Sunday, 27 March 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। প্রগতিশীল লেখক সত্যেন সেন। ২৮.০৩.২০২২. Vol - 686. The blogger in literature e-magazine

সত্যেন সেন

তিনি সাহিত্যকর্ম সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার একটি নিদর্শন এবং বাংলা সাহিত্যের অনন্য পথিকৃৎ। মানুষের জীবন ও ইতিহাসকে যে রচনাকার সামগ্রীকভাবে অবলোকন করতে সক্ষম না হন, যিনি মানব সমাজটাকে তার বর্তমানের সকল বৈষম্য দূর করে সঙ্গতিপূর্ণ এক মানব সমাজ সৃষ্টিতে নিজেকে উৎসর্গ না করেন এবং যিনি দূরগামী সেই লক্ষ্যকে নিত্য মুহূর্তের কর্ম ও আচরণের সঙ্গে যুক্ত করতে না পারেন, তার পক্ষে সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার অনুপ্রেরণাদায়ক সাহিত্য সৃষ্টি সম্ভব নয়।

১৯৬৯ সালে বিপ্লবী কথাশিল্পী সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লা কায়সারসহ একঝাঁক তরুণ উদীচী গঠন করেন। জন্মলগ্ন থেকে উদীচী অধিকার, স্বাধীনতা ও সাম্যের সমাজ নির্মাণের সংগ্রাম করে আসছে। উদীচী ’৬৮, ’৬৯, ’৭০, ’৭১, সালে বাঙালির সার্বিক মুক্তির চেতনাকে ধারণ করে গড়ে তোলে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। [১] এ সংগ্রাম গ্রামবাংলার পথেঘাটে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উদীচীর কর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।

উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী এদেশে সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারার সংস্কৃতি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সত্যেন সেনের সৃষ্টিকর্ম ও সাহিত্য হলো সমাজ বাস্তবতার স্পষ্ট প্রকৃতি-স্বরূপের প্রতিচ্ছবি। তার জীবনের সকল কিছুতেই মৌলিক বিষয় হিসেবে কাজ করেছে মানুষের জীবন-সংগ্রাম ও শ্রম-সভ্যতার ইতিহাস। স্বাধীনতার পর তিনি উদীচী পুনর্গঠনের কাজ করেন। সাহিত্য চর্চাও অব্যহত রাখেন।

গান মাধ্যমে মানুষকে জাগরিত করা সহজ। এই উপলব্দি নিয়ে গণমানুষের জন্য মানুষের জীবন বাস্তবতার গান রচনা করেছেন। তার গানের মূল বিষয়বস্তু হলো অধিকার আদায়ের সংগ্রাম, শোষণমুক্তির জন্য আন্দোলন ও সাম্য-সুন্দর মানুষের পৃথিবী নির্মাণ। গান রচনার মাধ্যমেই মূলত তার লেখালেখি জগতে আশা। পাশাপাশি গানের সুর করা ও গান শেখানোর কাজও তিনি করেছেন। শ্রমিকদের নিয়ে তিনি তাঁদের নিয়ে গান এবং পালা রচনা করতেন। গানের দল গঠন করে শ্রমিকদের এ কবিগান তিনি রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ পরিবেশন করতেন। তার লেখা ১১টি গানের মধ্যে ‘চাষি দে তোর লাল সেলাম/তোর লাল নিশানারে’ গানটি তখন চাষিদের জাতীয় সঙ্গীত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৯৫৬ সালে বিক্রমপুরের ষোলঘরে কৃষক সমিতির সম্মেলনে প্রথম তারই নেতৃত্বে গানটি গাওয়া হয়। এছাড়া সত্যেন সেন গানের মাধ্যমে বরিশালে মনোরমা বসু মাসিমার ‘মাতৃমন্দিরের’ জন্য তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন। সত্যেন সেন একজন নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন। জীবনের নানা চড়াই-উৎরাইয়ের বাঁকে তিনি কোথাও আপোস করেননি। যারা করেছে, তাদেরকে তিনি ঘৃণা করতেন। তিনি মূলত কোনো লেখাই লেখার জন্য লিখতেন না। তিনি লিখতে মানূষের অধিকারের কথাগুলো। প্রথমে দৈনিক ‘মিল্লাত’ পরবর্তী সময়ে দৈনিক ‘সংবাদ’র মাধ্যমে সত্যেন সেন সাংবাদিকতা করেছেন।

জন্ম ১৯০৭ সালের ২৮শে মার্চ বিক্রমপুর (বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার) টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সেন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় ডাক নাম ছিল লস্কর। তার পিতার নাম ধরনীমোহন সেন এবং মাতার নাম মৃণালিনী সেন। চার সন্তানের মধ্যে সত্যেন ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। সোনারং গ্রামের সেন পরিবার ছিল শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার এক অনন্য উদাহরণ। সত্যেনের কাকা ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তার আরেক কাকা মনোমোহন সেন ছিলেন শিশুসাহিত্যিক। সত্যেন সেনের পরিবারেই তার পড়াশোনার হাতেখড়ি হয়। প্রাইমারি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা পরিবার ও গৃহশিক্ষকের কাছেই সম্পন্ন করেছিলেন। ১৯১৯ সালে সোনারং হাইস্কুলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯২১ সালে তিনি যখন সোনারং হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তখন থেকেই তার মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ লাভ করে। ১৯২৪ সালে সোনারঙ হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতায় কলেজে ভর্তি হন এবং সেখানকার একটি কলেজ থেকে এফএ ও বিএ পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাস বিভাগে এমএ শ্রেণীতে ভর্তি হন। কিন্তু বিপ্লবী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কারণে ১৯৩১ সালে কারাবরণ করলে জেলে থেকেই তিনি বাংলা সাহিত্যে এমএ পাস করেন. 
কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি যুক্ত হন বিপ্লবী দল যুগান্তরের সাথে। ছাত্র অবস্থায় ১৯৩১ সালে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে প্রথম কারাবরণ করতে বাধ্য হন। বহরমপুর বন্দি ক্যাম্পে থেকেই শুরু হয় তার জেলজীবন। এ সময় তিনি ৩ মাস জেলে ছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লববাদী আন্দোলনের যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনি ১৯৩৩ সালে দ্বিতীয় বার গ্রেফতার হন। এ সময় তার ৬ বছর জেল হয়। সত্যেন সেন ১৯৩৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পান। ওই বছর শান্তিনিকেতন থেকে তাকে দেয়া হয় ‘গবেষণা বৃত্তি’। ১৯৪২ সালের ৮ মার্চ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে এক সমাবেশে শহীদ হন ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিপ্লবী কথা শিল্পী সোমেন চন্দ। এ সময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সত্যেন সেন কার্যকারী দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৩ সালের মহাদুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ‘কৃষক সমিতি’র মাধ্যমে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। কৃষক সমিতির নেতা-কর্মীকে নিয়ে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় কাজ করেন। ১৯৪৬ সালে আইনসভার নির্বাচনে কমিউনিস্ট নেতা ব্রজেন দাস ঢাকা থেকে প্রার্থী হন। ব্রজেন দাসের পক্ষে সত্যেন সেন নির্বাচনী প্রচারণা চালান। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারত সৃষ্টি হওয়া পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয়। ১৯৪৯ সালে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য তাকে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী গ্রেফতার করে। আবার দীর্ঘ কারাভোগ। ওই সময় কারাগারে কমিউনিস্টদের প্রতি নানা অত্যাচার ও নির্যাতনে মাত্রা ছিল অনেক বেশি।

কমিউনিস্ট পেলেই বেশি অত্যাচার শুরু করে দিত। সত্যেন সেনকেও কারা প্রশাসন নানা অত্যাচার ও নির্যাতন করে। যার ফলে তার শারীরিক অসুস্থতা ও চোখের পীড়া দেখা দেয়। কারাবাসে অবস্থানকালে সত্যেন সেন মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাজনৈতিক মতাদর্শ ও দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হন। এ মতাদর্শ ও দর্শনকে জীবনাদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে আজীবন শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। দীর্ঘদিন কারাভোগ শেষে ১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়ে নিজ গ্রাম সোনারাংয়ে ফিরে আসেন। ওই সময় নানা প্রতিকূল পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে তাদের পরিবারের সবাই নিরাপত্তার কারণে কলকাতায় পাড়ি জমান। তিনি এ সময় যুক্ত হন কৃষক আন্দোলনের সাথে। ১৯৭১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ অংশ নেন। তবে তিনি প্রত্যক্ষভাবে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। মুক্তিযোদ্ধাদেরকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এক পর্যায়ে তার চোখের পীড়া আরো গুরুতর রূপ নেয়। তিনি প্রায় অন্ধ হতে চলেন। এ সময় কমিউনিস্ট পার্টি তাকে চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য মস্কো পাঠায়। এখানে অবস্থানকালে তিনি বিভিন্ন দেশের বিপ্লবীদের পরিচিত হন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তাদের অবহিত করেন। তারাও স্ব-স্ব দেশে গিয়ে বাংলাদেশের প্রতি সহনাভূতি জানান। মস্কো হাসপাতালে অবস্থানকালে তিনি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার সংবাদ পান। সেখানকার বাঙালিদের মুক্তির উল্লাস প্রত্যক্ষ করেন। তিনি নিজেও অশ্রুসিক্ত নয়নে ওই আনন্দ উপভোগ করেন। মুক্ত, স্বাধীন স্বপ্নের স্বদেশ, বাংলাদেশে ফিরে আসেন ১৯৭২ সালে।

রচনা কর্ম :

উপন্যাস 
ভোরের বিহঙ্গী (১৯৫৯),
রুদ্ধদ্বার মুক্ত প্রাণ (১৯৬৩),
অভিশপ্ত নগরী(১৯৬৯),
পাপের সন্তান (১৯৬৯),
সেয়ান (১৯৬৯),
পদচিহ্ন (১৯৬৯),
পুরুষমেধ(১৯৬৯),
আলবেরুনী(১৯৭০),
সাত নম্বর ওয়ার্ড(১৯৭০),
বিদ্রোহী কৈর্বত(১৯৭০),
কুমারজীব(১৯৭০),
অপারেজয়(১৯৭০),
মা(১৯৭০),
উত্তরণ(১৯৭০),
একুল ভাঙ্গে ওকুল গড়ে (১৯৭১)


ইতিহাস আশ্রিত গল্প-উপন্যাস-সাহিত্য 

গ্রামবাংলার পথে পথে (১৯৬৬)
আমাদের পৃথিবী (১৯৬৮)
মসলার যুদ্ধ (১৯৬৯)
এটোমের কথা(১৯৭০)
অভিযাত্রী (১৯৭০)
মানবসভ্যতার উষালগ্ন (১৯৭১)
মনোরমা মাসিমা (১৯৭১)
প্রতিরোধ সংগ্রামে বাংলাদেশ (১৯৭১)
বিপ্লবী রহমান মাষ্টার (১৯৭৩)
সীমান্ত সূর্য আবদুল গাফফার (১৯৭২)
জীববিজ্ঞানের নানা কথা (১৯৭৭) ইত্যাদি।

ছোটদের জন্য লিখিত গল্প 

পাতাবাহার (১৯৬৮) অন্যতম।

পুরস্কার 
১৯৬৯ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার
১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার
১৯৮৬ সালে সাহিত্য মরণোত্তর একুশে পদক।

 ১৯৭৩ সালে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ফলে আবার দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। চিকিৎসার জন্য চলে যান ভারতে। আশ্রয় নেন শান্তি নিকেতনের মেজদিদি প্রতিভা সেনের কাছে। সাহিত্য চর্চা ও অসুস্থতার মাঝে চলে যায় ৮টি বছর। শান্তি নিকেতনের গুরুপল্লীতে ১৯৮১ সালে ৫ জানুয়ারি তিনি মারা যান।
===============∆∆∆∆∆∆==========

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। কবি মল্লিকা সেনগুপ্ত। ২৭.০৩.২০২২. Vol -685.. The blogger in literature e-magazine


মল্লিকা সেনগুপ্ত 


১৯৬০ খ্রি. ২৭ মার্চ ভারতের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর কবি-জীবন শুরু ১৯৮১ খ্রি. এবং সেই থেকে তিনি ১১টি কবিতার বই, দুটি উপন্যাস এবং বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্ত মহারাণী কাশীশ্বরী কলেজের সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ৯০ এর দশকে তিনি অপর্ণা সেন সম্পাদিত 'সানন্দা' পত্রিকার কবিতা বিভাগের সম্পাদনা করতেন। স্বামী সুবোধ সরকারের সাথে তিনি 'ভাষানগর' নামক একটি সাংস্কৃতিক পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।


মল্লিকার কবিতা আপষহীন রাজনৈতিক ও নারীবাদী হিসেবে পরিচিত। তার লেখনির গুণে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তার লেখা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। 

ইতিহাসের ব্রাত্য নারী চরিত্ররা প্রায়ই তার লেখায় পুনর্জীবিত হয়েছেন। সমসাময়িক কবি সংযুক্তা দাসগুপ্তের ভাষায় "তার কবিতায় নারীস্বত্বা কেবলমাত্র অন্তর্ভূতি সচেতনতা হিসেবেই থেকে যায় না, সেটা প্রস্ফুটিত হয় সমস্ত প্রান্তিক নারীর নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক স্বতস্ফুর্ত প্রতিবাদ।"

বিশেষ বই :

কথামানবী কবিতা
পুরুষকে লেখা চিঠি
আমাকে সারিয়ে দাও ভালবাসা
সীতায়ন উপন্যাস

পুরস্কার ও সম্মাননা 

১৯৯৮ ভারত সরকারের জুনিয়র রাইটার ফেলোশিপ।
১৯৯৮ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুকান্ত পুরস্কার।
২০০৪ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি অনীতা-সুনীল বসু পুরস্কার।

 রচনা কর্ম :
কবিতা 

চালিশ চন্দর আইয়ু, ভাইরাস প্রকাশনা, 1983 অমি সিন্ধুর মিয়ে, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1988 হাঘরে হে দেবদাসী, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1991 অর্ধেক পৃথ্বী, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1993, আইএসবিএন 81-7215-247-7 মায়দার আ আ কা কা, প্রতিভা প্রকাশ, কলকাতা, 1998 কথামনবী, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৯৯, আইএসবিএন 81-7215-915-3 দেওলিয়ার র‌্যাট, পাত্রলেখা, কলকাতা, 2001 আমড়া লাস্য আমড়া লাদাই, শ্রুতি প্রকাশনী, কলকাতা, 2001 বইয়ের অংশ (২ টি অনুবাদ) পুরুষকে লেখিকা চিঠি, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০৩, আইএসবিএন 81-7756-286-এক্স বইয়ের অংশ (1 টি কবিতা অনলাইন) ছলেকে ইতিহাস প্যারাট গিয়ে, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০৫ শ্রেষ্ঠ কবিতা, কলকাতা, দে প্রকাশনা, ২০০। আমাকে সারিয়ে দাও ভালোবাসা, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০০,, আইএসবিএন 81-7756-573-7 পুরুষু জানানো একশো কবিতা, দীপ প্রকাশন, কলকাতা, 2007 ও জানেমন জীবনানদা, বনোলতা সেন লিখচি, কলকাতা, আনন্দ পাব। ২০০৮ ব্রিস্টিমিচিল বরুদমিছিল, কলকাতা, আনন্দ পাব। ২০১০

  ইংরেজি অনুবাদে কবিতা 
ক্যারিয়ার্স অফ ফায়ার, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০২ কথামনবী, তাঁর কন্ঠ এবং অন্যান্য কবিতা, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০৫ 

উপন্যাস 
সীতায়ান, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1995, আইএসবিএন 81-7215-618-9 স্লীলতাহানির পার, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৯ 1996, আইএসবিএন 81-7215-713-4 কবির বাউঠান, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০১১, আইএসবিএন 978-81-7756-977-3

 লিঙ্গ সমাজতত্ত্ব উপর বই 

স্ট্রিলিঙ্গ নির্মানা, আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, 1994, আইএসবিএন 81-7215-368-6 
পুরুষ নুই পুরুষতন্ত্র, বিকাশ গ্রন্থ ভবন, কলকাতা, ২০০২
 বিবিহাবিছিন্নার অখন, 
বাঙ্গাল সমাজ ও সাহিত্য, কলকাতা, পাপিরাস, 2007 
অনুবাদ 

আকলের মাধে সরস, 
কেদারনাথ সিংয়ের হিন্দি কবিতা থেকে অনুবাদ, সাহিত্য আকাদেমি, কলকাতা, 1998 1998

 বাংলা কবিতা নৃবিজ্ঞান 

দু'ই বাঙ্গালার মায়দার শ্রদ্ধা কবিতা, উপাসনা, কলকাতা, 2003 - 



মৃত্যু -২৮ মে ২০১১ কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,. 


কবিতা ১

আপনি বলুন, মার্কস 

ছড়া যে বানিয়েছিল, কাঁথা বুনেছিল
দ্রাবিড় যে মেয়ে এসে গমবোনা শুরু
করেছিল
আর্যপুরুষের ক্ষেতে, যে লালন
করেছিল শিশু
সে যদি শ্রমিক নয়, শ্রম কাকে বলে ?
আপনি বলুন মার্কস, কে শ্রমিক,
কে শ্রমিক নয়
নতুনযন্ত্রের যারা মাসমাইনের
কারিগর
শুধু তারা শ্রম করে !
শিল্পযুগ যাকে বস্তি উপহার দিল
সেই শ্রমিকগৃহিণী
প্রতিদিন জল তোলে, ঘর মোছে,
খাবার বানায়
হাড়ভাঙ্গা খাটুনির শেষে রাত হলে
ছেলেকে পিট্টি দিয়ে বসে বসে কাঁদে
সেও কি শ্রমিক নয় !
আপনি বলুন মার্কস, শ্রম কাকে বলে !
গৃহশ্রমে মজুরী হয়না বলে মেয়েগুলি শুধু
ঘরে বসে বিপ্লবীর ভাত রেঁধে দেবে
আর কমরেড শুধু যার
হাতে কাস্তে হাতুড়ি !
আপনাকে মানায় না এই অবিচার
কখনো বিপ্লব হলে
পৃথিবীর স্বর্গরাজ্য হবে
শ্রেণীহীন রাস্ট্রহীন আলোপৃথিবীর
সেই দেশে
আপনি বলুন মার্কস,
মেয়েরা কি বিপ্লবের সেবাদাসী
হবে ?

কবিতা ২

কন্যাশ্লোক

আশ্বিনের এক প্রাগৈতিহাসিক সকালে শ্রীরামচন্দ্র যে দুর্গার বোধন করেছিলেন
স্বর্গের দেবপুরুষগণ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে যে রণদেবীকে অসুর নিধনে পাঠিয়েছিলেন
সেই দুর্গাই একুশ শতকে নারীর ক্ষমতায়ন।
তাঁর মহাতেজ চিরজাগরুক আগুন হয়ে জ্বলে উঠুক
মাটির পৃথিবীর প্রতিটি নারীর মধ্যে।
হে মহামানবী, তোমাকে সালাম!

মেয়েটির নাম দুর্গা সোরেন বটেক
মায়ের ছিলনা অক্ষর জ্ঞান ছটেক।
সর্বশিক্ষা অভিযানে পেয়ে বৃত্তি
দুর্গা হয়েছে ইংরেজি স্কুলে ভর্তি।
সাঁওতালি গান, ইংরেজি ভাষা বাঁ হাতে
কম্প্যুটারে শিখেছে ইমেল পাঠাতে।
অঙ্কের স্যার ভুল হলে যোগ বিয়োগে
গায়ে হাত দেয় পড়া শেখানোর সুযোগে।
দুর্গা জানেনা কোনটা যৌন লাঞ্ছনা
স্যারটা নোংরা বটেক!–কথাটা মানছ না?
শেষে একদিন স্যারের নোংরা হাতটা
মোচড়ে দিয়েছে দুর্গা, মেরেছে ঝাপটা!
ওরে অর্ধেক আকাশে মাটিতে শ্যাওলা
আকাশে উড়বে, হবে কল্পনা চাওলা।
যদি না বিমান ভেঙে পড়ে তার দুদ্দাড়
মহাকাশচারী হবেই বটেক দুর্গা।
বিশ্বায়নে পণ্যায়নে
খণ্ড খণ্ড মানচিত্রে বাংলা বিহার রাজস্থানে
সাধারণী নমস্তুতে!
পণ্যব্রতে, পত্নীব্রতে মোহমুদ্রা,ধ্বংসমুদ্রা প্রযুক্তিতে
গৃহকর্মে সাধারণী নমস্তুতে!
আমার দুর্গা পথে প্রান্তরে স্কুল ঘরে থাকে
আমার দুর্গা বিপদে আপদে আমাকে মা বলে ডাকে।
আমার দুর্গা আত্মরক্ষা শরীর পুড়বে, মন না
আমার দুর্গা নারী গর্ভের রক্তমাংস কন্যা।
আমার দুর্গা গোলগাল মেয়ে, আমার দুর্গা তন্বী।
আমার দুর্গা কখনো ঘরোয়া, কখনো আগুন বহ্নি।
আমার দুর্গা মেধাপাটেকর, তিস্তা শিতলাবাদেরা
আমার দুর্গা মোম হয়ে জ্বালে অমাবস্যার আঁধেরা।
আমার দুর্গা মণিপুর জুড়ে নগ্নমিছিলে হাঁটে
আমার দুর্গা কাস্তে হাতুড়ি, আউশ ধানের মাঠে।
আমার দুর্গা ত্রিশূল ধরেছে,স্বর্গে এবং মর্ত্যে
আমার দুর্গা বাঁচতে শিখেছে নিজেই নিজের শর্তে।

আন্দোলনে উগ্রপন্থে, শিক্ষাব্রতে কর্মযজ্ঞে রান্নাঘরে, আঁতুড় ঘরে।
মা তুঝে সালাম !
অগ্নিপথে, যুদ্ধজয়ে, লিঙ্গসাম্যে, শ্রেণিসাম্যে দাঙ্গাক্ষেত্রে, কুরুক্ষেত্রে।
মা তুঝে সালাম!
মা তুঝে সালাম!
মা তুঝে সালাম!


কবিতা ৩

শুভম তোমাকে অনেকদিন পরে
হটাত দেখেছি বইমেলার মাঠে
গতজন্মের স্মৃতির মতন
ভুলে যাওয়া গানের মতন
ঠিক সেই মুখ, ঠিক সেই ভুরু
শুধুই ঈষৎ পাক ধরা চুল
চোখ মুখ নাক অল্প ফুলেছে
ঠোঁটের কোনায় দামি সিগারেট
শুভম, তুমি কি সত্যি শুভম!

মনে পড়ে সেই কলেজ মাঠে
দিনের পর দিন কাটত
কীভাবে সবুজ ঘাসের মধ্যে
অন্তবিহীন সোহাগ ঝগড়া!
ক্রমশই যেন রাগ বাড়ছিল
তুমি চাইতে ছায়ার মতন
তোমার সঙ্গে উঠব বসব
আমি ভাবতাম এতদিন ধরে
যা কিছু শিখেছি, সবই ফেলনা!
সব মুছে দেব তোমার জন্য?
তুমি উত্তম-ফ্যান তাই আমি
সৌমিত্রের ভক্ত হব না!
তোমার গোষ্ঠী ইস্টবেঙ্গল
আমি ভুলে যাব মোহনবাগান!
তুমি সুচিত্রা, আমি কণিকার
তোমার কপিল, আমার তো সানি!
তোমার স্বপ্নে বিপ্লব তাই
আমি ভোট দিতে যেতে পারব না!

এমন তরজা চলত দুজনে
তবুও তোমার ঘাম গন্ধ
সস্তা তামাক স্বপ্নের চোখ
আমাকে টানত অবুঝ মায়ায়
আমার মতো জেদি মেয়েটিও
তোমাকে টানতো প্রতি সন্ধ্যায়
ফাঁকা ট্রাম আর গঙ্গার ঘাটে

তারপর তুমি কম্পিউটার
শেখার জন্য জাপান চললে
আমিও পুণের ফিলমি কোর্সে
প্রথম প্রথম খুব চিঠি লেখা
সাত দিনে লেখা সাতটা চিঠি
ক্রমশ কমল চিঠির সংখ্যা
সপ্তাহে এক, মাসে একটা
ন মাসে ছ মাসে, একটা বছরে
একটাও না… একটাও না…
ডাক বাক্সের বুক খাঁ খাঁ করে
ভুলেই গেছি কতদিন হল,
তুমিও ভুলেছ ঠিক ততদিন। 

তারপর সেই পৌষের মাঠে
হটাত সেদিন বইমেলাতে
দূরে ফেলে আসা গ্রামের মতো
তোমার মুখটা দেখতে পেলাম
শুভম, তুমি কি সত্যি শুভম!


ক্রিয়াকলাপ এবং সাহিত্যের থিম 

সেনগুপ্ত বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ ও লিঙ্গ অ্যাক্টিভিজম গ্রুপেও সক্রিয় ছিলেন। তার জ্বলন্ত, সংক্রামক সুরটি অনেক কবিতায় লক্ষণীয়, উদাঃ "আমার ছেলের ইতিহাস পড়ানোর সময়": মানুষ একা ছিল Godশ্বর এবং দেবী উভয়ই মানুষ বাবা এবং মা উভয়ই ছিল সুর ​​ও বাঁশি দুটোই লিঙ্গ এবং যোনি উভয়ই যেমনটি আমরা ইতিহাস থেকে শিখেছি। - মল্লিকা সেনগুপ্ত থেকে, কথামনবী, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০ 2005, (ত্রি কবি) ইতিহাসে প্রায়শই মহিলাদের প্রান্তিক ভূমিকা নিয়ে কাজ করা: যুদ্ধের পরে চেঙ্গিস খান বলেছিলেন জীবনের সর্বাধিক আনন্দ, পরাজিত শত্রুর সামনে তার প্রিয় স্ত্রীর সাথে ঘুমাতে। – যুদ্দশেশে এনআরআই - মল্লিকা সেনগুপ্ত থেকে, কথামনবী, ভাসানগর, কলকাতা, ২০০ 2005, (ত্র। অমিতাভা মুখার্জি) বিশেষত উচ্ছৃঙ্খল হ'ল খানা কিংবদন্তীর তাঁর নারীবাদী উপস্থাপনা, একটি মধ্যযুগীয় মহিলা কবি, যার জিহ্বা তার jeর্ষান্বিত স্বামী দ্বারা কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে: মধ্যযুগে বাংলায় এক মহিলা খানা বেঁচে ছিলাম, আমি তার জীবন গাইছি প্রথম বাঙালি মহিলা কবি তার জিভ তারা একটি ছুরি দিয়ে কাটা তার নির্বাক কণ্ঠ, "খানার বাচন" এখনও পাহাড় এবং আকাশে অনুরণিত হয় খানা নামে একমাত্র কবি রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। – খানআ, ট্র অমিতাভ মুখার্জি ।

=================================




    Thursday, 24 March 2022

    জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। উইলিয়াম মরিস। ২৪.০৩.২০২২. Vol -683. The blogger in literature e-magazine

    উইলিয়াম মরিস ( William Morris)

    "Morris has exerted a powerful influence on thinking about art and design over the past century. He has been the constant niggle in the conscience. How can we combat all this luxury and waste? What drove him into revolutionary activism was his anger and shame at the injustices within society. He burned with guilt at the fact that his "good fortune only" allowed him to live in beautiful surroundings and to pursue the work he adored."

    তিনি  তাঁর কল্পলৌকিক উপন্যাস নিউজ ফ্রম নোহোয়্যার-এর জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ব্রিটিশ চারু ও কারুকলা আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকে তিনি ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ টেক্সটাইল শিল্প এবং এর উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তার সাহিত্যিক অবদান আধুনিক ফ্যান্টাসি সাহিত্য প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে, যেখানে তিনি ব্রিটেনের প্রথমদিকের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সহযোগিতা করেন।
    Morris was born in WalthamstowEssex, to a wealthy middle-class family 24th March, 1834 . He came under the strong influence of medievalism while studying Classics at Oxford University, there joining the Birmingham Set. After university, he married Jane Burden, and developed close friendships with Pre-Raphaelite artists Edward Burne-Jones and Dante Gabriel Rossetti and with Neo-Gothic architect Philip Webb. Webb and Morris designed Red House in Kent where Morris lived from 1859 to 1865, before moving to Bloomsbury, central London. In 1861, Morris founded the Morris, Marshall, Faulkner & Co. decorative arts firm with Burne-Jones, Rossetti, Webb, and others, which became highly fashionable and much in demand. The firm profoundly influenced interior decoration throughout the Victorian period, with Morris designing tapestries, wallpaper, fabrics, furniture, and stained glass windows. In 1875, he assumed total control of the company, which was renamed Morris & Co.
    মরিস 1871 সাল থেকে অক্সফোর্ডশায়ারের কেল্মসকট ম্যানরের গ্রামীণ রিট্রিট ভাড়া নিয়েছিলেন এবং লন্ডনে একটি প্রধান বাড়িও রেখেছিলেন। ইরিকর ম্যাগনসনের সাথে  আইসল্যান্ড সফরের দ্বারা তিনি ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং তিনি আইসল্যান্ডিক সাগাসের ইংরেজি-ভাষায় অনুবাদের একটি সিরিজ তৈরি করেছিলেন। 
    এছাড়াও তিনি তাঁর মহাকাব্য ও উপন্যাস প্রকাশের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছিলেন, যেমন The Earthly Paradise (1868-1870), A Dream of John Ball (1888), The Utopian News from Nowhere (1890), এবং ফ্যান্টাসি রোম্যান্স The Well at the বিশ্বের শেষ (1896)। 
    1877 সালে, তিনি স্থাপত্য পুনরুদ্ধারের ফলে সৃষ্ট ক্ষতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য প্রাচীন বিল্ডিংগুলির সুরক্ষার জন্য সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মার্কসবাদ গ্রহণ করেন এবং 1880-এর দশকে নৈরাজ্যবাদ দ্বারা প্রভাবিত হন এবং একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক কর্মী হয়ে ওঠেন। সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফেডারেশন (এসডিএফ)-এ জড়িত থাকার পর তিনি 1884 সালে সোশ্যালিস্ট লীগ প্রতিষ্ঠা করেন, কিন্তু 1890 সালে তিনি সেই সংস্থার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। 1891 সালে, তিনি সীমিত-সংস্করণ, আলোকিত-শৈলীর মুদ্রণ বই প্রকাশের জন্য কেল্মসকট প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন, একটি কারণ যার জন্য তিনি তার শেষ বছরগুলোকে উৎসর্গ করেছিলেন।
    মরিস ভিক্টোরিয়ান ব্রিটেনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃত। 
    তিনি তার জীবদ্দশায় একজন কবি হিসাবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন, যদিও তিনি মরণোত্তর তার নকশার জন্য আরও পরিচিত হয়ে ওঠেন। 
    1955 সালে প্রতিষ্ঠিত উইলিয়াম মরিস সোসাইটি তার উত্তরাধিকারের জন্য নিবেদিত, যখন তার কাজের একাধিক জীবনী এবং গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। তার জীবনের সাথে যুক্ত অনেক বিল্ডিং দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত, তার অনেক কাজ আর্ট গ্যালারী এবং জাদুঘরে পাওয়া যাবে এবং তার ডিজাইন এখনও তৈরি করা হচ্ছে।
    সাহিত্য কর্ম :

    Morris was heavily influenced by the writings of the art critic John Ruskin, being particularly inspired by his chapter "On the Nature of Gothic Architecture" in the second volume of The Stones of Venice; he later described it as "one of the very few necessary and inevitable utterances of the century". Morris adopted Ruskin's philosophy of rejecting the tawdry industrial manufacture of decorative arts and architecture in favour of a return to hand-craftsmanship, raising artisans to the status of artists, creating art that should be affordable and hand-made, with no hierarchy of artistic mediums. Ruskin had achieved attention in Victorian society for championing the art of a group of painters who had emerged in London in 1848 calling themselves the Pre-Raphaelite Brotherhood. The Pre-Raphaelite style was heavily Medievalist and Romanticist, emphasising abundant detail, intense colours and complex compositions; it greatly impressed Morris and the Set. Influenced both by Ruskin and by John Keats, Morris began to spend more time writing poetry, in a style that was imitative of much of theirs.


    উল্লেখযোগ্য কর্ম - নিউজ ফ্রম নোওয়্যার, দ্য ওয়েল অ্যাৎ দ্য ওয়ার্ল্ড'স এন্ড. 
    পরিচিতির - ওয়ালপেপার এবং টেক্সটাইল ডিজাইন, কাল্পনিক কাহিনী / মধ্যযুগীয়তা, সমাজতন্ত্র. 
    স্বামী বা স্ত্রী: জেন মরিস (বিবাহ. ১৮৫৯–১৮৯৬)
    স্ট্রাকচার: National Trust - Red House, Oakwood Hall
    সন্তান: মে মরিস, জেন অ্যালিস মরিস
    শিক্ষা: Exeter College (১৮৫২–১৮৫৬), Marlborough College (১৮৪৮–১৮৫১.


    Works :

    Collected poetry, fiction, and essays 

    The Hollow Land (1856)
    The Defence of Guenevere, and other Poems (1858)
    The Life and Death of Jason (1867)
    The Earthly Paradise (1868–1870)
    Love is Enough, or The Freeing of Pharamond: A Morality (1872)
    The Story of Sigurd the Volsung and the Fall of the Niblungs (1877)
    Hopes and Fears For Art (1882)
    The Pilgrims of Hope (1885)
    A Dream of John Ball (1888)
    Signs of Change (1888)
    A Tale of the House of the Wolfings, and All the Kindreds of the Mark Written in Prose and in Verse (1889)
    The Roots of the Mountains (1889)
    News from Nowhere (or, An Epoch of Rest) (1890)
    The Story of the Glittering Plain (1891)
    Poems By the Way (1891)
    Socialism: Its Growth and Outcome (1893) (With E. Belfort Bax)
    The Wood Beyond the World (1894)
    Child Christopher and Goldilind the Fair (1895)
    The Well at the World's End (1896)
    The Water of the Wondrous Isles (1897)
    The Sundering Flood (1897) (published posthumously)
    A King's Lesson (1901)
    The World of Romance (1906)
    Chants for Socialists (1935)
    Golden Wings and Other Stories (1976)
    Translations 
    Grettis Saga: The Story of Grettir the Strong with Eiríkr Magnússon (1869)
    The Story of Gunnlaug the Worm-tongue and Raven the Skald with Eiríkr Magnússon (1869)
    The Völsunga Saga: The Story of the Volsungs and Niblungs, with Certain Songs from the Elder Edda with Eiríkr Magnússon (1870) (from the Volsunga saga)
    Three Northern Love Stories, and Other Tales with Eiríkr Magnússon (1875)
    The Aeneids of Virgil Done into English (1876)
    The Odyssey of Homer Done into English Verse (1887)
    Of King Florus and the Fair Jehane (1893)
    The Tale of Beowulf Done out of the Old English Tongue (1895)
    Old French Romances Done into English (1896)
    Morris's Beowulf was one of the first translations of the Old English poem into modern English.

    Grendel reaches Heorot: Beowulf 710–714
    Old English verse Morris's translation
    Ðá cóm of móre     under misthleoþum     Came then from the moor-land, all under the mist-bents,
    Grendel gongan·     godes yrre bær·     Grendel a-going there, bearing God's anger.
    mynte se mánscaða     manna cynnes     The scather the ill one was minded of mankind
    sumne besyrwan     in sele þám héan·     To have one in his toils from the high hall aloft.
    Published lectures and papers Edit
    Lectures on Art delivered in support of the Society for the Protection of Ancient Buildings (Morris lecture on The Lesser Arts). London, Macmillan, 1882
    Architecture and History & Westminster Abbey. Papers read to the Society for the Protection of Ancient Buildings in 1884 and 1893. Printed at The Chiswick Press. London, Longmans, 1900
    Communism: a lecture London, Fabian Society, 1903

    মৃত্যু-  ৩ অক্টোবর ১৮৯৬ (বয়স ৬২) লন্ডন, ইংল্যান্ড। 
    ============{====================









    Tuesday, 22 March 2022

    জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ) ২৩.০৩.২০২২. Vol -683 The blogger in literature e-magazine

    চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ)

    "কাঁচা আর পাকার মধ্যে ব্যাবধানটা কালগত। কাল পূর্ণ হলেই কাঁচা লঙ্কায় পাক ধরে, কাঁচা মাথা পাকা চুলে ভরে যায়। সংসারে একটি বস্তু আছে যার বেলায় এ নিয়ম চলে না। তার নাম চাকরি। সেখানেও কাঁচা পাকে; কিন্তু কালধর্মে নয়, তৈলধর্মে। সরকারী, আধা-সরকারী কিংবা সওদাগরি অফিসে গিয়ে দেখুন, পক্ক কেশ সিনিয়র যখন কাঁচা রাস্তায় হোঁচট খাচ্ছেন, তৈল সম্পদে বলীয়ান কোন ভাগ্যবান জুনিয়র তখন অনায়েসে পাড়ি দিচ্ছেন কনফার্মেশনের পাকা সড়ক। গিরীনদা বলতেন, চাকরি হচ্ছে পাশার ঘুটি। পাকবে কি পচবে, নির্ভর করছে তোমার চালের উপর। মূল্যবান কথা। চাল অবশ্যই চাই। কিন্তু তার সঙ্গে চাই প্রচুর তেল।"
    আমার সহকর্মী রামজীবন বাবু তৈল প্রয়োগে অপটু ছিলেন; অদক্ষ ক্রিয়াতে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন নি। তাই কালপ্রভাবে তাঁর গুম্ফদেশে শ্বেতবর্ণের আভা দেখা দিল কিন্তু চাকরির কৃষ্ণত্ব ঘুচল না। সেজন্য রামজীবনের নিজের কোন ক্ষোভ ছিল না। কোন অভিযোগও কোনদিন করতে শুনিনি কতৃপক্ষের নামে।

    ‘ওরা কি করবে?’- কর্তাদের পক্ষ টেনেই বরং বলতেন রামজীবন; ‘জায়গা কোথায়? যক্ষের মতো যারা ঘাটি আগলে বসে আছেন, তাঁরা দয়া করে সরবেন, তবে তো? জেল সার্ভিসে পেনশন অতি বিরল ঘটনা। পঞ্চত্ব-প্রাপ্তির দুর্ঘটনা বরং শুনতে পাবে দু-একটা; কিন্তু পঞ্চান্নপ্রাপ্তির কোন বালাই নেই। অন্ততঃ পঁয়ষট্টি পেরোবার আগে। কালে-ভদ্রে দু-একটি পোস্ট যদিও বা পাওয়া গেলো, আগে বাবা জীবন, তারপরে তো রামজীবন।‘
     (লৌহ কপাট থেকে)।

    জন্ম ১৯০২ সালের ২৩ মার্চ ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা থানার ব্রাহ্মণডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করে ১৯২৬ সালে দার্জিলিংয়ে ডেপুটি জেলার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৬০ সালে আলীপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হিসেবে অবসরে যান। এই সময়ে বিভিন্ন জেলের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কয়েদীদের জীবনাচরণ তিনি অত্যন্ত গভীরভাবে উপলব্ধি করেন। আর এই বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়েই ১৯৫২ সালে প্রকাশ হয় জরাসন্ধ ছন্দনামে সাড়াজাগানো গ্রন্থ লৌহ কপাটের ১ম খণ্ড। যদিও এর আগে তিনি তাঁর প্রকৃত নাম চারুচন্দ্র চক্রবর্তী নামেই কিশোর গল্প গ্রন্থ লিখে পরিচিতি অর্জন করেন। তাই “লৌহ কপাট” প্রকাশের পর জরাসন্ধ আর চারুচন্দ্র চক্রবর্তী যে একই ব্যাক্তি, অনেক পাঠকেরই তা বুঝতে অসুবিধা হয়। লৌহ কপাট-প্রথম খণ্ড পাঠক সমাজে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। চারখণ্ডের লৌহকপাটের তিনটি খণ্ডই তাঁর চাকরিজীবনে লেখা। চতুর্থ খণ্ডটি লেখেন অবসর নেওয়ার পরে এবং কারো কারো মতে সেটিই সর্বশ্রেষ্ঠ খণ্ড।


    দীর্ঘ কর্মজীবনে জেলের লৌহকপাটের মধ্যে যে মানুষ গুলিকে দেখেছেন তাদের কথা ও কাহিনী তার উপন্যাসে মূর্ত হয়ে উঠেছে। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১ লা মে 'লৌহকপাট' এর প্রথম পর্ব গ্রন্থের আকারে প্রকাশিত হয়। এরপর একে একে মোট চারটি পর্বে প্রকাশিত হয়েছে। তার কুড়ি একুশ খানি উপন্যাসের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল -

    'তামসী' (১৯৫৮)
    'পাড়ি'
    'মসীরেখা'
    'ন্যায়দণ্ড'( ১৯৬১)
    'পরশমণি'
    'উত্তরাধিকার'
    'ছায়া' (১৯৭২)
    'নিশানা' (১৯৭৭)
    'তৃতীয় নয়ন'(১৯৭৯)
    'হীরা চুনি পান্না' (১৯৮৩)
    'আশ্রয়'
    একুশ বছর'
    'আবরণ'
    'এ বাড়ি ও বাড়ি'
    তার আত্মজীবনীমূলক রচনা হল, দুটি খণ্ডে 'নিঃসঙ্গ পথিক'। প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে। ছোট গল্প সংকলনও আছে ছ-খানা। এছাড়া ছোটদের জন্য কিছু লেখা আছে 'রঙচঙ', 'রবিবার' যমরাজের বিপদ' প্রভৃতি গ্রন্থে। সাহিত্যকীর্তির জন্য তিনি 'শরৎচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার' ও 'মতিলাল পুরস্কার' লাভ করেন। তার বহু রচনা দেশবিদেশের অন্তত ছয়টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে তার উপন্যাস 'তামসী' অবলম্বনে হিন্দিতে 'বন্দিনী' নামে চলচ্চিত্রায়িত করেন প্রখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক বিমল রায় এবং সেরা সম্মান লাভ করে।

    মৃত্যু: ২৫ মে ১৯৮১ (বয়স ৭৯); কলকাতা, ভারত।

    =={={{{{{{{{======={{{{{{{{{{{{====={{{{{{{{{{{

    জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। যোগেন্দ্র নাথ গুপ্ত। ২২.০৩.২০২২. Vol -683. The blogger in literature e-magazine


    বিশ্বের ইতিহাস ২১ খণ্ডে রচনা করেন।


    যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত

     জন্ম: ২২ মার্চ ১৮৮৩ . একজন সাহিত্যিক এবং গবেষক। শিশুভারতী নামের বিখ্যাত কোষগ্রন্থের সম্পাদনা তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি।

     তিনি কৈশোরক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। 

    তার রচিত বাংলার ডাকাত বইখানি উল্লেখযোগ্য। ইতিহাস ও সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগে তার গবেষণামূলক অবদান স্মরণীয়।


    তিনি বাংলাদেশের ঢাকার মূলচরের নিবাসী ছিলেন। তার পিতার নাম মহেন্দ্র চন্দ্র গুপ্ত। পিতার অনুপ্রেরনায়ই তিনি ইতিহাস রচনায় হাত দেন। যোগেন্দ্রনাথের বিক্রমপুরের ইতিহাস প্রথম প্রকাশিত হয়। ৩০ আশ্বিন ১৩১৬ বাংলা অর্থাৎ অক্টোবর ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ ঠিক ত্রিশ বছর পর ১৭ অক্টোবর ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ঢাকা ও কলকাতা মিলে বিক্রমপুরের ইতিহাস কমপক্ষে পাঁচটি সংস্করণ হয়েছে। যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত শিশু ভারতী নামক কোষগ্রন্থ রচনা করে সমগ্র ভারতে অসামান্য কৃতিত্ব দেখান। মাতা মোক্ষদাসুন্দরী।ঢাকার বিক্রমপুরে মূলচর গ্রামে তাঁর জন্ম। ছাত্রবৃত্তি পাস করে দারিদ্রে্যর কারণে তিনি প্রথমে স্কুলে শিক্ষকতা করেন এবং পরে ময়মনসিংহের জমিদারিতে চাকরি নেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি মাসিক পথিক (১৯০৪), ত্রৈমাসিক বিক্রমপুর (১৯০৬-১৮) ও কৈশোরক (১৯১৩-১৮) এবং মাসিক কিশোর ভারতী পত্রিকা সম্পাদনা করেন এবং এর মাধ্যমেই তাঁর লেখকজীবন শুরু হয়। ইতিহাস, জীবনী, গল্প, উপন্যাস, নাটক ও কোষগ্রন্থ মিলে তাঁর গ্রন্থসংখ্যা শতাধিক। তাঁর ইতিহাস গ্রন্থ বিক্রমপুরের ইতিহাস (১৯০৯), পৃথিবীর ইতিহাস (২১ খন্ড, ১৯১৮-২৫), বিক্রমপুরের বিবরণ (২ খন্ড, ১৯৩৯), বাঙ্গালার ইতিহাস, ভারতের ইতিহাস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। বিক্রমপুরের বিবরণ গ্রন্থখানি এখনও বিক্রমপুর সম্পর্কে একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচিত।


    যোগেন্দ্রনাথ দেশি-বিদেশি অনেক জ্ঞানী-গুণীর জীবনী রচনা করেছেন। কেদার রায়, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর, গান্ধীজীর জীবনযজ্ঞ, সাধক কবি রামপ্রসাদ, কান্তকবি রজনীকান্ত, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ, তারাবাঈ, ঝাঁসীর রাণী, রাণী দুর্গাবতী, রণজিৎ সিংহ, গুরুগোবিন্দ সিংহ, ম্যাজিনি, আব্রাহাম লিঙ্কন ও গ্যারিবল্ডী তাঁর রচিত কয়েকটি বিখ্যাত জীবনীগ্রন্থ।


    যোগেন্দ্রনাথ অল্পবয়সেই সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১০০টিরও বেশি বই লেখেন। ইতিহাস ও সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগে তার গবেষণামূলক অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়। তিনি বিশ্বের ইতিহাস ২১ খণ্ডে রচনা করেছিলেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -

    • বাংলার ডাকাত
    • বিক্রমপুরের ইতিহাস
    • কেদার রায়
    • ধ্রুব
    • প্রহ্লাদ
    • ভীমসেন
    • বঙ্গের মহিলা কবি
    • কল্পকথা (ছোটগল্প)
    • তসবীর (নাটক)
    • হিমালয় অভিযান
    • কবিতা মঞ্জরী
    • সাহিত্যিক

    মৃত্যূ:      ৩১ মে, ১৯৬৪।

    ========={{∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆}}}=====

    Sunday, 20 March 2022

    জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। শ্রীশচন্দ্র বসু। ২১.০৩.২০২২. Vol -681. The blogger in literature e-magazine

    শ্রীশচন্দ্র বসু 

    পিতার কর্মক্ষেত্র পাঞ্জাবের লাহোরে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ২১ শে মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন । তবে পৈতৃক নিবাস ছিল বৃটিশ ভারতের বর্তমানে বাংলাদেশের খুলনা জেলার টেংরা-ভবানীপুরে। পিতা শ্যামাচরণ পাঞ্জাবের শিক্ষা-অধিকর্তার প্রধান কর্মচারীরূপে উচ্চ শিক্ষা বিস্তারে প্রভূত সাহায্য করেন। কিন্তু বাল্য বয়সেই তার পিতৃবিয়োগ ঘটলে মাতা ভুবনেশ্বরী দেবীর যত্নে পড়াশোনা করেন। লাহোর পাঠরত অবস্থায় ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন । ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে লাহোরের সরকারি কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন । ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে সেখান থেকে শিক্ষক-শিক্ষন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতা বৃত্তি নেন।


    কর্মজীবন শুরু করেন লাহোরে মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে । এখানে কর্মরত অবস্থাতেই উর্দু ভাষায় প্রাকৃতিক ভূগোল বিষয়ে একখানি পাঠ্যপুস্তক লেখেন। সাথে সাথেই Student's Friend নামে ইংরাজী পত্রের পরিচালনা ও সম্পাদনা করেন। কলকাতার 'ইণ্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন' এর অনুকরণে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাবে 'ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল সোসাইটি' গঠনে উদ্যোগ নেন। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে এলাহাবাদ হাইকোর্ট পরিচালিত আইন পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে এলাহাবাদে আইন ব্যবসায় নিযুক্ত হন এবং দক্ষ আইনজীবী হিসাবে প্রতিষ্ঠালাভ করেন। নিজে ইতিমধ্যে পিটম্যান প্রবর্তিত আশুলিখন অর্থাৎ শর্টহ্যান্ড শিখে নিয়ে বিচারপতিদের রায় আশুলিখনের ভার গ্রহণ করেন । পরবর্তীতে তিনি সরকারি বিচার বিভাগে যোগ দেন । ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি এলাহাবাদে (বর্তমানে প্রয়াগরাজের) প্রথম দেশীয়দের দ্বারা পরিচালিত বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। শ্রীশচন্দ্র বহু ভাষাবিদ ছিলেন। হিন্দু আইন উত্তমরূপে আয়ত্ত করতে সংস্কৃত শেখেন। তেমনই বাইবেলের মর্মার্থ আয়ত্তের জন্য শেখেন হিব্রু ও গ্রীক ভাষা। ইসলাম ধর্মের জন্য শেখেন আরবি ও ফারসি। এছাড়াও ল্যাটিন ফরাসি ও জার্মান ভাষাতে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন । ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে তিনি 'পাণিনীয় অষ্টাধ্যায়ী' র ইংরাজীতে অনুবাদ করে সুপরিচিত হন। তার অনূদিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল -


    ভট্টোজী দীক্ষিত প্রণীত ব্যাকরণ গ্রন্থ- 'সিদ্ধান্ত কৌমুদী'

    'শিবসংহিতা'

    শাঙ্কর-ভাষ্য-সহ 'ঈশোপনিষদ'

    মাধ্বাচার্যকৃত ভাষ্য-সহ 'ছান্দোগ্য উপনিষদ'

    বলদেব বিদ্যাভূষণকৃত ভাষ্য- সহ 'বেদান্তসূত্র'

    বিজ্ঞানেশ্বররচিত 'মিতাক্ষরা ভাষ্য'

    বলমভট্ট-রচিত টীকা-সহ 'যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি'

    দারা শিকোহ্ রের ' ইবন শাজাহান' ( ফরাসি ভাষায়)

    এছাড়া যাবতীয় হিন্দুধর্মশাস্ত্রের সার সংকলন করে প্রশ্নোত্তরে ইংরাজীতে একটি গ্রন্থ, হিন্দি ভাষায় একটি বর্ণপরিচয় ও আশুলিখন প্রণালী বিষয়ে পুস্তক রচনা করেন । তিনি ' 'সেখ চিল্লী' ছদ্মনামে উত্তর ভারতে প্রচলিত কিছু উপকথা সংগ্রহ করে ইংরাজীতে 'Folk-tales ofHindusthan' লিপিবদ্ধ করেন। 'হিন্দুস্থানী উপকথা' নামে পরে সীতা দেবী ও শান্তা দেবী বাংলায় অনুবাদ করেন। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এলাহাবাদের (বর্তমানে প্রয়াগরাজের) বাহাদুরগঞ্জে মাতার নামাঙ্কিত ভুবনেশ্বরী আশ্রমের নিজের বাড়িতে প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্র প্রচারের উদ্দেশ্যে'পাণিনি কার্যালয়' স্থাপন করেন । এখান থেকেই দুর্লভ বা অপ্রকাশিত হিন্দুশাস্ত্রের গ্রন্থ সমূহ 'সেক্রেড বুকস্ অব দি হিন্ডুজ' নামক সিরিজের প্রকাশের ব্যবস্থা হয়। পরবর্তীতে শ্রীশচন্দ্রের অনুজ বামনদাস সম্পাদনার ভার গ্রহণ করেন ।


    ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বৃটিশ সরকার কর্তৃক 'রায়বাহাদুর' এবং বিদ্যাবত্তার জন্য কাশীর পণ্ডিতমণ্ডলী কর্তৃক 'বিদ্যার্ণব' উপাধি দ্বারা সম্মানিত হয়েছিলেন।

    শ্রীশচন্দ্র বসু ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে জুন ৫৭ বৎসর বয়সে পরলোক গমন করেন ।



    ========{{{{{{∆∆∆∆∆∆∆∆}}}}}}========

    Saturday, 19 March 2022

    জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। গুরুপ্রসাদ সেন। ২০.০৩.২০২২. Vol -680. The blogger in literature e-magazine


    গুরুপ্রসাদ সেন

     জন্ম ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে মার্চ (৮ই চৈত্র, ১২৪৯ বঙ্গাব্দ) ময়মনসিংহ পরগনার ঢাকার ডোমসারে (বর্তমান শরীয়তপুর)। পিতা কাশীচন্দ্র সেন ও মাতা সারদাসুন্দরী দেবী। তার অতি অল্প বয়সে পিতৃবিয়োগ হলে মাতা সারদাসুন্দরী তাঁকে নিয়ে চলে আসেন তার ভ্রাতা রাধানাথ সেনের আশ্রয়ে বিক্রমপুরের কাঁচাদিয়া গ্রামে এবং সেখানে তিনি মাতুল কর্তৃক প্রতিপালিত হন। সেসময় বিক্রমপুরে ইংরাজী মাধ্যমের স্কুল না থাকায় তার মাতুলই ইংরাজী শেখাতেন।  পরে ভর্তি হন ঢাকা পোপোজ স্কুলে। গুরুপ্রসাদ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সেখান থেকে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে বৃত্তিসমেত প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে এফ.এ.পরীক্ষায় প্রথম হন।কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে বি.এ. এবং ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এ. পাশ করেন।  তিনি তৎকালীন পূর্ব বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) প্রথম এম.এ.।


    এম. এ পাশের পর প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে বি.এল পরীক্ষা পাশ করে ডেপুটি ম্যাজিসেট্রট পদে প্রথমে কৃষ্ণনগর ও পরে  বাঁকিপুরে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু সেখানে ইংরেজ ম্যাজিসেট্রটের সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় সরকারি পদ ত্যাগ করে বাঁকিপুরেই স্বাধীনভাবে ওকালতি শুরু করেন। এই বাঁকিপুর তার ত্রিশ বৎসর কর্মজীবনের মূল  কর্মক্ষেত্র হয়েছিল এবং বহু জনহিতকর কাজে লিপ্ত ছিলেন। বিহারের প্রধান প্রধান জমিদারগণের আইনি-উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল, নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নীলচাষিদের পক্ষ অবলম্বন করা এবং তাদের সংগ্রামে সামিল হওয়া। প্রকৃতপক্ষে তার চেষ্টায় বিহারের নীলচাষীরা ইংরেজ নীলকর সাহেবদের অত্যাচার মুক্ত হন। 

    ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিহারে প্রথম ইংরাজী সাপ্তাহিক পত্রিকা "বিহার হেরল্ড" প্রকাশ করেন.

    এই পত্রিকার সাহায্যে তিনি জনসাধারণের সপক্ষে সংগ্রাম করে তাদের প্রকৃত বন্ধু হয়ে ওঠেন। দরিদ্র ছাত্রদের জন্য হোস্টেল এবং বাঁকিপুরে ও ঢাকায় দুটি স্কুল স্থাপন করেন। ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে বিহার ল্যান্ড-হোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা তার চেষ্টায় সম্ভব হয়েছিল এবং তিনি এর আজীবন সম্পাদক ছিলেন। ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হন এবং পরের বৎসর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো হন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সেকালের বিখ্যাত পত্রিকা ‘সোম প্রকাশ’ পত্রিকায় তিনি অনেক প্রবন্ধ লিখতেন। জুরির বিচারব্যবস্থা ওঠানোর চেষ্টা হলে তার রচিত ইংরাজী পুস্তিকা বিলাতে প্রশংসিত হয়েছিল। ইংরেজি ভাষায় তিনি কয়েকখানি পুস্তক রচনা করেছিলেন -

    1)অ্যান ইনেট্রাডাকশন টু দ্য স্টাডি অফ হিন্দুইজম (১৮৯১) ( প্রবন্ধ সংকলন)

    2)নোটস্ অন সাম কোয়শচেন অফ অ্যাডমিনিস্টেশন ইন ইন্ডিয়া (১৮৯৩) 


    বাঁকিপুরে অবস্থানকালে বিধানচন্দ্র রায়ের পিতা প্রকাশ চন্দ্র রায় ও মাতা অঘোরকামিনী দেবীর সাথে তার পরিচয় ছিল। তাঁদের মতো তিনিও এক সময় ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। পরে তার ধর্মবিশ্বাসে উদারপন্থী মনোভাব লক্ষিত হয়েছিল। বিধবাবিবাহের উৎসাহী সমর্থক ছিলেন তিনি। বিপথগামী মেয়েদের বিবাহ ও পুনর্বাসনের পক্ষে নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সূচনা থেকেই তার সমর্থক ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।      

    গুরুপ্রসাদ সেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে সেপ্টেম্বর ( ১৩০৭ বঙ্গাব্দের ২৮শে আশ্বিন) প্রয়াত হন।


    ========{{{{{∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆}}}}}======