জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য
চার্লস জন হাফ্যাম ডিকেন্স
বিধায়ক ভট্টাচার্য
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
Doinik Sabder Methopath
Vol -275.dt -07.02.2021
২৩ মাঘ,১৪২৭. রবিবার
=================================
জন্ম : ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮১২ ল্যান্ডপোর্ট, পোর্টসমাউথ, ইংল্যান্ড।
প্রিয়পত্নী ক্যাথারিন ডিকেন্স।সন্তান সন্ততিরা হলেন ১০ জন - চার্লস ডিকেন্স জুনিয়র, মেরি ডিকেন্স, কেট পেরুগিনি, ওয়াল্টার ল্যান্ডর ডিকেন্স, ফ্র্যান্সিস ডিকেন্স, অ্যালফ্রেড ডি'অরসে টেনিসন ডিকেন্স, সিডনি স্মিথ হ্যালডিম্যান্ড ডিকেন্স, হেনরি ফিল্ডিং ডিকেন্স, ডোরা অ্যানি ডিকেন্স ।
অধিকাংশ রচনাই পত্র-পত্রিকায় মাসিক কিস্তিতে প্রকাশিত হত। এই পদ্ধতিতে রচনা প্রকাশকে জনপ্রিয় করে তোলার পিছনেও ডিকেন্সের কিছু অবদান আছে। অন্যান্য লেখকগণ ধারাবাহিক কিস্তি প্রকাশের আগেই উপন্যাস শেষ করতেন, কিন্তু ডিকেন্স কিস্তি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী অধ্যায়গুলি রচনা করে যেতেন। এই পদ্ধতিতে উপন্যাস রচনার ফলে তার উপন্যাসগুলির গল্পে একটি বিশেষ ছন্দ দেখা যেত। অধ্যায়গুলির শেষটুকু হত রহস্যময়, যার জন্য পাঠকেরা পরবর্তী কিস্তিটি পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকত। তার গল্পগ্রন্থ ও উপন্যাসগুলি এতই জনপ্রিয় যে এগুলি কখনই আউট-অফ-প্রিন্ট হয়ে যায়নি।
John Forster , Life of Charles Dickens
সম্পর্কে বলেছিলেন -
"The blacking-warehouse was the last house on the left-hand side of the way, at old Hungerford Stairs. It was a crazy, tumble-down old house, abutting of course on the river, and literally overrun with rats. Its wainscoted rooms, and its rotten floors and staircase, and the old grey rats swarming down in the cellars, and the sound of their squeaking and scuffling coming up the stairs at all times, and the dirt and decay of the place, rise up visibly before me, as if I were there again. The counting-house was on the first floor, looking over the coal-barges and the river. There was a recess in it, in which I was to sit and work. My work was to cover the pots of paste-blacking; first with a piece of oil-paper, and then with a piece of blue paper; to tie them round with a string; and then to clip the paper close and neat, all round, until it looked as smart as a pot of ointment from an apothecary's shop. When a certain number of grosses of pots had attained this pitch of perfection, I was to paste on each a printed label, and then go on again with more pots. Two or three other boys were kept at similar duty down-stairs on similar wages. One of them came up, in a ragged apron and a paper cap, on the first Monday morning, to show me the trick of using the string and tying the knot. His name was Bob Fagin; and I took the liberty of using his name, long afterwards, in Oliver Twist."
লিও টলস্টয়, জর্জ অরওয়েল, জি. কে. চেস্টারটন প্রমুখ লেখকবৃন্দ ডিকেন্সের রচনার বাস্তবতাবোধ, রসবোধ, গদ্যসৌকর্য, চরিত্রচিত্রণের দক্ষতা ও সমাজ-সংস্কার চেতনার উচ্চ প্রশংসা করেছেন। অন্যদিকে হেনরি জেমস, ভার্জিনিয়া উল্ফ প্রমুখ লেখকবৃন্দ ডিকেন্সের রচনার বিরুদ্ধে ভাবপ্রবণতা ও অবাস্তব কল্পনার অভিযোগ এনেছেন।সাহিত্যিক জীবনে তিনি অনেকগুলো বিখ্যাত উপন্যাস রচনা করে গিয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ডেভিড কপারফিলড, আ টেল অব টু সিটিজ, অলিভার টুইস্ট, দি ওল্ড কিউরিয়াসিটি শপ ইত্যাদি।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী :
১) দ্য পিকউইক পেপারস (মাসিক ধারাবাহিক, এপ্রিল ১৮৩৬ থেকে নভেম্বর ১৮৩৭ সাল)
২) অলিভার টুইস্ট (মাসিক ধারাবাহিক, ফেব্রুয়ারি ১৮৩৭ থেকে এপ্রিল ১৮৩৯ সাল)
৩) নিকোলাস নিকোলবি (মাসিক ধারাবাহিক, এপ্রিল ১৮৩৮ থেকে অক্টোবর ১৮৩৯ সাল)
৪) দি ওল্ড কিউরিওসিটি শপ (সাপ্তাহিক ধারাবাহিক, এপ্রিল ১৮৪০ থেকে নভেম্বর ১৮৪১ সাল)
৫) বার্নাবি রাজ (মাসিক ধারাবাহিক, ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর ১৮৪১ সাল)
৬) আ ক্রিসমাস ক্যারোল (১৮৪৩)
৭) মার্টিন চাজলউইট (মাসিক ধারাবাহিক, জানুয়ারি ১৮৪৩ থেকে জুলাই ১৮৪৪ সাল)
৮) ডম্বি অ্যান্ড সন্স (মাসিক ধারাবাহিক, অক্টোবর ১৮৪৬ থেকে এপ্রিল ১৮৪৮ সাল)
৯) ডেভিড কপারফিল্ড (মাসিক ধারাবাহিক, মে ১৮৪৯ থেকে জুলাই ১৮৫০ সাল)
১০) ব্লীক হাউস (মাসিক ধারাবাহিক, মার্চ ১৮৫২ থেকে সেপ্টেম্বর ১৮৫৩ সাল)
১১) হার্ড টাইমস (সাপ্তাহিক ধারাবাহিক, ১ এপ্রিল থেকে ১২ আগস্ট ১৮৫৪ সাল)
১২) লিটল ডরিট (মাসিক ধারাবাহিক, ডিসেম্বর ১৮৫৫ থেকে জুন ১৮৫৭)
১৩)আ টেল অফ টু সিটিজ (সাপ্তাহিক ধারাবাহিক, ৩০ এপ্রিল থেকে ২৬ নভেম্বর ১৮৫৯ সাল)
১৪);গ্রেট এক্সপেক্টেশনস (সাপ্তাহিক ধারাবাহিক, ১ ডিসেম্বর ১৮৬০ সাল থেকে ৩ আগস্ট ১৮৬১ সাল)
১৫) আওয়ার মিউচুয়াল ফ্রেন্ড (মাসিক ধারাবাহিক, মে ১৮৬৪ থেকে নভেম্বর ১৮৬৫)
১৬) স্কেচেস বাই বজ। প্রভৃতি।
মৃত্যু : ৯ জুন ১৮৭০ (বয়স ৫৮)
গ্যাড'স হিল প্লেস, হাইয়াম, কেন্ট,ইংল্যান্ড
সমাধিস্থল আছে পোয়েট'স কর্নার, ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে।
" Charles Dickens is much loved for his great contribution to classic English literature. He was the quintessential Victorian author. His epic stories, vivid characters and exhaustive depiction of contemporary life are unforgettable."
-------------------------------------------------------------------
বিধায়ক ভট্টাচার্য
৭ ফেব্রুয়ারি ১৯০৭ সালে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হরিচরণ ভট্টাচার্য ও মাতার নাম সত্যবতী।
বগলারঞ্জন’ তাঁর প্রকৃত নাম হলেও রবীন্দ্রনাথ প্রদত্ত ‘বিধায়ক’ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘যশোধর মিশ্র’ ও ‘মানস দাস’। স্থানীয় এডওয়ার্ড করোনেশন হাই ইনস্টিটিউশন (বর্তমান রাজা বিজয় সিং বিদ্যামন্দির) থেকে ১৯২৮ সালে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি সাংবাদিক হিসেবে অমৃতবাজার পত্রিকা ও যুগান্তর পত্রিকায় চাকরি করেন। পরে তিনি নিজে রূপায়ণ, মঞ্চরূপা ও ছবিওয়ালা নামে তিনটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কিছুদিন তিনি শান্তিনিকেতনে শিক্ষকতাও করেন। নজরুলগীতির শিল্পী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন।
রচিত নাটক:
মেঘমুক্তি (১৯৩৮),
মাটির ঘর (১৯৩৯),
বিশ বছর আগে (১৯৪০),[৪]
রক্তের ডাক (১৯৪১),
তুমি ও আমি (১৯৪১),[৪]
চিরন্তনী (১৯৪২),[৪]
রাজপথ (১৯৪৯),
খবর বলছি (১৯৫০),[৪]
ক্ষুধা (১৯৫৬),
এন্টনি কবিয়াল (১৯৬৬),
নটী বিনোদিনী (১৯৬৯),
খেলাঘর,
তাহার নামটি রঞ্জনা,
উজান যাত্রা,
কান্না হাসির পালা।
শরৎচন্দ্রের কয়েকটি উপন্যাসেরও তিনি নাট্যরূপ দেন, যেমন: বিপ্রদাস (১৯৪৩), বৈকুণ্ঠের উইল (১৯৪৪) ইত্যাদি। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে চাকা ঘুরছে, বৃদ্ধ বিধাতা, রাত্রি যাদের দিন প্রভৃতি।
বিধায়ক ভট্টাচার্যের প্রথম নাটক মঞ্চস্থ হয় ১৯৩৮ সালে কলকাতার রঙমহল থিয়েটারে; নাটকটির নাম মেঘমুক্তি। প্রথম প্রদর্শনীতেই এটি দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে। পরে মঞ্চস্থ তাঁর অন্যান্য নাটকও বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। তাঁর লেখা কাহিনী নিয়ে ফতেহ লোহানী ঢাকায় তৈরি করেন আকাশ আর মাটি (১৯৫৯) নামে একটি ছায়াছবি।
নাট্যভিনয়ে দর্শকের হৃদয় জয় করেন তিনি। শুধুমাত্র নাটকই নয়, তাঁকে টেনেছিল কবিতা, গল্প, উপন্যাসও। স্বনামে ও ছদ্মনামে লেখনি স্রোত অব্যাহত ছিল। ছদ্মনাম কখনও ‘মানস দাস’, কখনও বা ‘যশোধর মিশ্র’। তাঁর অভিনীত বিখ্যাত নাটক ‘মাটির ঘর’, ‘রক্তের ডাক’, ‘তেরোশো পঞ্চাশ’, ‘রাজপথ’, ‘অতএব’, ‘নটী বিনোদিনী’, ‘অ্যান্টনি কবিয়াল’, ‘অন্ধ দেবতা’, ‘সেতু’ আরও কত কী! ‘সেতু’ নামের নাটকটি কলকাতায় দীর্ঘ দিন চলেছিল। সেই সময়ে ওই নাটক বিপুল হইচই ফেলে দিয়েছিল! ‘বৃদ্ধ বিধাতা’, বা ‘রাত্রি যাদের দিন’, ‘অসমাপ্ত’— আর কিছু নাটক তাঁর নিজের লেখা উপন্যাসের নাট্যরূপ। সেই নাট্যরূপ দিয়েছিলেন তিনি নিজেই। তাঁর লেখা বিখ্যাত ‘ঢুলি’ প্রথমে নাটমঞ্চে ও পরে সিনেমার আকারে পর্দায় তুফান তুলেছিল। সে কথা স্মরণ করলেই মনে পড়ে জিয়াগঞ্জের বাংলামন্দিরের দুর্গার তৃতীয় নয়ন আঁকার সময় তিনি কেমন মগ্ননয়নে তাকিয়ে থাকতেন। বিধায়ককে বিধায়ক হিসাবে গড়ে তুলতে বাংলামন্দিরের কুঞ্জ ঢুলির অবদান অসামান্য। সেই নাটক ও সিনেমায় মূল বিষয় ঢুলির সঙ্গে অভিজাত এক মহিলার প্রেম। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেরও তিনি জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। ‘ভ্রান্তি বিলাস’- এর সেই স্যাকরার মুখে মুর্শিদাবাদের, বিশেষত বালুচরের ডায়ালেক্ট তিনি গুঁজে দিয়েছেন সফল ভাবে। ‘উত্তর মেঘ’ ছবিতেও তাঁর ভূমিকা অনবদ্য।
মধ্যবিত্ত সমাজের ক্রমাগত অবনমন ও অর্থনৈতিক দুর্দশা বিধায়কের নাট্যচিন্তায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান জুড়ে আছে। নাটক এবং নাট্য প্রতিষ্ঠান নিয়ে তাঁর গভীর অভিনিবেশ, নাটকের উপস্থাপনের নানা কৌশল, প্রেক্ষা ও নিরীক্ষা তাঁকে শিখিয়েছিল পেশাদারি নাটকের ক্ষেত্রে কী করে দর্শককে মুগ্ধ করতে হয়। বাল্য-কৈশোরে জিয়াগঞ্জের সামাজিক পরিবেশ, গঙ্গা, বাংলা মন্দিরের মা দুর্গার চোখ আঁকা, রায়বাহাদুরের বাড়ির ঝুলনযাত্রা, কমলেকামিনীতলার মেলা, চুড়িপট্টির দাসভবনে তাসের আড্ডা আর মাঝরাতে শব-বাহকের হরিধ্বনির মধ্যেই গড়ে উঠেছিল ভবিষ্যতের বিধায়কের শিল্প-শৈলীর ভিত। জন্মভূমির সেই ফেলে আসা অতীত বিধায়ককে টেনেছে বারবার। শেকড়ের টান তিনি ভোলেননি।
সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বিধায়ক বহু সম্মানে ভূষিত হন। তিনি ভাটপাড়া থেকে ‘মধুসংলাপী’ ও নিখিল ভারত বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন থেকে ‘সাহিত্য মহাস্নাতক’ (১৯৬১) উপাধি লাভ করেন। এছাড়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ‘সুধাংশুবালা পুরস্কার’ (১৯৬৭) এবং বঙ্গীয় রঙ্গমঞ্চের শতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শতবার্ষিকী পুরস্কার’ লাভ করেন। ১৯৮৬-তে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত নৃত্য নাটক ও দৃশ্যকলা আকাডেমির পুরস্কার পান।
পারিবারিক স্মৃতি :
"আমার পিতৃদেব প্রয়াত নাট্যকার বিধায়ক ভট্টাচার্য একটি নাটক লিখেছিলেন ।
নাম সরীসৃপ ।যখন চিত্ত রঞ্জন এভিনিউ নির্মিত হচ্ছে ( তখন বলা হত নতুন
রাস্তা) তখন বিডন স্ত্রীট এ একটি পেশাদার মঞ্চ ও ভেঙে ফেলা হয় । তাই নিয়েই নাটক । নাটক টি রেডিওতে অভিনীত হয় । অভিনয় করেছিলেন সরজুবালা দেবি সত্য বন্দ্যোপাধ্যায় , কানু বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ । এরপর শ্রীমতী তৃপ্তি
মিত্র "আরদ্ধ" নাট্টগোষ্ঠির থেকে অনেক বার এই নাটক টি অভিনয় করেন কিন্তু
আমার জানা নেই কেউ এই পেশাদার নাট্ট মঞ্চগুলি নিয়ে কোন নাটক বা অন্য
কিছু লিখেছেন বলে ।
বাংলা নাট্য জগত মনে রাখেনি পাবলিক থিয়েটারকে, মনে রাখেনি সেই সব
নাটক,মনে রাখেনি পাবলিক থিয়েটারে ঘটে যাওয়া অজস্র ঐতিহাসিক ঘটনাকে,
সেখানে কে আর মনে রাখবে লীলাবতী করালীকে। আমি সুযোগ পেলাম, চেষ্টা করালাম
কিছু লেখার।"
১৯৮৬ সালের ১৫ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment