Wednesday, 14 July 2021

জন্ম দিন



জন্মদিন
অরবিন্দ সরকার

জন্মদিন মানে ঠান্ডা ঘরে বসে
কম্পিউটারে চোখ রাখা নয়
থলি নিয়ে বাজার করা নয়
গিন্নির সঙ্গে কষাকষি নয়
জন্মদিন মানে মেঘ-রোদ্দুরের খেলা
মা-বাবার কাছে কোন ঘনিষ্ঠ
অতীত মুহূর্তের কথা মনে পড়া
ছোটাছুটি
মেলায় পাঁপড়ভাজা
কিংবা ঘুড়ি না ওড়ানোর জন্য মনখারাপ
কোনো প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনে
জমাটি আড্ডার কথা মনে পড়া
ভেসে আসে কোনো ক্লাসিক গানের সুর বিস্তার
আর কত কী সব‌।

এখন জন্মদিন মানে
সন্তানের মুখে চুমু খাওয়া
তার পড়াশোনায় নজর দেওয়া
গিন্নির সংসারের প্রয়োজনে
ফাইফরমাস কাটা
কিংবা কাউকে এড়িয়ে চলা
এইসব বাদ দিলেও
বৃদ্ধা মাকে দেখার জন্য একটু ছটফটানি
ছোটোবেলায় কিছু না পাওয়ার জন্য মনখারাপ
তবু মনে হয় জন্মদিন মানে
একটা কিছু নতুনভাবে দেখা
প্রিয়জনদের সঙ্গে আলাপচারিতা খাওনদাওন
কিংবা কোনো তুলনাহীন মুহূর্তে মজে থাকা
কিংবা নিজের সঙ্গে কিছু নিভৃত
অথবা প্রথম সূর্য দেখার কথা ভাবা




জন্মদিন 

অমিত কাশ‍্যপ

জন্মদিন এখন আর হয় না। করবে কে। তবে দিনটা আসে। অন‍্যান‍্য দিনের মতো। ছেলে বউমার সংসারে ব‍্যস্ততায়।

স্কুল কলেজ চাকরি জীবন, তারপর অবসর। দিনটা আসে, অন‍্যান‍্য দিনের মতো। কখনো গান শুনি, কখনো ব‍্যালকনিতে দাঁড়াই। মেলবোর্ন থেকে মেয়ে ফোনে প্রণাম জানায়, শুভেচ্ছা জানায়। আর এক মা। 

আর এক মা পায়েসের বাটি আর ধান দুর্বো দিয়ে মাথায় হাত রাখত। শীর্ণ হাত। সেই হাত দিয়ে কি যেন ঝরে পড়ত। হয়তো শান্তি, হয়তো স্নেহ, হয়তো আশীর্বাদ।


 একটা হাতি নদীর ধারে গেল জল পান করতে। সে দেখলো নদীর জল অনেক ঘোলা হয়ে আছে। হাতিটি ভাবলো হয়তো কিছুক্ষণ আগে কেউ স্নান করে গেছে। হাতিটির খুব তৃষ্ণা পেয়েছিলো। ঘোলাজল পান করতে না পেরে হাতিটি খুব বিরক্ত হয়ে যে জল ঘোলা করেছে তাকে মনে মনে শাস্তি দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করলো।

অনুগল্প...

শুধু কবিতাকে ভালোবেসে
________________________
                               ---- সুকান্ত আচার্য্য।

     ব্যস্ত রেল স্টেশন। একটি বছর পনেরোর ছেলে রোজ বসে পাঁপড় ভাজা বিক্রি করে। বাবা নেই, বাড়িতে মা একা, তাই অভাবের তাড়নায় আর পড়াশোনা করা হয় নি। এই ভাবে কোনোরকমে সংসার চলে।
      কত লোক তার থেকে পাঁপড় নিয়ে চলে যায়, কিন্তু স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশিস বাবু যেটা লক্ষ করলেন, তা আর কেউ বোধ হয় করেনি। তিনি দেখলেন ছেলেটি পাঁপড়ের ঠোঙা গুলোর কয়েকটা থেকে কিছুটা ছিঁড়ে নিজের কাছে রেখে দিচ্ছে। 
      আশিস বাবু জানতে চাইলেন, " বাবা, তুমি ওগুলো ছিঁড়ে রাখছো কেন, ওগুলোতে কি আছে?" ছেলেটি কোনো কথা না বলেই নীরবে ছেঁড়া কাগজগুলো বাড়িয়ে দিল। আশিস বাবুর ওগুলো দেখে তো চোখ একেবারে গোল হয়ে গেল, ছেঁড়া বইয়ের কাগজ দিয়ে বানানো যে ঠোঙা গুলোতে কবিতা ছাপা আছে, ওগুলো সে নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। 
      আশিস বাবু বললেন, " এগুলো নিয়ে তুমি কি কর?' 
      ও বললো, " ভালোবেসে পড়ি, আমার খুব ভালো লাগে কবিতা পড়তে। বই তো নেই, তাই..." 
      আশিস বাবু ক্ষনিকের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
      
      পরের দিন তিনি ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় ওই ছেলেটিকে ডাকলেন। তারপর ওর হাতে দু খানি কবিতার বই তুলে দিলেন। ছেলেটি বই খুলে দেখলো ওতে লেখা আছে, " যে কবিতাকে ভালোবাসে, তার প্রতি রইলো আমার বুকভরা ভালোবাসা। শুধু এটা মনে রেখো, একটা জোনাকিও তারা হওয়ার স্বপ্ন দেখে শুধু কবিতাকে ভালোবেসে"।


নতুন জন্মদিন // বিশ্বজিৎ রায়


ছাপোষা শরীর থেকে যে লবণজল ও বিষবাষ্প বেরিয়ে আসে/
তারই কোমল স্পর্শে জেগে ওঠে/
অবহেলায় পড়ে থাকা এক "জন্মদিন " ---
ইতিহাসগ্রন্থের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে 
ছেঁড়া ক্ষতগুলো জুড়তে জুড়তে, একদিন সে/
মাথা উঁচু করে এসে দাঁড়ায় উদ্ভাসিত আলোয়---/
তাকে দেখে পৃথিবী চমকে ওঠে,
তাঁর শিকড়ের খোঁজ পেতে তখন সে ছুটতে শুরু করে/
এ'প্রান্ত থেকে ও'প্রান্ত.... //
##
প্রথম বিশ্ব থেকে পাখিরা উড়তে উড়তে/
এই তৃতীয় বিশ্বে এসে যখন তাঁর খোঁজ পেয়ে/
বেঁচে ওঠার গল্প শোনানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে যায়,/
সেদিন থেকে ছাপোষা শরীরে বেজে ওঠে তারাদের ঝকমকি/
শুরু হয়, হারিয়ে যাওয়া পাতাদের ফিরে আসার নতুন এক "জন্মদিন".....


খোকার জন্মদিন !!
                    গোবিন্দ মোদক 

ঠিক এমনিভাবেই এসে যাবে খোকার জন্মদিন, 
আষাঢ় মাসের প্রথম বুধবার, তারিখটা যে তিন !
সকাল থেকেই ব্যস্ত তুমি খোকার জন্মদিনে, 
বাজার থেকে যা যা কিছু আনছি আমি কিনে !
তুমি রাঁধছো মোচার ঘণ্ট, চিংড়ি দিয়ে লাউ,
মুসুরির ডাল বেশ ঘন করে, বেগুনভাজাটাও ! 
চন্দ্রমুখী আলু দিয়ে -- মাংস রেওয়াজি খাসি, 
গন্ধে খোকার মন উচাটন, মুখ-ভর্তি হাসি !
খোকার প্রিয় আমের চাটনি বেশি মিষ্টি দিয়ে, 
জন্মদিনের পায়েস-টাও খায় খুব জমিয়ে !
সবকিছুই রেঁধে-বেড়ে খোকার সামনে দিয়ে, 
ধান-দূর্বায় আশীর্বাদটা খোকার ফটো নিয়ে !
খাবার সাজিয়ে তুমি শুধু খোকার নাম ডাকো, 
ফটোর খোকা শুধুই হাসে, তবু আসে না কো !
কারগিলের যুদ্ধে কবেই শহীদ হয়েছে খোকা, 
জন্মদিনে কাঁদি তবুও, এমনই আমরা বোকা !
মনটা শুধুই কেঁদে বলে --- খোকা ফিরে আয়, 
জন্মদিনের বাতাস বলে -- নাই ! নাই !! নাই !!!


আমার জন্মদিনযাপন

                             সুবীর ঘোষ

 

আমি একজন অকিঞ্চিৎকর মানুষ । কবে আমি জন্মেছি তা জেনে কার কী এসে যায় ! আমার জন্মদিনে উৎসব করবে এমন অফুরন্ত সময় হাতে থাকা মানুষই বা কোথায় ? রবীন্দ্রনাথ যে রবীন্দ্রনাথ তাঁরও জন্মদিন উৎসবের চেহারা নিতে নিতে কবির ২৬ বছর বয়স এসে গেছিল । তা-ও অত বড় পরিবারে কবির গুণমুগ্ধ মানুষের কিছু কমতি ছিল না । সরলা দেবীর উদ্যোগে সেই প্রথম কবির জন্মদিনের উৎসব পালিত হয় । জানি না তার আগে বিশ্বকবির মা তাঁকে তাঁর নিজের হাতে বানানো পায়স খাওয়াতেন কী-না । আর কারো কাছে না থাক্ , প্রতিটি মায়ের কাছে তাঁর সন্তানের কদর সবার আগে । আমার মা-ও আমার জন্মদিন মনে রেখে নীরবে তৈরি করে ফেলতেন জন্মদিনের পায়েস । সবাই খেত সেটা । তবে এক চামচ হলেও সবার আগে সেটার স্বাদ নিতে হত আমাকেই ।

 

খুব ছোটবেলায় মা-বাবার কাছ থেকে আমি একটা তিন চাকার সাইকেল উপহার পেয়েছিলাম । সেটা পাওয়ার সময়কার স্মৃতি আমার নেই , তবে একটু বড় হয়ে সাইকেলটা আমি দেখেছি এবং এত বেশি সেটা চালিয়েছি , যতদিন না সেটা ভেঙে পড়ে । আমি যে সময় ছোটবেলা কাটিয়েছি তখন পৃথিবী মানুষের জীবনের এত কাছে চলে আসেনি । তখন গ্রাম-শহরের বিস্তর ফারাক ছিল । সাধারণ মধ্যবিত্তদের জীবনযাপন এখনকার মতো কিছু কিছু ক্ষেত্রে উচ্চবিত্তদের কাছাকাছি চলে আসেনি । গরিব – মধ্যবিত্ত ও ধনী এদের মধ্যে যে বিপুল তফাত সেটা খোলা চোখেই বেশ দেখতে পাওয়া যেত । আমরা সেই শ্রেণিবিভাজনযুক্ত যুগের ছেলেমেয়ে । আমাদের জন্যে জন্মদিনের পার্টি ছিল না , কেক কাটার সুযোগও ছিল না । ছিল তখনকার অসামান্য সুরভিত গোবিন্দভোগ চালের সুমিষ্ট পায়েস । এই পায়েস মাতৃভক্তি জাগায় , শরীরে বল জোগায় , যেমনটি হয়েছিল সুজাতার হাতে পায়েস খেয়ে বুদ্ধদেবের ।

 

আমাদের ছেলেবেলা কঠোর গ্রীষ্ম আর মুষলধারা বর্ষার ভেতর কেটে গিয়েছিল । তখন বিয়েবাড়িতে ক্যাটারারের বুফে নয় , ভোজবাড়ির খাওয়া । বিয়ের পদ্য লেখার যুগ সেটা । বিয়েতে বই উপহার পাওয়ার সময় সেটা । এখনকার বিনোদনগুলো তখন দেখা দেয়নি যেমন ফেসবুক , হোয়াটসঅ্যাপ , টিভি , স্মার্টফোন , কম্পিউটার । তখন বিনোদন বলতে এক রেডিও নয় গল্পের বই । জন্মদিনেও গল্পের বই দেওয়ার চল ছিল । আমি কবিতা লিখতাম বলে কবিতার বই-ই বেশি পেতাম ।

 

তখন কলেজে পড়ি । একবার আমার ক্লাসের সব ছেলেমেয়েদের নিয়ে এক রেস্তোঁরায় খাওয়াতে নিয়ে গেলাম । সে রেস্তোঁরায় নানা রকম নোনতা খাবার পাওয়া গেলেও কোনো রকম মিষ্টির নামগন্ধ ছিল না । না মিষ্টান্ন , না আইসক্রিম । অনেকেরই সে জন্য মন খারাপ হয়ে গেল । কিছুটা দূরে অন্য রেস্তোঁরায় যাওয়া যেত । কিন্তু গুছিয়ে বসে যাওয়ার পর অনেকেই আর সেখান থেকে নড়তে চাইছিল না । আর একবারের কথা । তখনও কলেজে । চেতন ভগত যেমন একটা বই লিখেছিলেন ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’ নামে সেরকম তখন আমার মধুপা নামে এক ‘হাফ গার্লফ্রেন্ড’ ছিল । ভীষণ অভিমানী ছিল সেই মেয়ে । আমার জন্মদিনের আগের দিন তার সঙ্গে জন্মদিন মানানোর নানা পরিকল্পনা করতে করতে কী নিয়ে যেন এক দুঃসহ অভিমানের মেঘ জমে ওঠে । আমি রাতে ঘুমোতে না পেরে খুব কষ্ট পাই । তখনই ঠিক করে ফেলি আগামীকাল আর কলেজেই থাকব না । সকালে উঠে মায়ের কাছে বাড়ি চলে যাই । মা তো অভাবিতভাবে আমাকে পেয়ে দারুণ খুশি । দুদিন মায়ের কাছে কাটিয়ে হস্টেলে ফিরে যাই । পা দেওয়া মাত্র যাদের যাদের মুখোমুখি হই সবাই বলে আমাকে মধুপা খুঁজছে । সেদিন বিকেলে তার সঙ্গে আমার দেখা হল । দু’ তরফের অভিমানই তখন অনেকটা ফিকে । বিস্তর কটূকথা শুনিয়ে সেই মেয়ে আমাকে বের করে দিল একটা উপহার । একটা কবিতার বই , তার সুন্দর হাতের লেখায় লিখে দেওয়া । বইটির নাম—হে প্রেম হে নৈঃশব্দ্য । কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত বই ।

 

কলেজ ছেড়ে এসে কর্মজীবনে প্রবেশ করায় সেভাবে ছুটির আবহে জন্মদিনকে খুব বেশি আর পাইনি । বড়জোর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোথাও একটা খেতে যাওয়া । ততদিনে মা চলে গেছেন । কেকস্ কিংবা মনজিনিস-এর কেক কেনা হচ্ছে । স্ত্রী-পুত্রর কাছ থেকে শুভেচ্ছা-সংবলিত কার্ড পাচ্ছি । এই কয়েক বছর আগে এক জন্মদিনের দিন সপরিবারে ঘুরতে গেছিলাম গড় পঞ্চকোট । কী চমৎকার জঙ্গলের ভেতর ভেতর রাস্তা । কাশিপুরের রাজাদের এককালের আধিপত্যের নমুনা । এক সময় এখানে মাইকেল মধুসূদন দত্ত কিছুকাল কাটিয়ে গেছিলেন । অনেককিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে । কিছু কিছু সংস্কারও করা হয়েছে । বিশেষ করে একটি মন্দির । একটি অতিথিশালা রয়েছে । আমরা দুপুরে সেখানেই খেলাম । ভাত ডাল মাছের ঝোল আর দারুণ একটি বড় পোস্তর বড়া ।

 

আমার জন্ম বর্ধমান জেলার শিল্পশহর কুলটিতে । কিন্তু সেখানে মাত্র পাঁচ বছর কাটিয়ে আমার পিতৃভূমি বীরভূম জেলার খয়রাশোলে চলে যাই । সেখানেই প্রকৃতির মাঝে শৈশব কৈশোর কেটে যায় ।

আমার জন্মদিন ১৭ ভাদ্র । আমার বড়দার ৩১ ভাদ্র । শরৎচন্দ্রেরও তা-ই । ১৭ ভাদ্র , ইংরেজির ৩ সেপ্টেম্বর । ঐ দিন উত্তমকুমারেরও জন্মদিন । ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি বড়দা আর শরৎচন্দ্র এবং আমি ও উত্তমকুমার এক দিনে জন্মেছি বলে । কখনও কখনও জন্মদিনকে মনে রেখে কবিতা লিখেছি -- দু’একটা , তার বেশি নয় । এমনই দুটি কবিতার কিছু অংশ তুলে ধরছি ---

 


                        ভাদ্রের সতেরো এলে উত্তপ্ত দর্পণ

                             দর্পণে জল পড়ে বদ্ধ মায়াকাল

                             কাল কী পাথর ছিল বিপদ বিগ্রহ

                             বিগ্রহ ও যুদ্ধের মাঝে শান্তি-সূত্রধর

 


                             তবু এই দাদনের দেশগাঁয়ে ভাদ্রের সতেরো আসে ঠিক,

                             আমি তার এক ফাঁকে জন্মকুক্ষিগুহামুখ থেকে

                             উঁকি মেরে দেখে নিই এ-সংসার কতখানি বাসযোগ্য হল ,

                             আস্ফালনের পৃথিবীতে কেঁচোর মতন জীব মানুষের শিক্ষণীয় তারা ।




ধান দূর্বার আলো
খুকু ভূঞ্যা

জন্ম কান্নায় লেখা আছে অ
ক্ষর তো প্রশ্বাসের ক্ষুধা
জীবনের চালচিত্রে যে বর্ণমালা সাজানো
চিন্তা আঁকা নানান রঙে।

সেদিন প্রথম খড়ি স্লেট
ধান সেদ্ধ করতে করতে মা লিখে দিল শুরু
চোখ ধুয়ে গেল আলোয়
হাসতে শিখলাম,ভাসতে শিখলাম
পিঠ সোজা হোলো হঠাৎ

মেঘ আসে মেঘ যায়
ঝড় আসে বান আসে
অশনি কুসুমে ভরে যায় গাছ
আশ্চর্য আনন্দ বাজে স্নিগ্ধ জোসনায়
সসম্মানে বেঁচে আছি
প্রাণের মাঝে ধান দূর্বার আলো, আশির্বাদ--



প্রথম আলোর দিন 
    চন্দন মাইতি

স্বাগতম!
পরিকল্পিত অনিয়ন্ত্রিত আগমনের দিন।
পিতৃত্বের দিন, মাতৃত্বের দিন,
আশীর্বাদ ও উপহার ভরে নেওয়ার দিন।
হৃৎপিণ্ডের পুরোনো হওয়ার দিন।
বয়সটার আগের ঘর ছেড়ে যাওয়ার দিন,
তবুও উৎসব ও আনন্দের দিন।
কেক ও পায়েসের দিন,
দায়িত্ব গুলোর বাড়া কমার দিন,
অতীত ও ভবিষ্যত স্মরণ করার দিন।
এমন ঘটনাবহুল রঙিন দিনের সবচেয়ে বড় পাওয়া,
অজান্তেই উল্লাসে, 
কচ্ছপের পায়ে মাটিতে মিশে যাওয়া।


জন্মদিন
নন্দিনী সরকার

ঠিক যে দিনে এই ধরাতে
প্রথম দিলাম পা-
সেই দিনটাই এক্কেবারে
অমর হয়ে যা ।

কাগজ কলম অফিস স্কুলে
ঐ দিনটাই লেখা!
ভুলবে যদি নিজেকে কভু
দিন বাঁচিয়ে রাখা ।

এক এক যুগে এক এক রূপে
জন্মদিনের প্রবেশ,
শিশুকালে বেলুন কেকে!
বুড়োতে সন্দেশ।

ছোটোবেলায় হরেক মজা
বড়ো হবার লোভ!!
বাড়লে বয়স, ভয় যে বাড়ে
বুড়ো হবার ক্ষোভ।

সবার কাছেই এই দিনটা
স্পেশাল এবং দামী-
সহজে আর কেউ কি ভোলে
আমার আছে 'আমি'??


নবজন্ম 
                    তপনকুমার গোস্বামী 

স্বপ্নেন্দুর আজ জন্মদিন। সারা বাড়িতে বইছে আনন্দের জোয়ার। ড্রয়িংরুমে টেবিলের ওপর সযত্নে রাখা আছে একটা সুদৃশ্য কেক। তার পাশে মোমবাতি, দেশলাই, ছুরি সবই মজুত। সন্ধ্যে অনেক আগেই হয়ে গেছে। কিন্তু কী এক অজানা কারণে জন্মদিনের অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হচ্ছে। স্বপ্নেন্দুর মা মাঝে মাঝেই দরজার দিকে দেখছেন। মনে হচ্ছে যেন কারুর আসার অপেক্ষায় আছেন। অতিথিরা প্রায় সকলেই উশখুশ করছেন, কিন্তু মুখে কেউ কিছু প্রকাশ করছেন না। 
                         অবশেষে এক বর্ষীয়ান অতিথি স্বপ্নেন্দুর বাবাকে বললেন ----" আমরা কী বিশেষ কারোর জন্যে অপেক্ষা করছি? " স্বপ্নেন্দুর বাবা কিছু বলবার আগেই স্বপ্নেন্দুর মা চেঁচিয়ে উঠলেন ----"ওই তো এসে গেছে। " একথা বলেই তিনি দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে একটি ছেলের হাত ধরে ঘরের মাঝখানে নিয়ে এলেন। ছেলেটিকে দেখে ঘরের সকলেই খুব অবাক। এই পরিবেশে সে যথেষ্টই বেমানান। স্বপ্নেন্দুর মা ছেলেটির একটি হাত উচুঁতে তুলে ধরে বললেন ----" এ হচ্ছে সাইফুল । এরজন্যই স্বপ্নেন্দুকে আমরা বাঁচাতে পেরেছি। নিজের একটা কিডনি ডোনেট করে সাইফুল স্বপ্নেন্দুকে রক্ষা করেছে। কাজেই এখন আমার দুই ছেলে। 


জন্মদিন
মুকূল রঞ্জন

জীবনের নাটঘাটানির মাঝে জবার সঙ্গে অনেকদিন দেখা হয়নি।সেদিন জবার চিঠিটা হঠাৎ পাওয়া মাত্রই কে যেন চিরে দিল অন্তরপট!!
            প্রাকৃতিক কারণে দুটো জীবণ আলাদা হয়ে যায়।প্রেমের নদী দুটো পথে বয়ে যায়!
           জবার মেয়ে পলার শ্বশুরবাড়ি দেউলটিতে।ওর শ্বশুরবাড়ির নিয়ম শিশুর জন্মের একবছর বাদে বংশের বাইরের সজ্জন মানুষের দ্বারা শিশুর নামকরণ।
            তিনবছর আগে সঠিকদিনে জবার দ্বারা অনুরুদ্ধ হয়ে অকুস্থলে পৌঁছে অনেকের রূপে শুধু মুগ্ধ নয় ঝলসেও গেলাম! জবার চারদিকে চেয়ে মনে হল একরঙা সূর্য থেকে সাতরঙা রামধনু বেরিয়েছে!
          নামকরণের শুরুতে জবা বলল,''আগে তোমার বই প্রকাশ হোক।'' ওপরের আবরণ ছিঁড়তেই বেরিয়ে এল বইয়ের নামকরণ ''কলস্বনা''! আমি চমকে উঠলাম। জবা আমাকে প্রণাম করে বলল ''এই বইটা আমার জন্মান্তরের স্মৃতি হয়ে থাকবে! রেডিওতে তুমি যেকটা অনুগল্প লিখেছ- সেগুলোরই সমাহার এই বই।তাই আমারও আজ জন্মদিন!!
          আমি কন্যাশিশুটির নাম দিলাম ''কলস্বনা''!! আমি নিভৃতে জবাকে কলস্বনা বলতাম! জবা চমকে উঠল। আমি জবার রক্তাভ মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম- ওর চোখের জলের নোনায় মিশে যাচ্ছে মহাসমুদ্রের লবণ!ভালবাসা পেরিয়ে যাচ্ছে নশ্বর মৃত্যুর দিগন্তকে।



ঘুড়ি
                 আকাশনীল মাইতি

                 বাড়ি তো নয় যেন রাজপ্রাসাদ। তার উপর অভিনব সাজে স্বর্গপুরীর চেহারা নিয়েছে! বাইরে সুবিশাল প‍্যাণ্ডেল। প‍্যাণ্ডেল নাকি পাঁচতারা হোটেল বোঝা মুশকিল। চতুর্দিকে পার্টি, নাচগান, হৈচৈ সঙ্গে মুখরোচক খাবার, ফরেন লিকার, আরও কত কি! বিখ্যাত রায় ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র উত্তরাধিকার নিখিল রায়ের জন্মদিন বলে কথা। সেকি যে সে ব‍্যাপার! এবার তো দশ পূর্ণ হল। তাই আয়োজনের মাত্রাও এবার অধিক জমকালো।
               ইতিমধ্যে উপহারে ভরে গেছে দুটি ঘর। হাজারো অভিনব খেলনার সঙ্গে সোনা, রূপো, প্ল‍্যাটিনাম, ডায়মণ্ডের ব্রেসলেট, চেন, রিস্ট ওয়াচ, দামি শার্টপ‍্যান্ট-শ‍্যু, বিদেশি পারফিউম, চকোলেট, মোবাইল, ভিডিও গেম আরও কত কি! একসঙ্গে এত উপহার! নিখিলের আনন্দ ধরে না। সবচেয়ে খুশি হয়েছে বাবার দেওয়া উপহারটায়। রায়সাহেব ওকে দিয়েছেন একটি স্বয়ংক্রিয় রোবট। ওটা এত‍ই আকর্ষণীয় যে কোনোটার সাথে তুলনাই চলেনা।
             এই খুশি আরও উপভোগ্য করে তুলতে বিকেলে ছুটল টোটোনদের বাড়ি। টোটোনরা খুব গরীব। ওর বাবা ট্রেনে হকারি করে। আর মা কাজ করে নিখিলদের বাড়িতে। 'জানিস টোটোন আজ আমি হেব্বি খুশি। এত গিফ্ট পেয়েছি যে কি বলব। কতগুলো ভিডিওগেম পেয়েছি জানিস? অলরেডি পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে। আরও অনেক প‍্যাকেট তো এখনও খোলাই হয়নি।'
              'ভিডিও গেম! সে আবার কী?'
               'আরে ভিডিও গেম জানিস না? ঘরে বসে খেলার যায়। বাইরে দৌড়াদৌড়ি করার দরকার‍ই হয়না। এতে মনিটর, কীবোর্ড, জয়স্টিক, কন্ট্রোলার, হেডফোন সব থাকে। এক একদিন তো খেলতে খেলতে রাতে ঘুম‍ই আসেনা। দারুণ এক্সাইটিং! কি যে মজা হয় কি বলব তোকে।' নিখিল বিজ্ঞের মত বলে গেল কথাগুলো। টোটোন কিছু বুঝল কিনা কে জানে। কেবল হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। নিখিল আবার বলতে শুরু করে, 
                 'আচ্ছা শুনেছিলাম আজ তোর‍ও নাকি জন্মদিন?'
                  'হ‍্যাঁ ঠিক শুনেছিস।'
                  'আচ্ছা তোকে তোর বাবা কী উপহার দিয়েছে?' 
                   'আমাকেও আমার বাবা দারুণ একটা জিনিস দিয়েছে।' বলার সঙ্গে সঙ্গে টোটোনের চেহারা খুশিতে ভরে উঠল।
                   'কী দিয়েছে দেখি?'
                   'দেখাচ্ছি। আয় আমার সঙ্গে।'
        এক কোণে রাখা পুরানো জংধরা ট্রাঙ্কটা টোটোন খুলে ধরতেই ওর মুখটা আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল। যেন অতি দুষ্প্রাপ্য সুবিশাল এক ডায়মণ্ডের জ‍্যোতি ওর মুখে এসে পড়েছে। টোটোন হাত বাড়িয়ে বের করে আনল যে জিনিসটা তা দেখে নিখিল রীতিমতো অবাক। এই সামান্য ঘুড়িটার জন‍্য টোটোনের এত আনন্দ!
                      'চল, মাঠে।' নিখিলের হাত ধরে টোটোন ঘুড়িটা নিয়ে একছুটে চলে গেল মাঠে। লাটাইটা নিজের হাতে রেখে নিখিলকে বলল 'নে ওড়া এবার।' উড়িয়ে দিল নিখিল ঘুড়িটা। টোটোন সুতোয় অল্প টান দিয়ে সুকৌশলে লাটাইয়ের সূতো ছাড়তে থাকে। দেখতে দেখতে ঘুড়িটা অনেক অনেক ওপরে উঠে গেল। 'দ‍্যাখ নিখিল, দ‍্যাখ। কত্ত ওপরে উঠে গেছে ঘুড়িটা! দ‍্যাখ, যেন আকাশে উঠে গেছে!'
                      নিখিল হতবাক। ঘুড়িটার দিকে তাকিয়ে থাকে একদৃষ্টে। না, তার ঘরভর্তি এত দামী দামী উপহার একসঙ্গে জড়ো করলেও ঐ দুপয়সার ঘুড়িটাকে টপকানো তো দূর ছুঁতেও পারবেনা। এমনকি বাবার দেওয়া রোবোটটাও নয়।



নাড়ুমামা
                   সুব্রত ভট্টাচার্য

মা অনেক দিন ধরে বলছিল, "যা না বাবা, সময় করে একবার নাড়ুমামার খবর নিয়ে আয় না। ছেলেমেয়েরা কাছে থাকে না। বউদিও মারা গেল। কেমন আছে কে জানে !"
যা হয়ে থাকে। নাড়ুমামাও আমাদের ফোনটোন করেন না। আমরাও করি না। 
সত্যি বলতে কী ফোন নম্বর হারিয়ে ফেলেছি। 
এক রোববার নাড়ুমামার বাড়ি গিয়ে হাজির হলাম। নাড়ুমামা তখন সামনের ঘরে এক ভদ্রলোককে খাওয়াতে ব্যস্ত। 
আমাকে দেখেই," সব ভালো তো? যা, ভিতরে গিয়ে বোস। তুই এলি কী আনন্দ হচ্ছে !"

 মামা-ভাগ্নের খাওয়াদাওয়া মিটলে নাড়ুমামাকে বললাম, "কী ব্যাপার বলতো? ভদ্রলোক কে?"
"দরিদ্রনারায়ণ । আমার জন্মদিন কিনা,
তাই একটু নারায়ণ সেবা করলাম।"
"আজ তোমার জন্মদিন? হতেই পারে না।"
 নাড়ুমামা হেসে ফেললেন," আমি এখন প্রতিদিনই জন্মদিন পালন করি। "
" সে আবার কী!"
"দ্যাখ, হঠাৎ একদিন ভেবে দেখলাম, গতকালের আমি আর আজকের আমি এক নই। আগামীকাল আবার নতুন আমি। জ্ঞান, বুদ্ধি, অভিজ্ঞতার মিশেলে রোজই আমি নতুন করে জন্মাচ্ছি। সেই থেকে প্রত্যেকটা দিনই আমার জন্মদিন।"

এরপর বোধহয় আর কোনো কথা চলে না।



জন্মদিন
সোমদত্তা জানা

আমরা এই পৃথিবীর বুকে জন্মগ্রহণ করেছি একটি বায়োলজিক্যাল অর্ডারে ।ঈশ্বরের সৃষ্টি পৃথিবীতে আমরা প্রত্যেকেই নারী ও পুরুষ মানুষকে চিনেছি ।
প্রকৃতি সৃষ্টির মূলে রয়েছে নারী ও পুরুষ উভয়েই ।যদি আমরা সনাতন ধর্মে বেদ শাস্ত্র পড়ে থাকি , সেখানে প্রতি মুহূর্তে আমরা নারী ও পুরুষের সাংগঠনিক কাজের অনেক উদাহরন পাই । সেই অর্থে আমরা বলতে পারি এই পৃথিবী সৃষ্টি তে শুধু নারীর ভূমিকা আছে তা নয় , পুরুষের ভূমিকা ও সমানভাবে উল্লেখযোগ্য। সুতরাং বৈজ্ঞানিকভাবে এবং বাস্তবসম্মতভাবে একটি নারী-পুরুষের সম্মিলনে আরেকটি প্রাণের সঞ্চার হয় ‌। ঠিক সেইভাবেই প্রকৃতির নিয়মেই আমিও আমার মায়ের গর্ভে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছিলাম।একজন মা তার সন্তানকে নয় মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে এবং তারপর সেই সন্তান পৃথিবীর আলো দেখে। মজার ব্যাপার হলো আমরা কেউই কিন্তু এই সময়েরস্মৃতি বহন করতে পারিনা । অর্থাৎ যখন আমরা ভূমিষ্ঠ হই সেই মুহূর্ত থেকে আমাদের প্রতিটি স্নায়ুতন্ত্র আমাদের চারপাশের পরিবেশের সাথে সাথে আমাদের জন্মদাতা জন্মদাত্রী এদেরকে চিনতে শেখায়। 
        আমার জন্ম 1988 সালের 27 শে জানুয়ারি। মায়ের কাছে শুনেছিলাম ডাক্তারবাবু নাকি তাকে বলেছিলেন তোমার গর্ভে এক মাতঙ্গিনী আসতে চলেছে । কি জানি কোন পদ্ধতিতে ডাক্তাররা বুঝতে পারে যে সে মাতঙ্গিনী নাকি নেতাজি। এটা আজও আমার কাছে একটা রহস্য। মায়ের কাছে শোনা যে 26 শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে আমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কোন কারণে আসতে একটু দেরি করে ফেলেছি । আর তাই আমি ঠিক পরবর্তী দিন এই পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছিলাম । আমি আমার বাবা মায়ের কাছে কৃতজ্ঞ যে এই পৃথিবীর মধ্যে হাজার কালো ছায়ার মধ্যেও অনেক আলোর রোশনাই খুঁজে নেওয়ার জন্য তারা আমাকে অগ্রসর করে নিয়েছেন । তারা তাদের ভালোবাসা, শিক্ষা ও সহানুভূতির মধ্য দিয়ে আমাকে গড়ে তুলেছেন। জন্মদিন সত্যিই একটি সুখানুভূতি একটি মায়ের কাছে , তার পরিবারের কাছে । যদিও সেই মুহূর্তে সেই সন্তানটি এই সুখ অনুভব করতে পারে না। কিন্তু যখন একটু একটু করে সেই শৈশব কৈশোর এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে যৌবনে পদার্পণ করে প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী তার বয়স একটু একটু করে বাড়তে থাকে তখন সে তার জন্মদিন কে আরো দৃঢ় ভাবে অনুভব করে। আর বারবার এটা মনে করতে থাকে এই জন্মদিন যেন বারবার ফিরে আসে তার জীবনে । এভাবেই আনন্দের শীখরে সমস্ত দুঃখের কালো ছায়া কাটিয়ে সে যেন আবার একটা নতুন পৃথিবী গড়তে পারে । আজকের এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়ে হয়তো জন্মদিন পালন একটু বেহিসেবি উচ্চপর্যায়ের বিলাসিতা বলে অনেকেই ভেবে থাকবেন । কিন্তু সত্যি নিজের বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনারা কেউই চান না এ জন্মদিনটা আমাদের জীবনে বারবার ফিরে আসুক নতুন ভাবে নতুন রূপে ‍? জন্মদিনের আনন্দ কে না উপভোগ করতে চায় বলুন। ভালোবাসার পৃথিবীতে ভালোলাগার জগতে নতুন প্রাণের সঞ্চার এভাবেই ফিরে আসে পৃথিবীর বুকে ।যেমন ভাবে একটি বীজ বপন করে নতুন চারা গাছ সৃষ্টি হয় , বেড়ে উঠে একটু একটু করে সে ভাবেই এই পৃথিবীর বুকে আমরা সন্তানরূপে কোন মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠি প্রতিমুহূর্উঠে। এক নতুন আলোর দিশা খুঁজে, কত আশা কত স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠি এই সমাজের মাঝে ।আর বাবা-মায়ের মেরুদন্ড হিসেবে সমাজে নিজের পরিচয় তৈরী করতে থাকি।


জন্মদিন

শ্রাবণী বসু
  
প্রতিটি ভোরে নতুন উপলব্ধিতে জেগে উঠে
প্রতিটা সূর্যোদয়কে মনে হয় নতুন,
এ কেবল মনে হওয়া নয়,
সত্যিই প্রতিটি দিন - আসলে জন্মদিন।

পোশাক থেকে ভুল কিংবা 
বিষাদের সুতো খুলে 
আবার পরে ,আবার খুলে 
 এই যে রূপের পরিবর্তন
এটাও আসলে জন্মদিন।

 কুঁড়িরা চোখ মেললে -ফুলের জন্মদিন,
 সূর্যের উদয় হলে - আলোর জন্মদিন
 চন্দ্রভূক অমাবস্যা - 
চাঁদের এক একটি কলা-
সবই আসলে নতুন ভাবে বদলে যাওয়া 
নতুন করে নতুন ভোরে চমকে ওঠার দিন
সবদিনই আসলে সবার জন্মদিন ।
 













No comments:

শুভ জন্মদিন শ্রদ্ধাঞ্জলি। প্রবোধচন্দ্র বাগচী । বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম পণ্ডিত, সাহিত্যের গবেষক এবং শিক্ষাবিদ। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় উপাচার্য। Dt -18.11.2024. Vol -1055 .Monday. The blogger post in literary e magazine.

প্রবোধচন্দ্র বাগচী    (১৮ নভেম্বর ১৮৯৮ - ১৯ জানুয়ারি ১৯৫৬)  বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম পণ্ডিত, সাহিত্যের গবেষক এবং শিক্ষাবিদ। ...