Monday, 8 February 2021

দৈনিক শব্দের মেঠোপথ

∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
  জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য 
মনীশ ঘটক
==========∆∆∆∆∆∆∆============
   Doinik Sabder Methopath
     Vol -277. Dt -09.02.2021
      ২৪ মাঘ,১৪২৭. মঙ্গলবার
÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷∆∆∆∆∆∆÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷÷
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত তাঁর ‘কল্লোল যুগ’ গ্রন্থে লিখেছেন -"ছ'ফুটের বেশি লম্বা, প্রস্থে কিছুটা দুঃস্থ হলেও’ তাঁর চেহারায় ছিল ‘বলশালিতার দীপ্তি’। আর শুধু কি চেহারা? ‘কল্লোলে আত্মপ্রকাশ করে সে যুবনাশ্বের ছদ্মনাম নিয়ে। সে দিন যুবনাশ্বের অর্থ যদি কেউ করত ‘জোয়ান ঘোড়া’, তা হলে খুব ভুল করত না, তাঁর লেখায় ছিল সেই উদ্দীপ্ত সরলতা।’ 
    তিনি বাংলা সাহিত্যের গল্পকার, কবি এবং ঔপন্যাসিক । জন্ম: ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯০২ ।
 তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের পাবনার নতুন ভারেঙ্গা। তাঁর পিতার নাম সুরেশচন্দ্র। সুরেশচন্দ্র ডেপুটি এবং পরে ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছিলেন তাই মণীশ ঘটককে পিতার কর্মসূত্রে পূর্ববঙ্গের নানা জায়গায় কাটাতে হয়েছিল। তাঁর ভাই প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক এবং সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী তার কন্যা। মণীশ ঘটক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক।
ছদ্মনাম - যুবনাশ্ব
সন্তান -মহাশ্বেতা দেবী
মাতা - ইন্দুবালা দেবী । 
পত্নী-  ধরিত্রী দেবী। পার্থ এস বাকের "গুড আর্থ " এর অনবদ্য অনুবাদ করেন।

 লেখক সুধীর চক্রবর্তী মণীশ ঘটকের সংস্পর্শে আসেন। তাঁর মূল্যায়নেও যেন সজনীকান্তের প্রীতিপ্রসন্ন মন্তব্যেরই অনুরণন, ‘এত স্পষ্টভাষী, ঋজু শরীরের নির্মেদ মানুষ আর স্বভাবকোমল ব্যক্তিত্ব আর তো দেখলাম না।’
তিনি আয়কর উপদেষ্টা হিসাবে যথেষ্ট সফলতা পেয়েছিলেন। মণীশ ঘটক ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে গল্পকার হিসাবে সাহিত্য জীবন শুরু করেন। সেই সময়ে কবি হিসাবেও আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি ছিলেন কল্লোল যুগের একজন সাহিত্যিক। তার রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ছিল শিলালিপি। যুবনাশ্ব ছদ্মনামে তিনি গল্প ও গদ্য রচনা করতেন। তার রচিত একটি গল্পগ্রন্থ হল পটলডাঙার পাঁচালী। কনখল তার রচিত একটি উপন্যাস। মান্ধাতার বাবার আমল তার রচিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। তিনি পাবলো নেরুদার কবিতা অনুবাদ করেছিলেন। বহরমপুর থেকে বর্তিকা নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন তিনি আমৃত্যু সম্পাদনা করেছেন। তিনি ঢাকা থেকে ১৯২৭ সাল ও পরবর্তীকালে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসু ও অজিতকুমার দত্তের সম্পাদিত প্রগতি পত্রিকার সাথে জড়িত একজন নিয়মিত তরুণ কণ্ঠস্বর ছিলেন।

রচিতগ্রন্থ :

শিলালিপি
যদিও সন্ধ্যা
বিদুষী বাক
কনখল
পটলডাঙ্গার পাঁচালী
মান্ধাতার বাবার আমল (আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ)
একচক্রা (শেষ কাব্য সঙ্কলন)

সমসাময়িক সাহিত্যিক মহলে মণীশ ঘটক ছিলেন এক ব্যতিক্রমী চরিত্র। তবে সবাই যে তাঁর উপর প্রসন্ন ছিলেন তা নয়। সজনীকান্ত ‘কল্লোল’ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে লিখেছেন, ‘আসল কর্ণধার গোকুলচন্দ্র নাগ… ‘তরুণ’ কবি ও শিল্পী হইলেও ভদ্ররুচি সম্পন্ন সংযত মানুষ ছিলেন, কোনওদিক দিয়া শালীনতা ক্ষুণ্ণ হইতে দিতেন না। মূর্তিমান বিদ্রোহের মতো মাঝে মাঝে পটলডাঙার পাঁচালিকার যুবনাশ্বের (মণীশ ঘটক) আবির্ভাব ঘটিলেও ‘কল্লোলে’র মোটামুটি আবহাওয়া ছিল শান্ত ও সুন্দর।’ মণীশ ঘটক সম্পর্কে এই অপ্রসন্নতা পরে সজনীকান্তের কেটে যায়। লেখেন, ‘মণীশ শক্ত জোরালো মানুষ, ঢাকঢাক গুড়গুড়ের দলে নয়।’
মৃত্যু - ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৭৯।

" আমার শেষ প্রার্থনা এই যে যাঁর লিখবার কিছু ক্ষমতা আছে তিনি অন্তত দিনে তিন ঘণ্টা আপনমনে লিখে যাবেন, রাতারাতি বড়োলোক হবার আশা ত্যাগ করে’।"
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆



No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। অশোকবিজয় রাহা । একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, প্রাবন্ধিক এবং সমালোচক। তিনি রবীন্দ্র অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘদিন বিশ্বভারতীতে দায়িত্ব পালন করেন। Dt -14.11.2024. Vol -1052. Thrusday. The blogger post in literary e magazine.

অশোকবিজয় রাহা  (১৪ নভেম্বর ১৯১০ – ১৯ অক্টোবর ১৯৯০)  সময়টা ছিল আঠারোশো উননব্বইয়ের অক্টোবর। গঁগ্যার সাথে বন্ধুত্বে তখন কেবল চাপ চাপ শূন্যতা আ...