Saturday, 13 March 2021


জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য



আলবার্ট আইনস্টাইন

প্রখ্যাত নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন আজকের দিনে অর্থাৎ ১৪ মার্চ ১৮৭৯ সালে জার্মানির উল্ ম উরটেমবার্গ এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কাটে মিউনিখে। পিতা হের মান আইনস্টাইন ছিলেন একটি তড়িৎ রাসায়নিক কারখানার পরিচালক। পাশাপাশি তিনি পাখির পালকের তৈরি ও বাজারজাত করতেন। আর মা পলিন কখ পরিবারের আভ্যন্তরীণ সব দায়িত্ব পালন করতেন তারেক বোন ছিলো যার নাম মাজা আইনস্টাইনের জন্মের দুবছর পরেই তার জন্ম হয় ছোটবেলায় দুটি জিনিস তার মনে অপার বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল প্রথমত পাঁচ বছর বয়সে একটি কম্পাস হাতে পান তার ব্যবহার দেখে বিস্মিত হন অদৃশ্য শক্তির কারণে কিভাবে কম্পাসের কাঁটা দিক পরিবর্তন করছে তখন থেকে আজীবন অদৃশ্য শক্তির প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল এরপর 12 বছর বয়সে তিনি জ্যামিতির একটি বইয়ের সাথে পরিচিত হন এই বইটি অধ্যায়ন করে এতো মজা পেয়েছিলাম যে আজীবন পবিত্র ছোট জ্যামিতির বলে সম্বোধন করেছেন আসলে বইটি ছিল ইউক্লিডের এলিমেন্টস আইনস্টাইন পাঁচ বছর বয়সে ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ভর্তি হয়ে তিন বছর সেখানেই পড়াশোনা করেন তার কথা বলার ক্ষমতা খুব একটা ছিল না তথাপি স্কুলে বেশ ভাল ফলাফল করেছিলেন এরপর আট বছর বয়সে তাকে লুৎফর জিমনেসিয়াম ভর্তি করা হয় সেখান থেকে তিনি উন্নত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন সাত বছর পড়াশোনা করার শেষে তিনি জার্মান সাম্রাজ্য ত্যাগ করেন। তবে ১৮৯৫ সালে তিনি সুইজারল্যান্ড চলে আসেন এবং পরের বছর জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। ১৯০০ সালে জুরিখের ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল থেকে তিনি একাডেমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা অর্জন করেন পরের বছর তিনি সুইজারল্যান্ডে নাগরিকত্ব অর্জন করে প্রাথমিক কাজের সন্ধান এর জন্য সংগ্রাম এবং সুইজারল্যান্ডীয় পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট পরীক্ষক হিসেবে কর্মরত হন। 

পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান বিশ্ব বিখ্যাত সবচেয়ে বিখ্যাত অবদান আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বিজ্ঞান ও তড়িৎ চৌম্বক করতে একত্রীভূত করেছিল এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল তার এই অসামান্য অবদান কৈশিক ক্রিয়া প্রান্তিক বর্ণময়তা পরিসংখ্যান ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যা তাকে অনুর ব্রাউনীয় গতি ব্যাখ্যা করার দিকে পরিচালিত করেছিল আণবিক সম্ভাবতা কোয়ান্টাম তত্ত্ব নিম্নবিত্তের তাপীয় ধর্ম একীভূত ক্ষেত্রে তত্ত্বের প্রথম ধারণা পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিক কি করন প্রভৃতি বিষয়। ১৯৩৩ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালীন জার্মানির দায়িত্বে হিটলার আসেন। ইহুদি হওয়ার কারণে আইনস্টাইন আর জার্মানিতে ফিরে যাননি স্থায়ীভাবে আমেরিকায় বসবাস শুরু করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট কে একটি চিঠি লিখেছিলেন জার্মান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কে তার এই চিঠির মাধ্যমে ম্যানহাটন প্রজেক্ট এর কাজ শুরু হয় আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারোমানিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি প্রিন্সটন 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্স সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৩০০ টির অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা পত্র এবং ১৫০ টির বেশি বিজ্ঞান বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন জীবনে। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছেন এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি ভোটের মাধ্যমে জানা গেছে তাকে প্রায় সকলেই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন দৈনন্দিন জীবনে মেধাবী এবং বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে প্রায়শই আইনস্টাইন বলে সম্বোধন করা হয় অর্থাৎ এটি প্রতিভা শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ইউজিন উইগনার তাকে তার সামরিক দের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে লিখেছিলেন যে জেন্সি ভন নিউম্যানের চেয়ে আইনস্টাইনের বোধ শক্তি আরো বেশি প্রকট তার চিন্তাশক্তি নিউম্যানের চেয়ে ভেদ্য এবং বাস্তবিক ছিল।

           মেরিক ছিল তার পদার্থবিজ্ঞানের সহপাঠী। প্রকৃতপক্ষে মিলেভা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র ছাত্রী। পরের কয়েক বছরে আইনস্টাইন এবং মেরিকের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয় এবং তারা উভয়েরই আগ্রহের বিষয় পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে বিতর্ক করে এবং বই পড়ে অগণিত সময় একে অপরের সাথে কাটিয়েছিল। আইনস্টাইন মেরিককে চিঠি পাঠিয়ে লিখেছিলেন যে তিনি তাঁর সাথে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন।১৯০০ সালে আইনস্টাইন গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন] বহু বছরের প্রত্যক্ষদর্শী প্রমাণ এবং বেশ কয়েকটি চিঠি রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে মেরিক সম্ভবত ১৯০৫ সালে তার প্রবন্ধ Annus Mirabilis এর প্রকাশে সহযোগিতা করেছিলেন এবং এর কিছু ধারণা তারা একসাথে বিকশিত করেছিলেন। যদিও কিছু ঐতিহাসিক পদার্থবিদ, যারা এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা এই ব্যাপারে সহমত নয় যে মেরিকের এই ব্যাপারে কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল।




আলবার্ট এবং মিলেভা আইনস্টাইন, ১৯১২
আইনস্টাইন এবং মিলেভার বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং এই মিলেভাকেই তিনি পরবর্তীকালে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্কটি শুধুমাত্র আবেগকেন্দ্রিক ছিলনা, তাতে যথেষ্ট পরিমাণ বুদ্ধিবৃত্তিক অংশীদারত্বের উপাদান মিশে ছিল।। তাই পরবর্তীকালে তিনি মিলেভা সম্বন্ধে বলেছিলেন, "মিলেভা এমন এক সৃষ্টি যে আমার সমান এবং আমার মতই শক্তিশালী ও স্বাধীন"। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। আইনস্টাইনের মা অবশ্য চেহারা বেশি ভাল না থাকা, অ-ইহুদি এবং বয়স্ক হওয়ার কারণে মিলেভাকে প্রথমে পছন্দ করেননি। ১৯৮৭ সালে আইনস্টাইন এবং মেরিকের সম্পর্কের প্রথম দিকে আদানপ্রদানকৃত চিঠিপত্রগুলি আবিষ্কৃত হয় যা তাদের একটি কন্যা সন্তানের তথ্য প্রকাশ করে। মেয়েটির নাম ছিল লিসেল এবং তার জন্ম হয়েছিল ১৯০২ সালে যখন মেরিক তার বাবা মায়ের সাথে নোভি সাদে ছিল। মেরিক শিশুটিকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডে ফিরে আসেন, যার আসল নাম এবং পরিণতি অজানা। ১৯০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেরিককে লেখা আইনস্টাইনের চিঠির বিষয়বস্তু থেকে বোঝা যায় যে মেয়েটি হয় কাউকে দত্তক দেওয়া হয়েছিল বা শৈশবকালে আরক্ত জ্বরে মারা গিয়েছিল। এ সময় মিশেল বেসো তাকে আর্নস্ট মাখ-এর লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পর পরই তার গবেষণাপত্র Annalen der Physik প্রকাশিত হয় যার বিষয় ছিল নলের মধ্য দিয়ে কৈশিক বল।

আইনস্টাইন এবং মেরিক ১৯০৩ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন। ১৯০৪ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের বার্নে তাদের ছেলে হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জন্ম নেয়। এবং তাদের ছেলে এডুয়ার্ড ১৯১০ সালের জুলাই মাসে জুরিখে জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা সকলে ১৯১৪ সালে তারা বার্লিনে চলে আসলেও মেরিক কিছুদিন পরেই ছেলেদের নিয়ে জুরিখে ফিরে আসে। এর কারন তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও  আইনস্টাইন তার চাচাতো বোন এলসার প্রেমে পরে গিয়েছিল।  পাঁচ বছর আলাদা থাকার পরে ১৯৯৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘতে।  ২০ বছর বয়সে এডুয়ার্ডের শরীর খারাপ হয় এবং তার সিজোফ্রিনিয়া ধরা পরে। তার মা তার যত্ন নিতো এবং তাকে প্রায়ই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হতো। তার মায়ের মৃত্যুর পর তাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। 
২০১৫ সালে আইনস্টাইন তার প্রথম প্রেম মেরি উইন্টেলারকে লেখা কিছু চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিগুলোতে তাঁর বিবাহ এবং তার প্রতি আইনস্টাইনের দৃঢ় অনুভূতি সম্পর্কে লিখেছিলেন। ১৯১০ সালে যখন তার স্ত্রী দ্বিতীয়বার গর্ভবতি হন তখন আইনস্টাইন লিখেছিলেন, "আমি তোমার কথা প্রতি মুহুর্তে চিন্তা করি এবং একজন মানুষ যতটা অসুখী হতে পারে আমি ঠিক ততোটাই অসুখী।" তিনি মেরির প্রতি তার ভালবাসার সম্পর্কে "বিপথগামী ভালবাসা" এবং "হারিয়ে ফেলা জীবন" বলে উল্লেখ করেছেন। 

১৯১২ সাল থেকে লম্বা সম্পর্কের পর ১৯১৯ সালে আইনস্টাইন এলসা লভেন্থালকে বিয়ে করেন। তিনি জন্মের দিক থেকে আইনস্টাইনের প্রথম এবং পৈতৃকভাবেভাবে দ্বিতীয় চাচাতো বোন ছিলেন। ১৯৩৩ সালে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। ১৯৩৩ সালে এলসার হার্ট ও কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে এবং ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। 

১৯২৩ সালে আইনস্টাইন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হ্যান্স মুহসামের ভাগ্নী বেটি নিউম্যান নামে এক সচিবের প্রেমে পড়েন। ২০০৬ সালে জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত কিছু চিঠিতে আইনস্টাইন ছয়জন নারীর কথা বর্ণনা করেছেন যাদের সাথে তিনি এলসার সাথে বিবাহিত থাকা অবস্থায় সময় কাটিয়েছেন এবং তাদের থেকে উপহার গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে এস্টেলা কাটজেনেলেনবোজেন (ধনী ফুল ব্যবসায়ী), টনি মেন্ডেল (একজন ধনী ইহুদি বিধবা) এবং এথেল মিশানোভস্কিও (বার্লিনের একজন সমাজসেবী) ছিলেন।] দ্বিতীয় স্ত্রী এলসার মৃত্যুর পরে আইনস্টাইন মার্গারিটা কোনেনকোভার সাথে সংক্ষিপ্ত সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন। কোনেনকোভা ছিলেন একজন রাশিয়ান গুপ্তচর, যিনি বিখ্যাত রাশিয়ান ভাস্কর সের্গেই কোনেনকভের (যিনি প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে আইনস্টাইনের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন) সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন..
       ১৯০০ সালে Annalen der Physik জার্নালে আন্তঃআণবিক শক্তির উপর আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্র "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" প্রকাশিত হয়।  ১৯০৫ সালের ৩০ এপ্রিল আইনস্টাইন পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনারের তত্ত্বাবধানে তার থিসিস সম্পন্ন করেন। ফলস্বরূপ "A New Determination of Molecular Dimensions" প্রবন্ধের জন্য আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। 
পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকলিন সময়ে আইনস্টাইন Annalen der Physik নামক জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীতে যুগান্তকারী চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তখনও তিনি পেটেন্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। জার্মানির নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রগুলোকে ইতিহাসে অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্রসমূহ নামে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। গবেষণাপত্র চারটির বিষয় ছিল:

আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রতিপাদন।
ব্রাউনীয় গতি - আণবিক তত্ত্বের সমর্থন।
আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার।
ভর-শক্তি সমতা - বিখ্যাত E = mc2 সূত্র প্রতিপাদন।
চারটি গবেষণাপত্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত এবং এগুলোর কারণেই ১৯০৫ সালকে আইনস্টাইনের জীবনের "চমৎকার বছর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য সে সময় তার গবেষণাপত্রের অনেকগুলো তত্ত্বই প্রমাণিত হয়নি এবং অনেক বিজ্ঞানী কয়েকটি আবিষ্কারকে ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দেন। যেমন আলোর কোয়ান্টা বিষয়ে তার মতবাদ অনেক বছর ধরে বিতর্কিত ছিল। ২৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার উপদেষ্টা ছিলেন পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনার। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের নাম ছিল, "আ নিউ ডিটারমিনেশন অফ মলিক্যুলার ডাইমেনশন্‌স" তথা আণবিক মাত্রা বিষয়ে একটি নতুন নিরুপণ।(Einstein 1905d)
 আইনস্টাইন ১৯১১ সালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতার নতুন তত্ত্ব ব্যবহার করে তার গণনা অনুযায়ী অন্য একটি নক্ষত্রের আলো সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের কারনে বেঁকে যাওয়া উচিত। ১৯১৯ সালের ১৯ মে এর সূর্যগ্রহণের সময় এই গণনাটি স্যার আর্থার এডিংটন নিশ্চিত করেছিলেন। এই পর্যবেক্ষণগুলি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল, যা আইনস্টাইনকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছিল। ১৯১৯ সালের নভেম্বরে শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমস একটি ব্যানার শিরোনাম ছাপায় যেটিতে লেখা ছিল: "Revolution in Science – New Theory of the Universe – Newtonian Ideas Overthrown" (বিজ্ঞানের বিপ্লব - মহাবিশ্বের নতুন তত্ত্ব - নিউটনিয় ধারণা নিপাতিত)।

১৯২০ সালে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ড একাডেমী অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর একজন বিদেশী সদস্য হন। ১৯২২ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান এবং বিশেষত আলোক তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত সুত্র আবিষ্কারের জন্য ১৯২১ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। যদিও আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বটি তখনও কিছুটা বিতর্কিত হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। এমনকি আলোক তড়িৎ সম্পর্কিত উদ্ধৃত গবেষণাকে ব্যাখ্যা হিসেবে বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি সুত্রের আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এর কারন ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু কর্তৃক প্ল্যাঙ্ক স্পেকট্রাম আবিষ্কারের পূর্বে ফোটনের ধারনাকে উদ্ভট মনে করা হতো এবং এর সর্বজন স্বীকৃতি ছিল না। আইনস্টাইন ১৯২১ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশি সদস্য (ForMemRS) নির্বাচিত হন।এছাড়া তিনি ১৯২৫ সালে রয়েল সোসাইটি থেকে কপলি পদকও পেয়েছিলেন। 

উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
বার্নার্ড পদক (১৯২০)
নোবেল পুরস্কার.png পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯২১)
মাতেউচি পদক (১৯২১)
ফেলো অফ দ্য রয়েল সোসাইটি (১৯২১)
কপলি পদক (১৯২৫)
রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি স্বর্ণপদক (১৯২৬)
মাক্স প্লাংক পদক (১৯২৯)
জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য (১৯৪২)
টাইম ম্যাগাজিনের শতাব্দীসেরা ব্যক্তিত্ব (১৯৯৯)

যাদের দ্বারা প্রভাবিত :
আর্টুর শোপনহাউয়ার
বারুখ স্পিনোজা
বের্নহার্ট রিমান
ডেভিড হিউম
আর্নস্ট মাখ
হেন্ড্রিক লোরেন্‌ৎস
হেরমান মিংকফ্‌স্কি
আইজাক নিউটন
জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল
মিশেল বেসো
মরিস শ্লিক
থমাস ইয়ং
মৃত্যু : ১৮ এপ্রিল ১৯৫৫ (বয়স ৭৬) প্রিন্সটন, নিউ জার্সি, যুক্তরাষ্ট্র।
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
     দৈনিক শব্দের মেঠোপথ
     Doinik sabder methopath
    Vol -310. Dt -14.03.2021
      ৩০ ফাল্গুন, ১৪২৭. রবিবার
=================================

No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। পশুপতি ভট্টাচার্য । খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। Dt -15.11.2024. Vol -1053. Friday. The blogger post in literary e magazine

পশুপতি ভট্টাচার্য  ১৫ নভেম্বর ১৮৯১ -  ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮   একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ও সাহিত্যিক। জন্ম  বিহার রাজ্যে পিতার কর্মস্থল আরায়। তাদ...