Saturday, 30 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। জোসেফ হেলার । ০১লা মে, ২০২২. Vol -722. The blogger in literature e-magazine

জোসেফ হেলার 

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক। তাঁর কালজয়ী গ্রন্থ 'ক্যাচ-টুয়েন্টি টু' বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাসের তালিকায় গণ্য করা হয়। 
Heller was born on May 1, 1923 in Coney Island in Brooklyn, New York, the son of poor Jewish parents, Lena and Isaac Donald Heller, from Russia. Even as a child, he loved to write; as a teenager, he wrote a story about the Russian invasion of Finland and sent it to the New York Daily News, which rejected it.[6] After graduating from Abraham Lincoln High School in 1941, Heller spent the next year working as a blacksmith's apprentice,a messenger boy, and a filing clerk.

In 1942, at age 19, he joined the U.S. Army Air Corps. Two years later he was sent to the Italian Front, where he flew 60 combat missions as a B-25 bombardier. His unit was the 488th Bombardment Squadron, 340th Bomb Group, 12th Air Force. Heller later remembered the war as "fun in the beginning ... You got the feeling that there was something glorious about it." On his return home he "felt like a hero ... People think it quite remarkable that I was in combat in an airplane and I flew sixty missions even though I tell them that the missions were largely milk runs."

After the war, Heller studied English at the University of Southern California and then New York University on the G.I. Bill, graduating from the latter institution in 1948. In 1949, he received his M.A. in English from Columbia University. Following his graduation from Columbia, he spent a year as a Fulbright scholar in St Catherine's College, Oxford before teaching composition at Pennsylvania State University for two years (1950–52). He then briefly worked for Time Inc., before taking a job as a copywriter at a small advertising agency।  where he worked alongside future novelist Mary Higgins Clark. At home, Heller wrote. He was first published in 1948, when The Atlantic ran one of his short stories. The story nearly won the "Atlantic First".

He was married to Shirley Held from 1945 to 1981 and they had two children, Erica (born 1952) and Theodore (born 1956)

জন্ম ১ মে ১৯২৩ ব্রুকলিন, নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র. 

দাম্পত্যসঙ্গী শির্লে হেল্ড (১৯৪৫–৮৪; বিবাহবিচ্ছেদ; ২ সন্তান) ভ্যালেরিয়া হাম্‌ফ্রিস (১৯৮৭–৯৯; মৃত্যু)
সন্তান: এরিকা হেলার, টেড হেলার

Heller did not begin work on a story until he had envisioned both a first and last line. The first sentence usually appeared to him "independent of any conscious preparation." In most cases, the sentence did not inspire a second sentence. At times, he would be able to write several pages before giving up on that hook. Usually, within an hour or so of receiving his inspiration, Heller would have mapped out a basic plot and characters for the story. When he was ready to begin writing, he focused on one paragraph at a time, until he had three or four handwritten pages, which he then spent several hours reworking.

Heller maintained that he did not "have a philosophy of life, or a need to organize its progression. My books are not constructed to 'say anything.'" Only when he was almost one-third finished with the novel would he gain a clear vision of what it should be about. At that point, with the idea solidified, he would rewrite all that he had finished and then continue to the end of the story. The finished version of the novel would often not begin or end with the sentences he had originally envisioned, although he usually tried to include the original opening sentence somewhere in the text.
রচনা কর্ম :
উপন্যাস
ছোটগল্প
  • ক্যাচ অ্যাজ ক্যাচ ক্যান: সংগৃহীত গল্প ও অন্যান্য রচনা (২০০৩)
নাটক
  • উই বোম্বড ইন নিউ হ্যাভেন (১৯৬৭)
  • ক্যাচ টুয়েন্টি টু (১৯৭৩)
  • ক্লেভিঞ্জার্‌স ট্রায়াল (১৯৭৩)
চিত্রনাট্য
আত্মজীবনী
After the publication of Catch-22, Heller resumed a part-time academic career as an adjunct professor of creative writing at Yale University and the University of Pennsylvania. In the 1970s, Heller taught creative writing as a distinguished professor at the City College of New York.
On Sunday, December 13, 1981, Heller was diagnosed with Guillain–Barré syndrome, a debilitating syndrome that was to leave him temporarily paralyzed. He was admitted to the Intensive Care Unit of Mount Sinai Medical Hospital the same day, and remained there, bedridden, until his condition had improved enough to permit his transfer to the Rusk Institute of Rehabilitation Medicine on January 26, 1982. His illness and recovery are recounted at great length in the autobiographical No Laughing Matter,[30] which contains alternating chapters by Heller and his good friend Speed Vogel. The book reveals the assistance and companionship Heller received during this period from a number of his prominent friends—Mel Brooks, Mario Puzo, Dustin Hoffman and George Mandel among them.

Heller eventually made a substantial recovery. In 1987 he married Valerie Humphries, formerly one of his nurses.

Later years

Heller returned to St. Catherine's as a visiting Fellow, for a term, in 1991 and was appointed an Honorary Fellow of the college. In 1998, he released a memoir, Now and Then: From Coney Island to Here, in which he relived his childhood as the son of a deliveryman and offered some details about the inspirations for Catch-22.

Heller was an agnostic. 

মৃত্যু ডিসেম্বর ১২, ১৯৯৯ (বয়স ৭৬)
পূর্ব হ্যাম্পটন, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র.
সমাধিস্থল - সিডার লন সিমেট্রি
পূর্ব হ্যাম্পটন, নিউ ইয়র্ক. 

========================={{======

Sunday, 24 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। আলবার্ট উদেরজো । ২৫.০৪.২০২২. Vol -715. The blogger in literature e-magazine

আলবার্ট উদেরজো


ফিশমেস (মার্নে, ফ্রান্স) এ জন্মগ্রহণ করেন উদেরজো ১৯২৭ এর ২৫ এপ্রিল । অভিবাসি সিলভিও (ভিনিস্বাসী বংশের) এবং আইরিয়া ক্রেস্তিনি (তুস্কান বংশের) ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতামাতা সম্প্রতি ইতালির লা স্পেজিয়া থেকে অভিবাসিত হয়েছিলেন। তিনি দুই হাতে ছয় আঙ্গুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় আঙ্গুলদ্বয় অপসারিত হয়. তিনি বর্ণান্ধ ছিলেন। শিশুকালে প্রথম চিত্র অঙ্কন করতে গিয়ে তার এই সমস্যা ধরা পরে, তিনি সবুজ থেকে লাল পার্থক্য করতে পারতেন না।শিশুকাল থেকে চিত্রাঙ্কনে তার প্রতিভার প্রমাণ পাওয়া গেলেও তার স্বপ্ন ছিল বিমান মেকানিক হওয়ার।

১৯৩৪ সালে ফরাসী নাগরিকত্ব পান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়,তিনি প্যারিস ছেড়ে চলে যান এবং ব্রিটানিতে এক বছর অতিবাহিত করেন, সেখানে তিনি খামারে কাজ করার পাশাপাশি বাবার আসবাবপত্র ব্যবসায়ে সাহায্য করতেন। মানুষ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে ব্রিটানিকে ভালোবেসে ফেলেন। ব্রিটানিকে তিনি এতটাই ভালোবেসে ফেলেন যে গোসিনি যখন তাকে অ্যাস্টিরিক্স কাহিনির জন্য সমুদ্র তীরবর্তী গ্রাম বেছে নেয়ার দায়িত্ব দেন তখন তিনি ব্রিটানিকে নির্বাচন করতে কোন দ্বিধা বোধ করেন নি।

১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্যারিসে শিল্পী হিসেবে পেশা শুরু করেন এবং ফ্ল্যামবার্গ এবং ক্লোপিনার্ডের এর মতো চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি বেলয় ও অ্যারিস বাকের মত অন্যান্য কিছু কমিক্স রচনা করেন।

১৯৫১ সালে রেন গোসিনির সাথে পরিচিত হন উদেরজো। দ্রুত বন্ধু হয়ে উঠেন দু'জন এবং ১৯৫২ সালে বেলজিয়াম কোম্পানি ওয়ার্ল্ড প্রেস এর প্যারিস অফিসে একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের প্রথম রচনাগুলি ছিল ঔমপাহ-পাহ, যেহান পিস্তলেট এবং লুক জুনিয়র। ১৯৫৮ সালে ফ্র্যাঙ্কো-বেলজিয়াম কমিক্স ম্যাগাজিন টিনটিন এ ঔমপাহ-পাহ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে এবং ১৯৬২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়।১৯৫৯ সালে গোসিনি এবং উদেরজো কিশোর বয়সীদের লক্ষ্য করে প্রকাশিত পিলট পত্রিকার সম্পাদক এবং শিল্পী পরিচালক (যথাক্রমে) হিসেবে যোগ দেন। এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় প্রকাশ পায় অ্যাস্টেরিক্স এবং শুরুতেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে কমিকটি। এই সময় জিন-মাইকেল চার্লির সাথে উদেরজো মাইকেল টাঙ্গু যা পরবর্তীতে লে অ্যাডভেঞ্চার ডি ট্যাঙ্গু এট লাভাডিওর (ট্যাঙ্গু এবং লাভাডিওর অ্যাডভেঞ্চার) নামে পরিচিত একটি বাস্তববাদী ধারাবাহিক নিয়ে কাজ করছিলেন।

'পিলট' এ অ্যাস্টেটিক্স ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হলেও, ১৯৬১ সালে অ্যাস্টেরিক্স লে গলৈস (অ্যাস্টেরিক্স দি গল) বই হিসেবে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৬৭ সাল নাগাদ কমিকটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে উভয়ই তাদের পুরো সময় এই ধারাবাহিকের পেছনে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭৭ সালে গোসিনির মৃত্যুর পর, উদেরজো একাই নতুন বই এর কাহিনি এবং অঙ্কন চালিয়ে যান। এতে প্রতিবছর দুটি বইয়ের যায়গায় প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছরের একটি কাহিনী প্রকাশ হতে থাকে। যদিও বইগুলো প্রচ্ছদে তখনও "গোসিনি এবং উদেরজো" লেখা থাকতো।

উদেরজো ১৯৫৩ সালে আদা মিলানীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান সিলভি উডেরো ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করে। অ্যাস্টেরিক্স দা গল বই অনুসারে ধারণা করা হয় যে উদেরজো প্যানেসিয়া এবং জাজার চরিত্র যথাক্রমে আদা এবং সিলভির উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন। যদিও উদেরজো এটি অস্বীকার করেছেন।


২০০৭ সালে উদেরজো, সিলভি এবং তার স্বামীকে তার সম্পত্তির ব্যবস্থাপক থেকে বহিষ্কার করেন এবং তার অ্যালবার্ট রেনে সংস্করণের শেয়ার হাচে লাইভারের কাছে বিক্রি করতে রাজি হন। 'ল্য মোঁদ' এর এক কলামে এই বিক্রয়কে সিলভি, "যেন রোমান সাম্রাজ্যের সামনে গলিশ গ্রামের দরজা উন্মুক্ত করা হয়েছে" বলে অভিযোগ করেন। তার মৃত্যুর সাথে সাথে অ্যাস্টেরিক্সের মৃত্যু ঘটবে বলে এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন উদারজো। কিন্তু, হাচেটের কাছে বিক্রয়ের শর্তাবলী অনুযায়ী কোম্পানিটি উদারজোর অংশগ্রহণ ছাড়াই অ্যাস্টেরিক্স প্রকাশ চালিয়ে যেতে পারবে। উদারজো ২০১৩ সালে তার কন্যা এবং জামাতার নামে "মানসিক সহিংসতার" জন্য মামলা করেন। সিলভির তার বিরুদ্ধে করা মামলার জবাবে আরেকটি মামলা করেন এবং বলেন একজন নামহীন ব্যক্তি তার পিতার "দুর্বলতা"র সুযোগ নিচ্ছে। মামলাটি ২০১৪ সালে আদালত বাতিল করে দেয় এবং পরবর্তীতে দুইজন মিটমাট হয়ে যায়।[৯]


২০১১ সালে উদারজো অবসর গ্রহণ করলে অ্যাস্টেরিক্স এর দায়িত্ব জের-ইয়েভেস-ফেরি (কাহিনী) এবং ডিডিয়ার কনর‍্যাড (শিল্প) দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।


আলবার্ট রেনে সংস্করণের ৪০% মালিকানা সিলভি এবং বাকি ৬০% (উদারজো এবং তার কন্যার অংশ) এর মালিকানা হাচে লাইভার এর।


উদারজোর এক ভাই মার্সেল কার্টুনিস্ট।


অ্যাস্টেরিক্স অ্যান্ড দি ফলিং স্কাই তার মৃত ভাই ব্রুনোর (১৯২০-২২০৪) নামে উৎসর্গ করা হয়।



১৯৮৫: দ্য লিজিয়ন অব অনার এর নাইটে ভূষিত হন।

২০০৫: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইজেন অ্যাওয়ার্ড এ অন্তর্ভুক্ত হন

২০০৭: অর্ডার অভ দি নেদারল্যান্ডস লায়ন এর নাইট এ ভূষিত হন।

ইউনেস্কোর ইনডেক্স ট্রান্সলেসনামের হিসেবে উদারজো ফরাসি দশম অনূদীত লেখক (গোসিনি ৪র্থ)।



উল্লেখযোগ্য কাজ

অ্যাসটেরিক্স

ট্যাঙ্গু লাভাডিওর

ঔমপাহ-পাহ এবং



পাঁচ দশক ধরে ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও তার বন্ধু 'ওবেলিক্স'-এর দুর্ধর্ষ অভিযানের গল্প নির্ভর কমিক চিত্রাঙ্কণের ভার সামলেছেন উদেরজো।

প্রবাদপ্রতীম ফরাসি অঙ্কনশিল্পীর। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন শিল্পী। প্যারিসের নিউইল্লিতে নিজের বাসভবনেই ঘুমের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হন উদেরজো। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই খুবই অসুস্থ ছিলেন তিনি, সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন তাঁর জামাই বার্নেড ডে চোইসে।২২মার্চ, ২০২০. 

বিশ্ববিখ্যাত ফরাসি কমিক সিরিজ অ্যাস্টেরিক্সের জনক হিসাবে পরিচিত উদেরজো এবং রনে গোসিনি। ১৯৭৭ সালে গোসিনির মৃত্যুর পর এই কমিক সিরিজ চিত্রাঙ্কনের ভার সম্পূর্নভাবে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন উদেরজো। পিটল নামে এক ফরাসি পত্রিকায় ১৯৫৯ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল অ্যাস্টেরিক্সের অভিযান। ২০০৯ সালে, অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত এই কমিক চিত্রণের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

রোমান সাম্রাজ্যের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর গল্প বলে এই কমিকের নায়ক ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও তার বন্ধু 'ওবেলিক্স'। তাদের দুর্ধর্ষ অভিযানের গল্পই এই কমিকের মূল উপজীব্য। সারা পৃথিবীতে প্রায় ১১১ ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও ওবেলিক্সের কাহিনি। এই বিশাল জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে ১৩টি সিনেমা। ২০১৭ সাল পর্যন্ত অ্যালবার্ট উদেরজোর সৃষ্টি ‘অ্যাস্টেরিক্স’ ও ‘ওবেলিক্স’ নির্ভর কমিক বইয়ের ৩৭০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক।




========{}}{=}{}{}}=}{}={=}{]{{}{{{}{{{}}}{{[[{{

Tuesday, 19 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। জোশুয়া মার্শম্যান । ২০.০৪.২০২২. Vol -712. The blogger in literature e-magazine


জোশুয়া মার্শম্যান

১৭৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল ইংল্যান্ডের ওয়েস্টবারি লী-তে জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক ইতিহাস সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না, শুধু এই তথ্যটুকু পাওয়া গেছে যে তার কোনো এক পূর্বপুরুষ সম্ভবত অলিভার ক্রমওয়েলের সেনাবাহিনীর একজন অফিসার ছিলেন এবং ইনি ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটেনে রাজতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর বিবেক দংশনের কারণে সমস্ত ঐহিক উচ্চাকাংক্ষা ত্যাগ করে স্বদেশের এক গ্রামে অল্প সম্বল নিয়ে শেষ জীবন অতিবাহিত করেন।


তার বাবা জন মার্শম্যান নাবিক ছিলেন এবং ক্যাপ্টেন বণ্ডের নেতৃত্বে কুইবেক অধিকারের যুদ্ধে সামিল হয়েছিলেন। এর কিছুদিন পরেই তিনি ইংল্যাণ্ডে ফিরে এসে ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মারি কুজেনারকে বিয়ে করেন। মারি ছিলেন জন্মসূত্রে ফরাসি, তার পরিবার ফ্রান্সে নান্তেস অনুশাসন রদ হওয়ার পর ইংল্যাণ্ডে আশ্রয় নেন। বিয়ের পর জন উইল্টশায়ার জেলার ওয়েস্টবারি লী-তে তাঁতির কাজ নেন।

এই পেশায় জনের পসার ভালো হয়নি, ফলে তিনি ছেলে জোশুয়াকে গ্রামের স্কুলের বাইরে কোনো উচ্চতর শিক্ষা দিতে পারেননি।


১৭৯১ খ্রিষ্টাব্দে জোশুয়া ও হ্যানা মার্শম্যানের বিয়ে হয় এবং তারা ১৭৯৪ খ্রিঃ ব্রিস্টল শহরে বসবাস শুরু করেন। সেখানে ব্রোডমীড ব্যাপটিস্ট গির্জার সদস্য হিসেবে জোশুয়া মার্শম্যান ঐ গির্জার অধীনস্থ একটি অবৈতনিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। পাশাপাশি ব্রিস্টল ব্যাপটিস্ট কলেজে তিনি ছাত্র হিসেবেও যোগ দেন।

১৭৯৯ খ্রিঃ ২৭শে মে জোশুয়া, হ্যানা ও তাদের দুই সন্তান পোর্টসমাউথ বন্দর থেকে "ক্রাইটেরিয়ন" নামক জাহাজে চড়ে ভারত অভিমুখে যাত্রা করেন। পথে ফরাসি নৌবাহিনীর তরফ থেকে আক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি এবং মার্শম্যান পরিবার ১৩ই অক্টোবর কলকাতার কয়েক মাইল উত্তরে শ্রীরামপুরের ড্যানিশ উপনিবেশে নিরাপদে অবতরণ করেন।

শ্রীরামপুরে আসার পর মার্শম্যান দম্পতির আরও দশটি সন্তান হয়, যদিও তাদের পিতা মৃত্যুকালে বারো ভাইবোনের মাত্র পাঁচজনকেই জীবিত অবস্থায় দেখে যান। সর্বকনিষ্ঠ কন্যা হ্যানা হেনরি হ্যাভলককে বিয়ে করেন; হেনরি পরবর্তীকালে ব্রিটিশ ভারতে একজন সেনানায়কের পদ লাভ করেন। লণ্ডনের ট্রাফালগার স্কোয়ারে তার মূর্তি রয়েছে।

সহবাসী: হ্যানা মার্শম্যান

বই:

 Elements of chinese grammar: with a preliminary dissertation on the characters and the colloquial medium of the Chinese, an an appendix containing the Ta-hyoh of Confucius with a translation. 

সন্তান: জন ক্লার্ক মার্শম্যান, হান্নাহ শেফার্ড মার্শম্যান

নাতি ও নাতনি: unknown daughter Havelock, Ettrick Havelock, জর্জ ব্রডফুট হ্যাভলক, আরও বেশি

প্রপৌত্র ও প্রপৌত্রী: জর্জ এরিক হ্যাভলক, হেনরি হ্যাভলক, Beresford Arthur Jardine Havelock


তার বিশিষ্ট বন্ধু ও সহকর্মী উইলিয়াম কেরির মতোই মার্শম্যানও একজন মেধাবী ও বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন। মার্শম্যান ও কেরি যুগ্মভাবে বাইবেল গ্রন্থটি অনেকগুলো ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করেন এবং ধ্রুপদী ভারতীয় সাহিত্যের প্রচুর বই ইংরেজিতে অনুবাদ করেন।

এই সময়ে মার্শম্যান বাইবেলের একটি চীনা অনুবাদও সম্পন্ন করেন এবং প্রথম ভারতীয় সংবাদপত্রগুলোর উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা নেন। শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন নতুন পদ্ধতির উদ্ভাবনের একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন তিনি, এবং স্থানীয় অধিবাসীদের স্কুলে তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, যদিও তৎকালীন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের সমর্থন ক্রমশ ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদানের দিকে ঝুঁকছিল।

১৮১৮ খ্রিঃ ৫ই জুলাই উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ড (ধর্মপ্রচারক দলের আরও একজন সদস্য) একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। এই বিবৃতিতে "প্রাচ্য সাহিত্য ও পাশ্চাত্য বিজ্ঞান বিষয়ে এশীয়, খ্রিষ্টান এবং অন্যান্য যুবকদের শিক্ষাদানের জন্য একটি নতুন কলেজ" প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল। বিবৃতিটির লেখক ছিলেন মার্শম্যান স্বয়ং। এই বিবৃতির উপর ভিত্তি করেই শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা আজও সক্রিয় আছে।


কলেজে অর্থ সরবরাহ প্রায়ই যথেষ্ট হত না। বিশেষ করে এক সময় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অর্থের অপব্যবহারের মিথ্যা অভিযোগ ওঠার ফলে ওয়ার্ডের মধ্যস্থতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত অর্থ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে কেরি লেখেন, "ডঃ মার্শম্যান আমার মতোই গরীব, আর য়ুরোপে কয়েকজন দুঃস্থ আত্মীয়ের সাহায্যের জন্য ন্যূনতম অর্থ পাঠানোও আমার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ছে। আমি অনেক সম্পত্তির মালিক হতে পারতাম, কিন্তু অন্ন-বস্ত্রের বাইরে সমস্ত কিছুই ধর্মপ্রচারণার কাজে দান করে দিয়েছি, আর ডঃ মার্শম্যানও তাই করেছেন, আর শ্রীযুক্ত ওয়ার্ডও তাই করেছেন।"


১৮০০ খ্রিঃ কেরির সাথে মার্শম্যানের প্রথম সাক্ষাতের সময় কেরির চার ছেলের বয়স ছিল ৪, ৭, ১২ ও ১৫ বছর। কেরি তার পুত্রসন্তানদের নিতান্ত অবহেলায় রাখতেন দেখে মার্শম্যান ব্যথিত হন। তারা ছিল অমার্জিত, বিশৃঙ্খল, এমনকি অশিক্ষিত। কেরি যখন তার বাগান পরিচর্যা করতেন, নানা ধর্মপ্রচারণা কাজে ব্যস্ত থাকতেন বা ফোর্ট উইলিয়ামে পড়াতে কলকাতায় যেতেন, তখন মার্শম্যান, তার স্ত্রী হ্যানা ও উইলিয়াম ওয়ার্ড ছেলেগুলির দেখাশোনা করতে থাকেন। তাদের অভিভাবকত্বের সার্থকতার প্রমাণস্বরূপ কেরির চার ছেলের প্রত্যেকেই পরবর্তী জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন।

জোশুয়ার ছেলে জন ক্লার্ক মার্শম্যান পরবর্তীকালে শ্রীরামপুর কলেজের ধর্মপ্রচারণা কর্মকাণ্ডে বিশিষ্ট ভূমিকা নেন। এছাড়া তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা ভাষার অনুবাদের কাজেও যুক্ত ছিলেন। তার প্রকাশিত নাগরিক আইনের নির্দেশিকাটি মেকলের কাজের আগে পর্যন্ত ভারতীয় আইনের প্রধান নথি হিসেবে ব্যবহৃত হত। জন ১৮৪২ খ্রিঃ ভারতের ইতিহাসের একটি বইও লিখেছিলেন। তার লেখা বই কেরি, মার্শম্যান অ্যাণ্ড ওয়ার্ড -এ জন মার্শম্যান বলেন যে তার পিতা মৃত্যুকাল অবধি নিজের অর্থের প্রায় চার লক্ষ পাউণ্ড ভারতে ধর্মপ্রচারণা কাজে খরচ করে গিয়েছিলেন।



জোশুয়া মার্শম্যান ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর হুগলির শ্রীরামপুরে মারা যান।


একনজরে 

প্র : জোশুয়া মার্শম্যান-এর জন্ম তারিখ কথ ?

উ : ২০শে এপ্রিল, ১৭৬০।

প্র : তিনি কোথায় জন্ম গ্রহণ করেন?

উ : ওয়েস্টবেরিলি, উইলট শায়ার লন্ডন।

প্র : তাঁর কী কী ভাষায় দক্ষতা ছিল?

উ : ভারতীয় ভাষা ছাড়া গ্রিক, ল্যাটিন, হিব্রু ও সিরিয়াক ইত্যাদি।

প্র : তিনি প্রথম কোথায় কর্মরত ছিলেন?

উ : লন্ডনের পুস্তক ব্যবসায়ীর দোকানে।

প্র : তিনি যাজকতায় দীক্ষিত হন কত সালে?

উ : ১৭৯১-এ।

প্র : তিনি কখন মিশনারির কাজে ভারতে আসেন?

উ : ১৭৯৯-এ। শ্রীরামপুরের মিশনে কাজে নিযুক্ত হন।

প্র : তিনি কোন ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করেন?

উ : চিনা ভাষায়।

প্র : তিনি কেরির সহযোগিতায় কী অনুবাদ করেন?

উ : সংস্কৃত রামায়ণ।

প্র : তিনি কোন কোন পত্রিকার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন?

উ : সাপ্তাহিক ‘সমাচার দর্পন’, ‘ফ্রেন্ড অব ইন্ডিয়া’ ও ‘দিগদর্শন’ পত্রিকা।

প্র : ‘দিগদর্শন’-এর সম্পাদনা সম্পর্কে লেখ।

উ : ‘দিগদর্শন’ (১৮১৮) শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত এবং জোশুয়া মার্শম্যানের পুত্র জন ক্লার্ক মার্শম্যান কর্তৃক সম্পাদিত। এখানে ছাত্রদের জন্য ইতিহাস ভূগোল বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে প্রবন্ধাদি প্রকাশিত হতো।

প্র : তাঁর মৃত্যু সাল কত?

উ : ৫ই ডিসেম্বর, ১৮৩৭।




=================================



Sunday, 17 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। অমৃতলাল বসু। ১৭.০৪.২০২২. Vol -708. The blogger in literature e-magazine.


অমৃতলাল বসু

 জন্ম ১৭ই এপ্রিল, ১৮৫৩। তিনি কলকাতার কম্বুলিয়াটোলা বঙ্গ বিদ্যালয়ে বাল্যশিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর কিছু সময়ের জন্য হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা করার পর তিনি ১৮৬৯ সালে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইন্সটিটিউশন থেকে এন্ট্রান্স পাশ করেন। এরপর দুই বছর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করেন। তিনি কাশীতে হোমিওপ্যাথি নিয়ে পড়াশোনা করেন।


কিছু সময়ের জন্য হোমিওপ্যাথি চর্চার পর তিনি সরকারী চিকিৎসক হিসাবে ফোর্টব্লেয়ার যান। স্বল্প সময়ের জন্য পুলিশ বিভাগেও কাজ করেছেন। তিনি ১৮৭২ সালের ৭ই ডিসেম্বর জোড়াসাঁকোতে মধুসূদন সান্যালের বাড়িতে "নীলদর্পণ নাটকে অভিনয় করেন। পরে ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল অপেরা কোম্পানি, মিনার্ভা, স্টার, বেঙ্গল প্রভৃতি রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করেন। তিনি মোট চল্লিশটি গ্রন্থ রচনা করেছেন, যাদের মধ্যে চৌত্রিশটি হলো নাটক। তার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে তরুলতা (১৮৯১), বিমাতা বা বিজয় বসন্ত (১৮৯৩), হরিশচন্দ্র (১৮৯৯), এবং আদর্শ বন্ধু (১৯০০)। প্রহসন রচনায় সিদ্ধহস্ত হলেও তিনি এতে রক্ষণশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। নারী শিক্ষা ও নারী স্বাধীনতাকে ব্যঙ্গ করে তিনি তাজ্জব ব্যাপার প্রহসন রচনা করেন। একাকার প্রহসনে নিচু জাতির ইংরেজি শিক্ষার বিরুদ্ধে তীব্র বিদ্রুপ করেন। এছাড়া কালাপানি প্রহসনে হিন্দুদের সমুদ্রযাত্রা এবং বাবু প্রহসনে দেশের প্রগতিশীল সামাজিক আন্দোলনের পথিকৃৎ ব্রহ্মসমাজকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেন।

হাস্যরসাত্মক নাট্যরচনার জন্য তিনি স্বদেশবাসীর কাছে "রসরাজ" উপাধি পেয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের যুবরাজের আগমন উপলক্ষে উকিল জগদানন্দের বাড়িতে অনুষ্ঠিত ঘটনাকে ব্যঙ্গ করে রচিত নাটিকা পরিচালনার জন্য আদালতে দণ্ডিত হন। এই ব্যাপারে সরকার মঞ্চাভিনয়ের জন্য ১৮৭৬ সনে আইন রচনা করে।


উল্লেখযোগ্য নাটক 

(তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা চল্লিশ এবং তার মধ্যে নাটক চৌত্রিশ।.)

নাটক : 

তিলতর্পণ,

বিবাহবিভ্রাট,

তরুলতা (১৮৯১)

খাসদখল

ব্যাপিকা বিদায়

বিমাতা বা বিজয়বসন্ত (১৮৯৩)

হরিশচন্দ্র (১৮৯৯)

আদর্শ বন্ধু (১৯০০) প্রভৃতি।

প্রহসন রচনায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। তার কয়েকটি প্রহসনের নাম:


তাজ্জব ব্যাপার

কালাপানি

বাবু

একাকার

চোরের উপর বাটপারি (১৮৭৬)

তিলতর্পণ (১৮৮১)

ডিসমিস (১৮৮৩)

চাটুজ্যে ও বাঁড়ুজ্যে (১৯০৪)


গিরিশচন্দ্র ঘোষ ও অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফীর উৎসাহে তিনি ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল অপেরা কোম্পানি, বেঙ্গল, স্টার, মিনার্ভা ইত্যাদি রঙ্গমঞ্চে সুনামের সাথে অভিনয় করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জগত্তারিণী পদক লাভ করেন। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রথম বাঙালি মহিলা এম.এ চন্দ্রমুখী বসু তার সম্পর্কিত বোন।


মৃত্যু - ২রা জুলাই, ১৯২৯। 

  তিনি প্রহসন ও ব্যঙ্গ রচনাতেই অধিক সফল হয়েছেন। সমকালের নাগরিক ও গ্রামীণ সমাজের নানা দিক নিয়ে এসব ব্যঙ্গাত্মক নাটক রচিত হয়। এর জন্য তিনি সমাজের এক শ্রেণির প্রশংসা এবং অপর শ্রেণির নিন্দার ভাগী হন। নাটক রচনা এবং নাট্যাভিনয়ে সাফল্যের জন্য তিনি জনসাধারণের কাছে রসরাজ নামে খ্যাত ছিলেন। গিরিশচন্দ্র ঘোষ ও অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফীর উৎসাহে তিনি ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল, গ্রেট ন্যাশনাল অপেরা কোম্পানি, বেঙ্গল, স্টার, মিনার্ভা ইত্যাদি রঙ্গমঞ্চে সুনামের সাথে অভিনয় করেন। রসরাজ অমৃতলাল বসু উনিশ শতকের পেশাদারী রঙ্গালয়ে এবং নাট্যসাহিত্যে তাঁর মৌলিক নাটক নিয়েই যা খ্যাতি পেয়েছিলেন তারপর নাট্যরূপের দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু মীরকাসিম চরিত্রটির ইংরাজ বিরোধীতা তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে মুগ্ধ করত। তাঁর এই নাট্যরূপায়ণ সরকারকে ক্ষুব্ধ করে এবং নাটকটির অভিনয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। ।


বাংলা প্রহসনের দিকপাল অমৃতলাল বসু ১৮৭৩ সালের ১৭ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আংশিক মাস্টার, ডাক্তার ও সর্বোপরি নট আর নাট্যকার অমৃতলাল বসু একেবারে খাস কলকাতার বাসিন্দা, কম্বুলিয়াটোলার লোক। হুতোম থেকে পরশুরাম, বহু রসিকের স্মৃতিকথাতেই উঠে এসেছে সে কালের কলকাতা ৷ তবু রসবিবেচনায় একদম পৃথক অমৃতলাল বসু ৷তার পরিবার এই শহরেই প্রপিতামহের কাল থেকে বাস করছেন ৷ অমৃতলাল বসু কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন থেকে এন্ট্রান্স পাস (১৮৬৯) করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। দুবছর ডাক্তারি পড়ার পর কাশী গিয়ে তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রণালী শিক্ষা করেন এবং কলকাতায় কিছুদিন এর চর্চাও করেন। এ ছাড়া তিনি কিছুকাল স্কুলে শিক্ষকতা, পোর্টব্লেয়ারে সরকারি চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন এবং পুলিশ বিভাগে চাকরি করেন। কিন্তু থিয়েটারের প্রতি আকর্ষণহেতু কোনো পেশায় স্থায়ী হতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তিনি নাটক রচনা ও অভিনয়ে মনোনিবেশ করেন এবং কালক্রমে একজন অভিনেতা, মঞ্চাধ্যক্ষ, নাটক ও গান রচয়িতা হিসেবে দেশজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। অমৃতলাল বসু নাটক লিখতেন এবং ফরমায়েসি গানেরও জোগান দিতেন ৷ বটতলা থেকে ছাপা বইয়ের পাঁড় ভক্ত ছিলেন অমৃতলাল, তাঁর ব্যক্তিগত লাইব্রেরির জন্য তিনি পথপুস্তিকার খোঁজ করতেন, বেশি দামে পুস্তিকাগুলি কিনতেও রাজি ছিলেন তিনি ৷পুরাতন প্রসঙ্গ, পুরাতন পঞ্জিকা ও ভুবনমোহন নিয়োগী নামে তাঁর তিনটি আত্মস্মৃতিমূলক রচনা আছে। অমৃতলাল বসুর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা চল্লিশ এবং তার মধ্যে নাটক চৌত্রিশ। 


থিয়েটার জগতের বাইরেও অমৃতলালের পদচারণা ছিল। কবিতা ও গল্প-উপন্যাসও রচনা করেছেন তিনি। প্রথম দিকে কবির লড়াইয়ের কবিতা ও হাফ-আখড়াই গান লিখেও তিনি জনপ্রিয় হয়েছিলেন। স্যার সুরেন্দ্রনাথের সহকর্মীরূপে, স্বদেশী যুগের কর্মী এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন। শ্যামবাজার অ্যাংলো-ভার্নাকুলার স্কুলের সেক্রেটারি, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহসভাপতি এবং কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন অমৃতলাল। তাঁর কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘জগত্তারিণী’ পদকে ভূষিত করে। রসরাজ নামে খ্যাত অমৃতলাল বসু ১৯২৯ সালের ২রা জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। 


=={{{{{{{{{{∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆∆}}}}}}}}}}}}}==

Tuesday, 12 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। সিমাস হীনি Seamus Heaney- ( আইরিশ নোবেল জয়ী কবি ও নাট্যকার). ১৩.০৪.২০২২. Vol -704. The blogger in literature e-magazine



























































































সিমাস হীনি Seamus Heaney
 

জন্ম - শেমাস্‌ জাস্টিন হীনি ১৩ এপ্রিল ১৯৩৯
কাসলডসন, উত্তর আয়ারল্যান্ড এর টেমনিয়ারনের কৃষিজীবী ক্যাথলিক পরিবারে। তার কৃষক পিতার খামার ছিল মসবন্‌ অঞ্চলে। অনেক ভাইবোনের কলকাকলিতে মুখর একান্নবর্তী পরিবারে তার শৈশব অতিবাহিত হয়েছে আনন্দঘন পরিবেশে। তার মাসী ম্যারি তাকে স্নেহের আঁচলে সযত্নে বড় করেছেন। ক্যাথলিক ধর্মের নানা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছেন।দাম্পত্যসঙ্গী অ্যান ডেভলিন (১৯৬৫–২০১৩)। সন্তান- মাইকেল ক্রিস্টোফার ও
ক্যাথরিন অ্যান.
কর্মজীবনে তিনি শিক্ষকতা করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বেলফাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে।


Heaney taught as a visiting professor in English at the University of California, Berkeley in the 1970–1971 academic year.[28] In 1972, he left his lectureship at Belfast, moved to Wicklow in the Republic of Ireland, and began writing on a full-time basis. That year, he published his third collection, Wintering Out. In 1975, Heaney's next volume, North, was published.[29] A pamphlet of prose poems entitled Stations was published the same year.

In 1976 Heaney was appointed Head of English at Carysfort College in Dublin and moved with his family to the suburb of Sandymount. His next collection, Field Work, was published in 1979. Selected Poems 1965-1975 and Preoccupations: Selected Prose 1968–1978 were published in 1980. When Aosdána, the national Irish Arts Council, was established in 1981, Heaney was among those elected into its first group. (He was subsequently elected a Saoi, one of its five elders and its highest honour, in 1997).

Also in 1981 Heaney traveled to the United States as a visiting professor at Harvard, where he was affiliated with Adams House. He was awarded two honorary doctorates, from Queen's University and from Fordham University in New York City (1982). At the Fordham commencement ceremony on 23 May 1982, Heaney delivered his address as a 46-stanza poem entitled "Verses for a Fordham Commencement."
কবিতার প্রতি তার অনুরাগ কবি টেড হিউজ এর চোখে পড়ে। হিনির কবিতায় বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়েছে মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমতা। সমকালীন সমাজ বাস্তবতা, সমাজ সংলগ্ন মানুষ, নিজস্ব সংস্কৃতি, রাজনীতি, জাতিবিদ্বেষের প্রতি তীব্র ঘৃণা, উপনিবেশ বিরোধিতা এইসব প্রসঙ্গও এসেছে মানবিক মূল্যবোধে এবং সমাজ ও রাজনীতি সচেতনতায়। তাই স্থানিক হলেও তিনি সার্বজনীন কবি হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন। উদার বৈশ্বিকতার আলোকপ্রাপ্ত কবি হিসেবেও তিনি অনেকর কাছে সমাদৃত।

Poetry: main collections 

1966: Death of a Naturalist, Faber & Faber
1969: Door into the Dark, Faber & Faber
1972: Wintering Out, Faber & Faber
1975: North, Faber & Faber
1979: Field Work, Faber & Faber
1984: Station Island, Faber & Faber
1987: The Haw Lantern, Faber & Faber
1991: Seeing Things, Faber & Faber
1996: The Spirit Level, Faber & Faber
2001: Electric Light, Faber & Faber
2006: District and Circle, Faber & Faber
2010: Human Chain, Faber & Faber
Poetry: selected editions Edit
1980: Selected Poems 1965–1975, Faber & Faber
1990: New Selected Poems 1966–1987, Faber & Faber
1998: Opened Ground: Poems 1966–1996, Faber & Faber
2014: New Selected Poems 1988–2013, Faber & Faber
2018: 100 Poems, Faber & Faber
Prose: main collections Edit
1980: Preoccupations: Selected Prose 1968–1978, Faber & Faber
1988: The Government of the Tongue, Faber & Faber
1995: The Redress of Poetry: Oxford Lectures, Faber & Faber
Prose: selected editions Edit
2002: Finders Keepers: Selected Prose 1971–2001, Faber & Faber
Plays Edit
1990: The Cure at Troy: A version of Sophocles' Philoctetes, Field Day
2004: The Burial at Thebes: A version of Sophocles' Antigone, Faber & Faber
Translations Edit
1983: Sweeney Astray: A version from the Irish, Field Day
1992: Sweeney's Flight (with Rachel Giese, photographer), Faber & Faber
1993: The Midnight Verdict: Translations from the Irish of Brian Merriman and from the Metamorphoses of Ovid, Gallery Press
1995: Laments, a cycle of Polish Renaissance 
  • cycle by Leoš Janáček of poems by Ozef Kalda, Faber & Faber
  • 2009: The Testament of Cresseid & Seven Fables, Faber & Faber
  • 2016: Aeneid: Book VI, Faber & Faber

Limited editions and booklets (poetry, prose, and translations)

  • 1965: Eleven Poems, Queen's University
  • 1968: The Island People, BBC
  • 1968: Room to Rhyme, Arts Council N.I.
  • 1969: A Lough Neagh Sequence, Phoenix
  • 1970: Night Drive, Gilbertson
  • 1970: A Boy Driving His Father to Confession, Sceptre Press
  • 1973: Explorations, BBC
  • 1975: Stations, Ulsterman Publications
  • 1975: Bog Poems, Rainbow Press
  • 1975: The Fire i' the Flint, Oxford University Press
  • 1976: Four Poems, Crannog Press
  • 1977: Glanmore Sonnets, Editions Monika Beck
  • 1977: In Their Element, Arts Council N.I.
  • 1978: Robert Lowell: A Memorial Address and an Elegy, Faber & Faber
  • 1978: The Makings of a Music, University of Liverpool
  • 1978: After Summer, Gallery Press
  • 1979: Hedge School, Janus Press
  • 1979: Ugolino, Carpenter Press
  • 1979: Gravities, Charlotte Press
  • 1979: A Family Album, Byron Press
  • 1980: Toome, National College of Art and Design
  • 1981: Sweeney Praises the Trees, Henry Pearson
  • 1982: A Personal Selection, Ulster Museum
  • 1982: Poems and a Memoir, Limited Editions Club
  • 1983: An Open Letter, Field Day
  • 1983: Among Schoolchildren, Queen's University
  • 1984: Verses for a Fordham Commencement, Nadja Press
  • 1984: Hailstones, Gallery Press
  • 1985: From the Republic of Conscience, Amnesty International
  • 1985: Place and Displacement, Dove Cottage
  • 1985: Towards a Collaboration, Arts Council N.I.
  • 1986: Clearances, Cornamona Press
  • 1988: Readings in Contemporary Poetry, DIA Art Foundation
  • 1988: The Sounds of Rain, Emory University
  • 1988: The Dark Wood, Colin Smythe
  • 1989: An Upstairs Outlook, Linen Hall Library
  • 1989: The Place of Writing, Emory University
  • 1990: The Tree Clock, Linen Hall Library
  • 1991: Squarings, Hieroglyph Editions
  • 1992: Dylan the Durable, Bennington College
  • 1992: The Gravel Walks, Lenoir Rhyne College
  • 1992: The Golden Bough, Bonnefant Press
  • 1993: Keeping Going, Bow and Arrow Press
  • 1993: Joy or Night, University of Swansea
  • 1994: Extending the Alphabet, Memorial University of Newfoundland
  • 1994: Speranza in Reading, University of Tasmania
  • 1995: Oscar Wilde Dedication, Westminster Abbey
  • 1995: Charles Montgomery Monteith, All Souls College
  • 1995: Crediting Poetry: The Nobel Lecture, Gallery Press
  • 1996: Commencement Address, UNC Chapel Hill
  • 1997: Poet to Blacksmith, Pim Witteveen
  • 1997: An After Dinner Speech, Atlantic Foundation
  • 1998: Audenesque, Maeght
  • 1999: The Light of the Leaves, Bonnefant Press
  • 1999: Ballynahinch Lake, Sonzogni
  • 2001: Something to Write Home About, Flying Fox
  • 2001: Towers, Trees, Terrors, Università degli Studi di Urbino
  • 2002: The Whole Thing: on the Good of Poetry, The Recorder
  • 2002: Hope and History, Rhodes University
  • 2002: A Keen for the Coins, Lenoir Rhyne College
  • 2002: Hallaig, Sorley MacLean Trust
  • 2002: Arion, a poem by Alexander Pushkin, translated from the Russian, with a note by Olga Carlisle, Arion Press
  • 2003: Eclogues in Extremis, Royal Irish Academy
  • 2003: Squarings, Arion Press
  • 2004: Anything can Happen, Town House Publishers
  • 2004: Room to Rhyme, University of Dundee
  • 2004: The Testament of Cresseid, Enitharmon Press
  • 2004: Columcille The Scribe, The Royal Irish Academy
  • 2005: A Tribute to Michael McLaverty, Linen Hall Library
  • 2005: The Door Stands Open, Irish Writers Centre
  • 2005: A Shiver, Clutag Press
  • 2007: The Riverbank Field, Gallery Press
  • 2008: Articulations, Royal Irish Academy
  • 2008: One on a Side, Robert Frost Foundation
  • 2009: Spelling It Out, Gallery Press
  • 2010: Writer & Righter, Irish Human Rights Commission
  • 2012: Stone From Delphi, Arion Press
  • 2013: The Last Walk, Gallery Press
  • 2019: My Yeats, Yeats Society Slign.


ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজ এর অনারারি ফেলো ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আইরিশ লেখকদের জন্য সিমাস হিনি প্রফেসরশিপ প্রবর্তন করা হয়। হিনির মতে এটি তার জীবনের অন্যাতম সম্মান।

উল্লেখযোগ্য পুরস্কার

জিওফ্রে ফেবার স্মারক পুরস্কার Memorial Prize, ১৯৬৮
ই এম ফর্স্টার পুরস্কার, ১৯৭৫
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার, ১৯৯৫
Commandeur de l'Ordre des Arts et Lettres, 1996
Saoi of Aosdána, 1997
Golden Wreath of Poetry, 2001
টি এস এলিয়ট পুরস্কার, ২০০৬
The Griffin Trust for Excellence in Poetry Lifetime Recognition Award, 2012



২০১৩ সালের ৩০ আগস্ট চুয়াত্তর বছর বয়সে প্রয়াত হন সিমাস হিনি। 

বিংশ শতাব্দীর সর্বাগ্রগণ্য ইংরেজিভাষী কবিদের একজন যিনি ১৯৯৫ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। ইয়েট্‌স্‌, জর্জ বার্নার্ড শ ও বেকেটের পর তিনি চতুর্থ আইরিশ সাহিত্যিক যিনি এই পুরস্কার অর্জন করেন। এই প্রথিতযশা আইরিশ কবি ও অনুবাদক ১৯৬৬ সালে ডেথ অফ এ ন্যাচারালিস্ট্‌ কাব্যগ্রন্থটি লিখে প্রথম লোকখ্যাতি অর্জন করেন। তিনি প্রাচীন ইংরেজি মহাকাব্য বেউলফ আধুনিক ইংরেজিতে রূপান্তর করেছেন। তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন এবং অক্সফোর্ড প্রফেসর অব পোয়েট্রি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।


জলাভূমি (Bogland)

সন্ধ্যার বিশাল সূর্য টুকরো করার
প্রেইরী প্রান্তর কোনো নেই আমাদের
নিরীক্ষণ মেনে নেয় সর্বত্র এখানে
যথেচ্ছ-সীমানা-ভাঙা দিগন্তবিস্তার

চোখ বশ হয় একচক্ষু সাইক্লোপস্‌ দৈত্যের
মতো গিরি পরিবৃত হ্রদে। পাঁচিলহীন এই
দেশ মূলত জলাভূমি। দিনে দিনে শিলাস্তর রৌদ্রাভ দৃশ্যের ফাঁকে ফাঁকে জমা হয়।

ভূগর্ভ জ্বালানি খুঁড়ে ওরা তুলে আনে
অতীত আইরিশ ইল্‌ক্‌ জাতির কঙ্কাল
তুলে এনে রাখে, যেন এই প্রত্নজীব
হাওয়ায় ভরাট এক অত্যাশ্চর্য ঝুড়ি

খুঁড়ে তুলে আনা হলো যে প্রত্নমাখন
ভূতলে প্রচ্ছন্ন ছিল শতবর্ষ আগে
পূর্ববৎ আছে তার নুন ও শুভ্রতা
এ মাটি কেমন দেখ দয়াপরবশ

গ’লে উন্মোচিত হচ্ছে পদতলে
প্রাচীন মাখন কালো লক্ষ বছরের
প্রাচীনতা মুছে দেয় শেষ তার নাম।
কয়লা কখনো ওরা খুঁড়বে না এখানে।

খুঁড়বে নরম যার শাঁস, ফারগাছ
জলবন্দী সুবিশাল, তাদেরই নিমগ্ন আধোভাগ
ভেঙ্গে চলে আমাদের পূর্বপুরুষ
ভিতরে, ভূতলে, নিরন্তর

যত স্তর করে ওরা অবারিত
আগেই বসতি ছিল তাঁবুবাসীদের
আটলান্টিক ক্ষরণে সিঞ্চিত জলাভূমিময় কূপগুলো

সজল কেন্দ্রের মূলে অতল গহ্বর্।

=================================




Monday, 11 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। ক্ষীরোদ প্রসাদ বিদ্যাবিনোদ। ১২.০৪.২০২২. Vol -703. The blogger in literature e-magazine



ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ।


জন্ম ১২ এপ্রিল ১৮৬৩.
কৃষ্ণনগর, নদিয়া,, পশ্চিমবঙ্গ।
মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট থেকে রসায়নে বিএ পাস করে প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এমএ পাস করেন। ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে অধ্যাপনা করেন।ছাত্র থাকাকালীন সময় থেকেই তিনি সাহিত্য চর্চা করতেন। ১৮৮৫ সালে তার রাজনৈতিক সন্ন্যাসী (দুই খণ্ড) প্রকাশিত হয়েছিল। ১৮৯৪ সালে তিনি অমিত্রাক্ষর ছন্দে ফুলশয্যা নাটকটি রচনা করেন। এটি উচ্চকবিত্বপূর্ণ বাংলা নাটক হিসাবে প্রশংসা পেয়েছিল। ক্ষীরোদপ্রসাদের সবথেকে জনপ্রিয় নাটক আলিবাবা (১৮৯৭)। আরব্য উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে তিনি এই গীতিনাট্যটি লিখেছিলেন।

তাঁর ঐতিহাসিক নাটকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রঘুবীর, বঙ্গের প্রতাপাদিত্য, আলমগীর, ও নন্দকুমার। এই নাটকগুলি দেশাত্মবোধক চেতনা জাগাতে সাহায্য করেছিল। তার রচিত ৬টি পৌরাণিক নাটকের মধ্যে ভীষ্ম ও নরনারায়ন রঙ্গমঞ্চে বহুদিন অভিনীত হয়েছিল। তিনি মোট ৫৮টি বই লিখেছিলেন। এগুলির মধ্যে কয়েকটি উপন্যাস এবং গল্পের বইও আছে। তিনি ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীমদ্‌ভগবদগীতা অনুবাদ করেন। তিনি ১৩১৬ বঙ্গাব্দ থেকে ১৩২২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত অলৌকিক রহস্য নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন।

গিরিশচন্দ্রকে অনুসরণ করেও তিনি পৌরাণিক নাটককে গিরিশচন্দ্রের প্রভাব থেকে কিছুটা মুক্ত করতে পেরেছিলেন। তার নাটক গিরিশচন্দ্রের নাটকের মত অতটা ভক্তি-রসাসিক্ত ছিল না। তিনি পৌরাণিক চরিত্রগুলিকে বুদ্ধির দিক দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের নাট্যকাব্যের প্রভাব তার কয়েকটি নাটকে সুষ্পষ্ট ভাবে পড়েছিল।


রচনা কর্ম :

নাটিকা
সপ্তম প্রতিমা (১৯০২)
রঘুবীর (১৯০৩)
রঞ্জাবতী (১৯০৪)
উলুপী (১৯০৬)
রক্ষঃ ও রমণী (১৯০৭)
দৌলতে দুনিয়া (১৯০৯)
মিডিয়া (১৯১২)
নিয়তি(১৯১৪)
রত্নেশ্বরের মন্দির (১৯২২)
জয়শ্রী (১৯২৬)
রঙ্গনাট্য ও গীতিনাট্য
ফুলশয্যা (১৮৯৪)
কবি-কাননিকা (১৮৯৬)
আলিবাবা (১৮৯৭)
প্রমোদরঞ্জন (১৮৯৮)
কুমারী (১৮৯৯)
জুলিয়া (১৯০০)
বভ্রুবাহন (১৯০০)
বেদৌরা (১৯০৩)
বৃন্দাবন বিলাস (১৯০৪)
বাসন্তী (১৯০৮)
বরুণা (১৯০৮)
দাদা ও দিদি (১৯০৮)
ভূতের বেগার (১৯০৮)
দৌলতে দুনিয়া (১৯০৯)
মিডিয়া (১৯১২)
ভীষ্ম (১৯১৩)
রূপের ডালি (১৯১৩)
মিনতি (১৯১৪)
রত্নেশ্বরের মন্দির (১৯২২)
জয়শ্রী (১৯২৬)
পৌরাণিক নাটক
প্রেমাঞ্জলি (১৮৯৬)
সাবিত্রী (১৯০২)
চাঁদবিবি (১৯০৭)
দুর্গা (১৯০৯)
ভীষ্ম (১৯১৩)
রামানুজ (১৯১৬)
মান্দাকিনি (১৯২১)
বিদুরথ (১৯২৩)
নরনারায়ণ (১৯২৬)
ইতিহাসাশ্রয়ী নাটক

বঙ্গের প্রতাপাদিত্য (১৯০৩)
পদ্মিনী (১৯০৬)
পলাশির প্রায়শ্চিত্ত (১৯০৭)
নন্দকুমার (১৯০৭)
অশোক (১৯০৮)
বাঙালার মনসদ (১৯১০)
খাঁ জাহান (১৯১২)
আহেরিয়া (১৯১৫)
রঙ্গের রাঠোর (১৯১৭)
আলমগীর (১৯২১)
গোলকুন্ডা (১৯২৫)

মৃত্যু ৪ জুলাই ১৯২৭ (বয়স ৬৩)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।

তাঁহার কৌলিক উপাধি বন্দ্যোপাধ্যায়। নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ-পুত্র, রসায়নশাস্ত্রে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন জেনারেল এসেম্রীজ্ ইন্‌স্টিটিউশনে (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) কেমিষ্ট্রির অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত হন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি অধ্যাপনার কাজ ছেড়ে নাটক রচনাতেই আত্মনিয়োগ করেন। স্বদেশী আন্দোলনের যুগে (১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে) দেশাত্মবোধের প্রেরণায় যে জাতীয় মহাবিদ্যালয় (Bengal National College) প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহার অধ্যাপকবর্গের তালিকায় ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের নামও দেখা যায়। তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদেরও বিশিষ্ট সভ্য ছিলেন এবং এক সময় এই পরিষদের সহকারী সভাপতিও নিযুক্ত হয়েছিলেন।

ক্ষীরোদপ্রসাদ ভারতীয় ধর্মজগৎ হতেও বিচ্ছিন্ন ছিলেন না। তাঁহার সহকর্মী বন্ধু অধ্যাপক মন্মথ মোহন বসু বলেছেন—“আধ্যাত্মিক শক্তিতে বিশ্বাস ক্ষিরোদপ্রসাদের জন্মগত ছিল। তিনি এক তান্ত্রিক সাধকের বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার এই পূর্বপুরুষের অলৌকিক শক্তি সম্বন্ধে নানা গল্প শুনা যায় ........ তাঁহাদের বংশ ব্রাহ্মণের গুরুবংশ, তাঁহার সুশিক্ষিত শাস্ত্রজ্ঞ পিতা ছিলেন স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বহু নিষ্ঠাবান্ ব্রাহ্মণের দীক্ষাগুরু।” (বাংলা নাটকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ)।

ক্ষীরোদপ্রসাদ শ্রীশ্রীমা সারদাদেবীর নিকট হতে দীক্ষা গ্রহণ করেন। ঠাকুর রামকৃষ্ণের উদার ধর্মবোধ ও স্বামী বিবেকানন্দের বলিষ্ঠ কর্মযোগ তাঁর জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছে। রামকৃষ্ণ মিশনের পূজ্যপাদ স্বামী সারদানন্দ ও স্বামী শিবানন্দ মহারাজদের সঙ্গে তাঁর অন্তরঙ্গ যোগ ছিল। ক্ষীরোদপ্রসাদের 'ভীষ্ম' নাটক স্বামী সারদানন্দ ও 'নর-নারায়ণ' স্বামী শিবানন্দের নামে উৎসর্গীকৃত। শ্রীঅরবিন্দের বিপ্লবী মতবাদ এবং দিব্যজীবনের ভাবধারাতেও তিনি অনুপ্রাণিত ছিলেন। ধর্মের অলৌকিক রহস্যের প্রতিও তাঁহার তীব্র আকর্ষণ ছিল। তিনি থিয়োসফিক্যাল সোসাইটিরও একজন বিশিষ্ট সভ্য ছিলেন এবং ‘অলৌকিক রহস্য’ নামে একটি মাসিকপত্রও প্রকাশ করেছেন।
তাঁর জীবনের এইসকল বিবরণ হতে তাঁর ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। তিনি একই সঙ্গে ছিলেন রসায়নশাস্ত্র ও রসশাস্ত্রবিদ। তাঁর ভিতর বিজ্ঞানের যুক্তি, বিশ্লেষণ প্রণালি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সাহিত্যিক কল্পনা, সৌন্দর্য ও রসবোধ। ফলে ক্ষীরোদপ্রসাদের কল্পনা কক্ষচ্যুত হয়নি, তা ভৌম আকর্ষণকেও লঙ্ঘন করেনি। বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি ও সাহিত্যিক রুচি ও ধর্মের আবেগবিহ্বল ভক্তিবাদের কথা সংযমবোধের রেখা টেনে দিয়েছে। অলৌকিক রহস্যকে তিনি যথাসম্ভব গ্রহণ করেছেন যুক্তির মানদণ্ডে। নব্যযুগের মানবিকতাবোধ (Humanism) দ্বারা তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই বলে এ দেশীয় পৌরাণিক বিশ্বাসকেও তিনি অবজ্ঞা করেননি। সর্বোপরি ক্ষীরোদপ্রসাদ উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন বলিষ্ঠ জাতীয়তাবাদের মন্ত্রে। সে জাতীয় চেতনার মূল ভিত্তি শক্তি, প্রেম ও ধর্ম। ক্ষীরোদপ্রসাদের সাহিত্য-কৃতি তাঁহার ব্যক্তি-মানসিকতার এই সকল চিহ্নে চিহ্নিত. 
এমন সাহিত্যিক প্রতিভা বিশেষভাবে পরিস্ফুট হয়েছে তাঁর নাট্য নিবন্ধে। তিনি কিছু কাব্য-কবিতা ও উপন্যাসও রচনা করেছেন। কিন্তু নাট্যকার (Phaywrihte) রূপেই তাঁর খ্যাতি। তখন নাট্যজগতে অতুলকৃষ্ণ মিত্র ও রাজকৃষ্ণ রায়ের যুগ শেষ হয়ে এসেছে। নট-নাট্যকার রূপে গিরিশ-প্রতিভা তুঙ্গশীর্ষ স্পর্শ করেছে। নট-নাট্যকার নাট্যাচার্যরূপে রসরাজ অমৃতলাল বসুও তখন লব্ধপ্রতিষ্ঠ। হাসির গানের স্রষ্টা দ্বিজেন্দ্রলাল রায় মঞ্চনাট্য রচনার সবে হাত দিয়েছেন। সাধারণ রঙ্গালয়ের জন্য রচিত না হলেও রবীন্দ্রনাথের নাটকও তখন সাহিত্যক্ষেত্রে সকলে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ঠিক এই সময়েই অধ্যাপক ক্ষীরোদপ্রসাদ ‘ফুলশয্যা’ নাটক ঐতিহাসিক দৃশ্য কাব্যটি নিয়ে মঞ্চাভিনয়ের লক্ষ্যে অগ্রসর হয়েছেন। নাটকটি ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে ‘এমারেল্ড’ থিয়েটারে অভিনীত হন। তখন নট ও নাট্যচার্য ব্যতীত শুধু নাট্যকার রূপে সাধারণ রঙ্গালয়ে স্থান পাওয়া দুষ্কর ছিল। কারণ রঙ্গালয়ের সঙ্গে যোগহীন নাট্যকারের পক্ষে 'রঙ্গালয়ের ব্যাকরণ' জানা সম্ভব ছিল না, সে ব্যাকরণে অভিজ্ঞ ছিলেন রঙ্গালয়ের জন্য বাঁধাধরা নাট্যকার। কিন্তু ক্ষীরোদপ্রসাদ বাহিরে থেকে সেই দুর্লভ সুযোগ লাভ করেছিলেন। তাঁর বিশিষ্ট পৃষ্টপোষক ছিলেন তৎকালীন খ্যাতিনাম নট ও নাট্যাধ্যক্ষ অমরেন্দ্রনাথ দত্ত। 'ক্লাসিক’ থিয়েটার তাঁরই সৃষ্টি। এই ক্লাসিক থিয়েটারেই ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ক্ষীরোদপ্রসাদের 'আলিবাবা’ অভিনীত হয় এবং নাট্যকার রূপে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। আলিবাবার মঞ্চসাফল্যে তখনকার মঞ্চাধ্যক্ষদের অনেকেই ক্ষীরোদপ্রসাদের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ক্ষীরোদপ্রসাদও উৎসাহিত হয়ে কয়েকখানি রঙ্গনাট্য গীতিনাট্য ও পূর্ণাঙ্গ নাটক রচনা করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলেজের অধ্যাপনা ত্যাগ করে নাটক রচনাতেই আত্মনিয়োগ করেন। এই সময় তিনি স্টারের নট-নাট্যকার রসরাজ অমৃতলাল বসুর পোষকতা লাভ করেন এবং ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দেই 'বঙ্গের প্রতাপাদিত্য' ঐতিহাসিক নাটক রচনা করে বঙ্গ রঙ্গমঞ্চে দেশাত্মবোধের অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে দেন। বঙ্গের ঐতিহাসিক পুরুষকে অবলম্বন করে দেশ প্রেমমূলক সার্থক নাটক রচনার কৃতিত্ব ক্ষীরোক্ষপ্রাসাদেরই। এর পূর্বে বাংলার ইতিহাস অবলম্বনে দুই একটি নাটক [ যেমন, হরলাল রায়ের 'বঙ্গের সুখবাগান' (১৮৭৪) এবং লক্ষ্মীনারায়ণ চক্রবর্তীর 'নবাব সিরাজদ্দৌলা' (১৮৭৬) ] রচিত হলেও, সেগুলি দেশাত্মবোধের সাড়া জাগাতে পারেনি। তাঁর ঐতিহাসিক নাটকগুলির ভিতর যুগধর্মে ও নাট্যধর্মে ‘আলমগীর’ উৎকৃষ্ট।
তিনি নানান রসের নাটক রচনা করেছেন। গীতিরঙ্গ নাট্য নিয়ে তাঁর খ্যাতির সূচনা, প্রতিষ্ঠা বিশেষ করে ঐতিহাসিক নাটকে। ক্ষীরোদপ্রসাদের অন্তরঙ্গ ধর্মীয় চেতনার প্রকাশ ঘটেছে তাঁর পৌরাণিক নাটকগুলিতে। ক্ষীরোদপ্রসাদের ধর্ম অন্ধ আবেগ উচ্ছ্বাসের ধর্ম নয়। জ্ঞান-প্রহরায় সংযত বৈজ্ঞানিক যুক্তিতে বিশ্লেষিত মানবধর্মজিজ্ঞাসাই তাঁর পৌরাণিক নাটকের বিশেষত্ব। যাত্রার অতি উচ্ছ্বসিত ভক্তির আবেগ, এমন কি নাট্যাচার্য্য গিরিশ ঘোষের আবেগোচ্ছল ভক্তির প্লাবন তাঁর নাটকে নেই। গ্রামীণ ভক্তিধর্মের স্রোেত হতেও পৌরাণিক নাটক মুক্ত। তবে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসে তিনি আঘাত করেননি, যেমন করেছেন দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর ‘পাষাণী’ নাটকে। পৌরাণিক ধর্মকে তিনি উদ্ধার করেছেন মূল সংস্কৃত ধর্ম ও শাস্ত্রগ্রন্থ হতে এবং তাকে তিনি পরিবেশন করেছেন যুগধর্মের আলোকে। ফলে ক্ষীরোদপ্রসাদের পৌরাণিক নাটক তৎকালীন বিশিষ্ট সাহিত্যরথীদের ‘ঐতিহ্যঅবগাহন' এর ধারা হতে বিচ্ছিন্ন হয়নি। বঙ্কিমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র যে পৌরাণিক বিশ্বাসকে নূতন মানবিকতার আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন এবং রবীন্দ্রনাথ মহাভারতের চরিত্রগুলির যে তাৎপর্য অনুসন্ধান করেছেন, ক্ষীরোদপ্রসাদের পুরাণ-চিন্তা সেই ধারার সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করেছে।
তাঁর পৌরাণিক নাটকের ভিতর 'ভীষ্ম' (১৯১৩) এবং 'নরনারায়ণ’ (১৯২৬) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ‘নরনারায়ণ’ ক্ষীরোদপ্রসাদের শেষ রচনা এবং উহা তাঁহার প্রৌঢ় চিন্তার ফসল।
==============={{{{{======{========

Sunday, 10 April 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। নিমাই ভট্টাচার্য। ১০.০৪.২০২২. Vol -701. The blogger in literature e-magazine


নিমাই ভট্টাচার্য


জন্ম ১০ এপ্রিল ১৯৩১ 

যশোর জেলার মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শালিখা থানার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিন বছর বয়সে তিনি মাতৃহীন হন। তাঁর পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ।এবং১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর তিনি কলকাতার রিপন কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 

নিমাই ভট্টাচার্য বাংলাদেশের বগুড়া জেলার কালীতলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর কন্যা দীপ্তি ভট্টাচার্যকে বিবাহ করেন। দেশভাগের পর তিনি পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ী হন। অতঃপর তিনি কলকাতার টালিগঞ্জের শাশমল রোডের বাসায় বসবাস করতেন।

নিমাই ভট্টাচার্য ভাগ্যের নির্মম অদৃষ্টে সাড়ে তিন বছর বয়সে মাতৃহীন হয়ে ভীষণ কষ্টে পিতার সীমিত আয়ের মধ্যে ভর্তি হন কলকাতা কর্পোরেশনের ফ্রি স্কুলে। কলকাতা রিপন কলেজে কিছুদিন পড়ালেখা করার পর যশোরে ফিরে আসেন। ১৯৪১ সালে তিনি যশোরের সম্মিলনী ইন্সটিটউশনে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং নবম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করেন। নিমাই ভট্টাচার্যের পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য নিজেও যশোরের সম্মিলনী ইন্সটিটিউশনের ছাত্র এবং পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন কলকাতা গমনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। পরবর্তীতে দেশ বিভাগের পর নিমাই ভট্টাচার্য তাঁর পিতার সাথে পুনরায় কলতায় যান এবং সেখানে আবারো রিপন স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং সেখান থেকেই তিনি আই.এ পাস করেন এবং ১৯৫২ সালে বি.এ পাস করেন।

নিমাই সাংবাদিকতার মাধ্যমেই তার কর্মজীবন শুরু হয়।এবং তিনি দীর্ঘ পঁচিশ বছর দিল্লিতে ভারতীয় পত্রিকার রাজনৈতিক-কূটনৈতিক-সংসদীয় সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ভারতের অনেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিদেশ সফর করে নিউজ কাভার করেছেন। ১৯৬৩ সালে তার লেখা একটি উপন্যাস কলকাতার সাপ্তাহিক ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং তা ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে।এরপর, তার চারটি উপন্যাস একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

নিমাইয়ের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৫০ -এর অধিক। বাংলা সাহিত্যে মেমসাহেব উপন্যাসটি তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা। মেমসাহেব গ্রন্থ অবলম্বনে ১৯৭২ সালে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার এবং অপর্ণা সেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য

বইগুলো হল:

মেমসাহেব
মিনিবাস
মাতাল
ইনকিলাব
ব্যাচেলার
ইমনকল্যাণ
ডিফেন্স কলোনী
প্রবেশ নিষেধ
কেরানী
ভায়া ডালহৌসী
হকার্স কর্নার
রাজধানী এক্সপ্রেস
নিমন্ত্রণ
নাচনী
অ্যাংলো ইন্ডিয়ান
ডার্লিং
ম্যাডাম
ওয়ান আপ-টু-ডাউন
গোধুলিয়া
প্রিয়বরেষু
আকাশ ভরা সূর্য তারা
মোগল সরাই জংশন
ইওর অনার
ককটেল
অনুরোধের আসর
যৌবন নিকুঞ্জে
শেষ পরানির কড়ি
হরেকৃষ্ণ জুয়েলার্স
পথের শেষে

মৃত্যু - ২৫ জুন ২০২০ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক, সাংবাদিক।

নিমাই, ফাল্গুনী, নীহাররঞ্জন—নামগুলো বললে সাহিত্যবোদ্ধাদের অনেকেই নাক সিটকায়। আমি ভেবে দেখেছি, দস্তয়েভ্‌স্কি, তলস্তয়, ও হেনরি, মোপাসাঁ, চেখভ পড়ার পরও আগে যাঁদের নাম বললাম, তাঁদের লেখার প্রতি আমার আকর্ষণ একটুও কমে না। যে বয়সে ওঁরা আমার কাছে এসেছেন, সে বয়সে ওঁদের ভাবনা ও ভাষায় মুগ্ধ হয়েছি। কে কতটা উচ্চমার্গের লেখা লিখেছেন, তা নিয়ে বিচারে বসিনি। নিমাই ভট্টাচার্যকে আমরা ওই সব তত্ত্বজ্ঞানীর আলোচনায় ছেড়ে দেব না; বরং নিজের মতো করেই তাঁকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করব।

‘জার্নালিস্টের জার্নাল’ বইটায় নিমাই ভট্টাচার্য তাঁর দারিদ্র্যের কথা যে নিরাসক্ত ভাষায় বর্ণনা করেছেন, তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। নামগোত্রহীন এক সস্তা পত্রিকার রিপোর্টারের প্রতি আশপাশের মানুষের অবহেলার গল্পটি তিনি এমন ভঙ্গিতে বলেছেন, যাতে তাঁর প্রতি যেন করুণা না হয়। এক শ টাকা মাইনের রিপোর্টার, যিনি দিল্লি থেকে আশি টাকা পাঠাচ্ছেন কলকাতায় থাকা পরিবারের জন্য, ২০ টাকা দিয়ে কায়ক্লেশে কাটিয়ে দিচ্ছেন সময়; তিনিই যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর বাড়িতে যাচ্ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রীকন্যা ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকে পাচ্ছেন স্নেহ। তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে কোনো বেগ পেতে হচ্ছে না। পোশাকে–আশাকে ও চেহারায় দারিদ্র্য ফুটে ওঠা এই যুবককে দেখে যখন নেহরু জেনে নিলেন তাঁর আর্থিক অবস্থা, তখন সেটা বুঝতে দিলেন না নিমাইকে। শুধু নিজের সঙ্গে বসিয়ে কফি খাওয়ালেন, স্যান্ডউইচ খাওয়ালেন, এবং বলে দিলেন, এখন থেকে এই ছেলের অবাধ অধিকার থাকবে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে। দিনে এক বেলা খাওয়া নিমাইয়ের জন্য সে ছিল এক বিশাল ব্যাপার।

আরও একটি ব্যাপার সে বই থেকেই প্রথম জানা। বাঙালি স্বভাব। খুব ছোট এক পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন বলে দিল্লির বড় বড় বাঙালি সাংবাদিক নিমাইকে পাত্তাও দিতেন না। নিজেরা পৃথিবীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছেন একে-অন্যকে, কিন্তু নিমাইয়ের দিকে ভ্রুক্ষেপও করতেন না। একদিন সংসদ অধিবেশন থেকে বের হয়ে অন্য সাংবাদিকদের এড়িয়ে নিমাইয়ের কাঁধে হাত রেখে কথা বলতে বলতে চললেন নেহরু। জানিয়ে দিলেন, ছেলেটা তাঁর খুব কাছের। এরপর থেকে নিমাইয়ের কদর বেড়ে গেল সাংবাদিক মহলে। জাতে উঠলেন নিমাই।

সাংবাদিক পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা বলে আমাকে বরং নিমাই ভট্টাচার্যের সাংবাদিক জীবনটাই আকর্ষণ করত বেশি। ‘মেমসাহেব’ থেকে উঠে এসে দোলা বৌদি যে কখনো কখনো মনের পক্ষপাত পেতেন না, তা সত্য নয়। ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ‘মেমসাহেব’ বইটি কীভাবে লেখা হলো, সত্যিই মেমসাহেব বলে কেউ ছিলেন কি না, সে প্রশ্নগুলো আগ্রহের জন্ম দিত। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সে উত্তরগুলো পেয়ে জানার ইচ্ছে মিটেছে। ১৯৭২ সালে উত্তম–অপর্ণা অভিনীত ‘মেমসাহেব’ চলচ্চিত্রটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। এখনো চাইলে দেখে নেওয়া যায়। প্রযুক্তির কল্যাণে ছবিটি এখন হাতের মুঠোয়। কিন্তু কেন যেন নিমাই আমার বেশি আপন হয়েছেন তাঁর সাংবাদিকতার বর্ণনা দিয়ে। এমনও হতে পারে, সেখানে ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া মানুষদের দেখা পাই বলে আকর্ষণটা বেশি।
নিমাই ভট্টাচার্যের সৃষ্টিতে কখনো এমন কিছু তরল উপস্থাপনাও নেই, যার জেরে তাঁকে আমরা বাজারচলতি সাহিত্যিক বলে অভিহিত করতে পারি। সমাজবিজ্ঞানকে সমাজবীক্ষণে রূপান্তরিত করার এক ধরনের অদ্ভুত জাদুস্পর্শ নিমাই ভট্টাচার্যের সামগ্রিক সাহিত্য সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে। অথচ এই বহুমুখী উপস্থাপনায় একটিবারের জন্যও কোনো প্রচারকামিতার গড়নে নিজের সাহিত্যকে উপস্থাপিত করেননি নিমাই ভট্টাচার্য।

দেশভাগ তাঁর জীবনের এক স্থায়ী ক্ষত ছিল। জন্মভূমির প্রতি তৃষ্ণাও তাঁর ছিল অন্তহীন। সেই তৃষ্ণা নিবারণের উদ্দেশ্যে জন্মভূমি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নানা পর্যায়ের সঙ্গে নিমাই ভট্টাচার্য অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। দিল্লিতে কর্মরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের সহায়তায় তাঁর ভূমিকার সাক্ষ্য হিসেবে সৈয়দ হাসান ইমামের মতো ব্যক্তিত্ব এখনো আমাদের মধ্যে আছেন।

এই সংযোগকে কিন্তু নিমাই ভট্টাচার্য ব্যবহার করে গেছেন বাঙালির সর্বজনীন ধর্মনিরপেক্ষ এবং সম্প্রীতির প্রতি এক ধরনের প্রবল অনুরাগ হিসেবে। এই অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে, কেবল সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে যে তিনি তাঁর সামগ্রিক চেতনাকে আবদ্ধ রেখেছেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সাহিত্য যাতে বইয়ের আলমারির একটি সম্ভ্রান্ত সামগ্রী হিসেবেই না থেকে যায়, তার বদলে সব পাঠকের, বিশেষ করে বাঙালি হৃদয়ের অন্তস্তলের বস্তু হয়ে উঠতে পারে বই, তার জন্য চেষ্টার ত্রুটি ছিল না নিমাই ভট্টাচার্যের।

প্রান্তিক চরিত্র, নিম্নবর্গীয় চরিত্র, সেই সঙ্গে অভিজাত—অত্যন্ত উচ্চমার্গের, উচ্চ কৌলীন্যের চরিত্রকে তিনি ব্যবহার করেছেন নিজের সৃষ্টিতে। তবে কখনোই উচ্চমার্গের প্রতি, উচ্চবর্ণের প্রতি, উচ্চ ধনগৌরবের প্রতি নিজের আকর্ষণ তিনি প্রকাশ করেননি। এ ক্ষেত্রে তাঁর পক্ষপাতিত্ব ছিল উচ্চচিন্তা, উচ্চমান, উচ্চ চেতনার প্রতি। তাঁর অনুরক্তি ছিল মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং একেবারে প্রান্তিক মানুষদের জন্য।

প্রান্তিকতার বিনির্মাণের বেলায়ও কিন্তু নিমাই ভট্টাচার্য এমন কোনো চরিত্রকে, এমন কোনো বিধি ব্যবস্থাকে উপস্থাপিত করেননি, যার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল না। তাই নিমাই ভট্টাচার্যের কোনো সৃষ্টিকেও কল্পিত এক ধরনের ইউটোপিয়ার পরিচায়ক হিসেবে ধরে নিতে পারি না। সহজ সরল বাস্তবতার মধ্যে, প্রখর রাজনৈতিক অথচ কোনো প্রকারের দলীয় আনুগত্য নয়, কিন্তু আদর্শবাদের প্রতি অনুরাগ, মনুষ্যত্বের প্রতি অনুরাগ, পরধর্মসহিষ্ণুতা, প্রীতি, ভালোবাসা, সম্প্রীতির জন্য আকুতি ছিল তাঁর সৃষ্টির সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য।

====={={{{{{{{{{{{{{∆∆∆∆∆}}}}}}}}}}}}}}}}}==






জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য। যামিনী রায়। ১১.০৪.২০২২. Vol -702. The blogger in literature e-magazine


যামিনী রায় 


বাঙালি চিত্রশিল্পী যামিনী রায় ১৮৮৭ সালের ১১ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামের এক মধ্যবিত্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রামতরণ রায়। মাতার নাম নগেন্দ্রবালা দেবী।


১৯০৬ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতিতে পড়াশোনা করেন। আর্ট স্কুলে ইতালীয় শিল্পী গিলার্দি ও পরে অধ্যক্ষ পার্সি ব্রাউনের সংস্পর্শে এসে তিনি প্রাচ্য-প্রতীচ্যের উভয় শিল্পের কলা-কৌশলের সাথে পরিচিত হন। ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতি শিখলেও শেষ পর্যন্ত দেশজ সরল রীতিতে চিত্র নির্মাণ করেন।এছাড়া কিছুদিন তিনি ফার্সি শিল্পীদের মতো চিত্র চর্চা করেন। এইসময় তিনি তার চিত্র চর্চার বেগ আরও বৃদ্ধি করেন। তিনি 16 বছর বয়সে কলকাতা আর্ট কলেজে চিত্র চর্চার জন্য ভর্তি হন।


বিদেশি ভাবধারায় প্রথম দিকে ছবি আঁকলেও পরবর্তীতে সম্পূর্ণ দেশীয় তথা গ্রামবাংলার প্রতিরূপ তার ছবিতে ফুটে উঠেছে। নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তার লক্ষ্যে তিনি লোক ও নৃগোষ্ঠীদের সংস্কৃতি বেছে নেন। নিজস্ব বাঙালি সংস্কৃতি ও ভাবধারার জন্য তিনি গর্বিত ছিলেন। তিনি বহুবার বিদেশ থেকে আমন্ত্রণ পেলেও কখনও বিদেশে যাননি।-

চিত্ররূপ 

সাঁওতাল জননী ও শিশু,
মাদলবাদনরত সাঁওতাল,
নৃত্যরত সাঁওতাল,
মা ও শিশু,
রাঁধা-কৃষ্ণ,
যীশু 
অন্যান্য


খ্যাতি ও সম্মাননা 

পদ্মভূষণ: ১৯৫৪ - এটি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা।
ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার: ১৯৫৫ - যামিনী রায় সর্বপ্রথম এই পুরস্কারটি পান। এটি চারু শিল্পের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান।
ডি-লিট: ১৯৫৬


মারা গেছেন: ২৪ এপ্রিল, ১৯৭২, কলকাতা

শিল্পকর্ম: 
Three Pujarins, Woman, Drummers, Cat and the lobster, Krishna with Gopis,

বাংলার লোকজ পুতুল, শিশু, গ্রাম বাংলার সরল মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখর চিত্র ইত্যাদি তিনি তার ছবির ‘ফর্ম’ হিসেবে গ্রহণ করেন।


========}{{}=}{}{}{{{}}{}{}{{{){{{{{}======