম, মুসুর আর তিল রবিশষ্য লাগাইছেন।

শিবু- হ্যাঁগো মিঞা, ওই যা মুসুরি হয় তাতে আমার সম্বৎসর চলে যায় ; আর একে ওকে খেতে-ও দিই খানিকটা।

রহিম- সে আপনের দিল আছে গো কর্তা ! হক্কলে তাই কয় ! তা আপনের ছোট ভাইডা শুনছি সবজি চাষ কইরা খুব লাভবান হইছে !

শিবু- ঠিকই শুনেছো রহিম-ভাই। ওর তো এক লপ্তে অনেকখানি জমি -- আর অনেকগুলো শ্যালো। তাই যেমন হয়েছে ওর বেগুন, তেমন কপি, পালং, আর মুলো ! কড়াইশুঁটির দাম এবার খুব ভালো, ভাইটা অনেকগুলো টাকার মুখ দেখলো এবার।
 
রহিম- ঠিকই কইছেন কর্তা। সবজি-চাষীরা এদ্দিন পর দুইডা টাকার মুখ দ্যাখছে। আচ্ছা, আসি গো কর্তা, ভাল থেইকেন ! আদাব !

শিবু- হ্যাঁ, তুমিও ভালো থেকো রহিম ভাই, নমস্কার।

----------------------/-----------------

৩.
নাটক - সম্বল
রচয়িতা - বিমল মণ্ডল 


 চরিত্র চিত্রণ
---------------- ------
মণ্টু - দরিদ্র কৃষক 
মনি- কৃষকের বউ
হিরন্ময় দাস- গ্রাম সেবক(নেতা)
পবিত্র- আর এক দরিদ্র কৃষক
সুধাংশু - সুদখোর মহাজন

(মাঠে মাঠে ধান তোলা হচ্ছে। সেখানে দরিদ্র কৃষকদের মুখে সামান্য হাসি দেখে সুদখোর মহাজন এসে তাঁর পাওনা চাইছে এবং সমাজসেবী নেতাও এসেছে কৃষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে ।) 
মন্টু- আরে এবছর যে ধান হয়েছে। মোটামুটি এইবছর চলে যাবে মনে হয়।কি বলো বউ?

মনি- সে তো হবে। কিন্তু মহাজন বাবুকি তোমায় ছাড়বে? (মাথা নিচু করে আবার ধান কাটতে থাকে।) 
মন্টু - (ধান কাটতে কাটতে বলে) এবছর এতোদিন আমরা লকডাউনে ঘরে বসে আছি। তার উপর কাজ নেই। সেই কথাই বলবো । যে এবছর আমাদের ছাড় দিন। 

মনি - সে কথা কি ওরা শুনবে। দেখো হয়তো আজই ওরা এখানেই চলে আসবে। আসলে ওদের দেখলে ভয় হয় আমার। এই মনে হয় যেন কিছু একটা বিপদ হবে। 

মন্টু - সে কি আমার হয়না বউ? হয় কি করি বলো দুটো মেয়ে মাথার উপর । তার উপর কাজ নেই। কি যে করবো ভাবতে পারি না। 

মনি- এতো ভেবে শরীর খারাপ করো না। যা হবে ঠিক হবে। 
(সুধাংশু বাবু, হিরন্ময় বাবু পবিত্র কথা বলতে বলতে প্রবেশ করেছে) 

সুধাংশু বাবু- দেখো পবিত্র এবছর এসব বলো না। সবটাই আমাদের ভাগ দিতে হবে। 
পবিত্র - না দাদা। এবছর পারবো না। আমরা যে মরে যাবো দাদা। একে এই লকডাউনের বাজারে কাজ নেই। ঘরে ছেলে মেয়ে , পরিবার না খেতে পেয়ে মরে যাবে যে দাদা...
হিরন্ময় - কেন? কেন? মরে যাবে কেন? রেশনে বিনেপয়সাতে এতো সাহায্য করছে সরকার । তাতে মরে যাবে কেন?
সুধাংশু - হ্যাঁ ঠিক বলেছেন হিরন্ময় বাবু। আমি অতসব বুঝি না। আমি আমার সব হিসেব নিয়ে চলে যাবো । 

হিরন্ময় বাবু -(মন্টুকে দেখে) এই যে মন্টু বাবু। তোমার সব ধান তোলা হলো? সুধাংশু বাবু এসেছে সব হিসাব করে নিয়ে যাবে বলে। 
মন্টু- না...মানে... হিসেব মানে...
সুধাংশু -এটাও বোঝো না? আমার জমিতে চাষ করো আর এটা বোঝো না? 

মণ্টু - (কেঁদে কেঁদে) - এবছর তো অতিমারি গেল বাবু। এবছর একটু ছাড় দিন। 
পবিত্র- মন্টু দা ঠিক কথা বলছেন। আমরা গরীব তাই এবছরের কথা ভেবে ছেড়ে দিন আমাদের । 

হিরন্ময় বাবু - (শাসিয়ে) - চুপকর।মুখে মুখে কথা। কেন ছাড়বে শুনি? সুধাংশু বাবু আপনি একদম ছাড়বেন না। ওদের প্রচুর মুখ হয়েছে দেখছি।
সুধাংশু বাবু - আচ্ছা তোমরা আজ আমাকে এমন বলছো কেন? সরকারি অনুদান যেমন -আমফানে, রেশনে, ইত্যাদি পাচ্ছো তো। তাহলে আমার হিসাব টা দিয়ে দাও। 

(আমফান আর রেশনের কথা শুনে মন্টু চোখ বড়সড় করে বলে)
মণ্টু - আমফান? রেশন?...এসব কি আমরা পাই বাবু? দেখুন না আপনি আমফান ঝড়ে ঘরটা উড়ে গেছে। একটি পলিথিন পর্যন্ত দেয়নি বাবু। আর ঘর সারানো টাকা?
পবিত্র - হ্যাঁ দাদা। আমরা কিছুই পাইনি । যাদের ঘর ভাঙ্গেনি তারা ঐ টাকার অংশ পেয়েছে । আর রেশন? 
তাতেও আমরা বঞ্চিত । 

হিরন্ময় বাবু -(রেগেমেগে চিৎকার করে) তোরা কিন্তু মিথ্যা বলছিস। আমি আজই গিয়ে দেখবো তোরা এসব পেয়েছিস কিনা। 

সুধাংশু বাবু - আমি সব জানতে চাই না। রাজনীতিতে আমার আবার এলার্জি আছে কিনা... কি বলেন হিরন্ময় বাবু?( দুজন চোখে চোখে মৃদু হাসি)
হিরন্ময় বাবু - ঠিক বলেছেন আপনি। এদের এই মায়া কান্নায় কান দেবেন না। হিসেবে যা পান নিয়ে নিন। আর দেরি করা যাবে না। অনেক কাজ আছে। 

মন্টু,পবিত্র (সুধাংশু বাবুর পায়ের কাছে বসে কাঁদতে থাকে) - দেখুন। এবছর মাপ করে দিন। এই টুকু তো সম্বল আমাদের । সব দিয়ে দিলে কি থাকবে বলুন? না খেয়ে আমরা মরে যাবো যে। 

হিরন্ময় বাবু -অতকথায় কাজ নেই আর। সুধাংশু বাবু আপনার লোকদের ডাকুন। বস্তাতে সব ধান ঢুকিয়ে নিক। 
সুধাংশু বাবু ( তাঁর লোকদের ধান তুলে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন) কে আছিস! এদিকে এসে এই ধান গুলো তুলে নিয়ে যা। 
(মন্টু, পবিত্র, মনি কাঁদতে থাকে) 

মনি- আমার শেষ সম্বলটুকু নিয়ে যান...
(কান্নার শব্দ ভেসে আসে। আলো নিভে যায় ।)

----------------------/-------------------

৪.
ইচ্ছে পূরণ 
কোয়েলী বসু।


তৃপ্তি- শুভ একটু তাড়াতাড়ি এস।নীচে প্রবীর বাবুর সঙ্গে বেশ কয়েক জন এসেছেন বাড়ি বিক্রির বিষয়ে কথা বলতে।
শুভ- তৃপ্তি এত ডাকাডাকি করছ কেন? আমি বাড়ি বিক্রি করব না।
তৃপ্তি- সে কি কেন? আমরা বিদেশে চলে যাওয়ার পরেই বাড়ির কী হবে ভেবে দেখেছ?হঠাত এই সিদ্ধান্ত নিলে? কিছু হয়েছে?
শুভ - এই চিঠিটা পড়ে দেখ।
তৃপ্তি- " প্রিয় মিতা কেমন আছ তোমরা? আমি ভালো থাকার চেষ্টা করছি।দেশের মানুষ ভালো থাকলে আমরাও যে ভালো থাকি।আমার গাঁয়ের সোনার ধানের গন্ধ পাচ্ছি, এবার ফসল তোলার উত্সবে কী গান বাঁধলে? খুব শুনতে ইচ্ছে করছে। ঐ সময়ে বাড়ি যাব,এবার ধার শোধ করে বাড়িটা বানাব আরো সুন্দর করে।খোকা,বাবা, মাকে নিয়ে খুব ভাল থেকো।চিন্তা করো না,আমি আসছি তাড়াতাড়ি ।"
শুভ- আমার সিপাহী বাবা এসেছিলেন ফসল ওঠার উত্সবের দিন,দেশের পতাকায় ঢাকা কফিনের বুকের ভিতর আগলে।ঐ গাঁয়ের মাটিতে,সোনার ধানের গন্ধে মিশে গেলেন শহীদ নবীন চন্দ্র মজুমদার।মা গেয়ে উঠলেন বাবার পছন্দের ফসলের গান।
তৃপ্তি - হ্যাঁ শুভ আমি শুনেছি ওটাই ছিল তোমার মায়ের লেখা শেষ গান।
শুভ- হ্যাঁ গো আমিও তাই জানতাম ।কিন্তু এই দেখ।
তৃপ্তি- এতো বিরাট মোটা খাতা আর একটা চিঠি।
শুভ - হ্যাঁ আমার মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণের চিঠি।
আজ যাঁরা এসেছেন প্রবীর বাবুর সাথে,তাদের সাথে কথা হয়েছে এই বাড়িটি আগামী প্রজন্মের জন্য একটি স্কুল হবে এবং প্রতি বছর এখানে গ্রামের ফসল উত্সব পালিত হবে।মায়ের এই গানের খাতা টাও তখন তাদের কাজে লাগবে।

----------------------/---------------------
৫.
       একেই বলে বিপন্নতা 
        তপনকুমার গোস্বামী 


( রোদ ঝলমলে সকাল। মাটির দাওয়ায় দেওয়ালে ঠেস দিয়ে নড়বড়ে শরীরে বসে আছে পবন)
(আবহ সঙ্গীতে বাঁশির সুর)

পবনঃ লকাই, বলি ও লকাই, 
           বাপ আমার। আমারে এট্টু 
           জমির পানে নে চলনা 
           বাপ। 
লকাইঃ হুঁ! নিজে নড়তে পারেনে, 
             তার আবার জমির পানে 
              যাবার সখ কত! বলি 
               জমির পানে গিয়ে কী
              হবেটা শুনি! 
পবনঃ অ বাপ, তুই খামোকা রাগ 
          রাগ করচিস কেনে!তোদের  
          মুখে শুনলু ইবারে জমিতে
          খুব ভালো ধান হইচে। তাই
          একবার চোকের দেকা 
          দেকতি সাধ হয়। 
লকাইঃ ( যথেষ্ট বিরক্তি নিয়ে)বেশ
             চল। তবে এই একদিনই। 
[লকাই পবনকে জমির ধারে আলের ওপর বসিয়ে দেয়। কোমর ভাঙ্গা নড়বড়ে পবন নিজের মনে বকতে থাকে ]
পবনঃ আহা-হা!পরানটো ভরি 
           গেলরে বাপ। মা নক্কী 
           ক্ষেত এক্কেরে আলো
            করে বইসে আচে। 
            শুনচিস লকাই সোনার
            ফসলে কেমুন ঝমঝম 
             করি গান বাজতেচে! 
[পবন তন্ময় হয়ে বসে থাকে। দূর থেকে বাঁশির সুরে পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে বাজে ]
পবনঃ হ্যাঁরে বাপ, ফসল তোলার 
           সুর বাজতেচে কুথায়!
লকাইঃ ফসল কাটবার লেগে 
             কামিনরা আসতিছে। 
              উয়ারাই গাইচে। 
[মহাজন বৈকুন্ঠ সঙ্গে লোক নিয়ে প্রবেশ করে ]
বৈকুন্ঠঃ আরে! এযে এক্কেরে 
             চাঁদের হাট! বাপ-বেটা 
              লগেলগে। তা পবন, 
               আছ কেমুন?
পবনঃ আজ্ঞে কত্তা এখুনও মরি
            লাই। 
বৈকুন্ঠঃ(খিকখিক করে হাসি) সে
             তো দেখতেই পাচ্ছি। তা
              ভাঙ্গা কোমরে লিয়ে
               জমিতে কেনে? 
লকাইঃ আজ্ঞে কত্তা, আইজ ধান
             কাটা হবেক। তা বাপ 
              কইল কী ভরা খেতিটো
               একবার নিজের চোকে 
             দেখবে। তাই.... 
বৈকুন্ঠঃ কী কইলি লকাই! ধান 
              কাটা! ই ধান কী তুদের
              যে কাইটবি! 
লকাইঃ এজ্ঞে কত্তা, আপনের 
             কুথাটো বুঝতে লারলাম।
বৈকুন্ঠঃ ( মেজাজ দেখিয়ে) তা 
              বুঝবি কেনে!বলি চুক্তি -
              চাষের দাদনের শর্তটা 
               কী ভুলে গেলি!ই ফসলে
                তোদের কুনো হক 
                লাইরে। কুনো হক লাই
                ( হাসি)
              [বাঁশিতে বিষাদের সুর]

  ----------------------/--------------------/-------------------
৬.
পৌষের কাছাকাছি
--------------------------------
দেবাশিস চক্রবর্ত্তী
----------------------------------------
বসির - আরে ওটা কে যায় ! শিবু না ? এ-এই শিবু ,ইদিকে শোন ।
শিবু - কি গো বসির চাচা , চললে কোথায় ?
বসির - খামারে যাবো বাপ । ফসল উঠছে যে । ঝাড়াই বাছাই করে খামার থেকে গোলায় তুলতে হবে রে বাপ ।
তা তুই কোথায় যাবি এখন ?
শিবু - ইস্টিশনে যাবো গো চাচা , আজ মোর বাপ ঘরকে ফিরছে যে । 
বসির - এ্যাঁ বলিস কি রে বাপ , এতদিন পরে তোর বাপ - হরে ফিরছে ঘরে !
শিবু - হ্যা গো চাচা , বাপের কারখানায় তো এখন লক্ আউট হয়ে গেছে । কবে খুলবে ঠিক নেই । তাই -
বসির - হ্যা - হ্যা ,চাষির ছেলে, চাষ না করে চললো শহরে,
বাবুর বাড়ির গুঁতো খেয়ে
ফিরলো সে ঘরে ।
শিবু - আহঃ চাচা, তোমার এই কথায় কথায় ছড়াকাটার গুনটা বড়ো মজার গো ।
বসির - কথাটা ঠিক কিনা বল ? বাপ চোদ্দ পুরুষ যে জমিতে চাষ করেছে , সেই জমিতে সোনার ফসল ফলিয়ে মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার যে আনন্দ ,সে কি আর মাপা যায় রে বাপ ।
শিবু - ঠিক বলেছো চাচা ।
বসির - শোন বাপ, আজ সন্ধ্যা বেলা তোর বাপকে নিয়ে আমার খামারে যাস । তোর বাপ হরে আমার ছোটো বেলার বন্ধু রে বাপ । কাদা মেখে মাঠেঘাটে কতো খেলে বেড়িয়েছি । ল্যাঠা, চুনো, কৈ ধরিচি ক্ষেতখামার আর ঝিল পগারে ।
শিবু - জানি চাচা, ঠিক আছে আসবোখন ।
বসির - এ বছর ফসল বড়ো ভালো হয়েছে রে বাপ, সন্ধ্যা বেলা তাই সকলে মিলে একটু আমোদ করব । খাওয়া দাওয়া হবে ,নাচ হবে আর হবে ফসলের গান ।
শিবু - ঠিক আছে চাচা ।
বসির - ওরে শিবু , আজ পৌষের কাছাকাছি, তোরা আছিস আমি আছি ।
আয় পরবে জড়িয়ে বুকে
ভরাই মোদের প্রাণ,
সবাই মিলে একসুরে গাই
আজ ফসলের গান ।

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆



No comments: