Monday, 28 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক। ০১.০৩.২০২২. Vol -661. The blogger in literature e-magazine


"বাড়ি আমার ভাঙ্গনধরা অজয় নদীর বাঁকে,
জল সেখানে সোহাগ ভরে স্থলকে ঘিরে রাখে"


বর্ধমানে কুনুর নদীর উপর কুমুদ সেতু পার হয়ে ডান দিকে গেলে কিছু দূরেই কোগ্রামে পল্লীকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের জন্মভিটে।

কুমুদরঞ্জনের আমবাগানকে বাঁয়ে রেখে ক্রমশ এগোলে দুদিকে রয়েছে অজয় নদ আর কুনুর নদী । ছোট্ট কুনুর কোগ্রামের দক্ষিণ ও পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অজয়ে মিশেছে। অজয়ের এ পারে বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট, ওপারে বীরভূমের নানুর। মঙ্গলকাব্যের উল্লেখিত উজানী নগর আজকের কোগ্রাম। এখানেই পল্লীকবি কুমুদ রঞ্জনের জন্ম। নদী ঘেরা অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে বড় হয়েছেন কবি কুমুদ রঞ্জন।

তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য নদী এবং প্রকৃতি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন তাঁকে কবি হতে সহায়তা করেছে।

পল্লীকবির রচিত একাধিক কবিতায় রয়েছে প্রকৃতি ও গ্রাম্য পরিবেশে সৌন্দর্যের বর্ণনা। শিশু বয়সে বেশীরভাগ মানুষই পড়েছে কবি রচিত কবিতা-

আমাদের সঙ্গী

গুটি ছয় পায়রা ও গুটিকত হাঁস রে,

আমাদের ঘরে করে একসাথে বাস রে।

আসে কাক এক ঝাঁক

করে খুব হাঁক ডাক।

কোকিলের কনসার্ট শুনবি তো যাস রে।

দল বেঁধে টুনটুনি আসে হেথা চরতে

বাবুইরা তালগাছে লাগে বাসা গড়তে।

বেনেবুড়ি মারে ডুব

পুণ্যটা করে খুব,

ফিঙে আসে বেছে বছে শুয়োপোকা ধরতে।

ঝাঁক বেঁধে বনটিয়া, কভু আসে মুনিয়া

বলাকার সারি শেষ হয় নাকো গুনিয়া

উড়ে বাজপক্ষী

কত যেন লক্ষী!


কবি কুমুদ রঞ্জন ১৮৮৩ সালের ১লা মার্চ এক বৈদ্য ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পূর্ণচন্দ্র মল্লিক ছিলেন কাশ্মীর রাজসরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মাতা ছিলেন সুরেশকুমারী দেবী। তাঁদের পূর্বপুরুষ বাংলার নবাবের থেকে মল্লিক উপাধি লাভ করেন। তাদের পদবী সেন শর্মা বা সেনগুপ্ত।

ছাত্র হিসাবে তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। ১৯০৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন এবং বঙ্কিম চন্দ্র স্বর্ণ পদকে ভূষিত হন ।

বর্ধমান জেলার মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরূপে তিনি কর্মজীবন শুরু.

বর্ধমান জেলার মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরূপে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় এই স্কুলে পড়তেন বাংলার বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ।

পল্লীকবির উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলি হলঃ

শতদল (১৯০৬ - ০৭)

বনতুলসী (১৯১১)

উজানী (১৯১১)

একতারা (১৯১৪)

বীথি (১৯১৫)

চুন ও কালি (১৯১৬)

বীণা (১৯১৬)

বনমল্লিকা (১৯১৮)

কাব্যনাট্য দ্বারাবতী (১৯২০)

রজনীগন্ধা (১৯২১)

নূপুর (১৯২২)

অজয় (১৯২৭)

তূণীর (১৯২৮)

স্বর্ণসন্ধ্যা (১৯৪৮)

কবি হিসেবে তিনি সম্মানিত হয়েছেন সর্বত্র।

স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পল্লীকবির বিষয় উল্লেখ করে বলেছেন-কুমুদরঞ্জনের কবিতা পড়লে বাংলার গ্রামের তুলসীমঞ্চ, সন্ধ্যাপ্রদীপ, মঙ্গলশঙ্খের কথা মনে পড়ে।"

তিনি 'জগতারিণী' স্বর্ণপদক লাভ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক 'পদ্মশ্রী' উপাধিতে ভূষিত হন।

আবার বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের প্রতিষ্ঠান - 'সাহিত্যতীর্থ' এর তীর্থপতি ছিলেন কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক।

১৯৭০ সালের আজকের দিনে (১৪ ডিসেম্বর) সমস্ত সাহিত্য কবিতা অনুরাগী মানুষকে গভীর শোকের নিমজ্জিত করে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।

আজও তাঁর কবিতায় সৃষ্ট প্রাকৃতিক রূপ, রস, অনুভূতি, বাংলা সাহিত্যের পরোতে পরোতে তাকে চিরঞ্জীবী করে রেখেছে। অজয় নদ, কুনুর নদীর স্রোত তাঁর উপস্থিতি অনুভব করায়।


তিনি 'জগতারিণী' স্বর্ণপদক লাভ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারত সরকার কর্তৃক 'পদ্মশ্রী' উপাধিতে ভূষিত হন। ।


========={{{{{{=======}}}}}==========


Sunday, 27 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। রম্যরচয়িতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। ২৮.০২.২০২২. Vol -660 The blogger in literature e-magazine


সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

" তাঁর রচনায় হাস্যরসের সাথে তীব্র শ্লেষ ও ব্যঙ্গ মেশানো থাকে। ছোটদের জন্য তার লেখাগুলিও খুবই জনপ্রিয়। তার সৃষ্ট ছোটদের চরিত্রের মধ্যে বড়মামা সিরিজ কাহিনি অন্যতম।"

জন্ম  ১৯৩৬ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় (পিতা) তুলসী চট্টোপাধ্যায় (মাতা) । পাঁচ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর, সঞ্জীবের বাল্যকাল কাটে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে। স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা থেকে রসায়ন বিদ্যায় অনার্স[৩][৪] পাশ করেন তিনি। সরকারি চাকরি করেছেন বেশ কয়েক দিন। রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বিখ্যাত এক রাসায়নিক প্রতিষ্ঠানে এনালিস্টের চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় প্রথম রম্য রচনা লেখেন। সেটি প্রকাশিত হয় একটি সিনেমা পত্রিকায়। সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন বেতার ও দূরদর্শনের নানা শিল্পসংক্রান্ত লেখা ও লিখতেন।

রঙ্গ ও ব্যঙ্গধর্মী লেখাই শুধু নয় নানা ধরনের লেখায় পারদর্শী সঞ্জীব। সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা সংস্থার দেশপত্রিকায় যোগ দেন। সহযোগী সম্পাদক ছিলেন একসময়। তার প্রথম প্রকাশিত লেখা ছিল একটি গল্প - 'সারি সারি মুখ'। আর প্রথম ধারাবাহিক সুদীর্ঘ লেখা 'দেশ' পত্রিকায় সঞ্জয় ছদ্মনামে 'জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ'। প্রথম উপন্যাস 'পায়রা' শারদীয় 'দেশ' পত্রিকাতেই প্রকাশ পায়।

গ্রন্থ :

  • আহাম্মক
  • দীনজনে
  • একা
  • বাড়িবদল
  • দ্বিধা
  • চিড়িয়াখানা
  • মিলেনিয়াম
  • দ্বিতীয় পক্ষ
  • আড়ং ধোলাই
  • যদি হই মুখ্যমন্ত্রী
  • জুতো চোর হইতে সাবধান
  • বুনো ওল আর বাঘা তেঁতুল
  • গুপ্তধনের সন্ধানে
  • শ্রীরামকৃষ্ণের গিরিশচন্দ্র
  • ফাঁস
  • বুদবুদ
  • বিকাশের বিয়ে
  • এর নাম সংসার
  • খোল কত্তাল
  • শ্রীরামকৃষ্ণ ও আমি
  • শ্বেতপাথরের টেবিল
  • পায়রা
  • সোফা-কাম-বেড
  • ক্যানসার
  • শাখা প্রশাখা
  • কলিকাতা আছে কলিকাতাতেই
  • শঙ্খচিল
  • অগ্নিসঙ্কেত
  • তৃতীয় ব্যক্তি
  • ভারতের শেষ ভূখণ্ড
  • রুকুসুকু
  • কলকাতার নিশাচর
  • লোটাকম্বল
  • অবশেষ
  • দুই মামা
  • মনোময়
  • নবেন্দুর দলবল
  • জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গ (সঞ্জয় ছদ্মনামে)
  • হালকা হাসি চোখের জল
  • দুই সাধক মুখোমুখি
  • ল্যাং মারো ল্যাং
  • গিরিশচন্দ্রের শ্রীরামকৃষ্ণ
  • শ্রীচরণকমলে
  • সেরা হাসির হাট
  • বারো ইয়ারি
  • মৃগয়া
  • আকাশ পাতাল
  • বারুদ
  • বুলেট
  • স্বপ্ন
  • কামিনী কাঞ্চন
  • ঝাড়ফুঁক
  • তুমি আর আমি
  • দুটি দরজা
  • দুটি চেয়ার
  • পেয়ালা পিরিচ (গল্প)
  • ফিরে ফিরে আসি
  • বসবাস
  • ভয়
  • ভৈরবী ও শ্রীরামকৃষ্ণ
  • মুখোমুখি
  • মুখোশের চোখে জল
  • রসেবসে
  • রাখিস মা রসেবশে
  • সাধের ময়না
  • হেঁটমুন্ড ঊর্দ্ধপদ
  • অজ্ঞাতবাস
  • ইতি তোমার মা
  • ইতি পলাশ
  • ডোরাকাটা জামা
  • শিউলি
  • হাসির আড়ালে
  • মুখোমুখি শ্রীরামকৃষ্ণ
  • গাঙচিল
  • কিচিরমিচির
  • সাপে আর নেউলে
  • রাত বারোটা
  • কাটলেট
  • হেড স্যারের কাণ্ড
  • বড়মামার কীর্তি
  • বাঘমারি
  • থ্রি এক্স
  • সপ্তকাণ্ড
  • সাত টাকা বারো আনা
  • হাসি কান্না চুনি পান্না
  • পুরনো সেই দিনের কথা
  • গাধা
  • সুখ ১
  • সুখ ২
  • সুখ ৩
  • গৃহসুখ
  • দাদুর কীর্তি
  • বাঙালীবাবু
  • উৎপাতের ধন চিৎপাতে
  • বেহালা
  • স্বামী স্ত্রী সংবাদ
  • জগৎচন্দ্র হার
  • মাপা হাসি চাপা কান্না (সাতটি খন্ড)
  • শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন
  • পরমেশ্বরী সীতা
  • এই তালিকাটি অসম্পূর্ণ

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ১৯৮১ সালে আনন্দ পুরস্কার পান। ২০১৮ সালে "শ্রীকৃষ্ণের শেষ কটা দিন" ছোটগল্পের কারণে, সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার  বিজয়ী হন।

==={{{{{{{{{{{∆∆∆∆∆∆∆∆}}}}}}}}}}}}}}}}=====

Saturday, 26 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি।জন আর্নস্ট স্টাইনবেক ।২৭.০২.২০২২. Vol -659. The blogger in literature e-magazine

জন আর্নস্ট স্টাইনবেক 

জন্ম ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯০২
স্যালিনাস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন খ্যাতিমান ঔপন্যাসিক। 
ত্রিশের দশকের মহামন্দার প্রেক্ষাপটে তিনি এক আলোড়নসৃষ্টিকারী উপন্যাস লিখেন, যার নাম দ্য গ্রেপস অব র‍্যাথ‌। 
দাম্পত্যসঙ্গী ক্যারল হেনিং (বি. ১৯৩০; বিচ্ছেদ. ১৯৪৩) গুইন কঞ্জার (বি. ১৯৪৩; বিচ্ছেদ. ১৯৪৮)
এলাইন স্কট (বি. ১৯৫০)
সন্তান টমাস স্টাইনবেক (১৯৪৪–২০১৬)
চতুর্থ জন স্টাইনবেক (১৯৪৬–১৯৯১)

Works :

During his writing career, he authored 33 books, with one book coauthored alongside Edward Ricketts, including 16 novels, six non-fiction books, and two collections of short stories. He is widely known for the comic novels Tortilla Flat (1935) and Cannery Row (1945), the multi-generation epic East of Eden (1952), and the novellas The Red Pony (1933) and Of Mice and Men (1937). The Pulitzer Prize–winning The Grapes of Wrath (1939)[5] is considered Steinbeck's masterpiece and part of the American literary canon.[6] In the first 75 years after it was published, it sold 14 million copies.

Most of Steinbeck's work is set in central California, particularly in the Salinas Valley and the California Coast Ranges region. His works frequently explored the themes of fate and injustice, especially as applied to downtrodden or everyman protagonists.


In 1936, Steinbeck published the first of what came to be known as his Dustbowl trilogy, which included Of Mice and Men and The Grapes of Wrath. This first novel tells the story of a fruit pickers' strike in California which is both aided and damaged by the help of "the Party", generally taken to be the Communist Party, although this is never spelled out in the book.

Of Mice and Men
Main article: Of Mice and Men
Of Mice and Men is a tragedy that was written as a play in 1937. The story is about two traveling ranch workers, George and Lennie, trying to earn enough money to buy their own farm/ranch. As it is set in 1930s America, it provides an insight into The Great Depression, encompassing themes of racism, loneliness, prejudice against the mentally ill, and the struggle for personal independence. Along with The Grapes of Wrath, East of Eden, and The Pearl, Of Mice and Men is one of Steinbeck's best known works. It was made into a movie three times, in 1939 starring Burgess Meredith, Lon Chaney Jr., and Betty Field, in 1982 starring Randy Quaid, Robert Blake and Ted Neeley, and in 1992 starring Gary Sinise and John Malkovich.

The Grapes of Wrath
Main article: The Grapes of Wrath
The Grapes of Wrath is set in the Great Depression and describes a family of sharecroppers, the Joads, who were driven from their land due to the dust storms of the Dust Bowl. The title is a reference to the Battle Hymn of the Republic. Some critics found it too sympathetic to the workers' plight and too critical of capitalism,[75] but it found a large audience of its own. It won both the National Book Award and Pulitzer Prize for fiction (novels) and was adapted as a film starring Henry Fonda and Jane Darwell and directed by John Ford.

East of Eden
Main article: East of Eden (novel)
Steinbeck deals with the nature of good and evil in this Salinas Valley saga. The story follows two families: the Hamiltons – based on Steinbeck's own maternal ancestry[76] – and the Trasks, reprising stories about the Biblical Adam and his progeny. The book was published in 1952. Portions of the novel were made into a 1955 movie directed by Elia Kazan and starring James Dean.

Travels with Charley
Main article: Travels with Charley: In Search of America
In 1960, Steinbeck bought a pickup truck and had it modified with a custom-built camper top – which was rare at the time – and drove across the United States with his faithful "blue" standard poodle, Charley. Steinbeck nicknamed his truck Rocinante after Don Quixote's "noble steed". In this sometimes comical, sometimes melancholic book, Steinbeck describes what he sees from Maine to Montana to California, and from there to Texas and Louisiana and back to his home on Long Island. The restored camper truck is on exhibit in the National Steinbeck Center in Salinas.

Bibliography :
Title.             Year      Category       ISBN
Cup of Gold 1929         Novel     978-0-14-018743-4
The Pastures of Heaven 1932 Short stories 978-0-14-018748-9
The Red Pony 1933 Novella 978-0-14-017736-7
To a God Unknown 1933 Novel 978-0-14-018751-9
Tortilla Flat 1935 Novel 978-0-14-004240-5
In Dubious Battle 1936 Novel 978-0-14-303963-1
Of Mice and Men 1937 Novella 978-0-14-017739-8
The Long Valley 1938 Short stories 978-0-14-018745-8
Their Blood Is Strong 1938 Nonfiction 978-0-930588-38-0
The Grapes of Wrath 1939 Novel 978-0-14-303943-3
The Forgotten Village 1941 Film 978-0-14-311718-6
Sea of Cortez: A Leisurely Journal of Travel and Research 1941 Nonfiction 978-0-14-018744-1
The Moon Is Down 1942 Novel 978-0-14-018746-5
Bombs Away: The Story of a Bomber Team 1942 Nonfiction 978-0-14-310591-6
Cannery Row 1945 Novel 978-0-14-017738-1
The Wayward Bus 1947 Novel 978-0-14-243787-2
The Pearl 1947 Novella 978-0-14-017737-4
A Russian Journal 1948 Nonfiction 978-0-14-118019-
Burning Bright 1950 Novella 978-0-14-303944-0
The Log from the Sea of Cortez 1951 Nonfiction 978-0-14-018744-1
East of Eden 1952 Novel 978-0-14-018639-0
Sweet Thursday 1954 Novel 978-0-14-303947-1
The Short Reign of Pippin IV: A Fabrication 1957 Novel 978-0-14-303946-4
Once There Was a War 1958 Nonfiction 978-0-14-310479-7
The Winter of Our Discontent 1961 Novel 978-0-14-303948-8
Travels with Charley: In Search of America 1962 Nonfiction 978-0-14-005320-3
America and Americans 1966 Nonfiction 978-0-670-11602-7
Journal of a Novel: The East of Eden Letters 1969 Nonfiction 978-0-14-014418-5
Viva Zapata! 1975 Film 978-0-670-00579-6
Steinbeck: A Life in Letters 1975 Nonfiction 978-0-14-004288-7
The Acts of King Arthur and His Noble Knights 1976 Fiction 978-0-14-310545-9
Working Days: The Journals of The Grapes of Wrath1989  Nonfiction 978-0-14-014457-4
Steinbeck in Vietnam: Dispatches from the War 2012 Nonfiction 978-0-8139-3403-7.



উল্লেখযোগ্য পুরস্কার
কথাসাহিত্যে পুলিৎজার পুরস্কার (১৯৪০)
১৯৬৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয় করেন।

মৃত্যু ২০ ডিসেম্বর ১৯৬৮ (বয়স ৬৬)
নিউ ইয়র্ক সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
Filmography
1939: Of Mice and Men—directed by Lewis Milestone, featuring Burgess Meredith, Lon Chaney, Jr., and Betty Field
1940: The Grapes of Wrath—directed by John Ford, featuring Henry Fonda, Jane Darwell and John Carradine
1941: The Forgotten Village—directed by Alexander Hammid and Herbert Kline, narrated by Burgess Meredith, music by Hanns Eisler
1942: Tortilla Flat—directed by Victor Fleming, featuring Spencer Tracy, Hedy Lamarr and John Garfield
1943: The Moon is Down—directed by Irving Pichel, featuring Lee J. Cobb and Sir Cedric Hardwicke
1944: Lifeboat—directed by Alfred Hitchcock, featuring Tallulah Bankhead, Hume Cronyn, and John Hodiak
1944: A Medal for Benny—directed by Irving Pichel, featuring Dorothy Lamour and Arturo de Cordova
1947: La Perla (The Pearl, Mexico)—directed by Emilio Fernández, featuring Pedro Armendáriz and María Elena Marqués
1949: The Red Pony—directed by Lewis Milestone, featuring Myrna Loy, Robert Mitchum, and Louis Calhern
1952: Viva Zapata!—directed by Elia Kazan, featuring Marlon Brando, Anthony Quinn and Jean Peters
1955: East of Eden—directed by Elia Kazan, featuring James Dean, Julie Harris, Jo Van Fleet, and Raymond Massey
1957: The Wayward Bus—directed by Victor Vicas, featuring Rick Jason, Jayne Mansfield, and Joan Collins
1961: Flight—featuring Efrain Ramírez and Arnelia Cortez
1962: Ikimize bir dünya (Of Mice and Men, Turkey)
1972: Topoli (Of Mice and Men, Iran)
1982: Cannery Row—directed by David S. Ward, featuring Nick Nolte and Debra Winger
1992: Of Mice and Men—directed by Gary Sinise and starring John Malkovich and Gary Sinise
2016: In Dubious Battle—directed by James Franco and featuring Franco, Nat Wolff and Selena Gomez. 
====[[[[{{{=={={{{{=========={{{{{={{====

Friday, 25 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ভিক্টোর হুগো। ২৬.০২.২০২২. Vol -658. The blogger in literature e-magazine


ভিক্টর হুগো

সাহিত্যিক ভিক্টর হুগো আলফ্রেড নোবেলকে বলেছিলেন ‘ইউরোপের সবচেয়ে ধনী ভ্যাগাবন্ড’। ডিনামাইটের আবিষ্কারক হিসাবে পরিচিত হলেও আলফ্রেড নোবেলের সাহিত্যপ্রতিভা কিছু কম ছিল না। তাঁর নিজস্ব লাইব্রেরিতে ১৫০০র অধিক বই ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের বিভিন্ন বই ছিল তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহে। ইংরেজ কবি ওয়ার্ডওয়ার্থ, শেলি আর বিশেষ করে বায়রন তাঁর ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। সাহিত্য সম্বন্ধে আলফ্রেড নোবেলের নিজস্ব ধারণা আর ব্যক্তিগত আকর্ষণ ছিল প্রবল। বাবা-মা জোর করে যদি তাঁকে বিজ্ঞান আর ব্যবসায় ঢুকিয়ে না দিতেন তাহলে হয়ত আমরা একজন বড়মাপের সাহিত্যিককে পেতাম।আর তাঁর ব্যক্তিগত ইচ্ছেও অনেকটা সেরকমই ছিল।



আলফ্রেডের প্রিয় কবি ছিলেন লর্ড বায়রণ। তাই আলফ্রেডের ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে বায়রণের তের খণ্ড সোনার জলে বাঁধানো বই স্থান পেয়েছিল। আলফ্রেড একা থাকতে ভালোবাসতেন। আর একাকী আলফ্রেড প্রায়শই বায়রণের কবিতা আবৃত্তি করতেন। আলফ্রেড একবার বলেছিলেন, “যে নিঃসঙ্গ ব্যক্তির কাছে বই আর কালি নেই, সে জীবন্মৃত।”

বিজ্ঞান ও ব্যবসা নিয়ে নিয়ত ব্যস্ত নোবেল সময় সুযোগ পেলেই সাহিত্য রচনায় বসে যেতেন। যখনি মনের কোণায় উঁকি দিত এই বুঝি ব্যবসা লাটে উঠবে তখনি ভাবতেন ব্যবসা বন্ধ করে পুরোপুরি সাহিত্য জগতে ঢুকে পড়বেন।কিন্তু তা আর পুরোপুরিভাবে হয়ে ওঠে নি। প্যারিসে জুলিয়েট অ্যাডাম ল্যাম্বার নামে একজন একটি প্রকাশনা সংস্থা চালাতেন, নোবেল ছিলেন তার ঘনিষ্ঠ। জুলিয়েটের বাড়িতে মাঝেমধ্যে একটি সাহিত্যসভা বসত। সেই সভাতেই জুলিয়েট আলফ্রেডের সাথে আলাপ করিয়ে দেন সেযুগের বিখ্যাত কবি-ঔপন্যাসিক ভিক্টর হুগোর সাথে। প্রথম আলাপেই হুগোর ‘ফ্যান’ হয়ে যান আলফ্রেড। হুগোর প্রতি প্রবল অনুরাগ জন্মে আলফ্রেডের। প্রকাশক জুলিয়েটের বাড়িতে কবি-সাহিত্যিকদের আড্ডায় যেমন হাজির হতেন আলফ্রেড নোবেল ও ভিক্টোর হুগো তেমনি আসতেন পিয়ের লতি, পল বর্জে আর মোপাসাঁর মত সাহিত্যিকেরাও।

উনিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী রোমান্টিক লেখক ভিক্টর হুগো। ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মী। বিশ্ববিখ্যাত ‘লা মিজারেবল’ ও ‘হাঞ্চব্যাক অব নটরডেম’ তারই সৃষ্টি। 

পুরো নাম ভিক্টর মারি হুগো। ১৮০২ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি ফ্রান্স জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্টের সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা। কবিতা, উপন্যাস, নাটক ইত্যাদি সাহিত্যের অনেক দিকেই ছিল তার বিচরণ। এগুলোর পাশাপাশি তিনি ৪ হাজারেরও বেশি চিত্রকর্ম এঁকেছিলেন।


হুগোর শৈশব কেটেছে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। জন্মের দুই বছর পর নেপোলিয়ন ফরাসিদের সম্রাট হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। যেহেতু তার বাবা নেপোলিয়নের শাসনকালে একজন উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন, তাই পরিবার নিয়ে প্রায়ই তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে পারতেন। হুগো এই ভ্রমণগুলো থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন। এই শেখাগুলো পরবর্তীতে তার সাহিত্যে ফুটে ওঠেছিল।

শৈশবেই হুগোর বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। মা সোফি প্যারিসে তিন সন্তান নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে হুগোর শিক্ষা ও আগ্রহকে সবসময় তিনি উৎসাহিত করেছিলেন। ফলস্বরূপ, শৈশবে রচিত তার বেশিরভাগ কবিতায় ভক্তি ও বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখা যায়।

তরুণ ভিক্টর প্রেমে পড়েছিলেন শৈশবের বন্ধু অ্যাডেলে ফাউচারের। মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গোপনে ১৮২২ সালে তাকে বিয়ে করেন। ১৮২৩ সালে তাদের প্রথম সন্তান লেওপোল্ড মারা যায়। ঐ ছেলেটির বয়স বেশ কম ছিল। ১৮২৪ সালে এই দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান লিওপোল্ডাইন জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ১৮৪৫ সালে ১৯ বছর বয়সে এই সন্তানটিও মারা যায়। সে সময় হুগো ও তার স্ত্রী দক্ষিণ ফ্রান্সে ভ্রমণরত ছিলেন। সেখানে একটি ক্যাফেতে সংবাদপত্র মারফত মেয়ে লিওপোল্ডাইনের মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন।

মেয়ের আকস্মিক মৃত্যু কবিকে বিষাদগ্রস্ত করে তোলে। কন্যার জীবন ও মৃত্যু সম্পর্কে অনেক কবিতা লেখেন। এক গবেষক বলছেন, হুগো সেই বিষাদ সারা জীবনেও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তার সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা সম্ভবত 'ডিমেন, ডেস ল'আউব' (আগামীকাল, প্রথম প্রভাতে); এতে বর্ণিত হয়েছে তার মেয়ের কবর পরিদর্শন করার কথা।

‘ওডেস এট পয়েসেস ডাইভারসেস’ নামে তার প্রথম কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয় ১৮২২। এ গ্রন্থের জন্য তিনি রাজা অষ্টাদশ লুইয়ের পক্ষ থেকে পুরস্কারও পান। ১৮২৩ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস ‘দ্য হ্যান্ড আইল্যান্ড’। ১৮২৯ থেকে ১৮৪০ সালের মধ্যেই তার পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। লা অরিয়েন্টালিস, লা ফিউস ডি অটোমেন, লা চ্যান্টস ডি ক্রেপসিকিউল, লা ভক্স ইন্টিরিয়রস এবং লা রিয়ন্স এট লেস ওম্ব্রেস।

এদের মাঝে ‘লা অরিয়েন্টালিস’ ও ‘লা ভক্স ইন্টেরিয়রস’ তৎকালীন ইউরোপের কাব্যজগতে আলোড়ন তোলে। ১৮২৬ সালে প্রকাশিত হয় ‘ওড টু ব্যালাডস’ কাব্যগ্রন্থ। ১৮২৯ সালে রচনা করেন উপন্যাস ‘দি লাস্ট ডে অব এ কন্ডেমড ম্যান’। ১৮৩০ সালে লেখেন সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘হাঞ্চব্যাক অব নটরডেম’। এরপর লেখেন বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম ক্ল্যাসিক উপন্যাস ‘লা মিজারেবল’ (১৮৬২)।
অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে ‘টয়লার্স অব দ্য সি’ ও ‘দ্য ম্যান হু লাফস’। এছাড়া রাই ব্লাস, হারমানি, ক্রমওয়েল ও নেপোলিয়ন লা পেতিতসহ আরও কিছু কাব্যগ্রন্থও আছে। সাহিত্য সমালোচনা নিয়ে লিখেছেন ‘ফিলোসফি অব লিটারেচার’। Notre-Dame de Paris (দ্য হাঞ্চব্যাক অব নটরডেম) ১৮৩১ সালে প্রকাশিত হবার পর দ্রুত ইউরোপের প্রভাব বিস্তারকারী অন্যান্য ভাষায় বইটি অনূদিত হয়। এই উপন্যাস মানুষকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে, হাজার হাজার পর্যটক ফ্রান্স শহর ঘুরতে আসে শুধু এই বই পড়ে।
তার প্রজন্মের অনেক তরুণ লেখকের মতো হুগোও উনিশ শতকের প্রথম দিকে রোমান্টিসিজম সাহিত্যের অগ্রপথিক ফ্রাঙ্কো-রেন দে চ্যাটুব্রায়েন্ড দ্বারা প্রভাবিত হন। হুগোর লেখালেখির প্রথম জীবনের ব্রত ছিল চ্যাটুব্রায়েন্ডের মতো লেখালেখির দক্ষতা অর্জন করা।

হুগো ক্রমওয়েল (১৮২৭) এবং হারনানি (১৮৩০) নাটক রচনার মধ্য দিয়ে রোম্যান্টিক সাহিত্য আন্দোলনের মূখ্য চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন। ম্যারাওন ডেলর্ম (১৮৩১), দ্য কিং আমাসেস হিমেল (১৮৩২), এবং রুয়ো ব্লাস (১৮৩৮)-এর মতো পরবর্তী নাটকেগুলো রচনার মাধ্যমে হুগো জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

১৮৬৬ সালে প্রকাশিত হয় তার উপন্যাস, লেস ট্রাভাইলের্স দে লা মের (সাগরের ট্রলার)। সেখানে হুগো সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়াদি থেকে সরে একটি ভিন্নধর্মী গল্প উপহার দিয়েছিলেন। এটি পাঠকের কাছে ‘লা মিজারেবল’-এর চেয়ে বেশি সমাদৃত হয়েছিল। 

তার বাংলা অনূদিত বইগুলোর মধ্যে ‘লা মিজারেবল’, ‘হাঞ্চব্যাক অব নটরডেম’, ‘দ্য ম্যান হু লাফস’ ও ‘নাইন্টি থ্রি’ অন্যতম।

সঙ্গীতের বিভিন্ন শাখায় ছিল তার অপূর্ব দক্ষতা। সঙ্গীত নিয়ে তার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখাও আছে। চিত্রকর ও চিত্র সমালোচক হিসেবেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী।

সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতেও জড়িত ছিলেন। ১৮৪৫ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'লা মিজারেবল' লেখার সময় ফ্রান্সের রাজা তাকে উচ্চকক্ষের সদস্যপদ দেন। আইনসভার সর্বোচ্চ দলের সঙ্গে তাকে সম্পৃক্ত করা হয়। তিনি সেখানে সবার জন্য বিনা খরচে লেখাপড়া, সার্বজনীন ভোটাধিকার এবং মৃত্যুদণ্ডের বিলুপ্তির ব্যাপারে কাজ করেন।

১৮৪৮ সালে যখন রাজ্যে উন্নতির জোয়ার শুরু হয়েছিল, তিনি লা মিজারেবল লেখা বন্ধ করে রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন। পরে ১৮৫১ সালে ঘটনাক্রমে পরিস্থিতি বদলে যায়। হুগোর রাজনৈতিক চেতনার বিরোধিরা তাকে ব্রিটিশ চ্যানেলের একটি দ্বীপে নির্বাসিত করে। সেখান থেকে ১৮৬০ সালে তিনি আবার লা মিজারেবল লেখার কাজে হাত দেন। পরের বছরই উপন্যাসটি শেষ করেন। ফরাসি ভাষায় 'লা মিজারেবল' এর শব্দগত অর্থ দীন দুঃখীরা। এই উপন্যাসে লেখক উনিশ শতকের ফ্রান্সের সাম্রাজ্যতন্ত্র ও প্রজাতন্ত্রের অধীনে সমাজের নিচু শ্রেণীর মানুষের এক সকরুণ জীবন চিত্র এঁকেছেন, যারা দুঃখ-দৈন্যের অভিশাপে বিকৃত। এ যেন কোনো উপন্যাস নয়; জীবনের জয়, পরাজয়, উত্থান-পতন, আশা-আকাঙ্খা সম্বলিত এক মহাকাব্য।
In the twentieth century war will be dead, the scaffold will be dead, hatred will be dead, frontier boundaries will be dead, dogmas will be dead; man will live.

“বিংশ শতাব্দীতে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে, ভাস্কর্য বিনষ্ট হবে, ঘৃণা অস্তিত্ব হারাবে, সীমান্তের সীমানা হারিয়ে যাবে, দেবতারা মারা যাবে; মানুষ বাঁচবে।”

১৮৭০ সালে সম্রাটের পতন হলে হুগো ফ্রান্সে ফেরত আসেন, যেখানে তাকে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হিসেবে বিপুলভাবে সম্মানিত করা হয়।

ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে সময়ে সময়ে পরিবর্তন আসে হুগোর। শৈশবে তিনি ছিলেন ক্যাথলিক। বিভিন্ন লেখায় তিনি চার্চের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাও জ্ঞাপন করেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ক্যাথলিক বিরোধী এবং একপর্যায়ে ধর্মীয় মতবাদ বিরোধী হয়ে উঠেন। জানা যায়, নির্বাসনকালে তিনি প্রেতচর্চা তথা আত্মার আরাধনাও করেছিলেন। সারা জীবন ধর্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি ছিলেন দ্বিধাবিভক্ত। ১৮৭২ সালে এক ব্যক্তি তাকে জিজ্ঞেস করেছিল তিনি ক্যাথলিক ধর্মে বিশ্বাসী কি না, উত্তরে তিনি বলেছিলেন, “না। আমি মুক্তচিন্তার অধিকারী।"


১৮৭০ সালে যখন হুগো প্যারিসে ফিরে আসেন, তখন দেশ তাকে জাতীয়ভাবে অভিবাদন জানায়। তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে তাকে একনায়কতন্ত্র দেওয়া হবে। যেমনটি তিনি সেই সময় তার কিছু নোটে লিখে গিয়েছিলেন। ১৮৭৯ সালের ৩ আগস্ট তিনি জনসাধারণের সামনে তার শেষ বক্তব্যে একটি আশাবাদী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন .
১৮৭৮ সালের ১৮ জুন হুগো একটি মাইল্ড স্ট্রোক করেন। এই স্ট্রোক তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময় তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তার জানান, তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা একদমই কম। উনবিংশ শতকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে ফলাফল হিসেবে মৃত্যুকেই মেনে নিতো। তখনকার চিকিৎসাবিজ্ঞান এখনকার মতো এত উন্নত ছিল না।

২২ মে ১৮৮৫ সালে ভিক্টর হুগোর মৃত্যুর পর ফ্রান্সের রাস্তায় তার কফিন বয়ে নেবার সময় লাখ লাখ মানুষের ঢল নামে। সেদিন ফ্রান্সের জনগণ যতভাবে সম্মান জানানো সম্ভব, জানিয়ে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। তার মৃত্যুতে জাতীয় শোক পালন করা হয়।

ভিক্টর হুগো শুধুমাত্র সাহিত্যের বিশাল ব্যক্তিত্ব হিসেবেই সম্মানিত ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ, যিনি ফ্রান্সের প্রজাতন্ত্র এবং গণতন্ত্র দ্বারা জনগণকে আকৃষ্ট করেছিলেন। সারা জীবন তিনি স্বাধীনতা, সমতা ও ফরাসি সংস্কৃতির প্রতি পরম আন্তরিকতা করে গেছেন।

মৃত্যুর দুই দিন আগে তিনি একটি নোট লিখেছিলেন, যেটির শেষ কয়টি শব্দ ছিল- "To love is to act"। এই ভালোবাসা দিয়েই তিনি তার সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করে গিয়েছেন আর জয় করেছেন হাজারো মানুষের মন।
=================================


Thursday, 24 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ভাস্কর শঙ্খ চৌধুরী। ২৫.০২.২০২২. Vol -658. The blogger in literature e-magazine


শঙ্খ চৌধুরী

দেশে-বিদেশের বহু স্থানে শঙ্খ চৌধুরীর ভাস্কর্যকলা প্রদর্শিত হয়েছে।

১৯৪৬: বোম্বাইয়ে প্রথম একক প্রদর্শনী।

১৯৫৪: সমসাময়িক ভাস্কর্যের প্রদর্শনী, আধুনিক শিল্পকলার জাতীয় গ্যালারি।

১৯৫৭: নয়াদিল্লিতে একক প্রদর্শনী।

১৯৬৯: বোম্বাইয়ে একক প্রদর্শনী।

১৯৭১: রেট্রোস্পেক্টিভ শো: ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্ট।

১৯৭৯: বোম্বাইয়ে ইরা চৌধুরীর সঙ্গে যৌথ প্রদর্শনী।

১৯৮৭: নয়াদিল্লি একক প্রদর্শনী।

১৯৮৭: স্কেচ এবং অঙ্কন ইত্যাদির একক প্রদর্শনী, কলকাতা।

১৯৯১: কলকাতায় একক প্রদর্শনী।

১৯৯২: এলটিজি গ্যালারি, নয়া দিল্লিতে একক প্রদর্শনী।

১৯৯৫: বোম্বাইয়ের সাইমরোজা আর্ট গ্যালারিতে - একক প্রদর্শনী

২০০৪: সরোজান আর্ট গ্যালারি দ্বারা আয়োজিত বরোদায় একক প্রদর্শনী।

১৯৪০-এর দশকের অন্যান্য ভাস্কর প্রদোষ দাশগুপ্ত, চিন্তামণি কর বা শঙ্খ চৌধুরী পাশ্চাত্য আধুনিকতাকে আত্তীকৃত করতে চেষ্টা করেছেন দেশীয় রূপচেতনার ভিত্তির উপর। ছবিতে যেমন নব্য-ভারতীয় ঘরানার মধ্য দিয়ে ঐতিহ্য আত্তীকরণের একটি প্রকৃষ্ট ধারা গড়ে উঠেছিল, ভাস্কর্যে সে রকম কিছু ছিল না। তাই ভাস্কর্যে আত্মপরিচয় সন্ধান পাশ্চাত্য আধুনিকতার সঙ্গে এক দ্বন্দ্বাত্মক সম্পর্কে বাঁধা ছিল এবং এখনও রয়েছে ।

মাণিকলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তিনিও শিল্পী ও শিক্ষক দুই পরিচয়েই সমান ভাস্বর। শঙ্খ চৌধুরীর পোশাকি নাম ছিল নরনারায়ণ।

                জন্ম ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বিহার রাজ্যের বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে। পিতা সংস্কৃতজ্ঞ নরেন্দ্রনারায়ণ ছিলেন ঢাকার অ্যাডভোকেট। মাতা কিরণময়ী। তিনি ছিলেন পিতামাতার কনিষ্ঠ সন্তান। শঙ্খ ঢাকায় বাল্যশিক্ষা সমাপ্তির পর ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীতে ভরতি হন এবং ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দেস্নাতক হন। এরপর রামকিঙ্কর বেইজের তত্ত্বাবধানে ভাস্কর্যকলার অনুশীলনে ব্রতী হন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে কলাভবনের ফাইন আর্টস তথা চারুকলার শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। স্নাতকোত্তর পর্বে তিনি রামকিঙ্করের সাথে নেপালে যান এবং সেখানে তিনি  ষুদ্ধ-স্মারক গড়তে রামকিঙ্কর বেইজকে সহায়তা করেন। নেপালের ব্রোঞ্জ ঢালাইয়ের কাজ প্রত্যক্ষ করেন এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করেন।

প্রায় দুবৎসর পর তিনি ভারত সরকারের শিক্ষামন্ত্রকের অনুদান পেয়ে নির্বিঘ্নে সৃজনশীল কর্মে মনসংযোগ করেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি কুড়িটি শিল্পকর্ম নিয়ে বোম্বাইয়ে প্রথম একক প্রদর্শনীতে অংশ নেন। এখানে সফলতা পাওয়ার পর তিনি প্রাচীন ও সমকালীন রীতিনীতি পর্যবেক্ষণ ও অনুশীলনের জন্য ওই বছরেই ইউরোপ গমন করেন। সেই সময়কার আভঁ-গার্দ শিল্প আন্দোলনের কিউবিজম প্রথায় কিছু কাজ তিনি শুরু করার পর প্যারিসে ইভস্থান বেথির দ্বারা প্রভাবিত হন। শিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা নিয়ে ঘুরে দেখেন ইটালি, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম ও হল্যান্ডের শিল্পকেন্দ্রগুলি। এ সকল স্থানের প্রখ্যাত চিত্র ও সংগ্রহশালা পরিদর্শনে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন এবং দেশে ফিরে আসেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে তিনি বরোদার মহারাজা সয়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অব ফাইন আর্টস এর বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত হন। শিক্ষক হিসাবে তিনি ছিলেন অসাধারণ। প্রায় কুড়ি বৎসর অধ্যাপনা পর স্বেচ্ছা-অবসর নেন।

শঙ্খ চৌধুরীর ভাস্কর্যকলার আদিপর্বের মাধ্যম ছিল প্রধানত দারু ভাস্কর্য। আবলুস,পাইন, ওক ইত্যাদি কাঠের গড়া ভাস্কর্যগুলিতে "ফর্ম" অর্থাৎ আকার-আকৃতির সংক্ষিপ্ত রূপারোপ ছিল তাঁর প্রধান বৈশিষ্ট্য। শ্বেতপাথর, ব্লাক মার্বেল, লাইমস্টোনে গড়া ভাস্কর্যে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে তৈরি ব্লাক মার্বেলে খোদিত মসৃণ ভাস্কর্য শৃঙ্গারনেহেরু মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। ধাতুর পাতে গড়া ভাস্কর্যের মধ্যে  তামা'য় গড়া কক, অ্যালুমিনিয়াম ও পিতলে গড়া মিউজিক এবং পিতলে গড়া কেমিস্ট তাঁর উদ্ভাবনী মানসিকতার নিদর্শন। এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রতিকৃতি ভাস্কর্য হল–

  • আমার পিতা
  • আবদুল গফুর খান
  • একজন ইংরেজের প্রতিমৃর্তি
  • মহাত্মা গান্ধী
  • ইন্দিরা গান্ধী

দিল্লির প্রগতি ময়দানেগ্রামীণ ভারত প্রাঙ্গণ শঙ্খ চৌধুরীর নকশায় তৈরি করা হয়েছে এবং ললিত কলা একাডেমিতে গঠিত স্টুডিও তৈরি হয়েছিল তাঁরই প্রচেষ্টায়। স্মৃতিবিস্মৃতি  হল শঙ্খ চৌধুরী রচিত একটি গ্রন্থ।

শঙ্খ চৌধুরী কর্মজীবনের বিভিন্ন সময়ে যে যে পদে কর্মরত ছিলেন ও সাম্মানিক পদ অলংকৃত করেন সেগুলি হল–


১৯৪৯-৫৭: রীড়ার ও বিভাগীয় প্রধান, ভাস্কর্য বিভাগ, এমএস ইউনিভার্সিটি অফ বরোদা।

১৯৫২ : প্রথম সাম্মানিক যুগ্ম সম্পাদক - ইন্ডিয়ান সমিতি, বোম্বে।

১৯৫৬: সদস্য,ললিত কলা একাডেমি।

১৯৫৭-৭০: অধ্যাপক ও প্রধান, ভাস্কর্য বিভাগ, এমএস ইউনিভার্সিটি অফ বরোদা।

১৯৬৬-৬৮: ডিন, চারুকলা অনুষদ, এমএস ইউনিভার্সিটি অফ বরোদা।

১৯৭৪: অনারারি সেক্রেটারি,ললিত কলা একাডেমি।

১৯৭৬: ভিজিটিং প্রফেসর বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় *১৯৭৭-৭৮: ভিজিটিং ফেলো, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন।

১৯৮০: চারুকলার অধ্যাপক, দারুস সালাম বিশ্ববিদ্যালয়, তানজানিয়া।

১৯৮৪-৮৯:

পূর্ণকালীন সদস্য, দিল্লি আরবান আর্ট কমিশন।

সদস্য, অল ইন্ডিয়া হস্তশিল্প বোর্ড,

সদস্য আন্তর্জাতিক জুরি,- 5 তম ত্রিণাল-ভারত,

সভাপতি,ললিত কলা একাডেমি।

পুরস্কার ও সম্মাননা 

শঙ্খ চৌধুরী শিল্পকর্মের জন্য দেশ বিদেশ হতে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

১৯৫৬: ভারতের ললিত কলা একাডেমির রাষ্ট্রীয় শিল্পকলা পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৭১:ভারত সরকার বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী প্রদান করে।

১৯৭৪: ফিলিপাইন্সের সেন্টার এস্কোলার ইউনিভার্সিটি সাম্মানিক ডি লিট প্রদান করে।

১৯৭৯ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবন-গগন পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৮২:ললিত কলা একাডেমি ফেলো নির্বাচিত হন।

১৯৯৭:রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট প্রদান করে।

১৯৯৮ : বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় দেশিকোত্তম উপাধি লাভ করেন।

২০০০-০২: মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সরকার প্লাস্টিক শিল্পশৈলির জন্য কালিদাস সম্মান প্রদান করে।

২০০২: আদিত্য বিড়লা কলা শিখর পুরস্কার।

২০০৪: "ললিত কলা রত্ন"ললিত কলা একাডেমি কর্তৃক সম্মানিত হন।

২০০৪: "লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড" লিজেন্ড অফ ইন্ডিয়া।

অংশগ্রহণ এবং প্রতিনিধিত্ব 

১৯৬১ : ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে যুগোস্লাভিয়ায় ভাস্করদের আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন।

১৯৬৩ : মকরানায় ললিত কলা একাডেমির ভাস্কর শিবিরের আয়োজন।

১৯৬৪ : পোল্যান্ডে বক্তৃতা সফর; শিল্পী ইউনিয়নের অতিথি হিসেবে রাশিয়া সফর করেছেন।

১৯৬৯ : ললিত কলা আকাদেমির জন্য "ভারতের লোক ও উপজাতীয় চিত্র" প্রদর্শিত।

১৯৭২ : অল ইন্ডিয়া হস্তশিল্প বোর্ডের পক্ষ থেকে সংগঠিত পল্লী ভারত কমপ্লেক্স।

১৯৭৪ : আরব শিল্পীদের প্রথম দ্বিবার্ষিকীতে অংশগ্রহণ।

১৯৭৬ : ইংল্যান্ডের ডার্লিংটন, টেগোর সেমিনারে অংশগ্রহণ।

১৯৭৬-৭৭: ললিত কলা আকাদেমির জন্য গাড়িতে সংগঠিত শিল্পীদের স্টুডিও।

১৯৮২ ব্রিটিশ মিউজিয়াম কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে অংশ নেওয়া, ভারতের উৎসবে বইয়ের প্রদর্শনীর আয়োজন করা।

১৯৮৩ : আন্তর্জাতিক আর্ট ফেস্টিভ্যালে বাগদাদে আমন্ত্রিত- জুরি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৫ : ইউনেস্কো, প্যারিস সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব - লোককাহিনী ditionতিহ্যের সংরক্ষণ।

১৯৮৫ : পরিদর্শন বুখারেস্ট - গ্রাম জাদুঘর।

১৯৮২ : ইউনেস্কো, ভেনিসের পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন।

১৯৮৬ : ওসলো, লিলহ্যামার এথনোগ্রাফিক মিউজিয়াম পরিদর্শন এবং খোলা - ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে এয়ার মিউজিয়াম।

১৯৮৮ : জাপান পরিদর্শন করেন, ফেলো হিসাবে এবং ইন্দোনেশিয়া সফর করেন।

১৯৮৯ : চীনা জনগণের আমন্ত্রণে চীনে একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন - বিদেশী দেশের সাথে বন্ধুত্বের জন্য সোসাইটি॥

ভাস্কর হিসেবে শঙ্খ চৌধুরী ছিলেন মুক্তমনের এবং আধুনিক চিন্তার মানুষ। বিষয়বস্তু, আঙ্গিক, মাধ্যম সবকিছু নিয়েই নিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মেতে থাকতেন তিনি। নির্দিষ্ট কোনো ঘরানায় বিশ্বাস ছিল না তাঁর। প্রতিটি কাজেই নিজের করা আগের কাজটিকে অতিক্রম করতে চাইতেন। শিক্ষক রূপেও ছিলেন অতুলনীয়। শিক্ষার্থীদের মনের ওপর কোনো ধারণা বা মতামত জোর করে চাপিয়ে দিতেন না তিনি। শঙ্খ চৌধুরী ছিলেন এমনই এক ভাস্কর যিনি বিশ্বশিল্পের গতিপ্রকৃতিকে ভালোভাবে নিরীক্ষণ করে, তাকে নিজের মননে ও চিন্তায় ধারণ করেছিলেন। তাই তাঁর কাজকে কোনো তত্ত্বের মধ্যে ফেলে বিচার করলে ভুল করা হবে। শঙ্খের ভাস্কর্যে একদিকে যেমন গুরু রামকিঙ্করের চেতনা লুকিয়ে আছে, তেমনিই অন্যদিকে নিহিত আছে ব্রাঁকুসির ভাস্কর্যের মসৃণ বিমূর্ততা। বস্তুর আকৃতিকে তিনি সরলতা দান করে তার অন্তরের রূপটিকে প্রকাশিত করতে চাইতেন। আবার কোনো ব্যক্তির মুখাবয়ব নির্মাণ করার বেলায় শঙ্খ বেছে নিতেন অমসৃণতা। মার্বেল, পোড়ামাটি, ধাতু, কাঠ, সিমেন্ট সব মাধ্যমেই সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি। এমন আন্তর্জাতিক মানের একজন ভাস্কর জন্মদিন শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করি।


======{{{{{{{{{{{{∆∆∆∆}}}}}}}}}}}}=======


Wednesday, 23 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। লোসালিয়া ডি কাস্ত্রো। ২৪.০২.২০২২. Vol -657. The blogger in literature e-magazine


Rosalía de Castro রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো

(poetisa y novelista gallega)

বিদায় গৌরব! বিদায় খুশি!

আমি যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছি সেখান থেকে চলে যাই

আমি যে গ্রামটি জানি সে ছেড়ে চলে যাই

এমন এক পৃথিবীর জন্য যা আমি দেখিনি।

আমি বন্ধুদের অপরিচিত জন্য ছেড়ে 

আমি সমুদ্রের জন্য উপত্যকা ছেড়ে চলেছি,

আমি শেষ পর্যন্ত কতটা ভাল চাই তা ছেড়ে দিই ...

কে যেতে পারে না! ...

সান্টিয়াগো ডি কমপোস্টেলা-এ ফেব্রুয়ারী ২৪  ১৮৩৭-এ জন্ম হয়েছিল। লেখিকা একটি দুঃখজনক মুহুর্তে  দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ছিলেন; তার বাচ্চাদের মৃত্যুর মতো ট্রমাজনিত অভিজ্ঞতা ও তার মা তার গল্প তৈরি করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছিল।


 স্প্যানিশ কবিগুরুর সময় গ্যালিশিয়ান ভাষা অবজ্ঞাপূর্ণ ছিল, পড়ার মতো রচনাগুলির কোনও সংযোজন ছিল না এবং লেখকদের এই উপভাষাটি ব্যবহার করে পাঠ্য লেখার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়নি। রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো গ্যালিশিয়ান সাহিত্যের উত্থানের  কাজটি করেন।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন -"তবে নতুন পাতাগুলি, যা ভাল বলে পুরানো বলে, কারণ সেগুলি এবং শেষ অবধি, কারণ আমি মনে করি যে আমার  জমিটি আমার জমি নিয়েই ইতিমধ্যে পরিশোধ হয়েছে, মাতৃভাষা আরও আয়াত করতে ও  লিখতে আমার পক্ষে কষ্টসাধ্য "।

রোজালিয়া তার পিতা ছাড়া বাস করতেন, যেহেতু তিনি একজন পুরোহিত ছিলেন। এ কারণেই তিনি জীবনের প্রথম আট বছর গ্যালিসিয়ার কাস্ত্রো দে অর্টোসো নামক একটি সংস্থায় কাটিয়েছিলেন যেখানে অনেক কৃষকই থাকতেন। গ্যালিশিয়ান সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যগুলি রোজালিয়া দে কাস্ত্রোর কাজগুলিকে প্রভাবিত করেছিল।


 তিনি সংগীত ও চিত্র আঁকার জন্য লাইসো দে লা জুভেন্টুডে সাংস্কৃতিক পড়াশোনা করেছিলেন;  সেগুলি তার বয়সের কোনও মেয়ের জন্য উপযুক্ত ক্রিয়াকলাপ হিসাবে বিবেচিত হত। অরেলিও আগুয়েরে একজন কবি ছিলেন , তাকে চিনতেন এবং কিছু ঐতিহাসিকের মতে তাদের একটি সংবেদনশীল সম্পর্ক ছিল।


রোজালার অনেক গল্প তাঁর অনুভূত প্রেম অরেলিও আগুয়েরে থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল; তবে তারা যে রোম্যান্টিকভাবে জড়িত ছিল তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ১৮ ৫৬ সালে তিনি মাদ্রিদে চলে আসেন, এক বছর পরে তিনি স্প্যানিশ ভাষায় রচিত একাধিক কবিতা প্রকাশ করেছিলেন .যা তার একক রচনা. শিরোনাম করেছিলেন ফুল।

তিনি তাঁর মা তেরেসা ডি কাস্ত্রোকে উৎসর্গ করেছিলেন -" আমার মায়ের কাছে".  ১৮৬৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি সাতটি কবিতা লিখেছিলেন যাতে তিনি তাঁর জীবনের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সত্ত্বাকে হারিয়ে যাওয়ার জন্য যে মহা দুর্দশা, অসহায়ত্ব ও নিঃসঙ্গতা অনুভব করেছিলেন।

তাঁর কবিতা বই ফুল এটি ম্যানুয়েল মুরগিয়াকে পছন্দ করেছিল, এমন একজন লেখক যা রোজালিয়া তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে দেখা করেছিলেন। ডি কাস্ত্রো লেখার ইচ্ছা চালিয়ে যাওয়ার জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন, এমনকী সময়েও যখন সমাজে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল না।

কাস্ট্রো শীঘ্রই মুরগিয়াকে বিয়ে করেছিলেন। অল্প বয়স্ক রোজালিয়া প্রায় আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন যখন তাঁর বিবাহ অনুষ্ঠানটি 10 ই অক্টোবর, 1858 সালে হয়েছিল।


কিছু সময় পরে তাঁর কন্যা আলেজান্দ্রার জন্ম হয়, তার পরে: অরা, গালা এবং ওভিডিও, আমার। অ্যাড্রিয়ানো যিনি দুর্ঘটনায় যুবক হিসাবে মারা গিয়েছিলেন এবং ভ্যালেন্টিনা যিনি জন্মের আগে মারা গিয়েছিলেন; তার সমস্ত সন্তান গ্যালিসিয়ার সত্তা থেকে এসেছিল।

গ্যালিশিয়ান ভাষায় রচিত রচনাগুলি লেখক কার্যত স্ক্র্যাচ থেকে শুরু করেছিলেন, কারণ গ্যালিশিয়ান ভাষায় গল্পের ইতিহাস ছিল না। ডি কাস্ত্রো যাকে ডাকা হত তা দীক্ষা করেছিলেন পুনর্মিলন তার বই সহ গ্যালিশিয়ান গান (1863).

রচনা কর্ম :

Lieders (en lengua española, año 1858): este artículo publicado en El Álbum del Miño (Vigo) constituye el primer escrito en prosa en lengua castellana publicado por Rosalía de Castro, posiblemente como consecuencia de los comentarios favorables de Manuel Murguía y Benito Vicetto con respecto a su introducción en el ámbito poético.

La hija del mar (en lengua castellana, año 1859): su permanencia en Muxía le inspiró la ambientación de esta obra en prosa,[18]​ que además fue la primera de las novelas de Rosalía. En ella se desenvuelve el tema del temperamento femenino, tratándose de un relato de marcado carácter reivindicativo en el que dos mujeres intentan defender su honra en medio de un ambiente predominantemente femenino. Destaca el prólogo de la novela, donde la autora, defiende los derechos de la mujer en la vida intelectual. Cita predecesoras destacadas tanto del mundo de las artes como de la política, incluyendo algunos ejemplos de mujeres luchadoras, reformadoras y poderosas en diferentes ámbitos de la vida pública. Tal como la define la catedrática Pilar García Negro, Rosalía fue una "feminista en la sombra" que reivindicó el papel de las mujeres en un momento muy complicado.[19]​

Flavio (en lengua castellana, año 1861): en esta obra aparece por primera vez el tema del amor desengañado, siendo recurrente en la poesía que cultivó a partir de este momento. Se trata de una novela de la etapa de la juventud de la autora, quién la define como un «ensayo de novela».[20]​

El caballero de las botas azules (en lengua castellana, año 1867): considerada por la crítica la más interesante de las novelas de Rosalía y calificada por esta como un «cuento extraño», constituye una enigmática fantasía satírica en la que la escritora gallega expone un surtido de relatos de corte lírico-fantástico con trazos costumbristas que tiene el objetivo de satirizar tanto la hipocresía como la ignorancia de la sociedad madrileña. Confluyen en su composición elementos provenientes de dos campos, como son la libre imaginación (influencia de E. T. A. Hoffmann) y la sátira realista de costumbres.

Conto gallego (en lengua gallega, año 1864): apareció por primera vez en una publicación periódica en el año 1864, y hasta el descubrimiento de esta edición sólo se tenía conocimiento de la publicación realizada por Manuel de Castro y López en su Almanaque gallego de Buenos Aires, en el año 1923.[20]​ El cuento refiere un motivo tradicional de la literatura misógina en la que dos amigos hacen una apuesta con la intención de demostrar cual de ellos logra seducir a la viuda el mismo día del entierro de su marido. El trazo característico del cuento es la economía narrativa: la trama se centra en el diálogo existente entre los personajes, mientras que la voz narradora limita sus intervenciones hasta lo imprescindible.[21]​

Las literatas (en lengua castellana, año 1866).

El cadiceño (en lengua castellana, año 1866): cuento de carácter satírico, en el que ciertos personajes se expresan en castrapo, una variante popular del castellano caracterizada por el uso de vocabulario y de expresiones tomadas del idioma gallego que no existen en castellano.

Ruinas (en lengua castellana, año 1866): es un cuadro de costumbres centrado alrededor de tres tipos humanos, tres habitantes de una pequeña villa, ejemplares por sus valores espirituales, que se sobreponen a su decadencia social.

El primer loco (en lengua castellana, año 1881): es una novela breve, en la que Rosalía obvia la moda realista del momento para retornar a las fórmulas románticas de su etapa más juvenil.[22]​

El domingo de ramos (en lengua castellana, año 1881).[23]​

Padrón y las inundaciones (en lengua castellana y publicado en La Ilustración Gallega y Asturiana, el 28 de febrero y el 8, 18 y 28 de marzo de 1881).

Costumbres gallegas (en lengua castellana, año 1881): en este artículo, Rosalía critica la costumbre que existía en el litoral gallego de ofrecer una mujer de la familia al marinero recién arribado. Cumple destacar que el escrito fue objeto de críticas muy duras, dentro del territorio gallego.

লেখক রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো গ্যালিসিয়ার সুর ও গানের সাথে সংযুক্ত আছেন। তাঁর জমির মূলগুলি তাঁর প্রথম বইটি তৈরির মূল চাবিকাঠি ছিল গ্যালিশিয়ান গান, যার ছত্রিশটি কবিতা রয়েছে যেখানে আপনি এই অঞ্চল জুড়ে প্রেম, অন্তরঙ্গ, শিষ্টাচার, সামাজিক এবং রাজনৈতিক থিম দেখতে পাবেন।


1880 সালে তিনি গ্যালিশিয়ান নামে আরেকটি রচনা লিখেছিলেন তুমি নোভাস, এই উপভাষায় রচিত দ্বিতীয় ছিল। রোজালিয়া এই কবিতাগুলি XNUMX-এর দশকের শেষের দিকে এবং XNUMX এর দশকের গোড়ার দিকে তৈরি করেছিলেন। এটি এমন একটি গল্প যা নারী, পরিত্যক্ত শিশু এবং গ্রামবাসীদের প্রতি গালাগালি প্রকাশ করেছিল; সাহিত্যিক মহিলা এই রচনায় বলেছিলেন যে তিনি আর গ্যালিশিয়ান ভাষায় লিখবেন না।


সারের তীরে এটি 1886 সালে প্রকাশিত হয়েছিলএটি ছিল লেখকের শেষ প্রযোজনা এবং এটি একটি শতাধিক কবিতা সমেত একটি বই যা একইভাবে একক উদ্দেশ্যে যুক্ত আর এই কাজের মধ্যে রোজালিয়া তার নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং এগুলি পুরুষদের প্রতি অনুরাগ, নস্টালজিয়া, হতাশা এবং ঈশ্বরের প্রতি ভালবাসায় পূর্ণ ছিল।


এই লেখাগুলি একজন ব্যক্তি এবং লেখক হিসাবে তার পরিপক্কতার জন্ম দিয়েছে, তাকে হিসাবে বিবেচনা করা অনুমতি স্প্যানিশ রোমান্টিকতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লেখক। রোজালিয়া জরায়ু ক্যান্সারে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং জুলাই ১৫, ১৮৮৫-এ স্পেনের প্যাড্রানে দেশব্যাপী একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার রেখে মারা যান।



গ্যালিসিয়ার অক্ষরের রেকর্ডিমিডিয়েন্টো

এটি একটি সেই মঞ্চ যেখানে গ্যালিসিয়ার সংস্কৃতি এবং চিঠিগুলি  পুনরুদ্ধারধার করছিল  রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো । আর এই আন্দোলনের তিনি অগ্রণী মহিলা।

তাঁর জীবনের অংশ বিশেষ এই কাজের শক্তি গ্যালিসিয়ার মানুষকে যে সংজ্ঞা দিয়েছিল তাঁর চেয়েও বেশি প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।

কয়েক বছর ধরে গ্যালিশিয়ায় কোনও কাজ তৈরি না করেই চলে গেল রোজালার পরে আরও অনেক লেখক এই ভাষায় গল্প লিখেছিলেন। নাটক গ্যালিশিয়ান গান তারা এই আন্দোলনটি শুরু করেছিল এবং গ্যালিসিয়ার জনগণের হৃদয়ে থেকে যায়, কারণ তারা এমনকি কিছু কবিতা তৈরিতে অংশ নিয়েছিল।

তখন স্পেনের সরকার কর্তৃক আরোপিত মতাদর্শগুলি গ্যালিশিয়ান সম্প্রদায়ের গুরুত্বকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছিল, যাতে বছরের পর বছর ধরে এর সদস্যদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তবুও রোজালিয়া দে কাস্ত্রোর কাজের আগমনের পরে গ্যালিসিয়ার পুরো উপলব্ধি বদলে গেল। 

তাঁর অনুদিত কবিতা পাঠ -

কবিতা ১

ক্যান্টারেস গ্যাল্লেগোস 

বিদায়, নদী; বিদায়, উৎস;

বিদায় সামান্য স্রোত;

বিদায়, আমার চোখের দৃষ্টি,

আমি জানি না আমরা কখন একে অপরকে দেখব

আমার জমি, আমার জমি,

যেখানে আমি বড় হয়েছি

ছোট বাগান যে আমি এত ভালবাসি

ডুমুর গাছ আমি লাগানো।

প্যাড্রোস, নদী, গ্রোভ,

পাইন গ্রোভগুলি বাতাসকে সরিয়ে দেয়,

কিচিরমিচির পাখি,

আমার কন্টেন্টের ছোট্ট ঘরগুলি ...

আমাকে ভুলো না ওহে প্রিয়,

আমি যদি নিঃসঙ্গতায় মারা যাই ...

অনেক লিগ সমুদ্রের বাইরে ...

বিদায় আমার বাড়ি! আমার বাড়ি!


কবিতা ২.

ফোলাস নোভাস (অনুবাদ)

সীমাহীন জায়গায় মেঘের মতো

ঘুরে বেড়াচ্ছে!

কিছু সাদা,

অন্যরা কালো;

কিছু, মৃদু কবুতর আমার কাছে মনে হয়,

তারা অন্যদের গুলি করে

ঝলমলে আলো ...

বিপরীত বাতাস উচ্চতায় প্রবাহিত হয়

ইতিমধ্যে ছত্রভঙ্গ,

তারা বিনা আদেশ ও প্রজ্ঞা ছাড়াই তাদের নিচ্ছে,

আমি জানি না কোথায়

আমি জানি না কেন।

তারা তাদের পরা হয়, বছর কি হয়েছে

আমাদের স্বপ্ন

এবং আমাদের আশা।


কবিতা ৩

সারের তীরে

চিরসবুজ ঝরনার মধ্য দিয়ে

এই শুনানিতে অদ্ভুত গুজব ছড়িয়ে পড়ে,

এবং আনডুলেটিংয়ের সমুদ্রের মাঝে

শাকসবজি,

পাখিদের প্রেমময় প্রাসাদ,

আমার উইন্ডোজ থেকে আমি দেখতে পাচ্ছি

আমি সবসময় যে মন্দিরটি চেয়েছিলাম।

আমি যে মন্দিরটি চেয়েছিলাম ...

ভাল, আমি যদি তাকে ভালবাসি তবে কীভাবে বলতে হয় তা আমি জানি না

যে অভদ্রভাবে দোলা যে বিনীত ছাড়াই

আমার চিন্তাগুলি উদ্বিগ্ন,

মারাত্মক ক্ষোভ যদি সন্দেহ হয়

আমার বুকে ভালবাসায় ঐক্যবদ্ধ জীবন।







Poema de Rosalía de Castro.

রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো রচিত কবিতা - লেেক্টরহাবল্যান্ডোগ্রিটোস ডট কম।


গ্যালিসিয়ার অক্ষরের রেকর্ডিমিডিয়েন্টো

রেেক্সর্ডিমিডিয়েন্টো এটি সেই মঞ্চে গ্যালিসিয়ার সংস্কৃতি এবং চিঠিগুলি তাদের গুরুত্ব পুনরুদ্ধার করছিল স্পেনে এবং রোজালিয়া ডি কাস্ত্রো ছিলেন এই আন্দোলনের অগ্রণী মহিলা।


অংশ বিশেষ রোজালিয়ার কাজের শক্তি গ্যালিসিয়ার মানুষকে যে সংজ্ঞা দিয়েছিল তার চেয়েও বেশি প্রতিনিধিত্ব করে,


কয়েক বছর ধরে গ্যালিশিয়ায় কোনও কাজ তৈরি না করেই চলে গেল রোজালার পরে আরও অনেক লেখক এই ভাষায় গল্প লিখেছিলেন। নাটক গ্যালিশিয়ান গান তারা এই আন্দোলনটি শুরু করেছিল এবং গ্যালিসিয়ার জনগণের হৃদয়ে থেকে যায়, কারণ তারা এমনকি কিছু কবিতা তৈরিতে অংশ নিয়েছিল।


তখন স্পেনের সরকার কর্তৃক আরোপিত মতাদর্শগুলি গ্যালিশিয়ান সম্প্রদায়ের গুরুত্বকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছিল, যাতে বছরের পর বছর ধরে এর সদস্যদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তবুও রোজালিয়া দে কাস্ত্রোর কাজের আগমনের পরে গ্যালিসিয়ার পুরো উপলব্ধি বদলে গেল।

={={{{{{{{{}}{{{}}{{{={}=={{=}={}{{}={}{{}={{}=}{{{


Tuesday, 22 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। রাধারমন মিত্র। ২৩.০২.২০২২. Vol -656. The blogger in literature e-magazine


রাধারমন মিত্র

কলকাতার ইতিহাস নিয়ে তার প্রবল আগ্রহ ছিল। একসময় সে কারণে কলকাতা শহরের পথে পথে একা ঘুরে বেড়িয়ে তথ্য সংগ্রহ ও লেখালিখির কাজ করেছেন রাধারমণ।তার কয়েকটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় তন্মধ্যে কলিকাতা দর্পণ ১৯৮১ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছিল।তার অন্যান্য বইগুলি হল:

  • বাংলার তিন মনীষী
  • কলিকাতায় বিদ্যাসাগর
  • ডেভিড হেয়ার: হিজ লাইফ এন্ড ওয়ার্কস
  • রাধারমণ মিত্রের প্রবন্ধ.

তিনি কলকাতার শ্যামবাজারে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৭। পৈতৃক নিবাস ছিল বর্ধমান। ১৯১৩ সালে হিন্দু স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯১৫ সালে স্বর্ণপদক সহ আই.এ পাশ করেন। সেন্ট পলস কলেজ থেকে বি এ পাশ করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।


এম.এ পড়াকালীন অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে উত্তরপ্রদেশ চলে যান সহযোগী বিপ্লবী বঙ্কিম মুখার্জীর সাথে। গান্ধীজীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উত্তর প্রদেশের এটাওয়া তে সংগঠকের কাজ করেন। এই সময় গ্রেপ্তার হয়ে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের নৈনি জেলে বন্দী হন। এক বছর কারাবাস করার পর তিনি সবরমতী আশ্রমে যান ও মহাত্মা গাঁধীর সাথে টানা তিন বছর কাজ করেন। গান্ধীবাদী আদর্শের অনুগামী হলেও তার সাথে মতপার্থক্যের কারণে তিনি ফিরে আসেন কলকাতায় ও কর্পোরেশন বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ নেন। শিক্ষকতা ছাড়াও শ্রমিক আন্দোলন, ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে বহুবার নেতার ভূমিকায় ছিলেন রাধারমণ মিত্র। মার্কসবাদী দর্শনে আকৃষ্ট হলেও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেননা। ১৯২৯ সালে মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ব্রিটিশ সরকার আবার তাকে গ্রেপ্তার করে। এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে মুক্তি পান। ১৯৪৩-৪৪ সাল নাগাদ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। পরে মতপার্থক্যের কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও তার পাণ্ডিত্য, প্রজ্ঞা এবং বামপন্থী রাজনীতি ও মতাদর্শের প্রতি জ্ঞান তাকে সর্বজনশ্রদ্ধেয় করে তুলেছিল। তিনি ভারত সোভিয়েত সুহৃদ সমিতিরও সদস্য ছিলেন।

Portrait of 25 of the Meerut Prisoners taken outside the jail. Back row (left to right): K. N. Sehgal, S. S. Josh, H. L. Hutchinson, Shaukat Usmani, B. F. Bradley, A. Prasad, P. Spratt, G. Adhikari. Middle Row: রাধারমণ মিত্র, Gopen Chakravarti, Kishori Lal Ghosh, L. R. Kadam, D. R. Thengdi, Goura Shanker, S. Bannerjee, K. N. Joglekar, P. C. Joshi, মুজফ্‌ফর আহ্‌মেদ. Front Row: M. G. Desai, D. Goswami, R.S. Nimbkar, S.S. Mirajkar, S.A. Dange, S. V. Ghate, Gopal Basak.


মৃত্যু -  ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ । 

একজন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী বিপ্লবী ও সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক। তিনি ১৯২৯ সালের মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হন। শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে অন্যতম পুরোধা, দেশের মানুষের মধ্যে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ প্রচারে একনিষ্ঠ কর্মী। তিনি একসময় মহাত্মা গান্ধীর 'ডানহাত'-স্বরূপ ছিলেন। 

এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবকে কেন্দ্র করে পায়ে হেঁটে কলকাতার একটি অঞ্চলকে জানার আর চেনার জন্য অসাধারণ এক পদযাত্রা সম্প্রতি হয়ে গেল পুরনো কলকাতার গ্রুপের উদ্যোগে গত ২২শে অক্টোবর, রবিবার, ইংরাজিতে যাকে বলা যায় Heritage Walk। পদযাত্রাটির নাম দেওয়া হয়েছিল প্রখ্যাত কলকাতা বিশেষজ্ঞ রাধারমণ মিত্রের স্মরণে “ কলকাতার দর্পণ– রাধারমণ, Walk Through His Eyes“। পায়ে হেঁটে একটি শহরের কিছু অংশকে চেনার এই উদ্যোগ এখন বেশ পরিচিত তবু বলব, তার মধ্যেও এই ভ্রমণটি কিন্তু বেশ আলাদা। এর কারণ অনেকগুলি। প্রথমত, এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি শিক্ষামূলক ভ্রমণ অর্থাৎ সেই অর্থে Commercial Tour নয়। কিন্তু তা না হলেও অন্যদিকে এটি আবার কিছুটা Professional Tour-ও। যেখানে পরিকল্পনা থেকে তার রূপায়ণ সবেতেই একটা Professionalism বা পেশাদারিত্বের ছাপ স্পষ্ট। যেমন, বাংলা সাহিত্য উৎসবকে কেন্দ্র করে এই ভ্রমণ তাই বেছে নেওয়া হয়েছিল এমন কিছু জায়গা, যার সঙ্গে উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণ আর সারস্বত সাধনার বেশ কিছু ইতিহাস সম্পৃক্ত হয়ে আছে। বাংলা শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে কলকাতার কলেজ স্ট্রিট অঞ্চল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর সে ইতিহাস অনেকেরই জানা। তাই এঁরা বেছে নিয়েছিলেন কলেজ স্ট্রিট নয়, বরং ঠিক তার চৌহদ্দির বাইরেই ঝামাপুকুর আর বিধান সরণীর এমন কিছু অঞ্চল। যেখানেও লুকিয়ে আছে অনেক ইতিহাস, কিন্তু তা আছে অনেকেরই জানার সীমানার বাইরে। এঁদের প্রচেষ্টা ছিল অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে সেই ইতিহাসকে সবার সামনে তুলে আনা। কলকাতাকে ভালোবেসে গঠনমূলক চিন্তার এ এক অনন্য উদাহরণ। আবার এঁদের সেই কাজে একদিকে যেমন তাঁরা পেয়েছিলেন এমন কিছু মানুষকে, কলকাতার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছুই যাঁদের নখদর্পণে, তেমনই অন্যদিকে নিয়ে এসেছিলেন এই ভ্রমণের পরিচালক হিসেবে শ্রী গৌতম বসু মল্লিককে। যিনি কলকাতার ইতিহাস সম্পর্কে এক চলন্ত অভিধানই বলা চলে। নিজেকে তিনিই অভিহিত করেছেন রাধারমণ মিত্র, নিখিল সরকার, তারাপদ সাঁতরার উত্তরসূরি হিসেবে। পায়ে হেঁটে কলকাতা শহরকে যাঁরা চিনেছেন, জেনেছেন, নতুন করে আবিষ্কার করেছেন, আর পরে সেই সব জ্ঞান উজাড় করে দিয়েছেন অন্যদের কাছে, উত্তরসূরিদের হাতে। “পুরনো কলকাতার গল্প” গ্রুপের পেশাদারিত্ব এখানেই যে, তাঁরা এই ভ্রমণের ভার তুলে দিয়েছিলেন সেই কলকাতাপ্রেমী বিশেষজ্ঞ গবেষক ও সাংবাদিক গবেষক গৌতম বাবুর হাতে
যিনি তাঁর জ্ঞানের বিচ্ছুরণে সেদিনে সবাইকে সমৃদ্ধ করেছেন, শিহরিত করেছেন। সে কথায় আমরা পরে আসব। কিন্তু এই যে এইভাবে কলকাতাকে দেখা আর চেনা এটি করতে গিয়ে তাঁরা কিন্তু ভোলেননি। এ ব্যাপারে অন্যতম পথিকৃৎ শ্রী রাধারমণ মিত্রকে। কোন দায় ছিল না এঁদের। এই ভ্রমণটি রাধারমণ মিত্রের নামে উৎসর্গ করা। তবু তাঁরা তা করেছেন। কারণ ইতিহাস মানেই পিছনে ফিরে তাকিয়ে নিজেদেরই নতুন করে আবিষ্কার করা। সেই আবিষ্কারে যাঁরা আমাদের অগ্রজ, সেই পূর্বসূরিদের সম্মান দেওয়াও কিন্তু সেই ইতিহাস সাধনার অঙ্গ, আমাদের নৈতিক কর্তব্য। ইতিহাসের পথে সেই যাত্রাকে একজন পূর্বসূরি ঐতিহাসিকের নামেই উৎসর্গ করা। সেটিও এই ভ্রমণের আর একটি বৈশিষ্ট্য। আবার সবার পরে এই ভ্রমণকে নিয়েই একটি আলোচনা সভার আয়োজন এক সপ্তাহ পরে অক্সফোর্ড বুক স্টোরে। রাজপথে ভ্রমণ তো একটা বড় দলকে নিয়ে সম্ভব হয় না, অথচ জানার থাকে অনেক কিছুই। তাই সেই জানাকে ছড়িয়ে দেওয়া আরও অনেক বেশী মানুষের কাছে । যাঁরা সেদিন সেই ভ্রমণে না গিয়েও জানতে পেরে যাবেন সেদিনের অনেক কিছু ইতিহাসের খুঁটিনাটি। জানবেন সেই গৌতম বসু মল্লিক মহাশয়ের মুখ থেকেই। সেই সঙ্গে থাকবেন জনাব শাহেনশা মির্জা এবং আরও কেউ কেউ। মানে সেদিনের ভ্রমণ সেদিনেই শেষ নয়, তার রেশ টেনে নিয়ে যাওয়া পরবর্তী আর একদিনে আলোচনা, বক্তৃতা, স্লাইড শো আর সেদিনের যাত্রার চলমান ছবি বা ভিডিওর মধ্যে দিয়ে। একটি heritage tour কে এইভাবে ব্যপ্ত করে ছড়িয়ে দেওয়া আরও অনেকের মাঝে পেশাদারী চিন্তা ভাবনার এ এক অনন্য নিদর্শন। সেইজন্যেই বলেছি, সেদিনের সেই ভ্রমণ ছিল এক অসাধারণ ভ্রমণ, যা এ ধরণের অন্য অনেক ভ্রমণের চাইতে অনেক দিক দিয়েই আলাদা।

এতটা পড়ার পরে অনেকেই হয়তো আগ্রহী হবেন সেদিন আমরা কি দেখেছি, কি জেনেছি তা জানতে। পরে হয়ত এই নিয়ে আরও বড় করে কিছু লেখা হবে এই গ্রুপে, তবে আজ সংক্ষেপে কিছু ধারণা দেওয়াই যেতে পারে আমাদের সেদিনের দ্রষ্টব্য স্থানগুলির সম্পর্কে। শুরু হয়েছিল আমহার্স্ট স্ট্রীটের সিটি কলেজের সামনে থেকে যে রাস্তাটির নাম এখন রাজা রামমোহন রায় সরণী, আর যে এলাকাটি একসময় রামমোহন আর বিদ্যাসাগরের মত যুগ পুরুষদের কর্মকাণ্ডের সাক্ষী। সেখান থেকে শুরু করে প্রথমেই ঝামাপুকুর লেনের দেব সাহিত্য কুটির বাংলা প্রকাশনার প্রথম যুগ থেকে শুরু করে আমাদের ছোটবেলার শুকতারা আর বড়বেলার নবকল্লোলের পথ ধরে যাঁদের বাংলা ও ইংরাজি অভিধান আজও জনপ্রিয়তার শীর্ষে। ঠিকানা ধরে দেব সাহিত্য কুটিরের শতাব্দী প্রাচীন এই “চমৎকারবাড়ি”তে যে কেউই পৌঁছে যেতে পারেন কিন্তু তাঁদের মধ্যে কজন জানবেন বাড়ীর সামনের ওই রকটির গুরুত্ব যেখানে একসময় বিদ্যাসাগর মশাই এসে বসতেন, আলোচনা করতেন সমাজ ও সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে? এখানেই এই ধরনের ভ্রমণের সার্থকতা জানার মধ্যে থেকেও অনেক অজানা মনিমানিক্যের খোঁজ পাওয়া। সেখান থেকে ঝামাপুকুরের রাজা দিগম্বর মিত্রের বাড়ী আর রামকৃষ্ণ দেবের এক সময়ের লীলাস্থল, আজকের শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ ছুয়ে, ঠিক এইভাবেই খোঁজ পাওয়া গেল নবজাগরণ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, বাগ্মী সমাজসংস্কারক রামগোপাল ঘোষের প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ীর। ওই এলাকার বিখ্যাত কালীপূজোর বিশাল আলোকোজ্জ্বল মঞ্চের ঠিক পিছনেই সেই জরাজীর্ণ বাড়ীর খোঁজ কে আমাদের দিতেন গৌতম বসু মল্লিক ছাড়া? কে বলতেন একটু পরেই, বর্তমানের প্রায় অপরিচিত জহর সিনেমা হল একসময়ে ছিল বীণা থিয়েটার বলে একটি নাটকের মঞ্চ কাছেই বীণা সিনেমা থেকে যা আলাদা? কে জানাতেন কলেজ স্ট্রিট আর কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিটের সংযোগস্থলের জায়গাটিকে একসময় বলা হত ইহুদি বাজার বা ওই কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিটের ওপরে, ঠনঠনিয়া কালী বাড়ির কাছে, লাহাদের বিশাল লাল রাজবাড়ীর উল্টোদিকের একটি বাড়ীতে থাকতেন কবি ও সাহিত্যিক নরেন্দ্র দেব? কালীপূজোর সময় ওই এলাকা ভিড়ে উপচে পড়ে। একদিকে ঠনঠনিয়া কালী বাড়ী আর অন্যদিকে বিখ্যাত সার্বজনীন কালী পুজোর দৌলতে, কিন্তু ইতিহাস থেকে যায় সেই অন্ধকারেই। সে অপেক্ষায় থাকে এই রকম কলকাতাপ্রেমী মানুষদের জন্যে। যার সামনে সে নিজেকে আবার নতুন করে উন্মোচিত করতে পারে, নতুন করে পুরনো দিনের কথা শোনাতে পারে।
=={{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{{===

Monday, 21 February 2022

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি। চারণ কবি মুকুন্দ দাস। ২২.০২.২০২২. Vol -653. The blogger in literature e-magazine


মুকুন্দ দাস 

স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন স্বদেশী যাত্রার প্রবর্তক। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন চারণকবি ছিলেন

১৮৮৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বাবা গুরুদয়াল দাস ও মা শ্যামাসুন্দরী দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার বাবার দেওয়া নাম ছিল যোগেশ্বর দাস, ডাকনাম যজ্ঞা। তার জন্মের পরই বানরি গ্রামটি পদ্মা নদীর করাল গ্রাসে তলিয়ে যায়। নিরুপায় গুরুদয়াল তার কর্মস্থল বরিশালে যান সপরিবারে। সেখানে ব্রজমোহন স্কুলে পড়াশোনা শুরু হয় যজ্ঞার। বরিশালের বৈষ্ণব সন্ন্যাসী রামানন্দ অবধূতের নজরে আসেন যজ্ঞা হরিসংকীর্তন ও শ্যামাসংগীত গেয়ে। মুগ্ধ রামানন্দ তার নাম বদলে রাখেন মুকুন্দ দাস।

সেই থেকেই তিনি মুকুন্দ দাস নামে খ্যাত হলেন। মুকুন্দ বাবার মুদি দোকান ছেড়ে নিজই কীর্তনের দল গঠন করে সারা দেশে ঘুরতে লাগলেন। তার গণসংগীত রচনাও শুরু হয় এ সময় থেকেই। ১৯০৩ সালে সাধন সঙ্গীত নামে একটি গানের বই বরিশাল থেকে প্রকাশিত হয়। তাতে শতাধিক গান স্থান পায়। যার অধিকাংশই দেশাত্মবোধক।

তখন থেকেই মুকুন্দ দাস বদলে যান দেশপ্রেমিক হিসেবে। দেশের মানুষকে পরাধীনতার বিরুদ্ধে ও নানা সামাজিক দুর্দশার বিরুদ্ধে সচেতন করার জন্য গান ও যাত্রাপালা রচনায় মনোনিবেশ করেন।

সে সময়ে স্বদেশি বিপ্লবীদের উদ্দীপনার উৎস হয়ে উঠেছিল মুকুন্দ দাসের গান-পালা-বক্তৃতা। তিনি সারা দেশ ঘুরে ফিরতেন। তার গণসংগীত, স্বদেশি গান আর যাত্রাপালায় মানুষ উজ্জীবিত হতো দেশপ্রেম আর বিদ্রোহের আগুনে।


বিপ্লবী ক্ষুদিরামের ফাঁসি হলে মুকুন্দ দাস গান বাঁধলেন :হাসি হাসি পরব ফাঁসিদেখবে জগৎ বাসী একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি।

স্বদেশি রেনেসাঁর চারণকবি যখন গ্রামগঞ্জে মানুষকে জাগাতে কণ্ঠে সুর বেঁধেছেন, তখন রবীন্দ্রনাথ-কাজী নজরুলও আছেন বেঁচে। তারা মুকুন্দ দাসের খবর রাখতেন। তার দেশপ্রেমের প্রতি প্রীত হয়ে তাকে উপাধি দিলেন চারণকবি। ১৯৩০ সালে মুকুন্দ দাস আইন অমান্য করে সরাসরি আন্দোলনে যোগ দিলেন। কীর্তন গাইতে গাইতে কণ্ঠে তুলে নিলেন আগুনঝরা গণসংগীত। ভারী তেজ আর ঝলসে দেওয়ার মতো বাণী সে গানে।

গাইলেন :ভয় কি মরণে থাকিতে সন্তানেমাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে।তাথৈ তাথৈ দ্রিমি দ্রিমি দং দংভূত পিশাচ নাচে যোগিনী সঙ্গে।দানব দলনী হয়ে উন্মাদিনী,আর কি দানব থাকিবে বঙ্গে।সাজ রে সন্তান হিন্দু মুসলমানথাকে থাকিবে প্রাণ, না হয় যাইবে প্রাণ।লইয়ে কৃপাণ হও রে আগুয়াননিতে হয় মুকুন্দ রে, নিও রে সঙ্গে।তার মতো করে এযাবৎকাল লোকনাট্যকার হিসেবে আর কেউ একান্তভাবে আত্মনিয়োগ করতে পারেননি। মুকুন্দ দাসের পালাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- তার সব রচনা বিংশ শতকের স্বদেশি আন্দোলন আর সামাজিক অনাচারের প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় মুকুন্দ দাস তার ভাবগুরু অশ্বিনী কুমার তাকে সঙ্গে নিয়ে দেশের নানা স্থানে স্বদেশির প্রচারে বের হন।


এ সময় মুকুন্দ দাস স্বদেশি যাত্রা পার্টি নামে দল গঠন করেন। সেই দল নিয়ে সারা দেশে ঘুরে তিনি লোকচিত্রকে স্বাধীনতার স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। আমাদের জাতীয় নাট্য বলে যদি কিছু থাকে, সেটি হলো যাত্রা। আর মুকুন্দ দাস প্রথম জাতীয় নাট্যকে জাতির রাজনৈতিক আন্দোলনে কাজে লাগালেন।

মুকুন্দদাসের রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-  মাতৃপূজা, 

সমাজ, 

আদর্শ, 

পল্লীসেবা, 

সাথী, 

কর্মক্ষেত্র, 

ব্রহ্মচারিণী, 

পথ ইত্যাদি।


মুকুন্দ দাস ব্রিটিশ শাসকদের জানিয়ে দিলেন- ‘আর কি দেখাও ভয়! দেহ তোমার অধীন বটে মন তো স্বাধীন রয়। হাত বাঁধবে প বাঁধবে, ধরে না হয় জেলে দেবে, মন কি ফিরাতে পারবে এমন শক্তিময়?’ তার কাছে চিন্তা ও কাজের স্বাধীনতা জীবন বলে প্রতিভাত হতো। তিনি তার জ্বালাময়ী বক্তৃতা ও গণসংগীত গেয়ে জনগণের মোহনিদ্রা ভেঙে দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার মুকুন্দ দাসের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মাতৃপূজা নামের তার একটি পালা ব্রিটিশদের খেপিয়ে দেয়। মুকুন্দ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। বিচারে তাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বরিশালে এসে তিনি যাত্রাপালার দল গঠন করেন। সমাজ নামে পালা লেখেন। ১৯১৬ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের আমন্ত্রণে যাত্রার দল নিয়ে কলকাতায় যান। কলকাতা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে যাত্রা মঞ্চস্থ করেন। মহাত্মা গান্ধী আহূত অসহযোগ আন্দোলনের সময় মুকুন্দ দাস- কর্মক্ষেত্র, পথ, পল্লী সমাজ প্রভৃতি যাত্রাপালা রচনা করেন। 

১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় মুকুন্দদাস একের পর এক গান,কবিতা ও নাটক রচনা করে বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে নূতন উদ্দীপনার সঞ্চার করেন। এরপর ব্রিটিশ সরকার রাজদ্রোহের অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করেন ও বিচারে তাকে দিল্লী জেলে আড়াই বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। মাতৃপূজা নাটকটি সরকার বাজেয়াপ্ত করে। 

 কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথাক্রমে বাংলা মায়ের দামাল ছেলে চারন-সম্রাট মুকুন্দ উপাধিতে ও সন্তান আখ্যায় ভূষিত করেন। 

=================================


আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন। খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনী। ২১.০২.২০২২. Vol -652. The blogger in literature e-magazine

"মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা....."                                                          বা                                                           "মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ সম   "                                

                            পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশের নানান মাতৃভাষার  মতো  বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উদ্যোগে  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হলো খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনীর আয়োজনে ৮ম বর্ষ মাতৃভাষা দিবস  ও সাহিত্য বাসর অনুষ্ঠান। ২১শে ফেব্রুয়ারী ২০২২ বিকেল ৩.৩০ মিনিটে  হেঁড়িয়ার উদাখালী বাসস্ট্যান্ড এর বিশ্রামাগারে। ভাষা শহীদ স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন ,মাল্যদান ,পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন, উপস্থিত সম্মানীয় অতিথিবৃন্দ ও সম্মিলনীর সদস্য-সদস্যাবৃন্দ। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা ও কবিতা পাঠ থাকে। ঐ অনুষ্ঠানে দৈনিক শব্দের মেঠোপথ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা " হৃদয় রঙে অমর ২১" (৩য় বর্ষ, ৩ সংখ্যা) প্রকাশ করেন অধ্যাপক শ্রী রণজিত কুমার নায়েক ও ড. রামচন্দ্র মন্ডল।  

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন - বিশিষ্ট কৃষিবিজ্ঞানী প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. রামচন্দ্র মন্ডল মহোদয়৷ সম্মাননীয় অতিথি বর্গ উপস্থিত ছিলেন - অধ্যাপক রণজিৎ কুমার নায়েক, ড. প্রবালকান্তি হাজরা, শ্রী পার্থ সারথি দাশ, শ্রী স্বপনকুমার মন্ডল, শ্রী বিমান কুমার নায়ক, শ্রী রণজিৎ দাস, আবদুর রহমান সাহেব প্রমুখ। 

অমর একুশের শহীদদের স্মরণে স্বরচিত কবিতা পাঠ করে - শ্রী রজত দাস, শ্রী অশোক দাস, শ্রী কৃষ্ণানন্দ মাইতি, শ্রী অমলেন্দু পাল, শ্রী অনিল সাহু, শ্রী মধুসুদন জানা, শ্রী বৃন্দাবন দাস অধিকারী, শ্রী রবীন্দ্রনাথ দাস অধিকারী, শ্রী সুভাষ ঘোড়ই, শ্রী পার্থ প্রতিম নায়েক, শ্রী অসিত গিরি, শ্রী চন্দন খাঁড়া,  শ্রীমতী মহামায়া গোল,  শ্রী প্রদীপ শাসমল,  শ্রী নিশিকান্ত ভূঞ্যা, শ্রী জলধর নায়ক প্রমুখ।সঙ্গীত পরিবেশন করেন - শ্রী সুমন লস্কর, শ্রীমতি মধুমিতা গিরি, শ্রী সুনীল দাস প্রমুখ । শহীদ বেদীমঞ্চ, প্রদীপ-পুষ্পসজ্জায় ছিলেন - শ্রী উত্তম কুমার গুড়িয়া, শব্দে - সেক লেহাজুদ্দিন, চিত্রগ্রহণে - শ্রী জ্যোতির্ময় বারিক, চা ও জলযোগে অনু-তনু ভগিনীদ্বয়৷ যানবাহনের চলাচলে সুগম করে অনুষ্ঠানটির সাফল্য আনেন,আন্তরিক সহযোগিতায় - হেঁড়িয়া আইসি-র পক্ষ থেকে আধিকারিকগণ ও সিভিক পুলিশেরা। 
অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন - খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনী-র সভাপতি শ্রী সুমন নারায়ন বাকরা । আর অনুষ্ঠানের শুভ সূচনাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা এবং সংস্থার নানান বিষয় ঘোষণা করেন সম্পাদক ড. বিষ্ণু পদ জানা। আরো উপস্থিত ছিলেন  সহ-সম্পাদক - শ্রী জয়দেব মাইতি ও শ্রী সুদর্শন সেন , সদস্য শ্রী কানাইলাল জানা ও জালালউদ্দিন খান।  সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রী সমরেশ সুবোধ পড়িয়া ।  বাংলা ভাষা কে যথোচিত মর্যাদায় স্মরণ ও সম্মান জানিয়ে সকলে একমত হন - এ লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। আঞ্চলিক ভাষা প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে । সম্মিলনী আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করেন সম্পাদক ড বিষ্ণুপদ জানা মহোদয়- ১) খেজুরী সাহিত্য সম্মিলনী আয়োজিত ব‌ইমেলা (১ম বর্ষ ) আগামী এপ্রিল মাসের  শেষে অনুষ্ঠিত হবে। তা নিয়ে খুব শীঘ্রই মিটিং ডাকা হবে। ২) ঐ ব‌ইমেলাতে প্রকাশিত হবে - সংকলন গ্রন্থ   " খেজুরীতে আগত মণীষী" । নির্বাচিত লেখকদের তাড়াতাড়ি লেখা জমা দিতে হবে।

                                 সভার  শেষে শহীদ স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন সমবেত সকলে - সমবেত সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
====[=[============={==[✓[✓✓[[=====