১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতৃপ্রদত্ত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ।
তার পিতার নাম মীর আবদুর রব ও মাতার নাম রওশন আরা মীর।
তার দাদার নাম আব্দুল ওহাব মোল্লা যিনি হবিগঞ্জ জেলায় জমিদার ছিলেন।
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলে পড়ালেখা করেন।
মূলত এই সময় থেকেই তার লেখালেখির শুরু। আল মাহমুদ বেড়ে উঠেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।
তিনি মধ্যযুগীয় প্রণয়োপাখ্যান, বৈষ্ণব পদাবলি, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল প্রমুখের সাহিত্য পাঠ
করে ঢাকায় আসার পর কাব্য সাধনা শুরু করেন এবং ষাট দশকেই স্বীকৃতি ও পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেন।
কর্মজীবন
সংবাদপত্রে লেখালেখির সূত্র ধরে ১৯৫৪ সালে মাহমুদ ঢাকা আগমন করেন।
সমকালীন বাংলা সাপ্তাহিক পত্র/পত্রিকার মধ্যে কবি আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী
সম্পাদিত ও নাজমুল হক প্রকাশিত সাপ্তাহিক কাফেলা পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন।
পাশাপাশি তিনি দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় প্রুফ রিডার হিসেবে সাংবাদিকতা জগতে পদচারণা শুরু করেন।
১৯৫৫ সাল কবি আব্দুর রশীদ ওয়াসেকপুরী কাফেলা পত্রিকার চাকরি ছেড়ে দিলে তিনি সেখানে সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৭১ সালে তিনি ভারত গমন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
যুদ্ধের পরে দৈনিক গণকণ্ঠ নামক পত্রিকায় প্রতিষ্ঠা-সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।
সম্পাদক থাকাকালীন এ সময় সরকারের বিরুদ্ধে লেখার কারণে এক বছরের জন্য কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়।
১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি গল্প লেখার দিকে মনোযোগী হন।
১৯৭৫ সালে তার প্রথম ছোটগল্প গ্রন্থ পানকৌড়ির রক্ত প্রকাশিত হয়।
পরে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে শিল্পকলা একাডেমীর গবেষণা ও প্রকাশনা
বিভাগের সহপরিচালক পদে নিয়োগ দেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি পরিচালক হন।
পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্যজীবন
১৯৫৪ সাল অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে তার কবিতা প্রকাশ পেতে থাকে.
ঢাকা থেকে প্রকাশিত সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকা এবং
কলকাতার নতুন সাহিত্য, চতুষ্কোণ, ময়ূখ ও কৃত্তিবাস ও বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত
'কবিতা' পত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে ঢাকা-কলকাতার পাঠকদের কাছে তার নাম
পরিচিত হয়ে ওঠে এবং তাকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়।
কাব্যগ্রন্থ
লোক লোকান্তর (১৯৬৩)
সর্বপ্রথম তাকে স্বনামধন্য কবিদের সারিতে জায়গা করে দেয়। এরপর কালের কলস (১৯৬৬),
সোনালি কাবিন (১৯৭৩), মায়াবী পর্দা দুলে উঠো (১৯৭৬) কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে প্রথম সারির
কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৩ সালে বের হয় তার প্রথম উপন্যাস কবি ও কোলাহল।
তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার নগরকেন্দ্রিক প্রেক্ষাপটে ভাটি বাংলার জনজীবন, গ্রামীণ আবহ,
নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবনপ্রবাহ এবং নরনারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহকে তার কবিতায় অবলম্বন করেন।
নারী ও প্রেমের বিষয়টি তার কবিতায় ব্যাপকভাবে এসেছে। উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হিসেবে নারীর যৌনতা, আকাঙ্ক্ষা ও ভোগের
লালসাকে তিনি শিল্পের অংশ হিসেবেই দেখিয়েছেন।
আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিত কাঠামোর মধ্যে স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় আঞ্চলিক শব্দের প্রয়োগ তার অনন্য কীর্তি।
১৯৬৮ সালে ‘লোক লোকান্তর’ ও ‘কালের কলস’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থের
জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর সবচেয়ে সাড়া জাগানো সাহিত্যকর্ম সোনালি কাবিন।
১৯৭০-এর দশকের শেষার্ধ তার কবিতায় বিশ্বস্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস উৎকীর্ণ হতে থাকে; এর জন্য তিনি প্রগতিশীলদের
সমালোচনার মুখোমুখি হন। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস “কবি ও কোলাহল”। কোনো কোনো
তাত্ত্বিকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিশ্বাসগ্রস্ততার কারণে তার বেশকিছু কবিতা লোকায়তিক সাহিত্যদর্শন দৃষ্টান্তবাদ দ্বারা
অগ্রহণযোগ্য। তবে একথাও সত্য, কবিতায় দর্শন থাকে, কিন্তু দর্শন দ্বারা কবিতা নিয়ন্ত্রিত নয়, কবিতা আবেগের কারবার।
উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ
লোক লোকান্তর (১৯৬৩)
কালের কলস (১৯৬৬)
সোনালী কাবিন (১৯৭৩)
মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো (১৯৭৬)
আরব্য রজনীর রাজহাঁস
বখতিয়ারের ঘোড়া
অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না
Selected Poems - Al Mahmud (১৯৮১)
দিনযাপন
দ্বিতীয় ভাঙ্গন
একটি পাখি লেজ ঝোলা
পাখির কাছে ফুলের কাছে
আল মাহমুদের গল্প
গল্পসমগ্র
প্রেমের গল্প
যেভাবে বেড়ে উঠি
কিশোর সমগ্র
কবির আত্নবিশ্বাস
কবিতাসমগ্র
কবিতাসমগ্র-২
পানকৌড়ির রক্ত
সৌরভের কাছে পরাজিত
গন্ধ বণিক
ময়ূরীর মুখ
না কোন শূন্যতা মানি না
নদীর ভেতরের নদী
পাখির কাছে , ফুলের কাছে
প্রেম ও ভালোবাসার কবিতা
প্রেম প্রকৃতির দ্রোহ আর প্রার্থনা কবিতা
প্রেমের কবিতা সমগ্র
উপমহাদেশ
বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ
উপন্যাস সমগ্র-১
উপন্যাস সমগ্র-২
উপন্যাস সমগ্র-৩
তোমার গন্ধে ফুল ফুটেছে (২০১৫) ছায়ায় ঢাকা মায়ার পাহাড় (রূপকথা)
ত্রিশেরা
উড়াল কাব্য
এ গল্পের শেষ নেই শুরুও ছিল না (মহাকাব্য)
একচক্ষু হরিণ
ব্যক্তিগত জীবন
আল মাহমুদ ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দা নাদিরা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।
পুরস্কার ও সম্মাননা
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮)
জয় বাংলা পুরস্কার (১৯৭২)
হুমায়ুন কবীর স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭২)
জীবনানন্দ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭২)
কাজী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৬)
কবি জসীম উদ্দিন পুরস্কার
ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬)
একুশে পদক (১৯৮৬)
নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯০)
ভানুসিংহ সম্মাননা পদক (২০০৪)
লালন পুরস্কার (২০১১)
বাসাসপ কাব্যরত্ন (২০১৭)
২০১৯ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ৮২ বছর বয়সে ঢাকার ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
জন্ম:জুলাই ১১, ১৯৬৭ পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন ও ভারতীয় বাঙালী বংশদ্ভুত লেখিকা।
তিনি তার গল্প সংকলন "ইন্টারপ্রেটার অফ ম্যালাডিস" এর জন্য ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেন.
১৯৯৯ ও হেনরি পুরস্কার
২০০০ পুলিৎজার পুরস্কার
২০১৪ সালে লাহিড়িকে জাতীয় মানবিক পদক দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বর্তমানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃজনশীল লেখার প্রফেসর
সাহিত্য ছোট গল্প
ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস (১৯৯৯)
আনএকাস্টমড আর্থ (২০০৮)
উপন্যাস
দ্য নেমশেক (২০০৩)
ছোট গল্প
"নোবডিস বিজনেস" (১১ মার্চ ২০০১, দ্য নিউ ইয়োর্কার)
("সেরা আমেরিকান ছোট গল্প ২০০২")"হেল-হেভেন"
(২৪ মে ২০০৪, দ্য নিউ ইয়োর্কার)"ওয়ান্স ইন এ লাইফ টাইম"
(১ মে ২০০৬, দ্য নিউ ইয়োর্কার)"ইয়ার্স এন্ড"
(২৪ ডিসেম্বর ২০০৭, দ্য নিউ ইয়োর্কার)
পুরস্কার
১৯৯৩ ট্রান্সএ্যাটলান্টিক পুরস্কার হেনফিল্ড ফাউন্ডেশন
১৯৯৯ ও হেনরি অ্যাওয়ার্ড ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস
১৯৯৯ পেন / হেমিংওয়ে পুরস্কার "ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস" এর জন্য (বছরের সেরা কথাসাহিত্য অভিষেক)
১৯৯৯ সেরা মার্কিন ছোট গল্প ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস
২০০০ অ্যাডিসন মেটকালফ পুরস্কার আমেরিকান একাডেমি অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস
২০০০ নিউ ইয়র্কের সেরা বছরের প্রথম আসর ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস
২০০০ কথাসাহিত্যের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার ইন্টারপ্রেটার অব ম্যালডিস
২০০০ এম এফ কে ফিশার বিশিষ্ট লেখার পুরস্কার ফুড অ্যান্ড ওয়াইন ম্যাগাজিনে "ইন্ডিয়ান টেকআউট" জেমস বিয়ার্ড ফাউন্ডেশন
২০০২ গুগেনহেম ফেলোশিপ
২০০২ সেরা আমেরিকান ছোট গল্প নোবডিস বিজনেস
২০০৮ ফ্র্যাঙ্ক ও'কনর আন্তর্জাতিক ছোট গল্পের পুরস্কার আনএকাস্টমড আর্থ
২০০৯ এশিয়ান আমেরিকান সাহিত্য পুরস্কার আনএকাস্টমড আর্থ
২০০৯ ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করা বিদেশী কথাসাহিত্যের জন্য গ্রেগর ফন রেজ্জরি পুরস্কার ফেদারিকা ওডেডিরা (গুয়ান্ডা) অনুবাদকৃত "আনএকাস্টমড আর্থ"
২০১৪ দক্ষিণ এশীয় সাহিত্যের জন্য ডিএসসি পুরস্কার দ্য লোল্যান্ড
২০১৪ জাতীয় মানবিক পদক
২০১৭ কলম / মালামুদ পুরস্কার
∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆
No comments:
Post a Comment